বিষয়বস্তুতে চলুন

খসড়া:যিয়ারত

wikishia থেকে
মহানবী (স.)-এর কবর যিয়ারত করার চিত্র

যিয়ারত (আরবি: الزيارة) হলো নবীগণ, ইমামগণ, ইমামযাদা (ইমামপুত্র) ও মুমিনদের কবরের নিকট উপস্থিত হওয়া। যিয়ারত একটি পছন্দনীয় ইসলামী আমল এবং ইতিহাস জুড়ে মুসলমানগণ এর প্রতি গভীর মনোযোগ ও গুরুত্ব প্রদান করে এসেছেন। এই আমলটি শিয়া মুসলমানদের নিকট বিশেষ মর্যাদার অধিকারী; এতটাই যে, তারা একে শিয়া পরিচয়ের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করেন। প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অগণিত শিয়া মুসলমান ইমামগণ (আ.) ও কিছু কিছু ইমামযাদার কবর যিয়ারতের উদ্দেশ্যে সফর করে থাকেন। উদাহরণস্বরূপ, ‘অস্তানে কুদসে রাজাভী’ কর্তৃপক্ষের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতি বছর ইরানের বিভিন্ন শহর এবং অন্যান্য কিছু কিছু দেশ থেকে ২ কোটি ২৮ লক্ষ লোক ইমাম রেযা (আ.)-এর পবিত্র মাজার যিয়ারতের জন্য মাশহাদ সফর করে থাকেন। এছাড়াও, হযরত আব্বাস (আ.)-এর মাজার সংশ্লিষ্ট পরিসংখ্যান কেন্দ্রের বরাত দিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৪০২ সনে আরবাঈন পথযাত্রায় বিদেশি যিয়ারতকারীর সংখ্যা ২২ মিলিয়নেরও বেশি বলে অনুমান করা হয়েছে।

অন্যান্য মুসলিম ফিরকার বিপরীতে ইবনে তায়মিয়াওয়াহাবীরা, শাফাআতদোয়া কবুলের উদ্দেশ্যে নবীগণ ও ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের কবর যিয়ারতকে বিদআত ও শিরকমূলক কাজ বলে মনে করেন। অন্যদিকে, শিয়া পণ্ডিতগণ এবং আহলে সুন্নাতের অধিকাংশ পণ্ডিত এই দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেন না; বরং তারা রাসূল (সা.) ও মাসুম ইমামগণের (আ.) সুন্নত, সাহাবা ও তাবেঈনদের সীরাত, মুসলমানদের ইজমা ও সীরায়ে মুতাশাররেআ দলিলের ভিত্তিতে যিয়ারতকে শরীয়তসম্মত ও ফজিলতপূর্ণ গণ্য করেন।

ইসলামে যিয়ারতের বৈধতা, ফযিলত ও মুস্তাহাব হওয়া প্রসঙ্গে এবং ইবনে তায়মিয়ার যিয়ারত সংক্রান্ত দৃষ্টিভঙ্গি খণ্ডনে মুসলিম পণ্ডিতদের পক্ষ থেকে বহু গ্রন্থ রচিত হয়েছে। যেমন: তাকীউদ্দীন সুবকী রচিত شِفاءُ السَّقام فی زیارَةِ خَیرِ الأنام "শিফাউস সিকাম ফী যিয়ারাতি খাইরিল আনাম" এবং ইবনে হাজার হাইসামীর লেখা «تُحفَةُ الزُّوّار الی قبرِ النَّبیِّ المُختار» "তুহফাতুজ যুওয়ার ইলা কবরিন নাবিয়্যিল মুখতার" এ ধরনের রচনার অন্তর্ভুক্ত। শহীদে আউয়াল রচিত المزار فی کیفیّة زیارات النبی و الأئمة الأطهار "আল-মাযার ফী কাইফিয়্যাতি যিয়ারাতিন নাবী ওয়াল আইম্মাতিল আতহার" নামক গ্রন্থটিও নবী করিম (সা.) ও শিয়া ইমামগণের (আ.) কবর যিয়ারতের ফজিলত, মুস্তাহাব হওয়া এবং তাদের কবর যিয়ারতের আদব-শিষ্টাচার সম্পর্কিত রচনাবলীর মধ্যে অন্যতম।

ইসলামী সংস্কৃতিতে যিয়ারতের গুরুত্ব

যিয়ারত একটি ধর্মীয় পরিভাষা, যার অর্থ হচ্ছে বিশেষ কিছু রীতিনীতির সহিত মৃত ব্যক্তিদের, মুমিনদের, সৎকর্মশীলদের বিশেষ করে নবীগণ, ইমামগণইমামযাদাগণের কবরের নিকট উপস্থিত হওয়া।[] জাফর সুবহানীর ভাষ্যমতে, মহানবী (সা.)-এর কবর, তাঁর আহলে বাইতের (আ.) কবর এবং মুমিনদের কবর যিয়ারত করা ইসলামী সংস্কৃতির মৌলিক নীতির অন্তর্গত।[] আহলে সুন্নাতের আলেমগণও, যেমন ইবনে যিয়া মাক্কী (মৃত্যু: ৮৫৪ হিজরি), শাওকানী, শামসুদ্দীন যাহাবী (ইন্তিকাল: ৭৪৮ হিজরি), এবং আবদুর রহমান জাযীরী (মিসরের ফকীহ ও আল-আজহারের অন্যতম পণ্ডি; মৃত্যু: ১৩৬০ হিজরি) নবী করিম (সা.)-এর কবর যিয়ারতকে অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ বলে মনে করতেন।[] তারা উল্লেখ করেছেন যে, হাজীগণ হজ্বের সকল কার্যাদি সম্পন্ন করার পর নবী করিম (সা.)-এর কবর যিয়ারত করতে যেতেন।[]

