বিষয়বস্তুতে চলুন

ইমাম মূসা কাযিম আলাইহিস সালাম

wikishia থেকে
ইমাম মূসা কাযিম (আ.)
বারো ইমামি শিয়াদের সপ্তম ইমাম
কাযেমাঈনে অবস্থিত রওযার প্রাচীন ছবি
কাযেমাঈনে অবস্থিত রওযার প্রাচীন ছবি
নামমূসা ইবনে জাফার (আ.)
উপনামআবুল হাসান-এ আউয়াল • আবু ইব্রাহিম • আবু আলী
জন্ম তারিখ২০শে যিলহজ্ব, ১২৭ হি. অথবা ৭ই সফর, ১২৮ হি.
জন্মস্থানআবওয়া-মদীনা
ইমামতকাল৩৫ বছর (১৪৮-১৮৩ হি.)
শাহাদাত২৫শে রজব, ১৮৩ হি.
দাফনের স্থানকাযেমাঈন
বসবাসের স্থানমদীনা
উপাধিসমূহকাযিম • বাবুল হাওয়ায়েয • আব্দে সালেহ
পিতাইমাম সাদিক (আ.)
মাতাহুমাইদা বারবারিয়া
স্ত্রীগণনাজমা
সন্তানইমাম রেযা (আ.) • মা’সূমা • ইব্রাহিম • কাসেম • শাহ চেরাগ • হামযা • আব্দুল্লাহ • আলী • ইসহাক • হাকিমা
জীবনকাল৫৫ বছর
শিয়া ইমামগণ
ইমাম আলী • ইমাম হাসান মুজতাবাইমাম হুসাইন • ইমাম সাজ্জাদ • ইমাম বাকের • ইমাম জাফার সাদিকইমাম কাযেমইমাম রেযাইমাম জাওয়াদইমাম হাদীইমাম হাসান আসকারি • ইমাম মাহদী


হযরত মূসা ইবনে জাফার (আরবি: الإمام موسى الكاظم عليه السلام) (১২৭ অথবা ১২৮-১৮৩ হিঃ) ইমাম মূসা কাযিম নামে প্রসিদ্ধ এবং '''কাযিম''''''বাবুল হাওয়ায়েয''' উপাধিতে ভূষিত বারো ইমামী শিয়া মুসলমানদের সপ্তম ইমাম এবং মহানবীর (সাঃ) পবিত্র আহলুল বাইতের (আঃ) মাসূম বারো ইমামের ৭ম মাসূম ইমাম। ১২৮ হিজরীতে বনী উমাইয়ার শাসন ও খিলাফতের বিরুদ্ধে বনী আব্বাসের পক্ষে আহ্বানকারী আবু মুসলিম খোরাসানীর কিয়াম ও বিদ্রোহ শুরুর সমসাময়িক কালে তিনি (আঃ) জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৪৮ হিজরীতে পিতা ষষ্ঠ ইমাম জাফার সাদিক্বের (আঃ) শাহাদতের পর তিনি ইমামতে অধিষ্ঠিত হন। তাঁর ইমামত কাল ছিল ৩৫ বছর। তিনি আব্বাসীয় খলিফা মনসুর, হাদী, মাহদী এবং হারুনের সমসাময়িক ছিলেন। তিনি বহুবার আব্বাসীয় খলিফা মাহদী ও হারূন কর্তৃক কারারুদ্ধ হয়েছিলেন এবং ১৮৩ হিজরীতে বাগদাদে কুখ্যাত সিন্দী ইবনে শাহিকের কারাগারে ইমাম মূসা কাযিম (আঃ) শাহাদত বরণ করেন। তাঁর শাহাদতের পর তাঁর পুত্র আলী ইবনে মূসা আর-রিযা (আঃ) ইমামতে অধিষ্ঠিত হন।

ইমাম কাযিমের (আঃ) ইমামতকাল ছিল আব্বাসীয় খিলাফতের উত্থান ও ক্ষমতায়নের তুঙ্গে পৌঁছানোর সমসাময়িক। তিনি আব্বাসীয় খিলাফত ও প্রশাসনের বরাবরে তাকিয়া নীতি অবলম্বন করতেন এবং অনুসারী শিয়াদেরকে এ নীতি (তাকিয়া) অবলম্বনেরও নির্দেশ দিতেন। আর এ কারণেই আব্বাসীয় খলিফাদের এবং ফাখখের শহীদের কিয়ামের মতো আলী বংশীয়দের (আলাভী) কিয়াম (বিদ্রোহ ও আন্দোলন )সমূহে শিয়াদের সপ্তম ইমামের (আঃ) সুস্পষ্ট নীতি অবস্থানের কথা বর্ণিত হয়নি।

কতিপয় ইহুদী ও খ্রিষ্টান আলিম ও পণ্ডিতের সাথে ইমাম মূসা কাযিমের (আঃ) ধর্মীয় মুনাযারা (বিতর্ক ও বাহাস) ও আলোচনার কথা কিছু কিছু ইতিহাস ও হাদীসের গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে। ইমাম কাযিমের (আঃ) মুসনাদ গ্রন্থে তাঁর (আঃ) থেকে ৩০০০ এর অধিক হাদীস সংকলিত হয়েছে যেগুলোর মধ্য থেকে বেশ কিছু হাদীস আসহাব-ই ইজমা রাবী কর্তৃক বর্ণিত হয়েছে।

ইমাম কাযিম (আঃ) স্বীয় অনুসারীদের (শিয়া) সাথে যোগাযোগ ও সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য ভিকালত (প্রতিনিধি নিয়োগদানের) ব্যবস্থার বিস্তৃত করেছিলেন এবং বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন ব্যক্তিকে তিনি তাঁর প্রতিনিধি (ওয়াকীল) নিযুক্ত করেছিলেন, অপর দিকে ইমাম কাযিমের (আঃ) জীবদ্দশায় শিয়াদের মধ্যে কতিপয় বিভাজন ও কিছু কিছু নতুন ফির্কার আবির্ভাব লক্ষ্য করা যায়। তাঁর ইমামত কালের শুরুতে ইসমাঈলীয়া, ফাতাহীয়া, নাভূসীয়া ইত্যাদি ফির্কার আবির্ভাব এবং তাঁর শাহাদতের পর ওয়াকিফীয়া ফির্কার আবির্ভাব হয়েছিল।

শিয়া-সুন্নী সূত্র সমূহে ইমাম কাযিমের (আঃ) জ্ঞান (ইলম), ইবাদত, সহিষ্ণুতা এবং ক্ষমাশীলতার ব্যাপক প্রশংসা এবং তাঁকে কাযিম (ক্রোধ সম্বরণকারী) ও আব্দ-ই সালিহের (মহান আল্লাহর নেক বান্দা) উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে। আহলে সুন্নাতের বড় বড় আলেম শিয়াদের সপ্তম ইমামকে ধর্মীয় আলিম ও পণ্ডিত হিসেবে সম্মান প্রদর্শন এবং শিয়াদের মতো তারাও তাঁর কবর যিয়ারত করেন। বাগদাদ নগরীর উত্তরে কাযেমাইন এলাকায় ইমাম কাযিমের (আঃ) হারাম (পবিত্র সংরক্ষিত স্থান ও মাযার) এবং তাঁর পৌত্র নবম ইমাম জাওয়াদের (আঃ) হারামও এখানে অবস্থিত। এ দুই হারাম মুসলমানদের বিশেষ করে শিয়া মুসলমানদের যিয়ারত করার স্থানে পরিণত হয়েছে।


ইমাম মূসা কাযিম (আঃ)


হযরত মূসা ইবনে জাফার (আঃ) ১২৭ হিজরীর[] যিলহজ্জ মাসে অথবা ১২৮ হিজরীর[] ৭ সফর ইমাম সাদিক্ব (আঃ) এবং তাঁর স্ত্রী হামীদা হজ্জ থেকে যখন মদীনা নগরীতে প্রত্যাবর্তন করছিলেন তখন আবওয়া নামক স্থানে জন্ম গ্রহণ করেন[] এবং মদীনাতেও তাঁর জন্ম গ্রহণের কথা বর্ণিত হয়েছে।[] ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের বর্ষপঞ্জীতে সপ্তম ইমামের জন্ম দিবস ২০ যিলহজ্জ নিবন্ধিত হয়েছে।[] ইমাম কাযিমের (আঃ) প্রতি ইমাম জাফার সাদিক্বের (আঃ) অপরিসীম স্নেহ-মমতা ও ভালোবাসার কথা কিছু কিছু হাদীস গ্রন্থে ব্যক্ত হয়েছে।[] আহমাদ বার্কীর বর্ণনা অনুযায়ী ইমাম সাদিক্ব (আঃ) স্বীয় সন্তান ইমাম কাযিমের (আঃ) জন্ম গ্রহণের পর তিন দিন ধরে জনগণকে খাবার খাইয়েছিলেন (খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করেছিলেন)।[]

ইমাম কাযিমের (আ:)কুনিয়াহ (ডাকনাম) ও উপাধিসমূহঃ

ইমাম কাযিমের নসব (বংশ পরিচিতি ও বংশানুক্রম ): মূসা ইবনে জফার ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে আলী ইবনে হুসাইন ইবনে আলী ইবনে আবী তালিবের নসব বা বংশানুক্রম চার পিতৃপুরুষের মাধ্যমে আলী ইবনে আবী তালিব পর্যন্ত পৌঁছায়। তাঁর পিতা ইমাম সাদিক্ব (আঃ) শিয়া মুসলমানদের ৬ষ্ঠ ইমাম এবং তাঁর মার নাম হামীদা বারবারীয়া[] তাঁর কুনিয়াহ আবূ ইব্রাহীম,[] আবুল হাসান আল-আওয়াল,[১০] আবুল হাসান আল-মাযী [১১] এবং আবু আলী[১২] বলা হয়েছে। এছাড়াও আবু হামযা,[১৩] আবু আব্দুল্লাহ[১৪] ও আবু ইসমাঈলও[১৫] তাঁর কুনিয়া বলে উল্লেখ করা হয়। অন্যদের রুঢ় আচরণ ও দুর্ব্যবহারের মোকাবেলায় স্বীয় রাগ ও ক্রোধ সম্বরণ ও নিয়ন্ত্রণ করতে পারার জন্য তাঁকে কাযিম ( ক্রোধ সম্বরণকারী বা রাগ হজমকারী )[১৬]এবং অধিক অধিক ইবাদত বন্দেগী করার জন্য তাঁকে আব্দ-ই সালিহ ( খোদার নেক বান্দা ) উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে।[১৭] বাবুল হাওয়ায়েজ (হাজত অর্থাৎ প্রয়োজনাদি ও মনস্কামনাসমূহ বাস্তবায়ন ও পূরণের দরজা বা বাব )ও তাঁর উপাধিসমূহের অন্তর্ভু্ক্ত।[১৮] আর মদীনাবাসীরা তাঁকে যাইনুল মুজতাহিদীন ( ফকীহ মুজতাহিদদের শোভা ও সৌন্দর্য্য ) উপাধিতেও ভূষিত করেছিল।[১৯]

বনী উমাইয়া থেকে আব্বাসীয়দের কাছে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা স্থানান্তর কালে ইমাম মূসা ইবনে জাফার আল-কাযিম (আ:) জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বয়স যখন চার বছর তখন প্রথম আব্বাসীয় খলীফা খিলাফতের মসনদ ও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন। শৈশবে তাঁর তাত্ত্বিক আলোচনা যেমনঃ আবূ হানীফা[২০] এবং অন্যান্য ধর্মের পণ্ডিতদের[২১] সাথে তাঁর আলোচনা সমূহ যা মদীনায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল সেগুলো সংক্রান্ত কেবল গুটিকতক তথ্য ব্যতীত তাঁর ইমামতে অধিষ্ঠিত হওয়া পর্যন্ত ইমাম কাযিমের জীবন সংক্রান্ত তেমন তথ্য আমাদের হাতে নেই।

মানাকিব ও ফাযায়েল অধ্যায়ের এক রেওয়ায়তে বর্ণিত হয়েছে যে, ইমাম কাযিম (আঃ) অজ্ঞাত পরিচয়ে শামের এক গ্রামে গমন করে সেখানকার এক খ্রিষ্টান রাহিবের ( সন্ন্যাসী ) সাথে আলাপ করলে ঐ সন্ন্যাসী ও তার সঙ্গীসাথীরা ইসলাম ধর্ম কবুল করে।[২২]ঠিক একই ভাবে হজ্জ অথবা উমরা আদায়ের জন্য মক্কায় ইমাম কাযিমের (আঃ) সফরসমূহ সংক্রান্ত কিছু রেওয়ায়েত বিদ্যমান আছে। [২৩] আব্বাসীয় খলীফারা কয়েক বার ইমাম কাযিমকে (আ:) বাগদাদে তলব করেছিলেন। এ কয়েকটি ক্ষেত্র ছাড়া ইমাম কাযিম (আঃ) তাঁর জীবনের অধিকাংশ সময় মদীনায় অতিবাহিত করেন।

ইমাম কাযিমের আ) স্ত্রীগণ ও সন্তান-সন্ততি:

ইমাম কাযিমের (আ) স্ত্রীদের সংখ্যা সুস্পষ্ট নয়। তাদের মধ্যে প্রথম স্ত্রী ছিলেন ইমাম রিযার (আঃ) মা নাজমা[২৪] ইমাম কাযিমের ( আঃ) সন্তানদের সংখ্যা সংক্রান্ত ঐতিহাসিক সূত্র সমূহে বিভিন্ন ধরণের রেওয়ায়ত ও বর্ণনা বিদ্যমান। শেখ মুফীদের বর্ণনায় ইমাম কাযিমের (আঃ) মোট ৩৭ জন সন্তান (১৮ জন পুত্র সন্তান এবং ১৯ জন কন্যা সন্তান) ছিল। ইমাম রিযা (আঃ), ইব্রাহীম, শাহ চেরাগ, হামযা, ইসহাক তাঁর পুত্র সন্তানদের অন্তর্ভুক্ত এবং ফাতিমা মাসূমাহাকীমা তাঁর কন্যা সন্তানদের অন্তর্ভুক্ত।[২৫]ইমাম কাযিমের (আঃ) বংশধরগণ মূসাভী নামে খ্যাতি ও প্রসিদ্ধি লাভ করেছেন।[২৬]

