নামায

wikishia থেকে

নামায; মুসলমানদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত; যা কিছু জিকির ও কার্যক্রমের মধ্যে সীমাবদ্ধ। রেওয়ায়েতে নামাযকে ‘দ্বীনের স্তম্ভ’ এবং ‘আন্যান্য আমল কবুলের শর্ত’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। নামাযের বিশেষ কিছু আহকাম ও নিয়মাবলি রয়েছে; যেমন- নামাযের পূর্বে অবশ্যই অযু করতে হবে এবং কিবলামুখী হয়ে নামায আদায় করা জরুরী। নামায ফুরাদা বা একাকী এবং জামাতবদ্ধ দু’ভাবেই আদায় করা সম্ভব, তবে জামাতবদ্ধভাবে আদায়ে বেশি সুপারিশ করা হয়েছে।

নামায ওয়াজিব (ফরয) ও মুস্তাহাব দু’ভাগে বিভক্ত। ওয়াজিব নামাযসমূহ হচ্ছে- দৈনন্দিন নামায, আয়াতের নামায, তাওয়াফের নামায, মাইয়্যাতের নামায, পিতামাতার কাযা নামায, নযর, মান্নত ও কসমের কারণে যে সব নামায ওয়াজিব হয়ে থাকে। পক্ষান্তরে দৈনন্দিন নফল নামাযসমূহ ও তাহাজ্জুদের নামায হচ্ছে মুস্তাহাব নামাযের অন্তর্ভূক্ত।

রেওয়ায়েতে নামায পরিত্যাগ ও নামাযের প্রতি অবহেলার মারাত্মক পরিণতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে; সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে পরকালে আহলে বাইতের (আ.) শাফায়াত থেকে বঞ্চিত হওয়া। নামায আদায়ে বিলম্ব ও গড়িমসি করা এবং মনোযোগ বিহিন অবস্থায় নামায আদায় করা হচ্ছে নামাযের প্রতি অবহেলার অন্যতম নমুনা হিসেবে গণ্য। অনুরূপভাবে আল্লাহর স্মরণ, শিরক ও মূর্তিপূজার বিরোধীতা এবং ফিৎনা ও ফ্যাসাদ থেকে রক্ষা প্রভৃতি হচ্ছে নামায ওয়াজিব হওয়ার হিকমতের অন্তর্ভূক্ত।

অন্যান্য ধর্মেও নামাযের বিধান রয়েছে; যদিও নিয়ম ও পদ্ধতি হচ্ছে সে সব ধর্মের শরিয়াত অনুযায়ী।

গুরুত্ব ও ফজিলত

নামায হচ্ছে মুসলমানদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত; যা পবিত্র কুরআনে ৯৮ বার{১} বর্ণিত হয়েছে।{২} পবিত্র কুরআনের আয়াত অনুযায়ী নামায হচ্ছে গুনাহ হতে মুক্তির ঢালস্বরূপ,{৩} সফলতার মাধ্যম,{৪} বিপদাপদে সহায়ক,{৫} নবী-রাসূলদের প্রতি আল্লাহর সর্বাধিক সুপারিশ{৬} প্রভৃতি।

নামায ইসলামের অন্যতম মৌলিক বিধান; এটা এমনই এক আবশ্যকীয় ইবাদত যা ফিকাহবিদগণের দৃষ্টিতে কোন অবস্থানে পরিত্যাগ করা জায়েয নয়।{৯} নামায পরিত্যাগ হচ্ছে কবিরা গুনাহ{১০} এবং কুফর ও মুনাফেকির আলামত।{১১} ওসায়েলুশ শিয়া এবং মুস্তাদরাকুল ওসায়েল হাদীস গ্রন্থে ১১৬০০ বেশি হাদীস ও রেওয়ায়েত শুধুমাত্র নামায সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে।{১২} অধিকাংশ ফিকাহ বিষয়ক গ্রন্থাবলিতে কিতাবুস সালাত নামক অধ্যায় রয়েছে, যেখানে নামায ও নামায বিষয়ক মাসআলা মাসায়েল সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।{১৩}

নামায বিষয়ক প্রচুর লেখনি প্রকাশিত হয়েছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে বিগত ১৯৯৮ সনের শেষ নাগাদ প্রায় ২ হাজারের অধিক বই ও প্রবন্ধ রচিত হয়েছে এবং অসংখ্য কবিতা ও গজলও রয়েছে।{১৪} ২০১৯ সাল পর্যন্ত সারা বিশ্বে ৩৬ লক্ষ মসজিদ নামায আদায়ের জন্য নির্মিত হয়েছে।{১৫} এছাড়া বিভিন্ন মহাসড়ক, ভবন ও অন্যান্য স্থানে নামায আদায়ের জন্য ‘নামাযখানা’র ব্যবস্থা রয়েছে।