শিয়াদের নিকট যিয়ারতের বিশেষ গুরুত্ব ও তাৎপর্য

যিয়ারতকে শিয়াদের প্রতীক, তাদের জীবন ও পরিচয়ের অন্যতম উপাদান হিসাবে গণ্য করা হয়। মাসুম ইমামগণ (আ.) থেকে বর্ণিত যিয়ারতের সওয়াব ও ফজিলত সংক্রান্ত হাদীসসমূহের অনুসরণে, শিয়ারা ইমামগণ (আ.) ও ইমামযাদাগণের কবর ও মাজার যিয়ারতের উদ্দেশ্যে সফর করার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে থাকেন।[] প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অগণিত শিয়া মুসলমান ইমামগণ (আ.) ও কিছু কিছু ইমামযাদার কবর যিয়ারতের উদ্দেশ্যে সফর করে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, ‘অস্তানে কুদসে রাজাভী’ কর্তৃপক্ষের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতি বছর ইরানের বিভিন্ন শহর এবং অন্যান্য কিছু কিছু দেশ থেকে ২ কোটি ২৮ লক্ষ লোক ইমাম রেযা (আ.)-এর পবিত্র মাজার যিয়ারতের জন্য মাশহাদ সফর করে থাকেন।[] এছাড়াও, হযরত আব্বাস (আ.)-এর মাজার সংশ্লিষ্ট পরিসংখ্যান কেন্দ্রের বরাত দিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৪০২ সনে আরবাঈন পথযাত্রায় বিদেশি যিয়ারতকারীর সংখ্যা ২২ মিলিয়নেরও বেশি বলে ধারণা করা হয়েছে।[]

যিয়ারতনামা

যিয়ারতনামা হলো এমন একটি পাঠ্য, যা শিয়া ইমামগণের (আ.) রওযা ও কবর যিয়ারতকালে পাঠ করা হয় এবং এতে উক্ত কবরগুলোর মালিকদের প্রতি প্রতি দরুদ ও সম্মান নিবেদন অন্তর্ভুক্ত থাকে।[] যদিও প্রত্যেক যিয়ারতকারীই ইচ্ছা করলে নিজ থেকে ও নিজ ভাষায় এ সকল কবরের প্রতি সম্মান নিবেদন ও তাওয়াসসুলের জন্য কিছু বলতে পারেন; তবুও এ সকল যিয়ারতনামা পড়ার প্রতি বিশেষভাবে উৎসাহিত করা হয়েছে, যার সনদ মাসুম ইমামগণের নিকট পর্যন্ত পৌঁছায় একং পরিভাষাগত দিক থেকে এগুলোকে ‘মা’সুর যিয়ারত’ বলা হয়।[] এ সকল যিয়ারতনামাগুলো আকাইদ সংক্রান্ত কিছু বিষয় যেমন তাওহীদ, নবুয়্যত, আল্লাহর সিফাত (গুণাবলী) এবং মাসুম ইমামগণের পরিচয়, তাদের ফজিলত ও মর্যাদা, তাওয়াল্লাতাবাররা, শাফাআততাওয়াসসুলের মত বিষয়বস্তু সমৃদ্ধ।[[১০]

দূর হতে যিয়ারত

দূর হতে যিয়ারত করাও এক প্রকারের যিয়ারত হিসেবে গণ্য। যাদের পক্ষে সরাসরি উপস্থিত হয়ে যিয়ারত করা সম্ভব হয় না, তাদের জন্য শিয়া রেওয়ায়েতে দূর হতে যিয়ারতের সুপারিশ করা হয়েছে।[১১] উদাহরণস্বরূপ, ইমাম সাদিক (আ.) থেকে বর্ণিত একটি রেওয়ায়েতে উল্লিখিত হয়েছে: "যে ব্যক্তি নিকট থেকে যিয়ারত করতে সক্ষম নয়, সে যেন কোনো উঁচু স্থানে দাঁড়িয়ে দুই রাক‘আত নামায আদায় করে, অতঃপর আমাদের কবরের দিকে মুখ করে সালাম প্রেরণ করে। তার সালাম আমাদের নিকট পৌঁছে যাবে।"[১২] তাঁর (আ.) থেকেই অপর একটি রেওয়ায়েতে বর্ণিত হয়েছে: যদি কেউ খোলা স্থানে দাঁড়িয়ে ডানে-বামে তাকায়, অতঃপর তার মাথা আকাশের দিকে উঁচু করে ইমাম হোসাইন (আ.)-এর কবরের দিকে মনোনিবেশ করে এবং বলে: «السَّلامُ عَلَیْکَ یا اباعَبْدِاللَّهِ، السَّلامُ عَلَیْکَ وَ رَحْمَةُاللَّهِ وَ بَرَکاتُهُ» "আসসালামু আলাইকা ইয়া আবা আবদিল্লাহ, আসসালামু আলাইকা ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু", তাহলে ইমাম হোসাইনের (আ.)- যিয়ারতের সওয়াব তার জন্য লেখা হবে।[১৩]

