ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম
বারো ইমামি শিয়াদের তৃতীয় ইমাম | |
নাম | হুসাইন ইবনে আলী |
---|---|
উপনাম | আবা আব্দিল্লাহ |
জন্ম তারিখ | ৩ শাবান, ৪ হি. |
জন্মস্থান | মদীনা |
ইমামতকাল | প্রায় ১১ বছর (৫০ থেকে ৬১ হি.-এর প্রথম পর্যন্ত) |
শাহাদাত | ১০ মহররম (আশুুরা), ৬১ হি. |
দাফনের স্থান | কারবালা {ইমাম হুসাইন (আ.)-এর মাজার} |
বসবাসের স্থান | মদীনা • কুফা |
উপাধিসমূহ | সাইয়্যেদুশ শুহাদা • সারুল্লাহ • কাতিলুল আবারাত |
পিতা | ইমাম আলী (আ.) |
মাতা | হযরত ফাতেমা (সা.আ) |
স্ত্রীগণ | রুবাব • লায়লা • উম্মে ইসহাক • শহর বানু |
সন্তান | ইমাম যাইনুল আবেদীন (আ.) • আলী আকবার • আলী আসগার • সাকিনা • ফাতেমা • জাফর |
জীবনকাল | ৫৭ বছর |
শিয়া ইমামগণ | |
ইমাম আলী • ইমাম হাসান মুজতাবা • ইমাম হুসাইন • ইমাম সাজ্জাদ • ইমাম বাকের • ইমাম জাফার সাদিক • ইমাম কাযেম • ইমাম রেযা • ইমাম জাওয়াদ • ইমাম হাদী • ইমাম হাসান আসকারি • ইমাম মাহদী |
হুসাইন ইবনে আলী ইবনে আবি তালিব (আ.) (আরবি: الامام الحسین بن علی بن ابی طالب); শিয়াদের তৃতীয় ইমাম। শিয়াদের মাঝে হযরত ইমাম হুসাইন আবা আব্দিল্লাহ ও সাইয়্যেদুশ শোহাদা নামে পরিচিত, তিনি কারবালার ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে শহীদ হন। ইমাম হুসাইন হযরত আলী (আ.) ও হযরত ফাতিমা যাহরার (সা. আ.) দ্বিতীয় সন্তান এবং মহানবির (স.) দৌহিত্র। তিনি ভাই ইমাম হাসান (আ.)-এর পর থেকে শাহাদাত অবধি প্রায় ১১ বছর ইমামতের মহান দায়িত্বে অধিষ্ঠিত ছিলেন।
শিয়া ও সুন্নি বিভিন্ন ঐতিহাসিক সূত্রের ভাষ্যমতে, তাঁর জন্মের সময় মহানবি (স.) তার শাহাদাতের সংবাদ প্রদান করেছিলেন এবং হযরত (স.) শিশুর নাম রাখেন ‘হুসাইন’। আল্লাহর রাসূল (স.) হাসনাইন (ইমাম হাসান ও হুসাইন)-কে অত্যধিক ভালোবাসতেন এবং তাদেরকে ভালবাসার জন্য সকলকে আহবান জানাতেন। ইমাম হুসাইন ইবনে আলী ‘আসহাব-এ কিসা’র অন্যতম সদস্য, মুবাহালার মাঠে রাসূলের (স.) সাথে উপস্থিতদের একজন এবং আল্লাহর রাসূলের (স.) আহলে বাইতের অন্যতম সদস্য যাঁদের শানে ‘আয়াতে তাতহির’ (آیه تطهیر) অবতীর্ণ হয়েছে। ইমাম হুসাইনের (আ.) ফজিলতে মহানবি (স.) থেকে বিভিন্ন হাদীস বর্ণিত হয়েছে; যেমন ‘হাসান ও হুসাইন বেহেশতি যুবকদের সর্দার’ এবং ‘হুসাইন হিদায়েতের প্রদীপ ও নাজাতের (পরিত্রাণ) তরণী’ ইত্যাদি।
মহানবীর (সা.) ওফাতোত্তর তিন দশকের মধ্যে শিয়াদের তৃতীয় ইমামের জীবনী সম্পর্কে খুব বেশী প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি। তিনি ইমাম আলী ইবনে আবি তালিব (আ.)-এর খেলাফতকালে পিতার সাথে ছিলেন এবং তৎকালে অনুষ্ঠিত যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ইমাম হাসানের (আ.) ইমামতকালীন সময়ে তিনি তাঁর অনুসারী ও পৃষ্ঠপোষক ছিলেন এবং ইমাম হাসান কর্তৃক গৃহীত মুয়াবিয়ার সাথে সন্ধির বিষয়ে তিনি সমর্থন জানিয়েছিলেন। ইমাম হাসানের (আ.) শাহাদাতের পর, যতদিন মুয়াবিয়া জীবিত ছিল ততদিন তিনি ভাই হাসানের (আ.) কৃত চুক্তির প্রতি অনুগত ছিলেন। এ সময় কুফার কিছু কিছু শিয়াদের চিঠির জবাবে, তিনি তাদেরকে মুয়াবিয়ার মৃত্যু অবধি ধৈর্য ধারণের আহবান জানান; যারা তাঁকে নেতৃত্ব গ্রহণের আহবান জানিয়ে বনি উমাইয়াদের বিরুদ্ধে সংগ্রামের জন্য নিজেদের প্রস্তুতির কথা ঘোষণা করে চিঠি লিখেছিল।
মুয়াবিয়া ইবনে আবি সুফিয়ানের খেলাফতকাল ছিল ইমাম হুসাইনের (আ.) সমসাময়িক। ঐতিহাসিক বিভিন্ন সূত্রে উল্লিখিত বর্ণনার ভিত্তিতে ইমাম হুসাইন (আ.) বিভিন্ন ক্ষেত্রে মুয়াবিয়ার কাজ ও পদক্ষেপের কঠোর সমালোচনা করতেন। যেমন- হুজর ইবনে আদি (উদাই)-কে হত্যার ঘটনায় মুয়াবিয়ার উদ্দেশে তাকে তিরষ্কার করে ইমাম হুসাইন একটি পত্র লিখেন, ইয়াযিদকে পরবর্তী খলিফা (ওয়ালিয়ে আহদ) হিসেবে মনোনয়নের ঘটনায় তিনি ইয়াযিদের হাতে বাইয়াত করতে অস্বীকৃতি জানান, এছাড়া মুয়াবিয়া ও অন্যান্যদের উপস্থিতিতে মুয়াবিয়ার এমন পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়ে ইয়াযিদকে না-লায়েক ও অযোগ্য এবং নিজেকে খেলাফতের সবচেয়ে যোগ্য ব্যক্তি হিসেবে পরিচয় করান।
মীনায় ইমাম হুসাইন (আ.)-এর খুতবা বনু উমাইয়া প্রশাসনের বিরুদ্ধে তাঁর রাজনৈতিক অবস্থানকে স্পষ্ট করে দেয়। এতদসত্ত্বেও, বর্ণিত আছে যে, অপর ৩ খলিফার মত মুয়াবিয়াও হুসাইন ইবনে আলী (আ.)-কে সম্মান করতেন।
মুয়াবিয়ার মৃত্যুর পর ইমাম হুসাইন (আ.) ইয়াযিদের হাতে বাইয়াতকে অবৈধ আখ্যায়িত করেন এবং বাইয়াত করতে অস্বীকৃতির ফল হিসেবে ইয়াযিদের পক্ষ থেকে তাঁকে (আ.) হত্যার নির্দেশের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে তিনি (আ.) ৬০ হিজরির ২৮ রজব মদিনা থেকে মক্কার উদ্দেশে রওয়ানা হন। মক্কায় দীর্ঘ ৪ মাস অবস্থানকালীন সময়ে, নেতৃত্ব গ্রহণের আহবান জানিয়ে লেখা কুফাবাসীর বহু চিঠি তাঁর হাতে এসে পৌঁছায়। অতঃপর তাঁর প্রেরিত দূত ‘মুসলিম ইবনে আকীল’ কর্তৃক কুফার জনগণের ইমামের (আ.) প্রতি অনুগত থাকার বিষয়টি সত্যায়িত হওয়ার পর, তিনি কুফার জনগণের অঙ্গীকার (ও বাইয়াত) ভঙ্গ এবং মুসলিম ইবনে আকীলের শাহাদাতের সংবাদ পাওয়ার আগেই ৮ই জিলহজ্জ কুফার উদ্দেশে রওয়ানা হন।
তৎকালীন কুফার গভর্নর উবায়দুল্লাহ ইবনে যিয়াদ, ইমাম হুসাইনের (আ.) কুফা অভিমুখে রওয়ানা হওয়ার তথ্য পেয়ে তাঁর পথরোধ করার জন্য একদল সৈন্য প্রেরণ করে। হুরর ইবনে ইয়াযিদের নেতৃত্বে থাকা ঐ বাহিনী ইমাম হুসাইনের (আ.) পথরোধ করলে কারবালার দিকে যাওয়া ছাড়া ইমামের সামনে আর কোনো পথ খোলা ছিল না। আশুরার দিন (১০ই মহররম) ইমাম হুসাইন (আ.) ও তাঁর সাথী এবং ওমর ইবনে সা’দের নেতৃত্বাধীন ইয়াযিদী বাহিনীর মধ্যকার যুদ্ধের ঘটনায় শিয়াদের তৃতীয় ইমাম হুসাইন ইবনে আলী (আ.) ও তাঁর সাথীরা নির্মমভাবে শহীদ হন। অতঃপর ইমাম সাজ্জাদ (আ.)-সহ -যিনি ঐ সময় প্রচণ্ড অসুস্থ ছিলেন- ইমাম হুসাইনের কাফেলায় থাকা নারী ও শিশুদের বন্দী করে কুফায় অতঃপর শামে (সিরিয়া) পাঠানো হয়। ১১ মতান্তরে ১৩ মহররম বনু আসাদ গোত্রের একটি দল ইমাম হুসাইন (আ.) ও তাঁর সাথীদের লাশ দাফন করে।
ইমাম হুসাইনের মদিনা থেকে কারবালায় যাওয়ার নেপথ্য কারণ সম্পর্কে মুসলিম স্কলারদের মাঝে মতভেদ রয়েছে। একটি দলের মতে, তিনি সরকার গঠনের জন্য আন্দোলনে নেমেছিলেন। কিন্তু আরেকটি দলের মত হল, তিনি জীবন বাঁচাতে এ পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তবে সবচেয়ে বড় দলটির মত হলো, ইমাম হুসাইন ইবনে আলী তাঁর পিতামহ রাসূলুল্লাহ (স.)-এর সুন্নতকে পূনরুজ্জীবিত করতে এবং সৎকাজের নির্দেশ ও অসৎকাজে বাঁধা প্রদানের উদ্দেশ্যে এ আন্দোলনে নেমেছিলেন, যা তাঁর বাণী থেকেই স্পষ্ট হয়। ইমাম হুসাইন ইবনে আলীর শাহাদাত শিয়াদের উপর সর্বোপরি মুসলমি উম্মাহ’র উপর গভীর প্রভাব ফেলেছে এবং ইতিহাসের বিভিন্ন আন্দোলন ও সংগ্রামের অনুপ্রেরণার উৎস ছিলেন তিনিই। শিয়ারা তাদের অপর ইমাম (আ.)-দের নির্দেশনা অনুসরণ করতঃ ইমাম হুসাইন ইবনে আলীর শাহাদাতের স্মরণে শোক প্রকাশ ও ক্রন্দনে বিশেষতঃ মহররম ও সফর মাসে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। মা’সুম (নিষ্পাপ/ ভুলত্রুটির ঊর্ধ্বে) ইমামগণের (আ.) রেওয়ায়েতে ইমাম হুসাইনের (আ.) মাজার যিয়ারতের বিষয়েও বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে এবং তাঁর পবিত্র মাজার শিয়াদের যিয়ারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থান।
তৃতীয় ইমাম ও বেহেশতি যুবকদের সর্দার হিসেবে ইমাম হুসাইন ইবনে আলী (আ.) শিয়াদের মাঝে বিশেষ মর্যাদা ও মাকামের অধিকারী। এছাড়া মহানবি (স.) থেকে যে সকল ফজিলত তার সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে তার ভিত্তিতে এবং ইয়াযিদের বিরুদ্ধে সংগ্রামের কারণে আহলে সুন্নতও তাঁকে বিশেষ সম্মানের চোখে দেখে।
ইমাম হুসাইনের (আ.) কথাগুলো হাদীস, দোয়া, পত্র ও খুতবা আকারে ‘মৌসুআতু কালিমাতিল ইমামিল হুসাইন’ এবং ‘মুসনাদুল ইমামিশ শাহীদ’ গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে। এছাড়া, ইনসাইক্লোপেডিয়া, জীবনী, মাকতাল ও বিশ্লেষণধর্মী ইতিহাস শিরোনামে তার ব্যক্তিত্ব ও জীবনী সম্পর্কে বহু গ্রন্থ রচিত হয়েছে।
মর্যাদা ও অবস্থান
শিয়াদের তৃতীয় ইমাম হুসাইন ইবনে আলী (আ.), শিয়াদের প্রথম ইমাম হযরত আলী ইবনে আবি তালিব (আ.)-এর পুত্র এবং রাসূলের (স.) পৌত্র।[১] তাঁর ফজিলতে বিভিন্ন প্রসিদ্ধ গ্রন্থে বহুসংখ্যক হাদীস বর্ণিত হয়েছে। শিয়াদের মাঝে তিনি বিশেষ স্থানের অধিকারী এবং আহলে সুন্নতও তাঁকে বিশেষ সম্মানের চোখে দেখে।
হাদিস ও ঐতিহাসিক সূত্রগুলোতে ইমাম হুসাইন
শিয়া ও আহলে সুন্নতের বিভিন্ন রেওয়ায়েতের ভিত্তিতে হুসাইন ইবনে আলী (আ.) ‘আসহাবে কিসা’র অন্যতম সদস্য।[২] মুবাহালার ঘটনায় তিনি উপস্থিত ছিলেন[৩] এবং মুবাহালার আয়াতে আগত أبنائنا (আমাদের পুত্রদেরকে) শব্দটির দৃষ্টান্ত হলেন তিনি এবং তাঁর ভাই ইমাম হাসান ইবনে আলী।[৪] একইভাবে তিনি আহলে বাইতেরও (আ.) সদস্য; যাঁদের শানে আয়াতে তাতহির (পবিত্রতার আয়াত) অবতীর্ণ হয়েছে।[৫]
ইমাম হাসান (আ.)-এর শাহাদাতের পর, বয়সে ইমাম হুসাইনের (আ.) চেয়ে বড় ব্যক্তি বনু হাশিমের মাঝে থাকা সত্ত্বেও তাঁকে বনু হাশিমের সবচেয়ে সম্ভ্রান্ত ও বোযোর্গ ব্যক্তিত্ব হিসেবে মানা হতো। ঐতিহাসিক ইয়াকুবীর বর্ণনার ভিত্তিতে, হাসান ইবনে আলীর শাহাদাতের পর ইবনে আব্বাস (রা.)-কে বলা হলো: ‘আজকের পর থেকে তুমি তোমার গোত্রের (বনু হাশিম) নেতা। ইবনে আব্বাস তার উত্তরে বললেন: যতক্ষণ হুসাইন (আমাদের মাঝে) রয়েছেন, (ততক্ষণ) না। [৬] একইভাবে হুসাইন ইবনে আলীর (আ.) সাথে বনু হাশিমের পরামর্শ এবং তাঁর অভিমতকে অন্যদের মতের উপর প্রাধান্য দেওয়ার কথাও উল্লিখিত হয়েছে।[৭] বর্ণিত আছে যে, আমর ইবনে আ’ছ তাঁকে আসমানবাসীর নিকট পৃথিবীবাসীর মধ্যে সবচেয়ে প্রিয় মানুষ হিসেবে জানতেন।[৮]
ইমাম সাদিক (আ.) থেকে বর্ণিত:
‘যে কেউ পানি পান করার সময় হুসাইন ও তাঁর পরিবারকে স্মরণ করে এরং তাঁর হত্যাকারীদেরকে লানত করে, মহান আল্লাহ্ তার আমলনামায় ১ লক্ষ সওয়াব লিপিবদ্ধ করবেন ও তার ১ লক্ষ গুনাহ মুছে দিবেন; আর তার মাকামকে ১ লক্ষ স্তর ওপরে নিয়ে যাবেন... এবং কিয়ামতের দিন প্রশান্ত অন্তরসহ তাকে উত্থিত করা হবে।’ [কুলাইনি, কাফী, প্রকাশকাল ১৪০৭ হি., খণ্ড ৬, পৃ. ৩৯১; ইবনে কুলাওয়াইহ, কামিলুয যিয়ার, প্রকাশকাল ১৩৬৫ ফার্সিসন, পৃ. ১০৬।]
শিয়া সংস্কৃতিতে ইমাম হুসাইন (আ.)
