হযরত আলী আলাইহিস সালামের ফজিলত (আরবি: فضایل امام علی علیه السلام); শিয়াদের প্রথম ইমাম হযরত আলীর (আ.) ফজিলত যা পবিত্র কুরআন, রেওয়ায়েত এবং ইতিহাসের বিভিন্ন ঘটনায় উল্লেখিত হয়েছে। মহানবি হযরত মুহাম্মাদ (সা.) থেকে বর্ণিত: ‘আলী ইবনে আবি তালিবের (আ.) ফজিলত (উত্তম চারিত্রিক গুণাবলী ও বৈশিষ্ট্যসমূহ) গণনার উর্ধ্বে’। অপর এক হাদীসে তিনি (সা.) বলেছেন, ‘হযরত আলীর (আ.) ফজিলত বর্ণনা করা, লেখা, সেগুলোকে পড়া ও শোনাও ইবাদত এবং গুনাহসমূহের ক্ষমার কারণ হয়’।

ইমাম আলীর (আলাইহিস সালাম) ফজিলত দু’ধরনের: এককভাবে যে সকল ফজিলতের অধিকারী এবং আহলে বাইতের (আলাইহিমুস সালাম) সাথে যৌথভাবে যেসকল ফজিলতের অধিকারী। বেলায়েতের আয়াত, নফস বিক্রির আয়াত, ইনফাকের আয়াতসহ হাদীসে গাদ্বীর, ভাজা পাখির হাদীস, হাদীসে মানযিলাত, কা’বায় জন্মগ্রহণ এগুলো তাঁর অনুপম ও একক বৈশিষ্ট্যগুলোর অন্যতম। অপরদিকে আহলে বাইতের (আ.) সকল সদস্য যে সকল বৈশিষ্ট্যের অধিকারী সেগুলোতে তিনিও অন্তর্ভুক্ত; যেমন তাতহীরের আয়াত, আহলুয যিকরের আয়াত, মাওয়াদ্দাতের আয়াত, হাদীসে সাক্বালাইন ইত্যাদি।

বনি উমাইয়া শাসনামলে ইমাম আলীর (আ.) ফজিলত বর্ণনা ও প্রসারে বাধা প্রদান করা হত। সে যুগে যারা তাঁর (আ.) ফজিলত বর্ণনা করত তাদেরকে হত্যা করা হত অথবা কারাগারে পাঠানো হত। পক্ষান্তরে ইমাম আলীর (আ.) ফজিলতের বিপরীতে ৩ খলিফা সম্পর্কে রেওয়ায়েত জাল কারী দলটিকে এ কাজে উৎসাহিত ও পুরস্কৃত করা হত স্বয়ং মুয়াবিয়ার নির্দেশেই। সালাফিদের নেতা ইবনে তাইমিয়া ও তার শিষ্য ইবনে কাসীর দামেশকী এবং ইবনে কাইয়িম জাওযি’র মত কেউ কেউ হযরত আলীর (আ.) ফযিলতে বর্ণিত কিছু কিছু আয়াতরেওয়ায়েতকে ত্রুটিযুক্ত ও জাল বলে উল্লেখ করেছেন।

হযরত আলীর (আ.) ফজিলত বর্ণনা ও প্রসার রোধে তাঁর বিরোধিদের আপ্রাণ চেষ্টা থাকা সত্ত্বেও শিয়া ও সুন্নি সমাজে ইমাম আলী ইবনে আবি তালিবের (আ.) বহুসংখ্যক ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। এছাড়া উভয় মাযহাবের আলেমগণ এ সম্পর্কে স্বতন্ত্র গ্রন্থাদিও রচনা করেছেন; এগুলোর মধ্যে ইমাম ইবনে হাম্বাল রচিত ‘ফাদ্বায়েলু আমিরিল মু’মিনীন (আ.)’ ইমাম নাসায়ী রচিত খাসায়েসু আমিরিল মু’মিনীন, ইবনে বাতরিক রচিত ‘উমদাতু উয়ূনি সিহাহিল আখবার ফি মানাকিবি ইমামিল আবরার’ ইত্যাদি গ্রন্থের নাম উল্লেখযোগ্য।

ফজিলত, এর গুরুত্ব ও প্রকার

ফাজায়েল বলতে ঐ সকল উত্তম চারিত্রিক গুণাবলীকে (ফজিলত) বোঝায় যা কোন ব্যক্তি বা দলের অন্যদের উপর শ্রেষ্ঠত্বের কারণ হয়।[] অতএব, ‘ইমাম আলীর (আ.) ফজিলত’ বলতে শিয়াদের প্রথম ইমাম হযরত আলীর (আ.) বিশেষ বৈশিষ্ট্যাবলীর সমষ্টিকে বোঝায় যেগুলো পবিত্র কুরআনে বা রেওয়ায়েত মারফত বর্ণিত হয়েছে অথবা ইতিহাসে উল্লেখিত হয়েছে এবং যেগুলো অন্যদের উপর তাঁর শ্রেষ্ঠত্বের কারণ। শিয়া মাযহাবের কালাম শাস্ত্রের বিভিন্ন গ্রন্থে ইমাম আলীর (আ.) ইমামতের বিষয় এবং খেলাফতের ক্ষেত্রে অন্যদের উপর তাঁর শ্রেষ্ঠত্বের বিষয়টি প্রমাণের ক্ষেত্রে তাঁর ফজিলতসমূহ উল্লেখ করা হয়েছে।[]

মহানবি হযরত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, আলী ইবনে আবি তালিবের (আ.) ফজিলতের সংখ্যা এতবেশী যে, সেগুলো গণনার উর্ধ্বে।[] আহলে সুন্নতের বড় বড় মনীষীরাও বিষয়টি স্বীকার করেছেন; যেমন, হাম্বালি মাযহাবের ইমাম ‘আহমাদ ইবনে হাম্বাল’ থেকে বর্ণিত হয়েছে, ‘যে সংখ্যক ফজিলত আলী ইবনে আবি তালিব সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে কোন সাহাবা সম্পর্কে হয়নি’।[]

ইমাম আলীর (আ.) ফজিলত দু’ভাগে বিভক্ত; খাসায়েসু আলী তথা তিনি এককভাবে যে সকল ফজিলতের অধিকারী; যেমন হিজরতের রাতে আল্লাহর রাসূলের (সা.) বিছানায় শয়ন এবং এ ঘটনা সম্পর্কে ‘আয়াতে শেরা’ অবতীর্ণ হওয়া ইত্যাদি।

যৌথভাবে আহলে বাইতের (আ.) সাথে তিনি যে সকল ফজিলতের অধিকারী: পাঞ্জতান সহ অপর মাসুমগণ যেসকল ফজিলতের অধিকারী; যেমন হাদীসে সাকালাইন; যাতে আহলে বাইতের (আ.) অপর সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত এবং হাদীসে কিসা যা শুধু পাঞ্জতান সম্পর্কেই। মহানবি (সা.) থেকে ইবনে শাযান কুম্মি কর্তৃক বর্ণিত একটি রেওয়ায়েতের ভিত্তিতে, যে ব্যক্তি আলী ইবনে আবি তালিবের (আ.) কোন ফজিলত লিখবে, যতদিন পর্যন্ত ঐ লেখা অবশিষ্ট থাকবে ফেরেশতারা তার জন্য ইস্তিগফার ও ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকবে। একইভাবে যে ব্যক্তি তাঁর কোন ফজিলত শ্রবণ করবে কানের মাধ্যমে যে সকল গুনাহ সে আঞ্জাম দিয়েছে (তা ক্ষমা করে দেওয়া হবে) এবং যে তাঁর ফজিলতকে দেখবে ও পড়বে চোখ দিয়ে যে সকল গুনাহ সে আঞ্জাম দিয়েছে তা ক্ষমা করে দেওয়া হবে।[]

কুরআনে বর্ণিত ফজিলতসমূহ

কুরআনে বর্ণিত ফজিলতসমূহ হল ঐ সকল আয়াত যা এককভাবে ইমাম আলী (আ.) সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে অথবা ঐ আয়াত যাদের সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে ইমাম আলী (আ.) তাঁদের একজন। ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণিত, আলী ইবনে আবি তালিব (আ.) সম্পর্কে যে সংখ্যক আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে অপর কারও সম্পর্কে হয়নি।[] একইভাবে ইবনে আব্বাস আল্লাহর রাসূল (সা.) থেকে বর্ণনা করেছেন, পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ এমন কোন আয়াত অবতীর্ণ করেননি যাতে ((یا أیها الذین آمنوا)) (বাক্যটি) এসেছে অথচ আলী ইবনে আবি তালিব মু’মিনদের শীর্ষ স্থানে নেই এবং তিনি তাদের নেতা নন’।[] তার ভাষ্যমতে হযরত আলী (আ.) সম্পর্কে ৩০০ এর অধিক আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে।[]

কুরআনে বর্ণিত ইমাম আলীর (আ.) ফজিলতগুলোর কয়েকটি:

১. বেলায়েতের আয়াত: [সূরা মায়িদাহ]]’র ৫৫নং আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে মহান আল্লাহ, তাঁর নবী এবং যারা নামায কায়েম করে ও রুকু অবস্থায় যাকাত দেয় জনগণের উপর তাদের বেলায়াত (অভিভাবকত্ব) রয়েছে।[] শিয়া ও সুন্নি মুফাসসিরগণ এ আয়াতের শানে নুযুলে হযরত আলীর (আ.) আংটি প্রদানের ঘটনাটি উল্লেখ করেছেন, ঐ ঘটনায় ইমাম আলী (আ.) রুকু অবস্থায় এক ভিক্ষুককে আংটি দান করেছিলেন।[১০]

২. আয়াতে শেরা: সূরা বাকারাহ’র ২০৭নং আয়াত। এতে ঐ সকল ব্যক্তির প্রশংসা করা হয়েছে যারা মহান আল্লাহর সন্তুষ্টিকল্পে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করতেও প্রস্তুত।[১১] বিশিষ্ট সুন্নি আলেম ও মুফাসসির ইবনে আবিল হাদিদের মতে সকল মুফাসসিরের বিশ্বাস আয়াতটি ইমাম আলী (আ.) সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে।[১২] আল্লামা তাবাতাবায়ী লিখেছেন: বর্ণিত রেওয়ায়েতের ভিত্তিতে আয়াতটি লাইলাতুল মাবিতের (হিজরতের রাত) ঘটনায় অবতীর্ণ হয়েছে।[১৩] লাইলাতুল মাবিতে মুশরিকরা মক্কায় মহানবির (সা.) বাড়ি আক্রমণ এবং তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ঐ রাতে মহানবির (সা.) জীবন নিরাপদ রাখতে আলী (আ.) তাঁর (সা.) বিছানায় ঘুমিয়ে পড়েন।[১৪]