আহলে সুন্নাতের দৃষ্টিতে শিয়া ইমামগণের কবর যিয়ারত

ইতিহাসবেত্তাগণ এমন কিছু বিষয়ের উল্লেখ করেছেন, যেখানে আহলে সুন্নাতের কিছু আলেমগণও শিয়া ইমামগণের কয়েকজনের কবর যিয়ারত করেছেন বলে তথ্যে উঠে এসেছে।[১৪] উদাহরণস্বরূপ, হিজরি তৃতীয় ও চতুর্থ শতকের আহলে সুন্নাতের বিশিষ্ট মুহাদ্দিস ইবনে হিব্বান বলেছেন যে, “বহুবার মাশহাদে ইমাম রেযা (আ.)-এর কবর যিয়ারত করতে যেতাম এবং তাঁর কাছে তাওয়াসসুল করার মাধ্যমে আমার সমস্যাগুলো দূরীভূত হত”।[১৫] এছাড়াও ইবনে হাজার আসকালানী বর্ণনা করেছেন যে, হিজরি তৃতীয় ও চতুর্থ শতকের আহলে সুন্নাতের বিশিষ্ট ফকিহ, মুফাসসির ও মুহাদ্দিস আবু বকর মুহাম্মাদ ইবনে খুযাইমা এবং নিশাপুরের অন্যতম বিশিষ্ট আলেম আবু আলী সাকাফী আহলে সুন্নাতের অন্যান্যদের সঙ্গে ইমাম রেযা (আ.)-এর কবর যিয়ারত করতে গিয়েছেন।[১৬] হিজরি ষষ্ঠ শতাব্দীর শাফেঈ মাযহাবের বিশিষ্ট ইতিহাসবেত্তা, মুহাদ্দিস ও ফকিহ সামআনীও ইমাম কাযিম (আ.)-এর কবর যিয়ারত করতেন এবং তাঁর কাছে তাওয়াসসুল করতেন।[১৭] আহলে সুন্নাতের চার মাযহাবের অন্যতম ইমাম হিসেবে পরিচিত শাফেঈ থেকেও বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি ইমাম কাযিম (আ.)-এর কবরকে "আরোগ্যদায়ক ঔষধ" বলে আখ্যায়িত করেছেন।[১৮]

যিয়ারতের শরীয়তভিত্তিক দলিলসমূহ

যিয়ারতের বৈধতা প্রমাণে মুসলিম আলেমগণ নিম্নোক্ত দলিলসমূহ পেশ করেছেন:

রাসূল (সা.)-এর সুন্নত

কবর যিয়ারত, ইসলামের শুরু থেকেই একটি বৈধ ও প্রচলিত আমল হিসেবে পরিগণিত হয়ে আসছে। ইবনে শাব্বাহ তার "তারীখুল মাদীনাতিল মুনাওয়ারাহ" গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন মক্কা বিজয়ের পর মদীনায় প্রত্যাবর্তন করছিলেন, তখন তিনি তার মাতা আমেনার কবর যিয়ারত করেন এবং বলেন: "এটি আমার মায়ের কবর। আমি আল্লাহর নিকট তাঁর কবর যিয়ারত করার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছিলাম এবং তিনি আমাকে এই কাজ করার অনুমতি প্রদান করেছেন।"[১৯] এছাড়াও বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি উহুদ যুদ্ধের শহীদদের কবর যিয়ারত[২০] এবং মুমিনদের কবর যিয়ারত করতে বাকী’ কবরস্থানে যেতেন।[২১] আহলে সুন্নাতের কিছু হাদীস গ্রন্থেও যিয়ারতের ফজিলত ও তা আঞ্জামের উপদেশ সংবলিত রাসূল (সা.)-এর হাদীস বর্ণিত হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, তাঁর (সা.) থেকে একটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে: «مَنْ زَارَ قَبْرِي وَجَبَتْ لَهُ شَفَاعَتِی» (বাংলা উচ্চারণ: "মান যারা কাবরী ওয়াজাবাত লাহু শাফাআতী) অর্থাৎ, যে ব্যক্তি আমার কবর যিয়ারত করবে, কিয়ামতের দিন আমার শাফাআত তার জন্য অবধারিত হয়ে যাবে।"[২২]

হাদীস ও মাসুম ইমামগণের (আ.) সীরাত

শিয়াদের রেওয়ায়েত ভিত্তিক উৎসসমূহে, নবী করীম (সা.), শিয়া ইমামগণ (আ.) এবং মুমিনদের কবর যিয়ারতের ফজিলত ও মুস্তাহাব হওয়া সংক্রান্ত বহু হাদীস বর্ণিত হয়েছে। কুলাইনী "আল-কাফী" গ্রন্থে «بَابُ فَضْلِ الزِّيَارَاتِ وَ ثَوَابِهَا» (বাংলা উচ্চারণ: বাবু ফাযলিয যিয়ারাতি ওয়া সাওয়াবিহা) ‘যিয়ারতসমূহের ফযীলত এবং এর সওয়াবের অধ্যায়’ শিরোনামে একটি অধ্যায় সন্নিবেশিত করেছেন এবং এ বিষয়ক হাদীসসমূহ একত্রিত করেছেন।[২৩] হুররে আমেলীও "ওয়াসাইলুশ শিয়া" গ্রন্থে "আবওয়াবুল মাযার ওয়া মা ইয়ুনাসিবুহু" শিরোনামে একটি অধ্যায় যিয়ারত সংক্রান্ত হাদীসের জন্য নির্দিষ্ট করেছেন।[২৪] এবং এর অধীনে মহানবী (সা.) ও শিয়া ইমামগণ (আ.), আল্লাহর নবীগণ, হযরত মাসুমা (সা.আ.)আবদুল আজীম হাসানীর ন্যায় ইমামযাদাগণ, শহীদগণ ও মুমিনদের কবর যিয়ারত, মুমিন ভাইয়ের যিয়ারতের (সুস্থ হোক বা অসুস্থ হোক) ফজিলত ও সওয়াব সম্পর্কিত রেওয়ায়েতগুলো ১০৬টি ভিন্ন অধ্যায়ে সংকলন করেছেন।[২৫]

