ইমামিয়া
- নিবন্ধটি ১২ ইমামি শিয়া সম্পর্কিত, শিয়া মাযহাব সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে শিয়া নিবন্ধটি দেখুন ।
ইমামিয়া (আরবি: امامیة ); ইসনা আশারিয়া শিয়া বা ১২ ইমামি শিয়া; শিয়া মাযহাবের ফেরকাগুলোর মাঝে সবচেয়ে বড় ফেরকা। ইমামি শিয়াদের বিশ্বাস হলো, মহানবি হযরত মুহাম্মাদ (স.)-এর পর সমাজের নেতৃত্ব দানকারী ব্যক্তি হলেন ইমাম এবং তিনি মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে মনোনীত। হাদীসে গাদীরসহ বিভিন্ন হাদীসের ভিত্তিতে ১২ ইমামি শিয়ারা আলী ইবনে আবি তালিব (আ.)-কে মহানবি (স.) এর খলিফা ও জা-নশীন এবং প্রথম ইমাম হিসেবে জ্ঞান করে। তাদের বিশ্বাস ইমামের সংখ্যা ১২ জন এবং তাঁদের সর্বশেষ জন হবেন ইমাম মাহদি (আ.); তিনি বর্তমানে জীবিত এবং গায়বাত তথা লোকচক্ষুর আড়ালে রয়েছেন। যাইদিয়া ও ইসমাঈলিয়া অপর দুই শিয়া মাযহাব; ইমামিয়া শিয়াদের ন্যায় তারা ১২ জন ইমামের প্রতি আকিদা পোষণ করে না, একইভাবে তারা ইমামদের সংখ্যা ১২ তে সীমিত বলেও বিশ্বাস করে না।
ইয়ামিয়া শিয়াদের ৫টি মৌলিক আকিদা হল; তারা অন্যান্য মুসলমানদের মত তাওহিদ (মহান আল্লাহর একত্ববাদ), নবুয়্যত ও মায়াদ (কিয়ামত)-কে উসুলে দ্বীন তথা ধর্মের মৌলিক বিষয় বলে জানে। এর পাশাপাশি আদল (আল্লাহর ন্যায়পরায়ণতা) এবং ইমামতকেও উসুলে দ্বীনের অংশ বলে মনে করে। আর এ আকিদায় তারা আহলে সুন্নাত থেকে ভিন্ন। ইমামিয়াদের আরেকটি আকিদা হল রাজআত; কিছু কিছু মৃত ব্যক্তির ইমাম মাহদী (আ.)-এর আবির্ভাব পরবর্তী সময়ে পূনরায় এ পৃথিবীতে প্রত্যাবর্তন করাকে বোঝায়।
ইমামিয়া শিয়ারা অন্যান্য মুসলমানদের ন্যায় ইবাদত, লেনদেন, খুমস-যাকাত ইত্যাদি বিষয়ে শরয়ী বিধানের অনুসরণ করে থাকে। একইভাবে তারা তাদের কালাম, ফিকাহ, নৈতিকতা ইত্যাদি বিষয়ের জন্য ৪ সূত্র ভিত্তিক দলীলের উপর নির্ভরশীল; কুরআন, আল্লাহর নবি (স.) ও ১২ ইমাম (আ.) থেকে বর্ণিত রেওয়ায়েত, আকল (বুদ্ধিবৃত্তি) ও ইজমা। শেইখ তুসী, আল্লামা হিল্লি ও শেইখ মুর্তাযা প্রমুখ প্রসিদ্ধ শিয়া ফকীহদের অন্যতম। এছাড়া খাজা নাসিরুদ্দীন তুসী ও আল্লামা হিল্লি’র নাম ইমামিয়া শিয়াদের প্রখ্যাত কালাম শাস্ত্রবিদদের মাঝে অন্যতম।
৯০৭ হিজরীতে শাহ ইসমাঈল সাফাভি ক্ষমতা দখলের পর ইরানে ইমামিয়া মাযহাবকে রাষ্ট্রীয় মাযহাব হিসেবে স্বীকৃতি দান করা হয়। ইরানে শিয়া মাযহাবের প্রসারের ক্ষেত্রে সাফাভিদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান বর্তমান ইরানের রাজনৈতিক সরকার ব্যবস্থা; এ শাসন ব্যবস্থা ১২ ইমামি শিয়াদের মৌলিক আকিদা ও শিয়া ফিকাহ’র উপর নির্ভরশীল।
ঈদুল ফিতর, ঈদুল আযহা ও ঈদে মীলাদুন্নাবি (স.) সহ ঈদে গাদীর, আলী ইবনে আবি তালিব (আ.)-এর জন্মবার্ষিকী, হযরত ফাতেমা যাহরা (সা. আ.)-এর জন্মদিবস, ১৫ই শাবান ইত্যাদি ইমামিয়া শিয়াদের গুরুত্বপূর্ণ আনন্দ দিবসগুলোর অন্যতম। নিষ্পাপ ইমামগণ (আ.) বিশেষ করে মহররম মাসে ইমাম হুসাইন ইবনে আলী (আ.) ও তাঁর সাথীদের শাহাদাতের স্মরণে শোক পালন তাদের গুরুত্বপূর্ণ শোক দিবসগুলোর অন্যতম।
বিশ্বে ১২ ইমামি শিয়াদের সঠিক পরিসংখ্যান সম্পর্কে সুনিশ্চিত কোন তথ্য মজুদ না থাকলেও বিদ্যমান পরিসংখ্যানে যাইদি ও ইসমাঈলি শিয়ারাও অন্তর্ভুক্ত। কিছু কিছু পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে বিশ্বে শিয়াদের মোট সংখ্যা ১৫৪ থেকে ২০০ মিলিয়ন (১৫.৪ কোটি থেকে ২০ কোটি); যা মোট মুসলিম জনসংখ্যার শতকরা ১০ থেকে ১৩ ভাগ। অপর কিছু পরিসংখ্যানে ৩০০ মিলিয়ন (৩০ কোটি), অর্থাৎ মুসলিম জনগোষ্ঠীর শতকরা ১৯ ভাগ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। শিয়াদের অধিকাংশই (শতকরা ৬৮ থেকে ৮০ ভাগ) ইরান, ইরাক, পাকিস্তান ও ভারতে বসবাস করে।