৩. তাবলিগের আয়াত: সূরা মায়িদার ৬৭নং আয়াত; এ আয়াতের ভিত্তিতে মহানবি (সা.) এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা পৌঁছে দিতে নির্দেশিত হন। এ মর্মে যে যদি তিনি ঐ বার্তা পৌঁছাতে উদাসীনতা দেখান বা না পৌঁছান তাহলে তিনি তার রেসালতের কোন দায়িত্বই পালন করেননি।[১৫] শিয়া ও সুন্নি মুফাসসিরদের মতে ‘আয়াতে তাবলিগ’ বিদায় হজ্জ থেকে ফেরার পথে গাদ্বীরে খুম নামক স্থানে অবতীর্ণ হয়।[১৬] এ আয়াতের শানে নুযুলে বর্ণিত রেওয়ায়েতগুলোতে বলা হয়েছে, আয়াতটি গাদ্বীরে খুমের ঘটনা এবং হযরত আলীর (আ.) স্থলাভিষিক্ত হওয়া প্রসঙ্গে অবতীর্ণ হয়েছিল।[১৮]

৪. ইকমালের আয়াত: সূরা মায়িদাহ’র ৩নং আয়াত, যাতে দ্বীন-এ ইসলাম পরিপূর্ণ হওয়ার ঘোষণা এসেছে।[১৯] বিশিষ্ট শিয়া মুফাসসির নাসের মাকারেম শিরাজি’র ভাষ্যানুযায়ী ‘দ্বীন ইসলামে’র পরিপূর্ণতা বলতে ইমাম আলীর (আ.) বেলায়াতের ঘোষণা এবং মুসলমানদের উপর তাঁর খেলাফতের বিষয়; এর স্বপক্ষে রেওয়ায়েতও রয়েছে।[২০] [[শিয়া] মনীষীগণের মতে, ইকমালের আয়াত গাদ্বীরে খুমের ঘটনায় অবতীর্ণ হয়।[২১]

৫. সাদেক্বীনের আয়াত: সূরা তাওবাহ’র ১১৯নং আয়াত; যাতে মু’মিনগণকে সাদেক্বীনদের সাথে থাকার এবং তাদেরকে অনুসরণ করার নির্দেশ প্রদান করা হচ্ছে।[২২] শিয়া সূত্রে বর্ণিত রেওয়ায়েতসমূহের ভিত্তিতে সাদেক্বীন বলতে আহলে বাইতকে (আ.) বোঝানো হয়েছে।[২৩] মুহাক্কিক তুসী আয়াতটিকে আলীর (আ.) ইমামতের দলীল হিসেবে উল্লেখ করেছেন।[২৪]

৬. খাইরুল বারিয়্যাহ’র আয়াত: সূরা বায়্যিনাহ’র ৭নং আয়াত, এতে যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তাদেরকে সৃষ্টির সেরা হিসেবে পরিচয় করানো হয়েছে।[২৫] শিয়া ও সুন্নি রেওয়ায়েতের ভিত্তিতে এ দলটি হল ইমাম আলী (আ.) ও তাঁর শিয়ারা।[২৬]

৭. সালেহুল মু’মিনীনের আয়াত: সূরা তাহরিমের ৪নং আয়াত, মহান আল্লাহ্ এ আয়াতে জীবরাইল (আ.), আলী (আ.), ও অপর ফেরেশতাগণকে মহানবির (সা.) সাহায্যকারী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। বিভিন্ন তাফসীর গ্রন্থে উভয় মাযহাবের (শিয়া ও সুন্নি) সূত্রে বর্ণিত রেওয়ায়েতের ভিত্তিতে[২৭] আয়াতে বর্ণিত ‘সালেহুল মু’মিনীন’ (নেককার মু’মিনগণ) বলতে ইমাম আলীকে (আ.) বোঝানো হয়েছে।[১৭]

৮. ইনফাকের আয়াত: সূরা বাকারাহ’র ২৭৪নং আয়াতে, যারা রাতে ও দিনে, প্রকাশ্যে ও গোপনে দান করে তাদের পুরস্কার মহান আল্লাহর কাছে বলে উল্লেখিত হয়েছে।[২৯] মুফাসসিরদের ভাষ্যানুযায়ী আয়াতটি হযরত আলী (আ.) সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে। তাঁর কাছে ৪ দিরহাম ছিল, ১ দিরহাম তিনি রাতে দান করেন, এক দিরহাম দিনে এবং ১ দিরহাম গোপনে ও ১ দিরহাম প্রকাশ্যে দান করেছিলেন।[৩০]

৯. আয়াতে নাজওয়া: সূরা মুজাদালাহ’র ১২নং আয়াত, যাতে বিত্তশালী মুসলমানদেরকে মহানবির (সা.) সাথে নাজওয়া (গোপনে আলাপ) করার আগে সাদকা প্রদানের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।[৩১] তাবারসী’র বর্ণনার ভিত্তিতে শিয়া ও সুন্নি মুফাসসিরগণ বলেছেন, একমাত্র ইমাম আলী (আ.) এ আয়াতের উপর আমল করেছেন।[৩২]

১০. আয়াতে উদ্দ: সূরা মারিয়ামের ৯৬নং আয়াতের ভিত্তিতে মহান আল্লাহ মু’মিনদের ভালবাসাকে অন্যদের মনে স্থানে দিয়েছেন।[৩৩] কিছু কিছু বর্ণনায় এসেছে আল্লাহর রাসূল (সা.) হযরত আলীকে (আ.) নির্দেশ দিলেন (হে আলী) বলো: ‘হে আল্লাহ! মু’মিনদের অন্তরে আমার ভালবাসা দিয়ে দাও’, এই দোয়া করার পর আলোচ্য আয়াতটি অবতীর্ণ হয়।[৩৪]

১১. মুবাহালার আয়াত: সূরা আলে ইমরানের ৬১নং আয়াত; যাতে নাজরানের খ্রিষ্টানদের সাথে মহানবির (সা.) মুবাহালার ঘটনা উল্লিখিত হয়েছে। বিভিন্ন তাফসীরে আলোচ্য আয়াতে উল্লিখিত মহানবির (সা.) নফস ও জীবন হিসেবে হযরত আলীর (আ.) নাম উল্লেখ করা হয়েছে।[৩৫]

১২. আয়াতে তাতহীর: সূরা আহযাবের ৩৩নং আয়াতের শেষাংশে মহান আল্লাহ আহলে বাইতকে (আ.) সকল প্রকার অপবিত্রতা থেকে পবিত্র থাকার ঘোষণা প্রদান করেছেন। শিয়া মুফাসসিরগণের মতে আয়াতটি ‘আসহাবে কিসা’ (মহানবি (সা.), হযরত আলী, ফাতেমা, হাসান ও হুসাইন আলাইহিমুস সালাম) সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে।[৩৬]

১৩. উলিল আমরের আয়াত: সূরা নিসার ৫৯নং আয়াতে মু’মিনদেরকে আল্লাহর আনুগত্য এবং তাঁর রাসূল ও উলিল আমরের আনুগত্য করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।[৩৭] শিয়া ও সুন্নি মুফাসসিরগণের মতে আলোচ্য আয়াত উলিল আমরের নিষ্পাপত্বের প্রতি নির্দেশক।[১৮] পাশাপাশি রেওয়ায়েতে উলিল আমর বলতে শিয়াদের ইমামগণকে (আলাইহিমুস সালাম) বোঝানো হয়েছে।[৩৯]

১৪. মাওয়াদ্দাতের আয়াত: সূরা শুরা’র ২৩নং আয়াত; এতে মহানবির (সা.) রেসালাতের পারিশ্রমিক হিসেবে اَلْقُرْبیٰ তথা মহানবির (সা.) নিকটাত্মীয়দের প্রতি ভালবাসা ও মহব্বত পোষণকে ওয়াজিব করা হয়েছে।[৪০] ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণিত, মহানবি (সা.) আল-কুরবা বলতে আলী, ফাতেমা, হাসানহুসাইনকে বুঝিয়েছেন।[৪১]

১৫. ইতআমের আয়াত: সূরা ইনসানের এ আয়াতটি ঐ সকল ব্যক্তিদের প্রশংসায় অবতীর্ণ হয়েছে যারা নিজেরা ক্ষুধার্ত থাকা সত্ত্বেও মহান আল্লাহর সন্তুষ্টিকল্পে নিজেদের খাবার মিসকিন, এতিমকয়েদীকে দিয়ে দেয়।[৪২] বিভিন্ন রেওয়ায়েতের ভিত্তিতে, আয়াতটি হযরত ইমাম আলী (আ.) ও হযরত ফাতেমা (সা. আ.) সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছিল।[১৯] বর্ণিত বিভিন্ন রেওয়ায়েতের ভিত্তিতে হাসানাইনের (ইমাম হাসান ও ইমাম হুসাইন) সুস্থতার জন্য হযরত আলী (আ.) ও ফাতেমা (সা. আ.) ৩ দিন রোজা রেখেছিলেন। কিন্তু ৩ দিনই ইফতারের সময় নিজেরা ক্ষুধার্ত থেকে নিজেদের খাবার মিসকিন, এতিম ও কয়েদীকে দান করেন।[৪৪]

১৬. আহলুয যিকরের আয়াত: সূরা নাহলের ৪৩ ও সূরা আম্বিয়ার ৭নং আয়াত; যাতে আহলে যিকরকে জিজ্ঞেস করার বিষয়ে তাগিদ প্রদান করা হয়েছে।[৪৫] কিছু কিছু রেওয়ায়েতের ভিত্তিতে আহলে যিকর হল মহানবির (সা.) আহলে বাইত (আ.)।[৪৬]

১৭. নাসরের আয়াত: সূরা আনফালের ৬২নং আয়াত; আয়াতুল্লাহ মাকারেম শিরাজি’র মতে নবিকে (সা.) সাহায্যকারী প্রত্যেক মু’মিনই এ আয়াতের অন্তর্ভুক্ত, তবে নিঃসন্দেহে এই আয়াতে মুমিনদের মধ্যে সবচেয়ে বিশিষ্ট ব্যক্তি হলেন হযরত আলী (আ.)।[৪৭] তিনি তার ‘আয়াতে বেলায়াত দার কুরআন’ (বেলায়াত সংক্রান্ত আয়াতসমূহের তাফসীর) গ্রন্থে লিখেছেন: ‘নাসরের আয়াতটি হযরত আমিরুল মু’মিনীনের (আ.) ফযিলতে অবতীর্ণ আয়াতসমূহের অন্যতম।[৪৮]

১৮. সিরাতে মুস্তাকিমের আয়াত: বিভিন্ন রেওয়ায়েতের ভিত্তিতে আলী (আ.) ও তাঁর বেলায়াত হল পবিত্র কুরআনে উল্লিখিত সিরাতে মুস্তাকিম।[৪৯]