ঐতিহাসিক উৎসসমূহেও কবর যিয়ারতের বিষয়ে শিয়া ইমামগণের জীবনের কিছু ঘটনা বর্ণিত হয়েছে: হাকিম নিশাপুরী "আল-মুস্তাদরাক আলাস সহীহাইন" গ্রন্থে একটি বর্ণনায় উল্লেখ করেছেন যে, হযরত ফাতিমা যাহরা (সা.আ.) প্রতি শুক্রবার হামযাহ ইবনে আবদুল মুত্তালিবের কবর যিয়ারত করতে যেতেন, সেখানে নামায পড়তেন এবং ক্রন্দন করতেন।[২৬] ইমাম বাকির (আ.)-এর উদ্ধৃতি দিয়ে একটি রেওয়ায়েতে বর্ণিত হয়েছে যে, ইমাম হুসাইন (আ.) প্রতি শুক্রবার রাতে ইমাম হাসান (আ.)-এর কবর যিয়ারত করতেন।[২৭] "কামিলুয যিয়ারাত" গ্রন্থে ইমাম রেযা (আ.) থেকে একটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে যে, ইমাম সাজ্জাদ (আ.) ইমাম আলী (আ.)-এর কবর যিয়ারত করতে যেতেন, কবরের পাশে দাঁড়াতেন, ক্রন্দন করতেন এবং সালাম প্রদান করতেন।[২৮]

সাহাবা ও তাবেঈনদের আমল এবং আলেমদের ইজমা

হিজরি অষ্টম শতকের বিশিষ্ট সুন্নি আলেম সুবকী তার "শিফাউস সিকাম" গ্রন্থে আহলে সুন্নাতের বিভিন্ন হাদীসের উৎসসমূহ[২৯] হতে কতিপয় রেওয়ায়েতের উদ্ধৃতি দিয়েছেন, যার উপর ভিত্তি করে প্রমাণ করেছেন যে, কিছু কিছু সাহাবাতাবেঈন নবী করীম (সা.) ও মুমিনদের কবর যিয়ারত করতেন এবং কবরবাসীদের প্রতি সালাম প্রেরণ করতেন।[৩০]

যিয়ারতের বিরোধী ইবনে তায়মিয়া ও ওয়াহাবিগণ

ভারতের প্রখ্যাত হানাফী ফকিহ ও ও মুহাদ্দিস জনাব মুহাম্মাদ আবদুল হাই লাখনৌভী (মৃত্যু: ১৩০৪ হিজরি) এর বরাত দিয়ে বলা হয়েছে যে, আহলে সুন্নাতের চার মাযহাবের কোন ফকিহগণ ও মুসলিম পণ্ডিতগণের মধ্যে কেউই মুমিনদের কবর, বিশেষত নবী করীম (সা.)-এর কবর যিয়ারত এবং তা সম্পাদনের উদ্দেশ্যে সফর করাকে শরীয়তগতভাবে অবৈধ মনে করতেন না।[৩১] তার মতে, ইবনে তায়মিয়া (৬৬১-৭২৮ হিজরি) সর্বপ্রথম ব্যক্তি যিনি এই ঐকমত্যের বিরোধিতা করেন এবং যিয়ারতের বৈধতা সম্পর্কে সন্দেহ পোষণ করেন।[৩২] তার দৃষ্টিতে, কবরবাসীদের জন্য সালাম প্রেরণ ও দোয়া করা শরীয়তসম্মত বিষয়; কিন্তু তাদের নিকট কোনো হাযত তথা সাহায্য কামনা করা, তাদেরকে আল্লাহ ও নিজের মধ্যকার মাধ্যম বানানো এবং কোনো হাজত বা মনোবাসনা পূরণের জন্য তাদের নামে কসম দেওয়া একটি অবৈধ কাজ কাজ।[৩৩] তিনি এই ধরনের যিয়ারতকে বিদ‘আতশিরক বলে মনে করেন।[৩৪]

ইবনে তায়মিয়ার কয়েক শতাব্দী পরে, অর্থাৎ হিজরি দ্বাদশ শতাব্দীতে, ওয়াহাবিদের পক্ষ থেকে যিয়ারতের বৈধতার বিরোধিতা পুনরায় উত্থাপিত হয় এবং তারা অদ্যাবধি (হিজরি পঞ্চদশ শতকে) এই আমলকে হারাম মনে করে এবং মুসলমানদেরকে তা করা থেকে বিরত রাখে।[৩৫]

মুসলিম আলেমগণের পক্ষ থেকে ইবনে তায়মিয়া ও ওয়াহাবিগণের দৃষ্টিভঙ্গির সমালোচনা

নববী[৩৬], ইবনে হাজার আসকালানী[৩৭], গাজ্জালী[৩৮], মোল্লা আলী কারী হানাফী[৩৯], শামসুদ্দীন যাহাবী[৪০], জাসসাস[৪১], ইবনে আবেদীন হানাফী[৪২], যারকানী মালেকী[৪৩], ইবনে কুদামাহ হাম্বালী[৪৪] এবং অন্যান্য আহলে সুন্নাতের অধিকাংশ আলেম এ মত পোষণ করেন যে, "হাদীসে শাদ্দু রিহাল", যা ইবনে তায়মিয়া যিয়ারত অবৈধ হওয়ার দলিল হিসেবে পেশ করেছেন[৪৫], তা কবর যিয়ারত -বিশেষ করে নবী করীম (সা.)-এর কবর যিয়ারত- নিষিদ্ধ করার উদ্দেশ্যে বলা হয়নি; বরং তা মসজিদুল হারাম, মসজিদুন নববীমসজিদুল আকসা -এই তিন মসজিদের ফজিলত বর্ণনার উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে।