বিশিষ্ট হাদীস গবেষক হযরত আয়াতুল্লাহ রেই শাহরি উল্লেখ করেছেন: রাসূলের (সা.) নবুয়ত ঘোষণার প্রথম দিকেই মক্কাতে নামায ওয়াজিব ঘোষণা করা হয়।{১৬} বিহারুল আনওয়ারে বর্ণিত হাদীসের আলোকে রাসূলুল্লাহ (সা.) বে’সাতের (নবুয়ত ঘোষণার) একদিন পর তিনি হযরত আলী (আ.) ও খাদিজাতুল কোবরাকে (রা.) সাথে নিয়ে নামায আদায় করেছেন।{১৭}

রেওয়ায়েতের পরিভাষায় ‘নামায’

হাদীস ও রেওয়ায়েতে নামাযকে বিভিন্ন পরিভাষার মাধ্যমে পরিচিত করা হয়েছে; তম্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-

  • দ্বীনের স্তম্ভ{১৮}
  • আল্লাহর সর্বপ্রথম ওয়াজিব বিধান{১৯}
  • পরকালে সর্বপ্রথম যে বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে{২০}
  • মু’মিনের মিরাজ{২১}
  • ঈমানের পরিচয়{২২}
  • আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের সর্বোত্তম মাধ্যম{২৩}
  • বেহেশতের চাবি{২৪}
  • প্রকৃত শিয়াদের চেনার মাধ্যম{২৫}
  • দোয়া কবুলের মাধ্যম{২৬}
  • আত্মার পরিশুদ্ধি অর্জনের মাধ্যম{২৭}
  • শয়তোনের মোকাবেলার দূর্গ{২৮}
  • গুনাহের কাফফারা{২৯}
  • শয়তান দূরিকরণের উপায়{৩০}
  • পুলসিরাত অতিক্রমের সনদ{৩১}

নামায আদায়ের নিয়ম;

প্রথম রাকাত

সর্বপ্রথম অযু করতে হবে। অতঃপর কিবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে নিয়ত করতে হবে। এরপর তাকবিরাতুল এহরাম উচ্চারণ করতে হবে অর্থাৎ দু’হাতকে কান বরাবর উত্তোলন করে ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনি উচ্চারণ করতে হবে। এরপর সূরা ফাতেহা পাঠ শেষে অপর একটি সূরা তেলাওয়াত করা জরুরী। অতঃপর রুকুতে যেতে হবে এবং রুকুর জিকির পাঠ শেষে সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে এবং তারপর সেজদাতে যেয়ে সেজাদার জিকির পাঠ করতে হবে এবং সেজদা থেকে উঠে দু’হাটুর উপর বসতে হবে এবং আবার একই উপায়ে দ্বিতীয় সেজদা করতে হবে।{৩২} রুকুর জিকির হচ্ছে-

«سُبحانَ رَبّیَ العظیمِ و بِحَمدِه»  এবং সেজদার জিকির হচ্ছে-

«سُبحانَ رَبّیَ الاَعلیٰ وَ بِحَمدِه» অথবা রুকু ও সেজদাতে তিনবার ‘সুবহান আল্লাহ’ পাঠ করা যথেষ্ট।{৩৩}

দ্বিতীয় রাকাত

প্রথম রাকাতের দ্বিতীয় সেজদা শেষে উঠে দাঁড়াতে হবে এবং প্রথম রাকাতের ন্যায় সূরা ফাতিহা পাঠ শেষে অপর একটি সূরা তেলাওয়াত করা জরুরী। অতঃপর কুনুত পাঠ করতে হবে। কুনুত পাঠের সময় হাতদ্বয়ের তালুকে আসমানমুখী করে কুনুতের দোয়া পাঠ করতে হবে। কুনুত শেষে রুকুতে যেতে হবে এবং রুকুর জিকির সম্পন্নের পর প্রথম রাকাতের ন্যায় দু’টি সেজদা আদায় করতে হবে।{৩৪} কুনুতের দোয়া হচ্ছে-

«رَبَّنا آتِنا فِی الدُّنْیا حَسَنَةً وَ فِی الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَ قِنا عَذابَ النَّار»

অথবা অন্য কোন দোয়া ও জিকির পাঠ করা যথেষ্ট।

তাশাহহুদ

দ্বিতীয় রাকাতের দ্বিতীয় সেজদা সম্পন্নের পর তাশাহহুদ পাঠ করতে হবে।{৩৫} তাশাহহুদ হচ্ছে এরূপ-