রেওয়ায়েতে উল্লিখিত ফজিলতসমূহ

আলীর (আ.) ফজিলতে মহানবি (সা.) থেকে বর্ণিত রেওয়ায়েতের কয়েকটি:

  • হাদীসে গাদির: এটি গাদ্বীরে খুমে মহানবির (সা.) প্রদত্ত ভাষণ, যাতে তিনি আলীকে (আ.) মুসলমানদের মাওলা ও অভিভাবক হিসেবে পরিচয় করিয়েছেন। হাদীসটি শিয়া ও সুন্নি উভয় সূত্রে বর্ণিত হয়েছে।[৫০] শিয়ারা তাঁর (আ.) ইমামত ও খেলাফত প্রমাণার্থে যে সকল দলীল উপস্থাপন করে থাকে হাদীসে গাদীর সেগুলোর অন্যতম।[৫১]
  • হাদীসে মানযিলাত: এ রেওয়ায়েতে মহানবির (সা.) নিকট আলীর (আ.) স্থান, হযরত মুসার (আ.) নিকট হারুনের (আ.) স্থানের ন্যায় বলে বলা হয়েছে।[৫২] পার্থক্য হল মহানবির (সা.) পর আর কোন নবি আসবেন না।
  • হাদীসে মাদিনাতুল ইলম: মহানবি (সা.) থেকে বর্ণিত আরও একটি হাদীস যাতে তিনি নিজেকে জ্ঞানের শহর এবং আলীকে (আ.) সে শহরের দরজা বলে পরিচয় করিয়েছেন।[৫৩] প্রসিদ্ধ আল-গাদ্বীর গ্রন্থে ২১ জন সুন্নি মুহাদ্দিসের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যারা এ হাদীসকে হাসান অথবা সহিহ বলেছেন।[৫৪]
  • হাদীসে ইয়াওমুদ্দার: মহানবি (সা.) নিজ আত্মীয়দেরকে তৌহিদের দাওয়াত গ্রহণের আহবান জানান। এর ধারাবাহিকতায় তিনি হযরত আলীকে (আ.) নিজের স্থলাভিষিক্ত, উত্তরসূরী ও খলিফা হিসেবে মনোনয়নের বিষয়টি স্পষ্ট করে দেন।[৫৪]শিয়া কালামশাস্ত্রবিদগণ হযরত আলীর (আ.) ইমামত প্রমাণের জন্য এই হাদিসকে দলিল হিসেবে উপস্থাপণ করেন।[৫৬]
  • হাদীসে ভেসায়াত: এ হাদিসে আল্লাহর নবি (সা.) ইমাম আলীকে (আ.) নিজের ওয়াছি ও স্থলাভিষিক্ত হিসেবে পরিচয় করিয়েছেন।[৫৭] শিয়ারা ইমাম আলীর (আ.) ইমামতের সপক্ষে দলীল হিসেবে এ হাদীসটি উল্লেখ করে থাকেন।[৫৮]
  • হাদীসে বেলায়াত: এ হাদীসে তিনি (সা.) হযরত আলীকে (আ.) নিজের পরে মু’মিনদের ওয়ালি (অভিভাবক) হিসেবে পরিচয় করিয়েছেন। শিয়া ও সুন্নি বিভিন্ন সূত্রে মতনে (Text) সামান্য পার্থক্যে হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে।[৫৯] শিয়ারা ((عَلِیٌّ وَلِیُّ کُلِّ مُؤْمِنٍ مِنْ بَعْدِی)) হাদীসে ব্যবহৃত ‘ওয়ালি’ শব্দটিকে[৬০] ইমাম ও তত্ত্বাবধায়ক অর্থে বলে মনে করেন এবং এর মাধ্যমে হযরত আলীর (আ.) বেলায়াত ও ইমামাতকে প্রমাণ করে থাকেন।[৬১]
  • হাদীসে তাইর: হযরত আলীর (আ.) শানে বর্ণিত একটি রেওয়ায়েত; মহানবির (সা.) সামনে একটি ভাজা পাখি আনা হলে তিনি খাওয়া শুরু করার আগে মহান আল্লাহর দরবারে হাত তুলে বলেন: ‘হে আল্লাহ! শ্রেষ্ঠ সৃষ্টির সাথে যেন এ খাবার খেতে পারি।’ অতঃপর হযরত আলী (আ.) এলেন এবং তিনি তার সাথে ঐ ভাজা পাখিটি খেলেন।[৬২] রেওয়ায়েতটি শিয়া ও সুন্নি উভয় সূত্রে বর্ণিত হয়েছে।[৬৩]
  • পতাকার হাদীস: হযরত আলীর (আ.) ফজিলতে মহানবি (সা.) থেকে বর্ণিত এ হাদীস; যা তিনি খায়বারের যুদ্ধে বলেছিলেন: ‘আগামিকাল এমন এক ব্যক্তির হাতে পতাকা তুলে দেব যার হাতে মহান আল্লাহ্ খায়বার দূর্গ বিজয় করবেন, সে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলকে ভালবাসে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলও তাকে ভালবাসে।[৬৪]
  • হাদীসে সাকালাইন: মহানবি (সা.) কর্তৃক বর্ণিত কুরআনআহলে বাইত (আ.) সম্পর্কে বর্ণিত প্রসিদ্ধ হাদীস। এ হাদীসে তিনি (সা.) বলেছেন: ‘আমি তোমাদের মাঝে দু’টি জিনিস রেখে যাচ্ছি, যদি সেগুলোকে আঁকড়ে ধর, তবে কখনই বিভ্রান্ত হবে না; তা হচ্ছে আল্লাহর কিতাব ও আমার আহলে বাইত’।[৬৫] শিয়া ও সুন্নি উভয় সূত্রে হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে।[৬৬]
  • হাদীসে কিসা: পাঞ্জতানের ফযিলতে বর্ণিত এ হাদীস শিয়া[৬৭] ও ‍সুন্নি[৬৮] উভয় মাযহাবের বিভিন্ন গ্রন্থে উল্লেখিত হয়েছে।[৬৭] মহানবি (সা.) একটি পশমি কাপড় বা চাদর (কিসা) দ্বারা নিজের আহলে বাইতকে ঢেকে নিলেন, অতঃপর দোয়া করলেন: ‘হে আল্লাহ্! এরা আমার আহলে বাইত। সমস্ত প্রকার কলুষতা তাদের থেকে দূরে সরিয়ে তাদেরকে পবিত্র রাখুন’।[৬৯]
  • হাদীসে সাফিনাহ: মহানবি (সা.) থেকে বর্ণিত আরেকটি প্রসিদ্ধ হাদীস, যাতে তিনি স্বীয় আহলে বাইতকে নূহের কিস্তির সাথে তুলনা করে বলেছেন: ‘যে ব্যক্তি তাতে আরোহন করবে নাজাত পাবে, আর যে তাতে আরোহন করা থেকে বিরত থাকবে সে নিমজ্জিত ও ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে’।[৭০] উভয় মাযহাবের বিভিন্ন গ্রন্থে হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে।[৭১]
  • হাদীসে শাজারাহ: মহানবি (সা.) বলেছেন: আমি ও আলী এক শাজারাহ (বৃক্ষ) থেকে সৃষ্টি হয়েছি, আর অন্যান্য মানুষ অন্য শাজারাহ (বৃক্ষ) থেকে[৭২]
  • হাদীসে লৌহ: ১২ ইমামের ইমামতের প্রমাণ হিসেবে মহানবি (সা.) থেকে বর্ণিত হাদীসগুলোর অন্যতম। এ হাদীসে আল্লাহর রাসূলের (সা.) স্থলাভিষিক্ত ও উত্তরসূরী ১ম ইমাম আলী (আ.) থেকে দ্বাদশ ইমাম মাহদির (আ.) নাম উল্লেখিত হয়েছে।[৭৪]
  • হাদীসে হাক্ক: মহানবি (সা.) থেকে বর্ণিত প্রসিদ্ধ হাদীসগুলোর অন্যতম, এতে হযরত আলীকে (আ.) হক ও সত্যের মানদণ্ড হিসেবে পরিচয় করানো হয়েছে। বর্ণনার শব্দ ভিন্নতায় বিভিন্ন সূত্রে হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে, তম্মধ্যে একটির বর্ণনা এমন: ‘আলী হকের সাথে এবং হক আলীর সাথে, এরা হাওজে কাউসারে আমার সাথে মিলিত না হওয়া পর্যন্ত কখনই পরস্পর থেকে পৃথক হবে না।’[৭৫]
  • হাদীসে তাশবীহ: এ হাদীসে মহানবি (সা.) আলীকে (আ.) অপর নবীদের সাথে তুলনা করেছেন। হাদীসটি শিয়া[৭৬] ও সুন্নি[৭৭] উভয় সূত্রে বর্ণিত হয়েছে।
  • হাদীসে ‘লা ফাতা ইল্লা আলী’: এ হাদীসের অর্থ হল আলী’র মত কোন জোয়ান মর্দ (বীর) নেই। ইতিহাস ও হাদীসের সাক্ষ্যানুযায়ী এ হাদীসটি ওহুদের যুদ্ধে হযরত আলী (আ.) যে বীরত্বগাথা, সাহসিকতা ও আত্মত্যাগের নজীর স্থাপন করেছিলেন তার প্রশংসায় হযরত জীবরাইল (আ.) বলেছিলেন।[৭৮] শিয়া ও সুন্নি উভয় সূত্রে হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে।[৭৯]
  • জান্নাত ও জাহান্নাম বন্টনকারী: মহানবি (সা.) এ হাদীসে আলীকে (আ.) জান্নাতজাহান্নামের বন্টনকারী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।[৮০] এ হাদীস শিয়া সূত্রে[৮১] একইভাবে সুন্নি সূত্রে[৮২] বিভিন্ন রাভি (বর্ণনাকারী) মারফত বর্ণিত হয়েছে।

ইমাম আলীর (আ.) ফজিলতে মহানবি (সা.) থেকে আরও বহুসংখ্যক রেওয়ায়েত বর্ণিত হয়েছে যেমন: ‘খন্দকের যুদ্ধ আলী’র (তলোয়ারের) আঘাত জ্বীন ও মানবজাতির ইবাদত অপেক্ষা উত্তম’।[৮৪] ‘যে আলীকে গালি দেয় সে আমার উপর অভিসম্পাত করে’।[৮৫] ‘যে আলীকে কষ্ট দেয় সে আমাকে কষ্ট দেয়’।[৮৬] ‘আলীর বন্ধুত্বের মাধ্যমে মু’মিনমুনাফিক চেনা যায়’।[৮৭] ‘আমি আলী থেকে এবং আলী আমা থেকে’।[৮৮] ‘আলীর যিকর (কথা স্মরণ করা) ইবাদত’।[৮৯] ‘আলীর দিকে তাকানো ইবাদত।’ এছাড়াও সিদ্দিকে আকবার,[৯১] ফারুকে আ’যাম[৯২] এবং আবু তুরাব[৯৩] প্রভৃত উপাধি আমিরুল মু’মিনীন আলীর (আ.) ফজিলতগুলোর অন্যতম; যা মহানবি (স.) কর্তৃক বিভিন্ন সময় উল্লেখিত হয়েছে।