জাফর সুবহানী বলেছেন যে, কবর যিয়ারত ও কবরবাসীদের কাছে তাওয়াসসুল করার অর্থ এই নয় যে, তারা আল্লাহর অনুমতি ও রহমত ব্যতীত স্বাধীনভাবে যিয়ারতকারী বা তাওয়াসসুলকারীর প্রয়োজন পূরণ করেন, যার ফলে শিরকের উদ্ভব ঘটনেব; বরং এর অর্থ হলো, আল্লাহর নিকট তাদের যে মর্যাদাপূর্ণ স্থান রয়েছে, তার কারণে তাদেরকে মনোবাসনা পূরণের মাধ্যম হিসেবে বান্দা ও আল্লাহর মাঝে স্থান দেওয়া হয়।[৪৬]

যিয়ারতের আদব-শিষ্টাচার

শেখ আব্বাস কুম্মী "মাফাতীহুল জিনান" গ্রন্থে শিয়া ইমামগণ (আ.) থেকে বর্ণিত হাদীসের ভিত্তিতে যিয়ারতের জন্য কিছু আদব-শিষ্টাচারের কথা উল্লেখ করেছেন, যেগুলোর মধ্য হতে নিম্নে কিছু উল্লেখ করা হলো:

  • যিয়ারতের গোসল করা;
  • পবিত্র ও পরিষ্কার পোশাক পরিধান করা;
  • জিহ্বাকে আল্লাহর যিকরে নিযুক্ত রাখা;
  • ওযু অবস্থায় ও দৈহিক পবিত্রতা সহকারে থাকা;
  • যিয়ারতের নামায আদায় করা;
  • কবরের নিকট কুরআন তিলাওয়াত করা;
  • গুনাহমুক্তির জন্য তওবা ও ইস্তিগফার করা;
  • অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা পরিত্যাগ করা;
  • ইমাম হুসাইন (আ.)-এর যিয়ারত ব্যতীত অন্য যিয়ারতে সুগন্ধি ব্যবহার করা;[৪৭]
  • যিয়ারতের সময় কন্ঠস্বর উচ্চ না করা।[৪৮]

সম্পর্কিত রচনাবলী

যিয়ারত ও তার ফজিলত সম্পর্কে রচিত কিছু গ্রন্থ নিম্নরূপ:

  • কামিলুয যিয়ারাত গ্রন্থ: এটি ইবনে কুলাওয়াইহ কুম্মী রচিত একটি হাদীসভিত্তিক গ্রন্থ, যাতে মাসুম ইমামগণ (আ.) থেকে বর্ণিত তাদের কবর যিয়ারতের ফজিলত, সওয়াব, পদ্ধতি ও আদব-শিষ্টাচার সংক্রান্ত হাদীসসমূহ সংকলিত হয়েছে।[৪৯]
  • আল-মাযার ফী কাইফিয়্যাতি যিয়ারাতিন নাবী ওয়াল আইম্মাতিল আতহার, যা "কিতাবুল মাযার" নামে পরিচিত, শহীদে আউওয়াল কর্তৃক রচিত: এই গ্রন্থটির দুটি বিভাগ রয়েছে।[৫০] এর প্রথম বিভাগ যিয়ারতসমূহ সম্পর্কিত এবং আটটি অধ্যায় ও মাসুম ইমামগণের (আ.) যিয়ারতের আদব-শিষ্টাচার ও ফজিলত সম্পর্কে একটি উপসংহারে সমৃদ্ধ।[৫১]
  • তুহফাতুজ যুওয়ার ইলা কবরিন নাবিয়্যিল মুখতার-সুন্নী আলেম ইবনে হাজার হাইসামী (ইন্তিকাল: ৯৭৪ হিজরি) কর্তৃক রচিত। নবী করীম (সা.)-এর কবর যিয়ারত, যিয়ারতের আদব-শিষ্টাচার ও পরবর্তী আমলসমূহ বিষয়ক এই গ্রন্থটি একটি ভূমিকা ও চারটি অধ্যায়ে বিভক্ত।[৫২]
  • কিতাবে আদাবে যিয়ারাত আজ দীদগাহে মাসুমীন (আ.): এটি ফার্সি ভাষায় মুহসিন দীমে কারগরাব ও আবুল ফাযল কাজমী কর্তৃক "ওয়াসাইলুশ শিয়া" গ্রন্থের "বাবুল মাযার" অংশের অনুবাদ।[৫৩]