اَشْهَدُ اَنْ لااِلهَ اِلاَّ الله وَحْدَهُ لاشَرِیكَ لَهُ، وَاَشْهَدُ اَنَّ مُحَمَداً عَبْدُهُ وَ رَسُولُه، اَلّلهُمَّ صَلِّ عَلی مُحَمَّد وَ آلِ مُحَمَّد

সালাম

দু’রাকাত বিশিষ্ট নামাযে তাশাহহুদের পর সালাম পাঠ করতে হবে।{৩৬} নামাযের সালাম হচ্ছে এরূপ-

اَلسَّلامُ عَلَیْكَ اَیُّهَا النَّبِیُّ وَ رَحْمَةُ الله وَ بَرَکاتُهُ، اَلسَّلامُ عَلَیْنا وَ عَلی عِبادِ الله الصّالِحینَ، اَلسَّلامُ عَلَیكُمْ وَ رَحْمَةُ الله وَ بَرَکاتُهُ

তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাত

নামায যদি তৃতীয় কিংবা চতুর্থ রাকাত বিশিষ্ট হয়, তাহলে তাশাহহুদের পর দাঁড়াতে হবে এবং দাঁড়িয়ে তাসবিহহাতে আরবাআ পাঠ করতে হবে। তাসবিহহাতে আরবাআ হচ্ছে এরূপ- سُبْحانَ الله وَ الْحَمْدُ لِله وَ لا اِلهَ اِلّا الله وَ الله أكْبَر

এরপর রুকু ও সেজদা সম্পন্ন করতে হবে। যদি নামায তিন রাকাত বিশিষ্ট হয় তাহলে তাশাহহুদ ও সালামের পর নামায শেষ করতে হবে। আর যদি চার রাকাত বিশিষ্ট হয় তাহলে তৃতীয় রাকাতের দ্বিতীয় সেজদার পর দাঁড়াতে হবে এবং তাসবিহহাতে আরবাআ সম্পন্ন করে রুকু ও দু’টি সেজদা শেষ আদায় করতে হবে। এরপর তাশহহুদ ও সালামের মাধ্যমে নামাম সম্পন্ন করতে হবে।{৩৭}

নামাযের আহকাম ও নিয়মাবলি;

ওয়াজিবাতে নামায

ওয়াজিবাতে নামায হচ্ছে নামাযের মূল অংশসমূহ; ফিকাহবিদগণের বর্ণনা অনুযায়ী এ অংশসমূহ হচ্ছে- নিয়্যাত, কিয়াম (দণ্ডায়মান হওয়া), তাকবিরাতুল এহরাম, রুকু, সেজদা, হামদ ও অপর একটি সূরা পাঠ, জিকির (রুকু ও সেজদার জিকির), তাশাহহুদ, সালাম, তারতীব (পর্যায়ক্রম) এবং মুয়ালাত (ধারাবাহিকতা)।{৩৮}

ওয়াজিবাতে নামায দু’ভাগে বিভক্ত; যথা: রুকুন ও গাইরে রুকুন। প্রথম ৫টি অংশ হচ্ছে নামাযের রুকুন অর্থাৎ যদি এ ৫টি অংশের কোন একটি ইচ্ছাকৃত কিংবা ভুলবশত বাদ পড়ে যায়; তাহলে নামায বাতিল হিসেবে গণ্য হবে। আর অপর ৬টি হচ্ছে গাইরে রুকুন অর্থাৎ যদি এ অংশগুলোর কোন একটি শুধুমাত্র ইচ্ছাকৃতভাবে আদায় করা না হয় কিংবা বেশি হয়ে যায়; তাহলে নামায বাতিল হয়ে যাবে।{৩৯}