ইমামত কালঃ

ইমাম কাযিম (আঃ) ইমাম সাদিক্বের (আঃ) শাহাদাতের পর ১৪৮ হিজরীতে ২০ বছর বয়সে ইমামতে অধিষ্ঠিত হন।[২৭]তাঁর ইমামত কাল ছিল চার আব্বাসীয় খলীফার খিলাফত কালের সমসাময়িক।[২৮] ইমাম কাযিমের (আঃ) ইমামত কালের প্র্রায় ১০ বছর ছিল খলীফা মনসুরের রাজত্ব কালের ( ১৩৬-১৫৮ হি) সমসাময়িক। তাঁর ইমামতের ১১ বছর ছিল মাহদী আব্বাসীর খিলাফত কালের ( ১৫৮-১৬৯) সমসাময়িক। এক বছর ছিল হাদী আব্বাসীর ( ১৬৯ – ১৭০হি.) খিলাফত কালের সমসাময়িক এবং তাঁর ইমামতের শেষ ১৩ বছর হারূনের খিলাফত কালে ( ১৭০-১৯৩হি.) অতিবাহিত হয়।[২৯] ইমাম কাযিমের (আঃ) ইমামত কাল ছিল ৩৫ বছর এবং ১৮৩ হিজরী সালে তিনি শাহাদাত বরণ করলে ইমামত তাঁর সন্তান ইমাম রিযার (আঃ) কাছে হস্তান্তরিত হয়।[৩০]

ইমামত সংক্রান্ত সুস্পষ্ট শরয়ী দলীল সমূহ ( নুসূস )

শিয়াদের দৃষ্টিতে ইমাম মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে মনোনীত ও নিযুক্ত হন এবং সঠিক ইমামকে চেনার পথ সমূহের অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে নাস বা সুস্পষ্ট শরয়ী দলীল অর্থাৎ আয়াত ও রেওয়ায়েত। পরবর্তী ইমামের ইমামত সংক্রান্ত মহানবী (সাঃ) অথবা পূর্ববর্তী ইমাম থেকে স্পষ্ট বক্তব্য, বাণী ও উক্তি।[৩১] ইমাম সাদিক্ব (আঃ) বহু ক্ষেত্রে তাঁর নিজের ঘনিষ্ট সাহাবাদের ( সঙ্গীসাথীগণ ) সম্মুখে মূসা ইবনে জাফারের ( আঃ) ইমামত ঘোষণা করেছিলেন। আল-কাফী,[৩২] ইরশাদ [৩৩], আ’লামুল ওযারা[৩৪]বিহারুল আন্ওয়ারে[৩৫] ইমাম মূসা কাযিমের (আঃ) ইমামতের দলীল সমূহ ( নাস অর্থাৎ সুস্পষ্ট শরয়ী দলীল , বক্তব্য , বাণী ও উক্তি ) বিদ্যমান আছে যেগুলো হচ্ছে ১৬, ৪৬ ,১২ ও ১৪ নং রেওয়ায়ত;[৩৬]যেমন:

  • এক রেওয়ায়েতে, সুলাইমান ইবনে খালেদ হতে বর্ণিত হয়েছে যে, ইমাম সাদিক্ব (আ.) স্বীয় সন্তান ইমাম কাযিম (আ.)-কে তাঁর পরবর্তী “সাহেবুল আমর” তথা ইমাম হিসেবে পরিচয় করিয়েছেন।[৩৭]
  • সাফওয়ান জামালও মনসুর ইবনে হাযেম থেকে বর্ণনা করেছেন, ইমাম কাযিম (আ.)-এর বয়স যখন ৫ বছর ছিল তখন ইমাম সাদিক্ব (আ.) তাঁর ঘাড়ে হাত রাখেন এবং তাঁর পরবর্তী ইমাম হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন।[৩৮]
  • ফাইয্ ইবনে মুখতার থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : “ আমি ইমাম সাদিক্ব কে (আ;) জিজ্ঞেস করলাম: আপনার পরবর্তী ইমাম কে ? “ ঠিক ঐ সময় তাঁর পুত্র সন্তান মূসা সেখানে প্রবেশ করলেন এবং ইমাম সাদিক্ব (আঃ) তাঁকে তাঁর পরবর্তী ইমাম হিসেবে পরিচিত করিয়ে দিলেন।
  • আলী ইবনে জাফার বর্ণনা করেছেন যে ইমাম সাদিক্ব (আঃ) হযরত মূসা ইবনে জাফার সম্পর্কে বলেছেন: সে হচ্ছে আমার সন্তানদের মধ্যে উত্তম ও শ্রেষ্ঠ; আমি তাঁকে আমার পরে ( অর্থাৎ পরবর্তী ইমাম হিসেবে) রেখে যাচ্ছি। সেই আমার পরে আমার স্থলাভিষিক্ত এবং সমগ্র সৃষ্টি জগতে মহান আল্লাহর হুজ্জাত ( হিদায়তের দলীল ) হবে।[৩৯] একই ভাবে উয়ুনু আখবারির রেযা’য় (আঃ) বর্ণিত হয়েছে যে, হারূনুর রশীদ তার নিজ সন্তানকে সম্বোধন করে মূসা ইবনে জাফারকে (আঃ) সত্য (হক) ইমাম এবং মহানবীর (সাঃ) স্থলাভিষিক্ত প্রকৃত প্রতিনিধি ইমাম ও খলীফা হওয়ার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ও যোগ্য ব্যক্তি বলে অভিহিত এবং তার নিজের নেতৃত্বকে যাহিরী ( বাহ্যিক ) এবং শক্তিবলে ও জোর করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে বর্ণনা করেন।[৪০]

ইমাম সাদিক্বের (আঃ) ওয়াসিয়ত এবং কিছু শিয়ার দোদুল্যমানতা, অস্থিরতা ও কীংকর্তব্য বিমূঢ়তাঃ

কতিপয় হাদীস গ্রন্থ সমূহে বর্ণিত হয়েছে যে, আব্বাসীয়দের কড়াকড়ি আরোপের বিষয়টি বিবেচনা করে এবং ইমাম কাযিমের (আঃ) জীবন রক্ষার জন্য আব্বাসীয় খলীফা সহ পাঁচ জনকে ইমাম সাদিক্ব (আঃ) তাঁর ওয়াসী হিসেবে পরিচিত করান।[৪১]যদিও বহু বার তাঁর পরবর্তী ইমামকে(মূসা কাযিম) স্বীয় সাহাবাদের(শিষ্য ও সঙ্গীসাথীগণ) কাছে পরিচিত করিয়ে দিয়েছিলেন তথাপি তাঁর এ পদক্ষেপ ( পাঁচ জনকে ওয়াসী বলে পরিচিত করানো) শিয়াদের জন্য অবস্থা ও পরিস্থিতি বেশ খানিকটা ঘোলাটে ও বিদঘুটে করে দিয়েছিল। এ সময় মুমিন-ই তাক্ এবং হিশাম ইবনে সালিমের মতো ইমাম সাদিক্বের (আঃ) কতিপয় জলীলুল কদর সাহাবাও সংশয় ও সন্দেহে আপতিত হয়েছিলেন। তাঁরা প্রথমে আবদুল্লাহ আফতাহের শরণাপন্ন হন, যে ইমাম হওয়ার দাবিও করেছিল এবং তাঁরা তাঁকে যাকাত সংক্রান্ত প্রশ্ন করেন কিন্তু আফতাহের জবাবগুলো তাদেরকে সন্তুষ্ট করতে পারে নি। তখন ঐ দুই ব্যক্তি হযরত মূসা ইবনে জাফারের ( আঃ) সাথে মুলাকাত করেন এবং ইমামের জবাবগুলো তাদেরকে সন্তুষ্ট করে এবং তাঁরাও তাঁর(ইমাম কাযিম) ইমামত মেনে নেন।[৪২]

শিয়াদের মধ্যে ভাঙ্গন ও শাখা-প্রশাখায় বিভক্ত হওয়াঃ

ইমাম কাযিমের (আঃ) ইমামত কালে ইসমাইলীয়া, ফাতাহীয়ানাভূসীয়া ফির্কার উদ্ভব হয় যদিও ইমাম সাদিক্বের (আঃ) জীবদ্দশায় শিয়াদের মধ্যে ভাঙ্গন ও শাখা-প্রশাখায় বিভক্ত হওয়ার ক্ষেত্র তৈরি হয়েছিল; তবে ঐ সময় ( ইমাম সাদিক্বের ইমামত কালে) শিয়াদের মধ্যে কোনো ভাঙ্গন ও শাখা-প্রশাখায় বিভক্তি হওয়ার ঘটনা ঘটে নি। কিন্তু ইমাম সাদিক্বের (আঃ) শাহাদাতের পরে এবং ইমাম মূসা কাযিমের (আঃ) ইমামতের শুরুতে শিয়ারা বিভিন্ন ফির্কায় বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল। একদল শিয়া ইমাম সাদিক্বের (আঃ) পুত্র ইসমাইলের মৃত্যু অস্বীকার করে তাঁকে ইমাম বলে মেনে নিয়েছিল। এই দলের কতিপয় ব্যক্তি ইসমাইলের জীবিত থাকার ব্যাপারে নিরাশ হয়ে যাওয়ার পর তার ছেলে মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাইলকে ইমাম বলে মেনে নেয়। এই দলটাই ইতিহাসের ইসমাইলীয়া বলে প্রসিদ্ধ হয়। আরো কিছু শিয়া যারা আবদুল্লাহ ইবনে আফতাহকে ইমাম বলে মেনে নিয়েছিল তারা ফাতাহীয়া ফির্কা নামে খ্যাত হয়েছিল এবং ইমাম জাফার সাদিক্বের (আঃ) শাহাদাতের ৭০ দিন পরে আবদুল্লাহ আফতাহ মৃত্যু বরণ করলে তারা ( ফাতাহীয়া ফির্কা ) ইমাম মূসা ইবনে জাফারের (আঃ) ইমামতে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তার আনুগত্যে ফিরে আসে। আবার কতিপয় শিয়া নাভূস নামের এক ব্যক্তিকে অনুসরণ করে ইমাম সাদিক্বের (আঃ) ইমামতের উপর তাওয়াক্কুফ করেছিল অর্থাৎ তারা ইমাম জাফার সাদিক্বকে (আ:) শেষ ইমাম ধরে ইমামত স্থগিত হয়ে গেছে বলে বিশ্বাস করত এবং এটাই হচ্ছে তাওয়াক্কুফ বা স্থগিত করণ ) এবং একদল শিয়া মুহাম্মাদ দীবাজের ইমামতে বিশ্বাসী হয়েছিল।[৪৩]

গালীয়া ফির্কার ( চরমপন্থীদের) তৎপরতাঃ

ইমাম কাযিমের (আঃ) ইমামত কালে চরমপন্থীরাও ( গালিয়া ) তৎপর ছিল। এই সময় বাশীরীয়া ফির্কার উদ্ভব হয়। এই ফির্কা ইমাম মূসা কাযিমের (আঃ) একজন সাহাবা মুহাম্মাদ ইবনে বাশীরের সাথে সংশ্লিষ্ট ও সম্পর্কিত। সে ইমাম কাযিমের (আঃ) জীবদ্দশায় ইমামের ব্যাপারে বেশ কিছু মিথ্যা কথা বলেছিল।[৪৪] মুহাম্মাদ ইবনে বাশীর বলত: “ জনগণ যাকে মূসা ইবনে জাফার (আঃ) হিসেবে চেনে তিনি আসলে মূসা ইবনে জাফার নন, যিনি মহান আল্লাহর ইমাম ও হুজ্জাত [৪৫] এবং দাবী করতো যে, প্রকৃত বা আসল মূসা ইবনে জাফার (আঃ) তার কাছেই আছেন এবং সে চাইলে তাদের কাছে তাঁকে ( প্রকৃত ইমাম মূসা কাযিম) দেখাতে ও উপস্থাপন করতে পারে। [৪৬] সে যাদু ও ভেলকি বাজি প্রদর্শনে দক্ষ ও সিদ্ধ হস্ত ছিল এবং সে ইমাম কাযিমের (আঃ) চেহারার মতো মুখমণ্ডলের ভাস্কর্য তৈরি করে তা জনগণের কাছে ইমাম কাযিম হিসেবে পরিচিত করাত এবং বেশ কিছু মানুষ এতে করে ধোঁকাও খেয়েছিল ও বিভ্রান্ত হয়েছিল। [৪৭] মুহাম্মাদ ইবনে বাশীর ও তার অনুসারীরা ইমাম কাযিমের (আঃ) শাহাদাতের আগেই সমাজে প্রচার করেছিল যে, ইমাম কাযিম (আঃ) কারাগারে যাননি ( অর্থাৎ কারাবন্দী হন নি ), তিনি জীবিত আছেন এবং মৃত্যুবরণ করবেন না। [৪৮] ইমাম কাযিম (আঃ) মুহাম্মদ ইবনে বাশীরকে অপবিত্র বলে মনে করতেন, তাকে অভিশাপ দিতেন এবং তার রক্ত ঝরানো ও তাকে হত্যা করা মুবাহ ও জায়েয বলতেন।[৪৯]