তথ্যসূত্র

  1. কিয়ানী ফরীদ, "যিয়ারত", পৃ. ৮৪৭।
  2. সুবহানী, "মানশুরে আকায়েদে ইমামিয়া", ১৩৭৬ ফার্সি সন, পৃ. ২৫৪।
  3. মাক্কী, "তারীখুল মাক্কাতিল মুশাররাফাহ ওয়াল মাসজিদিল হারাম", ১৪২৪ হি., পৃ. ৩৩৪; শাওকানী, "নাইলুল আওতার", ১৪১৩ হি., খণ্ড ৫, পৃ. ১১০; যাহাবী, "সিয়ারে আ'লামিন নুবালা", ১৪১৪ হি., খণ্ড ৪, পৃ. ৪৮৪; জাযীরী, "আল-ফিকহু আলাল মাযাহিবিল আরবা'আহ", ১৪১৯ হি., খণ্ড ২, পৃ. ৯৪৬।
  4. মাক্কী, "তারীখুল মাক্কাতিল মুশাররাফাহ ওয়াল মাসজিদিল হারাম", ১৪২৪ হি., পৃ. ৩৩৪; শাওকানী, "নাইলুল আওতার", ১৪১৩ হি., খণ্ড ৫, পৃ. ১১০।
  5. "যিয়ারত, 'আমেলে হায়াত ও হুভিয়্যাতে শিয়া'", সাইটে রূযনামেয়ে কুদস।
  6. «سالانه ۲۸ میلیون نفر زائر حرم امام رضا(ع)», ইরানি সম্প্রচার সংস্থার ওয়েবসাইট।
  7. "তেদাদে নেহায়ীতে যাইরানে আরবাঈনে ইমসাল ২২ মিলিয়ুন নাফার এ'লাম শোদ", সাইটে খাবারগুযারীয়ে মেহের।
  8. মুহাদ্দিসী, "ফারহাঙ্গে 'আশুরা'", ১৩৭৬ ফার্সি সন, পৃ. ২১১।
  9. 'আল্লামা মাজলিসী, "তুহফাতুজ যাইর", ১৩৮৬ ফার্সি সন, পৃ. ৪-৫; মুহাদ্দিসী, "ফারহাঙ্গে 'আশুরা'", ১৩৭৬ ফার্সি সন, পৃ. ২১১।
  10. মুহাদ্দিসী, "ফারহাঙ্গে 'আশুরা'", ১৩৭৬ ফার্সি সন, পৃ. ২১১-২১২।
  11. ইবনে কুলাওয়াইহ, "কামিলুজ যিয়ারাত", মাতবা'আতুস সাদুক, পৃ. ৩০১-৩০৫।
  12. ইবনে কুলাওয়াইহ, "কামিলুজ যিয়ারাত", মাতবা'আতুস সাদুক, পৃ. ৩০৩।
  13. ইবনে কুলাওয়াইহ, "কামিলুজ যিয়ারাত", মাতবা'আতুস সাদুক, পৃ. ৩০৩।
  14. উদাহরণস্বরূপ দেখুন: ইবনে হিব্বান, "আস-সিকাত", ১৪০২ হি., খণ্ড ৮, পৃ. ৪৫৭; আসকালানী, "তাহযীবুত তাহযীব", দার সাদের, খণ্ড ৭, পৃ. ৩৮৮।
  15. ইবনে হিব্বান, "আস-সিকাত", ১৪০২ হি., খণ্ড ৮, পৃ. ৪৫৭।
  16. আসকালানী, "তাহযীবুত তাহযীব", দার সাদের, খণ্ড ৭, পৃ. ৩৮৮।
  17. সাম'আনী, "আল-আনসাব", ১৩৮২ হি., খণ্ড ১২, পৃ. ৪৭৯।
  18. কা'বী, "আল-ইমাম মূসা বিনল কাযিম 'আলাইহিস সালাম সীরাতু ওয়া তারিখু", ১৪৩০ হি., পৃ. ২১৬।
  19. ইবনে শাববাহ, "তারীখুল মাদীনাতিল মুনাওয়ারাহ", ১৪১০ হি., খণ্ড ১, পৃ. ১২০।
  20. সামহুদী, "ওয়াফাউল ওয়াফা", ১৪১৯ হি., খণ্ড ৩, পৃ. ১১২।
  21. সামহুদী, "ওয়াফাউল ওয়াফা", ১৪১৯ হি., খণ্ড ৩, পৃ. ৭৮।
  22. উদাহরণস্বরূপ দেখুন: দারা কুতনী, "সুনানুদ দারা কুতনী", ১৪২৪ হি., খণ্ড ৩, পৃ. ৩৩৪।
  23. কুলাইনী, "আল-কাফী", ১৪০৭ হি., খণ্ড ৪, পৃ. ৫৭৯।
  24. হুররে আমেলী, "|ওয়াসাইলুশ শিয়া", ১৪১৬ হি., খণ্ড ১৪, পৃ. ৩১৯।
  25. উদাহরণস্বরূপ দেখুন: হুররে আমেলী, "ওয়াসাইলুশ শিয়া", ১৪১৯ হি., খণ্ড ১৪, পৃ. ৩১৯-৬০০।
  26. হাকিম নিশাপুরী, "আল-মুস্তাদরাক 'আলাস সহীহাইন", ১৪১১ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৫৩৩।
  27. হুররে আমেলী, "ওয়াসাইলুশ শিয়া", ১৪১৯ হি., খণ্ড ১৪, পৃ. ৪০৮।