৬১ হিজরির ১০ই মহররমের (আশুরা) ঘটনায় ইমাম হুসাইন ইবনে আলীর শাহাদাত, শত বিপদের মাঝেও সত্যের উপর তাঁর অবিচল থাকা ও তাঁর সাহসিকতা এবং শাহাদাত, শিয়াদের নিকট এমনকি অপর মাযহাবের অনুসারীদের কাছেও তার ব্যক্তিত্বকে আরও বেশি দৃশ্যমান করে তুলেছে, এ কারণে এ বৈশিষ্ট্যের সামনে বিভিন্ন রেওয়ায়েতে উল্লিখিত তাঁর অপর গুণাবলী ও বৈশিষ্ট্যগুলো রঙ হারিয়েছে। প্রথমবারের মত মহানবির (স.) পরিবারের উপর প্রকাশ্যে অবমাননা ও আক্রমনের এ ঘটনা শিয়া সংস্কৃতি ও ইতিহাসের উপর গভীর প্রভাব ফেলেছে, ফলে এ আন্দোলনকে অত্যাচার বিরোধী আন্দোলন, তলোয়ারের উপর রক্তের বিজয়, সৎকাজের নির্দেশ ও অসৎকাজে বাঁধা প্রদান এবং আত্মোৎসর্গের প্রতীকে রূপান্তরিত করেছে। *মুহাদ্দেসী, ফারহাঙ্গে আশুরা, ১৩৯৩ (সৌরবর্ষ), পৃ: ৩৭২।
ইমাম হুসাইন (স.)-এর শাহাদাতের প্রভাব এতটাই গভীর ও ব্যাপক ছিল যে, অনেকের ধারণা তাঁর শাহাদাতের পরই শিয়া মাযহাবের উৎপত্তি হয় (যদিও বিষয়টি সত্য নয়)। ইসলামি ইতিহাসে ইমাম হুসাইনের (আ.)-এর সংগ্রামের অনুকরণে বিভিন্ন সংগ্রাম ও আন্দোলন হয়েছে যেগুলোর মূল স্লোগান ছিল ‘ইয়া লাসারাতিল হুসাইন’।
শিয়া সংস্কৃতিতে মহররম ও সফর মাস বিশেষ স্থানের অধিকারী; বিশেষভাবে তাসুআহ (৯ মহররম), আশুরা (১০ মহররম) এবং আরবাঈন (শাহাদাতের ৪০তম দিন, অর্থাৎ ২০ শে সফর) বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে পালিত হয়। শিয়ারা তাদের ইমামগণ (আলাইহিমুস সালাম)-এর নির্দেশনা অনুসরণ করে পানি পান করার সময়, ইমাম হুসাইন (আ.)-এর তৃষ্ণাকে স্মরণ করে তাঁর উপর সালাম ও দরুদ পাঠায়।[৯]
আহলে সুন্নাতের দৃষ্টি ইমাম হুসাইন
আহলে সুন্নাতের বিভিন্ন প্রসিদ্ধ গ্রন্থে ইমাম হুসাইন ইবনে আলী (আ.)-এর ফজিলত ও মর্যাদা বর্ণনাকারী বহু সংখ্যক হাদিস উল্লিখিত হয়েছে।[১০] আল্লাহর পথে জান, মাল ও পরিবার-পরিজন নিয়ে আত্মোৎসর্গ করার বিষয়টি মুসলমানদের মনে তাঁর বিশেষ স্থান তৈরিরও কারণ হয়েছে।
ইমাম হুসাইন (আ.)-এর এ আন্দোলন ও বিপ্লব সম্পর্কে আহলে সুন্নত দু’ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী: তাদের একটি দল ইমামের এ পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে, তবে তাদের বেশীরভাগই ইমামের এ পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন। সমালোচনা কারীদের মাঝে হিজরি ৬ষ্ঠ শতাব্দির আন্দোলুসিয়ার বিশিষ্ট সুন্নি আলেম আবু বকর ইবনে আরাবি, ইমাম হুসাইন (আ.)-এর এ পদক্ষেপের নিন্দা এবং তাঁকে (আ.) তিরস্কার জানিয়ে বলেছেন: জনগণ মহানবি (স.) থেকে বর্ণিত একটি হাদীস (যারা উম্মাহকে বিভক্ত করতে চায় তাদের সাথে যুদ্ধ করা এবং ফিতনা এড়িয়ে চলা প্রসঙ্গে) শুনে হুসাইন ইবনে আলীর সাথে যুদ্ধ করেছিল।[১১] ইবনে তাইমিয়ার মতে, হুসাইন ইবনে আলীর পদক্ষেপ পরিস্থিতি সংশোধনে কোন ভূমিকা তো রাখেইনি, বরং পরিণতিতে অকল্যাণ ও ফিতনা হয়েছে।[১২]
পক্ষান্তরে ৯ম হিজরির আন্দোলুসিয়ার বিশিষ্ট সুন্নি ঐতিহাসিক ইবনে খালদুন, ইবনে আরাবির মন্তব্যের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বলেছেন, অত্যাচারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের পূর্বশর্ত হলো একজন ন্যায়পরায়ণ (আদেল) ইমামের উপস্থিতি এবং ইমাম হুসাইন (আ.) তৎকালীন সময়ে অত্যাচারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ক্ষেত্রে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তিত্ব ছিলেন।[১৩]
তিনি বলেন, ইয়াযিদের ফাসিক ও পাপাচারী হওয়ার বিষয়টি জনসম্মুখে আসার পর তার বিরুদ্ধে কিয়াম (আন্দোলন ও সংগ্রাম) করাকে তিনি অপরিহার্য জ্ঞান করেছিলেন, কারণ তিনি নিজেকে এ কাজের জন্য সবচেয়ে যোগ্য ব্যক্তি মনে করতেন।[১৪] হিজরি ত্রয়োদশ শতাব্দির বিশিষ্ট সু্ন্নি মনীষী শাহাবুদ্দীন আলুসি তার রুহুল মাআনী গ্রন্থে, ইবনে আরাবির প্রতি লানত (অভিসম্পাত) করে তার এই মন্তব্যকে মিথ্যা এবং বৃহৎ তোহমাত (অপবাদ) বলে আখ্যায়িত করেছেন।[১৫]
হিজরি চতুর্দশ শতাব্দির মিসরীয় লেখক ও সাহিত্যিক এবং ‘আবুশ শুহাদা: আল-হুসাইন ইবনে আলী’ গ্রন্থের লেখক আব্বাস মাহমুদ আক্কাদ লিখেছেন, ইয়াযিদের শাসনামলে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গড়িয়েছিল যে, শাহাদাত ব্যতিত তা সংশোধনের বিকল্প কোন রাস্তা ছিল না।[৪৪] তার মতে, এমন ধরনের বিপ্লব শুধু বিরল ও ব্যতিক্রমী কিছু ব্যক্তিত্ব দ্বারাই সম্ভব; যারা এ কাজের জন্যই বিশেষভাবে প্রস্তুত হয়েছেন এবং তাদের কার্যক্রম ও কর্মধারা অতুলনীয়; কেননা অপরের তুলনায় এঁদের সমঝ-বুঝ ও উদ্দেশ্য আলাদা।
বিশিষ্ট সুন্নি লেখক ত্ব’হা হুসাইনের মতে, হুসাইন ইবনে আলীর বাইয়াত না করাটা শত্রুতা ও গোঁড়ামির কারণে নয়; কারণ তিনি জানতেন ইয়াযিদের হাতে বাইয়াত করার অর্থ হলো নিজের বিবেক ও বিবেচনার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা এবং নিজের ধর্মের বিরোধিতা করা, কারণ তাঁর দৃষ্টিতে ইয়াযিদের হাতে বাইয়াত ছিল গুনাহ।[১৬]
জুলুম ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে নিরবতা বৈধ নয় -এ কথা উল্লেখ করে ওমর ফররুখ বলেছেন, বর্তমান সময়ে আমাদের মাঝে ‘একজন হুসাইন’-এর উত্থানের প্রয়োজন অনুভূত হচ্ছে, যিনি সত্যের পক্ষাম্বলন ও সত্য রক্ষায় আমাদেরকে সঠিক পথের নির্দেশনা দিবেন।
নাম, বংশ পরিচয়, কুনিয়া ও উপাধি
- মুল নিবন্ধ: ইমাম হুসাইনের উপনাম ও উপাধিসমুহের তালিকা
শিয়া ও সুন্নি সূত্রের বর্ণনার ভিত্তিতে ‘হুসাইন’ নামটি আল্লাহর রাসূল (স.)-ই রেখেছিলেন।[১৭] বিভিন্ন রেওয়ায়েতের ভিত্তিতে এই নামকরণ স্বয়ং আল্লাহ্ (সুবহানাহু ওয়া তাআলা)-এর নির্দেশে করা হয়েছিল।[১৮] ইতিপূর্বে আরবদের মাঝে প্রচলিত না থাকা[৫০] ‘হাসান’ ও ‘হুসাইন’ নাম দু’টি হলো হযরত হারুনের পুত্র শাব্বার ও শাবির (শাব্বির)-এর [১৯] নামের সমার্থক।[২০]
ইমাম হুসাইনের নাম রাখার ব্যাপারে অন্যান্য বর্ণনাও উল্লিখিত হয়েছে; যেমন- ইমাম আলী (আ.) প্রথমে তার নাম ‘হারব’ অথবা ‘জাফার’ রাখার বিষয়ে মনস্থ করেছিলেন, কিন্তু মহানবি (স.) তার নাম রাখে ‘হুসাইন’।[২১] অনেক ঐতিহাসিক এ ধরনের বর্ণনাকে জাল ও বানোয়াট উল্লেখ করে এর প্রত্যাখ্যানে বিভিন্ন দলিলও উপস্থাপন করেছেন।
ইমাম হুসাইন (আ.), ইমাম আলী (আ.) ও হযরত ফাতিমা (সা. আ.)-এর দ্বিতীয় সন্তান এবং রাসূলুল্লাহ (স.)-এর পৌত্র।[২২] তিনি কুরাইশের বনু হাশিম গোত্র থেকে। ইমাম হাসান মুজতাবা (আ.), হযরত আব্বাস (আ.) ও মুহাম্মাদ ইবনে হানাফিয়া তার ভাইদের অন্যতম এবং হযরত যায়নাব (সা. আ.) ও উম্মু কুলসুম তার বোনদের অন্যতম।[২৩]
ইমাম হুসাইন ইবনে আলীর কুনিয়াগুলো হলো ‘আবু আব্দিল্লাহ’,[২৪] ‘আবুশ শুহাদা’ (শহীদানের পিতা), ‘আবুল আহরার’, ‘আবুল মুজাহিদ’ ইত্যাদি।[২৫]
ইমাম হুসাইন (আ.)-এর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক উপাধি ও লকবের অধিকারী; যেগুলোর কতকটিতে তিনি ছিলেন ইমাম হাসান (আ.)-এর সাথে যৌথভাবে অধিকারী, যেমন- ‘সাইয়িদা শাবাবি আহলিল জান্নাহ’ (বেহেশতি যুবকদের দুই সর্দার)। আর কতগুলো তিনি এককভাবে অধিকারী ছিলেন, যেমন- যাকি (زکی), তাইয়্যিব (طيّب), ওয়াফি (وافی), সাইয়িদ (سيِّد), মুবারাক (مُبَارکَ), নাফি’ (نافِع), আদ-দালিল আলা যাতিল্লাহ (الدلیل علی ذاتِ الله), রাশীদ (رشید) ও আত-তাবে’ লি-মারদ্বাতিল্লাহ (التّابع لمرضاتِ الله) ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।[২৬] ইবনে তালহা শাফেয়ি’, ‘যাকি’ লকবটি অপর লকবগুলো অপেক্ষা অধিক প্রসিদ্ধ এবং ‘সাইয়িদা শাবাবি আহলিল জান্নাহ’ (سیدا شباب اهل الجنة) লকবটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে আখ্যায়িত করেছেন।[২৭]
কিছু কিছু হাদিসে ইমাম হুসাইন (আ.)-কে শাহীদ (الشهید) সাইয়িদুশ শুহাদা (سید الشهداء) বলে উল্লেখ করা হয়েছে। [২৮] কিছু কিছু যিয়ারাত নামা’তে সারুল্লাহ্ (ثار الله) ‘কাতিলুল আবারাত’ (قَتِیل العَبَرات) উপাধিটিও উল্লিখিত হয়েছেন।[২৯]
শিয়া ও সুন্নিদের উল্লেখযোগ্য সূত্রে মহানবি (স.) থেকে বর্ণিত একটি রেওয়ায়েতে বলা হয়েছে, حسین سِبطٌ مِن الاَسباط ‘হুসাইন আসবাতের একজন’।[৩০] ‘সিবত’ (এর বহুবচন আসবাত) শব্দটি কিছু কিছু আয়াত ও রেওয়ায়েতে ইমাম ও নাকীব অর্থেও এসেছে; যারা মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্বাচিত এবং নবিদের বংশধর।
জীবনী
ইমাম হুসাইন ইবনে আলী মদিনায় জন্মগ্রহণ করেন এবং প্রসিদ্ধ মতের ভিত্তিতে তাঁর জন্মের বছরটি ছিল ৪র্থ হিজরি।[৩১] এতদসত্ত্বেও কেউ কেউ তিনি ৩য় হিজরিতে ভূমিষ্ট হয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন। [৩২]
প্রসিদ্ধ মতের ভিত্তিতে তিনি ৩ শাবান জন্মগ্রহণ করেন।[৩৩] কিন্তু শেইখ মুফিদ তার আল-ইরশাদ গ্রন্থে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর জন্মের তারিখ ৫ শাবান বলে উল্লেখ করেছেন।[৩৪]
আল্লাহর রাসূল (স.) বলেছেন:
‘হুসাইন আমার থেকে এবং আমি হুসাইন থেকে; আল্লাহ্ তাকে ভালবাসে যে হুসাইনকে ভালবাসে। [আনসাবুল আশরাফ, খণ্ড ৩, পৃ. ১৪২; আত-তাবাকাতুল কোবরা, খণ্ড ১০, পৃ. ৩৮৫।]
শিয়া ও সুন্নি সূত্রগুলোতে এ ঘটনা বর্ণিত হয়েছে যে, ইমাম হুসাইন ইবনে আলীর জন্মের সময় মহানবি (স.) তাঁর শাহাদাতের সংবাদ প্রদান করে ক্রন্দন করেছিলেন।[৩৫] কাফী গ্রন্থে বিদ্যমান একটি রেওয়ায়েতের ভিত্তিতে, হুসাইন (আ.) তার মা বা অন্য কোন নারীর দুধ পান করেননি।[৩৬]
বর্ণিত আছে যে, আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিবের স্ত্রী উম্মে ফাযল স্বপ্নে দেখলেন মহানবির (স.) দেহের একটি টুকরে তার আঁচলে রাখা হলো। মহানবি (স.) তার স্বপ্নের ব্যাখ্যায় বললেন, ফাতিমা একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেবে তুমি হবে তার দুধ মা (দাঈ মা), এ কারণে যখন হুসাইন (আ.) জন্মগ্রহণ করলেন তখন উম্মে ফাযল তার দাঈ মা হিসেবে তার দেখভাল করার দায়িত্ব নিলেন।[৩৭] কোন কোন সূত্রে, আব্দুল্লাহ ইবনে ইয়াকতুর-এর মা’কে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর দাঈ মা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু বলা হয়েছে, ইমাম হুসাইন (আ.) তাদের কারোরই দুধ পান করেননি।
আল্লাহর রাসূল (স.) যে তার আহলে বাইতের মধ্যে ইমাম হাসান ও হুসাইন (আলাইহিমাস সালাম)-কে অন্যদের তুলনায় বেশী ভালবাসতেন এবং বিষয়টি বিভিন্ন সুন্নি সূত্রেও এসেছে।[৩৮] আর এই ভালবাসা এতোটাই গভীর ছিল যে, তারা দু’ভাই মসজিদে প্রবেশ করলে মহানবি (স.) খুতবা অসম্পূর্ণ রেখে মিম্বর থেকে নেমে এসে তাদেরকে কোলে নিতেন।[৩৯] মহানবি (স.) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, ‘এ দু’ভাইয়ের প্রতি আমার মহব্বত ও ভালবাসা আমার জন্য অন্য কাউকে ভালবাসার পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে’।[৪০]
আসহাবে কিসা’র অপর সদস্যদের মতো ইমাম হুসাইন (আ.)-ও মুবাহালার ঘটনায় উপস্থিত ছিলেন।[৪১] মহানবির (স.) ইন্তিকালের সময় তার বয়স ছিল ৭ বছর (মতান্তরে ৬ বছর) এ কারণে তাঁকে সাহাবাদের সর্বশেষ দলটির মাঝে গণনা করা হয়। [৪২]
৩ খলিফার সমসময়ে
৩ খলিফার সমসময়ে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর জীবনের ২৫টি বছর অতিক্রান্ত হয়। আর এ সময় ইমাম হুসাইন (আ.)-এর ব্যাপারে খুব বেশী তথ্য পাওয়া যায় না; ইমাম আলী (আ.) ও তাঁর সন্তানদের রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে দূরে থাকার কারণেও এমনটি হতে পারে।
বর্ণিত আছে যে, ওমর ইবনে খাত্তাবের খেলাফতকালের প্রথমদিকে তখন তাঁর বয়স ৯ বছর, তিনি মসজিদে প্রবেশ করলেন। ওমর ইবনে খাত্তাবকে আল্লাহর রাসূল (স.)-এর মিম্বর থেকে খুতবা দিতে দেখে তিনি মিম্বরে উঠে বললেন: ‘আমার বাবার মিম্বর থেকে নীচে নেমে এসে তোমার বাবার মিম্বরে গিয়ে বসো!’ ওমর বললেন: আমার বাবার কোন মিম্বর নেই। [৪৩] ইতিহাস গ্রন্থগুলোতে দ্বিতীয় খলিফা কর্তৃক ইমাম হুসাইন (আ.)-কে বিশেষ সম্মান প্রদর্শন প্রসঙ্গেও বিভিন্ন প্রতিবেদন উল্লিখিত হয়েছে।[৪৪]
উসমান নিজ খেলাফাতকালে আবুযার গিফারিকে রাবাযায় নির্বাসিত করার পর আবুযারকে বিদায় জানাতে এবং তাকে সঙ্গ না দেওয়ার নির্দেশ জারী করেন। ইমাম হুসাইন বাবা ইমাম আলী ও ভাই ইমাম হাসান (আলাইহিমুস সালাম)সহ আরো কয়েকজনের সাথে খলিফার নির্দেশকে উপেক্ষা করে হযরত আবুযার (রা.)কে বিদায় জানাতে উপস্থিত হয়েছিলেন।[৪৫]
কেউ কেউ ২৬ হিজরিতে ‘আফ্রিকা অঞ্চলের যুদ্ধে’ এবং ২৯ বা ৩০ হিজরিতে তাবারিস্তান অঞ্চলের যুদ্ধে ইমাম হাসান ও ইমাম হুসাইন (আ.)-এর অংশগ্রহণের কথা উল্লেখ করেছেন। কিন্তু এ ধরনের কোন প্রতিবেদন কোন শিয়া সূত্রে উল্লিখিত হয়নি। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ইতিহাস গ্রন্থের বর্ণনার ভিত্তিতে, ঐ যুদ্ধদ্বয় কোনরকম সংঘর্ষ ছাড়াই সন্ধির মাধ্যমে সমাপ্ত হয়েছিল। [৪৬]
ইমাম হাসান ও ইমাম হুসাইন (আলাইহিমাস সালাম)-এর যুদ্ধে অংশগ্রহণের বিষয়টির পক্ষে কেউ কেউ মন্তব্য করলেও অনেকে এমন প্রতিবেদনের বিরোধিতা করেছেন। জাফার মুর্তাযা আমেলি’র মতো আরো অনেকের মতে এ সকল প্রতিবদেনের সনদগত সমস্যার পাশাপাশি এ পদ্ধতিতে বিজয়ের ব্যাপারে ইমাগণের বিরোধিতা, -এ সকল প্রতিবেদন জাল ও বানোয়াট হওয়ার পক্ষে দলিল স্বরূপ।
এছাড়া সিফফিনের যুদ্ধে ইমাম হাসান ও ইমাম হুসাইনকে হযরত আলী (আ.) কর্তৃক যুদ্ধের অনুমতি প্রদান না করা, উল্লিখিতযুদ্ধগুলোতে তাঁদের অংশগ্রহণ না করার পক্ষে আরেকটি দলিল।[৪৭]