উৎপত্তি
শিয়াদের উৎপত্তির ইতিহাস সম্পর্কে ভিন্ন ভিন্ন মত রয়েছে; যেমন- মহানবি (স.)-এর জীবদ্দশায়, সাকিফা’র ঘটনার পর, উসমান হত্যার পর, হাকামিয়্যাতের ঘটনার পর ইত্যাদি।[১] হিজরী ১৫ শতাব্দির বিশিষ্ট মুফাসসির ও দার্শনিক সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ হুসাইন তাবাতাবায়ী’র ভাষ্য হল, প্রথম অবস্থায় ‘আলীর শিয়া’নামে প্রসিদ্ধি লাভকারী শিয়াদের উৎপত্তি স্বয়ং মহানবি (স.)-এর জীবদ্দশাতেই।[২]
ইসলাম ধর্মের আগমনের শুরু থেকে কয়েক শতাব্দি পর্যন্ত ‘শিয়া’ পরিভাষাটি শুধু আল্লাহ কর্তৃক মনোনীত ইমামদের ইমামতে বিশ্বাস পোষণকারীদের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হত না; বরং আহলে বাইত (আ.)-এর ভক্ত ও যারা হযরত আলী (আ.)-কে উসমানের উপর প্রাধান্য দিত তাদেরকেও ‘আলীর শিয়া' বলে ডাকা হত। [৩] আহলে বাইত (আ.)-এর সাথীদের বেশীরভাগই শেষের দু’টি দলের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।[৪]
বলা হয় যে, হযরত আলী (আ.)-এর যুগ থেকে আকিদাগত শিয়ারা ছিলেন, অর্থাৎ তার অনুসারীদের কারো কারো বিশ্বাস ছিল যে, তিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে ‘ইমামত’ পদের জন্য মনোনীত হয়েছেন।[৫] অবশ্য এদের সংখ্যা ছিল নগন্য।[৬]
ইমাম হাসান ও ইমাম হুসাইন (আলাইহিমাস সালাম)-এর সময়ে শিয়াদের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়, তবে তখনও তাদের সংখ্যা তাদেরকে ধর্মীয় একটি ফির্কাহ নামে নামকরণ করা যায় এমন পর্যায়ে পৌঁছায়নি।[৭] ঐ সময় আহলে বাইত (আ.)-এর অনুসারীদের সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মত, কিন্তু কিছু কিছু রেওয়ায়েতের ভিত্তিতে, যারা আহলে বাইত ঐশী পদ প্রাপ্ত বলে বিশ্বাস রাখতো তাদের সংখ্যা ছিল ৫০ এরও কম।[৮]
হিজরী তৃতীয় শতাব্দির শেষের দিক থেকে ইমামিয়া শিয়ারা অপর শিয়া ফির্কাহগুলো থেকে আলাদাভাবে দৃষ্টিতে আসে। ইমাম হাসান আসকারি (আ.)-এর শাহাদাতের পর একদল শিয়াদের বিশ্বাস ছিল পৃথিবী কখনই ইমাম শূন্য হবে না। তারা ১২তম ইমামের উপস্থিতি এবং তাঁর অন্তর্ধানের উপর বিশ্বাসী ছিল, আর এ দলটি ইমামিয়া শিয়া বা ১২ ইমামি শিয়া নামে প্রসিদ্ধি লাভ করে।[৯] ঐ সময় থেকে পর্যায়ক্রমে শিয়া ফির্কাহ’র অনুসারীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে; এমনভাবে যে, শেইখ মুফিদের ভাষ্যানুযায়ী, তার সময়কালে (৩৭৩ হিজরীতে) অন্যান্য শিয়া ফির্কাহ অপেক্ষা ১২ ইমামি শিয়াদের সংখ্যা ছিল বেশী।
আকিদা
ইয়ামিয়া শিয়াদের মৌলিক আকিদা ৫টি; অন্যান্য মুসলমানদের মত তাওহিদ (মহান আল্লাহর একত্ববাদ), নবুয়্যত ও মায়াদ (কিয়ামত)-এর পাশাপাশি ‘আদল’ (আল্লাহর ন্যায়পরায়ণতা) এবং ইমামতকেও তারা উসুলে দ্বীনের অংশ বলে মনে করে; আর শেষের দু’টি বিষয়ে আকিদা পোষণের ক্ষেত্রে তারা আহলে সুন্নাত থেকে ভিন্ন।[১০] তাদের বিশ্বাস মহানবি (স.) এর পর ইমাম হিসেবে একজন তাঁর (স.) স্থানে স্থলাভিষিক্ত হয়ে তাঁর (স.) মিশনকে অব্যাহত রাখবেন। নবিগণ (আ.) এর মনোনয়নের মতো ইমামের মনোনয়নও হবে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে, এছাড়া তাদের বিশ্বাস হল, স্বয়ং হযরত মুহাম্মাদ (স.) এর মাধ্যমে মহান আল্লাহ্ ইমামকে জনগণের উদ্দেশ্যে পরিচয় করাবেন।[১১] মহানবি (স.) থেকে বর্ণিত বিভিন্ন রেওয়ায়েতের ভিত্তিতে ১২ ইমামি শিয়াদের বিশ্বাস হল, মহান আল্লাহর নির্দেশে তিনি (স.) ইমাম আলীকে নিজের স্থলাভিষিক্ত ও প্রথম ইমাম হিসেবে পরিচয় করিয়ে গেছেন।[১২] তারা হাদীসে লাওহ’সহ অন্যান্য হাদীসের ভিত্তিতে ১২ ইমামের প্রতি বিশ্বাস পোষণ করে।[১৪] আর ইমামিয়াদের ১২ জন ইমাম হলেন যথাক্রমে:
আলী ইবনিল হুসাইন (ইমাম সাজ্জাদ)
মুহাম্মাদ ইবনে আলী (ইমাম বাকির)
জাফার ইবনে মুহাম্মাদ (ইমাম সাদিক)
মুসা ইবনে জাফার (ইমাম কাযিম)
আলী ইবনে মুসা (ইমাম রেযা)
মুহাম্মাদ ইবনে আলী (ইমাম জাওয়াদ)
আলী ইবনে মুহাম্মাদ (ইমাম হাদী)
হাসান ইবনে আলী (ইমাম আসকারী)
হুজ্জাত ইবনিল হাসান (ইমাম মাহদী)[১৩]
১২ ইমামি শিয়াদের বিশ্বাস হল, দ্বাদশ ইমাম মাহদি (আ.) জীবিত এবং দীর্ঘ মেয়াদী অন্তর্ধানে রয়েছেন। আর যখন তিনি উত্থান করবেন তখন পৃথিবীতে ন্যায়-নিষ্ঠায় পূর্ণ করে দেবেন।[১৪]
আদল (عدل) (আল্লাহর ন্যায়পরায়ণতা); শিয়া মাযহাবের মৌলিক আকিদার অন্যতম। মু’তাযেলাদের ন্যায় শিয়াদেরেকেও আদলিয়াহ বলা হয়। আদল তথা ন্যায়পরায়ণতার ভিত্তিতে মহান আল্লাহ তার রহমত ও অনুগ্রহ এবং বালা-মুসিবত ও নি’য়ামাত প্রত্যেক ব্যক্তির প্রাপ্য অনুযায়ী প্রদান করে থাকেন।[১৫] ‘রাজআত’ ও ‘বাদা’ ইমামিয়া শিয়াদের অন্যতম আকিদা।[১৬] রাজআত হল; ইমাম মাহদি (আ.) এর আবির্ভাবের পর কিছু কিছু মু’মিন ও আহলে বাইতের (আ.) অনুসারী এবং আহলে বাইত (আ.) এর কিছু কিছু শত্রু –যারা ইতিপূর্বে মারা গিয়েছে- এ পৃথিবীতে প্রত্যাবর্তন করবে এবং মন্দ ব্যক্তিরা তাদের কৃতকর্মের শাস্তি এ পৃথিবীতেই প্রাপ্ত হবে।[১৭] নবিগণ (আ.), আল্লাহর ওলিগণ, বিশেষ করে ইমাম আলী ও ইমাম হুসাইন ও আহলে বাইত (আলাইহিমুস সালাম)-এর রাজআত প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক হাদীস বর্ণিত হয়েছে। আর বাদা’ হল, মহান আল্লাহ্ কোন বিশেষ কারণে কোন বিষয়কে নবি বা ইমামের জন্য প্রকাশিত করেন; কিন্তু প্রকাশের পর বিশেষ কারণে অন্য কিছুকে তদস্থলে স্থলাভিষিক্ত করেন।[১৮]
আওয়ায়েলুল মাকালাত, তাসহীহুল এ’তেকাদ, তাজরীদুল এ’তেকাদ ও কাশফুল মুরাদ ইত্যাদি ইমামিয়া শিয়াদের কালাম শাস্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থগুলোর অন্যতম।[১৯] শেইখ মুফিদ (৩৩৬ বা ৩৩৮-৪১৩ হি.), শেইখ তুসী (৩৮৫-৪৬০), খাজা নাসীরুদ্দীন তুসী (৫৯৭-৬৭২ হি.) ও আল্লামা হিল্লি (৬৮৪-৭২৬ হি.) হলেন ইমামিয়া শিয়াদের শীর্ষস্থানীয় মুতাকাল্লিম (কালাম শাস্ত্রবিদ)-দের অন্যতম।[২০]
ইমামিয়া ও অন্যান্য শিয়া ফির্কাহর মাঝে পার্থক্য
যাইদি ও ইসমাঈলীরাসহ অন্যান্য শিয়া ফির্কাহর কেউই ১২ ইমামের উপর আকিদা পোষণ করে না। তারা ইমামগণকে ১২ জনের মাঝে সীমাবদ্ধও করে না। যাইদিদের বিশ্বাস হল, মহানবি (স.) শুধু ৩ জনের ইমামত সম্পর্কে বলে গেছেন; ইমাম আলী (আ.), ইমাম হাসান (আ.) ও ইমাম হুসাইন (আ.)।[২১] এ ৩ জনের পর হযরত ফাতেমা’র বংশধারায় যে কোনো দুনিয়া বিমুখ, সাহসী ও দানশীল ব্যক্তিই সঠিক পথে সংগ্রাম করবে সে-ই ইমাম।[২২] যাইদ ইবনে আলী (ইমাম যইনুল আবেদীন (আ.) এর সন্তান), ইয়াহিয়া ইবনে যাইদ, মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে হাসান (নাফসে যাকিয়াহ), ইব্রাহিম ইবনে আব্দুল্লাহ ও শাহীদে ফাখ্ হলেন যাইদিদের ইমাম।[২৩]
ইসমাঈলীগণও দ্বিতীয় ইমাম অর্থাৎ, ইমাম হাসান (আ.) এর ইমামতকে গ্রহণ করে না।[২৪] ইমামিয়া শিয়াদের অন্য ইমামদের মাঝে ষষ্ঠ ইমাম জাফার সাদিক (আ.) পর্যন্ত তারা গ্রহণ করে।[২৫] ইমাম সাদিক (আ.) এর পর তারা তার সন্তান ইসমাঈল এবং তার পুত্র মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাঈলের ইমামতকে গ্রহণ করেছে।[২৯] তাদের আকিদানুযায়ী ইমামতের বিভিন্ন স্তর রয়েছে এবং প্রতিটি স্তরে ৭ জন ইমাম ইমামতের দায়িত্ব পালন করে থাকেন।[২৬]
আহকাম