  28. ইবনে কুলাওয়াইহ, "কামিলুজ যিয়ারাত", মাকতাবা'আতুস সাদুক, পৃ. ৩৬-৩৭।
  29. উদাহরণস্বরূপ দেখুন: মালিক বিন আনাস, "আল-মুওয়াত্তা", ১৪০৬ হি., খণ্ড ১, পৃ. ১৬৬; সান'আনী, "আল-মুসান্নাফ", ১৪০৩ হি., খণ্ড ৩, পৃ. ৫৭০-৫৭৬।
  30. তাকী উদ্দীন সুবকী, "শিফাউস সিকাম", ১৪১৯ হি., পৃ. ১৬৬-১৬৮।
  31. লাকনৌভী, "ইবারাজুল গায়ি ওয়াকি' ফী শিফাউল 'আয়ি", ইন্তিশারাতে চাশমায়ে ফাইয, পৃ. ৩৭।
  32. লাকনৌভী, "ইবারাজুল গায়ি ওয়াকি' ফী শিফাউল 'আয়ি", ইন্তিশারাতে চাশমায়ে ফাইয, পৃ. ৩৭।
  33. ইবনে তায়মিয়া, "কা'ইদাতুন জালীলাহ ফিত তাওয়াসসুলি ওয়াল ওয়াসীলাহ", ১৪২২ হি., পৃ. ১৫১; ইবনে তায়মিয়া, "মিনহাজুস সুন্নাতিন নাবাবিয়্যাহ", ১৪০৬ হি., খণ্ড ২, পৃ. ৪৩৮ ও ৪৪৪।
  34. ইবনে তায়মিয়া, "কা'ইদাতুন জালীলাহ ফিত তাওয়াসসুলি ওয়াল ওয়াসীলাহ", ১৪২২ হি., পৃ. ১৫১; ইবনে তায়মিয়া, "মিনহাজুস সুন্নাতিন নাবাবিয়্যাহ", ১৪০৬ হি., খণ্ড ২, পৃ. ৪৩৮ ও ৪৪৪।
  35. রিজওয়ানী, "সিলসিলায়ে মাবাহিসে ওয়াহহাবিয়্যাত শিনাসী (যিয়ারাতে পয়গাম্বর ও আউলিয়া)", নাশরে মাশ'আর, পৃ. ৮।
  36. নববী, "সহীহ মুসলিম মা' শরহিল ইমামিন নববী", ১৩৯২ হি., খণ্ড ৯, পৃ. ১৬৭-১৬৮।
  37. ইবনে হাজার আসকালানী, "ফাতহুল বারী", ১৩৭৯ হি., খণ্ড ৩, পৃ. ৬৫।
  38. গাজ্জালী, "ইহয়াউ 'উলুমিদ্দীন", দারুল মা'রিফা, খণ্ড ১, পৃ. ২৪৪।
  39. মুহাম্মাদ কারী, "মিরকাতুল মাফাতীহ", ১৪২২ হি., খণ্ড ২, পৃ. ৫৮৯।
  40. যাহাবী, "সিয়ারে আ'লামিন নুবালা", ১৪১৪ হি., খণ্ড ৯, পৃ. ৩৬৮।
  41. জাসসাস, "আহকামুল কুরআন", ১৩০০ হি., খণ্ড ১, পৃ. ২৯৫।
  42. ইবনে 'আবেদীন, "রাদ্দুল মুখতার", ১৪১২ হি., খণ্ড ২, পৃ. ৬২৭।
  43. যারকানী, "শারহুজ যারকানী", ১৪২৪ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৩৯৬-৩৯৭।
  44. ইবনে কুদামাহ, "আল-মুগনী", ১৩৮৮ হি., খণ্ড ২, পৃ. ১৯৫।
  45. ইবনে তায়মিয়া, "মিনহাজুস সুন্নাতিন নাবাবিয়্যাহ", ১৪০৬ হি., খণ্ড ২, পৃ. ৪৪০।
  46. সুবহানী, "আয়িনে ওয়াহহাবিয়্যাত", নাশরে জামিয়্যাহ মুদার্রিসীন হাওযা 'ইলমিয়া কোম, পৃ. ২৯৯-৩০০।
  47. মুহাম্মাদী রেই শাহরী, "দানেশ নামেয়ে ইমাম হুসাইন", ১৪৩০ হি., খণ্ড ১০, পৃ. ৪৩৫।
  48. কুম্মী, "কুল্লিয়াতে মাফাতীহুল জিনান", ইন্তিশারাতে উসওয়াহ, পৃ. ৩০৬-৩১৩।
  49. ইবনে কুলাওয়াইহ, "কামিলুজ যিয়ারাত", মাতবা'আতুস সাদুক, পৃ. ১৬।
  50. শহীদে আউওয়াল, "আল-মাযার", ১৪১০ হি., পৃ. ৯।
  51. শহীদে আউওয়াল, "আল-মাযার", ১৪১০ হি., পৃ. ৯।
  52. ইবনে হাজার হাইসামী, "তুহফাতুজ যুওয়ার ইলা কবরিন নাবিয়্যিল মুখতার", ১৪১২ হি., পৃ. ৫।
  53. দীমা করগোরাব, কাজমী, "আদাবে যিয়ারত আয দীদগাহে মাসুমীন (আ.)", ১৩৯৪ ফার্সি সন, পৃ. ১২।