ঐতিহাসিক বর্ণনার ভিত্তিতে, উসমান ইবনে আফফানের খেলাফতকালের শেষের দিকে মুসলমানদের একটি দলের বিদ্রোহের ঘটনায় বিদ্রোহীরা উসমানকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার প্রাসাদে হামলা চালায়। ইমাম হাসান ও ইমাম হুসাইন (আ.) খলিফা উসমানের কর্মপন্থায় সন্তুষ্ট না থাকলেও ইমাম আলী (আ.)-এর নির্দেশে উসমানের বাসভবনকে রক্ষায় নিয়োজিত হন।[৪৮]
এই বর্ণনাটির পক্ষে কেউ কেউ মত দিলেও অনেকে এর বিপক্ষেও মন্তব্য করেছেন। সাইয়্যেদ জাফার মুর্তাযা আমোলি, ঐতিহাসিক বিভিন্ন নিদর্শনের উপর ভিত্তি করে -হযরত আলী (আ.) কর্তৃক উসমানের কার্যক্রমের ঘোর বিরোধিতা এবং উক্ত বর্ণনার সাথে সাংঘর্ষিক বর্ণনার উপস্থিতি; যেমন- ইমাম হাসান (আ.) কর্তৃক উসমানের সাহায্য ফেরত পাঠানো সংশ্লিষ্ট বর্ণনা- উক্ত বর্ণনার অসাড়তা ও সত্য থেকে দূরে হওয়ার বিষয়টিকে অধিক গ্রহণযোগ্য করে তোলে। উসমান হত্যাকাণ্ডে আনন্দিত বা দুঃখিত না হওয়া প্রসঙ্গে হযরত আলী (আ.)-এর ভাষ্য, একইভাবে নিপীড়তদের সমর্থন এবং নিপীড়কদের বিরুদ্ধে অবস্থানের ব্যাপারে হযরত আলী (আ.)-এর সুদৃঢ় নীতি -এ দু’টি বিষয়কে দলিল হিসেবে এনে বাকের শারিফ কারাশি’র উদ্ধৃতি দিয়ে ‘হায়াতুল ইমামিল হুসাইন (আ.)’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন যে, ‘যদি ধরেও নিই যে, ঘটনাটি ঘটেছিল, তবে এ পদক্ষেপ উসমান হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণের অপবাদ থেকে ইমাম হাসান ও হুসাইন (আ.)-কে সুরক্ষিত রাখতে গৃহীত হয়েছিল।’[৪৯]
সাইয়্যেদ মুর্তাযা আমেলি, ইমাম আলী (আ.) হাসানাইন (ইমাম হাসান ও হুসাইন)-কে উসমানকে হেফাজতের উদ্দেশ্যে প্রেরণ করেছিলেন -এমন বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করে, এ পদক্ষেপ ইচ্ছাকৃতভাবে খলিফা হত্যা এবং খলিফার পরিবারের নিকট খাদ্য ও পানি পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে গৃহীত হয়েছিল এবং উসমানের ক্ষমতাচ্যুত হওয়া রোধ করতে নয়। কারণ দূর্নীতি, অন্যায় আচরণ ও কৃতকর্মের কারণে খলিফা খেলাফত থেকে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার যোগ্য ছিলেন।[৫০]
ইমাম আলীর খেলাফতকালে
ইমাম আলী (আ.)-এর খেলাফতকাল সংশ্লিষ্ট কিছু কিছু প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, আমিরুল মু’মিনীন (আ.)-এর হাতে জনগণ বাইয়াত করার পর ইমাম হুসাইন (আ.) একটি খুতবা দেন।[৫১] জামালের যুদ্ধের দিন ইমাম আলী (আ.)-এর সৈন্যবাহিনীর লেফ্ট উইংয়ের নেতৃত্বে ছিলেন ইমাম হাসান।[৫২] সিফফিনের যুদ্ধেও জনগণকে জিহাদের প্রতি উৎসাহিত করতে তিনি খুতবা প্রদান করেছিলেন। [৫৩] কিছু কিছু সূত্রের বর্ণনার ভিত্তিতে তিনি রাইট উইংয়ের নেতৃত্বে ছিলেন।[৫৪] বর্ণিত হয়েছে যে, সিফফিনের যুদ্ধে পানির ঘাট ফিরিয়ে নেয়ার অভিযানে ইমাম হুসাইন (আ.) অংশগ্রহণ করেছিলেন। এরপর আমিরুল মু’মিনীন (আ.) বলেন: ‘হুসাইনের বরকতে এটা আমাদের প্রথম বিজয়।[৫৫] সিফফিইনের যুদ্ধ সম্পর্কিত বিভিন্ন বর্ণনায় বলা হয়েছে, ইমাম আলী (আ.) যুদ্ধে অংশগ্রহণে ইমাম হাসান ও ইমাম হুসাইন (আ.)-কে বাধা দেন; আল্লাহর রাসূল (স.)-এর বংশধারাকে সুরক্ষিত রাখতে তিনি এমন পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে উল্লেখিত হয়েছে।[৫৬] কিছু কিছু সূত্রের বর্ণনার ভিত্তিতে, নাহরাওয়ানের যুদ্ধেও ইমাম হুসাইন অংশগ্রহণ করেছিলেন।
বহুসংখ্যক সূত্রের ভাষ্যানুযায়ী, ইমাম আলী (আ.)-এর শাহাদাতের সময় ইমাম হুসাইন (আ.) তার পাশে ছিলেন[৫৭] এবং তাঁর গোসল, কাফন, জানাযা ও দাফনকার্যের সময়ও তিনি উপস্থিত ছিলেন।[৫৮] কিন্তু কিতাবুল কাফী ও আনসাবুল আশরাফ গ্রন্থের বর্ণনার ভিত্তিতে ইমাম হুসাইন (আ.) পিতা ইমাম আলী (আ.)-এর আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার সময় পিতার পক্ষ থেকে প্রদত্ত বিশেষ দায়িত্ব পালনে মাদায়েনে অবস্থান করছিলেন। তিনি ইমাম হাসান (আ.)-এর চিঠি মারফত ইমাম আলী (আ.)-এর শাহাদাতের সংবাদ পেয়ে কুফায় প্রত্যাবর্তন করেন।[৫৯]
ইমাম হাসান (আ.)-এর সমসময়ে
ঐতিহাসিক বিভিন্ন বর্ণনার ভিত্তিতে ইমাম হাসান (আ.)-এর প্রতি ইমাম হুসাইন (আ.)-এর বিশেষ সম্মান প্রদর্শনের কথা উল্লিখিত হয়েছে। বর্ণিত হয়েছে যে, যদি কোন মজলিসে (সভা) ইমাম হাসান উপস্থিত থাকতেন তিনি ভাইয়ের সম্মানে কথা বলতেন না।[৬০] ইমাম আলী (আ.)-এর শাহাদাতের পর খাওয়ারেজদের একটি দল সিরীয় (মুয়াবিয়ার) বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য পীড়াপীড়ি করতে লাগল। তারা ইমাম হাসান (আ.)-এর হাতে বাইয়াত না করে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর কাছে গিয়ে বলল: আপনার হাতে বাইয়াত করতে চাই।
ইমাম হুসাইন (আ.) তাদের জবাবে বলেন: ‘আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি, যতদিন হাসান জীবিত আছেন, ততদিন তোমাদের বাইয়াত গ্রহণ করবো না।[৬১]
মুয়াবিয়ার সাথে সন্ধিচুক্তির ঘটনায় তিনি অভিযোগকারী শিয়াদের বিপরীতে অবস্থান নিয়ে নিজ ভাই হাসান (আ.)-এর পাশে থেকে তাঁর এ পদক্ষেপের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন। বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেন: ‘তিনি (ইমাম হাসান), আমার ইমাম।’ কিছু কিছু বর্ণনায় সন্ধিচুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর মুয়াবিয়ার সাথে ইমাম হুসাইনের আচরণ ছিল তার ভাই ইমাম হাসান (আ.)-এর মতো এবং ইমাম হাসান (আ.)-এর শাহাদাতের পরও তিনি ঐ চুক্তিতে অটল ছিলেন।[৬২] কিছু কিছু সূত্রের বর্ণনার ভিত্তিতে তিনি ঐ সন্ধিচুক্তিতে অসন্তুষ্ট ছিলেন এবং তিনি ইমাম হাসান (আ.)-কে কসম দিয়েছিলেন যেন মুয়াবিয়ার মিথ্যা (প্রস্তাবনা)-কে গ্রহণ না করেন।[৬৩] তবে কোন কোন গবেষক, এই ধরনের বর্ণনাকে অপর কিছু বর্ণনা ও ঐতিহাসিক প্রতিবেদনের সাথে সাংঘর্ষিক জ্ঞান করেছেন।[৬৪] যেমন- সন্ধির বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণকারীদের -যারা তাঁকে মুয়াবিয়ার উপর হামলা করার জন্য শিয়াদেরকে সমবেত করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন- জবাবে বলেন: ‘আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়েছি এবং কখনই আমরা অঙ্গীকার ভঙ্গ করব না। অপর এক বর্ণনায় এসেছে যে, তিনি প্রতিবাদীদের উদ্দেশ্যে বলেন: ‘মুয়াবিয়া বেঁচে থাকা অবধি অপেক্ষ করো; তার মৃত্যুর পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিব।’ [৬৫] এমনকি ইমাম হাসান (আ.)-এর শাহাদাতের পর শিয়ারা তাঁকে (আ.) মুয়াবিয়া বিরোধী আন্দোলনের প্রস্তাব দিলে তিনি জবাবে ইমাম হাসান মুজতাবা (আ.)-এর গৃহীত পদক্ষেপের প্রতি অটল থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন এবং মুয়াবিয়া জীবিত থাকা অবধি তিনি ঐ চুক্তির উপর অটল থাকবেন বলে জানিয়ে দেন। ইমাম হুসাইন (আ.) ৪১ হিজরিতে (মুয়াবিয়ার সাথে সন্ধির পর) কুফা থেকে মদিনায় প্রত্যাবর্তন করেন।[৬৬]
স্ত্রী ও সন্তান-সন্তুতি
ইমাম হুসাইন (আ.)-এর কতজন সন্তান ছিলেন -এ বিষয়ে মতভেদ রয়েছে; কোন কোন সূত্রে তার ৪ পুত্র ও ২ কন্যার কথা বলা হয়েছে। [৬৭]
অপর কিছু সূত্রে ৬ পুত্র ও ৩ কন্যার কথা এসেছে।[৬৮]
হিজরি ষষ্ঠ শতাব্দিতে রচিত ‘লুবাবুল আনসাব’ গ্রন্থে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর রুকাইয়া নামের একটি কন্যা এবং হিজরি সপ্তম শতাব্দি রচিত ‘কামেল-এ বাহায়ী’ গ্রন্থে ইমাম হুসাইনের ৪ বছরের এক কন্যা সন্তানের কথা উল্লিখিত হয়েছে, যিনি শামে (কারাগারে) শহীদ হন।[৬৯] সাম্প্রতিককালে প্রকাশিত সূত্রগুলোতে, ‘রুকাইয়া’ নামটি অতি প্রসিদ্ধি লাভ করেছে।[৭০] একইভাবে কিছু কিছু সূত্রে শাহারবানু থেকে জন্ম নেয়া সন্তান আলী আসগার, রুবাবের সন্তান মুহাম্মাদ ও যায়নাব (মায়ের নাম উল্লিখিত হয়নি)-এর নাম ইমাম হুসাইন (আ.)-এর সন্তানদের মাঝে উল্লেখিত হয়েছে।[৭১] ইবনে তালহা শাফেয়ী তার ‘মাতালিবুসু সুউল ফি মানাকিবি আলে-র রাসূল’ গ্রন্থে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর ১০ জন সন্তানের কথা উল্লেখ করেছেন।[৭২]
ইমামতকাল
ইমাম হুসাইন (আ.)-এর ইমামতকাল মুয়াবিয়ার হুকুমতের ১০ম বছর থেকে শুরু হয়।[সূত্র প্রয়োজন] মুয়াবিয়া ৪১ হিজরিতে[৭৩] ইমাম হাসান (আ.)-এর সাথে সন্ধির পর ক্ষমতায় বসে উমাইয়া সিলসিলার সূচনা করেন। আহলে সুন্নতের বিভিন্ন সূত্রে তাকে চতুর ও ধৈর্যশীল ব্যক্তিত্বের অধিকারী বলে উল্লেখ করা হয়েছে।[৭৪] তিনি দ্বীনের বাহ্যিক বিষয়গুলোকে মেনে চলতেন, এমনকি নিজের খেলাফতকে দৃঢ় করার জন্য কিছু কিছু ধর্মীয় মূলনীতিকে ব্যবহার করতেন। জোরপূর্বক এবং রাজনৈতিক চাতুরতার মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তগত করলেও নিজের হুকুমতকে আল্লাহর পক্ষ থেকে এবং আল্লাহ কর্তৃক ধার্যকৃত বলে মনে করতেন। মুয়াবিয়া শাম (সিরিয়া) বাসীর সামনে নিজেকে নবিগণের সমপর্যায়ে, আল্লাহর নেক বান্দাদের একজন এবং দ্বীন ও শরিয়তের রক্ষক হিসেবে পরিচয় করাতেন।[৭৫] ইতিহাসের বিভিন্ন সূত্রে এসেছে যে, মুয়াবিয়া খেলাফতকে রাজতন্ত্রে রূপান্তরিত করেছিলেন।[৭৬] তিনি প্রকাশ্যে বলতেন জনগণের দ্বীনদারীর বিষয়টি তার নিকট মূখ্য নয় এবং এ বিষয়ে তার কোন মাথা ব্যাথা নেই।[৭৭]
মুয়াবিয়ার শাসনামলে জনগণের একাংশ ছিল শিয়া আকিদায় বিশ্বাসী, বিশেষ করে ইরাকের জনগণ। খাওয়ারেজের মতো শিয়ারাও ছিল তার শত্রু ছিল। জনগণের মাঝে খাওয়ারেজের কোন স্থান না থাকলেও, ইমাম আলী (আ.) ও আহলে বাইতের প্রভাবের কারণে শিয়াদের অবস্থান ছিল বেশ শক্তিশালী। এ কারণে মুয়াবিয়া, তার প্রতিনিধি ও কর্মকর্তারা বলপ্রয়োগসহ বিভিন্ন নীতি অবলম্বন করে শিয়াদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিত। ঐ পদ্ধতিগুলোর একটি হলো, জনমনকে ইমাম আলীর (আ.)-এর বিরুদ্ধে বিষিয়ে তোলা। এমনকি মুয়াবিয়া এবং তার পরবর্তী বনু উমাইয়ার অন্যান্য শাসকের যুগেও ইমাম আলী (আ.)-এর প্রতি লানত এবং গালি-গালাজ করার প্রচলন অব্যাহত থাকে।
মুয়াবিয়া তার শাসন ব্যবস্থাকে মজবুত করার পর, শিয়াদের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন নীতি অবলম্বন করেন এবং তার অধিনস্তদের উদ্দেশ্যে লিখে, যাতে নাগরিক তালিকা থেকে আলীর বন্ধু ও অনুসারীদের নাম মুছে দেওয়া হয়, বাইতুল মাল থেকে তাদের অংশ কেটে দেওয়া হয় এবং তাদের সাক্ষ্যকে গ্রহণ না করা হয়।[৭৮] এছাড়া, হযরত আলী (আ.)-এর ফযিলত বর্ণনাকারীদেরকে তিনি হুমকি দিতেন। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গড়িয়েছিল যে, মুহাদ্দিসগণ আলী (আ.)-এর নাম ‘কুরাইশের জনৈক ব্যক্তি’, ‘আল্লাহর রাসূল (স.)-এর জনৈক সাহাবি’ বা ‘আবু যায়নাব’ বলে উল্লেখ করতেন।[৭৯]
ইমামতের সপক্ষে দলিল
ইমাম হুসাইন (আ.) ভাই হাসান (আ.)-এর শাহাদাতের পর ৫০ হিজরিতে ইমামতের মহান দায়িত্ব প্রাপ্ত হন এবং ৬১ হিজরির মহররম মাসের শুরুর দিনগুলো পর্যন্ত ইমামতের মহান দায়িত্বে পালন করেন। শিয়া মনীষীরা শিয়া ইমামগণ (আলাইহিমুস সালাম)-এর ইমামতের প্রমাণে বিভিন্ন আম (সার্বজনীন ও যৌথ) দলিল[৮০] উল্লেখ করার পাশাপাশি প্রত্যেক ইমামের ইমামত প্রমাণে আলাদা আলাদা প্রমাণ ও দলিল উল্লেখ করেছেন। শেইখ মুফিদ তার আল-ইরশাদ গ্রন্থে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর ইমামতের পক্ষে কয়েকটি হাদিসের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। যেমন- মহানবি (স.) বলেছেন: اِبنای هذانِ امامان قاما او قَعَدا ‘আমার এ দুই সন্তান (হাসান ও হুসাইন) হলো ইমাম; (চাই তারা) কিয়াম ও সংগ্রাম করুক বা সন্ধি।’[৮১] এছাড়া, ইমাম আলী (আ.) শাহাদাতের সময় ইমাম হাসান (আ.)-এর পর ইমাম হুসাইন (আ.)-এর ইমামতের কথা বলেছেন [৮২] এবং ইমাম হাসান (আ.)ও শাহাদাতের সময় মুহাম্মাদ ইবনে হানাফিয়ার উদ্দেশে করা ওসিয়তে নিজের পরবর্তী ইমাম হিসেবে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর নাম বলে যান। [৮৩] এ সকল রেওয়ায়েতের উপর ভিত্তি করে শেইখ মুফিদ ইমাম হুসাইন (আ.)-এর ইমামতকে প্রমাণিত ও সুনিশ্চিত বলে উল্লেখ করেছেন। তার ভাষায়, ইমাম হুসাইন (আ.) তাকিয়াহ বশতঃ এবং ইমাম হাসান (আ.)-এর সন্ধিচুক্তির ঘটনায় যে অঙ্গীকার তিনি করেছিলেন তাতে অটল থাকার কারণে, মুয়াবিয়ার মৃত্যু অবধি জনগণকে নিজের প্রতি আহবান জানাননি। কিন্তু মুয়াবিয়ার মৃত্যুর পর ইমাম নিজের উদ্দেশ্যকে প্রকাশ করেন এবং যারা তাঁর অবস্থান ও মর্যাদা সম্পর্কে অবগত ছিলেন না তাদের জন্য স্পষ্ট করে দেন।[৮৪]
কিছু কিছু সূত্রে বর্ণিত হয়েছে যে, ইমাম হুসাইন (আ.) ৬০ হিজরিতে মদিনা থেকে বের হওয়ার পর ওসিয়তের কিছু অংশ এবং ইমামত সংশ্লিষ্ট কিছু আমানত মহানবি (স.)-এর স্ত্রী উম্মুল মু’মিনীন উম্মু সালামা’র (রা.)[৮৫] নিকট এবং অবশিষ্ট অংশ ৬১ হিজরির মহররম মাসে শাহাদাতের পূর্বে স্বীয় কন্যা ফাতিমাকে[৮৬] দিয়ে যান এবং সেগুলোকে ইমাম সাজ্জাদের নিকট সোপর্দ করতে বলেন।
মুয়াবিয়ার শাসনামলে, ইমাম হুসাইন (আ.) তাঁর ভাই মুয়াবিয়ার সাথে যে শান্তি চুক্তি করেছিলেন তার প্রতি অনুগত ছিলেন।[৮৭] নেতৃত্বভার গ্রহণ করার আমন্ত্রণ জানিয়ে এবং উমাইয়াদের বিরুদ্ধে আন্দোলন নামার বিষয়ে নিজেদের প্রস্তুতির কথা ঘোষণা করে শিয়াদের পাঠানো কিছু চিঠির জবাবে তিনি (আ.) লিখেছিলেন: "বর্তমান পরিস্থিতিতে আমার মত তোমাদের অনুরূপ নয়। যতদিন মুয়াবিয়া জীবিত আছে, কোনো পদক্ষেপ নিও না এবং নিজ গৃহে আত্মগোপন করে থাকো, আর তোমাদেরকে সন্দেহের পাত্র বানায় এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকো। যদি সে (মুয়াবিয়া) মারা যায় এবং আমি জীবিত থাকি, আমি আমার মতামত তোমাদেরকে জানাব।"[৮৮]