আলীর (আ.) অপর ফজিলত ও বৈশিষ্ট্য

১. হযরত ফাতেমার (সালামুল্লাহি আলাইহা) সাথে বিবাহ: ইমাম আলীর (আ.) অনুপম ফজিলতগুলোর অন্যতম হলো মহান আল্লাহর নির্দেশে তার সাথে নবিকন্যা হযরত ফাতিমার (সা. আ.) বিবাহ।[২০] বলা হয়ে থাকে আলী (আ.) না থাকলে ফাতেমার সমকক্ষ কেউ হতো না।[২১]

২. মৌলুদে কাবা]]: এর মাধ্যমে কাবা অভ্যন্তরে হযরত আলীর (আ.) জন্মের বিষয়টির প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে; যা তাঁর বিশেষ ফজিলত হিসেবে গন্য।[২২]

৩. আমিরুল মু’মিনীন উপাধি: এর অর্থ হল মুসলমানদের আমির, সেনানায়ক ও নেতা; শিয়া আকিদার ভিত্তিতে উপাধিটি শুধু আলীর (আ.) জন্যই। আর তারা বিশ্বাস করে এ উপাধি প্রথমবারের মত আল্লাহর রাসূলের (সা.) জীবদ্দশায় হযরত আলীর (আ.) জন্য ব্যবহৃত হয়।[২৩] হিজরী ৭ম শতাব্দির বিশিষ্ট শিয়া মুহাদ্দিস সাইয়্যিদ ইবনে তাউস তার ‘আল-ইয়াকীন বিইখতিসাসি মাওলানা আলী বিইমরাতিল মু’মিনীন’ গ্রন্থে সুন্নি সূত্র থেকে ২২০টি হাদীসের উপর ভিত্তি করে ‘আমিরুল মু’মিনীন’ উপাধিটি হযরত আলীর (আ.) বিশেষ ফজিলত বলে উল্লেখ করেছেন।[২৪]

৪. সাদ্দুল আবওয়াব: দরজা বন্ধ করে দেওয়া অর্থে। একটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মহান আল্লাহর নির্দেশে মহানবি (সা.) মসজিদে নববির অভ্যন্তরে যে সকল দরজা খুলত সবগুলো দরজা বন্ধ করার নির্দেশ দেন, একমাত্র আলীর (আ.) দরজা ব্যতীত।[২৫]

৫. মহানবির (সা.) সাথে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন: মদিনায় হিজরতের পূর্বে মহানবি (সা.) মুহাজিরদেরকে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করে দেন। একইভাবে মদিনায় মুহাজির ও আনসারদের মাঝে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন তৈরি করে দেন। আর প্রত্যেক বারই তিনি ইমাম আলীকে (আ.) নিজের ভাই হিসেবে বেছেন নেন।[২৬]

৬. প্রথম মুসলিম: শিয়া আকিদা অনুযায়ী ও কিছু কিছু সুন্নি মনীষীদের মতে ইমাম আলী (আ.) ছিলেন ইসলাম গ্রহণকারী প্রথম পুরুষ।[২৭]

৭. বারাআতের আয়াত প্রচার তাফসিরে নেমুনেহ’র বর্ণনার ভিত্তিতে প্রায় সকল মুফাসসির ও ঐতিহাসিকগণের এ বিষয়ে ঐকমত্য রয়েছে যে, সূরা তাওবাহ’র প্রথম আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার মাধ্যমে মহানবির (সা.) সাথে মুশরিকদের সকল চুক্তি শেষ হয়ে যায়। মহানবি (সা.) জনগনের মাঝে এ আয়াত প্রচারের দায়িত্ব প্রথমে আবু বকরকে দিলেও তার কাছ থেকে নিয়ে এ দায়িত্ব আলীকে (আ.) দান করেন এবং হযরত আলী হজ্বের সময় জনগণের মাঝে আয়াতটি প্রচার করেন।[২৮] এ ঘটনা আহলে সুন্নতের বিভিন্ন সূত্রেও উল্লিখিত হয়েছে।[২৯]

৮. আংটি দানের ঘটনা: এ ঘটনায় ইমাম আলী (আ.) নামাযের রুকুতে থাকা অবস্থায় নিজের হাতের আংটি ভিক্ষুককে দান করেন। ঘটনাটি শিয়া ও আহলে সুন্নতের বিভিন্ন গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে।[৩০]

৯. সূর্যকে ফিরিয়ে আনা: এ ঘটনায় মহানবির (সা.) দোয়ায় অস্তগামী সূর্য ফিরে আসে যাতে হযরত আলী (আ.) আসরের নামায আদায় করতে পারেন।[৩১] একইভাবে শেইখ মুফিদের বর্ণনার ভিত্তিতে, হযরত আলীর (আ.) সময়ে একটি যুদ্ধে তার বাহিনীর কিছু সৈন্য আসরের নামায পড়তে দেরী করে ফেললে তিনি দোয়া করেন এবং তাঁর দোয়ায় অস্তগামী সূর্য প্রত্যাবর্তন করে।[৩২]

হযরত আলী (আ.)-এর ফজিলত বর্ণনায় বাধা

ইতিহাসের বিভিন্ন বর্ণনার ভিত্তিতে স্পষ্ট হয় যে, বনি উমাইয়ার শাসনামলে মুয়াবিয়ার নির্দেশে হযরত আলীর (আ.) ফজিলত বর্ণনায় বাধা প্রদান করা হত। তৃতীয় শতাব্দির বিশিষ্ট ঐতিহাসিক আলী ইবনে মুহাম্মাদ মাদায়েনি’র ভাষ্যানুযায়ী, মুয়াবিয়া তার গভর্নর ও কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে লিখেছিল ‘যে কেউ আলী ও তাঁর বংশের ফজিলতে কিছু বর্ণনা করবে তার জীবন ও সম্পদের কোন হুরমত থাকবে না (তথা তাকে হত্যা করা এবং তার সম্পদ লুট করা বৈধ হয়ে যাবে)।[৩৩] একইভাবে আলীর থেকে রেওয়ায়েত বর্ণনা করা, শ্রদ্ধার সাথে তাঁর নাম স্মরণ করা এবং শিশুকে আলীর নামে নামকরণ নিষিদ্ধ করা হয়।[৩৪] মুয়াবিয়া হযরত আলীকে (আ.) গালি দিত এবং বলত: আমি এ কাজ অব্যাহত রাখব যাতে কেউ আলীর কোন ফজিলত বর্ণনা না করে।[৩৫] মুয়াবিয়ার নির্দেশেই মিম্বর থেকে সাব্বে আলী তথা আলীকে (আ.) গালি দেওয়ার প্রচলন শুরু হয়[৩৬] এবং উমর ইবনে আব্দুল আযিযের সময়কাল পর্যন্ত প্রায় ৬০ বছর এ ঘৃণিত কর্ম অব্যাহত ছিল।[৩৭] জাওয়াদ মুগনিয়ার ভাষ্যানুযায়ী, উমাইয়া শাসকরা হযরত আলীর (আ.) ফজিলত বর্ণনাকারী বা তাঁর থেকে হাদীস বর্ণনাকারীদের উপর নির্যাতন চালাত। তারা মাইসাম তাম্মার, আমর বিন হামিক খুযায়ী, রুশাইদ হাজারি, হুজর বিন উদাইকুমাইল বিন যিয়াদের মত হযরত আলীর বিশিষ্ট শিষ্যদেরকে হত্যা করে, যাতে তাদের মাধ্যমে কেউ হযরত আলী থেকে বর্ণিত হাদিস ও তাঁর কথা না জানতে পারে।[৩৮] বিশিষ্ট সুন্নি আলেম শেইখ মুহাম্মাদ আবু যুহরাহ’র বর্ণনার ভিত্তিতে হযরত আলী থেকে বর্ণিত হাদিস এবং তাঁর উক্তিগুলো গোপন থাকার নেপথ্যে উমাইয়া শাসকদের গুরুত্বপূর্ণ হাত ছিল, আর এ কারণেই সুন্নি গ্রন্থসমূহ হযরত আলী থেকে নগন্য সংখ্যক হাদীস বর্ণিত হয়েছে।[৩৯]

সাইয়্যেদ আলী শাহরেস্তানী তার গ্রন্থ ‘মানউ তাদভিনিল হাদীস’ গ্রন্থে লিখেছেন: বেশীরভাগ শিয়া লেখকের বিশ্বাস, হাদীস নিষিদ্ধ করার অন্যতম কারণ ছিল হযরত আলীর (আ.) ফজিলত বর্ণনা ও প্রসার রোধ করা;[৪০] কেননা আহাদীসে নববিতে (সা.), আহলে বাইত (আ.) সম্পর্কে এবং খেলাফত ও নেতৃত্বের ক্ষেত্রে তাঁদের শ্রেষ্ঠত্ব ও যোগ্যতার কথা বর্ণিত হয়েছে, আর এ বিষয়টি ছিল উমাইয়া শাসকদের স্বার্থ বিরোধী।[৪১]

আলীর (আ.) নামের স্থলে অন্যের নাম বসিয়ে হাদীস জাল

ইবনে আবিল হাদিদ হিজরী তৃতীয় শতাব্দীর বিশিষ্ট মু’তাযেলি কালামশাস্ত্রবিদ আবু জাফার ইসকাফি থেকে বর্ণনা করছেন, মুয়াবিয়া হযরত আলীর তিরস্কারে হাদীস জাল করার জন্য সাহাবাতাবেঈদের একটি দলকে নিয়োগ দিয়েছিল।[৪২] সে এক পত্রে তার গভর্নর ও অধিনস্ত কর্মকর্তাদেরকে উসমানের ঘনিষ্টজন ও সমর্থকদেরকে চিহ্নিত এবং তাদের ঘনিষ্ট হওয়ার নির্দেশ দিল। বলা হল যা কিছু তারা উসমানের ফজিলতে বর্ণনা করবে সেগুলো লিখে তার কাছে যেন পাঠানো হয়।[৪৩] হিজরী তৃতীয় শতাব্দির বিশিষ্ট ঐতিহাসিক আলী ইবনে মুহাম্মাদ মাদায়েনীর বর্ণনার ভিত্তিতে, অর্থ ও পদের লোভে জনগণ উসমানের প্রশংসায় হাদিস আনা শুরু করল ফলে উসমানের ফযিলতে বর্ণনার সংখ্যা বৃদ্ধি পেল;[৪৪] এর ধারাবাহিকতায় মুয়াবিয়া অপর এক পত্রে লিখল যেন তারা জনগণকে সাহাবা ও ৩ খলিফার প্রশংসা ও ফজিলতে হাদীস বর্ণনার আহবান জানায় (যাতে এ সকল জাল হাদীসের ভীড়ে) হযরত আলীর ফজিলতে বর্ণিত হাদীস আর না থাকে, অথবা হযরত আলীর শানে বর্ণিত হাদীসের মত করে যেন খোলাফায়ে রাশিদীন এবং সাহাবাদের শানে হাদীস তৈরি করে বা ঐ হাদীসের বিপরীতে বা বিরোধিতায় কোন হাদীস বর্ণনা করে।[৪৫]