জ্ঞান সম্বন্ধীয় কর্মতৎপরতা ও অবদান সমূহঃ

ইমাম কাযিম (আঃ) থেকে জ্ঞান সম্বন্ধনীয় ভিন্ন ধর্মী কর্মতৎপরতা ও অবদান সমূহ “রেওয়ায়ত, জ্ঞানগত তাত্ত্বিক বিতর্ক ও আলোচনার” আকারে শিয়াদের হাদীস গ্রন্থ সমূহে বর্ণিত হয়েছে।[৫০] ইমাম কাযিম (আঃ) থেকে প্রচুর রেওয়ায়ত শিয়াদের হাদীস গ্রন্থ সমূহে বর্ণিত হয়েছে; এ রেওয়ায়ত সমূহের অধিকাংশই হচ্ছে তৌহিদ[৫১], বাদা[৫২], ঈমানের[৫৩] মতো কালামী (আকীদাগত) এবং বিভিন্ন চারিত্রিক ও নৈতিক (আখলাকী) বিষয় সংক্রান্ত।[৫৪] ঠিক অনুরূপ ভাবে “দুআ-ই জৌশান-ই সাগীরের” মতো বেশ কিছু মুনাজাত’ও (প্রার্থনা) তাঁর থেকে বর্ণিত হয়েছে। এসব রেওয়ায়ত ও বর্ণনার সনদসমূহে তাঁকে ( ইমাম মূসা কাযিম) কাযিম, আবুল হাসান, আবুল হাসান আল-আওওয়াল (প্রথম আবুল হাসান), আবুল হাসান আল-মাযী, আলিম (জ্ঞানী), [৫৫] আব্দ–ই সালিহ(নেক বান্দা) ইত্যাদি নাম ও উপাধি সহকারে উল্লেখ করা হয়েছে। আযীযুল্লাহ আতারিদী তাঁর (আঃ) ৩১৩৪ হাদীস মুসনাদুল ইমাম কাযিম (আঃ) নামক গ্রন্থে সংগ্রহ ও সংকলন করেছেন।[৫৬] আবু ইমরান মার্ভাযী বাগদাদী (মৃ:২৯৯) আহলুস সুন্নাহর আলিমদের থেকেও শিয়াদের সপ্তম ইমামের বেশ কিছু হাদীস মুসনাদুল ইমাম মূসা ইবনে জাফার নামক গ্রন্থে সংগ্রহ ও সংকলন করেন।[৫৭] ইমাম মূসা ইবনে জাফার (আঃ) থেকে আরো কিছু তাত্ত্বিক ( ইলমী) গ্রন্থ ও বই পুস্তকের কথা বর্ণিত হয়েছে। ইমাম কাযিমের (আঃ) ভাই আলী ইবনে জাফারের আল-মাসায়েল শিরোনামে একটি পুস্তক আছে যার মধ্যে তিনি যে সব ধর্মীয় মাসালা (প্রশ্ন) ইমাম কাযিমকে (আঃ) জিজ্ঞেস করেছিলেন এবং সেগুলোর জবাবও তিনি ইমামের (আঃ) কাছ থেকে পেয়েছিলেন সেগুলো লিপিবদ্ধ করেছেন।[৫৮] এই পুস্তকের বিষয়বস্তু হচ্ছে ফিকহী(শরয়ী) মাসায়েল (প্রশ্নাবলী)।[৫৯] এই পুস্তক আলুল বাইত ফাউন্ডেশন কর্তৃক “মাসায়েলু আলী ইবনে জাফার ওয়া মস্তাদ্রাকাতুহা “ শিরোনামে মুদ্রিত ও প্রকাশিত হয়েছে। • আকল তথা বু্দ্ধিবৃ্ত্তি সংক্রান্ত একটি রিসালা (সন্দর্ভ) যা হিশাম ইবনে হাকাম কে সম্বোধন করে লেখা হয়েছে। [৬০]তৌহীদ তথা একত্ববাদ সংক্রান্ত একটি রিসালা (সন্দর্ভ) বিদ্যমান আছে যাতে ইমাম কাযিম (আঃ) প্রদত্ত ফাতহ ইবনে আব্দুল্লাহর প্রশ্নাবলীর জবাব রয়েছে।[৬১] • আলী ইবনে ইয়াক্বতীনও যে সব প্রশ্নের উত্তর ও বিষয় মূসা ইবনে জাফার (আ) থেকে শিখেছিলেন সেগুলো “মাসায়েল আন আবিল হাসান মূসা ইবনে জাফার (আঃ)” শিরোনামে একটি কিতাবে সংকলিত হয়েছে।[৬২]

মুনাযারা ( বিতর্ক) ও আলোচনা সমূহঃ

কয়েক জন আব্বাসীয় খলীফা, [৬৩] ইহুদী,[৬৪]খ্রীষ্টান পণ্ডিত [৬৫]আবূ হানীফা [৬৬] এবং আরও অন্যদের সাথে ইমাম কাযিমের (আঃ) মুনাযারা ও আলোচনা সমূহের কথা বর্ণিত হয়েছে। বাক্বির শরীফ কারাশী খলীফা মাহদী আব্বাসীর সাথে ইমাম কাযিমের (আঃ) আটটি আলোচনা ইমাম কাযিমের মুনাযারা সমূহের শিরোনামে সংকলন করেছেন।[৬৭]ইমাম কাযিম (আঃ) ফাদাক এবং পবিত্র কুরআনে মদ (খামর) পান হারাম হওয়ার ব্যাপারে মাহদী আব্বাসীর সাথে ইমাম কাযিমের (আঃ) বেশ কিছু মুনাযারা সম্পন্ন হয়েছে।[৬৮] খলীফা হারূনের সাথেও তাঁর বেশকিছু মুনাযারা হয়েছিল। যেহেতু হারূন চাচ্ছিল ইমাম মূসা কাযিমের (আঃ) সাথে রাসূলুল্লাহর আত্মীয়তার সম্পর্কের চেয়ে তার নিজের সাথে মহানবীর (সাঃ) আত্মীয়তার সম্পর্ককে অধিক নিকটবর্তী দেখাতে সেহেতু ইমাম কাযিম (আঃ) খলীফা হারূনের সান্নিধ্যে মহানবীর (সাঃ) সাথে তার নিজের আত্মীয়তার (ইনতিসাব) সম্পর্ক অধিক নিকটবর্তী হওয়ার কথা স্পষ্ট ভাষায় ব্যক্ত করেছেন।[৬৯] অন্যান্য ধর্মের পণ্ডিত ও আলিমদের সাথে হযরত মূসা ইবনে জাফারের (আঃ) আলোচনা সমূহও সাধারণত: তাদের ( অন্যান্য ধর্মের পণ্ডিত ও আলিম ) প্রশ্নাবলীর জবাব আকারে অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং এ সব আলোচনার কারণে তারা অবশেষে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হয়েছেন।[৭০]

সীরত ( জীবন চরিত ও ব্যবহারিক রীতি নীতি)

ইবাদত সংক্রান্ত সীরতঃ

শিয়াসুন্নী সূত্র সমূহ অনুযায়ী, ইমাম কাযিম (আঃ) ছিলেন অত্যন্ত ইবাদতকারী। এ কারণেই তাঁর লকব (উপাধি) হচ্ছে আব্দ -ই সালিহ (নেক বান্দা)।[৭১] কতিপয় বর্ণনা অনুযায়ী ইমাম মূসা কাযিম (আঃ) এত ইবাদত বন্দেগী করতেন যে তাঁর কারাধ্যক্ষরাও প্রভাবিত হয়ে যেত।[৭২] শেখ মুফীদ হযরত মূসা ইবনে জাফারকে (আঃ) তাঁর যুগের সকল ব্যক্তিদের মধ্যে সবচেয়ে ইবাদতকারী ব্যক্তি বলে গণ্য করতেন এবং তিনি রেওয়ায়ত করেছেন যে, ইমাম কাযিম (আঃ) মহান আল্লাহর ভয়ে এতটা ক্রন্দন করতেন যে তাঁর দাড়ি মোবারক অশ্রু জলে সিক্ত হয়ে যেত।

«عَظُمَ الذَّنْبُ مِنْ عَبْدِكَ فَلْيَحْسُنِ الْعَفْوُ مِنْ عِنْدِكَ»

“আপনার এ বান্দার গুনাহ খাতা অনেক বড় হয়ে গেছে , অতঃপর আপনার (কাছ থেকে) ক্ষমা সুন্দর ও মহান হোক।"

এ দুআটি ইমাম কাযিম (আঃ) পুনরাবৃত্তি করতেন।

اَللّٰهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُکَ الرَّاحَةَ عِنْدَ الْمَوْتِ وَ الْعَفْوَ عِنْدَ الْحِسَابِ

" হে আল্লাহ: আমার মুত্যুবরণ কালে আপনার কাছে স্বাচ্ছন্দ ও স্বস্তি এবং পরকালে হিসাব নিকাশের সময় আমাকে ক্ষমা করে দেওয়ার জন্য প্রার্থনা করছি।"

এ দুআ সিজদায় পড়তেন[৭৩]

এমনকি যখন তিনি হারূনের নির্দেশে কারারুদ্ধ হন তখন তিনি মহান আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলছিলেন: মহান আল্লাহর ইবাদত বন্দেগী করার এক বিরাট সুযোগ পেয়েছেন তিনি। তিনি বলছিলেন: হে আল্লাহ! সব সময় আমি আপনার কাছে ইবাদত করার জন্য ফারাগাত (অবসর) খুঁজছিলাম আর এখন তা আপনি আমার জন্য ব্যবস্থা করে দিয়েছেন; অতএব আমি আপনার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।[৭৪]

ইমাম কাযিমের (আঃ) আংটিঃ

"হাসবিআল্লাহু হাফিযী (আমার রক্ষক মহান আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট।[৭৫] এবং আল-মুলকু লিল্লাহি ওয়াহদাহ্ (রাজত্ব কেবল এক অদ্বিতীয় মহান আল্লাহর। এ সব বাক্য ইমাম কাযিমের (আঃ) আংটিতে উৎকীর্ণ ছিল।[৭৬]

চারিত্রিক নৈতিক ( আখলাকী) সীরতঃ

শিয়া সুন্নী সূত্র সমূহে ইমাম কাযিমের (আঃ) ধৈর্য্যবদান্যতা [৭৭] [৭৮] সংক্রান্ত বিভিন্ন ধরণের বর্ণনা ও রেওয়ায়ত বিদ্যমান।[৭৯] [৮০] শেখ মুফীদ তাঁকে (আঃ) তাঁর যুগের সকল সমসাময়িক ব্যক্তির মধ্যে সবচেয়ে দানশীল ব্যক্তি বলে জানেন যিনি রাতের আঁধারে মদীনার দরিদ্র মানুষদের জন্য খাদ্যসামগ্রী ও রসদপত্র নিয়ে যেতেন।[৮১] ইবনে আন্বাহ্ হযরত মূসা ইবনে জাফারের দানশীলতা ও বদান্যতা সম্পর্কে বলেছেন: তিনি (আঃ) রাতের বেলা বাড়ী থেকে দিরহাম ভর্তি ব্যাগ ও থলে সমূহ সাথে নিয়ে বের হয়ে যেতেন এবং যার কাছে তিনি পৌঁছাতেন তাকে অথবা যারা তার দান ও বদান্যতার জন্য অপেক্ষমান থাকত তাদেরকে দান করতেন ঐ দিরহামের থলে গুলো। আর এ ভাবে দিরহামে পূর্ণ থলেগুলো প্রবাদে (যার্বুল মাসাল) পরিণত হয়ে গিয়েছিল।[৮২] ঠিক একই ভাবে বলা হয়েছে যে যে সব ব্যক্তি তাঁর (আঃ) ক্ষতি সাধন করত তাদেরকেও তিনি খাদ্য সামগ্রী ও টাকাপয়সা দিয়ে সাহায্য করতেন। একদিন তাঁকে (আঃ) খবর দেওয়া হল যে এক ব্যক্তি তাঁর (আঃ) কষ্ট ও যাতনা দেওয়ার চেষ্টা করছে। তিনি (ইমাম) তার জন্য হাদিয়া পাঠান।[৮৩] অনুরূপ ভাবে শেখ মুফীদ ইমাম কাযিমকে (আঃ) তাঁর সমসাময়িক সকল ব্যক্তির চেয়ে পরিবার ও অন্য সকল আত্মীয়ের সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক ও বন্ধন রক্ষার ব্যাপারে সবচেয়ে সচেষ্ট ও যত্নশীল বলে উল্লেখ করেছেন।[৮৪]

শিয়া মুসলমানদের সপ্তম মাসূম ইমামের কাযিম উপাধি পাওয়ার দলীল ছিল এই যে, তিনি (আঃ) নিজের রাগ ও ক্রোধ সম্বরণ করতেন।[৮৫]হাদীসের সূত্র ও গ্রন্থ সমূহে বিভিন্ন ধরনের রেওয়ায়ত ও বর্ণনা বিদ্যমান আছে যে, ইমাম কাযিম (আঃ) দুশমন ও যারা তাঁর সাথে খারাপ আচরণ ও ব্যবহার করত তাদের বরাবরে ও সামনে নিজের ক্রোধ ও রাগের প্রশমন করতেন।([৮৬] ) উদাহরণ স্বরূপ:হযরত উমরের এক বংশধর ইমাম কাযিমের (আঃ) সামনেই ইমাম আলীর (আঃ) অবমাননা ও অপমান করে।

ইমামের সঙ্গীসাথীরা ঐ ব্যক্তিকে আক্রমণ ও শায়েস্তা করতে চাইলে ইমাম বাধা দেন। এরপর তিনি ঐ লোকের শস্য ক্ষেত্রে ও খামারে গমন করেন। সে ইমামকে দেখে চেঁচিয়ে বলতে থাকে যে তিনি (ইমাম) পা দিয়ে তার শস্য দলিত করে নষ্ট করে দেবেন। ইমাম তার নিকটবর্তী হয়ে হাসিমুখে জিজ্ঞেস করলেন: তুমি তোমার ক্ষেত-খামারে শস্য বোনার জন্য কত খরচ করেছ? ঐ লোকটা তখন বলল : ১০০ দিনার ! তখন ইমাম জিজ্ঞেস করলেন : কী পরিমাণ শস্য ফলন ও উৎপাদনের আশা আছে তোমার ? লোকটা উত্তর দিল : আমি গায়ব জানি না । ইমাম বললেন: আমি বলছি যে কী পরিমাণ শস্য পাওয়ার আশা আছে তোমার? লোকটা বলল: ২০০ দিনার। ইমাম তাকে ৩০০ দিনার দিয়ে বললেন: এই ৩০০ দিনার তোমার এবং তোমার শস্যও তোমার জন্য রইল। অত:পর ইমাম মসজিদের দিকে গমন করলেন। ঐ লোকটা তাড়াতাড়ি মসজিদে গিয়ে ইমাম কাযিমকে দেখার জন্য দাঁড়িয়ে এই আয়াতটা উচ্চ স্বরে তিলাওয়াত করল: اَللّٰهُ أَعْلَمُ حَیْثُ یَجْعَلُ رِسَالَتَهُ .