অপর মুসলিম মাযহাবগুলোর মত ইমামিয়া শিয়ারাও তাদের দ্বীনি কর্মকাণ্ডগুলো শরয়ী বিধি-বিধানের ভিত্তিতে আঞ্জাম দিয়ে থাকে; যেমন- সকল প্রকার ইবাদত, লেনদেন, খুমস ও যাকাত প্রদান, বিবাহ, ইরস বন্টন ইত্যাদি।[২৭] কুরআন ও রেওয়ায়েত (মহানবি (স.) ও ইমামগণ হতে বর্ণিত) দ্বীনি বিধান অন্বেষণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুই সূত্র।[২৮] তারা মূল সূত্র থেকে রিজাল, দেরায়াহ, উসুলে ফিকহ ও ফিকাহ শাস্ত্র ব্যবহার করে ধর্মীয় বিধি-বিধানগুলো হস্তগত করে থাকে।[২৯]
শারায়েউল ইসলাম, আল-লুমআতুদ দামেশকিয়া, শারহে লুমআহ, জাওয়াহেরুল কালাম, মাকাসেব এবং আল-উরওয়াতুল উসকা ইমামিয়া শিয়াদের গুরত্বপূর্ণ ফিকহি গ্রন্থগুলোর অন্যতম।[৩০] শেইখ তুসী, মোহাক্কেক হিল্লি, আল্লামা হিল্লি, শহীদে আওয়াল, শহীদে সানী, কাশেফুল গিতা, মির্যায়ে কুম্মি ও শেইখ মুর্তাযা আনসারী প্রমূখের নাম এ মাহযাবের প্রখ্যাত ফকীহগণের মাঝে উল্লেখযোগ্য।[৩১]
মারজায়ে তাক্বলীদ
- মূল নিবন্ধ: মারজায়ে তাক্বলীদ
বর্তমানে শরয়ী বিধি-বিধান তৌযিহুল মাসায়েল নামক গ্রন্থে উপস্থাপিত হচ্ছে; যেগুলো মারজায়ে তাকলীদগণ কর্তৃক প্রণীত।[৩২] মারজায়ে তাকলীদ বলতে ঐ মুজতাহিদকে বলা হয়, কুরআন ও হাদীস থেকে যার অন্বেষিত ফতওয়ার উপর অন্যরা আমল করে থাকে। অর্থাৎ, ধর্মীয় আমলসমূহকে তার ফিকাহ বিষয়ক মত ও ফতওয়ার ভিত্তিতে আঞ্জম দেয় এবং নিজেদের খুমস ও যাকাত ইত্যাদি তার নিকট প্রদান করে থাকে।
অনুষ্ঠানাদি
ঈদুল ফিতর, ঈদুল আযহা, ঈদে মাবআস (নবুয়্যত ঘোষণা দিবস)সহ ঈদে গাদীর, ইমাম আলী (আ.) এর জন্মদিবস, হযরত ফাতেমা (সা. আ.) এর জন্মবার্ষিকী এবং ১৫ই শাবান ইত্যাদি ইমামিয়া শিয়াদের গুরুত্বপূর্ণ আনন্দ দিবসগুলোর অন্যতম। তারা অপর ইমামগণের জন্মবার্ষিকীতেও আনন্দ মাহফিলের আয়োজন করে থাকে।[৩৩]
ইমামিয়া মাযহাবে প্রতিটি ঈদ বা খুশীর দিনের জন্য বিশেষ আমল প্রসঙ্গে তাগিদ প্রদান করা হয়েছে; যেমন:- কুরবানীর ঈদের দিনের আমল প্রসঙ্গে বলা হয়েছে: গোসল করা, ঈদুল আযহার নামায আদায় করা, কুরবানী করা, ইমাম হুসাইন (আ.) এর যিয়ারত পড়া, দোয়ায়ে নুদবাহ পাঠ করা ইত্যাদি।[৩৪]
বছরের কিছু কিছু দিনে শিয়ারা নিষ্পাপ ইমামগণের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে থাকে এবং তাঁদের মুসিবতের দিনে শোক প্রকাশের নিমিত্তে শোকানুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে।[৩৫] শিয়াদের শোকানুষ্ঠানগুলোর সবচেয়ে বড় অংশটি মহররম মাসে ইমাম হুসাইন (আ.) ও তাঁর সাথীদের শাহাদাতকে স্মরণ করে অনুষ্ঠিত হয়। শিয়াদের সবচেয়ে বড় শোকানুষ্ঠান হল মহররম মাসের প্রথম ১০ দিন, সফর মাসের শেষ ১০ দিন, ইমাম হুসাইন (আ.) এর আরবাঈন এবং আইয়ামে ফাতিমিয়াহ (হযরত ফাতেমা যাহরা (সা. আ.)-এর শাহাদাত বার্ষিকী)-কে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত হয়।
ইমামিয়া শিয়াদের অপর গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল; আল্লাহর রাসূল (স.) ও আহলে বাইত (আ.)-এর মাযার যিয়ারত করা। এছাড়া ইমাম যাদাহগণ (ইমামদের সন্তান), অন্যান্য মহান ব্যক্তিত্বগণ ও বিশিষ্ট আলেমগণের মাযার যিয়ারতও তাদের নিকট বিশেষ গুরুত্ব রাখে। ইমামিয়া শিয়াদের রেওয়ায়েতসমূহে দোয়া পাঠ ও তাওয়াসসুল প্রসঙ্গে বিশেষ তাগিদ প্রদান করা হয়েছে এবং বহু সংখ্যক দোয়া ও যিয়ারত নামা তাদের প্রসিদ্ধ গ্রন্থসমূহে উল্লেখিত হয়েছে।[৩৬] দোয়ায়ে কুমাইল[৩৭], দোয়ায়ে আরাফাহ, দোয়ায়ে নুদবাহ, মুনাজাতে শা’বানিয়াহ[৩৮], দোয়ায়ে তাওয়াসসুল, যিয়ারতে আশুরা[৩৯] যিয়ারাতে জামেয়ে কাবিরাহ ও যিয়ারাতে আমিনুল্লাহ ইত্যাদি প্রসিদ্ধ দোয়া ও যিয়ারত নামাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
ইমামিয়া শিয়াদের প্রসিদ্ধ গ্রন্থাদি
নিজেদের কালাম (আকিদা), ফিকাহ ও নৈতিকতা ইত্যাদি সংশ্লিষ্ট বিষয়াদির জন্য ইমামিয়া শিয়ারা ৪ সূত্রের শরণাপন্ন হয়ে থাকে এবং এগুলো থেকে প্রাপ্ত বিষয়াদিকে দলীল হিসেবে গ্রহণ করে থাকে।[৪০]