ইমাম আলীর (আ.) ফজিলত অস্বীকার

সালাফিদের নেতা ইবনে তাইমিয়া (৬৬১-৭২৮), ইমাম আলীর (আ.) শান ও ফজিলতে বর্ণিত হাদীসসমূহের একটি অংশকে জাল ও ত্রুটিযুক্ত বলে আখ্যায়িত করেছেন।[৪৬] একইভাবে তার ছাত্র ইসমাঈল বিন উমার ওরফে ইবনে কাসির দামেশকি (৭০১-৭৭৪) বলেছেন: আলীর [আ.] শানে এককভাবে কোন আয়াত অবতীর্ণ হয়নি, তাঁর প্রসঙ্গে যে সকল আয়াতের কথা উত্থাপিত হয়েছে সেগুলো আলী এবং অপর কয়েকজন সম্পর্কে।[৪৭] তার বিশ্বাস, এ বিষয়ে ইবনে আব্বাসসহ অন্যান্যদের থেকে যে সকল রেওয়ায়েত বর্ণিত হয়েছে তা সহিহ নয়।[৪৮] এছাড়া ইমাম আলীর (আ.) ফজিলতে বর্ণিত অনেক হাদীসের সনদকে তিনি জঈফ ও দূর্বল জ্ঞান করেছেন।[৪৯]

ইবনে তাইমিয়ার আরেক শিষ্য ইবনে কাইয়্যিম জাওযি (মৃত্যু ৭৫১ হি.) (বিদায় হজ্ব থেকে ফেরার পথে) গাদীরে খুমে হযরত আলীর (আ.) ইমামতের ঘোষণার ঘটনাটিকে বানোয়াট বলেছেন;[৫০] অথচ আল্লামা আমিনীর ভাষ্যমতে শিয়া ও সুন্নি গ্রন্থসমূহে হাদীসে গাদীর মুতাওয়াতির সূত্রে বর্ণিত হয়েছে।[৫১] একইভাবে বিশিষ্ট সুন্নি আলেম ইবনে জাওযি (মৃত্যু ৫৯৭ হি.) স্বীয় ‘আল-মাউদ্বুয়াত’ গ্রন্থে হযরত আলীর (আ.) ফযিলতে বর্ণিত হাদীসগুলোর একটি অংশকে জাল হাদীস হিসেবে উল্লেখ করেছেন।[৫২]

গ্রন্থ পরিচিতি

ইমাম আলীর (আ.) ফজিলত আহলে সুন্নাতের সিহাহ সিত্তাহসহ অন্যান্য হাদীস গ্রন্থাবলিতে ‘মানাকেব ও ফাজায়েলে আলী ইবনে আবি তালিব’ শিরোনামে উল্লেখিত হয়েছে।[৫৩] এছাড়া আহলে বাইতের (আ.) ফজিলত প্রসঙ্গে রচিত গ্রন্থাবলির একটি অংশে ইমাম আলীর ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। শিয়া ও সুন্নি আলেমগণ ইমাম আলীর (আ.) ফজিলত ও মানকাবাত বর্ণনায় স্বতন্ত্র গ্রন্থ রচনা করেছেন। আগা বুযুর্গে তেহরানী তার ‘আয-যারিয়াহ’ গ্রন্থে ‘ফাযায়েলে আমিরুল মু’মিনীন (আ.)’ এর উপর রচিত ১৫টি গ্রন্থের নাম উল্লেখ করেছেন,[৫৪]গ্রন্থগুলোর মধ্যে আব্দু আলী ইবনিল হুসাইন আল-লাবান আন-নাজাফি রচিত ‘নাহজুল ইদালাহ ফি ফাদ্বায়িলিল ইমাম আমিরিল মু’মিনীন আলী ইবনে আবি তালিব’,[৫৫] হাশিম বিন মুহাম্মাদ রচিত ‘মিসবাহুল আনওয়ার ফি ফাদ্বায়িলি ইমামিল আবরার’[৫৬] ইত্যাদির নাম উল্লেখযোগ্য।

সুন্নি লেখকগণ রচিত গ্রন্থাবলী

  • সুন্নি মাযহাবের ৪ ইমামের একজন আহমাদ ইবনে হাম্বাল শাইবানি (মৃত্যু ২৪১ হি.) রচিত ‘ফাদ্বায়েলু আমিরিল মু’মিনীন’। এ গ্রন্থে ইমাম আলীর (আ.) প্রশংসা ও ফজিলতে ৩৬৯টি রেওয়ায়েত উল্লেখিত হয়েছে।[৫৭] ইবনে হাম্বাল তার এ গ্রন্থে গাদীর দিবসে ইমাম আলীকে (আ.) দ্বিতীয় খলিফা (উমর) কর্তৃক মোবারকবাদ প্রদানের ঘটনাটি উল্লেখ করেছেন।[৫৮]
  • বিশিষ্ট মুহাদ্দিস ও আহলে সুন্নাহ’র ৬টি মূল হাদীস গ্রন্থের অন্যতম রচিয়তা আহমাদ বিন শুয়াইব নাসাঈ (মৃত্যু ৩০৩ হি.) রচিত ‘খাছায়েছু আমিরিল মু’মিনীন’। আরবি ভাষায় রচিত এ গ্রন্থে হযরত আলীর (আ.) ইসলাম গ্রহণ, মহানবির (সা.) নিকট তার অবস্থান, আল্লাহর রাসূলের (সা.) সাথে তার আত্মীয়তা এবং তার স্ত্রী ও সন্তানদের মর্যাদা ও অবস্থান সম্পর্কে বিভিন্ন রেওয়ায়েত উল্লেখিত হয়েছে।
  • ইবনে মাগাযেলি (মৃত্যু ৪৮৩ হি.) রচিত ‘মানাক্বেবুল ইমাম আলী ইবনে আবি তালিব’। আরবি ভাষায় রচিত এ গ্রন্থে তাঁর যে সকল শ্রেষ্ঠত্ব ও ফজিলত বর্ণিত হয়েছে সেগুলোর মধ্যে পবিত্র কা’বাগৃহে তাঁর জন্ম, ইসলাম গ্রহণের তাঁর অগ্রগামিতা, মহানবির (সা.) কাঁধে ওঠাসহ আরও অনেক রেওয়ায়েত এবং তাঁর সম্পর্কিত বিভিন্ন আয়াত।

আহমাদ ইবনে মুসা ইবনে মারদাভাইহ (মৃত্যু ৪১০ হি.) রচিত ‘মানাকেবু আলী ইবনে আবি তালিব’।

  • শাওয়াহেদুত তানযীল নামক গ্রন্থটি রচনা করেছেন আহলে সুন্নতের বিশিষ্ট পণ্ডিত হাকিম হাসকানী (মৃত্যু: ৪৯০ হি.)। এই গ্রন্থটিতে মহানবি (স.)-এর আহলে বাইতের শানে অবতীর্ণ হওয়া কুরআনের আয়াতসমূহের প্রতি লক্ষ্য রেখে ইমাম আলী (আ.) ও তাঁর পরিবারের ফজিলত তুলে ধরা হয়েছে।[৫৯]

বিশিষ্ট মু’তাযেলি পণ্ডিত মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইসকাফী (মৃত্যু ২৪০ হি.) রচিত ‘আল-মি’ইয়ার ওয়াল মুওয়াযানাহ ফি ফাদ্বায়িলিল ইমাম আমিরিল মু’মিনীন আলী ইবনি আবি তালিব (আ.)’, (হিজরী ৭ম শতাব্দির বিশিষ্ট মনীষী) মুহাম্মাদ ইবনে আবি বাকর তেলমেসানী রচিত ‘আল-জাওহারাতু ফি নাসাবিল ইমাম আলী ওয়া আলিহি’, শামসুদ্দীন বাউনি (মৃত্যু. ৮৭১ হি.) রচিত ‘জাওয়াহেরুল মাতালেব ফি মানাকিবি আলী ইবনি আবি তালিব’, মুহাম্মাদ বিন ইউসুফ গাঞ্জি (মৃত্যু. ৬৫৮ হি.) রচিত ‘কিফায়াতুত তালিব ফি মানাকিবি আলী ইবনি আবি তালিব’, মুওয়াফ্ফাক ইবনে আহমাদ খাওয়ারাযমি (মৃত্যু ৫৬৮ হি.) রচিত ‘মানাকিবুল ইমাম আমিরুল মু’মিনীন (আ.)’ এবং মীর মুহাম্মাদ সালেহ তিরমিযি (মৃত্যু. ১০৬০ হি.) রচিত ‘মানাকেবে মুরতাযাভি’ হযরত ইমাম আলীর (আ.) ফজিলত ও মানকাবাত বর্ণনায় রচিত গ্রন্থাবলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য।