মহান আল্লাহ তাঁর রিসালতের ভার কার ওপর অর্পণ করবেন তা তিনিই ভাল জানেন। (সূরা-ই আন'আম: ১২৪)। যে বাশার হাফী পরবর্তীতে সূফীদের মাশায়েখের (পীর-মোর্শেদগণ )অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলেন তিনিও ইমাম কাযিমের (আঃ) কথা, বাণী ও চারিত্রিক গুণাবলী দিয়ে প্রভাবিত হয়ে তওবা করেছিলেন।[৮৭] [৮৮]

রাজনৈতিক সীরাত ( রাজনৈতিক চরিত্র ও রীতি নীতি)

কতিপয় সূত্র ও গ্রন্থে বলা হয়েছে যে, ইমাম কাযিম (আঃ) মুনাযারা (বিতর্ক), অসহযোগিতা ইত্যাদির মতো বিভিন্ন পদ্ধতিতে আব্বাসীয় খলীফাদের খিলাফত অবৈধ হওয়ার ওপর জোর গুরুত্ব আরোপ করতেন ও তাগিদ দিতেন। তিনি আব্বাসীয় খলীফাদের ব্যাপারে জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস নড়বড়ে ও দুর্বল করে দেওয়ার চেষ্টা করতেন।[৮৯] নীচে উল্লেখিত ক্ষেত্র সমূহ হচ্ছে (ইমাম কাযিম আঃ কর্তৃক) আব্বাসীয় খিলাফত ও প্রশাসনের অবৈধ হওয়ার বিষয় প্রমাণ করার চেষ্টার কিছু নমুনা বর্ণিত হলো; উদাহরণ স্বরূপঃ

যে সব ক্ষেত্রে আব্বাসীয় খলীফাগণ নিজেদের শাসন কর্তৃত্বের বৈধতা প্রমাণের জন্য নিজেদেরকে মহানবীর (সাঃ) নিকটাত্মীয় বলে দেখাতো ও দাবি করত সে সব ক্ষেত্রে ইমাম কাযিম (আঃ) তার নিজ বংশ পরিচিতি (নসব) তুলে ধরে দেখাতেন যে তিনি (আঃ) আব্বাসীয়দের চেয়ে মহানবীর (সাঃ) অধিক নিকটবর্তী, নিকটাত্মীয় ও বংশধর (( আর আব্বাসীয় খলীফাগণ মহানবীর (সাঃ) বংশধর ছিল না বরং তারা ছিল মহানবীর (সাঃ) চাচা হযরত আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিবের বংশধর এবং কোনো ব্যক্তির বংশধরগণ ঐ ব্যক্তির পিতৃব্যের বংশধরগণের চেয়ে ঐ ব্যক্তির অধিক নিকটবর্তী; আর এ বিষয়টি দিবালোকের মতো সুস্পষ্ট ))। যেমন:

ইমাম কাযিম (আঃ) এবং হারূন আব্বাসীর মধ্যে অনুষ্ঠিত কথোপকথন: মুবাহালার আয়াতের মতো পবিত্র কুরআনের বেশ কিছু আয়াতের ওপর নির্ভর করে এবং স্বীয় দাদী মা হযরত ফাতিমা যাহরার (আঃ) মাধ্যমে ইমাম কাযিম (আঃ) নিজেকে মহানবীর (সাঃ) বংশধর হিসেবে প্রমাণ করেন। [৯০][৯১]

  • যখন মাহদী আব্বাসী জোর জুলুম করে দখল করা সম্পত্তি ও ধনসম্পদ ( সেগুলোর প্রকৃত মালিকদের কাছে) ফেরৎ দিচ্ছিল ( অর্থাৎ রদ্দে মাযালিম করছিল ) তখন ইমাম কাযিম (আঃ) তার কাছে ফাদাক ফেরত দেওয়ার দাবি করেন।[৯২] মাহদী আব্বাসী তাঁর কাছে অনুরোধ করলেন তিনি যেন ফাদাকের সীমা পরিসীমা সুনির্দিষ্ট করে দেন। আর ইমাম (আঃ) ফাদাকের সীমা পরিসীমা সুনির্দিষ্ট করে বলেন যে, ফাদাকের সীমা পরিসীমা আব্বাসীয় সাম্রাজ্যের সীমা পরিসীমার সমান।[৯৩]
  • শিয়া মুসলমানদের সপ্তম ইমাম তাঁর সাহাবাদেরকে আব্বাসীয়দের সাথে সহযোগিতা না করার নির্দেশ দিতেন। যেমন: ইমাম কাযিম (আঃ) সাফওয়ান জাম্মালকে তার উটগুলো হারূনের কাছে ভাড়া দিতে নিষেধ করেন।[৯৪] অথচ তিনি (আঃ) আলী ইবনে ইয়াক্বতীন যিনি হারূনের প্রশাসনে মন্ত্রী ছিলেন তাঁকে আব্বাসীয়দের দরবারে থেকে শিয়া মুসলমানদের স্বার্থে খেদমত ও সেবা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছিলেন।[৯৫] তিনি (আঃ) একই ভাবে তাঁর কাছে চেয়েছিলেন যেন তিনি (আলী ইবনে ইয়াক্বতীন) আহলুল বাইতের (আঃ) মুহববতকারীদেরকে সম্মান (তাকরীম) করার জামানত (নিশ্চয়তা ) দেন এবং ইমাম ও ( আঃ) ঠিক তেমনি তাঁকে নিশ্চয়তা দেন যে তিনি (আলী ইবনে ইয়াক্বতীন) জেল – জুলুম, হত্যা, কষ্ট ও যাতনার শিকার হবেন না।[৯৬]

এতদসত্ত্বেও ইমাম কাযিম (আঃ) থেকে তদানীন্তন আব্বাসীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বিরোধিতা করার রেওয়ায়ত ও বর্ণনা বিদ্যমান নেই। তিনি তাকিয়া নীতি মেনে চলতেন এবং শিয়াদেরকেও তিনি তাকিয়া মেনে চলার নির্দেশ দিতেন। যেমন: ইমাম কাযিম (আঃ) খলীফা হাদী আব্বাসীর মা খাইরুযানকে চিঠি দিয়ে হাদী আব্বাসীর মৃত্যুতে তাকে সান্ত্বনা জানিয়েছিলেন।[৯৭] এক রেওয়ায়ত অনুযায়ী যখন হারূন তাঁকে (আঃ) তলব করেন তখন তিনি (আঃ) বলেছিলেন: “যেহেতু শাসনকর্তার সামনে তাকিয়া মেনে চলা উচিত (ওয়াজিব) সেহেতু আমি হারূনের কাছে যাচ্ছি”। আবূ তালিবের বংশধরদের বিবাহের জন্য এবং তাদের প্রজন্ম যেন বিলুপ্ত হয়ে না যায় সে জন্য তিনি (আঃ) হারূনের উপঢৌকন সমূহ গ্রহণ করেছিলেন। [৯৮] এমনকি ইমাম কাযিম (আঃ) আলী ইবনে ইয়াক্বতীনের কাছে প্রেরিত পত্রে তাঁর থেকে বিপদ দূরীভূত হওয়া পর্যন্ত কিছু দিন তাঁকে আহলে সুন্নাহর নিয়মে ওযূ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।[৯৯]

ইমাম কাযিম (আঃ) এবং আলাভীদের ( আলীবংশীয়গণ) কিয়াম ( বিদ্রোহ ও বিপ্লব ) সমূহঃ

ইমাম মূসা কাযিমের (আঃ) জীবনকাল আব্বাসীয়দের উত্থান ও ক্ষমতায়ন এবং তাদের বিরুদ্ধে আলাভীদের কিয়াম ও বিপ্লব সমূহের সমসাময়িক। আব্বাসীয়গণ মহানবীর (সাঃ) পবিত্র আহলুল বাইতের (আঃ) সমর্থনের শ্লোগান দিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা লাভ করে। কিন্তু অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই আব্বাসীয়রা আলাভীদের জন্য ভয়ঙ্কর কঠোর শত্রুতে রূপান্তরিত হয় এবং তাঁদের অনেককে তারা (আব্বাসীয়রা) হত্যা এবং কারারুদ্ধ করে।[১০০] আলাভীদের সাথে আব্বাসীয় শাসকদের কঠোরতা অবলম্বন এবং কড়াকড়ি আরোপের কারণে কতিপয় বিখ্যাত আলাভী ব্যক্তিত্ব বিদ্রোহ করতে বাধ্য হন। যেমন: ফাখখের শহীদের কিয়াম (বিদ্রোহ ), ইয়াহইয়া ইবনে আব্দুল্লাহর কিয়াম ( বিদ্রোহ ) এবং ইদ্রীসীয় হুকুমতের প্রতিষ্ঠা । ফাখখের কিয়াম ১৬৯ হিজরী সালে ইমাম কাযিমের (আঃ) ইমামত কালে এবং হাদী আব্বাসীর খিলাফত কালে সংঘটিত হয়েছিল।[১০১] ইমাম কাযিম (আঃ) এ সব কিয়ামে অংশগ্রহণ করেন নি এবং এসব কিয়ামের পক্ষে বা বিপক্ষে ইমামের স্পষ্ট কোনো নীতি অবস্থানের কথাও বর্ণিত হয় নি; এমনকি ইয়াহইয়া ইবনে আব্দুল্লাহ তাবারিস্তানে কিয়াম ও বিদ্রোহের পর একটি পত্রে সহযোগিতা না করার জন্য ইমাম কাযিমের (আঃ) সমালোচনা ও অভিযোগ করেছিলেন।[১০২]

মদীনায় সংঘটিত হওয়া ফাখখের বিদ্রোহে ইমাম কাযিমের (আঃ) নীতি অবস্থান সংক্রান্ত দুই দৃষ্টিভঙ্গি বিদ্যমান: কেউ কেউ বিশ্বাস করেন যে ইমাম কাযিম (আঃ) এই কিয়ামের সমর্থক ছিলেন। এদের এ বক্তব্যের দলীল হচ্ছে ফাখখের শহীদকে উদ্দেশ্য করে ইমাম কাযিমের (আঃ) সম্বোধন: “অতএব নিজ দায়িত্ব ও কর্মের ব্যাপারে তুমি অবশ্যই দৃঢ়চিত্ত থাকবে, কারণ যদিও এই জনগণ ঈমান প্রকাশ করে, কিন্তু তাদের হৃদয় ও মনের গভীরে শিরক রয়েছে। (১১১)(১১২) আবার কেউ কেউ বলেছেন: এ সব কিয়াম ও বিদ্রোহে ইমাম কাযিমের (আঃ) সমর্থন ছিল না। (১১৩) যা হোক, যখন ইমাম (আঃ) ফাখখের শহীদের কর্তিত মস্তক দেখতে পেলেন তখন তিনি “ ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেঊন” এ আয়াত ( আয়াত -ই ইস্তির্জা) তিলাওয়াত করেন এবং তাঁর প্রশংসা করেন। (১১৪) খলীফা হাদী আব্বাসী ফাখখের কিয়ামের ফরমান (নির্দেশ) ইমাম কাযিমের (আঃ) সাথে সংশ্লিষ্ট করতেন (অর্থাৎ দেখাতেন যে ফাখখের বিদ্রোহ ইমাম কাযিমের (আঃ) গোপন নির্দেশে সংঘটিত হয়েছে) এবং এ কারণেই তিনি ইমাম কাযিমকে (আঃ) হত্যারও হুমকি দিয়েছিলেন। (১১৫)

জেলঃ

ইমাম কাযিমকে (আঃ) তাঁর ইমামত কালে বহুবার আব্বাসীয়‌ খলীফাদের নির্দেশে দরবারে উপস্থিত করানো অথবা কারারুদ্ধ করা হয়েছে। প্রথম বার মাহদী আব্বাসীর শাসনামলে খলীফার নির্দেশে ইমামকে মদীনা থেকে বাগদাদে আনা হয়।[১০৩] হারূনও ইমামকে দুবার কারারুদ্ধ করেছিল। প্রথম বার গ্রেফতার ও কারারুদ্ধ করার সময়কাল হাদীস ও ইতিহাসের গ্রন্থসমূহে উল্লেখিত হয়নি। তবে ২য় বার ১৭৯ হিজরী সালের ২০ শাওয়াল মদীনায় ইমাম কাযিমকে (আঃ) গ্রেফতার করা হয়[১০৪] এবং ৭ জিলহজ বসরায় ঈসা ইবনে জাফারের গৃহে তাঁকে বন্দী করে রাখা হয়।[১০৫] শেখ মুফীদের বর্ণনা মতে হারূন ১৮০ হিজরী সালে ঈসা ইবনে জাফারের কাছে পত্র পাঠিয়ে ইমাম কাযিমকে (আঃ) হত্যা করার জন্য তাঁকে অনুরোধ করলে সে তা গ্রহণ করে নি।[১০৬] বেশ কিছুদিন পরেই ইমাম কাযিম (আঃ) বাগদাদে ফযল ইবনে রবীর কারাগারে স্থানান্তরিত হন। ইমাম কাযিম (আঃ) তাঁর জীবনের শেষ বছরগুলো ফযল ইবনে ইয়াহইয়া এবং সিন্দী ইবনে শাহিকের জেলে অতিবাহিত করেছেন।[১০৭] ইমাম মূসা কাযিমের (আঃ) যিয়ারত নামায় তাঁকে (ইমামকে) “আল-মুআযযাবু ফী ক্ব’রিস সুজূন” ( হে ঐ সত্ত্বা যিনি কারাগার সমূহের গভীরে সাজা প্রাপ্ত)।[১০৮] সম্বোধন করে সালাম দেয়া হয়েছে। ইমামের যিয়ারতনামায় তাঁর কারাগারকে “যুলামুল মাতামীর” বলা হয়েছে। “মাতমূরা” হচ্ছে ঐ কারাগার যা হচ্ছে এমন কূপ সদৃশ যে সেখানে পা লম্বা করা অথবা শোয়া সম্ভব নয়। আর যেহেতু বাগদাদ দজলা নদীর কিনারায় অবস্থিত সেহেতু ভূগর্ভস্থ জেলের প্রকোষ্ঠ গুলো স্বাভাবিক ভাবেই আর্দ্র ও স্যাতস্যাতে থাকত।([১০৯]

আব্বাসীয় খলীফাগণ কর্তৃক শিয়া মুসলমানদের সপ্তম ইমামকে গ্রেফতার করে কারারুদ্ধ করা প্রসঙ্গে বিভিন্ন ধরনের বর্ণনা হাদীস গ্রন্থ সমূহে বিদ্যমান। সুতরাং কতিপয় রেওয়ায়ত অনুযায়ী হারূনের আদেশে মূসা ইবনে জাফারকে (আঃ ) গ্রেফতার করার কারণ হচ্ছে ইমাম কাযিমের (আঃ) প্রতি ইয়াহইয়া বার্মেকীর হিংসা ও দ্বেষ এবং হারূনের কাছে ইমাম কাযিমের (আঃ) ভ্রাতুস্পুত্র আলী ইবনে ইসমাইল ইবনে জাফার কর্তৃক স্বীয় চাচার বিরুদ্ধে হারূনের কাছে বদনাম করা।[১১০] বলা হয়েছে যে, শিয়াদের সাথে ইমাম কাযিমের (আঃ) সম্পর্ক ও যোগাযোগ থাকার ব্যাপারে হারূন খুবই স্পর্শকাতর ও সংবেদনশীল ছিলেন এবং তার প্রচণ্ড ভয় ভীতি ছিল যে ইমাম কাযিমের (আঃ) ইমামতে শিয়াদের বিশ্বাস তার ( হারূন) শাসন কর্তৃত্ব ও সরকারকে দুর্বল করে দিতে পারে।[১১১] ঠিক একই ভাবে কিছু কিছু রেওয়ায়ত অনুযায়ী ইমাম কাযিমকে (আঃ) কারারুদ্ধ করার কারণ ছিল এই যে, ইমাম (আঃ) থেকে তাকিয়া নীতি মেনে চলার নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও হিশাম ইবনে হাকামের মতো কতিপয় শিয়া ইমামের এই নির্দেশ পালন করেনি ও মেনে চলেনি।[১১২] হিশাম ইবনে হাকামের মুনাযারা ( মাযহাবী তর্কবিতর্ক) সমূহ যে ইমাম কাযিমের (আঃ) কারারুদ্ধ হওয়ার অন্যতম কারণ হয়েছিল তা এ সব রেওয়ায়তেও ব্যক্ত হয়েছে।[১১৩]