কুরআন
- মূল নিবন্ধ: কুরআন
ধর্মীয় শিক্ষা ও মাআরেফ অন্বেষণের ক্ষেত্রে ইমামিয়া শিয়াদের প্রথম ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সূত্র হল ‘কুরআনুল কারিম’। তাদের নিকট কুরআনের স্থান এ পর্যায়ে যে, যদি কোন হাদীস কুরআনের সাথে সাংঘর্ষিক হয়, তাহলে ঐ হাদীসের কার্যকারিতা শেষ হয়ে যায়।[৪১] মুহাম্মাদ হাদী মারেফাতের ভাষ্যানুযায়ী, শিয়াদের দৃষ্টিতে বর্তমানে মুসলমানদের কাছে বিদ্যমান কুরআন শরীফই সঠিক এবং পরিপূর্ণ।[৪২]
মহানবি (স.) ও ইমামগণ থেকে বর্ণিত রেওয়ায়াত
- মূল নিবন্ধ: হাদীস
অন্যান্য মুসলিম মাযহাবের মত শিয়ারাও মহানবি (স.) এর সুন্নত তথা তাঁর কথা ও কাজকে হুজ্জাত ও অকাট্ট দলীল হিসেবে জানে।[৪৩] পাশাপাশি হাদীসে সাকালাইন ও হাদীসে সাফিনাতুন নুহে’র মত হাদীসের ভিত্তিতে –যাতে আহলে বাইত (আ.) কে অনুসরণের আবশ্যকতা স্পষ্ট করা হয়েছে- তারা আহলে বাইত (আ.) কর্তৃক বর্ণিত রেওয়ায়েতগুলোকেও দ্বীনের অন্যতম মূল সূত্রগুলোর অন্যতম জ্ঞান করে।[৪৪] তারা মহানবি (স.) ও ১২ ইমাম থেকে বর্ণিত হাদীসগুলো বর্ণনা ও সংরক্ষণের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে সতর্কতা দেখিয়েছে।
ইমামিয়া শিয়াদের সবচেয়ে গুরুতপূর্ণ হাদীস গ্রন্থগুলো হল উসুলে কাফী, তাহযীবুল আহকাম, ইস্তিবসার এবং মান লা ইয়াহদ্বুরুহুল ফাকীহ; এ গ্রন্থগুলোকে তারা কুতুবে আরবা বা উসুলে আরবাআ নামে চেনে।[৪৫] আল-ওয়াফি, বিহারুল আনওয়ার, ওয়াসায়েলুশ শিয়া[৪৬], মুস্তাদরাক, মীযানুল হিকমাহ, জামেউল আহাদিসিশ শিয়া, আল-হায়াত ওয়া আসারুস সাদিকীন ইত্যাদি শিয়াদের প্রসিদ্ধ হাদীস গ্রন্থগুলোর অন্যতম।[৪৭]
সকল হাদীসই শিয়াদের দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্য নয়; কুরআন বিরোধী না হওয়া, রাভিগণের নির্ভরযোগ্য হওয়া এবং তাওয়াতুরের মত বিষয়গুলোকে কোন রেওয়ায়েতের সঠিক হওয়ার মানদণ্ড। আর এ ক্ষেত্রে তারা রিজাল ও দেরায়া শাস্ত্র থেকে উপকৃত হয়।[৪৮]
আকল
- মূল নিবন্ধ: আকল
ইমামিয়া মাযহাবে আকল (বুদ্ধিবৃত্তি) বিশেষ স্থানের অধিকারী। ইমামিয়া শিয়ারা নিজেদের আকিদাগত মৌলিক বিষয়াদি প্রমাণের জন্য আকল থেকে উপকৃত হয়।[৪৯] এছাড়া তারা ‘আকল’কে শরয়ী আহকাম অন্বেষণের অন্যতম সূত্র হিসেবে জ্ঞান করে এবং ফিকাহ, উসুল ও শরয়ী বিধি-বিধান সংশ্লিষ্ট কিছু কিছু কাওয়ায়েদ ও সূত্র তারা আকলের মাধ্যমে প্রমাণ করে থাকে।[৫০]
ইজমা
- মূল নিবন্ধ: ইজমা
আহকামে শারয়ী অন্বেষণ করার ক্ষেত্রে ইজমা হল চতুর্থ সূত্র এবং উসুলে ফিকহে এর বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়।[৫১] আহলে সুন্নাতের বিপরীতে ইমামিয়া ফকীহগণ কুরআন, সুন্নাত ও আকলের পাশে ‘ইজমা’কে স্বতন্ত্র দলীল হিসেবে গণনা করে না; বরং যেহেতু তা মাসুম তথা নিষ্পাপ ইমামের অভিমত সম্পর্কে আমাদেরকে অবগত করে তাই ইজমা তাদের নিকট গ্রহণযোগ্য।[৫২]
শিয়া মতাদর্শী সম্রাজ্য ও শাসন ব্যবস্থা
মুসলিম বিশ্বে বিভিন্ন শিয়া মতাদর্শী সম্রাজ্য ও শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে; সেগুলোর মাঝে তাবারিস্তানে আলাভিরা, আলে বুয়ে, ফাতিমীগণ, ইসমাঈলীগণ ও সাফাভিগণের নাম উল্লেখযোগ্য। আলাভিদের হুকুমতের প্রতিষ্ঠাতা ছিল যাইদিরা। আলামাওতে ফাতেমি ও ইসমাঈলীদের হুকুমত ছিল ইসমাইলী মাযহাবের অনুসারীদের; কিন্তু আলে বুয়েদের বিষয়ে মতানৈক্য রয়েছে; কেউ কেউ মনে করেন তারা ছিল যাইদি মাযহাবের অুনসারী, আবার কেউ বলেন তারা ছিল ইমামিয়া মাযহাবের অনুসারী। এক্ষেত্রে অন্য একটি দলের মত হল তারা প্রথম অবস্থায় যাইদি মাযহাবের অনুসারী থাকলেও পরবর্তীতে ইমামিয়া মাযহাবকে গ্রহণ করে নেয়।