মুয়াবিয়ার পদক্ষেপের বিরুদ্ধে অবস্থান
মুয়াবিয়ার শাসনামলে ইমাম হুসাইন (আ.) তাঁর বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করলেও ঐতিহাসিক রাসূল জাফারিয়ানের মতে, ইমাম হুসাইন (আ.) ও মুয়াবিয়ার মধ্যকার সম্পর্ক এবং তাদের মাঝে যে কথোপকথন হয়েছিল তা থেকে প্রমাণ হয় যে, রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে হযরত ইমাম হুসাইন (আ.) মুয়াবিয়ার বৈধতাকে মেনে নেননি এবং তার পদক্ষেপগুলোর বিপরীতে নতি স্বীকারও করেননি।[৮৯] রাসূল জাফারিয়ানের দৃষ্টিতে, উক্ত দাবির পক্ষে সবচেয়ে জ্বলন্ত প্রমাণ হল, ইমাম (আ.) শিয়াদের বিরুদ্ধে মুয়াবিয়ার অপরাধযজ্ঞের প্রতি ইঙ্গিত করে যে চিঠি মুয়াবিয়ার উদ্দেশ্যে প্রেরণ করেছিলেন, তা।[৯০] এতদসত্বেও ঐতিহাসিক বিভিন্ন বর্ণনা থেকে জানা যায় যে, পূর্ববর্তী ৩ খলিফার মতো মুয়াবিয়াও হুসাইন ইবনে আলী (আ.)-কে বাহ্যিকভাবে সম্মান করতেন এবং তাকে মর্যাদাবান মনে করতেন এবং তার গভর্নর ও অধিনস্তদেরকে নির্দেশ দিয়েছিলেন যেন তারা আল্লাহর রাসূল (স.)-এর সন্তানের বিরক্তির কারণ না হয় এবং তাকে অসম্মান না করে।
ইয়াজিদের হাতে বাইয়াতের আহ্বানে মুয়াবিয়ার প্রতি ইমাম হোসাইনের জবাব:
“ইয়াযিদ তার আকিদা ও চিন্তার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে; তুমিও তার জন্য তা-ই চাও যা সে চায়; কুকুরের লড়াই, কবুতর ওড়ানো, নর্তকি ও বাদ্যযন্ত্র বাজানো দাসীদের সাথে মেলামেশা এবং এর মত অন্যান্য বিনোদন... [হে মুয়াবিয়া] এ কাজ থেকে হাত গুটিয়ে নাও! জনগণের সাথে সম্পৃক্ত যে গুনাহের বোঝা তোমার কাঁধে রয়েছে তারচেয়ে ভারী গুনাহের বোঝা নিয়ে আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করাতে তোমার কি লাভ হবে?! [ইবনে কুতাইবাহ, আল-ইমামাহ ওয়াস সিয়াসাহ, ১৪১০ হি., খণ্ড ১, পৃ. ২০৯।”
মৃত্যুর পূর্বে মুয়াবিয়া তার পুত্র ইয়াযিদকে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর অবস্থান ও মর্যাদার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেন এবং তাঁকে জনগণের সবচেয়ে প্রিয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে উল্লেখ করেন।[৯১] আর ইয়াযিদকে বলে যান হুসাইন ইবনে আলীর বিরুদ্ধে বিজয়ী হলে তাকে যেন তার অবস্থায় ছেড়ে দেয়, কেননা তিনি মহান এক অধিকারের অধিকারী।[৯২]
এর বিপরীতে মশহুর যে প্রতিবেদনটি রয়েছে তা হলো, মৃত্যুর পূর্বে ইয়াযিদের উদ্দেশ্যে করা ওসিয়তে মুয়াবিয়া ইয়াযিদের হাতে বাইয়াত করতে অস্বীকৃতি জানানোর ক্ষেত্রে কয়েকজনকে অবিলম্বে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন, যাদের মাঝে ইমাম হুসাইন (আ.)ও ছিলেন।
ইমাম আলীর সাথীদেরকে হত্যার প্রতিবাদ
ইমাম হুসাইন (আ.) হুজর ইবনে আদি, আমর ইবনে হামিক খুযায়ী, আব্দুল্লাহ ইবনে ইয়াহিয়া হাদ্বরামিসহ অন্যান্য ব্যক্তিত্বের হত্যাকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানান।[৯৩] বিভিন্ন সূত্রের ভাষ্যানুযায়ী তিনি (আ.) মুয়াবিয়ার উদ্দেশে লেখা এক চিঠিতে ইমাম আলী (আ.)-এর সাথীদের হত্যার নিন্দা জানান এবং মুয়াবিয়ার কয়েকটি ঘৃণিত কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে তাকে তিরস্কার করে বলেন: ‘আমি আমার নিজের এবং নিজের দ্বীনের জন্য তোমার বিরুদ্ধে জিহাদ করার চেয়ে বড় আর কিছু দেখছি না।’ ঐ চিঠিতে আরও বলা হয়েছে ‘এ উম্মতের মাঝে তোমার হুকুমতের চেয়ে বড় আর কোন ফিতনাকে আমি চিনি না।’[৯৪]
একইভাবে বর্ণিত হয়েছে যে, হজের সফরে মুয়াবিয়া ইমাম হুসাইন (আ.)-এর মুখোমুখি হলে মুয়াবিয়া বলেন:[৯৫] তুমি কি শুনেছো আমরা হুজর ইবনে আদি তার সাথী এবং তোমার বাবার শিয়া (অনুসারী)-দের সাথে কি করেছি?’ ইমাম হুসাইন ইবনে আলী (আ.) বললেন: কি করেছো? মুয়াবিয়া বললেন: ‘আমরা তাদেরকে হত্যা করেছি, কাফন পরিয়েছি, তাদের জানাযা পড়েছি এবং তাদেরকে দাফন করেছি’। ইমাম হুসাইন ইবনে আলী বললেন: ‘আর আমরা যদি তোমার সাথীদেরকে হত্যা করি, তাহলে তাদেরকে না কাফন পরাব, না তাদের উপর নামায পড়ব, আর না তাদেরকে দাফন করব।’[৯৬]
ইয়াযিদকে স্থলাভিষিক্ত করার বিরোধিতা
মুয়াবিয়া ৫৬ হিজরির সন্ধিচুক্তির বিপরীতে (মুয়াবিয়া নিজের পর কাউকে স্থলাভিষিক্ত মনোনীত করতে পারবে না) জনগণকে তার স্থলাভিষিক্ত হিসেবে ইয়াযিদের হাতে বাইয়াত করার আহবান জানায়।[৯৭] এ সময় ইমাম হুসাইন (আ.)সহ বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ইয়াযিদের বাইয়াত করা থেকে বিরত থাকেন। ইয়াযিদের স্থলাভিষিক্ততাকে পাকা-পোক্ত করতে মদিনার মুরুব্বিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে মুয়াবিয়া মদিনা সফরে যান।[৯৮] ইবনে আব্বাস-সহ মুয়াবিয়ার সভাসদদের অনেকে এবং বনি উমাইয়ার গন্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে ইমাম হুসাইন (আ.) এক সভায় মুয়াবিয়াকে তিরস্কার করেন। এ সময় তিনি ইয়াযিদের আচার-আচরণ ও অভ্যাসের প্রতি ইঙ্গিত করে তাকে স্থলাভিষিক্ত হিসেবে মনোনয়নের বিষয়ে মুয়াবিয়াকে সতর্ক করে দেন এবং নিজের সত্য অবস্থানের কথা ব্যক্ত করে, ইয়াযিদের পক্ষে বাইয়াত গ্রহণের লক্ষ্যে মুয়াবিয়ার উপস্থাপিত দলিলাগুলোকে খণ্ডন করেন।[৯৯]
এছাড়া, জনসাধারণের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত এক সভায় ইয়াযিদের যোগ্যতা প্রসঙ্গে মুয়াবিয়ার বক্তব্যের জবাবে ইমাম হুসাইন (আ.) নিজেকে ব্যক্তি এবং বংশগত দিক থেকে খেলাফতের জন্য যোগ্য ব্যক্তি হিসেবে উপস্থাপন করে ইয়াযিদকে মদ্যপ ও প্রবৃত্তির কুচাহিদা পূরণে মত্ত ব্যক্তি হিসিবে আখ্যায়িত করেন।[১০০]
মীনায় ইমাম হুসাইনের খুতবা
- মুল নিবন্ধ: মীনায় ইমাম হুসাইনে’র (আ.) খুতবা
মুয়াবিয়ার মৃত্যুর ২ বছর আগে ৫৮ হিজরিতে ইমাম হুসাইন (আ.) মীনায় প্রতিবাদী এক খুদবা প্রদান করেন।[১০১] এ সময় শিয়াদের বিরুদ্ধে মুয়াবিয়ার কঠোরতা ও চাপ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছিল। ইমাম হুসাইন ইবনে আলী ঐ খুতবায় ইমাম আলী (আ.) ও আহলে বাইত (আলাইহিমুস সালাম)-এর বিভিন্ন ফজিলত উল্লেখপূর্বক, সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজ থেকে দূরে থাকার প্রতি গুরুত্বারোপ করে বিজ্ঞ ব্যক্তিদের কর্তব্য এবং অত্যাচারীদের বিরুদ্ধে তাদের উত্থানের আবশ্যকতা ও নীপিড়কদের বিরুদ্ধে নিরব থাকার ক্ষতি প্রসঙ্গে সতর্ক বাণী উচ্চারণ করেন।
ইয়াযিদের খেলাফতের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া
৬০ হিজরির ১৫ই রজব মুয়াবিয়ার মৃত্যুর পর ইয়াযিদ সিংহাসনে বসার[১০২] পর হুসাইন ইবনে আলী (আ.)-এর মত কয়েকজন ব্যক্তিত্ব যারা ইয়াযিদের স্থলাভিষিক্ততাকে মেনে নেয়নি তাদের থেকে জোরপূর্বক বাইয়াত গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়।[১০৩] কিন্তু ইমাম হুসাইন (আ.) বাইয়াত করতে অস্বীকৃতি জানান।[১০৪] এর ধারাবাহিকতায় তিনি পরিবার-পরিজন ও সাথীদের সাথে ২৮শে রজব মক্কার উদ্দেশ্যে মদিনা ত্যাগ করেন।[১০৫]
মক্কার জনগণ ও ওমরাহ পালন করতে আসা হাজীরা তাকে স্বাগত জানায় [১০৬] এবং তিনি ৪ মাসের অধিক সময় (৩ শাবান থেকে ৮ জিলহজ্জ) মক্কায় অবস্থান করেন।[১০৭] এ সময় কুফার জনগণ ইয়াযিদের হাতে তাদের তৃতীয় ইমামের বাইয়াত না করার বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়ে তাঁকে বেশ কয়েকটি চিঠির মাধ্যমে কুফায় আসার আমন্ত্রণ জানায়।[১০৮] হুসাইন ইবনে আলী (আ.) কুফার জনগণের আন্তরিকতা যাচাই করতে ও তাদের আমন্ত্রণের সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে এবং কুফার পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগতি লাভের উদ্দেশ্যে মুসলিম ইবনে আকিলকে কুফায় প্রেরণ করেন। মুসলিম ইবনে আকিল কুফার জনগণ কর্তৃক তাকে স্বাগত জানানো এবং তার হাতে বাইয়াত করার বিষয়টি সম্পর্কে হযরত ইমাম হুসাইন (আ.)-কে অবগত করে তাঁকে কুফায় আসার আহবান জানান।[১৭৭] আর ইমামও ঐ আহবানে সাড়া দিয়ে পরিবার-পরিজন ও সাথীদের নিয়ে ৮ই জিলহজ্জ কুফার উদ্দেশে মক্কা ত্যাগ করেন।[১০৯]
কিছু কিছু প্রতিবেদন থেকে জানা যায় যে, ইমাম হুসাইন (আ.) মক্কায় তাকে হত্যার ষড়যন্ত্রের বিষয়টি আঁচ করতে পেরেছিলেন, আর তাই বাইতুল্লাহ’র পবিত্রতা রক্ষার্থে তিনি মক্কা ত্যাগ করে ইরাকের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন।[১১০]
ইমাম হুসাইন (আ.) তার বিপ্লবের উদ্দেশ্য এভাবে বলেছেন:
হে আল্লাহ্! সুনিশ্চিতভাবে তুমি জানো যে, যা কিছু (জনগণকে সংঘবদ্ধ করার প্রচেষ্টায়) করেছি তা শাসনভার গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতার জন্য বা ধন-সম্পদ আয়ত্ত করার আশায় করিনি; বরং আমাদের উদ্দেশ্য হলো তোমার দ্বীনের নিদর্শনসমূহের প্রকাশ ঘটানো এবং শহরগুলোতে সংস্কার ও ন্যায়নিষ্ঠার বাস্তবায়ন, যাতে তোমার নিপীড়িত বান্দারা নিরাপদ ও স্বস্তিতে থাকতে পারে এবং তোমার ধার্যকৃত দায়িত্ব-কর্তব্য, সুন্নাতগুলো এবং ধর্মীয় বিধি-বিধানের উপর আমল করা হয়।[হাররানি, তুহাফুল উকুল, পৃ. ২৩৯।]
কারবালার ঘটনা
- মূল নিবন্ধ: কারবালার ঘটনা
কারবালার ঘটনাটি ইমাম ইমাম হুসাইন (আ.)-এর জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে পরিগণিত; ঐ ঘটনায় তিনি (আ.) ও তাঁর সাথীরা নির্মমভাবে শহীদ হন। কিছু কিছু প্রতিবেদনের ভিত্তিতে, ইমাম হুসাইন (আ.) ইরাক অভিমুখে রওয়ানা হওয়ার পূর্বে থেকে নিজের শাহাদাত সম্পর্কে জানতেন। কারবালার ঘটনাটি, তিনি (আ.) ইয়াযিদের হাতে বাইয়াত করতে অস্বীকার করার কারণে ঘটেছিল। ইমাম হুসাইন (আ.) কুফাবাসীর আমন্ত্রণে পরিবার ও সাথীদের সাথে কুফার উদ্দেশে রওয়ানা হন। তিনি ‘যু হাসাম’ নামক স্থানে হুর ইবনে ইয়াযিদ রিয়াহি’র নেতৃত্বাধীন বাহিনীর মুখোমুখি হয়ে নিজের পথ পরিবর্তনে বাধ্য হন।[১১১]
(ইমাম হুসাইন (আ.) বলেন:
‘যদি উম্মত ইয়াযিদের মতো শাসকের শাসনাধীন হয়ে যায়, তাহলে ইসলামকে বিদায় জানাতে হবে।’ [ইবনে আ’সাম কুফি, আল-ফুতুহ, খণ্ড ৫, পৃ. ১৭])
বেশীরভাগ সূত্রের বর্ণনার ভিত্তিতে ইমাম (আ.) ও তাঁর সাথীরা ২ মহররম কারবালায় পৌঁছান।[১১২] পরেরদিন ওমর ইবনে সা’দের নেতৃত্বে ৪ হাজার সৈন্যের একটি বাহিনী কারাবালায় পৌঁছায়।[১১৩] ঐতিহাসিক বিভিন্ন প্রতিবেদন থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে, ইমাম হুসাইন ইবনে আলী (আ.) ও ওমর ইবনে সা’দের মাঝে কয়েক দফায় আলোচনা হয়।[১১৪] কিন্তু ইবনে যিয়াদ, ইয়াযিদের হাতে বাইয়াত অথবা যুদ্ধ -এর বিকল্প কোন পথে সন্তুষ্ট হয়নি।[১১৫]
৯ মহররম (তাসুয়া) বিকেলে উমর সা’দের বাহিনী যুদ্ধের প্রস্তুতি নিল; কিন্তু ইমাম হুসাইন (আ.) ঐ রাতকে মহান আল্লাহর ইবাদত ও তাঁর মুনাজাতের জন্য সময় নিলেন।[১১৬] শবে আশুরা (৯ মহররম দিবাগত রাতে) তিনি (আ.) নিজ সাথীদের সাথে কথা বলার সময় তাদের উপর থেকে নিজের বাইয়াত তুলে নিলেন এবং তাদেরকে চলে যাওয়ার অনুমতি দিলেন। কিন্তু তারা তাঁর প্রতি বিশ্বস্ত ও ওয়াফাদার থাকাকে এবং তাঁর পক্ষে অবস্থান গ্রহণকে প্রাধান্য দিয়ে ইমামের সাথেই রয়ে গেলেন।[১১৭]
আশুরার দিন সকালে যুদ্ধ শুরু হলো এবং যোহর নাগাদ ইমাম হুসাইন (আ.)-এর সাথীদের অনেকে শহীদ হয়ে গেলেন।[১১৮] যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে, সা’দ বাহিনীর সেনাপতিদের একজন হুর ইবনে ইয়াযিদ রিয়াহি ইমাম হুসাইন (আ.)-এর বাহিনীতে যোগ দেন।[১১৯] ইমামের সাথীদের শাহাদাতের পর তাঁর পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়রা রণাঙ্গনে গেলেন, তাদের সর্বাগ্রে ছিলেন ইমাম হুসাইনের জ্যেষ্ঠ পুত্র আলী আকবার[১২০] এবং তাদের সকলেও একের পর এক শহীদ হয়ে গেলেন। সবশেষে স্বয়ং হুসাইন ইবনে আলী (আ.) রণক্ষেত্রে এলেন। ১০ মহররম বিকেলে তীব্র পিপাসার্ত ও শরীরে শত আঘাত থাকা অবস্থায় চরম অমানবিকভাবে তাঁর শিরোশ্ছেদ করা হলো এবং তিনি শহীদ হলেন। শিমর ইবনে যিলজওশান[১২১] মতান্তরে সিনান ইবনে আনাস[১২২] ইমামের মস্তককে শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করেছিল বলে উল্লিখিত হয়েছে। ঐ দিনই ইমাম হুসাইন ইবনে আলী (আ.)-এর মস্তক মোবারক ইবনে যিয়াদের উদ্দেশে প্রেরণ করা হয়।[১২৩]
ইবনে যিয়াদের নির্দেশ মতো ওমর সা’দ কয়েক’জন ঘোড় সওয়ারকে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর মস্তকবিহীন দেহ পদদলিত করে তাঁর শরীরের হাড়-হাড্ডি গুঁড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিল।[১২৪] ইমাম সাজ্জাদ (আ.) সহ -যিনি ছিলেন কারবালায় নবি পরিবারের বেঁচে যাওয়া একমাত্র পুরুষ- নারী ও শিশুদেরকে বন্দি করা হলো, অতঃপর তাদেরকে কুফা, তারপর শাম -এ প্রেরণ করা হল।[১২৫] ইমাম হুসাইন (আ.) ও তাঁর প্রায় ৭২ জন[১২৬] সাথীর লাশ বনি আসাদ গোত্রের একটি দল ১১ [১২৭] অথবা ১৩ই মহররম তাঁদের শাহাদাতের স্থানেই তাঁদেরকে দাফন করে; একটি বর্ণনার ভিত্তিতে ইমাম সাজ্জাদ (আ.)-এর উপস্থিতিতেই শহীদদের দাফনকার্য সম্পন্ন হয়।
ইমাম হুসাইনের অভূত্থ্যানের দর্শন
- মূল নিবন্ধ: ইমাম হুসাইনের কিয়াম