নামায বাতিলকারী কারণসমূহ

নামায নিম্নের যে কোন একটি কারণে বাতিল হিসেবে গণ্য হবে।

  • হাদাসে আকবার (যে সব কারণে গোসল ফরজ হয়ে যায়) কিংবা হাদাসে আসগার (যে সব কারণে অযু বাতিল হয়ে যায়) সম্পন্ন হলে।
  • কিবলা দিক হতে মুখ ফিরিয়ে নেয়া
  • ইচ্ছাকৃতভাবে কোন কথা বলা
  • উচ্চ স্বরে হাসা
  • তাকাত্তুফ করা অর্থাৎ এক হাতের উপর অপর হাত রাখা
  • পার্থিব কারণে ইচ্ছাকৃত ও শব্দ সহকারে ক্রন্দন করা{৪০}
  • সূরা হামদের পর ‘আমীন’ বলা
  • এমন কিছু সম্পন্ন করা যা নামাযের অবস্থাকে ভেঙ্গে দেয়; যেমন: নামাযের অবস্থাতে লাফলাফি করা কিংবা হাত তালি দেয়া
  • পানাহার
  • দু’রাকাত ও তিন রাকাত বিশিষ্ট নামাযের রাকাতের সংখ্যাতে যদি সন্দেহ দেখা দেয়। একইভাবে চার রাকাত বিশিষ্ট নামাযে প্রথম দু’রাকাতে যদি সন্দেহ হয়।
  • নামাযের রুকুন অংশে যদি ভূলবশত কিংবা ইচ্ছাকৃতভাবে কম-বেশি হয়। একই ভাবে যদি নামাযের গাইরে রুকুন অংশে ইচ্ছাকৃতভাবে কম-বেশি হয়।{৪১}

অন্যান্য আহকাম

  • অযু: নামায আদায়ের ক্ষেত্রে ওয়াজিক হচ্ছে অযু করা।{৪২} তবে বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে অযুর পরিবর্তে তায়াম্মুম করা যাবে; যেমন- যদি পানি পাওয়া না যায়, পানি ব্যবহারে যদি ক্ষতির কারণ হয় কিংবা সময় স্বল্পতার কারণে।{৪৩}
  • নামায আদায়কারীর স্থান: নামায আদায়কারীর স্থান সম্পর্কে কয়েকটি শর্ত বর্ণিত হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে যথাক্রমে- নামাযের স্থানটি মুবাহ হতে হবে অর্থাৎ জবরদখলকৃত যেন না হয়, স্থির হতে হবে, পবিত্র হতে হবে এবং সেজদাতে কপাল রাখার স্থান এবং হাটুর স্থানের মধ্যে চার অঙ্গুলের চেয়ে বেশি কিংবা কম হতে পারবে না।{৪৪}
  • নামায আদায়কারীর পোষাক: পুরুষের লজ্জাস্থান এবং মহিলার সমস্ত শরীর পোষাকে আচ্ছাদিত হওয়া জরুরী। কিন্তু চেহারা এবং দু’হাতের কব্জি পর্যন্ত ও পায়ের পাতাদ্বয় ঠেকে রাখা জরুরী নয়।{৪৫}
  • নামায কিবলামুখী হওয়া আদায় করা ফরজ।{৪৬}
  • মুসাফিরের নামায: মুসাফিরের চার রাকাত বিশিষ্ট নামায দু’রাকাত আদায় করতে হবে।{৪৭} শরিয়াতের দৃষ্টিতে মুসাফির হওয়ার শর্ত হচ্ছে যদি কারও সফরের যাতায়াতের দূরত্ব আট ফারসাক তথা ৪০ থেকে ৪৫ কি:মি: এর চেয়ে বেশি হয়।{৪৮}

নামাযের নিয়মাবলি

নামাযের কিছু বিশেষ নিয়ম ও আদব রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে- সময়মত (আযান দিবার পর বিলম্ব না করে) নামায আদায়, পরিচ্ছন্ন ও সজ্জিত অবস্থায় নামায আদায়, মসজিদ ও জামাতবদ্ধ অবস্থায় নামায আদায়, নামাযের শুরুতে দোয়া করা এবং বিনম্র ও একাগ্রতার সাথে নামায আদায় করা।{৪৯} নামায আদায় শেষে কিছু মুস্তাহাব আমল রয়েছে, যেগুলোকে তাকিবাতে নামায বলা হয়; যেমন: আয়াতুল কুরসি পাঠ করা, তাসবিহ পাঠ করা এবং সেজদায়ে শুকর আদায় করা।{৫০} এ আমলগুলো সম্পর্কে মুফাতিহুল জিনান গ্রন্থে বিস্তারিত বিররণ তুলে ধরা হয়েছে।{৫১}

ওয়াজিব ও মুস্তাহাব নামাযসমূহ

ওয়াজিব নামায হচ্ছে সে সব নামায যা আদায় করা প্রত্যেকের উপর ফরজ ও বাধ্যতামুলক। যদি নির্দিষ্ট সময়ে এ নামাযসমূহ আদায় করা সম্ভব না হয়, তাহলে পরবর্তীতে কাযা আদায় করতে হবে। এ নামাযসমূহ হচ্ছে নিম্নরূপ-