তাদের দৃষ্টিতে সুলতান মুহাম্মাদ খোদাবান্দে ওরফে ওলজাইতু (৭০৩-৭১৬ হি.) ছিলেন ইমামিয়া মাযহাবের স্বীকৃতির ঘোষণাকারী প্রথম শাসক এবং তিনি এ মাযহাবের প্রচার ও প্রসারে ব্যাপক চেষ্টা চালিয়েছেন। তবে তৎকালীন তার সরকারের কর্মকর্তাদের –যাদের বেশীরভাগই ছিল সুন্নি মাযহাবের অনুসারী- বিরোধিতার কারণে তিনি তার এ পদক্ষেপ থেকে পিছিয়ে আসেন, কিন্তু তিনি শিয়া মাযহাবেরই অনুসারী ছিলেন।[৫৩]
সার-বেদারানের হুকুমতকেও শিয়া হুকুমত বলে উল্লেখ করা হয়। সার-বেদারানে’র নেতৃবর্গ ও শাসকদের মাযহাব সম্পর্কে নিশ্চিত কোথা তথ্য নেই, তবে তারা সুফিবাদের সমর্থক ছিল এবং শিয়া মাযহাবের প্রতি তাদের আগ্রহের বিষয়টি সম্পর্কে জানা যায়। অবশ্য সার-বেদারানের সর্বশেষ শাসক খাজা আলী মুআইয়েদ ইমামিয়া মাযহাবকে নিজ সরকারের অফিসিয়াল মাযহাব হিসেবে ঘোষণা দেন। জাফারিয়ান, তারিখে তাশাইয়্যু, ১৩৯০ (ফার্সি সন), পৃ: ৭৮১।
সাফাভিগণ
- মুল নিবন্ধ: সাফাভি হুকুমাত
৯০৭ হিজরীতে শাহ ইসমাঈল ‘সাফাভি’ হুকুমত প্রতিষ্ঠা করেন এবং ইমামিয়া মাযহাবকে ইরানের রাষ্ট্রীয় মাযহাব হিসেবে ঘোষণা দেন।[৫৪] তিনি এবং অপর সাফাভি শাসকগণ আলেমগণকে ইরানের উদ্দেশ্যে হিজরতের আহবান, ইরানে শিয়াদের জন্য ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ এবং মহররম মাসে আযাদারীর অনুষ্ঠান ইত্যাদি পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে ইরানিদের মাঝে শিয়া মাযহাবের প্রসার ঘটান এবং ইরানকে একটি শিয়া রাষ্ট্রে রূপান্তরীত করেন।[
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান
- মুল নিবন্ধ: ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান
১৩৭৫ ফার্সি সনের ২২শে বাহমান ইমাম খোমেনি’র নেতৃত্বে ইসলামি বিপ্লবের বিজয়ের পর ইরানে ইসলামি প্রজাতন্ত্র গঠিত হয়।[৫৫] এ সরকার শিয়া ফিকাহ ও শিয়া মাযহাবের মৌলিক বিষয়াদির উপর প্রতিষ্ঠিত।[৫৬] ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ রুকুন হল বেলায়াতে ফকীহ; দেশের সকল বাহিনী যার তত্ত্বাবধানে পরিচালিত।[৫৭] ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সংবিধান অনুযায়ী ইসলামের সাথে সামঞ্জস্যশীল নয় এমন কোন আইনই ইরানে গ্রহণযোগ্য নয়।[৫৮]
পরিসংখ্যান ও ভৌগলিক অবস্থান
বিশ্বে ১২ ইমামি শিয়াদের সঠিক সংখ্যা সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য নেই এবং বিদ্যমান পরিসংখ্যানে যাইদি ও ইসমাঈলি শিয়ারাও অন্তর্ভুক্ত। পিও-এর এক পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে বিশ্বে বর্তমানে ১৫৪ থেকে ২০০ মিলিয়ন (১৫.৪ কোটি থেকে ২০ কোটি) শিয়া বসবাস করে বলে ধারণা করা হয়; যা মোট মুসলিম জনগোষ্ঠীর শতকরা ১০ থেকে ১৩ ভাগ। কিন্তু পরিসংখ্যান সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনটির অনুবাদক এই তথ্যকে অসঠিক বলে জ্ঞান করে লিখেছেন, বর্তমানে শিয়াদের সংখ্যা ৩০০ মিলিয়ন (৩০ কোটি) অর্থাৎ মোট মুসলমানদের শতকরা ১৯ ভাগ।
বেশীরভাগ শিয়া -শতকরা ৬৮ থেকে ৮০ ভাগ- ইরান, ইরাক, পাকিস্তান ও ভারতে বসবাস করে। ইরানে ৬৬ থেকে ৭০ মিলিয়ন শিয়া বাস করে; যা শিয়া জনগোষ্ঠীর শতকরা ৩৭ থেকে ৪০ ভাগ। আর পাকিস্তান, ভারত ও ইরাক প্রতিটি দেশে ১ কোটি ৬০ লাখের উপর শিয়ার বাস।
ইরান, আযারবাইজান, বাহরাইন ও ইরাকের অধিকাংশ জনগণই শিয়া মাযহাবের অনুসারী।[৮৫] মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা, ওশিনিয়া, তুরস্ক, ইয়েমেন, সিরিয়া, সৌদি আরব, বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শিয়ারা বসবাস করে।
তথ্যসূত্র
- ↑ ফাইয়্যায, পেইদায়েশ ও গুস্তারেশে তাশাইয়্যু,১৩৮২ (ফার্সি সন), পৃ:৪৯-৫৩।
- ↑ তাবাতাবায়ী, শিয়া দার ইসলাম, ১৩৭৯ (ফার্সি সন), পৃ: ২৫।