ইমাম হুসাইন (আ.) কেন ইয়াযিদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন এ প্রসঙ্গে বিভিন্ন মত রয়েছে। আশুরা বিষয়ক কিছু কিছু গবেষকদের মতে, তিনি ইহকাকে হাক (প্রাপ্য অধিকার আদায়), সৎকাজের নির্দেশ ও অসৎকাজে বাঁধা প্রদান এবং সুন্নতকে পুনরুজ্জীবিত ও বিদআতকে নির্মূল করার লক্ষ্যে এ সংগ্রামে নেমেছিলেন। আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ীর মতে, ইমাম হুসাইন (আ.)-এর লক্ষ্য ছিল ইসলামি সমাজকে তার সঠিক ধারায় ফিরিয়ে আনা, বৃহৎ বিচ্যুতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম; তার মতে এ পদক্ষেপের ফলাফল ছিল সরকার গঠন অথবা শাহাদাত; অথচ কেউ কেউ এ দু’টিকে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর উদ্দেশ্য বলে জ্ঞান করে থাকেন।[১২৮] ইমাম হুসাইন (আ.) নিজ ভাই মুহাম্মাদ বিন্ হানাফিয়ার উদ্দেশ্যে করা ওসিয়তে স্পষ্ট ভাষায় তার অভূত্থ্যানের মূল প্রেরণার কথা ব্যক্ত করেছেন। আর তা হলো, আমর বিল মা’রুফ ও নাহি আনিল মুনকার (সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজে বাধা প্রদান) এবং আল্লাহর রাসূল (স.) ও ইমাম আলী (আ.)-এর সীরাতকে পূনরুজ্জীবিত করা।[১২৯]
অথচ আশুরা বিষয়ক গবেষক মুহাম্মাদ ইসফান্দিয়ারি’র মতে, এ ব্যাপারে সবচেয়ে প্রসিদ্ধ মত হলো ইমাম হুসাইন (আ.)-এর কিয়াম ও অভ্যূত্থানের উদ্দেশ্য ছিল শাহাদত। এ তত্ত্বের সমর্থকদের সংখ্যা বহু, যাদের মাঝে লুতফুল্লাহ সাফী, মুর্তাযা মুতাহহারী, সাইয়্যেদ মুহসিন আমীন ও আলী শরিয়াতী’র নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। অপর একটি মত হলো, ইমাম হুসাইন (আ.) সরকার গঠনের জন্য কিয়াম করেছিলেন। সেহহাতি সার্দ রুদি’র মতে শেই মুফিদ, শেইখ তুসি, সাইয়্যেদ ইবনে তাউস ও আল্লামা মাজলিসী উপরিউক্ত মতের বিরোধী। শেইখ আলী পানাহ ইশতেহারদি’র মতো কারো কারো মতে, শিয়াদের উদ্দেশ্যে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর রওয়ানা হওয়ার কারণ যুদ্ধ ও সংগ্রাম ছিল না, বরং তা ছিল শুধু আত্মরক্ষার জন্য।[১৩০]
কিয়ামের ফলাফল
ইমাম হুসাইন (আ.)-এর এ বিপ্লব বহু জনগোষ্ঠির জাগরণের কারণ হয়েছিল। তাঁর শাহাদতের পরপরই বিভিন্ন বৈপ্লবিক মুভমেন্টের সূচনা ঘটে এবং বিষয়টি বহুবছর পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। প্রথমে ‘আব্দুল্লাহ ইবনে আফিফ [১৩১] ওবায়দুল্লাহ ইবনে যিয়াদের বিরোধিতা করেন। অতঃপর তাওয়াবিনের আন্দোনল,[১৩২] মুখতারের অভ্যূত্থান, যাইদ ইবনে আলী’র কিয়াম [১৩৩] এবং ইয়াহিয়া ইবনে যাইদের কিয়াম[১৩৪] ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়া, আবু মুসলিম খোরাসানির নেতৃত্বে উমাইয়া শাসন বিরোধী ‘সিয়াহ জামেগানে’র আন্দোলনের স্লোগানও ছিল ‘ইয়া লাসারাতিল হুসাইন’।[১৩৫] আর, এ অভ্যূত্থানের মাধ্যমেই উমাইয়াদের পতন হয়। ইরানের ইসলামি বিপ্লবও ইমাম হুসাইন (আ.)-এর সংগ্রামের শিক্ষা থেকে উৎকলিত। ইমাম খোমেনি’র ভাষায়, ‘যদি শোক মজলিশগুলো, বক্তৃতা ও উপদেশসভাগুলো, আযাদারি এবং শোক অনুষ্ঠান না থাকত তাহলে আমাদের দেশ বিজয়ী হতো না। সকলে ইমাম হুসাইন (সালামুল্লাহি আলাইহি)-এর পতাকা তলে রুখে দাঁড়িয়েছিল’।[১৩৬] গণসাংস্কৃতিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলেও শুধু মুসলমানরা কেন অন্যান্য ধর্মের অনুসারীরাও হুসাইন ইবনে আলীকে আত্মত্যাগ, অত্যাচার বিরোধী অবস্থান, স্বাধীনতা অর্জন, মূল্যবোধ রক্ষা এবং সত্যের প্রতীক ও আদর্শ হিসেবে মনে করে থাকে।
ফযিলত ও বৈশিষ্ট
- মুল নিবন্ধ: আহলে বাইত (আ.), আসহাবে কিসা, মুবাহিল ও আয়াতে তাতহির।
বাহ্যিক বৈশিষ্ট
হাদিস, ইতিহাস ও রিজাল শাস্ত্রের বেশীরভাগ সূত্রে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর মহানবি (স.)-এর সাদৃশ্য হওয়ার কথাটি বর্ণিত হয়েছে।[১৩৭] একটি রেওয়ায়েতে তাকে মহানবি (স.)-এর সবচেয়ে সাদৃশ্য বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।[১৩৮] তার সম্পর্কে বলা হয়েছে যে তিনি কখনও খায (পশম)-এর তৈরি পোশাক অথবা খায-এর তৈরি পাগড়ি পরিধান করতেন এবং তিনি চুল ও দাড়িতে খিযাব করতেন।[১৩৯]
মহানবি (স.)-এর ভাষায়
মহানবি (স.) থেকে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর ফযিলত সম্পর্কে বহুসংখ্যক রেওয়ায়েত বর্ণিত হয়েছে, যেমন-
“হাসান ও হুসাইন বেহেশতি যুবকদের সর্দার।”[১৪০]
“আরশের ডান পার্শে লেখা আছে, ‘হুসাইন হলো হেদায়েতের বাতি এবং নাজাতের তরণী’।”[১৪১]
“হুসাইন আমা হতে আমি হুসাইন হতে।”[১৪২]
“যারা এ দু’জনকে (হাসান ও হুসাইন) ভালোবাসবে তারা আমাকে ভালোবাসবে এবং যারা তাদের সাথে শত্রুতা করবে তারা আমার সাথে শত্রুতা করবে।”[১৪৩]
শাহাদাত সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী
ইমাম হুসাইন ইবনে আলী (আ.)-এর শাহাদাত সম্পর্কে বহুসংখ্যক রেওয়ায়েত বর্ণিত হয়েছে। যেমন- ‘হাদিস-এ লৌহে’ এসেছে, মহান আল্লাহ্ হুসাইনকে শাহাদাতের মাধ্যমে সম্মানিত করেছেন এবং তাঁকে সর্বশ্রেষ্ঠ শহীদের মাকাম প্রদান করেছেন। [১৪৪] আল্লামা মাজলিসীর বিহারুল আনওয়ার গ্রন্থের ৪৪তম খণ্ডের ৩০তম অধ্যায়ে উল্লিখিত একটি রেওয়ায়েতের ভিত্তিতে মহান আল্লাহ্ ইমাম হুসাইনের শাহাদতের সংবাদ আদম (আ.), নূহ (আ.), ইব্রাহিম (আ.), যাকারিয়া (আ.) এবং মুহাম্মাদ (স.)-কে প্রদান করেছিলেন এবং তারাও এ সংবাদে কেঁদেছেন।[১৪৫] একইভাবে সিফফিনের যুদ্ধে আমিরুল মু’মিনীন আলী (আ.) যখন কারবালা প্রান্তরে পৌঁছান তখন আঙ্গুলের ইশারায় একটি স্থানকে নির্দিষ্ট করে বলেন: ‘এই হলো তাদের রক্ত ঝরার স্থান’।
কারামাত ও অলৌকিক ঘটনাবলি
কিছু কিছু রেওয়ায়েতে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর বিশেষ কিছু বৈশিষ্টের কথা উল্লিখিত হয়েছে; সেগুলোর মধ্যে অলৌকিকভাবে ইমাম হুসাইনের আল্লাহর রাসূল (স.)-এর আঙ্গুল থেকে দুধ পানের ঘটনা,[১৪৬] ইমাম হুসাইন (আ.)-এর বরকতে ডানা ভাঙ্গা ফিরিশতা ফিতরুস/ফুতরুসে’র পরিত্রাণ লাভ এবং তারপর থেকে তাঁর যিয়ারতকারীদের প্রতি সালাম পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব প্রাপ্তি[১৪৭] ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়া, মহান আল্লাহ্ ইমাম হুসাইনের তুরবাতে (ইমাম হুসাইনের কবরের মাটি) শিফা ও রোগমুক্তি এবং তার কবরের পাশে (মূল গম্বুজের নীচে) দোয়া কবুল হওয়ার স্থান বানিয়েছে।[১৪৮] ‘আল-খাসায়িসুল হুসাইনিয়্যাহ’ গ্রন্থে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর ৩ শত বৈশিষ্ট উল্লেখিত হয়েছে।
নৈতিক বৈশিষ্ট্য
তিনি মিসকিনদের সাথে বসতেন, তাদের নিমন্ত্রণকে গ্রহণ করতে, তাদের সাথে খেতেন এবং তাদেরকে বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়ে যা কিছু বাড়িতে থাকত তা প্রদানে দ্বিধা করতেন না।[১৪৯] একদা জনৈক দুস্থ ব্যক্তি তার কাছে সাহায্যের আবেদন জানায়, ইমাম (আ.) ঐ সময় নামাযে ছিলেন, তিনি নামায দ্রুত শেষ করে যা কিছু তার কাছে ছিল তা তাকে দান করলেন।[১৫০]
উত্তম আচরণ ও ব্যবহারের কারণে নিজ দাস ও দাসীদেরকে মুক্ত করে দিতেন। বলা হয়েছে যে, মূল্যবান উপহার ও পোশাকের সাথে মুয়াবিয়া যে কানিযকে তার জন্য পাঠিয়েছিলেন, কয়েকটি আয়াত তিলাওয়াত এবং পৃথিবীর নশ্বর হওয়া ও মানুষের মৃত্যু সম্পর্কে কবিতা পড়ার কারণে তিনি (আ.) ঐ দাসীকে মুক্ত করে দেন এবং সমস্ত উপহারও তাকে দিয়ে দেন।[১৫১]
এছাড়া, একদা জনৈক কানিয তাকে একটি ফুলের তোড়া উপহার দেওয়ায় তিনি ঐ কানিযকে মুক্ত করে দেন। যখন তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, একটি ফুলের তোড়ার কারণে তাকে মুক্ত করে দিলেন? ইমাম হুসাইন (আ.) و اذا حیّیتم بتحیّة فحیّوا بأحسن منها أو ردّوها (যখনই তোমাদেরকে কেউ অভিবাদন জানায় তাদেরকে তারচেয়েও উত্তমরূপে জবাব দাও অথবা (অন্তত) সমরূপে)[১৫২] -এ আয়াতটিকে দলিল হিসেবে এনে বলেন: মহান আল্লাহ্ এমনভাবে আমাদেরকে আদব শিখিয়েছেন।[১৫৩]
অতি দানশীলতার কারণে ইমাম হুসাইন (আ.) বিশেষভাবে পরিচিত ছিলেন। কিন্তু দান করার সময় তিনি ভাই হাসান ইবনে আলী (আ.)-এর সম্মানের দিকেও দৃষ্টি রাখতেন এবং ভাইয়ের চেয়ে অল্প পরিমাণে দান করতেন।[১৫৪] বিভিন্ন সূত্রের বর্ণনার ভিত্তিতে তিনি ২৫ বার পায়ে হেটে হজে গিয়েছেন।[১৫৫]
শোকানুষ্ঠান ও যিয়ারত
- মুল নিবন্ধ: মহররমের শোকানুষ্ঠান।
শিয়া সম্প্রদায়সহ অপর বিভিন্ন মাযহাবের অনুসারীরা মহররম মাসে ইমাম হুসাইন (আ.) ও কারবালার শহীদদের স্মরণে শোক প্রকাশ করে থাকেন। বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে এ শোকানুষ্ঠান আয়োজিত হয়; বক্তৃতা, মার্সিয়া পরিবেশন, মাতম, মুসিবত বর্ণনা ইত্যাদি ঐ সকল কর্মসূচীর অন্যতম। এছাড়া ব্যক্তিগতভাবে ও দলবদ্ধ হয়ে যিয়ারাতে আশুরা, যিয়ারতে ওয়ারিসা ও যিয়ারতে নাহিয়া মুকাদ্দাসাহ পাঠ করা ইত্যাদি।
ইমাম হুসাইন (আ.)-এর জন্য শোকানুষ্ঠান প্রচলনের ইতিহাস আশুরার ঘটনার পরপরই।[১৫৬] একটি বর্ণনার ভিত্তিতে, কারাবালা থেকে নবি পরিবারের বন্দি কাফেলা শামে পৌঁছানোর পর বনি হাশিমের নারীরা কালো লেবাস পরে আযাদারি করেছিলেন।[১৫৭] তবে শিয়া সরকার ক্ষমতায় আসার পর এবং শিয়াদের উপর থেকে চাপ ওঠে যাওয়ার পর থেকে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর জন্য আযাদারি আনুষ্ঠানিকরূপ লাভ করে।[১৫৮] ইতিহাস ও হাদিসের বিভিন্ন সূত্রের ভিত্তিতে, শিয়া ইমামগণ (আলাইহিমুস সালাম) হুসাইন ইবনে আলী (আ.)-এর প্রতি শোকপ্রকাশ ও শোকানুষ্ঠানের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতেন এবং তাঁরা এ বিষয়টি ও আশুরার স্মরণকে উজ্জীবিত রাখার জন্য শিয়াদেরকে তাগিদ প্রদান করতেন।[১৫৯]
ইমাম হুসাইনের যিয়ারত
- মুল নিবন্ধ: ইমাম হুসাইনের যিয়ারত
নিষ্পাপ ইমামগণ (আ.) থেকে বর্ণিত বিভিন্ন রেওয়ায়েতে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর যিয়ারতের প্রতি গুরুত্বারোপের বিষয়টি ফুটে উঠেছে এবং একে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সবচেয়ে ফযিলতপূর্ণ আমল হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। অপর কিছু রেওয়ায়েতের ভিত্তিতে এর সওয়াব হজ ও উমরাহ’র সমান বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।[১৬০]
যিয়ারতের গ্রন্থ সমূহে বিভিন্ন সময়ে পাঠযোগ্য কয়েকটি এবং নির্দিষ্ট উপলক্ষে পাঠযোগ্য কয়েকটি যিয়ারত সংকলিত হয়েছে। যিয়ারতে আশুরা, যিয়ারতে ওয়ারিসা, যিয়ারতে নাহিয়ায়ে মুকাদ্দাসাহ হলো প্রসিদ্ধ যিয়ারতগুলোর অন্যতম।
আরবাঈনে হুসাইনি
- মুল নিবন্ধ: আরবাঈন যিয়ারত
ইমাম হুসাইন (আ.)-এর শাহাদতের ৪০ দিন পর -যাকে আরবাঈনে হুসাইনি বা আরবাঈন দিবস (তথা ইমাম হুসাইনের চল্লিশা)- নামকরণ করা হয়েছে, শিয়াদের বড় একটি অংশ ইরাকের পবিত্র কারবালা নগরিতে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর মাযার যিয়ারতে যায়। ঐতিহাসিক এক বর্ণনার বর্ণনার ভিত্তিতে, কারবালার ঘটনার পর সাহাবি জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ আনসারি এ দিন (২০ শে সফর) প্রথম যায়ের (যিয়ারতকারী)[১৬১] হিসেবে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর মাযারে উপস্থিত হয়েছিলেন। লুহুফ গ্রন্থের বর্ণনার ভিত্তিতে ৬১ হিজরিতে কারবালায় বন্দি নবি (স.)-এর পরিবার শাম থেকে মদিনা ফেরার পথে আরবাঈনের দিন কারবালার শহীদদের যিয়ারতে গিয়েছিলেন।[১৬২]
যিয়ারতে আরবাঈন পড়ার প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপের কারণে, শিয়ারা বিশেষতঃ ইরাকে বসবাসরত শিয়ারা ইরাকের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রতিবছর কারবালার উদ্দেশে রওয়ানা হয়; বেশীরভাগ ক্ষেত্রে তারা পায়ে হেটে কারবালা পৌঁছায়। পাশাপাশি বিগত এক দশকেরও বেশী সময় ধরে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আহলে বাইত (আ.)-এর অনুরাগী শিয়া ও সু্ন্নিরা আরবাইনের মহাসমাবেশে যোগ দিতে প্রতিবছর কারবালায় সমবেত হয়। আরবাঈনের এই পদযাত্রা বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল পদযাত্রা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। বিভিন্ন সংবাদ সূত্রের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ২০১৯ সালে ১ কোটি ৮০ লক্ষ যায়ের এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছিল।
ইমাম হুসাইনের হারাম ও হায়ের
ইমাম হুসাইন (আ.)-এর মাযারের গম্বুজের উপর স্থাপিত লাল রঙয়ের পতাকা, তাঁর হত্যার প্রতিশোধ নেয়ার প্রতীক হিসেবে গণ্য।
ইমাম হুসাইন (আ.)-এর মাযার পরিবেষ্টনকারী দেয়ালকে হায়ের-এ হুসাইনি বলা হয়। হায়েরের সীমানা বিশেষ ফযিলত ও নির্দিষ্ট ফিকহি বিধানের অধিকারী এবং মুসাফির এ স্থানে নিজের নামায কছর না পড়ে পূর্ণভাবে পড়তে পারে। [১৬৩] হায়ের-এর আয়তন সম্পর্কে কয়েকটি মত রয়েছে, সর্বনিম্ন যে সীমানাটি নির্ধারণ করা হয়েছে তা হলো, ইমাম হুসাইন (আ.)-এর মাযার থেকে ১১ মিটারের সীমানা সর্বাধিক ফযিলতের অধিকারী।
ইমাম হুসাইনের রওযা
- মুল নিবন্ধ: ইমাম হুসাইনের রওযা
বিদ্যমান তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে, ইমাম হুসাইন (আ.)-এর সমাধির উপর প্রথম স্থাপনাটি মুখতার সাকাফি’র সময় তার নির্দেশে নির্মাণ করা হয়। ঐ সময় থেকে অদ্যকাল পর্যন্ত হারাম ও মাযারের স্থাপনা বহুবার পরিবর্তন ও সম্প্রসারিত হয়েছে। ইমাম হুসাইন (আ.)-এর মাযার কয়েকবার আব্বাসি খলিফা ও ওয়াহাবিদের দ্বারা ধ্বংস সাধিত হয়েছে; যেমন- আব্বাসি খলিফা মুতাওয়াক্কিল হায়ের-এর যমীন হাল চাষ করে কবরকে পানি দ্বারা ডুবিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল।[১৬৪]
ইমাম হুসাইনের আধ্যাত্মিক মীরাস