শাহাদতঃ

ইমাম কাযিমের (আঃ) জীবনের শেষ দিন গুলো কুখ্যাত সিন্দী ইবনে শাহিকের জেলে অতিবাহিত হয়। শেখ মুফীদ বলেছেন: হারূনুর রশীদের নির্দেশে সিন্দী ইমামকে (আঃ) বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত করে এবং ইমাম মূসা কাযিম (আঃ) এর তিন দিন পরে শাহাদত বরণ করেন।[১১৪] প্রসিদ্ধ মত অনুসারে [১১৫] তিনি (আঃ) বাগদাদে ২৫ রজব ১৮৩ হিজরী সাল ১৮৩ হিজরী সালে রোজ শুক্রবার শাহাদত বরণ করেন।(১৩৯) শেইখ মুফিদের ভাষ্যানুসারে, ইমামের শাহাদাত হয়েছিল ২৪ রজব।[১১৬] ইমাম কাযিমের (আঃ) শাহাদতের সময়কাল ও স্থান সংক্রান্ত আরো কিছু মত রয়েছে। যেমন: তাঁর শাহাদাতের বছর ১৮১ হিজরী এবং ১৮৬হিজরীও বলা হয়েছে।[১১৭][১১৮]

ইমাম কাযিমের (আঃ) শাহাদত বরণের পর সিন্দী ইবনে শাহিক ইমামের মৃত্যুকে স্বাভাবিক মৃত্যু দেখানোর জন্য বাগদাদের কতিপয় ফকীহ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিকে হাজির করে ইমামের (আঃ) মৃতদেহ তাদেরকে দেখায়। উদ্দেশ্য যে তারা দেখে উপলব্ধি করেন যে ইমামের দেহে আঘাতের কোনো চিহ্ন বিদ্যমান নেই [অর্থাৎ তাঁর (আ.) ওপর দৈহিক নির্যাতন চালিয়ে তাঁকে হত্যা করা হয়নি, বরং তিনি স্বাভাবিক ভাবেই মৃত্যুবরণ করেছেন]। সিন্দীর নির্দেশে ইমামের (আঃ) পবিত্র দেহ বাগদাদের পুলের ওপর রাখা হয় এবং ঘোষণা করা হয় যে, হযরত মূসা ইবনে জাফার (আঃ) স্বাভাবিকভাবে মৃত্যু বরণ করেছেন।[১১৯] তাঁর শাহাদাত বরণের ধরন-ধারণ সংক্রান্ত বিভিন্ন ধরণের রেওয়ায়ত বিদ্যমান আছে; তবে অধিকাংশ ইতিহাসবিদের বিশ্বাস হচ্ছে এই যে, ইয়াহইয়া ইবনে খালেদ এবং সিন্দী ইবনে শাহিক ইমামের (আঃ) ওপর বিষ প্রয়োগ করেছিল।[১২০][১২১] এক বর্ণনায় এটাও বলা হয়েছে যে, ইমাম কাযিমকে (আঃ) কার্পেটের মধ্যে পেঁচিয়ে (দম বদ্ধ ও শ্বাসরুদ্ধ করে) শহীদ করা হয়েছিল।[১২২]

ইমামের (আঃ) মৃতদেহ জনসমক্ষে রাখা ও প্রদর্শনের জন্য দুটো কারণ উল্লেখ করা হয়েছে: ১ম কারণ হচ্ছে ইমাম কাযিম (আঃ) যে স্বাভাবিক ভাবে মৃত্যুবরণ করেছেন তা প্রমাণ ও প্রতিষ্ঠিত করা এবং দ্বিতীয় কারণটি হচ্ছে যারা ইমাম কাযিমকে (আঃ) প্রতিশ্রুত ইমাম মাহদী বলে বিশ্বাস করত তাদের এ বিশ্বাস খণ্ডন ও বাতিল করা।[১২৩]

সমাধিসৌধ

হযরত মূসা ইবনে জাফারের পবিত্র লাশ মুবারক কুরাইশদের সমাধিস্থল বলে খ্যাত আব্বাসীয় খলীফা মনসূর দাওয়ানীকীর পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়।[১২৪] এসবাতুল ওয়াসিয়া'র উল্লেখানুসারে, মূসা ইবনে জাফার তাঁর শাহাদতের পূর্বে নিজেই জায়গাটি ক্রয় করেছিলেন।[১২৫] তাঁর দাফনের স্থানই আজ কাযেমাইনের হারাম নামে প্রসিদ্ধ। বলা হয়েছে যে, ইমাম কাযিমকে (আঃ) উক্ত গোরস্থানে দাফন করার কারণ ছিল এই যে, তাঁর দাফনের স্থান যেন শিয়াদের যিয়ারতগাহ ও সমাবেশের স্থানে পরিণত না হয়।[১২৬]


বাগদাদে ইমাম কাযিম (আঃ) ও ইমাম জাওয়াদের (আঃ) সমাধি ( আরামগাহ) হারামে কাযেমাইন নামে প্রসিদ্ধ এবং তা মুসলমানদের বিশেষ করে শিয়াদের যিয়ারত গাহ ( যিয়ারত করার স্থান )। ইমাম রিযা (আঃ) থেকে বর্ণিত কিছু রেওয়ায়তের ভিত্তিতে ইমাম কাযিমের (আঃ) যিয়ারতের পূণ্য ও সওয়াব মহানবী (সাঃ) , হযরত আলী (আঃ)ইমাম হুসাইনের (আঃ) কবর যিয়ারতের পূণ্য ও সওয়াবের সমান। [১২৭]

ইমাম কাযিমের (আঃ) সাহাবা ( সঙ্গীসাথী ও শিষ্যদের ) তালিকাঃ

ইমাম কাযিমের (আঃ) আসহাব ( সঙ্গী সাথী ও শিষ্যগণ) সংক্রান্ত তেমন সুক্ষ্ম তথ্যাদি হাতে বিদ্যমান নেই এবং তাদের সংখ্যার ব্যাপারেও মতপার্থক্য আছে। শেখ তূসী তাদের সংখ্যা ২৭২ জন [১২৮], বার্কী তাদের সংখ্যা ১৬০ জন বলেছেন।[১২৯] “হায়াতুল ইমাম মূসা ইবনে জাফার” গ্রন্থের রচয়িতা বাকের শরীফ কারাশী, বার্কীর এ কথা প্রত্যাখ্যান করে ৩২১ জনকে ইমাম কাযিমের (আঃ) আসহাব ( সাহাবা ও শিষ্য ) বলে উল্লেখ করেছেন।[১৩০] আলী ইবনে ইয়াক্বতীন, হিশাম ইবনে হাকাম, হিশাম ইবনে সালিম, মুহাম্মাদ ইবনে আবী উমাইর, হাম্মাদ ইবনে ঈসা, ইউনুস ইবনে আব্দুর রহমান, সাফওয়ান ইবনে ইয়াহইয়া, সাফওয়ান জাম্মাল ইমাম কাযিমের (আঃ) সাহাবাদের অন্তর্ভুক্ত।[১৩১] উল্লেখিত এ সব সাহাবার কেউ কেউ যেমন, সাফওয়ান ইবনে ইয়াহইয়া[১৩২] এবং মুহাম্মাদ ইবনে আবী উমাইর [১৩৩]আসহাব-ই ইজমার” অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য। ইমাম কাযিমের (আঃ) শাহাদতের পর তাঁর কতিপয় সাহাবা যেমন: আলী ইবনে হামযা বাতায়েনী, যিয়াদ ইবনে মারওয়ান ও উসমান ইবনে ঈসা; আলী ইবনে মূসা আর রিযার (আঃ) ইমামত মেনে নেয়নি এবং তারা ইমাম মূসা ইবনে জাফারের ইমামতের ওপর তাওয়াক্কুফ করে অর্থাৎ তারা বলত যে ইমাম কাযিম (আঃ) শেষ ইমাম এবং তাঁর পরে কোনো ইমাম নেই আর এর অর্থ হচ্ছে যে, তারা ইমাম কাযিমের (আঃ) ইমামতে তাওয়াক্কুফ করেছে অর্থাৎ স্থির হয়ে গেছে।[১৩৪] এই দলটি ওয়াকিফীয়া নামে খ্যাতি লাভ করেছে। অবশ্য পরবর্তীতে এই গোষ্ঠীর মধ্য থেকে কিছু ব্যক্তি ইমাম রিযার (আঃ) ইমামত মেনে নিয়েছিল।[১৩৫]

প্রতিনিধি নিয়োগের ব্যবস্থা ও নেটওয়ার্কঃ

ইমাম কাযিম (আঃ) শিয়াদের সাথে যোগাযোগ এবং তাদের অর্থনৈতিক ক্ষমতা ও সামর্থ্য বৃদ্ধি করার জন্য প্রতিনিধি নিয়োগের ব্যবস্থা ও নেটওয়ার্ক যা ইমাম সাদিকের (আঃ) সময় প্রতিষ্ঠিত ও গড়ে তোলা হয়েছিল তা আরো ব্যাপক বিস্তৃত করেন। তিনি তাঁর কতিপয় সাহাবীকে ওয়াকীল ( প্রতিনিধি) হিসেবে বিভিন্ন অঞ্চলে প্রেরণ করেন। বলা হয়েছে যে, হাদীস গ্রন্থ সমূহে ইমাম কাযিমের (আঃ) ওয়াকীল (প্রতিনিধি)দের মধ্য থেকে মাত্র ১৩ জনের নাম উল্লেখিত হয়েছে।[১৩৬] সুতরাং কতিপয় উৎস্য ও সূত্রের ভিত্তিতে আলী ইবনে ইয়াক্বতীনমুফাযযাল ইবনে উমর কূফায়, আবদুর রহমান ইবনে হাজ্জাজ বাগদাদে, যিয়াদ ইবনে মারওয়ান কান্দাহারে, উসমান ইবনে ঈসা মিসরে, ইব্রাহীম ইবনে সালাম নিশাপুরে এবং আবদুল্লাহ ইবনে জুন্দুব আহওয়াযে ইমাম কাযিমের (আঃ) পক্ষ থেকে প্রতিনিধিত্বের দায়িত্বভার প্রাপ্ত ছিলেন।[১৩৭] হাদীস গ্রন্থসমূহে বিদ্যমান বিভিন্ন রেওয়ায়তে বর্ণিত আছে যে, শিয়ারা তাদের খুমস ইমাম কাযিম (আঃ) অথবা তাঁর ওয়াকীল(প্রতিনিধি)দের কাছে পৌঁছে দিত। শেখ তূসীও ওয়াকিফীয়া ফির্কায় ইমাম কাযিমের (আঃ) কতিপয় প্রতিনিধির যোগদানের কারণ হিসেবে তাদের কাছে শিয়াদের প্রদত্ত খুমসের গচ্ছিত বিশাল সম্পদের প্রতি ঐ সব ব্যক্তির লোভ ও মোহে পড়ার কথা উল্লেখ করেছেন।[১৩৮] খলীফা হারূনের কাছে আলী ইবনে ইসমাইল ইবনে জাফারের রিপোর্ট যা ইমাম কাযিমের (আঃ) কারারুদ্ধ হওয়ার কারণ হয়েছিল তাতে বলা হয়েছে: প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য (আব্বাসীয় সাম্রাজ্যের পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্ত ) থেকে প্রচুর ধন সম্পদ তাঁর (মূসা ইবনে জাফার) কাছে পাঠানো হয় এবং তিনি এমন বাইতুল মাল ও খাযানার ( রত্ন ও ধন ভাণ্ডার) অধিকারী যে ওতে ( ঐ বাইতুল মাল ও খাযানা) বিপুল পরিমাণে বিভিন্ন প্রকার মুদ্রা বিদ্যমান আছে !![১৩৯] পত্র লিখন ও প্রেরণ ছিল শিয়াদের সাথে তাঁর যোগাযোগের আরেকটি পদ্ধতি ও মাধ্যম। আর এ পদ্ধতি ফিকহী মসলা মাসায়েলের জবাব দান, আকীদাবিশ্বাস সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর প্রদান, ওয়ায–নসীহত, দুআ শিক্ষা এবং ওয়াকীল ( প্রতিনিধি) দের সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি ইত্যাদির ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হত। এমনকি বর্ণিত হয়েছে যে, ইমাম কাযিম (আঃ) জেলখানার ভিতর থেকেও তাঁর সাহাবাদের কাছে চিঠি লিখে প্রেরণ করতেন।[১৪০] ও তাদের প্রশ্নের জবাব দিতেন।[১৪১] [১৪২]

আহলুস সুন্নাহর কাছে ইমাম কাযিমের (আঃ) মর্যাদা ও অবস্থানঃ

আহলুস সুন্নাহ শিয়াদের সপ্তম ইমামকে একজন দ্বীনী (ধর্মীয়) আলিম ও বিশেষজ্ঞ পণ্ডিত হিসেবে সম্মান করেন। তাদের কতিপয় বুযুর্গ ব্যক্তিত্ব ইমাম কাযিমের ইলম ( বিদ্যা ও জ্ঞান) ও আখলাকের ( চারিত্রিক গুণাবলী) প্রশংসা করেছেন।[১৪৩] এবং তাঁর ধৈর্য্য ও সহিষ্ণুতা, দানশীলতা ও বদান্যতা, অধিক অধিক ইবাদত বন্দেগী এবং তাঁর অন্য সকল আখলাকী ( চারিত্রিক) গুণাবলীর ব্যাপারে কথা বলেছেন ও আলোচনা করেছেন।[১৪৪] ইমাম কাযিমের (আ) ইবাদত ও ধৈর্য–সহিষ্ণুতার কিছু উদাহরণ ও নজির আহলুস সুন্নাহর বই পুস্তক ও গ্রন্থসমূহে বর্ণিত হয়েছে। [১৪৫] ষষ্ঠ হিজরী শতাব্দীর ইতিহাসবেত্তা, মুহাদ্দিস ও শাফিঈ ফকীহ্ সাম’আনীর মতো আহলুস সুন্নাহর কিছু আলিম ইমাম কাযিমের (আঃ) কবর যিয়ারত করতে যেতেন [১৪৬] এবং তাঁর তাওয়াসসুল করতেন। হিজরী তৃতীয় শতাব্দীর সুন্নী আলিম আবূ আলী খাল্লাল বলেছেন: যখনই আমি কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতাম তখনই আমি হযরত মূসা ইবনে কাযিমের (আঃ) কবর যিয়ারত করতে যেতাম ও তাঁকে উসিলা ধরে প্রার্থনা করতাম এবং আমার সমস্যাও দূর হয়ে যেত।[১৪৭]আহলুস সুন্নাহর চার ফকীহ ইমামের অন্যতম ইমাম শাফেয়ী থেকেও বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি (শাফেয়ী) ইমাম কাযিমের (আঃ) কবরকে আরোগ্য দানকারী ওষুধ বলে অভিহিত করেছেন।[১৪৮]

গ্রন্থ বিবরণী:

বই–পুস্তক, গবেষণা মূলক সন্দর্ভ ও প্রবন্ধ আকারে ইমাম কাযিম (আঃ) সংক্রান্ত অনেক সাহিত্যকর্ম ও গ্রন্থ বিভিন্ন ভাষায় রচিত হয়েছে যেগুলোর সংখ্যা ৭৭০ টি পর্যন্ত গণনা করা হয়েছে। [১৪৯] ইমাম কাযিম (আঃ) সংক্রান্ত গ্রন্থ বিবরণী ও [১৫০] কাযেমাইন সংক্রান্ত গ্রন্থ বিবরণীর গ্রন্থাদি[১৫১], ইমাম কাযিমের (আঃ) গ্রন্থবিবরণী সংক্রান্ত প্রবন্ধ [১৫২] এ সব লেখা, প্রবন্ধ, সন্দর্ভ, সাহিত্যকর্ম ও বই-পুস্তকের পরিচিতি তুলে ধরেছে। এ সব সাহিত্য কর্ম ও রচনার বিষয়বস্তু হচ্ছে শিয়াদের সপ্তম ইমামের জীবন ও ব্যক্তিত্বের বিভিন্ন দিক ও পর্যায়। একই ভাবে ইমাম কাযিমের (আঃ) সীরাত ও যুগ শিরোনামে ১৩৯২ (সৌরবর্ষ) সালের বাহমান মাসে ইরানে একটি সম্মেলনও অনুষ্ঠিত হয়েছিল যাতে উপস্থাপিত প্রবন্ধ সমূহ ইমাম কাযিমের (আঃ) সীরাত সম্মেলনের প্রবন্ধ সমগ্র শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছে। [১৫৩] আযীযুল্লাহ আতারিদী প্রণীত মুসনাদুল ইমাম আল-কাযিম হুসাইন হাজ্জ হাসান রচিত বাবুল হাওয়ায়েজ আল–ইমাম মূসা আল-কাযিম, মুহাম্মদ বাক্বির শরীফ কারাশী প্রণীত হায়াতুল ইমাম মূসা ইবনে জাফার, ফারিস হাসূন বিরচিত আল-ইমাম আল-কাযিম ইন্দা আহলিস সুন্নাহ , আবদুল্লাহ আহমাদ ইউসুফ প্রণীত সীরাতুল ইমাম মূসা আল-কাযিম (আঃ) হচ্ছে ঐ সব সাহিত্যিক নিদর্শন ও কর্মের কিছু নমুনা যেগুলো ইমাম কাযিম (আঃ) সম্পর্কে লেখা হয়েছে।