১- দৈনন্দিন নামায: দৈনন্দিন নামায হচ্ছে ১৭ রাকাত। প্রতিদিন পাচ ওয়াক্তে যথা: ফজর, যোহর, আসর, মাগরিব ও এশাতে এ ১৭ রাকাত নামায আদায় করা প্রত্যেকের উপর বাধ্যতামুলক।

২- আয়াতের (নিদর্শনের) নামায: এ নামায বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগের সময় যেমন: ভূমিকম্প, চন্দ্র গ্রহণ ও সূর্য গ্রহণের সময় পাঠ করা ওয়াজিব।

৩- মাইয়াতের নামায: প্রত্যেক মুসলমান ব্যক্তির দাফনের পূর্বে যে নামায আদায় করা হয় তাকে মাইয়াতের নামায বলা হয়। এ নামায আদায় ব্যতিত কাউকে দাফন করা জায়েয নয়।

৪- তাওয়াফের নামায: কাবা ঘর তাওয়াফের পর যে নামায আদায় করা ওয়াজিব হয়।

৫- মৃত পিতামাতার কাযা নামায; যা পরিবারের বড় ছেলের উপর আদায় করা ফরয।

৬- নাযর, মান্নত, কসমের কারণে যে নামাযসমূহ ওয়াজিব হয়।{৫২}

মুস্তাহাব নামাযসমূহ

মুস্তাহাব বা নফল নামায হচ্ছে ঐ সব নামায যা আদায় করা ওয়াজিব নয়। তবে এ নামাযসমূহ আদায়ের জন্য বিশেষ সুপারিশ করা হয়েছে; যেমন: দৈনন্দিন নফল নামাযসমূহ ও তাহাজ্জুদের নামায।{৫৩} শুধুমাত্র বেতের নামায ব্যতিত সব মুস্তাহাব নামাযই দুই রাকাত বিশিষ্ট।{৫৪}

নামাযের প্রতি অবহেলার পরিণাম

ইসলামে নামাযের প্রতি অনিহা ও অবহেলার মারাত্মক প্রতিফল ও পরিণামের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-

আহলে বাইতের (আ.) শাফায়াত থেকে বঞ্চিত হওয়া: হযরত আবু বাসির (রা.) বর্ণনা করেছেন যে, যখন ইমাম জাফর সাদীক (আ.) মুমুর্ষ অবস্থায় উপনীত হন, তখন স্বীয় আপনজনদের কাছে ডেকে বলেন: যারা নামাযকে অবহেলা করবে, আমাদের শাফায়াত পরকালে তাদের ভাগ্যে জুটবে না।{৫৬}

পনরটি বিপদাপদের সম্মুখীন হওয়া: মহানবী (সা.) এক হাদীসে হযরত ফাতিমা যাহরাকে (আ.) উদ্দেশ্য করে বলেন যে, যারা নামাযের প্রতি অবহেলা প্রদর্শন করবে, আল্লাহ তাদেরকে পনরটি বিপদের সম্মুখীন করবেন।{৫৭}

১- জীবন বরকতশুণ্য হবে

২- সম্পদ বরকতহীন হয়ে যাবে

৩- চেহারার সৌন্দর্য ম্লান হয়ে যাবে

৪- আমলসমূহ নিস্ফল হয়ে পড়বে

৫- দোয়া কবুল হবে না

৬- অন্যের দোয়া থেকে বঞ্চিত হবে

৭- অপমানের মৃত্যুবরণ করবে

৮- ক্ষুধার্ত অবস্থায় মৃত্যুর শিকার হবে

৯- তৃষ্ণার্ত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে; সে যতই পানি পান করবে তার তৃষ্ণা নিবারণ হবে না।

১০- কবরে আযাবের শিকার হবে

১১- কবর অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকবে

১২- কবরে পিষ্ঠ হবে

১৩- কিয়ামতের দিন ফেরেশতারা তাকে টেনে টেনে নিয়ে যাবে এবং লোকেরা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখবে।

১৪- পরকালের বিচারে কঠোরতার সম্মুখীন হবে

১৫- আল্লাহ এমন ব্যক্তির প্রতি রহমতের দৃষ্টি দিবেন না এবং সে কঠিন আযাবের শিকার হবে।{৬৮}

কোন কারণ ছাড়াই নামায আদায়ে বিলম্ব করা{৫৯} এবং মনোযোগ ও একাগ্রতা ব্যতিরেকে নামায আদায় করা নামাযের প্রতি অবহেলা ও অনিহার কারণ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।{৬০}

শিয়া মাযহাব এবং সুন্নী মাযহাবসমূহের মধ্যে নামাযের তারতম্য

শিয়া মাযহাব এবং আহলে সুন্নতের চারটি মাযহাবের নামাযের মধ্যে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সামান্য তারতম্য রয়েছে; নিম্নে সেগুলোর সামগ্রিক এক চিত্র তুলে ধরা হলো-