হাদিস ও ইতিহাস ভিত্তিক বিভিন্ন গ্রন্থে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর বাণী, দোয়া, পত্র, কবিতা, খুতবা ও ওসিয়ত উল্লিখিত হয়েছে। উপরিউক্ত বিষয়াদির সমষ্টি আযিযুল্লাহ আতারোদি রচিত ‘মুসনাদুল ইমামিশ শাহিদ’ এবং ‘মাওসুআতু কালিমাতিল ইমামিল হুসাইন’ গ্রন্থদ্বয়ে সংকলিত হয়েছে।
বাণী সমূহ: মুয়াবিয়ার শাসনামলে রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে ইমাম হুসাইন (আ.) থেকে বর্ণিত রেওয়ায়েতের সংখ্যা খুব বেশী নয়। তাঁর থেকে বর্ণিত রেওয়ায়েতগুলোর বেশিরভাগই ইমামের মদিনা থেকে কারবালা সফরের সময়ে বর্ণিত হয়েছে।[১৬৫] আল্লামা তেরহানি’র মতে, বনি উমাইয়া সরকারের পক্ষ থেকে প্রচণ্ড চাপের কারণে জনগণ ইমাম হাসান ও হুসাইন (আলাইহিমাস সালাম)-এর খুব বেশী শরণাপন্ন হতো না। অথবা তাঁদের থেকে বর্ণিত রেওয়ায়েতগুলো রাভিদের ভীতির কারণে নষ্ট হয়ে গেছে এবং পরবর্তী স্তরের রাভীদের হাতে পৌঁছায়নি। এতদসত্ত্বেও শিয়াদের তৃতীয় ইমাম থেকে আকিদা, আহকাম ও আখলাক সংশ্লিষ্ট বিষয়াদিতে বিভিন্ন উক্তি ও বক্তব্য ইসলামি সূত্রগুলোতে উল্লিখিত হয়েছে।
দোয়া: ‘মুসনাদুল ইমামিশ শাহীদ’ গ্রন্থে ইমাম হুসাইন (আ.) থেকে প্রায় ২০টি দোয়া ও মুনাজাত বর্ণিত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রসিদ্ধ দোয়াটি হলো ‘দোয়ায়ে আরাফাহ’ যা আরাফাহ (৯ জিলহজ্জ) দিবসে আরাফাতের ময়দান পাঠ করা হয়।[১৬৬]
কবিতা: বিভিন্ন কবিতা ইমাম হুসাইন (আ.)-এর সাথে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। মুহাম্মাদ সাদেক কারবাসি ইমাম হুসাইনের সাথে সম্পৃক্ত কবিতাগুলো ২ খণ্ডে প্রকাশিত ‘দিওয়ানুল ইমামিল হুসাইন’ গ্রন্থে সংকলিত করেছেন এবং সেগুলোর ব্যাকরণ ও সনদগত দিক পর্যালোচনা করেছেন।
খুতবা ও ওসিয়ত: কিছু কিছু সূত্রে ইমাম হুসাইনের মীনায় প্রদত্ত খুতবা,[১৬৭] আশুরার দিনে প্রদত্ত খুতবা,[১৬৮] একইভাবে তাঁর ভাই মুহাম্মাদ বিন হানাফিয়ার উদ্দেশে তাঁর লিখিত ওসিয়তের -যাতে তিনি তাঁর মদিনা থেকে বের হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন- কথা উল্লিখিত হয়েছে।[১৬৯]
পত্র: ‘মাকাতিবুল আইম্মাহ’ গ্রন্থে হুসাইন ইবনে আলী (আ.) থেকে ২৭টি পত্র সংকলিত হয়েছে।[১৭০] এগুলোর কিছু অংশ মুয়াবিয়ার উদ্দেশে লেখা এবং বাকিগুলো অন্যদের উদ্দেশে।
তাঁর থেকে বর্ণিত কিছু অমীয়বাণী
- ‘যদি তোমরা কোন দ্বীনের (ধর্ম) অনুসারী না হয়ে থাকো এবং কিয়ামত থেকে ভয় না পাও, অন্তত এ পৃথিবীতে মুক্ত ও স্বাধীনভাবে বাঁচো।’[১৭১]
- ‘মানুষ দুনিয়ার দাস এবং দ্বীন তাঁর জিহ্বায় ঝুলন্ত কোন বস্তু; যতক্ষণ দুনিয়া তাদের চাহিদা সিদ্ধ হয় তারা দ্বীনের বিধি-বিধান মান্য করে; কিন্তু যখন কোন পরীক্ষার মধ্যে পড়ে তখন দ্বীনদারে সংখ্যা অত্যন্ত কমে যায়।[১৭২]
- ‘তোমাদের প্রতি জনগণের প্রয়োজনগুলো হলো মূলতঃ আল্লাহর নি’মাতগুলোর একটি, অতএব, আল্লাহর নি’মাত থেকে তিক্ত-বিরক্ত ও ক্লান্ত হয়ো না, অন্যথায় (নি’মাত) শাস্তিতে রূপান্তরিত হবে।’[১৭৩]
- ‘সম্মানের মৃত্যু, লাঞ্ছনার জীবন অপেক্ষা শ্রেয়’।[১৭৪]
- ‘আমি বিশৃঙ্খলা, ফ্যাসাদ সৃষ্টি ও অন্যের উপর নিপীড়নের উদ্দেশ্যে ঘর ছাড়িনি, বরং আমি আমার নানার উম্মতের মাঝে সংশোধন করতে ঘর ছেড়েছি; আমি চাই সৎকাজের নির্দেশ দিতে এবং অসৎকাজ থেকে বাধা প্রদান করতে।’[১৭৫]
- ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর না-ফরমানি ও অবাধ্যতার মাধ্যমে কোন কিছু হাসিল করতে চায়, সে যা কিছু আশা করে তা দ্রুত হাতছাড়া করবে এবং যার ভয়ে সে ভীত অতি দ্রুত তাতে নিপতিত হবে।’[১৭৬]
গ্রন্থ পরিচিতি
ইমাম হুসাইন ইবনে আলী (আ.)-এর ব্যক্তিত্ব ও জীবনী সম্পর্কে বিশ্বকোষ রচনার পাশাপাশি বহুসংখ্যক জীবনী, মাকতাল (ইমাম হুসাইন ও তাঁর সাথীদের শাহাদাতের বর্ণনা এবং শাহাদাতোত্তর বিভিন্ন ঘটনা সম্বলিত গ্রন্থ) ও বিশ্লেষণমূল ইতিহাস রচিত হয়েছে। ‘কিতাব শেনাসিয়ে ইমাম হুসাইন (আ.)’ (ইমাম হুসাইন (আ.) সম্পর্কে রচিত গ্রন্থ ও নিবন্ধ ইত্যাদির তালিকা) সম্পর্কে ৪০টি গ্রন্থ ও নিবন্ধ রচিত হয়েছে।[১৭৭] ‘কিতাব শেনাসিয়ে এখতেছাছিয়ে ইমাম হুসাইন’ গ্রন্থে ১৪২৮টি গ্রন্থের নাম প্রকাশকের নামসহ উল্লিখিত হয়েছে। আয-যারিয়া গ্রন্থে আগা বোযোর্গ তেহরানি ইমাম হুসাইন (আ.) সম্পর্কে রচিত ৯৮৫ গ্রন্থের নাম উল্লেখ করেছেন।[১৭৮]
ইমাম হুসাইন (আ.) সম্পর্কে রচিত গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থাবলির সংক্ষিপ্ত তালিকা:
‘মাকতালে জামেয়ে সাইয়্যেদুশ শোহাদা’ (مقتل جامع سید الشهدا) গ্রন্থে পূর্ণ মাকতাল উল্লেখ ছাড়াও, আশুরার দিনের ঘটনা, ইমাম হুসাইন (আ.)-এর বিপ্লব ও অভূত্থ্যানের দর্শন, আযাদারির ইতিহাস, ইমাম হুসাইন (আ.)-এর সাথীদের জীবনী ইত্যাদি বিষয়ে পর্যালোচিত হয়েছে।
বিশ্বকোষ
ইমাম হুসাইন বিশ্বকোষে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবন পর্যালোচনায় ৫ শতাধিক ইতিহাস, হাদিস, ফিকাহ, তাফসির ও কালাম শাস্ত্র বিষয়ক গ্রন্থের শরণাপন্ন হতে হয়েছে।
মুহাম্মাদ মুহাম্মাদি রেই শাহরি রচিত ১৪ খণ্ড প্রকাশিত ‘ইমাম হুসাইন বিশ্বকোষ’।
মুহাম্মাদ সাদেক কারবাসি রচিত ‘দাএরাতুল মাআরিফিল হুসাইনিয়াহ’; ১৩৮৮ ফার্সি সন (২০০৯ সাল) নাগাদ ঐ বিশ্বকোষের ৯০ খণ্ড প্রকাশিত হয়েছে।
জাওয়াদ মুহাদ্দেসি রচিত ‘ফারহাঙ্গে আশুরা’
জীবনী
বাকির শারিফ কারাশি কর্তৃক ৩ খণ্ডে রচিত ‘হায়াতুল ইমামিল হুসাইন’
ইবনে আদিম (মৃত্যু ৬৬০ হি.) কর্তৃক ১ খণ্ডে রচিত ‘তারজুমাতুল ইমামিল হুসাইন (আ.)’; গ্রন্থটি ১০ খণ্ডে প্রকাশিত ‘বাগিয়াতুত তালাব ফি তারিখিল হালাব’ গ্রন্থের সংক্ষিপ্তরূপ।
ইবনে সা’দ রচিত ‘আত-তাবাকাতুল কুবরা’ গ্রন্থের ‘ইমাম হুসাইন (আ.) অধ্যায়’, যা ‘তারজুমাতুল ইমামিল হুসাইন ওয়া মাকতালাহু’ শিরোনামে স্বতন্ত্রভাবে প্রকাশিত হয়েছে।
‘তারিখু মাদিনাতি দামিশক’ গ্রন্থের ইমাম হুসাইন (আ.) অধ্যায়; যা ‘তারজুমাতুল ইমামিল হুসাইন মিন তারিখি মাদিনাতি দামিশক’ শিরোনামে স্বতন্ত্রভাবে প্রকাশিত হয়েছে।
সাইয়্যেদ হাশেম রাসুলি মাহাল্লাতি রচিত ‘যেন্দেগানি ইমাম হুসাইন’
মাকতাল:
ইতিহাসে প্রসিদ্ধ যে কোন ব্যক্তিত্বের হত্যা বা শাহাদাত সম্পর্কে তথ্য সম্বলিত যে কোন লেখনিকে ‘মাকতাল’ বলা হয়।[১৭৯] শিয়াদের তৃতীয় ইমাম হুসাইন ইবনে আলী (আ.) সম্পর্কে আবরি ভাষায় সর্বপ্রথম রচিত মাকতালটি হলো আবু মিখনাফ রচিত ‘মাকতালুল হুসাইন’। গ্রন্থটি দ্বিতীয় হিজরিতে রচিত হয়েছে। ইমাম হুসাইন (আ.) সম্পর্কে রচিত অপর কিছু প্রসিদ্ধ মাকতালের নাম নিম্নরূপ:
- মুওয়াফফাক আহমাদ খাওয়ারাযমি রচিত ‘মাকতালুল হুসাইন’ যা মাকতালে খাওয়ারযমি নামে পরিচিত।
- মাহদি পিশওয়ায়ী’র তত্ত্বাবধানে গবেষকদের একটি দলের উদ্যোগে রচিত ‘মাকতালে জামেয়ে সাইয়্যেদুশ শুহাদা’।
- সাইয়্যেদ ইবনে তাউস রচিত আল-লুহুফ আলা কাতলিত তুফুফ।
বিশ্লেষণধর্মী ইতিহাস:
সাইয়্যেদ জাফার শাহিদী রচিত ‘পাস আয পাঞ্জাহ সাল’
সালেহি নাজাফ আবাদি রচিত ‘শাহিদে জাভিদ’
মুর্তাযা মুতাহহারি রচিত ‘হেমাসেয়ে হুসাইনি’ (ইমাম হুসাইনের (আ.) কালজয়ী বিপ্লব)
মুহাম্মাদ ইব্রাহিম আয়াতি রচিত বাররাসি তারিখে আশুরা।
প্রবন্ধ:
ইমাম হুসাইন ইবনে আলী (আ.)-এর ব্যক্তিত্ব ও জীবনী সম্পর্কে বহুসংখ্যক প্রবন্ধ রচিত হয়েছে। সেগুলোর কিছু অংশ ‘মাজমুয়েয়ে মাকালাতে কংগ্রেয়ে মিল্লিয়ে হেমাসেয়ে হুসাইনি’ এবং ‘দিরাসাতুন ও বুহুসুন মু’তামিরিল ইমামিল হুসাইন’ নামক দু’টি গ্রন্থে প্রকাশিত হয়েছে।#
তথ্যসূত্র
- ↑ শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৪ হি., খ:২, পৃ:২৭ ।
- ↑ শেইখ কুলাইনী, আল-কাফী, ১৩৬২ (সৌরবর্ষ), খ;১, পৃ:২৮৭ ও মুসলিম বিন হাজ্জাজ, সহিহ মুসলিম, ১৪২৩ হি., খ:১৫, পৃ; ১৯০।
- ↑ শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৪ হি., খ:১, পৃ: ১৬৮।
- ↑ যামাখশারী, আল-ইমরান:৬১, ১৪১৫ হি. ও ফখরুদ্দিন রাযি, আল-ইমরান:৬১, ১৪০৫ হি.।
- ↑ শাওকানী, ফাতহুল কাদির, আলামুল কুতুব, খ:৪, পৃ:২৭৯ ও ইবনে কাছির, তাফসিরুল কুরআনিল আযিম, ১৪১৯ হি., খ: ৩, পৃ: ৭৯৯।
- ↑ ইয়াকুবী, তারিখুল ইয়াকুবী, খ:২, পৃ: ২২৬ ও ইবনে সা’দ, তাবাকাতুল কুবরা, ১৪১৮ হি. খ: ১০ পৃ: ৩৬৩।
- ↑ ইবনে সা’দ, তাবাকাতুল কুবরা, ১৪১৮ হি. খ: ১০ পৃ: ৪১৪-৪১৬।
- ↑ ইবনে সা’দ, তাবাকাতুল কুবরা, ১৪১৮ হি. খ: ১০ পৃ: ৩৯৫।
- ↑ মুহাদ্দেসী, ফারহাঙ্গে আশুরা, ১৩৯৩ (সৌরবর্ষ), পৃ: ৫০৭।
- ↑ মুসলিম, সহিহ মুসলিম, ১৪২৩ হি., খ:১৫, পৃ; ১৯০, ইবনে সা’দ, তাবাকাতুল কুবরা, ১৪১৮ হি. খ: ১০ পৃ:৩৭৬-৪১০, বালাজুরী, আনসাবুল আশরাফ, ১৪১৭ হি. খ; ৩, পৃ: ৭, ইবনে কাছির, তাফসিরুল কুরআনিল আযিম, ১৪১৯ হি., খ: ৩, পৃ: ৭৯৯।
- ↑ আবু বকর ইবনে আরাবি, আল-আওয়াসেম মিনাল ক্বাওয়াসেম, মাকতাবাতুল সালাফিয়্যাহ, পৃ: ২৩২।
- ↑ ইবনে তাইমিয়্যাহ, মিনহাজুস সুন্নাতিন নাবাবিয়্যাহ, ১৪০৬ হি., খ: ৪, পৃ: ৫৩০-৫৩১।
- ↑ ইবনে খালদুন, তারিখে ইবনে খালদুন, ১৪০১ হি., খ: ১, পৃ: ২১৭।
- ↑ ইবনে খালদুন, তারিখে ইবনে খালদুন, ১৪০১ হি., খ: ১, পৃ: ২১৬।
- ↑ আলুসী, রুহুল মায়ানী, ১৪১৫ হি., খ: ১৩, পৃ: ২২৮।
- ↑ তহা হোসাইন, আলী ওয়া নুবুউয়্যাহ, দারুল মায়াফে, পৃ: ২৩৯।
- ↑ শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৪ হি., খ:২, পৃ:২৭।
- ↑ ইবনে সা’দ, তাবাকাতুল কুবরা, ১৪১৮ হি. খ: ১০ পৃ: ২৪৪।
- ↑ যুবাইদী ওয়াসেতী, তাজুল উরুস, ১৪১৪ হি., খ: ৭, পৃ: ৪।
- ↑ ইবনে আসাকির, তারিখু মাদিনাতি দামেশক, ১৪১৫ হি., খ: ১৩, পৃ: ১৭১।
- ↑ ইবনে সা’দ, তাবাকাতুল কুবরা, ১৪১৮ হি. খ: ১০ পৃ: ২৩৯-২৪৪ ও মাজলেসী, বিহারুল আনওয়ার, ১৩৬৩ (সৌরবর্ষ), খ: ৩৯, পৃ: ৬৩।
- ↑ শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৪ হি., খ:২, পৃ:২৭।
- ↑ শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৪ হি., খ:১, পৃ:৩৫৪।
- ↑ শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৪ হি., খ:২, পৃ:২৭।
- ↑ মুহাদ্দেসী, ফারহাঙ্গে আশুরা, ১৩৯৩ (সৌরবর্ষ), পৃ: ৩৯।
- ↑ ইবনে শাহরআশুব, মানাকিবে আলে আবি তালিব, ১৩৮৫ (সৌরবর্ষ), খ: ৪, পৃ: ৮৬।
- ↑ ইবনে তালহা শাফেয়ী, মাতালিবুসু সুউল ফি মানাকিবি আলে-র রাসূল, ১৪১৯ হি. পৃ: ২৪৮।
- ↑ শেইখ তুসী, আল-আমালি, ১৪১৪ হি., পৃ: ৪৯-৫০ ও ইবনে কুলাভিয়্যাহ, কামিল আয্-যিয়ারত, ১৪১৭ হি., পৃ: ২১৬-২১৯।
- ↑ ইবনে কুলাভিয়্যাহ, কামিল আয্-যিয়ারত, ১৩৫৬ হি., পৃ: ১৭৬।
- ↑ শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৩৪ হি., খ:২, পৃ: ১২৭ ও বালাজুরী, আনসাবুল আশরাফ, ১৪১৭ হি. খ; ৩, পৃ: ১৪২।
- ↑ শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৪ হি., খ:২, পৃ:২৭ ও ইয়াকুবী, তারিখুল ইয়াকুবী, খ:২, পৃ: ২৪৬।
- ↑ শেইখ কুলাইনী, আল-কাফি, ১৩৬৫ (সৌরবর্ষ), খ: ১, পৃ: ৪৬৩ ও শেইখ তুসী, তাহযিবুল আহকাম, ১৪০১ হি., খ: ৬, পৃ: ৪১।
- ↑ শেইখ তুসী, মিসবাহুল মুতাহাজ্জাদ, ১৪১১ হি., পৃ: ৮২৬-৮২৮ ও সাইয়্যেদ বিন তাউস, ইকবালুল আমাল, ১৩৬৭ (সৌরবর্ষ), ৬৮৯-৬৯০।
- ↑ শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৪ হি., খ:২, পৃ:২৭।
- ↑ শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৩৪ হি., খ:২, পৃ: ১২৭ ও ইবনে কাছির, আল-বিদায়া ও নিহায়া, দারুল ফিকর, খ: ৬, পৃ: ২৩০।
- ↑ শেইখ কুলাইনী, আল-কাফী, ১৩৬২ (সৌরবর্ষ), খ: ১, পৃ: ৪৬৫।
- ↑ শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৩ হি., খ:২, পৃ:১২৯ ও ইবনে কাছির, আল-বিদায়া ও নিহায়া, দারুল ফিকর, খ: ৬, পৃ:২৩০।
- ↑ তিরমিযী, সুনানে তিরমিযী, ১৪০৩ হি., খ: ৫, পৃ: ৩২৩।
- ↑ তিরমিযী, সুনানে তিরমিযী, ১৪০৩ হি., খ: ৫, পৃ: ৩২২ ও হাকিমে নিশাপুরী, আল-মুস্তাদরাক; ১৪০৬ হি., খ: ১, পৃ: ২৮৭।
- ↑ ইবনে কুলাভিয়্যাহ, কামিল আয্-যিয়ারত, ১৩৫৬ হি., পৃ: ৫০।
- ↑ শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৩ হি., খ:১, পৃ:১৬৮ ও শেইখ সাদুক, উয়ুনে আখবারুর রেযা, ১৩৬৩ (সৌরবর্ষ), খ:১, পৃ:৮৫।
- ↑ ইবনে সা’দ, তাবাকাতুল কুবরা, ১৪১৮ হি. খ: ১০ পৃ: ৩৬৯।
- ↑ ইবনে সা’দ, তাবাকাতুল কুবরা, ১৪১৮ হি. খ: ১০ পৃ: ৩৯৪ ও খাতিবে বাগদাদী, তারিখে বাগদাদ, ১৪১২ হি., খ:১, পৃ:১৫২।
- ↑ ইবনে আসাকির, তারিখু মাদিনাতি দামেশক, ১৪১৫ হি., খ: ১৪, পৃ: ১৭৫।
- ↑ শেইখ কুলাইনী, আল-কাফী, ১৩৬২ (সৌরবর্ষ), খ:৮, পৃ:২০৬-২০৭।
- ↑ বালাজুরী, ফুতুহুল বুলদান, ১৯৮৮ (ঈসায়ী), পৃ:৩২৬ ও ইবনে কুতাইবা, আল-মায়ারেফ, ১৯৯২ (ঈসায়ী), পৃ:৫৬৮।
- ↑ জাফারিয়ান, হায়াতে ফেকরি ওয়া সিয়াসিয়ে ইমামানে শিয়া, ১৩৮১ (সৌরবর্ষ), পৃ:১৫৮।
- ↑ বালাজুরী, আনসাবুল আশরাফ, ১৪১৭ হি., খ:৫, পৃ:৫৫৮ ও ইবনে কুতাইবা, আল-ইমামা ওয়াস সিয়াসা, ১৪১০ হি., খ:১, পৃ:৫৯।
- ↑ সাইয়্যেদ জাফার মুর্তাজা আমেলী, আস-সাহিহু মিন সিরাতি আল-ইমাম আলী, ১৩৮৮ (সৌরবর্ষ), পৃ:৩১৩।
- ↑ সাইয়্যেদ মুর্তাজা, আশ-শাফি ফিল ইমামাতি, ১৪১০ হি., খ:৪, পৃ:২৪২।
- ↑ মাজলেসী, বিহারুল আনওয়ার, ১৩৬৩ (সৌরবর্ষ), খ: ১০, পৃ: ১২১।
- ↑ যাহাবী, তারিখুল ইসলাম, ১৪০৯ হি., খ:৩, পৃ:৪৮৫।
- ↑ মিনকারী, ওয়াকেয়ে সিফফিন, ১৩৮২ হি., পৃ:১১৪-১১৫।
- ↑ ইবনে শাহরআশুব, মানাকিবে আলে আবি তালিব, ১৩৮৫ (সৌরবর্ষ), খ:৩, পৃ:১৬৮।
- ↑ মাজলেসী, বিহারুল আনওয়ার, ১৩৬৩ (সৌরবর্ষ), খ: ৪৪, পৃ: ২৬৬।
- ↑ ইরবিলী, কাশফুল গুম্মাহ, ১৪২১ হি., খ:১, পৃ:৫৬৯।
- ↑ তাবারী, তারিখে তাবারি, ১৩৮৫ (সৌরবর্ষ), খ:৫, পৃ: ১৪৭।
- ↑ শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৪ হি., খ:১, পৃ:২৫।
- ↑ বালাজুরী, আনসাবুল আশরাফ, ১৪১৭ হি. খ;২, পৃ:৪৯৭-৯৮ ও শেইখ কুলাইনী, ১৩৬২, খ:৩, পৃ:২২০।