তথ্যসূত্র

  1. তাবারি, দালায়েলুল ইমামাহ, পৃ. ৩০৩
  2. তাবারসি, এ’লামুল ওয়ারা, খণ্ড ২, পৃ. ৬
  3. মাসউদি, ইসবাতুল, ওয়াসিয়্যাহ, পৃ. ৩৫৬-৩৫৭
  4. বাগদাদি, তারিখে বাগদাদ, খণ্ড ১৩, পৃ. ২৯
  5. শুরায়ে তাকভিমে মুয়াসসেসেয়ে জিওফিযিক দানেশগাহে তেহরান, তাকভিমে রাসমিয়ে কেশওয়ার সালে ১৩৯৮ সৌরবর্ষ, পৃ. ৮
  6. শাবরাউয়ি, আল-আতহাফু বিহুব্বিল আশরাফ, পৃ. ২৯৫
  7. আমিন, সীরায়ে মা’সুমান, খণ্ড ৬, পৃ. ১১৩
  8. মুফিদ, আল-এরশাদ, খণ্ড ২, পৃ. ২১৫
  9. দ্র: ইবনে আবিস্ সাল্জ, তারিখু আহলিল বাইত (আ.), ১৪১০ হি., পৃ. ১৩৮।
  10. দ্র: তাবারসি, তাজুল মাওয়ালিদ, ১৪২২ হি., পৃ. ৯৫।
  11. ইবনে শাহরে আশুব, আল-মানাকিব, খণ্ড ৩, পৃ. ৪৩৭।
  12. দ্র: কুম্মি, তারিখে কোম, ১৩৬১ ফার্সি সন, পৃ. ১৯৮।
  13. কুম্মি, তারিখে কোম, ১৩৬১ ফার্সি সন, পৃ. ১৯৮।
  14. ইবনে খাশ্শাব বাগদাদি, তারিখু মাওয়ালিদ আল- আইম্মা (আ.), ১৪০৬ হি., পৃ. ৩২।
  15. ইরবিলি, কাশফুল গুম্মাহ, ১৩৮১ হি., খণ্ড ২, পৃ. ২১২।
  16. ইবনে আসির, আল-কামেল, খণ্ড ৬, পৃ. ১৬৪, ইবনে জাওযি, তাযকিরাতুল খাওয়াছ, পৃ. ৩১২
  17. বাগদাদি, তারিখে বাগদাদ, খণ্ড ১৩, পৃ. ২৯
  18. মুফিদ, আল-ইরশাদ, খণ্ড ২, পৃ. ২২৭, ২৩৬; তাবারসি, এ’লামুল ওয়ারা, খণ্ড ২, পৃ. ৬; ইবনে শাহরে আশুব, আল-মানাকিব, খণ্ড ৪, পৃ. ৩২৩; কুম্মি, আনওয়ারুল বাহিয়্যা, পৃ. ১৭৭
  19. শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, খণ্ড ২, পৃ. ২১৫
  20. কুলাইনি, আল-কাফি, ১৪০৭ হি., খণ্ড ১, পৃ. ২২৭; ইবনে শো'বা হাররানি, তোহাফুল উকুল, ১৪০৪ হি., পৃ. ৪১১-৪১২; মাজলিসী, বিহারুল আনওয়ার, ১৪০৩ হি., খণ্ড ১০, পৃ. ২৪৭।
  21. কুলাইনি, আল-কাফি, ১৪০৭ হি., খণ্ড ১, পৃ. ২২৭; মাজলিসী, বিহারুল আনওয়ার, ১৪০৩ হি., খণ্ড ১০, পৃ. ২৪৪-২৪৫।
  22. ইবনে শাহরে আশুব, আল-মানাকিব, খণ্ড ৪, পৃ. ৩১১-৩১২।
  23. ইবনে শাহরে আশুব, আল-মানাকিব, খণ্ড ৪, পৃ. ৩১২-৩১৩।
  24. শুশতারি, রিসালাতু ফি তাওয়ারিখিন নাবী ওয়াল আল, ১৪২৩ হি., পৃ. ৭৫।
  25. শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, খণ্ড ২, পৃ. ২৪৪
  26. সামআনি, আল-আনসাব, ১৩৮২ ফার্সি সন, খণ্ড ১২, পৃ. ৪৭৮।
  27. জাফারিয়ান, হায়াতে ফিকরি ওয়া সিয়াসিয়ে ইমামানে শিয়া, ১৩৮১ ফার্সি সন, পৃ. ৩৮৫।
  28. তাবারসি, এ’লামুল ওয়ারা, ১৪১৭ হি., খণ্ড ২, পৃ. ৬।
  29. পিশওয়ায়ী, সীরা-এ পিশওয়াইয়ান, ১৩৭২ ফার্সি সন, পৃ. ৪১৩।
  30. জাফারিয়ান, হায়াতে ফিকরি ওয়া সিয়াসিয়ে ইমামানে শিয়া, ১৩৮১ ফার্সি সন, পৃ. ৩৭৯-৩৮৪।
  31. ফাযল মিকদাদ, ইরশাদুত তালিবীন, ১৪০৫ হি., খণ্ড ৩৩৭।
  32. কুলাইনি, আল-কাফি, ১৪০৭ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৩১৩।
  33. শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, খণ্ড ২, পৃ. ৩০৭-৩১১।
  34. তাবারসি, এ’লামুল ওয়ারা, ১৪১৭ হি., খণ্ড ২, পৃ. ৭-১৬।
  35. মাজলিসী, বিহারুল আনওয়ার, ১৪০৩ হি., খণ্ড ৪৮, পৃ. ১২-২৯।
  36. জাম-ই আয নেভিসান্দেগান, মাজমুয়ে মাকালাতে হামায়েশে যামানে ওয়া সীরে-এ ইমাম কাযিম, ১৩৯২ ফার্সি সন, খণ্ড ২, পৃ. ৭৯,৮১।
  37. কুলাইনি, আল-কাফি, ১৪০৭ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৩১০।
  38. কুলাইনি, আল-কাফি, ১৪০৭ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৩০৯।
  39. শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, খণ্ড ২, পৃ. ২২০।
  40. সাদুক, উয়ুনু আখবারির রেযা, ১৩৭৮ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৯১; ওতারেদি, মুসনাদুল ইমামিল কাযিম, ১৪০৯ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৭৫।
  41. পিশওয়ায়ী, সীরা-এ পিশওয়াইয়ান, ১৩৭২ ফার্সি সন, পৃ. ৪১৪।
  42. কাশ্শি, রিযাল, ১৪০৯ হি., পৃ. ২৮২-২৮৩।
  43. নৌবাখতি, ফিরাকুশ শিয়া, ১৪০৪ হি., পৃ. ৬৬-৭৯।
  44. আমেলি, আল-তাহরীরুত তাঊসি, ১৪১১ হি., পৃ. ৫২৪।
  45. তুসি, ইখতিয়ারু মা'রিফাতির রিজাল, ১৪০৯ হি., পৃ. ৪৮২।
  46. তুসি, ইখতিয়ারু মা'রিফাতির রিজাল, ১৪০৯ হি., পৃ. ৪৮০।
  47. তুসি, ইখতিয়ারু মা'রিফাতির রিজাল, ১৪০৯ হি., পৃ. ৪৮০।
  48. দ্র: হাজী জাদেহ, ‍"জারইয়ানে গুলু দার আসরে ইমাম কাযিম (আ.)", পৃ. ১১২।
  49. কাশ্শি, রিযাল, ১৪০৯ হি., পৃ. ৪৮২।
  50. তাবারসি, আল-ইহতিজাজ, ১৪০৩ হি., খণ্ড ২, পৃ. ৩৮৫-৩৯৬; মাজলিসী, বিহারুল আনওয়ার, ১৪০৩ হি., খণ্ড ১০, পৃ. ২৩৪-২৪৯।
  51. কুলাইনি, আল-কাফি, ১৪০৭ হি., খণ্ড ১, পৃ. ১৪১।
  52. কুলাইনি, আল-কাফি, ১৪০৭ হি., খণ্ড ১, পৃ. ১৪৮-১৪৯।
  53. কুলাইনি, আল-কাফি, ১৪০৭ হি., খণ্ড ২, পৃ. ৩৮-৩৯।
  54. কারাশি, হায়াতুল ইমাম মূসা ইবনে জাফর, ১৪২৯ হি., খণ্ড ২, পৃ. ১৯০-২৭৮, ২৯৭-৩০৭।
  55. কুলাইনি, আল-কাফি, ১৪০৭ হি., খণ্ড ১, পৃ. ১৪৯।
  56. ওতারেদি, মুসনাদু ইমামিল কাযিম, ১৪০৯ হি., খণ্ড ১, মুকাদ্দামে।
  57. মারভাযি, মুসনাদুল ইমাম মূসা ইবনে জাফার আলাইহিস সালাম, ১৪২৫ হি., পৃ. ১৮৭-২৩২।
  58. শেইখ তুসি, ফেহরেস্ত, ১৪২০ হি., পৃ. ২৬৪।
  59. নাজ্জাশি, রিজালে নাজ্জাশি, ১৩৬৫ ফার্সি সন, পৃ. ২৫২।
  60. কুলাইনি, আল-কাফি, ১৪০৭ হি., খণ্ড ১, পৃ. ১৩-২০; আহমাদি মিয়াঞ্জি, মাকাতিবুল আইম্মা, ১৪২৬ হি., খণ্ড ৪, পৃ. ৪৮৩-৫০১।
  61. আহমাদি মিয়াঞ্জি, মাকাতিবুল আইম্মা, ১৪২৬ হি., খণ্ড ৪, পৃ. ৩৫৭-৩৫৯; কারাশি, হায়াতুল ইমাম মূসা ইবনে জাফর, ১৪২৯ হি., খণ্ড ২, পৃ. ২৩৮।
  62. তুসি, আল-ফেহরেস্ত, ১৪২০ হি., পৃ. ২৭১।
  63. ইবনে শাহরে আশুব, আল-মানাকিব, ১৩৭৯ হি., খণ্ড ৪, পৃ. ৩১২-৩১৩; সাদুক, উয়ুনু আখবারির রেযা, ১৩৭৮ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৮৪-৮৫; কুলাইনি, আল-কাফি, ১৪০৭ হি., খণ্ড ৬, পৃ. ৪০৬।
  64. মাজলিসী, বিহারুল আনওয়ার, ১৪০৩ হি., খণ্ড ১০, পৃ. ২৪৪-২৪৫।
  65. ইবনে শাহরে আশুব, আল-মানাকিব, ১৩৭৯ হি., খণ্ড ৪, পৃ. ৩১১-৩১২।
  66. কুলাইনি, আল-কাফি, ১৪০৭ হি., খণ্ড ৩, পৃ. ২৯৭।
  67. কারাশি, হায়াতুল ইমাম মূসা ইবনে জাফর, ১৪২৯ হি., খণ্ড ১, পৃ. ২৭৮-২৯৪।
  68. কুলাইনি, আল-কাফি, ১৪০৭ হি., খণ্ড ৬, পৃ. ৪০৬; হুররে আমেলি, ওয়াসায়েলুশ শিয়া, ১৪০৯ হি., খণ্ড ২৫, পৃ. ৩০১।
  69. সাদুক, উয়ুনু আখবারির রেযা, ১৩৭৮ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৮৪-৮৫; শাবরাউয়ি, আল-ইতহাফু বি হুব্বিল আশরাফ, ১৪২৩ হি., পৃ. ২৯৫; মাজলিসী, বিহারুল আনওয়ার, ১৪০৩ হি., খণ্ড ১০, পৃ. ২৪১-২৪২।
  70. মাজলিসী, বিহারুল আনওয়ার, ১৪০৩ হি., খণ্ড ১০, পৃ. ২৪৪-২৪৫; ইবনে শাহরে আশুব, আল-মানাকিব, ১৩৭৯ হি., খণ্ড ৪, পৃ. ৩১১-৩১২; সাদুক, তাওহীদ, ১৩৯৮ হি., পৃ. ২৭০-২৭৫।
  71. বাগদাদি, তারিখে বাগদাদ, ১৪১৭ হি., খণ্ড ১৩, পৃ. ৩২-৩৩; ইয়াকুবি, তারিখুল ইয়াকুবি, ১৪১৭ হি., খণ্ড ২, পৃ. ৪১৪।
  72. বাগদাদি, তারিখে বাগদাদ, ১৪১৭ হি., খণ্ড ১৩, পৃ. ৩২-৩৩।
  73. শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, খণ্ড ২, পৃ. ২৩১-২৩২।
  74. শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, খণ্ড ২, পৃ. ২৪০।
  75. তাবারসি, মাকারেমুল আখলাক, ১৪১২ হি., পৃ. ৯১।
  76. মাজলিসী, বিহারুল আনওয়ার, ১৪০৩ হি., খণ্ড ৪৮, পৃ. ১১।
  77. ইবনে আসির, আল-কামিল, ১৩৮৫ হি., খণ্ড ৬, পৃ. ১৬৪।
  78. ইবনে জাওযি, তাযিকিরাতুল খাওয়াছ, ১৪১৮ হি., পৃ. ৩১২।
  79. বাগদাদি, তারিখে বাগদাদ, ১৪১৭ হি., খণ্ড ১৩, পৃ. ৩২-৩৩।
  80. কারাশি, হায়াতুল ইমাম মূসা ইবনে জাফর, ১৪২৯ হি., খণ্ড ২, পৃ. ১৫৪-১৬৭।
  81. শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, খণ্ড ২, পৃ. ২৩১-২৩২।
  82. ইবনে ইনাবাহ, উমদাতুত তালিব, ১৪১৭ হি., পৃ. ১৭৭।
  83. বাগদাদি, তারিখে বাগদাদ, ১৪১৭ হি., খণ্ড ১৩, পৃ. ২৯।
  84. শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, খণ্ড ২, পৃ. ২৩২।
  85. ইবনে আসির, আল-কামিল, ১৩৮৫ হি., খণ্ড ৬, পৃ. ১৬৪; ইবনে জাওযি, তাযকিরাতুল খাওয়াছ, ১৪১৮ হি., পৃ. ৩১২।
  86. শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, খণ্ড ২, পৃ. ২৩৩; কারাশি, হায়াতুল ইমাম মূসা ইবনে জাফর, ১৪২৯ হি., খণ্ড ২, পৃ. ১৬০-১৬২; বাগদাদি, তারিখে বাগদাদ, ১৪১৭ হি., খণ্ড ১৩, পৃ. ৩০।
  87. হাজে হাসান, বাবুল হাওয়ায়েয, পৃ. ২৮১।
  88. হিল্লি, মিনহাযুল কারামাহ, পৃ. ৫৯।
  89. জাফারিয়ান, হায়াতে ফিকরি ওয়া সিয়াসিয়ে ইমামানে শিয়া, ১৩৮১ ফার্সি সন, পৃ. ৪০৬।
  90. সাদুক, উয়ুনু আখবারির রেযা, ১৩৭৮ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৮৪-৮৫।
  91. শাবরাউয়ি, আল-আতহাফু বিহুব্বিল আশরাফ, পৃ. ২৯৫।
  92. তুসি, তাহযীবুল আহকাম, ১৪০৭ হি., খণ্ড ৪, পৃ. ১৪৯।
  93. কারাশি, হায়াতুল ইমাম মূসা ইবনে জাফর, ১৪২৯ হি., খণ্ড ২, পৃ. ৪৭২।
  94. কাশ্শি, রিযাল, ১৪০৯ হি., পৃ. ৪৪১।
  95. কাশ্শি, রিযাল, ১৪০৯ হি., পৃ. ৪৩৩।
  96. আল্লামা মাজলিসী, বিহারুল আনওয়ার, ১৪০৩ হি., খণ্ড ৪৮, পৃ. ১৩৪।
  97. মাজলিসী, বিহারুল আনওয়ার, ১৪০৩ হি., খণ্ড ৪৮, পৃ. ১৩৪।
  98. সাদুক, উয়ুনু আখবারির রেযা, ১৩৭৮ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৭৭।
  99. শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, খণ্ড ২, পৃ. ২২৭-২২৮।
  100. আল্লাহু আকবারি, রাবেতেয়ে আলাভীয়ান ওয়া আব্বাসীয়ান, ১৩৮১ ফার্সি সন, পৃ. ২২-২৩।
  101. জাফারিয়ান, হায়াতে ফিকরি ওয়া সিয়াসিয়ে ইমামানে শিয়া, ১৩৮১ ফার্সি সন, পৃ. ৩৮৪-৩৮৫।
  102. কুলাইনি, আল-কাফি, ১৪০৭ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৩৬৭।
  103. ইবনে জাওযি, তাযকিরাতুল খাওয়াছ, পৃ. ৩১৩।
  104. কুলাইনি, আল-কাফি, ১৪০৭ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৪৭৬।
  105. সাদুক, উয়ুনু আখবারির রেযা, ১৩৭৮ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৮৬
  106. শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, খণ্ড ২, পৃ. ২৩৯।
  107. শেইখ কুম্মি, আনওয়ারুল বাহিয়্যা, ১৪১৭ হি., পৃ. ১৯২-১৯৬।
  108. মাজলিসী, বিহারুল আনওয়ার, ১৪০৩ হি., খণ্ড ৯৯, পৃ. ১৭।
  109. https://hedayat.blogfa.com/post/16421 زندگانی امام موسی کاظم علیه‌السلام(2)], মুআসসেসেয়ে ফারহাঙ্গিয়ে হেদায়েদ
  110. ১৩৩ শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, খণ্ড ২, পৃ. ২৩৭-২৩৮; ইরবিলি, কাশফুল গুম্মাহ, ১৩৮১ হি., খণ্ড ২, পৃ. ৭৬০; আবুল ফারাজ ইস্ফাহানি, মাকাতিলুত তালিবীন, ১৪১৯ হি., পৃ. ৪১৪-৪১৫।
  111. সাদুক, উয়ুনু আখবারির রেযা, ১৩৭৮ হি., খণ্ড ১, পৃ. ১০১
  112. সাদুক, কামালুদ্দীন, ১৩৯৫ ফার্সি সন, খণ্ড ২, পৃ. ৩৬১-৩৬৩; জাফারিয়ান, হায়াতে ফিকরি ওয়া সিয়াসিয়ে ইমামানে শিয়া, ১৩৮১ ফার্সি সন, পৃ. ৩৯৮-৪০০।
  113. কাশশি, রিজাল, ১৪০৯ হি., পৃ. ২৭০-২৭১; মামেকানি, তানকীহুল মাকাল, তারিখ অজ্ঞাত, খণ্ড ৩, পৃ. ২৯৮।
  114. শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, খণ্ড ২, পৃ. ২৪২।
  115. কারাশি, হায়াতুল ইমাম মূসা ইবনে জাফর, ১৪২৯ হি., খণ্ড ২, পৃ. ৫১৬।
  116. শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, খণ্ড ২, পৃ. ২১৫।
  117. কারাশি, হায়াতুল ইমাম মূসা ইবনে জাফর, ১৪২৯ হি., খণ্ড ২, পৃ. ৫১৬-৫১৭।
  118. জাফারিয়ান, হায়াতে ফিকরি ওয়া সিয়াসিয়ে ইমামানে শিয়া, ১৩৮১ ফার্সি সন, পৃ. ৪০৪।
  119. শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, খণ্ড ২, পৃ. ২৪২-২৪৩।
  120. শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, খণ্ড ২, পৃ. ২৪২।
  121. কারাশি, হায়াতুল ইমাম মূসা ইবনে জাফর, ১৪২৯ হি., খণ্ড ২, পৃ. ৫০৮-৫১০।
  122. আবুল ফারাজ ইস্ফাহানি, মাকাতিলুত তালিবীন, ১৪১৯ হি., পৃ. ৪১৭।
  123. ইরবিলি, কাশফুল গুম্মাহ, ১৩৮১ হি., খণ্ড ২, পৃ. ৭৬৩।
  124. সাদুক, উয়ুনু আখবারির রেযা, ১৩৭৮ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৯৯, ১০৫।
  125. মাসউদি, এসবাতুল ওয়াসিয়া, ১৩৮৪ ফার্সি সন, পৃ. ২০১।
  126. আবুল ফারাজ ইস্ফাহানি, মাকাতিলুত তালিবীন, ১৪১৯ হি., পৃ. ৪১৭।
  127. কুলাইনি, আল-কাফি, ১৪০৭ হি., খণ্ড ৪, পৃ. ৫৮৩।
  128. তুসি, রিজাল, ১৪১৫ হি., পৃ. ৩২৯-৩৪৭।
  129. কারাশি, হায়াতুল ইমাম মূসা ইবনে জাফর, ১৪২৯ হি., খণ্ড ২, পৃ. ২৩১।
  130. কারাশি, হায়াতুল ইমাম মূসা ইবনে জাফর, ১৪২৯ হি., খণ্ড ২, পৃ. ২৩১।
  131. কারাশি, হায়াতুল ইমাম মূসা ইবনে জাফর, ১৪২৯ হি., খণ্ড ২, পৃ. ২৩১।
  132. শেইখ তুসি, আল-ফেহরেস্ত, ১৪১৭ হি., পৃ. ১৪৫।
  133. শেইখ তুসি, ইখতিয়ারু মা'রিফাতিল রিজাল, ১৪০৯ হি., পৃ. ৫৯০।
  134. তুসি, আল-গায়বাহ, ১৪১১ হি., পৃ. ৬৪-৬৫।
  135. দ্র: সাফারি ফরুশানি ওয়া বখতিয়ারি, ইমাম রেযা (আ.) ওয়া ফেরকায়ে ওয়াকেফিয়া, পেঝুহেশহায়ে তারিখি (ইলমি-পেঝুহেশি), তাবেস্তবান ১৩৯১ ফার্সি সন, পৃ. ৭৯-৯৮।
  136. জাব্বারি, ইমাম কাযিম ওয়া সাযেমানে ভেকালাত, ১৩৯২ ফার্সি সন, পৃ. ১৬।
  137. জাব্বারি, সাযেমানে ভেকালাত, ১৩৮২ ফার্সি সন, পৃ. ৪২৩-৫৯৯।
  138. তুসি, আল-গায়বাহ, ১৪১১ হি., পৃ. ৬৪-৬৫।
  139. কারাশি, হায়াতুল ইমাম মূসা ইবনে জাফর, ১৪২৯ হি., খণ্ড ২, পৃ. ৪৫৫।
  140. কুলাইনি, আল-কাফি, ১৪০৭ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৩১৩।
  141. আমিন, আ'ইয়ানুশ শিয়া, ১৪০৩ হি., খণ্ড ১, পৃ. ১০০।
  142. জাব্বারি, ইমাম কাযিম ওয়া সাযেমানে ভেকালাত, ১৩৯২ ফার্সি সন, পৃ. ১৬।
  143. ইবনে আবিল হাদিদ, শারহে নাহজুল বালাগাহ, তারিখ অজ্ঞাত, খণ্ড ১৫, পৃ. ২৭৩।
  144. ইবনে ইনাবাহ, উমদাতুত তালিব, ১৪১৭ হি., পৃ. ১৭৭; বাগদাদি, তারিখে বাগদাদ, ১৪১৭ হি., খণ্ড ১৩, পৃ. ২৯; ইবনে জাওযি, তাযিকিরাতুল খাওয়াছ, ১৪১৮ হি., পৃ. ৩১২; ইবনে আসির, আল-কামিল, ১৩৮৫ হি., খণ্ড ৬, পৃ. ১৬৪; শামি, আদ-দুররুন নাযিম, ১৪২০ হি., পৃ. ৬৫১-৬৫৩।
  145. বাগদাদি, তারিখে বাগদাদ, ১৪১৭ হি., খণ্ড ১৩, পৃ. ২৯-৩৩।
  146. সামআনি, আল-আনসাব, ১৩৮২ ফার্সি সন, খণ্ড ১২, পৃ. ৪১৯।
  147. বাগদাদি, তারিখে বাগদাদ, ১৪১৭ হি., খণ্ড ১, পৃ. ১৩৩।
  148. কা'বি, আল-ইমাম মূসা ইবনে আল-কাযিম আলাইহিস সালাম সীরা ওয়া তারিখ, ১৪৩০ হি., পৃ. ২১৬।
  149. আবাযারি, কিতাব শেনাছিয়ে কাযেমাঈন, ১৩৯৩ ফার্সি সন, পৃ. ১৪।
  150. আনসারি কুম্মি, কিতাবনামেয়ে ইমাম কাযিম, তারিখ অজ্ঞাত।
  151. আবাযারি, কিতাব শেনাছিয়ে কাযেমাঈন, ১৩৯৩ ফার্সি সন।
  152. জাম-ই আয নেভিসান্দেগান, মাজমুয়ে মাকালাতে হামায়েশে যামানে ওয়া সীরে-এ ইমাম কাযিম, ১৩৯২ ফার্সি সন, খণ্ড ১, পৃ. ৩০-৩১।
  153. জাম-ই আয নেভিসান্দেগান, মাজমুয়ে মাকালাতে হামায়েশে যামানে ওয়া সীরে-এ ইমাম কাযিম, ১৩৯২ ফার্সি সন, খণ্ড ২, পৃ. ৫৬২-৬৩৫।