শিয়া মনীষীগণ রচিত গ্রন্থাবলী

হিজরী ৪র্থ শতাব্দির যাইদি মাযহাবের বিশিষ্ট মনীষী আবুল কাসিম বুস্তি রচিত ‘আল-মারাতিব ফি ফাদ্বায়িলি আমিরিল মু’মিনীন’। এতে ইমাম আলী ইবনে আবি তালিবের (আ.) ৪৫০টি ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। শেইখ মুফিদ (মৃত্যু. ৪১৩ হি.) রচিত ‘তাফদ্বীলু আমিরিল মু’মিনীন’। লেখক এতে শিয়া ও সুন্নি সূত্রে বর্ণিত রেওয়ায়েতসমূহের ভিত্তিতে মহানবি (সা.) ব্যতীত সকল নবিগণের (আলাইহিমুস সালাম) উপর হযরত আলীর (আ.) শ্রেষ্ঠত্বের বিষয়টি প্রমাণ করেছেন। আবুল ফুতুহ কারাজাকি (মৃত্যু ৪৪৯ হি.) রচিত ‘[[আর-রিসালাতুল আলাউইয়্যাহ ফি ফাদ্বলি আমিরিল মু’মিনীন (আ.) আলা সায়িরিল বারিয়্যিয়াহ সেওয়া সাইয়্যিদিনা রাসুলুল্লাহ (সা.)”]]। গ্রন্থটিতে পবিত্র কুরআনের বিভিন্ন আয়াতের ভিত্তিতে ইমাম আলীর বৈশিষ্ট ও ফজিলত বর্ণনার পাশাপাশি তাঁর সম্পর্কে উত্থাপিত বিভিন্ন প্রশ্ন ও সংশয়ের জবাব প্রদান করা হয়েছে। সাইয়্যিদ ইবনে তাউস (মৃত্যু. ৬৬৪ হি.) রচিত ‘আল-ইয়াক্বীন বিইখতিসাসি মাওলানা আলী আলাইহিস সালাম বিইমরাতিল মু’মিনীন’। লেখক এ গ্রন্থে আহলে সুন্নতের সূত্রসমূহে উল্লেখিত ২২০টি হাদীসের ভিত্তিতে এ বিষয়টি প্রমাণ করেছেন যে, ‘আমিরুল মু’মিনীন’ উপাধি শুধু ইমাম আলীর (আ.) জন্য নির্ধারিত যা মহানবি (সা.) তাঁকে দান করেছেন। ইবনে বাতরিক (মৃত্য. ৬০০ হি.) রচিত ‘উমদাতু উয়ূনি সিহাহিল আখবার ফি মানাকিবি ইমামিল আবরার’ (আল-উমদাহ নামে যে গ্রন্থটির প্রসিদ্ধি রয়েছে), ইবনে শাযান রচিত ‘মিআতু মানকাবাহ মিন মানাকিবি আমিরিল মু’মিনীন ওয়াল আইম্মাহ মিন উলদিহি (আ.) মিন তারিকিল আ’ম্মাহ’, সাইয়্যিদ ইবনে তাউস রচিত ‘তারফুন মিনাল আনবা ওয়াল মানাকিব’, শাযান বিন জীবরাইল কুম্মি রচিত ‘আর-রাওদ্বাহ ফি ফাদ্বায়িলি আমিরিল মু’মিনীন’, আল্লামা হিল্লি রচিত কাশফুল ইয়াক্বীন ফি ফাদ্বায়িলি আমিরিল মু’মিনীন এবং মুহাম্মাদ তাক্বী শুশতারি রচিত ‘ক্বাদ্বাউ আমিরিল মু’মিনীন” ইত্যাদি হযরত আলীর (আ.) ফজিলতে শিয়া মনীষীগণ কর্তৃক রচিত গ্রন্থাবলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য।

তথ্যসূত্র

  1. আসগারপুর, দারআমাদি বার মানাক্বেব নেগারিয়ে আহলে বাইত, পৃ. ২৬৭।
  2. উদাহরণ স্বরূপ দেখুন; বাইয়াযি, আস-সিরাতুল মুস্তাকিম, ১৩৮৪ হি., খণ্ড ১, পৃ. ১৫১-২৯৮।
  3. ইবনে শাযান, মিআতু মানবাকাহ, ১৪০৭ হি., পৃ. ১৭৭।
  4. হাকিম, নিশাপুরী, আল-মুস্তাদরাক আলাস সাহিহাইন, ১৪১১ হি., খণ্ড ৩, পৃ. ১১৬।
  5. ইবনে শাযান, মিআতু মানকাবাহ, ১৪০৭, পৃ. ১৭৭।
  6. ইবনে মানযুর, মুখতাসারু তারিখিদ দামেশক, ১৪০২, খণ্ড ১৮, পৃ. ১১।
  7. হাসকানী, শাওয়াহেদুত তানযীল, ১৪১১ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৬৩-৭১; শাবলাঞ্জী, নূরুল আবসার, আশ শারীফুর রাযী, খণ্ড ১, পৃ ১৫৯।
  8. গাঞ্জি শাফেয়ী, কিফায়াতুত তালিব, ১৪০৪ হি., পৃ ২৩১; কুন্দুযী ইয়া নাবীউল মাওয়াদ্দাহ, ১৪২২ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৩৩৭।
  9. সূরা মায়েদাহ, আয়াত ৫৫।
  10. তাবাতাবায়ী, আল-মিযান, ১৪১৭ হি., খণ্ড ৬, পৃ. ২৫; সুয়ুতি, আদ দুররুল মানসুর, ১৪০৪ হি., খণ্ড ২, পৃ. ২৯৩; হাসকানী, শাওয়াহেদুত তানযীল, ১৪১১ হি., খণ্ড ১, পৃ. ২০৯-২৩৯।
  11. সূরা বাকারাহ, আয়াত ২০৭।
  12. ইবনে আবিল হাদীদ, শারহে নাহজুল বালাগাহ, ১৪০৪ হি., খণ্ড ১৩, পৃ. ২৬২।
  13. তাবাতাবায়ী, আল-মিযান, ১৪১৭ হি., খণ্ড ২, পৃ. ১০০।
  14. তুসী, আল-আমালী, ১৪১৪ হি., পৃ. ৪৬৬-৪৬৭।
  15. সূরা মায়েদাহ, আয়াত ৬৭।
  16. উদাহরণস্বরূপ দেখুন আইয়াশি, তাফসীরে আইয়াশি, ১৩৮০ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৩৩২; সুয়ুতি, আদ দুররুল মানসুর, ১৪০৪ হি., খণ্ড ২, পৃ. ২৯৮; আলুসী, রুহুল মাআনী, ১৪০৫ হি., খণ্ড ৬, পৃ. ১৯৪।
  17. তাবাতাবায়ী, আল-মিযান, ১৪১৭ হি., খণ্ড ১৯, পৃ. ৩৩২।
  18. দ্র: তাবাতাবায়ী, আল-মিযান, ১৪১৭ হি., খণ্ড ৪, পৃ. ৩৮৯; ফাখরে রাযী, মাফাতিহুল গায়েব, ১৪২০ হি., খণ্ড ১০, পৃ. ১১৩।
  19. তাবাতাবায়ী, আল-মিযান, ১৪১৭ হি., খণ্ড ২, পৃ. ১৩২।
  20. ফাত্তাল নিশাপুরী, রাওযাতুল ওয়ায়েযীন, ১৩৭৫ ফার্সি সন পৃ. ১৪৭।
  21. ফাত্তাল নিশাপুরী, রাওযাতুল ওয়ায়েযীন, ১৩৭৫ ফার্সি সন, পৃ. ১৪৬।
  22. আমিনী, আল-গাদীর, ১৩৯৭ হি., খণ্ড ৬, পৃ. ২১-২৩।
  23. শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৩ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৪৮।
  24. তাকাদ্দুমী মা’সূমী, নূরুল আমীর ফি তাসবিতি খুতবাতিল গাদীর, ১৩৭৯ ফার্সি সন, পৃ. ৯৭।
  25. মাজলিসী, বিহারুল আনওয়ার, ১৪০৩ হি., খণ্ড ৩৯, পৃ. ৩৫; ইবনে হাম্বাল, ফাযায়েলে আমিরুল মু’মিনীন, ১৪৩৩ হি., পৃ. ১৭৭।
  26. ইবনে আব্দুল বার, আল-ইস্তিআব, ১৪১২ হি., খণ্ড ৩, পৃ. ১০৯৭ ও ১০৯৮।
  27. আল-নাসায়ী, আস সুনানুল কুবরা, খণ্ড ৫, পৃ. ১০৭; ইবনে হাম্বাল, ফাযায়েলে আমিরুল মু’মিনীন, ১৪৩৩ হি., পৃ. ১৭৭।
  28. মাকারেম শিরাজী, তাফসীরে নেমুনেহ, ১৩৭১ ফার্সি সন, খণ্ড ৭, পৃ. ২৭৫।
  29. ইবনে হাম্বাল, মুসনাদুল ইমাম আহমাদ, ১৪২১ হি., খণ্ড ৫, পৃ. ১৭৯; নাসায়ী, খাসায়েস, ১৪০৬ হি., পৃ. ৯৩।
  30. তাবাতাবায়ী, আল-মিযান, ১৪১৭ হি., খণ্ড ৬, পৃ. ২৫; সুয়ুতি, আদ দুররুল মানসুর, ১৪০৪ হি., খণ্ড ২, পৃ. ২৯৩; হাসকানী, শাওয়াহেদুত তানযীল, ১৪১১ হি., খণ্ড ১, পৃ. ২০৯-২৩৯।
  31. শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৩ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৩৪৬।
  32. শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৩ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৩৪৭।
  33. ইবনে আবিল হাদীদ, শারহে নাহজুল বালাগাহ, ১৪০৪ হি., খণ্ড ১১, পৃ. ৪৪।
  34. দ্র: রেই শাহরি, দানেশ নামেয়ে আমিরুল মু’মিনীন, ১৪২৮ হি., পৃ. ৪৭৫ থেকে ৪৮৩।
  35. ইবনে আবিল হাদীদ, শারহে নাহজুল বালাগাহ, ১৪০৪ হি., খণ্ড ৪, পৃ. ৫৭।
  36. ইবনে আবিল হাদীদ, শারহে নাহজুল বালাগাহ, ১৪০৪ হি., খণ্ড ১১, পৃ. ৪৪।
  37. ইবনে খালদুন, তারিখে ইবনে খালদুন, ১৪০৮ হি., খণ্ড ৩, পৃ. ৯৪।
  38. মুগনিয়াহ, আল-হুসাইন ওয়া বাতালাতু কারবালা, ১৪২৬ হি., পৃ. ১৮৭।
  39. আবু যাহরা, আল-ইমামুস সাদিক, মাতবাআতু মুহাম্মাদ আলী মুখিম, পৃ. ১৬২।
  40. শাহরেস্তানী, মানউ তাদভিনিল হাদীস, ১৪১৮ হি., পৃ. ৫৭।
  41. আসগারপুর, “দার-অমাদি বার মানাকেব নেগারিয়ে আহলে বাইত”, পৃ. ২৭০।
  42. ইবনে আবিল হাদীদ, শারহে নাহজুল বালাগাহ, ১৪০৪ হি., খণ্ড ৪, পৃ. ৬৩।
  43. ইবনে আবিল হাদীদ, শারহে নাহজুল বালাগাহ, ১৪০৪ হি., খণ্ড ১১, পৃ. ৪৪।
  44. ইবনে আবিল হাদীদ, শারহে নাহজুল বালাগাহ, ১৪০৪ হি., খণ্ড ১১, পৃ. ৪৪।
  45. ইবনে আবিল হাদীদ, শারহে নাহজুল বালাগাহ, ১৪০৪ হি., খণ্ড ১১, পৃ. ৪৫।
  46. উদাহরণস্বরূপ দেখুন: ইবনে তাইমিয়্যাহ, মিনহাজুস সুন্নাতিন নাবাবিয়্যাহ, ১৪০৬ হি., খণ্ড ৮, পৃ. ৫০-৮৬ ও ১২২-১২৬ এবং ১৬৪-১৬৮।
  47. ইবনে কাসীর, আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ, ১৪০৭ হি., খণ্ড ৭, পৃ. ৩৫৭।
  48. ইবনে কাসীর, আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ, ১৪০৭ হি., খণ্ড ৭, পৃ. ৩৫৭-৩৫৮।
  49. দ্র: ইবনে কাসীর, আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ, ১৪০৭ হি., খণ্ড ৭, পৃ. ৩৫৭ ও ৩৫৮।
  50. ইবনে কাইয়্যিম, আল-মানারুল মুনিফ, ১৩৯০ হি., পৃ. ৫৭।
  51. আমিনী, আল-গাদীর, ১৪১৬ হি., খণ্ড ১, পৃ. ১৯।
  52. ইবনে জাওযী, আল-মাউযুআত, খণ্ড ১, পৃ. ৩৩৮ পরবর্তী।
  53. উদাহরণস্বরূপ দেখুন বুখারী, সহীহ আল-বুখারী, ১৪২২ হি., খণ্ড ৫, পৃ. ১৮; মুসলিম, সহীহ মুসলিম, দারু ইহিয়ায়িত তুরাসিল আরবি, খণ্ড ৪, পৃ. ১৮৭০ ও ১৮৭১, হাদীস ২৪০৪।
  54. আগা বুযুর্গে তেহরানী, মুহাম্মাদ মুহসিন, আয যারিআহ, ১৪০৮ হি., খণ্ড ১৬, পৃ. ২৫৩-২৫৬।
  55. আগা বুযুর্গে তেহরানী, মুহাম্মাদ মুহসিন, আয যারিআহ, ১৪০৮ হি., খণ্ড ২৪, পৃ. ৪২১।
  56. আগা বুযুর্গে তেহরানী, মুহাম্মাদ মুহসিন, আয যারিআহ, ১৪০৮ হি., খণ্ড ২১, পৃ. ১০৩।
  57. মারদী, «یادی از محقق طباطبائی به بهانه چاپ فضائل امیرالمؤمنین علیه‌السلام.»
  58. ইবনে হাম্বাল, ফাযায়েলে আমিরুল মু’মিনীন, ১৪৩৩ হি., পৃ. ১৯৭।
  59. আগা বুযুর্গে তেহরানী, মুহাম্মাদ মুহসিন, আয যারিআহ, ১৪০৮ হি., খণ্ড ২৪, পৃ. ২৪২-২৪৩।