- ↑ শেইখ কুলাইনী, আল-কাফি, ১৩৬২ (সৌরবর্ষ), খ: ১, পৃ:২৯১ ও ইবনে শাহরআশুব, মানাকিবে আলে আবি তালিব, ১৩৭৯ হি., খ:৩, পৃ:৪০১।
- ↑ ইবনে কুতাইবা, আল-ইমামা ওয়াস সিয়াসা, ১৪১০ হি., খ:১, পৃ:১৮৪।
- ↑ শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৪ হি., খ:২, পৃ:৩২।
- ↑ ইবনে আসাকির, তারিখু মাদিনাতি দামেশক, ১৪১৫ হি., খ: ১৩, পৃ: ২৬৭।
- ↑ জাফারিয়ান, হায়াতে ফেকরি ওয়া সিয়াসিয়ে ইমামানে শিয়া, ১৩৮১ (সৌরবর্ষ), পৃ:১৫৭-১৫৮।
- ↑ বালাজুরী, আনসাবুল আশরাফ, ১৪১৭ হি., খ:৩, পৃ:১৫০।
- ↑ ইবনে জুওযী, আল-মুনতাযামু ফি তারিখিত্ তাবারি, ১৯৯২ (ঈসায়ী), খ:৫, পৃ:১৮৪।
- ↑ শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৩ হি., খ:২, পৃ:১৩৫ ও বুখারী, সির্রু আল-সিলসিলাতুল আলাভিয়্যাহ, ১৩৮১ হি., খ:১, পৃ:৩০।
- ↑ ইবনে শাহরআশুব, মানাকিবে আলে আবি তালিব, ১৩৭৯ হি., খ:৪, পৃ:৭৭।
- ↑ কাশেফী সাবজেওয়ারী, রওযাতুশ শুহাদা, ১৩৮২ (সৌরবর্ষ), পৃ:৪৮৪।
- ↑ আমিন, আয়ানুশ শিয়া, ১৪০৩ হি. খ:৭, পৃ:১৯৬।
- ↑ ইবনে শাহরআশুব, মানাকিবে আলে আবি তালিব; তাহকিক-রাসুলি মাহাল্লাতী, খ:৪, পৃ:১০৯।
- ↑ ইবনে তালহা শাফেয়ী, মাতালিবুসু সুউল ফি মানাকিবি আলে-র রাসূল, ১৪১৯ হি. পৃ:২৫৭।
- ↑ ইবনে আসাকির, তারিখু মাদিনাতি দামেশক, ১৪১৫ হি., খ: ১৩, পৃ: ২৬২।
- ↑ ইবনে কাছির, আল-বিদায়া ও নিহায়া, দারুল ফিকর, খ:৫, পৃ: ৩৩৮ ও সুয়ুতী, তারিখুল খুলাফা, ১৪২৫ হি., খ:১, পৃ:১৪৯।
- ↑ মিনকারী, ওয়াকেয়ে সিফফিন, ১৪০৩ হি. পৃ:৩১-৩২।
- ↑ ইবনে কাছির, আল-বিদায়া ও নিহায়া, দারুল ফিকর, খ:৬, পৃ:২২০ ও ইবনে হাজার আসকালানী, আল-ইসাবাতু ফি তাময়িযিস সাহাবা, ১৪১৫ হি., খ:১, পৃ:৬৪।
- ↑ ইবনে কাছির, আল-বিদায়া ও নিহায়া, দারুল ফিকর, খ:৮, পৃ:১৩১ ও শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৩ হি., খ:২, পৃ:১৪।
- ↑ তাবারসি, আল-ইহতিজাজ, ১৪০৩ হি., খ:২,পৃ:২৯৫।
- ↑ ইবনে শাহরআশুব, মানাকিবে আলে আবি তালিব, ১৩৭৯, খ:২, পৃ:৩৫১।
- ↑ শেইখ সাদুক, আল-ইতিকাদাতুল ইমামিয়্যাহ, ১৪১৪ হি., পৃ:১০৪।
- ↑ শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৪ হি., খ:২, পৃ:৩০।
- ↑ শেইখ কুলাইনী, আল-কাফী, ১৩৬২ (সৌরবর্ষ), খ;১, পৃ:২৯৭।
- ↑ শেইখ কুলাইনী, আল-কাফী, ১৩৬২ (সৌরবর্ষ), খ;১, পৃ:৩০১।
- ↑ শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৪ হি., খ:২, পৃ:৩১।
- ↑ শেইখ কুলাইনী, আল-কাফী, ১৩৬২ (সৌরবর্ষ), খ;১, পৃ:৩০৪।
- ↑ শেইখ কুলাইনী, আল-কাফী, ১৩৬২ (সৌরবর্ষ), খ;১, পৃ:২৯১।
- ↑ শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৩ হি., খ:২, পৃ:৩২ ও ইবনে শাহরআশুব, মানাকিবে আলে আবি তালিব, ১৩৭৯ হি, খ:৪, পৃ:৮৭।
- ↑ বালাজুরী, আনসাবুল আশরাফ, ১৪১৭ হি. খ; ৩, পৃ: ১৫২।
- ↑ জাফারিয়ান, হায়াতে ফেকরি ওয়া সিয়াসিয়ে ইমামানে শিয়া, ১৩৮১ (সৌরবর্ষ), পৃ:১৭৫।
- ↑ জাফারিয়ান, হায়াতে ফেকরি ওয়া সিয়াসিয়ে ইমামানে শিয়া, ১৩৮১ (সৌরবর্ষ), পৃ:১৭৫।
- ↑ ইবনে সা’দ, তাবাকাতুল কুবরা, ১৪১৮ হি. খ: ১০ পৃ: ৪৪১ ও তাবারী, তারিখুল উমাম ওয়াল মুলুক, ১৩৮৭ হি., খ:৫, পৃ:৩২২।
- ↑ তাবারী, তারিখুল উমাম ওয়াল মুলুক, ১৩৮৭ হি., খ:৫, পৃ:৩২২।
- ↑ বালাজুরী, আনসাবুল আশরাফ, ১৪১৭ হি. খ;৫, পৃ:১২০-১২১ ও ইবনে কুতাইবা, আল-ইমামা ওয়াস সিয়াসা, ১৪১০ হি., খ:১, পৃ:২০২-২০৪।
- ↑ বালাজুরী, আনসাবুল আশরাফ, ১৪১৭ হি. খ;৫, পৃ:১২১-১২২ ও ইবনে সা’দ, তাবাকাতুল কুবরা, ১৪১৮ হি. খ: ১০ পৃ: ৪৪০।
- ↑ তাবারসী, আল-ইহতিজাজ, ১৪০৩ হি., খ:২, পৃ:২৯৬।
- ↑ ইয়াকুবী, তারিখুল ইয়াকুবী, দারু সাদের, খ:২, পৃ: ২৩১ ও ইরবিলী, কাশফুল গুম্মাহ, ১৪২১ হি., খ:১, পৃ:৫৭৪।
- ↑ ইবনে কাছির, আল-বিদায়া ও নিহায়া, দারুল ফিকর, খ:৮, পৃ:৭৯।
- ↑ ইবনে কুতাইবা, আল-ইমামা ওয়াস সিয়াসা, ১৪১০ হি., খ:১, পৃ:২০৪।
- ↑ ইবনে কুতাইবা, আল-ইমামা ওয়াস সিয়াসা, ১৪১০ হি., খ:১, পৃ:২০৮-২০৯।
- ↑ ইবনে কুতাইবা, আল-ইমামা ওয়াস সিয়াসা, ১৪১০ হি., খ:১, পৃ:২১১।
- ↑ ইবনে শুঅবে হুররানী, তুহাফুল উকুল, ১৪০৪ হি., পৃ:৬৮।
- ↑ শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৩ হি., খ:২, পৃ:৩২ ও বালাজুরী, আনসাবুল আশরাফ, ১৪১৭ হি. খ;৩, পৃ:১৫৫।
- ↑ তাবারী, তারিখুল উমাম ওয়াল মুলুক, ১৩৮৭ হি., খ:৫, পৃ:৩৩৮।
- ↑ আবু মিখনাফ, মাকতালুল হোসাইন, মাতবায়াতুল ইলমিয়্যাহ, পৃ:৫ ও শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৩ হি., খ:২, পৃ:৩৩।
- ↑ শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৩ হি., খ:২, পৃ:৩৪।
- ↑ বালাজুরী, আনসাবুল আশরাফ, ১৪১৭ হি. খ;৩, পৃ:১৫৬ ও শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৩ হি., খ:২, পৃ:৩৬।
- ↑ শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৩ হি., খ:২, পৃ:৬৬।
- ↑ বালাজুরী, আনসাবুল আশরাফ, ১৪১৭ হি. খ;৩, পৃ:১৫৭-১৫৯ ও শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৩ হি., খ:২, পৃ:৩৬-৩৮।
- ↑ বালাজুরী, আনসাবুল আশরাফ, ১৪১৭ হি. খ;৩, পৃ:১৬০ ও শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৩ হি., খ:২, পৃ:৬৬।
- ↑ ইবনে কাছির, আল-বিদায়া ও নিহায়া, দারুল ফিকর, খ:৮, পৃ:১৫৯ ও ১৬১।
- ↑ তাবারী, তারিখুল উমাম ওয়াল মুলুক, ১৩৮৭ হি., খ:৫, পৃ:৪০৮।
- ↑ তাবারী, তারিখুল উমাম ওয়াল মুলুক, ১৩৮৭ হি., খ:৫, পৃ:৪০৮ ও শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৩ হি., খ:২, পৃ:৮৪।
- ↑ তাবারী, তারিখুল উমাম ওয়াল মুলুক, ১৩৮৭ হি., খ:৫, পৃ:৪০৯।
- ↑ তাবারী, তারিখুল উমাম ওয়াল মুলুক, ১৩৮৭ হি., খ:৫, পৃ:৪১৪।
- ↑ তাবারী, তারিখুল উমাম ওয়াল মুলুক, ১৩৮৭ হি., খ:৫, পৃ:৪১৪ ও শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৩ হি., খ:২, পৃ:৮৮।
- ↑ তাবারী, তারিখুল উমাম ওয়াল মুলুক, ১৩৮৭ হি., খ:৫, পৃ:৪১৭ ও শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৩ হি., খ:২, পৃ:৯১।
- ↑ শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৩ হি., খ:২, পৃ:৯১-৯৪।
- ↑ তাবারী, তারিখুল উমাম ওয়াল মুলুক, ১৩৮৭ হি., খ:৫, পৃ:৪২৯-৪৩০।
- ↑ তাবারী, তারিখুল উমাম ওয়াল মুলুক, ১৩৮৭ হি., খ:৫, পৃ:৪২৭।
- ↑ তাবারী, তারিখুল উমাম ওয়াল মুলুক, ১৩৮৭ হি., খ:৫, পৃ:৪৪৬।
- ↑ শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৩ হি., খ:২, পৃ:১১২।
- ↑ তাবারী, তারিখুল উমাম ওয়াল মুলুক, ১৩৮৭ হি., খ:৫, পৃ:৪৫৯-৪৫৩।
- ↑ তাবারী, তারিখুল উমাম ওয়াল মুলুক, ১৩৮৭ হি., খ:৫, পৃ:৪৫৬।
- ↑ তাবারী, তারিখুল উমাম ওয়াল মুলুক, ১৩৮৭ হি., খ:৫, পৃ:৪৫৫, শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৩ হি., খ:২, পৃ:১১৩।
- ↑ তাবারী, তারিখুল উমাম ওয়াল মুলুক, ১৩৮৭ হি., খ:৫, পৃ:৪৫৬।
- ↑ তাবারী, তারিখুল উমাম ওয়াল মুলুক, ১৩৮৭ হি., খ:৫, পৃ:৪৫৫।
- ↑ তাবারী, তারিখুল উমাম ওয়াল মুলুক, ১৩৮৭ হি., খ:৫, পৃ:৪৫৫।
- ↑ খামেনায়ী, ইনসানে ২৫০ সালে, ১৩৯৪ (সৌরবর্ষ), পৃ:১৭১-১৭৯।
- ↑ মাজলেসী, বিহারুল আনওয়ার, ১৪০৩ হি., খ:৪৪, পৃ:৩২৯।
- ↑ ইশতেহারদি, হাফ্তসালে চেরা সেদা দারওয়ার্দ?, ১৩৯১, পৃ:১৫৪।
- ↑ তাবারী, তারিখে তাবারি, ১৩৭৫ (সৌরবর্ষ), খ:৫, পৃ:৪৫৮-৪৫৯ ও শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৩ হি., খ:২, পৃ:১১৭।
- ↑ ইবনে আসির, আল-কামিলু ফিত্ তারিখ, ১৩৮৬ হি., খ:৪, পৃ:১৬০।
- ↑ তাবারী, তারিখে তাবারি, ১৩৭৫ (সৌরবর্ষ), খ:৭, পৃ:১৮১-১৮২।
- ↑ তাবারী, তারিখে তাবারি, ১৩৭৫ (সৌরবর্ষ), খ:১০, পৃ:৪৩৪১।
- ↑ বালাজুরী, আনসাবুল আশরাফ, ১৪১৭ হি., খ:৯, পৃ:৩১৭
- ↑ ইমাম খোমিনী, সহিফায়ে নুর, ১৩৭৯ (সৌরবর্ষ), খ:১৭, পৃ:৫৮।
- ↑ শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৩ হি., খ:২, পৃ:২৭ ।
- ↑ তিরমিযী, সুনানে তিরমিযী, ১৪০৩ হি., খ: ৫, পৃ: ৩২৫, আহমাদ বিন হাম্বল, মুসনাদে আহমাদ, দারু সাদের, খ:৩, পৃ:২৬১।
- ↑ ইবনে সা’দ, তাবাকাতুল কুবরা, ১৪১৮ হি. খ:৬, পৃ:৪১৯-৪২২।
- ↑ শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৩ হি., খ:২, পৃ:২৭ ও বালাজুরী, আনসাবুল আশরাফ, ১৪১৭ হি. খ; ৩, পৃ: ৭।
- ↑ শেইখ সাদুক, কামালুদ্দিন ওয়া তামামুন নিঅমা, ১৩৯৫ হি., খ:১, পৃ:২৬৫।
- ↑ বালাজুরী, আনসাবুল আশরাফ, ১৪১৭ হি. খ;৩, পৃ:১৪২।
- ↑ ইবনে সা’দ, তাবাকাতুল কুবরা, ১৪১৮ হি. খ:১০ পৃ:২৬৬।
- ↑ শেইখ তুসী, আল-গাইবাহ, ১৪১১ হি., পৃ:১৪৫ ও শেইখ কুলাইনী, আল-কাফি, ১৩৬২, খ:১, পৃ:৫২৮।
- ↑ মাজলেসী, বিহারুল আনওয়ার, ১৩৬৩ (সৌরবর্ষ), খ:৪৪, পৃ:২২৩-২৪৯।
- ↑ শেইখ কুলাইনী, আল-কাফি, ১৩৬২ (সৌরবর্ষ), খ:১, পৃ:৪৬৫।
- ↑ ইবনে কুলাভিয়্যাহ, কামিল আয্-যিয়ারত, ১৩৫৬ হি., পৃ:৬৬।
- ↑ ইবনে শাহরআশুব, মানাকিবে আলে আবি তালিব, ১৩৭৯ হি., খ:৪, পৃ:৮২।
- ↑ ইবনে সা’দ, তাবাকাতুল কুবরা, ১৪১৮ হি. খ: ১০ পৃ: ৪১১।
- ↑ ইবনে আসাকির, তারিখু মাদিনাতি দামেশক, ১৪১৫ হি., খ: ১৪, পৃ: ১৮৫।
- ↑ ইবনে আসাকির, তারিখু মাদিনাতি দামেশক, ১৪১৫ হি., খ: ১৩, পৃ: ১৭১ ও ইরবিলী, কাশফুল গুম্মাহ, ১৪২৬ হি., খ:২, পৃ:৪৭৬।
- ↑ সুরা-নিসা:৮৬।
- ↑ ইরবিলী, কাশফুল গুম্মাহ, ১৪২১ হি., খ:১, পৃ:৫৭৫।
- ↑ শেইখ সাদুক, আল-খিসাল, কোম, ১৪০৩ হি., খ:১, পৃ:১৩৫।
- ↑ ইবনে সা’দ, তাবাকাতুল কুবরা, ১৪১৮ হি. খ: ১০ পৃ: ৪০১।
- ↑ বালাজুরী, আনসাবুল আশরাফ, ১৪১৭ হি. খ;৩, পৃ:২০৬।
- ↑ মাজলেসী, বিহারুল আনওয়ার, ১৩৬৩ (সৌরবর্ষ), খ: ৪৫, পৃ:১৯৬।
- ↑ ইবনে কাছির, আল-বিদায়া ও নিহায়া, দারুল ফিকর, খ:১১, পৃ:১৮৩।
- ↑ মাজলেসী, বিহারুল আনওয়ার, ১৩৬৩ (সৌরবর্ষ), খ:৪৪, পৃ:২৮৭-২৯৬।
- ↑ ইবনে কুলাভিয়্যাহ, কামিল আয্-যিয়ারত, ১৩৫৬ হি., পৃ:১৫৯-১৬১।
- ↑ শেইখ তুসী, মিসবাহুল মুতাহাজ্জাদ, ১৪১১ হি., পৃ:৭৮৭।
- ↑ সাইয়্যেদ বিন তাউস, আল-লুহুফ, ১৪১৪ হি., পৃ:২২৫।
- ↑ তাবাতাবাতায়ী ইয়াযদী, উরওয়াতুল উসকা, ১৪০৪ হি., খ:২, পৃ:১৬৪।
- ↑ ইবনে শাহরআশুব, মানাকিবে আলে আবি তালিব, ১৩৭৯, খ:২, পৃ:২১১ ও শেইখ তুসী, আল-আমালি, ১৪১৪ হি., পৃ:৩২৭।
- ↑ নাজমী, সুখানানে হোসাইন আলী আয মাদিনা থ কারবালা, ১৩৭৮ (সৌরবর্ষ), পৃ:৭।
- ↑ মাজলেসী, বিহারুল আনওয়ার, ১৩৬৩ (সৌরবর্ষ), খ:৯৪, পৃ:২১৪।
- ↑ ইবনে শুঅবে হুররানী, তুহাফুল উকুল, ১৪০৪ হি., পৃ:২৩৭-২৪০।
- ↑ শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৩ হি., খ:২, পৃ:৯৭-৯৮।
- ↑ খাওয়ারিযমী, মাকতালুল হোসাইন (আ.), ১৪২৩ হি., খ:১, পৃ:২৭৩।
- ↑ আহমাদ মিয়ানেজী, মাকাতিবুল আইম্মা, ১৪২৬ হি., খ:৩, পৃ:৮৩-১৫৬।
- ↑ ইরবিলী, কাশফুল গুম্মাহ, ১৪২১ হি., খ:১, পৃ:৫৯২।
- ↑ ইবনে শুঅবে হুররানী, তুহাফুল উকুল, ১৪০৪ হি., পৃ:২৪৫।
- ↑ ইরবিলী, কাশফুল গুম্মাহ, ১৪২১ হি., খ:১, পৃ:৫৭৩।
- ↑ ইবনে শাহরআশুব, মানাকিবে আলে আবি তালিব, ১৩৭৯, খ:৪, পৃ:৬৮।
- ↑ খাওয়ারিযমী, মাকতালুল হোসাইন (আ.), ১৪২৩ হি., খ:১, পৃ:২৭৩।
- ↑ ইবনে শুঅবে হুররানী, তুহাফুল উকুল, ১৪০৪ হি., পৃ:২৪৮
- ↑ ইস্ফান্দারিয়া, কিতাবশেনাসিয়ে তারিখিয়ে ইমাম হোসাইন, ১৩৮০ (সৌরবর্ষ), পৃ:৪১।
- ↑ ইস্ফান্দারিয়া, কিতাবশেনাসিয়ে তারিখিয়ে ইমাম হোসাইন, ১৩৮০ (সৌরবর্ষ), পৃ:৪৯১।
- ↑ সাহেবী, মাকতাল ওয়া মাকতাল নেগারি, ১৩৭৩ সৌরবর্ষ), পৃ:৩১।
গ্রন্থপঞ্জি
- ইবনে আবিল হাদিদ, শারহে নাহজুল বালাগাহ, চপে মুহাম্মাদ আবুল ফাযলে ইবরাহিম, ১৩৮৫-৮৭ হি.।
- ইবনে আবি শাইবাহ, আল-মুসান্নিফু ফিল আহাদিস ওয়াল আসার, চপে সাঈদ মুহাম্মাদ লাহ্হাম, বৈরুত, ১৪০৯ হি.।
- ইবনে আসির, আলী বিন আবিল কারাম, আসাদুল গাবাতি ফি মারিফাতিস সাহাবাতি, বৈরুত, দারুল কিতাবিল আরাবি...
- ইবনে আসির, আলী বিন আবিল কারাম, আল-কামিলু ফিত্ তারিখ, বৈরুত, দারু সাদের-দারু বৈরুত, ১৯৬৫ (ঈসায়ী)।
- ইবনে আসাম, আহমাদ, আল-ফুতুহ, বৈরুত, দারুল আযওয়াঅ, ১৪১১ হি.।
- ইবনে আসাম, আহমাদ, আল-ফুতুহ; তাহকিক-আলী শিরী, বৈরুত, দারুল আযওয়াঅ, প্রথম সংস্করণ, ১৯৯৯ (ঈসায়ী)।
- ইবনে বাবুয়ে কুম্মী, আবুল হাসান বিন আলী, আল-ইমামাতু ওয়া আত-তাবসিরাতু মিন হাইরাতি; তাহকিক-আলী আকবার গাফফারী, তেহরান, দারুল কুতুবিল ইসলামিয়্যাহ, ১৩৬৩ (সৌরবর্ষ)।
- ইবনে তাইমিয়্যাহ, আহমাদ বিন আব্দুল হালিম, মিনহাজুস সুন্নাতিন নাবাবিয়্যাহ; তাহকিক-মুহাম্মাদ রাশাদ সালেম, জামিয়াতুল ইমাম মুহাম্মাদ বিন সাউদ আল-ইসলামিয়্যাহ, প্রথম সংস্করণ, ১৪০৬ হি.।
- ইবনে জুওযী, আব্দুর রহমান বিন আলী, আল-মুনতাযামু ফি তারিখিত্ তাবারি; তাহকিক-মুহাম্মাদ আব্দুল কাদের আতা ও মুস্তাফা আব্দুল কাদের আতা, বৈরুত, দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ, ১৯৯২ (ঈসায়ী)।
- ইবনে হাব্বান, সহিহ ইবনে হাব্বান; তাহকিক-শুয়াইব, ১৯৯৩ (ঈসায়ী)।
- ইবনে হাজার আসকালানী, আল-ইসাবাতু ফি তাময়িযিস সাহাবা; তাহকিক-আদেল আহমাদ আব্দুল মাউজুদ ও আলী মুহাম্মাদ মাউয, বৈরুত, দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ, ১৯৯৫ (ঈসায়ী)।
- ইবনে জুযাম, আল-মুহাল্লি; তাহকিক-মুহাম্মাদ শাকের, বৈরুত, দারুল ফিকর...
- ইবনে খালদুন, তারিখে ইবনে খালদুন, বৈরুত, দারুল ফিকর, দারু ইহয়াইত তুরাুসিল আরাবি, ৪র্থ সংস্করণ, ১৪০১ হি.।
- ইবনে সা’দ, তাবাকাতুল কুবরা, চপে ইহসান আব্বাস, বৈরুত, ১৯৬৮-৭৭ (ঈসায়ী)।
- ইবনে সা’দ, তাবাকাতুল কুবরা, দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ, ২য় সংস্করণ, ১৪১৮ হি.।
- ইবনে শুঅবে হুররানী, হাসান বিন আলী, তুহাফুল উকুল, কোম, জামেয়ে মুদাররেসিন, ১৪০৪ হি.।
- ইবনে শাহরআশুব, মুহাম্মাদ বিন আলী, মানাকিবে আলে আবি তালিব, কোম, চপে হাশেম রাসুলি...