- ↑ জাফারিয়ান, তারিখে তাশাইয়্যু, ১৩৯০ (ফার্সি সন), পৃ: ২২, ২৭।
- ↑ ফাইয়্যায, পেইদায়েশ ও গুস্তারেশে তাশাইয়্যু,১৩৮২ (ফার্সি সন), পৃ:৬১।
- ↑ জাফারিয়ান, তারিখে তাশাইয়্যু, ১৩৯০ (ফার্সি সন), পৃ: ২৯ ও ৩০।
- ↑ ফাইয়্যায, পেইদায়েশ ও গুস্তারেশে তাশাইয়্যু,১৩৮২ (ফার্সি সন), পৃ:৬১।
- ↑ ফাইয়্যায, পেইদায়েশ ও গুস্তারেশে তাশাইয়্যু,১৩৮২ (ফার্সি সন), পৃ:৬৩-৬৫।
- ↑ ফাইয়্যায, পেইদায়েশ ও গুস্তারেশে তাশাইয়্যু,১৩৮২ (ফার্সি সন), পৃ:৬২।
- ↑ ফাইয়্যায, পেইদায়েশ ও গুস্তারেশে তাশাইয়্যু,১৩৮২ (ফার্সি সন), পৃ:১০৯ ও ১১০।
- ↑ মোতাহহারি, মাজমুয়ে অসার, ১৩৮৯ (ফার্সি সন), খ: ৩, পৃ: ৯৬।
- ↑ মিসবাহ ইয়াযদি, আমুযেশে আকায়েদ, ১৩৮৪ (ফার্সি সন), পৃ: ১৪।
- ↑ তাবাতাবায়ী, শিয়া দার ইসলাম, ১৩৭৯ (ফার্সি সন), পৃ: ১৯৭ ও ১৯৮।
- ↑ তাবাতাবায়ী, শিয়া দার ইসলাম, ১৩৭৯ (ফার্সি সন), পৃ: ১৯৮ ও ১৯৯।
- ↑ তাবাতাবায়ী, শিয়া দার ইসলাম, ১৩৭৯ (ফার্সি সন), পৃ: ২৩০ ও ২৩১।
- ↑ মোতাহহারি, মাজমুয়ে অসার, ১৩৮৯ (ফার্সি সন), খ: ৩, পৃ: ৯৬।
- ↑ রাব্বানী গুলপায়গানী, দারআমাদি বে শিয়া শেনাসি, ১৩৯২ (ফার্সি সন), পৃ: ২৭৩।
- ↑ রাব্বানী গুলপায়গানী, দারআমাদি বে শিয়া শেনাসি, ১৩৯২ (ফার্সি সন), পৃ: ২৭৩।
- ↑ শেইখ মুফিদ, তাছহিহুল ইতিকাদ, ১৪১৩ হি., পৃ: ৬৫।
- ↑ কাশেফী, কালামে শিয়া, ১৩৮৭ ( ফার্সি সন), পৃ: ৫২।
- ↑ কাশেফী, কালামে শিয়া, ১৩৮৭ ( ফার্সি সন), পৃ: ৫২।
- ↑ সাবেরী, তারিখে ফেরাকে ইসলামি, ১৩৮৮ (ফার্সি সন), খ: ২, পৃ: ৮৬।
- ↑ তাবাতাবায়ী, শিয়া দার ইসলাম, ১৩৭৯ (ফার্সি সন), পৃ: ১৬৭।
- ↑ সাবেরী, তারিখে ফেরাকে ইসলামি, ১৩৮৮ (ফার্সি সন), খ: ২, পৃ: ৯০।
- ↑ সাবেরী, তারিখে ফেরাকে ইসলামি, ১৩৮৮ (ফার্সি সন), খ: ২, পৃ: ৮৬।
- ↑ সাবেরী, তারিখে ফেরাকে ইসলামি, ১৩৮৮ (ফার্সি সন), খ: ২, পৃ: ১১৯।
- ↑ সাবেরী, তারিখে ফেরাকে ইসলামি, ১৩৮৮ (ফার্সি সন), খ: ২, পৃ: ১৫১ ও ১৫২।
- ↑ মাকারেম শিরাজী, দায়েরাতুল মাআরিফ ফিকহে মাকারেন, ১৪২৭ হি., খ: ১, পৃ: ৬৫-৬৯।
- ↑ মোযাফ্ফার, উসুলুল ফিকহ, ১৪৩০ হি., খ: ১, পৃ: ৫৪, ৬৪।
- ↑ মাকারেম শিরাজী, দায়েরাতুল মাআরিফ ফিকহে মাকারেন, ১৪২৭ হি., খ: ১, পৃ: ১৭৬, ৩২৩-৩৩০।
- ↑ মাকারেম শিরাজী, দায়েরাতুল মাআরিফ ফিকহে মাকারেন, ১৪২৭ হি., খ: ১, পৃ: ২৬১-২৬৪।
- ↑ মাকারেম শিরাজী, দায়েরাতুল মাআরিফ ফিকহে মাকারেন, ১৪২৭ হি., খ: ১, পৃ: ২৬০-২৬৪।
- ↑ ইয়াযদানী, মুরুরি বার রিসালাহায়ে ইলমিয়্যাহ, পৃ: ২৯২।
- ↑ মুসাভী পুর, জাশনহায়ে জাহানে ইসলামি, পৃ: ৩৭৩-৩৭৬।
- ↑ মাজলিসী, যাদুল মাআদ, ১৩৭৯ (ফার্সি সন), পৃ: ৪২৬-৪২৭।
- ↑ মাযাহেরি, আযাদারি, ১৩৯৫ (ফার্সি সন), পৃ: ৩৪৫।
- ↑ কুম্মী, মাফাতিহুল জিনান, সূচীপত্র দ্রষ্টব্য।
- ↑ হাশিমী আকদাম, আসরারুল আরেফিন ব শারহে দোয়ায়ে কুমাইল, পৃ: ৩২।
- ↑ হায়দারযাদেহ, দার মাহযারে মুনাজাতে শা’বানিয়াহ, পৃ: ১৬০
- ↑ পাজুহেশী দার আসনাদ ও নুসখেহায়ে যিয়ারতে আশুরা, পৃ: ১৫৩।
- ↑ মোযাফ্ফার, উসুলুল ফিকহ, ১৪৩০ হি., খ: ১, পৃ: ৫১।
- ↑ রাব্বানী গুলপায়গানী, দারআমাদি বে শিয়া শেনাসি, ১৩৯২ (ফার্সি সন), পৃ: ১১৫ ও ১১৬।
- ↑ মা’রেফাত, আত-তামহীদু ফি উলুমিল কুরআন, ১৪১২ হি., খ: ১, পৃ: ৩৪২।
- ↑ রাব্বানী গুলপায়গানী, দারআমাদি বে শিয়া শেনাসি, ১৩৯২ (ফার্সি সন), পৃ: ১১৫, ১২৪।
- ↑ রাব্বানী গুলপায়গানী, দারআমাদি বে শিয়া শেনাসি, ১৩৯২ (ফার্সি সন), পৃ: ১১৫ ও ১৩৩-১৩৫।
- ↑ মুয়াদ্দাব, তারিখে হাদিস, ১৩৮৮ (ফার্সি সন), পৃ: ৮৬।
- ↑ মুয়াদ্দাব, তারিখে হাদিস, ১৩৮৮ (ফার্সি সন), পৃ: ১২৯।
- ↑ মুয়াদ্দাব, তারিখে হাদিস, ১৩৮৮ (ফার্সি সন), পৃ: ১৪৮-১৫২।