গ্রন্থপঞ্জি

  • আগা বুযুর্গে তেহরানি, মুহাম্মাদ মুহসিন, আয যারিআহ ইলাত তাসানিফুশ শিয়া, বৈরুত, দারুল আদ্বওয়া, ১৪০৮ হি.
  • ইবনে আবিল হাদিদ, আব্দুল হামিদ ইবনে হাবাতুল্লাহ, শারহে নাহজুল বালাগাহ, তাসহিহ: মুহাম্মাদ আবুল ফাযল ইব্রাহিম, কোম, মাক্তাবাতু আয়াতুল্লাহ আল-মারআশি আল-নাজাফি, ১৪০৪ হি.।
  • ইবনে হাম্বাল, আহমাদ ইবনে মুহাম্মাদ, মুসনাদুল ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বাল, তাহকিক: মুহাম্মাদ রিশাদ সালেম, জামেআতুল ইমাম মুহাম্মাদ ইবনে সাউদ আল-ইসলামিয়্যাহ, প্রথম সংস্করণ, ১৪০৬ হি.।
  • ইবনে হাম্বাল, আহমাদ, ফাযায়েলে আমিরুল মু’মিনীন আলী ইবনে আবি তালিব, তাহকিক: সাইয়্যেদ আব্দুল আযিয তাবাতাবায়ী, কোম, দারুত তাফসীর, ১৪৩৩ হি./১৩৯০ ফার্সি সন।
  • ইবনে জাওযি, আব্দুর রাহমান ইবনে আলী, আল-মাউযুআত, তাহকিক: আব্দুর রাহমান মুহাম্মাদ ইবনে উসমান, মাদীনা, মুহাম্মাদ আব্দুল মুহসিন সাহেব আল-মাক্তাবাতুস সালাফিয়্যাহ বিল মাদীনাতিল মুনাউওয়ারা, ১৩৮৬ হি./১৯৬৬খ্রি.।
  • ইবনে শাযান, মুহাম্মাদ ইবনে আহমাদ, মিআতু মানকাবা মিন মানাকিবি আমির আল-মু’মিনীন ওয়াল আইম্মাহ, কোম, মাদ্রাতুল ইমাম আল-মাহদি আজ্জিল আল্লাহু তাআলা ফারাজাহুশ শারীফ, ১৪০৭ হি.।
  • ইবনে শাহরে আশুব, মুহাম্মাদ ইবনে আলী, মানাকিবি আলে আবি তালিব, কোম, আল্লামাহ, ১৩৭৯ হি.।
  • ইবনে আব্দুল বার, ইউসুফ ইবনে আব্দুল্লাহ, তাহকিক: আলী মুহাম্মাদ বাজাউয়ি, বৈরুত, দারুল জাইল, ১৪১২ হি./১৯৯২ খ্রি.।
  • ইবনে আসাকির, তারিখু মাদিনাতি দিমাশক, তাহকিক: আলী শিরি, দারুল ফিকর, বৈরুত, ১৪১৫ হি.।
  • ইবনে আসাকির, আলী ইবনে হাসান, তারজুমাতুল ইমাম আলী ইবনে আবি তালিব মিন তারিখি মাদিনাতি দিমাশক, তাহকিক: মুহাম্মাদ বাকের মাহমুদি, বৈরুত, মুআসসেসেয়ে মাহমুদি, দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৪০০ হি.।
  • ইবনে কাসির দামেস্কি, ইসমাঈল ইবনে উমর, আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ, বৈরুত, দারুল ফিকর, ১৪০৭ হি./১৯৮৬খ্রি.।
  • ইবনে আল-কাইয়িম জাওযিয়্যাহ, মুহাম্মদ ইবনে আবি বকর, আল-মানারুল মুনিফ ফিল সহীহ ওয়াল যয়ীফ, তাসহিহ: আব্দুল ফাত্তাহ আবু গাদ্দাহ, মাকতাবাতুল মাবতুআত আল-ইসলামিয়া, ১৩৯০ হি./১৯৭০ খ্রি.।
  • ইবনে কাসির দামেস্কি, ইসমাঈল ইবনে ওমর, আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ, বৈরুত, দারুল-ফিকর, ১৪০৭ হি./১৯৮৬ খ্রি.।
  • ইবনে মারদুওয়াইহ ইসফাহানী, আহমদ ইবনে মুসা, মানাকিবি আলী ইবনে আবি তালিব, কোম, দারুল হাদিস, ১৪২৪ হি.।
  • ইবনে মাগাযিলি, আলী ইবনে মুহাম্মাদ, মানাকিবুল ইমাম আলী ইবনে আবি তালিব (আ.), দারুল-আদ্বওয়া, তৃতীয় সংস্করণ, ১৪২৪ হি.।
  • ইবনে মানজুর, মুহাম্মদ ইবনে মুকাররাম, মুখতাসার তারিখে দিমাশক ইবনে আসাকির, তাহকিক: রুহিয়াতুল নিহাস ও রিয়াদ আব্দুল হামিদ মুরাদ এবং মুহাম্মাদ মুতিঅ, দামেস্ক, মুদ্রণ ও প্রকাশনায় দারুল ফিকর, ১৪০২ হি./১৯৮৯ খ্রি.।
  • আবু যাহরা, ইমাম আল-সাদিক, হায়াতুহু ওয়া আসরুহু ওয়া আরাউহু ওয়া ফিকহুহ, মাতবাআহ মুহাম্মদ আলী মুখিম, তারিখ অজ্ঞাত।
  • আস্তারাবাদী, মুহাম্মাদ জাফার, আল-বারাহীনুল কাতিআহ ফি শারহি তাজদীদিল আকায়েদ আল-সাতিআহ, তাহকিক: মারকাযে মোতালেআত ওয়া তাহকিকাতে ইসলামি, কোম, মাক্তাবুল আ’লাম আল-ইসলামি, ১৩৮২ ফার্সি সন।।
  • আসগরপুর, হাসান, «درآمدی بر مناقب‌نگاری اهل بیت», দার মাজাল্লে উলুমে হাদিস, সংখ্যা ৪৫০ ও ৪৬, ১৩৮৬ ফার্সি সন।
  • বুখারী, মুহাম্মদ ইবনে ইসমাঈল, সহীহ আল-বুখারী, তাহকিক: মুহাম্মাদ জুহাইর ইবনে নাসির আল-নাসির, দারু তুক আল-নাজাত, ১৪২২ হি.।
  • বায়াযী, আলী ইবনে মুহাম্মাদ, সীরাতুল মুস্তাকিম ইলা মুস্তাহাক্কিত তাকদীম, তাসহিহ: রমজান মিখাইল, নাজাফ, আল-মাক্তাবাতুল হায়দারিয়্যাহ, ১৩৮৪ হি.।
  • তাকাদ্দুমী মাসুমী, আমির, নূরুল আমির আলাইহিস সালাম ফি তাসবীতিল খুতবাতিল গাদীর, কোম, মওলুদে কাবা, ১৩৭৯ ফার্সি সন।
  • হাকিম নিশাপুরী, মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ, আল-মুস্তাদরাক আলাস সাহীহাইন, তাহকিক: মোস্তফা আব্দুল কাদির আতা, বৈরুত, দারুল কুতুব আল-ইলমিয়াহ, ১৪১১ হি./১৯৯০ খ্রি.।
  • হিবারি, হুসাইন ইবনে হাকাম, তাফসীরুল হিবারি, বৈরুত, মুআসসিসাতু আলিল বাইত লি ইহিয়ায়িত তুরাস, ১৪০৮ হি.।
  • হাসকানি, ওবায়দুল্লাহ ইবনে আহমাদ, শাওয়াহেদুত তানযীল লি কাওয়ায়েদিত তাফসীল, তাহকিক: মুহাম্মাদ বাকের মাহমুদী, তেহরান, সাযেমানে চপ ওয়া ইন্তেশারাতে ভেযারাতে এরশাদে ইসলামি, ১৪১১ হি.।
  • হাসান ইবনে আলী (ইমাম আসকারী), আত-তাফসীরুল মানসুব ইলাল ইমামিল আসকারী (আ.), কোম, মাদ্রাসায়ে ইমাম মাহদী (আ.ফা.), প্রথম সংস্করণ, ১৪০৯ হি.।
  • হিল্লি, হাসান ইবনে ইউসুফ, কাশফুল ইয়াকীন ফী ফাযায়েলি আমিরিল মু’মিনীন, তেহরান, ভেযারাতে এরশাদ, প্রথম সংস্করণ, ১৪১১ হি.।
  • হিল্লি, হাসান ইবনে ইউসুফ, কাশফুল মুরাদ ফি শারহি তাজদীদিল এ’তেকাদ, তাসহিহ ওয়া তা’লিক: হাসান হাসান যাদেহ আমুলি, কোম, মুআসসিসাতুন নাশরিল ইসলামি, ১৪১৩ হি.।
  • হাম্মুয়ী জুওয়াইনি, ইব্রাহিম ইবনে মুহাম্মাদ, ফারাইদুস সিমতাইন, তাহকিক: মুহাম্মদ বাকের মাহমুদী, মুআসসেসেয়ে মাহমুদী, তারিখ অজ্ঞাত।
  • হাম্মুয়ী জুওয়াইনি, ইব্রাহিম, ফারাইদুস সিমতাইন, তাহকিক: মুহাম্মাদ বাকের মাহমুদী, বৈরুত, মুআসসেসেয়ে মাহমুদী, প্রথম সংস্করণ, ১৩৯৮ হি./১৯৭৮ খ্রি.।
  • খতিব বাগদাদী, আহমাদ ইবনে আলী, তারিখে বাগদাদ, তাহকিক: বাশার আওয়াদ মা'রউফ, বৈরুত, দারুল গারব আল-ইসলামি, ১৪২২ হি./২০০২ খ্রি.।