- ইবনে শাহরআশুব, মুহাম্মাদ বিন আলী, মানাকিবে আলে আবি তালিব, কোম, আল্লামা, ১৩৭৯ হি.।
- ইবনে শাহরআশুব, মুহাম্মাদ বিন আলী, মানাকিবে আলে আবি তালিব, কোম, চপে বুকাঈ, ১৩৮৫ (সৌরবর্ষ)।
- ইবনে আব্দুল বার্র, আল-ইস্তিয়াবু ফি মারিফাতিস সাহাবা; তাহকিক- আলী মুহাম্মাদ বাজাভী, বৈরুত, দারুল জাইল, প্রথম সংস্করণ, ১৪১২ হি.
- ইবনে আসাকির, আলী বিন হাসান, তারিখু মাদিনাতি দামেশক, বৈরুত, দারুল ফিকর, প্রথম সংস্করণ, ১৪১৫ হি.।
- ইবনে ফুন্দুক বাইহাকি, আলী বিন যায়েদ, লুবাবুল আনসাব ওয়াল আলকাব ওয়াল আকাব; তাহকিক- মাহদী রাজায়ী, কোম, মাকাতবাতু আয়াতুল্লাহ মারাশী, ১৩৮৫ (সৌরবর্ষ)।
- ইবনে ফুন্দুক বাইহাকি, আলী বিন যায়েদ, লুবাবুল আনসাব ওয়াল আলকাব ওয়াল আকাব, চপে মাহদী রাজায়ী, কোম, ১৪১০ হি.।
- ইবনে কুতাইবা, আল-ইমামা ওয়াস সিয়াসা; তাহকিক- আলী শিরী, বৈরুত, দারুল আযওয়াঅ, প্রথম সংস্করণ, ১৪১০ হি.।
- ইবনে কুতাইবা, আল-মায়ারেফ; তাহকিক- সারওয়াত আকাসাহ, কায়রো, আল-হাইয়াতুল মিসরিয়্যাতুল আম্মাতু লিল কিতাব, ১৯৬০ (ঈসায়ী)।
- ইবনে কুতাইবা, আল-মায়ারেফ, কায়রো, আল-হাইয়াতুল মিসরিয়্যাতুল আম্মাতু লিল কিতাব, ২য় সংস্করণ, ১৯৯২ (ঈসায়ী)।
- ইবনে কুলাভিয়্যাহ, জাফর বিন মুহাম্মাদ, কামিল আয্-যিয়ারত, চপে জাওয়াদ কাইয়্যুমী ইস্পাহানী, কোম, ১৪১৭ হি.।
- ইবনে কুলাভিয়্যাহ, জাফর বিন মুহাম্মাদ, কামিল আয্-যিয়ারত, নাজাফ, দারুল মুর্তাজাভিয়্যাহ, ১৩৫৬ হি.।
- ইবনে কাছির, ইসমাইল বিন উমার, আল-বিদায়া ও নিহায়া, বৈরুত, দারুল ফিকর...
- ইবনে কাছির, ইসমাইল বিন উমার, তাফসিরুল কুরআনিল আযিম, বৈরুত, দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ, ১৪১৯ হি.।
- ইবনে মানযুর, মুহাম্মাদ বিন মুকাররাম, লিসানুল আরাব, বৈরুত, দারু সাদের, ১৪১৪ হি.।
- আবু বকর ইবনে আরাবি, আল-আওয়াসেম মিনাল ক্বাওয়াসেম, কায়রো, মাকতাবাতুল সালাফিয়্যাহ...
- আবু মিখনাফ, মাকতালুল হোসাইন; তাহকিক ও তাঅলিক- হোসাইন আল-গাফফারি, মাতবায়াতুল ইলমিয়্যাহ...
- আহমাদ বিন হাম্বল, মুসনাদে আহমাদ, বৈরুত, দারু সাদের...
- আহমাদ মিয়ানেজী, আলী, মাকাতিবুল আইম্মা, আয়াতু্ল্লাহ আহমাদ মিয়ানেজী, কোম, দারুল হাদিস, ১৪২৬ হি.।
- ইরবিলী, আলী বিন ঈসা, কাশফুল গুম্মাহ, চপে আলী ফাযেলি, কোম, ১৪২৬ হি.।
- রবিলী, আলী বিন ঈসা, কাশফুল গুম্মাহ, কোম, রাযি, প্রথম সংস্করণ, ১৪২১ হি.।
- ইস্ফান্দারিয়া, মুহাম্মাদ, কিতাবশেনাসিয়ে তারিখিয়ে ইমাম হোসাইন, তেহরান, সাজমানে চপ ও ইন্তেশারাত, ১৩৮০ (সৌরবর্ষ)।
- ইশ্তিহারদি, আলী পানাহ, হাফ্তসালেহ চেরা ছেদা দার আওয়ার্দ?, কোম, ইন্তেশারাতে আল্লামা, প্রথম সংস্করণ, ১৩৯১ (সৌরবর্ষ)।
- ইস্পাহানী, আবুল ফারাজ, কিতাবুল আগানী, কায়রো, ১৩৮৩ হি.।
- ইস্পাহানী, আবুল ফারাজ, মাকাতিলুত তালিবিয়্যিন; তাহকিক-আহমাদ সাকার, বৈরুত, দারুল মারেফা...
- আমিন, সাইয়্যেদ মুহসিন, আয়ানুশ শিয়া; হাসান আমিন, বৈরুত, দারুত তায়ারুফ লিল মাতবুয়াত, ১৪০৩ হি.।
- বুখারী, সাহল বিন আব্দুল্লাহ, সির্রু আল-সিলসিলাতুল আলাভিয়্যাহ, চপে মুহাম্মাদ সাদেক বাহরুল উলুম, নাজফ, ১৩৮১ হি.।
- বালাজুরী, আহমাদ বিন ইয়াহইয়া, আনসাবুল আশরাফ, বৈরুত, মুয়াসসাসাতুল আলামি লিল মাতবুয়াত...
- বালাজুরী, আহমাদ বিন ইয়াহইয়া, আনসাবুল আশরাফ; তাহকিক-ইহসান আব্বাস, বৈরুত, জামিয়াতুল মুস্তাশরেকিন আল-উমানিয়্যাহ, ১৯৭৯ (ঈসায়ী)।
- বালাজুরী, আহমাদ বিন ইয়াহইয়া, আনসাবুল আশরাফ; তাহকিক-মাহমুদ ফেরদৌস আযম, দমেশ্ক, ১৯৯৬-২০০০ হি.।
- বালাজুরী, আহমাদ বিন ইয়াহইয়া, আনসাবুল আশরাফ; তাহকিক-মুহাম্মাদ বাকের মাহমুদী, বৈরুত, দারুত তায়ারুফ, প্রথম সংস্করণ, ১৯৭৭ (ঈসায়ী)।
- বালাজুরী, আহমাদ বিন ইয়াহইয়া, ফুতুহুল বুলদান, বৈরুত, মাকতাবাতুল হিলাল, ১৯৭৭ (ঈসায়ী)।
- বালাজুরী, আহমাদ বিন ইয়াহইয়া, আনসাবুল আশরাফ; তাহকিক-সোহাইল যুকার ও রিয়াজ যারকুলী, বৈরুত, দারুল ফিকর, ১৪১৭ হি.।
- তিরমিযী, মুহাম্মাদ বিন ঈসা, সুনানে তিরমিযী, তাহকিক-আব্দুর রহমান মুহাম্মাদ উসমান, বৈরুত, দারুল ফিকর, ১৪০৩ হি.।
- মুয়াসসেসেয়ে ইমাম হাদী (আ.), জামেয়ে যিয়ারাতে মাসুমিন, কোম, পায়ামে ইমাম হাদী (আ.), ১৩৭৯ (সৌরবর্ষ)।
- জাফারিয়ান, রাসুল, হায়াতে ফেকরি ওয়া সিয়াসিয়ে ইমামানে শিয়া, কোম, আনসারিয়ান, ৬ষ্ঠ সংস্করণ, ১৩৮১ (সৌরবর্ষ)।
- হাকিমে নিশাপুরী, আল-মুস্তাদরাক; তাহকিক-ইউসুফ আব্দুর রহমান মারাশী, বৈরুত, ১৪০৬ হি.।
- হুররানী, হাসান বিন শোবা, তুহাফুল উকুল, কোম, জামেয়ে মুদাররেসিন, ১৪০৪ হি.।
- খাতিবে বাগদাদী, তারিখে বাগদাদ, বৈরুত, দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ, ১৪১২ হি.।
- খোমিনী, সাইয়্যেদ রুহুল্লাহ, সহিফায়ে নুর, তেহরান, মুয়াসসেসেয়ে তানযিম ওয়া নাশরে আসার, ১৩৭৯ (সৌরবর্ষ)।
- খাওয়ারিযমী, মুহাম্মাদ বিন আহমাদ, মাকতালুল হোসাইন (আ.), কোম, আনওয়ারুল হুদা, দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৪২৩ হি.।
- তাবারী, মুহাম্মাদ বিন জারির, দালাইলুল আইম্মা, বৈরুত, মুয়াসসাসাতুল আলামি লিল মাতবুয়াত, ১৪০৮ হি.।
- যাহাবী, শামসুদ্দিন, তারিখুল ইসলাম, তারিখুৃল ইসলাম, বৈরুত, দারুল কুতুবিল আরাবি, দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৪০৯ হি.।
- যাহাবী, শামসুদ্দিন, তারিখুল ইসলাম, তারিখুৃল ইসলাম; তাহকিক-উমর আব্দুস সালাম, বৈরুত, দারুল কুতুবিল আরাবি, ১৯৯৩ (ঈসায়ী)।
- যুবাইদী ওয়াসেতী, মুর্তাজা হোসাইনী, তাজুল উরুস, বৈরুত, দারুল ফিকর, ১৪১৪ হি.।
- যামাখশারী, মাহমুদ, আল-কাশশাফ, কোম, নাশরুল বালাগাহ, দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৪১৫ হি.।
- সিবত ইবনে জুযী, তাযকিরাতুল খাওয়াছ, বৈরুত, ১৪০১ হি.।
- সিবত ইবনে জুযী, তাযকিরাতুল খাওয়াছ, কোম, মানশুরাতু আশরিফুর রাযি, প্রথম সংস্করণ, ১৪১৭ হি.।
- সুলাইসম বিন কাইস, কিতাবে সুলাইসম বিন কাইসে হেলালী, কোম, হাদী, ১৪০৫ হি.।
- সাইয়্যেদ বিন তাউস, আলী বিন মুসা, ইকবালুল আমাল, তেহরান, দারুল কুতুবিল ইসলামিয়্যাহ, ১৩৬৭ (সৌরবর্ষ)।
- সাইয়্যেদ বিন তাউস, আলী বিন মুসা, আত্-তারায়েফ, কোম, খিয়াম, ১৪০০ হি.।
- সাইয়্যেদ বিন তাউস, আলী বিন মুসা, আল-মালহুফু আলা কাতলিত তুফুফ, তেহরান, জাহান, ১৩৪৮ (সৌরবর্ষ)।
- সাইয়্যেদ বিন তাউস, আলী বিন মুসা, আল-মালহুফু আলা কাতলিত তুফুফ, কোম, উসওয়াহ, ১৪১৪ হি.।
- সাইয়্যেদ জাফার মুর্তাজা আমেলী, আস-সাহিহু মিন সিরাতি আল-ইমাম আলী, কোম, দাফতারে তাবলিগাতে ইসলামী, প্রথম সংস্করণ, ১৩৮৮ (সৌরবর্ষ)।
- সাইয়্যেদ মুর্তাজা, হাসান বিন আলী, তানযিহুল আম্বিয়া, বৈরুত, দারুল আযওয়াঅ, দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৪০৯ হি.।
- সাইয়্যেদ মুর্তাজা, আলী বিন হোসাইন, আশ-শাফি ফিল ইমামাতি, কোম, মুয়াসসেসেয়ে ইসমাইলিয়ান, দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৪১০ হি.।
- সাইয়্যেদ রাযি, মুহাম্মাদ বিন হোসাইন, নাহজুল বালাগাহ; তাহকিক-সুবহি সালেহ, কোম, হেজরাত, ১৪১৪ হি.।
- সুয়ুতী, জালালুদ্দিন, তারিখুল খুলাফা, মাকতাবাতু নাযারি মুস্তাফা আলবায, ১৪২৫ হি.।
- শাওকানী, মুহাম্মাদ বিন আলী, ফাতহুল কাদির, বৈরুত, আলামুল কুতুব...
- শহিদী, সাইয়্যেদ জাফার, তারিখে তাহলিলিয়ে ইসলাম, তেহরান, মারকাযে নাশরে দানেশগাহী, ১৩৯০।
- শহিদী, সাইয়্যেদ জাফার, জেন্দেগানিয়ে আলী বিন হোসাইন, তেহরান, দাফতরে নাশরে ফারহাঙ্গ, ১৩৬৫ (সৌরবর্ষ)।
- শেইখ সাদুক, মুহাম্মাদ ইবনে আলী বিন বাবুয়ে, আল-ইতিকাদাতুল ইমামিয়্যাহ, কোম, শেইখ মুফিদ সেমিনার, দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৪১১ হি.।
- শেইখ সাদুক, মুহাম্মাদ ইবনে আলী বিন বাবুয়ে, আল-খিসাল, কোম, জামেয়ে মুদাররেসিন, ১৪০৩ হি.।
- শেইখ সাদুক, মুহাম্মাদ ইবনে আলী বিন বাবুয়ে,উয়ুনে আখবারুর রেযা, চপে মাহদী লাজুরদী, কোম, ১৩৬৩ (সৌরবর্ষ)।
- শেইখ সাদুক, মুহাম্মাদ ইবনে আলী বিন বাবুয়ে, কামালুদ্দিন ওয়া তামামুন নিঅমা, তেহরান, ইসলামিয়্যাহ, দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৩৯৫ (সৌরবর্ষ)।
- শেইখ তুসী, মুহাম্মাদ বিন হাসান, আল-গাইবাহ, কোম, দারুল মায়ারিফিল ইসলামিয়্যাহ, ১৪১১ হি.।
- শেইখ তুসী, মুহাম্মাদ বিন হাসান, আল-আমালি, কোম, দারুস সিকাফা, ১৪১৪ হি.।
- শেইখ তুসী, মুহাম্মাদ বিন হাসান, তাহযিবুল আহকাম, চপে হাসান মুসাভী খোরাসান, বৈরুত, ১৪০১ হি.।
- শেইখ তুসী, মুহাম্মাদ বিন হাসান, মিসবাহুল মুতাহাজ্জাদ, বৈরুত, মুয়াসসাসাতু ফিকহিশ শিয়া, ১৪১১ হি.।
- শেইখ মুফিদ, মুহাম্মাদ বিন নোমান, আল-ইরশাদ, শেইখ মুফিদ সেমিনার, কোম, প্রথম সংস্করণ, ১৪১৩ হি.।
- শেইখ মুফিদ, মুহাম্মাদ বিন নোমান, আল-ইরশাদ, বৈরুত, ১৪১৪ হি.।
- শেইখ মুফিদ, মুহাম্মাদ বিন নোমান, আল-মুকনিয়াহ, শেইখ মুফিদ সেমিনার, কোম, ১৪১৩ হি.।
- তাবাতাবাতায়ী ইয়াযদী, সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ কাযেম, উরওয়াতুল উসকা, বৈরুত, ১৪০৪ হি.।
- তাবারানী, সুলাইমান বিন আহমাদ, আল-মুজামুল কাবির; তাহকিক- হামদী আব্দুল মাজিদ সালাফী, বৈরুত, দারু ইহয়াইত তুরাসিল আরাবি...
- তাবারানী, সুলাইমান বিন আহমাদ, আল-মুজামুল কাবির, কায়রো, দারুন নাশর, মাকতাবাতু ইবনে তাইমিয়্যাহ, দ্বিতীয় সংস্করণ...
- তাবারসী, আহমাদ বিন আলী, আল-ইহতিজাজু আলা আহলিল লুজাজ, মাশহাদ, মুর্তাজা, ১৪০৩ (সৌরবর্ষ)।
- তাবারসী, আহমাদ বিন আলী, আল-ইহতিজাজু আলা আহলিল লুজাজ, নাজাফ, চপে মুহাম্মাদ বাকের মুসাভী খোরাসান, ১৩৮৬ হি.
- তাবারসী, ফাযল বিন হাসান, ইলামুল ওয়ারা বি আলামিল হুদা, ইসলামিয়্যাহ, ১৩৯০ হি.।
- তাবারী, মুহাম্মাদ বিন জারির, তারিখুল উমাম ওয়াল মুলুক, বৈরুত, দারুত্ তুরাস, দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৩৮৭ হি.।
- আমেলী, জাফার মুর্তাজা, আল-হায়াতুস সিয়াসিয়্যাতু লিল ইমামিল হাসান, বৈরুত, দারুস সিরাহ...
- ফখরুদ্দিন রাযি, মুহাম্মাদ বিন উমার, তাফসিরে কাবির, বৈরুত, দারুল ফিকর, ১৪০৫ হি.।
- কাশেফী সাবজেওয়ারী, মোল্লা হোসাইন, রওযাতুশ শুহাদা, কোম, নাভীদে ইসলাম, ১৩৮২ (সৌরবর্ষ)।
- শেইখ কুলাইনী, মুহাম্মাদ বিন ইয়াকুব, আল-কাফী, তেহরান, দারুল কুতুবিল ইসলামিয়্যাহ, ১৩৬৫ (সৌরবর্ষ)।
- শেইখ কুলাইনী, মুহাম্মাদ বিন ইয়াকুব, আল-কাফী, তেহরান, দারুল কুতুবিল ইসলামিয়্যাহ, দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৩৬২ (সৌরবর্ষ)।
- মালেক বিন আনাস, আল-মুয়াত্তাঅ্; তাহকিক- মুহাম্মাদ ফুয়াদ আব্দুল বাক্বী, বৈরুত, দারু ইহয়াইত তুরাসিল আরাবি, ১৯৮৫ (ঈসায়ী)।
- মাজলেসী, মুহাম্মাদ বাকের, বিহারুল আনওয়ার, তেহরান, ইসলামিয়্যাহ, দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৩৬৩ (সৌরবর্ষ)।
- মুহাদ্দেসী, জাওয়াদ, ফারহাঙ্গে আশুরা, কোম, নাশরে মারুফ, ৭ম সংস্করণ, ১৩৯৩ (সৌরবর্ষ)।
- মাসুদী, ইসবাতুল ওয়াসিয়্যাহ, কোম, মানশরাতু আর-রাযি...
- মাসুদী, আলী বিন হোসাইন, মুরুজুয যাহাব; তাহকিক- আসয়াদ, কোম, দারুল হিজরাত, ১৪০৯ হি.।
- মুসলিম বিন হাজ্জাজ, সহিহ মুসলিম, বৈরুত, দারুল মারেফা, ১৪২৩ হি.।
- মুতাহারী, মুর্তুজা, খাদামাতে মুকাবেলে ইসলাম ওয়া ইরান, তেহরান, ইন্তেশারাতে সাদরা, ১৩৮০ (সৌরবর্ষ)।
- মিনকারী, নাসর বিন মুযাহেম, ওয়াকেয়ে সিফফিন, কোম, মাকতাবাতু আয়াতুল্লাহ মারাশি নাজাফী, দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৪০৩ হি.।
- মিনকারী, নাসর বিন মুযাহেম, ওয়াকেয়ে সিফফিন; তাহকিক- আব্দুস সালাম মুহাম্মাদ হারুন, কায়রো, ১৩৮২ হি.।
- মুসাভী আল-মুকাররাম, আব্দুর রাজ্জাক, মাকতালুল হোসাইন, বৈরুত, দারুল কুতুবিল ইসলামিয়্যাহ...
- নাসেরী দাউদী, আব্দুল মাজিদ, ইনকিলাবে কারবালা আয দিদগাহে আহলে সুন্নাহ, কোম, মুয়াসসেসেয়ে আমুযেশি ওয়া পাজুহেশিয়ে ইমাম খোমিনী, ১৩৮৫ (সৌরবর্ষ)।
- নাজমী, মুহাম্মাদ সাদেক, সুখানানে হোসাইন আলী আয মাদিনা থ কারবালা, কোম, দাফতারে ইন্তেশারাতে ইসলামি, ১৩৭৮ (সৌরবর্ষ)।
- ইয়াকুবী, আহমাদ বিন ইয়াকুবী, তারিখুল ইয়াকুবী, বৈরুত, দারু সাদের...
- ইউসুফী গুরাভী, মুহাম্মাদ হাদী, মাউসুয়াতুত তারিখ আল-ইসলামী, কোম, মাজমাউল ফিকরিল ইসলামী, ১৪১৭ হি.।