শিরোনাম শিয়া মাযহাব মালেকি মাযহাব শাফেয়ী মাযহাব হানাফী মাযহাব হাম্বলী মাযহাব
সূরা ফাতিহা পাঠ প্রথম ও দ্বিতীয় রাকাতে ওয়াজিব ওয়াজিব ও মুস্তাহাব উভয় নামাযের প্রত্যেক রাকাতে ওয়াজিব ওয়াজিব ও মুস্তাহাব উভয় নামাযের প্রত্যেক রাকাতে ওয়াজিব প্রথম ও দ্বিতীয় রাকাতে ওয়াজিব প্রত্যেক রাকাতে ওয়াজিব{৬১}
সূরার শুরুতে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম পাঠ সূরার অংশবিশেষ এবং পাঠ করা ওয়াজিব পাঠ না করা মুস্তাহাব সূরার অংশবিশেষ এবং পাঠ করা ওয়াজিব পাঠ না করা জায়েয সূরার অংশবিশেষ এবং পাঠ করা ওয়াজিব{৬২}
কুনুত পাঠ সমস্ত নামাযসমূহে পাঠ করা মুস্তাহাব শুধুমাত্র ফজরের নামাযে জায়েয শুধুমাত্র ফজরের নামাযে জায়েয শুধুমাত্র বেতরের নামাযে জায়েয শুধুমাত্র বেতরের নামাযে জায়েয{৬৩}
নামাযের কিছু অংশ উচ্চৈ:স্বরে কিংবা ক্ষীণস্বরে পাঠ ফজর, মাগরিব ও এশার নামায উচ্চৈ:স্বরে এবং যোহর ও আসরের নামায ক্ষীণস্বরে পাঠ করা ওয়াজিব ফজর, মাগরিব ও এশার নামায উচ্চৈ:স্বরে পাঠ করা মুস্তাহাব ফজর, মাগরিব ও এশার নামায উচ্চৈ:স্বরে এবং যোহর ও আসরের নামায ক্ষীণস্বরে পাঠ করা ওয়াজিব কোন নামাযই উচ্চৈ:স্বরে কিংবা ক্ষীণস্বরে পাঠ করা মুস্তাহাব কিংবা ওয়াজিব নয় ফজর, মাগরিব ও এশার নামায উচ্চৈ:স্বরে পাঠ করা জরুরী{৬৪}
হাত বাধা হারাম এবং নির্ভরযোগ্য বর্ণনার ভিত্তিতে নামায বাতিলের কারণ জায়েয; ওয়াজিবও নয় মুস্তাহাবও নয় মুস্তাহাব ও সুন্নত মুস্তাহাব ও সুন্নত মুস্তাহাব ও সুন্নত{৬৫}
সুরা ফাতিহার পর ‘আমীন’ উচ্চারণ করা হারাম এবং নামায বাতিলের কারণ মুস্তাহাব মুস্তাহাব মুস্তাহাব মুস্তাহাব{৬৬}
রুকু এবং রুকুতে স্থির থাকা এমনভাবে রুকুতে যাওয়া যাতে হাতদ্বয় হাটু পর্যন্ত পৌঁছায় এবং রুকুতে স্থির থাকা ওয়াজিব এমনভাবে রুকুতে যাওয়া যাতে হাতদ্বয় হাটু পর্যন্ত পৌঁছায় এবং রুকুতে স্থির থাকা ওয়াজিব এমনভাবে রুকুতে যাওয়া যাতে হাতদ্বয় হাটু পর্যন্ত পৌঁছায় এবং রুকুতে স্থির থাকা ওয়াজিব শুধুমাত্র ঝুকে যাওয়া যথেষ্ট এবং রুকুতে স্থির থাকা জরুরী নয়।  এমনভাবে রুকুতে যাওয়া যাতে হাতদ্বয় হাটু পর্যন্ত পৌঁছায় এবং রুকুতে স্থির থাকা ওয়াজিব{৬৭}