  • খাওয়ারিযমী, মুওয়াফাক ইবনে আহমাদ, মানাকিব, তাহকিক: শেখ মালিক আল-মাহমুদী, মুআসসেসেয়ে নাশরে ইসলামি, দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৪১১ হি.।
  • রাহিমী ইস্ফাহানী, গোলাম হুসাইন, বেলায়াত ওয়া রাহবারি, তাফরেশ, ইন্তেশারাতে আসকারিয়া, ১৩৭৪ ফার্সি সন।
  • যামাখশারী, মাহমুদ, আল-কাশ্শাফ আন হাকায়েকি গওয়ামিয আত তানযীল, বৈরুত, দারুল কিতাব আল-আরাবী, ১৪০৭ হি.।
  • সুয়ুতি, জালালুদ্দীন, আদ দুররুল মানসুর ফি তাফসীরিল মা’সুর, কোম, কিতাব খানেয়ে আয়াতুল্লাহ মারআশি নাজাফি, ১৪০৪ হি.।
  • শাবলাঞ্জী, মু’মিন, নুরুল আবসার ফি মানাকিবি আলি বাইতিন নাবিয়্যিল মুখতার, কোম, আশ শরীফ আর রাযী, তারিখ অজ্ঞাত।
  • সাদুক, মুহাম্মাদ ইবনে আলী, আল-আমালি, তেহরান, কিতাবচি, ১৩৭৬ ফার্সি সন।
  • সাদুক, মুহাম্মাদ ইবনে আলী, উয়ুনু আখবারির রিযা (আ.), তাহকিক ওয়া তাসহিহ: মাহদী লাজেভার্দী, তেহরান, নাশরে জাহান, প্রথম সংস্করণ, ১৩৭৮ হি.।
  • সাদুক, মুহাম্মাদ ইবনে আলী ইবনে বাবাওয়াইহ, কামালুদ্দীন ওয়া তামামুন নি’মাহ, তাসহিহ: আলী আকবার গাফ্ফারী, তেহরান, ইসলামিয়্যাহ, দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৩৯৫ হি.।
  • সাফফার, মুহাম্মাদ ইবনে হাসান, বাসায়েরুদ দারাজাত ফি ফাযায়েলি আলে মুহাম্মাদ (স.), তাহকিক ওয়া তাসহিহ: মোহসেন কুচে বাগি, কোম, মাকতাবা আয়াতুল্লাহ মার'আশি নাজাফি, দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৪০৪ হি.।
  • তাবাতাবায়ী, মুহাম্মাদ হুসাইন, আল-মীযান ফি তাফসীরিল কুরআন, বৈরুত, মুআসসিসাতুল আ’লামি লিল মাতবুআত, ১৩৯০ হি.।
  • তাবারসী, ফাযল ইবনে হাসান, মাজমাউল বায়ান ফি তাফসীরিল কুরআন, মুকাদ্দামা: মুহাম্মাদ জাওয়াদ বালাগি, তেহরান, নাসের খসরু, ১৩৭২ ফার্সি সন।
  • তাবারী আমুলী, ইমাদুদ্দীন মুহাম্মাদ ইবনে আবিল কাসেম, বিশারাতুল মুস্তাফা লি শীয়াতিল মুর্তাযা, নাজাফ, আল-মাক্তাবাতুল হায়দারিয়্যাহ, দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৩৮৩ হি.।
  • তাবারী, মুহিবুদ্দীন, যাখায়েরুল উকবা ফি মানাকিবি যাউয়িল কুরবা, কায়রো, মাকতাবাতুল কুদসি, ১৩৫৪ হি.।
  • তাবারী আমুলী, মুহাম্মাদ ইবনে জারীর, আল-মুস্তারশাদু ফি ইমামাতি আলী আবি আবি তালিব, তাসহিহ: আহমাদ মাহমুদী, কোম, কুশানপুর, ১৪১৫ হি.।
  • তাবারী, মুহাম্মাদ ইবনে জারীর, তারিখুল উমাম ওয়াল মুলুক, তাসহিহ: মুহাম্মাদ আবুল-ফাযল ইব্রাহিম, বৈরুত, দারুত তুরাস, ১৩৮৭ হি./১৯৬৭ খ্রি.।
  • তুসী, মুহাম্মাদ ইবনে হাসান, আল-আমালি, তাসহিহ: মুআসসিসাতুল বা'আসাহ, কোম, দারুস সাকাফাহ, ১৪১৪ হি.।
  • আসিমী, আহমাদ ইবনে মুহাম্মাদ, আল-আসলুল মুসাফ্ফা মিন তাহযীবি যাইনিল ফাতা ফি শারহি সূরা হাল আতা, তাহকিক: মুহাম্মাদ বাকের মাহমুদী, কোম, মাজমাউ ইহিয়ায়িস সাকাফা, ১৪১৮ হিজরি।
  • আইয়াশি, মুহাম্মাদ ইবনে মাসউদ, তাফসীরুল আইয়াশি, তাসহিহ: সাইয়্যেদ হাশেম রাসুলি মাহাল্লাতি, তেহরান, আল-মাতাবাআতুল ইলমিয়্যাহ, ১৩৮০ হি.।
  • ফাত্তাল নিশাপুরী, মুহাম্মাদ ইবনে আহমাদ, রাওযাতুল ওয়ায়েযীন ওয়া বাসীরাতুল মুতা’যীন, কোম, ইন্তেশারাতে রাযী, ১৩৭৫ ফার্সি সন।
  • ফাখরে রাযী, মুহাম্মাদ ইবনে উমর, তাফসীরুল কাবীর (মাফাতিহুল গায়েব), বৈরুত, দারু ইহিয়ায়িত তুরাসিল আরাবি, ১৪২০ হি.।
  • কুম্মী, আলী ইবনে ইব্রাহিম, তাফসীরুল কুম্মী, তাসহিহ: তাইয়্যেব মুসাভি জাযায়েরী, কোম, দারুল কিতাব, ১৪০৪ হি.।
  • কুন্দুযী, সুলাইমান ইবনে ইব্রাহিম, ইয়া নাবিউল মাওয়াদ্দাতি লি জাউয়িল কুরবা, কোম, উসওয়া, ১৪২২ হি.।
  • কুলাইনী, মুহাম্মাদ ইবনে ইয়াকুব, আল-কাফি, তাসহিহ: আলী আকবার গাফফারি এবং মুহাম্মদ আখুন্দি, তেহরান, দারুল কুতুব আল-ইসলামিয়া, ১৪০৭ হি.।
  • গাঞ্জি শাফেয়ী, মুহাম্মাদ ইবনে ইউসুফ, কিফায়াতুত তালিব ফি মানাকিবি আলী ইবনে আবি তালিব, তাসহিহ: মুহাম্মদ হাদী আমিনী, তেহরান, দারু ইহিয়ায়িত তুরাসি আহলুল বাইত, ১৪০৪ হি./১৩৬২ ফার্সি সন।
  • মাজলিসী, মুহাম্মাদ বাকের, বিহারুল আনওয়ার, বৈরুত, দারু ইহিয়ায়িত তুরাসিল আরাবি, ১৪০৩ হি.।
  • মুগনিয়াহ, মুহাম্মাদ জাওয়াদ, আল-হুসাইনু ওয়া বাতালাতু কারবালা, তাসহিহ: সামি উজিরি, কোম, দারুল কিতাব আল-ইসলামি, ১৪২৬ হি./২০০৫ খ্রি.।
  • মুফিদ, মুহাম্মাদ ইবনে মুহাম্মাদ, আল-আমালী, তাহকিক ওয়া তাসহিহ: হুসাইন ওস্তাদ ওয়ালী এবং আলী আকবর গাফফারী, কোম, কনগ্রেয়ে শেখ মুফিদ, প্রথম সংস্করণ, ১৪১৩ হি.।
  • মাকারেম শিরাজী, নাসের, তাফসীরে নেমুনেহ, তেহরান, দারুল কুতুব আল-ইসলামিয়্যাহ, ১৩৭৪ ফার্সি সন।
  • আল-নাসায়ী, আহমাদ ইবনে শুয়াইব, আল-সুনানুল কুবরা, তাহকিক: হাসান ইবনে আব্দুল মোনেম আলী খোরাসানী, বৈরুত, মুআসসিসাতুর রিসালাহ, ১৪২১ হি./২০০১ খ্রি.।
  • আল-নাসায়ী, আহমাদ ইবনে শুয়াইব, খাসায়েসু আমির আল-মু’মিনীন আলী ইবনে আবি তালিব, তাহকিক: আহমাদ মিরিন বালুশি, কুয়েত, মাকতাবাতুল মুয়াল্লা, ১৪০৬ হি.।
  • নু’মানী, মুহাম্মাদ ইবনে ইব্রাহিম, আল-গায়বাতু লিল নু’মানী, তাসহিহ: আলী আকবার গাফ্ফারী, তেহরান, নাশরে সাদুক, ১৩৯৭ হি.।
  • নিশাপুরী, মুসলিম ইবনে হিজাজ, সহীহ মুসলিম, তাহকিক: মুহাম্মাদ ফুওয়াদ আব্দুল বাকী, বৈরুত, দারুল ইহিয়ায়িত তুরাসিল আরাবি, তারিখ অজ্ঞাত।
  • «چرا نام امام علی (علیه‌السلام) در قرآن نیست؟», মারকাযুল আল্লামাতুল আসকারি লিদ দিরাসাতিল ইসলামিয়্যাহ, দেখার তারিখ: ৫ শাহরিভার ১৪০২ ফার্সি সন।