গ্রন্থপঞ্জি

  • ইবনে আবিল হাদিদ, আব্দুল হামিদ, শারহে নাহজুল বালাগাহ, তাহকিক: মুহাম্মাদ আবুল ফাযল ইব্রাহিম, কোম, কিতাবখানেয়ে উমুমিয়ে হযরত আয়াতুল্লাহ আল-উযমা মারআশি নাজাফি, ১৪০৪ হি.।
  • ইবনে আসির, আল-কামিলু ফিত তারিখ, বৈরুত, দারু সাদির, ১৩৮৫ হি.।
  • ইবনে জাওযি, সেবত, তাযকিরাতুল খাওয়াছ, কোম, মানশুরাতে শারীফ আল-রাযি, ১৪১৮ হি.।
  • ইবনে শো’বা হাররানি, হাসান ইবনে আলী, তোহাফুল উকুল, তাসহিহ: আলী আকবার গাফ্ফারি, কোম, জামেয়ে মোদাররেসীন, ১৪০৪ হি.।
  • ইবনে শাহরে আশুব, মুহাম্মাদ ইবনে আলী, মানাকিবি আলে আবি তালিব, কোম, নাশরে আল্লামা, ১৩৭৯ হি.।
  • ইবনে ইনাবাহ, হুসাইনি, সাইয়্যেদ জামালুদ্দীন আহমাদ, উমদাতুত তালিব ফি আনসাবি আলে আবি তালিব, কোম, ইন্তেশারাতে আনসারিয়ান, ১৪১৭ হি.।
  • আহমাদি মিয়াঞ্জি, আলী, মাকাতিবুল আইম্মা আলাইহিমুস সালাম, তাসহিহ: মুজতাবা ফারাজি, কোম, দারুল হাদিস, ১৪২৬ হি.।
  • ইরবিলি, আলী ইবনে ঈসা, কাশফুল গুম্মাহ ফি মা’রিফিল আইম্মা, কোম, রাযি ইমকান, ১৪২১ হি.।
  • আবুল ফারাজ ইস্ফাহানি, আলী ইবনে হুসাইন, মাকাতিলুত তালেবীন, বৈরুত, মুআসসেসাতুল আ’লামি লিল মাতবুআত, তৃতীয় সংস্করণ, ১৪১৯ হি.।
  • আল্লাহু আকবারি, মুহাম্মাদ রাবেতে আলাভীয়ান ওয়া আব্বাসীয়ান (আয সালে ১১ তা ২০১ হিজরী), দার ফাসল নামেয়ে তারিখ দার আয়নে পেঝুহেশ, পিশ শুমারে আউয়াল, ১৩৮১ ফার্সি সন।
  • আমীন, সাইয়্যেদ মুহসিন, সীরায়ে মা’সূমান, তরজমা: আলী হুজ্জাতি কেরমানি, তেহরান, ইন্তেশারাতে সরুশ, ১৩৭৬ ফার্সি সন।
  • আনসারি কুম্মি, নাসির উদ্দীন, কিতাবনামেয়ে ইমাম কাযিম আলাইহিস সালাম, কনগ্রেয়ে জাহানি হযরত রেযা আলাইহিস সালাম, ১৩৭০ ফার্সি সন।
  • বাগদাদি, খাতিব, তারিখে বাগদাদ, তাহকিক: মুস্তাফা আব্দুল কাদির আতা, বৈরুত, দারুল কুতুব আল-ইলমিয়াহ, ১৪১৭ হি.।
  • বেইহাকি, আলী ইবনে যায়েদ, লুবাবুল আনসাব ওয়াল আলকাব ওয়াল আ’কাব, কোম, কিতাব খানেয়ে আয়াতুল্লাহ মারআশি নাজাফি, ১৪২৮ হি.।
  • পিশওয়ায়ী, মাহদী, সীরায়ে পিশওয়াইয়ান, কোম, মুআসেসেয়ে ইমাম সাদিক, ১৩৭২ ফার্সি সন।
  • জাব্বারি, মুহাম্মাদ রেযা, সাযেমানে ভেকালাত, কোম, মুআসসেসেয়ে ইমাম খোমেনী, ১৩৮২ ফার্সি সন।
  • জাফারিয়ান, রাসূল, হায়াতে ফিকরি ওয়া সিয়াসিয়ে ইমামানে শিয়া, কোম, ইন্তেশারাতে আনসারিয়ান, ১৩৮১ হি.।
  • জাম-ই আয নেভিসান্দেগান, আঞ্জুমানে তারিখ পেঝুহানে হাওযা ইলমিয়া কোম, মাজমুয়েয়ে মাকালাতে হামায়েশে সীরে ওয়া যামানে ইমাম কাযিম আলাইহিস সালাম, কোম, মারকাযে মুদিরিয়াতে হাওযাহায়ে ইলমিয়া, ১৩৯২ ফার্সি সন।
  • হাজে হাসান, হুসাইন, বাবুল হাওয়ায়েজ আল-ইমাম মূসা আল-কাযিম আলাইহিস সালাম, বৈরুত, দারুল মুর্তাযা, ১৪২০ হি.।
  • হাজী যাদেহ, ইয়াদুল্লাহ, “জারইয়ানে গুলু দার আসরে ইমাম কাযিম (আ.) বা তাকিয়ে বার আকায়েদে গালিয়ানে মুহাম্মাদ ইবনে বশির”, দার ফাসলনামেয়ে তারিখে ইসলাম, সংখ্যা ৫৩, চতুর্থ বছর, বাহার ১৩৯২ ফার্সি সন।
  • হুররে আমেলি, মুহাম্মাদ ইবনে হাসান, ওয়াসায়েলুশ শিয়া, কোম, মুআসসেসেয়ে আলিল বাইত লি ইহিয়ায়িত তুরাস, ১৪০৯ হি.।
  • হাসানি, আহমাদ ইবনে ইব্রাহিম, আল-মাসাবীহ, সানআ’, মুআসসাসাতুল ইমাম যায়েদ ইবনে আলী আল-সাকাফিয়াহ, ১৪২৩ হি.।
  • হিল্লি, হাসান ইবনে ইউসুফ, মিনহাজুল কারামাহ ফি মা’রিফাতিল ইমামাহ, মুআসসেসেয়ে আশুরা, মাশহাদ, ১৩৭৯ ফার্সি সন।
  • হুমাইরি, আব্দুল্লাহ ইবনে জাফর, কুরবুল এসনাদ, তেহরান, মাক্তাবাতু নাইনাউয়ি আল-হাদীস, তারিখ অজ্ঞাত।
  • খুয়ী, সাইয়্যেদ আবুল কাসেম, সাইয়্যেদ আবুল কাসেম খুয়ী, মু’জামু রিজালিল হাদীস ওয়া তাফসীলু তাবাকাতির রুওয়াত, কোম, মারকাযে নাশরে আসার আল-শিয়া, ১৪১০ হি.।
  • রাযি, আহমাদ ইবনে সাহল, আখবারু ফাখ ওয়া খাবারু ইয়াহইয়া ইবনে আব্দুল্লাহ ওয়া আখিহ ইদ্রিস ইবনে আব্দুল্লাহ, তাহকিক: মাহের জাররার, বৈরুত, দারুল গারব আল-ইসলামী
  • সামআনি, আব্দুল কারিম ইবনে মুহাম্মাদ, আল-আনসাব, তাহকিক: আব্দুর রহমান ইবনে ইয়াহইয়া আল-মুয়াল্লেমুল ইয়ামানি, হাইদারাবাদ, মাজলিসে দায়েরাতুল মাআরেফ আল-উসমানিয়াহ, ১৩৮২ হি.।
  • সাইয়্যেদ ইবনে তাঊস, আলী ইবনে মূসা, মুহাজুল দাআওয়াত ওয়া মানহাজুল ইবাদাত, কোম, আয-যাখায়ের, ১৪১১ হি.।
  • শামি, ইউসুফ ইবনে হাতেম, আদ-দুররুন নাযীম ফি মানাকিবিল আইম্মাতিল হামীম, কোম, জামেয়ে মুদাররেসীন, ১৪২০ হি.।
  • শাবরাউয়ি, জামালুদ্দীন, আল-ইতহাফ বি হুব্বিল আশরাফ, কোম, দারুল কিতাব, ১৪২৩ হি.।
  • শারীফী, মুহসিন, «ائمه و قیامهای شیعی», দার ফাসলনামেয়ে তুলু’, সংখ্যা ১৭, বাহার ১৩৮৫।
  • শুশতারি, মুহাম্মাদ তাকী, রিসালাতু ফি তাওয়ারিখিন নাবী ওয়াল আল, কোম, জামেয়ে মুদাররেসীন, ১৪২৩ হি.।
  • শেইখ সাদুক, মুহাম্মাদ ইবনে আলী ইবনে বাবাওয়াই, উয়ুনু আখবারির রেযা আলাইহিস সালাম, তেহরান, নাশরে জাহান, ১৩৭৮ হি.।
  • শেইখ সাদুক, মুহাম্মাদ ইবনে আলী ইবনে বাবাওয়াই, কামালুদ্দীন ওয়া তামামুন নি’মাহ, তেহরান, ইন্তেশারাতে ইসলামীয়া, ১৩৯৫ হি.।
  • শেইখ সাদুক, মুহাম্মাদ ইবনে আলী ইবনে বাবাওয়াই, আত-তাওহীদ, তাসহিহ: হাশেম হুসাইনি, কোম, জামেয়ে মুদাররেসীন, ১৩৯৮ হি.।
  • শেইখ তুসি, মুহাম্মাদ ইবনে হাসান, ইখতিয়ারু মা’রিফাতির রিজাল, কোম, মুআসসেসেয়ে আলিল বাইত লি ইহিয়ায়িত তুরাস, ১৪০৪ হি.।
  • শেইখ তুসি, মুহাম্মাদ ইবনে হাসান, আল-গায়বাহ, কোম, দারুল মাআরেফ আল-ইসলামীয়া, কোম, ১৪১১ হি.।
  • শেইখ তুসি, মুহাম্মাদ ইবনে হাসান, রিজালে তুসি, কোম, জামেয়ে মুদাররেসীন, ১৪১৫ হি.
  • শেইখ তুসি, মুহাম্মাদ ইবনে হাসান, ফেহরেস্তু কুতুব আশ-শিয়াতি ওয়া উসুলিহিম ওয়া আসমাইল মুসান্নিফীনা ওয়া আসহাবিল উসুল, তাসহিহ: আব্দুল আযিয তাবাতাবায়ী, কোম, মাক্তাবাতুল মুহাক্কেক আত-তাবাতাবায়ী, ১৪২০ হি.।
  • শেইখ তুসি, মুহাম্মাদ ইবনে হাসান, আল-ফেহরেস্ত, কোম, ইন্তেশারাতে ফোকাহাত, প্রথম সংস্করণ, ১৪১৭ হি.।
  • শেইখ তুসি, মুহাম্মাদ ইবনে হাসান, তাহযীবুল আহকাম, তাসহিহ: হাসান মুসাভি খোরাসান, কোম, দারুল কুতুব আল-ইসলামীয়া, ১৪০৭ হি.।
  • শেইখ আব্বাস কুম্মি, আনওয়ারুল বাহিয়্যাহ, তাহকিক: মাহদী বাকের আল-কারাশি, কোম, জামেয়ে মুদাররেসীন, ১৪১৭ হি.।
  • শেইখ মুফিদ, মুহাম্মাদ ইবনে মুহাম্মাদ নো’মান, আল-ইরশাদ ফি মা’রিফাতি হুজাজিল্লাহি আলাল ইবাদ, কনগ্রেয়ে শেইখ মুফিদ, ১৪১৩ হি.।
  • তাবারসি, হাসান ইবনে ফাযল, মাকারেমুল আখলাক, কোম, আল-শারীফ আল-রাযি, ১৪১২ হি.।
  • তাবারসি, ফাযল ইবনে হাসান, এ’লামুল ওয়ারা বি আ’লামিল হুদা, মাশহাদ, আলুল বাইত, ১৪১৭ হি.।
  • তাবারসি, ফাযল ইবনে হাসান, আল-ইহতিজাজু আলা আহলিল লাজাজ, তাসহিহ: মুহাম্মাদ বাকের খোরাসান, মাশহাদ, নাশরে মুর্তাযা, ১৪০৩ হি.।
  • তাবারি, মুহাম্মাদ ইবনে জারীর ইবনে রুস্তম, দালায়েলুল ইমামাহ, কোম, বে’সাত, ১৪০৩ হি.।
  • আমেলি, হাসান ইবনে যায়েন উদ্দীন, আত-তাহরীরুত তাঊসি, তাহকিক: ফাযেল জাওয়াহেরি, কোম, কিতাবখানেয়ে আয়াতুল্লাহ মারআশি, ১৪১১ হি.।
  • ওতারেদি, আযীযুল্লাহ, মুসনাদুল ইমামিল কাযিম আবিল হাসান মূসা ইবনে জাফার (আ.), মাশহাদ, আস্তানে কুদসে রাযাভি, ১৪০৯ হি.।
  • ফাযেল মিকদাদ, মিকদাদ ইবনে আব্দুল্লাহ, ইরশাদুত তালিবীন ইলা নাহজিল মুস্তারশেদীন, তাহকিক: মাহদী রেজায়ী, কোম, কিতাবখানেয়ে উমুমিয়ে হযরত আয়াতুল্লাহ আল-উযমা মারআশি নাজাফি, ১৪০৫ হি.।
  • কারাশি, বাকের শারীফ, হায়াতুল ইমাম মূসা ইবনে জাফার (আ.), তাহকিক: মাহদী বাকের আল-কারাশি, ১৪২৯ হি.।
  • কারাশি, বাকের শারীফ, হায়াতুল ইমাম মূসা ইবনে জাফার (আ.), বৈরুত, দারুল বালাগাহ, ১৪১৩ হি./ ১৯৯৩ খ্রি.।
  • কুম্মি, হাসান, তারিখে কোম, তাসহিহ: তেহরানি, জালালুদ্দীন, তেহরান, তুস, ১৩৬১ ফার্সি সন।
  • কাশশি, মুহাম্মাদ ইবনে উমর, তাসহিহ: মুহাম্মাদ ইবনে হাসান তুসি ওয়া হাসান মুস্তাফাভি, মাশহাদ, মুআসসেসেয়ে নাশরে দানেশগাহে মাশহাদ, ১৪০৯ হি.।
  • কা’বি, আলী মূসা, আল-ইমাম মূসা ইবনে আল-কাযিম আলাইহিস সালাম সীরা ওয়া তারিখ, স্থান অজ্ঞাত, মুআসসাসাতুর রিসালাহ, ১৪৩০ হি.।
  • কুলাইনি, মুহাম্মাদ ইবনে ইয়াকুব, আল-কাফি, তাসহিহ: আলী আকবার গাফফারি ওয়া মুহাম্মাদ আখুন্দি, তেহরান, দারুল কুতুব আল-ইসলামীয়া, ১৪০৭ হি.।
  • মামকানি, আব্দুল্লাহ, তানকীহুল মাকাল ফি ইলমির রিজাল, কোম, মুআসসাসাতু আলিল বাইত (আ.) লি ইহিয়ায়িত তুরাস, ১৪২৩ হি.।
  • মারভাযি, মূসা ইবনে ইব্রাহিম, মুসনাদুল ইমাম মূসা ইবনে জাফর, দার ফাসলনামেয়ে ইলমে হাদীস, সংখ্যা ১৫, কোম, দানেশগাহে কুরআন ওয়া হাদীস, ১৪২৫ হি.।
  • মাসউদি, আলী ইবনে হুসাইন, এসবাতুল ওয়াসিয়াহ, তরজমা: মুহাম্মাদ জাওয়াদ নাজাফি, তেহরান, ইন্তেশারাতে ইসলামীয়া, ১৩৬২ ফার্সি সন।
  • মাকদেসি, ইয়াদুল্লাহ, তারিখে ভেলাদাত ওয়া শাহাদাতে মা’সুমান, কোম, দাফতারে তাবলীগাতে হাওযা ইলমিয়া কোম, ১৩৯১ ফার্সি সন।
  • নাসর ইস্ফাহানি, আবাযার, কিতাব শেনাছিয়ে কাযেমাঈন, তেহরান, নাশরে মাশআর, ১৩৯৩ ফার্সি সন।
  • নৌবাখতি, হাসান ইবনে মূসা, ফিরাকুশ শিয়া, বৈরুত, দারুল আদ্বওয়া’, ১৪০৪ হি.।
  • ইয়াকুবি, আহমাদ ইবনে আবি ইয়াকুব, তারিখুল ইয়াকুবি, বৈরুত, দারু সাদির, ১৩৫৮ হি.।