রুকুর জিকির পাঠ করা ওয়াজিব ওয়াজিব না, মুস্তাহাব ওয়াজিব না, মুস্তাহাব ওয়াজিব না, মুস্তাহাব ওয়াজিব{৬৮}
রুকুর পর কিয়াম ওয়াজিব ওয়াজিব ওয়াজিব ওয়াজিব ওয়াজিব{৬৯}
সেজদার অংশসমূহ সেজদার সময় কপাল, দু’হাতের তালুদ্বয়, দু’হাটু, দু’পায়ের বুড়া অঙ্গুলের মাথা মাটিতে স্পর্শ করা ওয়াজিব সেজদাতে কপাল মাটিতে থাকা জরুরী এবং বাকী অংশগুলো মুস্তাহাব সেজদাতে কপাল মাটিতে থাকা জরুরী এবং বাকী অংশগুলো মুস্তাহাব সেজদাতে কপাল মাটিতে থাকা জরুরী এবং বাকী অংশগুলো মুস্তাহাব সেজদাতে শরীরের সাতটি অংশ ছাড়াও নাকের ডগাও মাটিতে স্পর্শ করা জরুরী{৭০}
সেজদাতে স্থির থাকা জরুরী জরুরী জরুরী জরুরী জরুরী{৭১}
সেজদায় জিকির পাঠ ওয়াজিব মুস্তাহাব মুস্তাহাব মুস্তাহাব মুস্তাহাব{৭২}
তাশাহহুদ পাঠ নামাযের মধ্যবর্তী অংশে ও শেষাংশে ওয়াজিব নামাযের মধ্যবর্তী অংশে ও শেষাংশে মুস্তাহাব নামাযের মধ্যবর্তী অংশে মুস্তাহাব এবং শেষাংশে ওয়াজিব নামাযের মধ্যবর্তী অংশে ও শেষাংশে মুস্তাহাব নামাযের মধ্যবর্তী অংশে ও শেষাংশে ওয়াজিব{৭৩}
সালাম পাঠ প্রসিদ্ধ ফতোয়া মোতাবেক ওয়াজিব ওয়াজিব ওয়াজিব মুস্তাহাব ওয়াজিব{৭৪}
নামাযের রাকাতের সংখ্যায় সন্দেহ চার রাকাত বিশিষ্ট নামাযে দু’রাকাতের পর সন্দেহের ক্ষেত্রে তুলনামূলক বেশি সংখ্যাকে সঠিক মনে করতে হবে এবং নামায শেষে এহতিয়াতের নামায আদায় ওয়াজিব নামাযের ক্ষেত্রে তুলনামূলক কম সংখ্যাকে সঠিক মনে করে নামায শেষ করতে হবে ওয়াজিব নামাযের ক্ষেত্রে তুলনামূলক কম সংখ্যাকে সঠিক মনে করে নামায শেষ করতে হবে ওয়াজিব নামাযের ক্ষেত্রে যদি প্রথমবার সন্দেহের বশবর্তী হয়, তবে নামাযকে আবার পুনরায় আদায় করতে হবে এবং পরবর্তী সন্দেহের ক্ষেত্রে তুলনামূলক কম সংখ্যাকে সঠিক মনে করা জরুরী ওয়াজিব নামাযের ক্ষেত্রে তুলনামূলক কম সংখ্যাকে সঠিক মনে করে নামায শেষ করতে হবে{৭৫}
মুসাফিরের নামায চার রাকাত বিশিষ্ট নামায দু’রাকাত আদায় করতে হবে অর্ধেক অথবা কামেল উভয় অবস্থায়ই সঠিক অর্ধেক অথবা কামেল উভয় অবস্থায়ই সঠিক চার রাকাত বিশিষ্ট নামায দু’রাকাত আদায় করতে হবে অর্ধেক অথবা কামেল উভয় অবস্থায়ই সঠিক{৭৬}
দু’ওয়াক্তের নামায একত্রে পাঠ করা জায়েয সফর অবস্থাতে জায়েয সফর অবস্থাতে জায়েয জায়েয নয় সফর অবস্থাতে জায়েয{৭৭}