- ↑ তাবাতাবায়ী, শিয়া দার ইসলাম, ১৩৭৯ (ফার্সি সন), পৃ: ১২৮ ও ১২৯।
- ↑ রাব্বানী গুলপায়গানী, দারআমাদি বে শিয়া শেনাসি, ১৩৯২ (ফার্সি সন), পৃ: ১৩৯।
- ↑ রাব্বানী গুলপায়গানী, দারআমাদি বে শিয়া শেনাসি, ১৩৯২ (ফার্সি সন), পৃ: ১৪৪।
- ↑ আনসারী, ফারায়েদুল উসুল, ১৪২৮ হি., খ: ২, পৃ: ১৭৯-২২৯।
- ↑ মোযাফ্ফার, উসুলুল ফিকহ, ১৪৩০ হি., খ: ৩, পৃ: ১০৩।
- ↑ জাফারিয়ান, তারিখে তাশাইয়্যু, ১৩৯০ (ফার্সি সন), পৃ: ৬৯৪।
- ↑ হালেম, তাশাইয়্যু, ১৩৮৯ (ফার্সি সন), পৃ: ১৫৬-১৫৭।
- ↑ কাসেমী ও কারিমী, জামহুরিয়ে ইসলামি ইরান, পৃ: ৭৬৫।
- ↑ কাসেমী ও কারিমী, জামহুরিয়ে ইসলামি ইরান, পৃ: ৭৬৬।
- ↑ কাসেমী ও কারিমী, জামহুরিয়ে ইসলামি ইরান, পৃ: ৭৬৮।
- ↑ কাসেমী ও কারিমী, জামহুরিয়ে ইসলামি ইরান, পৃ: ৭৬৮।
গ্রন্থপঞ্জি
- তাবাতাবায়ী, সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ হুসাইন, আল-মিযান ফি তাফসীরিল কুরআন, কোম, ইন্তেশারাতে ইসলামী, পঞ্চম সংস্করণ, ১৪১৭ হি.।
- তাবাতাবায়ী, সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ হুসাইন, শিয়া দার ইসলাম, কোম, ইসমাঈলীয়ান, প্রথম সংস্করণ, ১৩৭৯ ফার্সি সন।
- মাজলিসী, মুহাম্মাদ বাকের, যাদুল মাআদ, কোম, জেলভেয়ে কামাল, ১৩৭৯ ফার্সি সন।
- মোহাররামি, গোলাম হাসান, তারিখে তাশাইয়্যু আয আগায তা পায়ানে গায়বাতে সোগরা, কোম, মুআসেসেয়ে আমুযেশি ওয়া পেঝুহেশিয়ে ইমাম খোমেনী, দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৩৮২ ফার্সি সন।
- মাহাল্লাতি, হায়দার “বাররাসিয়ে তাতবিকিয়ে দোয়ায়ে আরাফায়ে ইমাম হুসাইন ওয়া ইমাম সাজ্জাদ”, আয়াতে বুস্তান, সংখ্যা ১, ১৩৯৫ ফার্সি সন।
- মিসবাহ ইয়াযদি, মুহাম্মাদ তাকী, আমুযেশে আকায়েদ, তেহরান, আমীর কাবির, ১৮তম সংস্করণ, ১৩৮৪ ফার্সি সন।
- মোতাহহারি, মুর্তাযা, মাজমুয়ে অসার, তেহরান, ইন্তেশারাতে সাদরা, ১৫তম সংস্করণ, ১৩৮৯ ফার্সি সন।
- মাযাহেরি, মুহসিন হেসাম, “আযাদারি”, ফারহাঙ্গে সুগে শিয়ি, তেহরান, খাইমা, প্রথম সংস্করণ, ১৩৯৫ ফার্সি সন।
- মোযাফ্ফার, মুহাম্মাদ রেযা, উসুলুল ফিকহ, কোম, ইন্তেশারাতে ইসলামী, কোম, পঞ্চম সংস্করণ, ১৪৩০ হি.।
- মা’রেফাত, মুহাম্মাদ হাদী, আত-তামহীদু ফি উলুমিল কুরআন, কোম, মুআসসাসাতুন নাশরিল ইসলামী, প্রথম সংস্করণ, ১৪১২ হি.।
- মাকারেম শিরাজী, নাসের, দায়েরাতুল মাআরিফ ফিকহে মাকারেন, কোম, মাদ্রাসাতুল ইমাম আলী ইবনে আবি তালিব (আ.), প্রথম সংস্করণ, ১৪২৭ হি.।
- জাফারিয়ান, রাসুল, তারিখে তাশাইয়্যু দার ইরান আয আগায তা তুলুয়ে দৌলাতে সাফাবি, তেহরান, ইলম, চতুর্থ সংস্করণ, ১৩৯০ ফার্সি সন।
- আনসারী, মুর্তাজা, ফারায়েদুল উসুল, কোম, মাজমা আল-ফিকরুল ইসলামী, নবম সংস্করণ, ১৪২৮ হি.।
- রাব্বানী গুলপায়গানী, আলী, দারআমাদি বে শিয়া শেনাসি, কোম, মারকাযে বাইনুল মেলালিয়ে তরজমা ও নাশরে আল-মুস্তাফা, চতুর্থ সংস্করণ, ১৩৯২ ফার্সি সন।
- কুম্মী, আব্বাস, মাফাতিহুল জিনান, কোম, নাশরে উসভেহ...
- হালেম, হাইনেস, তাশাইয়্যু; তরজমা- মুহাম্মাদ তাকী আকবারী, কোম, নাশরে আদয়ান, দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৩৮৯ ফার্সি সন।
- সাবেরী, তারিখে ফেরাকে ইসলামি, ১৩৮৮ (ফার্সি সন)।
- ইয়াযদানী, আব্বাস, মুরুরি বার রিসালাহায়ে ইলমিয়্যাহ, ১৩৮৬ (ফার্সি সন)।
- ফাইয়্যায, আব্দুল্লাহ, পেইদায়েশ ও গুস্তারেশে তাশাইয়্যু; অনুবাদ- সাইয়্যেদ জাওয়াদ খাতামি, সাবযওয়ার, ইন্তেশারাতে ইবনে ইয়ামিন, প্রথম সংস্করণ, ১৩৮২ (ফার্সি সন)।
- শেইখ মুফিদ, তাছহিহুল ইতিকাদ, ১৪১৩ হি.।
- কাশেফী, মুহাম্মাদ রেযা, কালামে শিয়া, সাজমানে ইন্তেশারাতে পাজুহেশগাহে ফাারহাঙ্গ ওয়া আন্দিশেয়ে ইসলামি, তৃতীয় সংস্করণ, ১৩৮৭ ( ফার্সি সন)।