নামায ওয়াজিব হওয়ার কারণ

ইমাম রেযা (আ.) থেকে বর্ণিত এক রেওয়ায়েতে উল্লেখ করা হয়েছে: নামায ওয়াজিব হওয়ার কারণসমূহ হচ্ছে- বান্দা যাতে সর্বশক্তিমান আল্লাহর দরবারে আনুগত্য প্রকাশ, শিরক ও মূর্তি পুজার বিরোধীতা, আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্বের কাছে বান্দার চুড়ান্ত বিনয়ের বহি:প্রকাশ, গাফিলতি হতে রক্ষা, আল্লাহর স্মরণ, গুনাহ ও ফিৎনা-ফ্যাসাদ হতে নিরাপদ থাকা প্রভৃতি।{৭৮} এছাড়া তাফসীরে নমুনা গ্রন্থে আত্মার প্রশান্তি, পরিশুদ্ধি, নৈতিকতা, গুনাহ হতে মুক্তিসহ আরও অনেক বৈশিষ্ট্যকে নামায ওয়াজিব হওয়ার নেপথ্য কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।{৭৯}

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে উল্লেখ করেছেন: وَأَقِمِ الصَّلَاةَ لِذِكْرِي  অর্থাৎ আমার স্মরণার্থে নামায প্রতিষ্ঠা কর। (সূরা ত্বহা, আয়াত নং ১৪) হযরত ফাতিমা যাহরা (আ.) নামায ওয়াজিব হওয়া সম্পর্কে বলেছেন: আল্লাহ নামাযকে ওয়াজিব করেছেন যাতে বান্দারা অহংকার থেকে দূরে থাকতে পারে।{৮২} নাহযুল বালাগাতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, নামায আত্মপ্রীতি ও আত্ম অহংকারকে দমন করে।{৮৩}

অন্যান্য ধর্মে নামায

নামাযের বিধান সমস্ত ধর্মের মধ্যে রয়েছে; যদিও তা আদায়ের পদ্ধতি ও নিয়মের মধ্যে পার্থক্য বিদ্যমান।{৮৪} ইহুদি ধর্মে নামাযকে ‘তিফীলা’ (যার বহুবচন হচ্ছে তিফীলিম বা তিফীলুত) বলা হয় এবং এ বিধানের পদ্ধতি ও নিয়ম ‘মিশনা’ (ইহুদিদের দোয়া ও প্রার্থনার বই) কিতাবে বর্ণিত হয়েছে। ‘আসমানি ধর্মসমূহে নামাযের পদ্ধতি’ শিরোনামে এক প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়েছে- ইহুদি ধর্মে প্রতিদিন তিনবার নামায আদায়ের বিধান রয়েছে। শনিবার এবং অন্যান্য পবিত্র দিবসসমূহে খ্রিষ্টানদের অর্থোডক্স ও অন্যান্য ডানপন্থিরা ‘মুসাফ’ নামে এক ধরনের নামায আদায় করে থাকে।

খ্রিষ্টান ধর্মে ত্রিত্ববাদ তথা প্রভূ, পুত্র (ঈসা) এবং রুহুল কুদুসের (জিবরাঈলের) সাথে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার নিমিত্তে নামাযের বিধান রয়েছে। এছাড়া খ্রিষ্টান ধর্মের বিভিন্ন ফেরকার মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতিতে নামাযের প্রচলন রয়েছে। এ সব ধর্মে নামায একাকী কিংবা সমষ্টিগত উভয় পদ্ধততেই পালন করা হয়।{৮৬}

গ্রন্থ পরিচিতি

নামায সম্পর্কে অনেক মূল্যবান গ্রন্থ রচিত হয়েছে; সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-

  • আদাবে নামায; প্রণেতা: হযরত ইমাম খোমেনী (রহ.)। এ কিতাবে নামাযের নিয়ম-কানুন এবং নামাযের অন্তর্নিহিত রহস্য ও ভাবার্থের বিস্তারিত ব্যাখ্যা তুলে ধরা হয়েছে।
  • আসরারুর সালাত; প্রণেতা মীর্যা জাওয়াদ মালেকী তাবরিযি। এ কিতাবে কিভাবে নামাযের পরিচিতি জানা যাবে এবং নামাযের মাধ্যমে আত্মার পরিশুদ্ধি, অন্তরের একাগ্রতা ও আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে।
  • আসরারে নামায- প্রণেতা: হযরত ইমাম খোমেনী (রহ.)। এ বইতে নামাযের চমকপ্রদ আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যা উপস্থাপন করা হয়েছে। আযান থেকে শুরু করে নামাযের তাশাহহুদ ও সালাম পর্যন্ত বিভিন্ন আধ্যাত্মিক বিষয়াদি সম্পর্কে ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়েছে।
  • আস সালাম ফিল কিতাব ওয়াস সুন্নাহ; প্রণেতা: মুহাম্মাদ মুহাম্মাদি রেই শাহরি। এ কিতাবে পবিত্র কুরআন ও হাদীসের আলোকে নামাযের গুরুত্ব ও তাৎপর্য, নামাযের হিকমাত ও শ্রেষ্ঠত্ব, এবং নামাযের সময়, নিয়ম ও আদব প্রভৃতি সম্পর্কে প্রয়োজনীয় বিবরণ উল্লেখ করা হয়েছে।
  • রাযহায়ে নামায; প্রণেতা: হযরত আয়াতুল্লাহ জাওয়াদি আমুলী। এ কিতাবে নামায এবং নামাযের দার্শনিক ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।