গ্রন্থপঞ্জি

  • ইবনে হাজার আসকালানী, আহমাদ বিন আলী, "ফাতহুল বারী শরহে সহীহুল বুখারী", বৈরুত, দারুল মা'রিফাহ, ১৩৭৯ হিজরী।
  • ইবনে তায়মিয়া, আহমাদ বিন আবদুল হালীম, "কা'ইদাতুন জালীলাহ ফিত তাওয়াসসুলি ওয়াল ওয়াসীলাহ", স্থান: অজ্ঞাত, মাকতাবাতুল ফুরকান, ১৪২২ হিজরী।
  • ইবনে তায়মিয়া, আহমাদ বিন আবদুল হালীম, "মিনহাজুস সুন্নাতিন নাবাবিয়্যাহ", সৌদি আরব, জামি'আতুল ইমাম মুহাম্মাদ বিন সাউদ আল-ইসলামিয়া, ১৪০৬ হিজরী।
  • ইবনে হিব্বান, মুহাম্মাদ বিন হিব্বান, "আস-সিকাত", হায়দরাবাদ, মাতবা'আতু মাজলিসি দায়িরাতুল মা'আরিফিল উসমানিয়া, ১৪০২ হিজরী।
  • ইবনে হাজার হাইসামী, আহমাদ বিন মুহাম্মাদ, "তুহফাতুজ যুওয়ার ইলা কবরিন নাবিয়্যিল মুখতার", কায়রো, দারুস সাহাবাহ লিত তুরাস, ১৪১২ হিজরী।
  • ইবনে শাববাহ, আবু যায়েদ উমর, "তারীখুল মাদীনাতিল মুনাওয়ারাহ", কোম, ইন্তিশারাতে দারুল ফিকর, ১৪১০ হিজরী।
  • ইবনে আবেদীন, মুহাম্মাদ আমীন বিন উমর, "রাদ্দুল মুখতার", বৈরুত, দারুল ফিকর, ১৪১২ হিজরী।
  • ইবনে কুদামাহ, আবদুল্লাহ বিন আহমাদ, "আল-মুগনী", কায়রো, মাকতাবাতুল কাহিরাহ, ১৩৮৮ হিজরী।
  • ইবনে কুলুইয়াহ, জা'ফার বিন মুহাম্মাদ, "কামিলুজ যিয়ারাত", তাসহিহে বহরাদ জা'ফারী, কোম, মাতবা'আতুস সাদুক, তারিখ অজ্ঞাত।
  • "তেদাদে নেহায়ীতে যাইরানে আরবাঈনে ইমসাল ২২ মিলিয়ন নাফার এ'লাম শোদ", ওয়েবসাইটে খাবারগুযারীয়ে মেহর, প্রকাশের তারিখ: ১৬ শাহরিওয়ার ১৪০২ ফার্সি সন, পরিদর্শনের তারিখ: ২০ উর্দিবিহেশত ১৪০৩ ফার্সি সন।
  • জাযীরী, আবদুর রহমান, "আল-ফিকহু আলাল মাযাহিবিল আরবা'আহ", বৈরুত, দারুস সাকালাইন, ১৪১৯ হিজরী।
  • জাসসাস, আহমাদ বিন আলী, "আহকামুল কুরআন", বৈরুত, দারুল কুতুবিল ইলমিয়া, ১৪১৫ হিজরী।
  • হাকিম নিশাপুরী, মুহাম্মাদ বিন আবদুল্লাহ, "আল-মুস্তাদরাক 'আলাস সহীহাইন", বৈরুত, দারুল মা'রিফাহ, ১৪১১ হিজরী।
  • হুররে আমিলী, মুহাম্মাদ বিন হাসান, "ওয়াসাইলুশ শিয়া", তাহকিকে সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ রেজা জালালী, কোম, মুআসসাসাতু আলিল বাইত (আ.), ১৪১৬ হিজরী।
  • দীমে কারগরাব, মুহসিন ও আবুল ফাযল কাজমী, "আদাবে যিয়ারত আজ দীদগাহে মাসুমীন (তরজুমায়ে বাবুল মাযারে কিতাবে ওয়াসাইলুশ শিয়া)", মাশহাদ, ইন্তিশারাতে আস্তানে কুদসে রাজাভী, ১৩৯৪ ফার্সি সন।
  • যাহাবী, মুহাম্মাদ বিন আহমাদ, "সিয়ারে আ'লামিন নুবালা", বৈরুত, মুআসসাসাতুর রিসালাহ, ১৪১৪ হিজরী।
  • রিজওয়ানী, আলী আসগর, "সিলসিলায়ে মাবাহিসে ওয়াহহাবিয়্যাত শিনাসী (যিয়ারাতে পয়গাম্বর ও আউলিয়া)", তেহরান, নাশরে মাশ'আর, তারিখ অজ্ঞাত।
  • যারকানী, মুহাম্মাদ বিন আবদুল বাকী, "শারহুজ যারকানী আলা মুওয়াত্তাল ইমাম মালিক", কায়রো, মাকতাবাতুস সাকাফাতিদ দীনিয়্যাহ, ১৪২৪ হিজরী।
  • "সালানেহ ২৮ মিলিয়ন নাফার যায়েরে হারামে ইমাম রেযা (আ.)", ওয়েবসাইটে খাবারগুযারীয়ে সেদা ওয়া সীমা, প্রকাশের তারিখ: ২ মোরদাদ ১৩৯৭ ফার্সি সন, পরিদর্শনের তারিখ: ২৫ উর্দিবিহেশত ১৪০৩ ফার্সি সন।
  • "যিয়ারত, 'আমেলে হায়াত ও হুভিয়্যাতে শিয়া'", ওয়েবসাইটে রূযনামেয়ে কুদস, প্রকাশের তারিখ: ২ তীর ১৪০১ ফার্সি সন, পরিদর্শনের তারিখ: ৪ খোরদাদ ১৪০৩ ফার্সি সন।
  • সুবহানী, জা'ফার, "আয়িনে ওয়াহহাবিয়্যাত", কোম, জামিয়্যাহ মুদার্রিসীন হাওযা 'ইলমিয়া কোম, তারিখ অজ্ঞাত।
  • সুবহানী, জা'ফার, "মানশুরে আকালিদে ইমামিয়া", কোম, মুআসসাসাতুল ইমামিস সাদিক (আ.), ১৩৭৬ ফার্সি সন।
  • সুবকী, তাকীউদ্দীন, আলী বিন আবদুল কাফী, "শিফাউস সিকাম ফী যিয়ারাতে খাইরিল আনাম", তাহকিকে সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ রেজা জালালী, কোম, নাশরে মাশ'আর, চতুর্থ সংস্করণ, ১৪১৯ হিজরী।
  • সাম'আনী, আবদুল করীম বিন মুহাম্মাদ, "আল-আনসাব", তাহকিক: আবদুর রহমান বিন ইয়াহয়া আল-মু'আল্লিমী আল-ইয়ামানী, হায়দরাবাদ, মাজলিসু দায়িরাতিল মা'আরিফিল উসমানিয়া, ১৩৮২ হিজরী।
  • সামহূদী, আলী বিন আবদুল্লাহ, "ওয়াফাউল ওয়াফা বিআখবারি দারিল মুস্তাফা", বৈরুত, দারুল কুতুবিল ইলমিয়া, ১৪১৯ হিজরী।
  • শাওকানী, মুহাম্মাদ বিন আলী, "নাইলুল আওতার", মিসর, দারুল হাদীস, ১৪১৩ হিজরী।
  • শহীদে আউওয়াল, মুহাম্মাদ বিন মাকী, "আল-মাযার", কোম, তাসহিহে মুহাম্মাদ বাকির মাওয়াহিদি আবতাহী, মাদ্রাসায়ে ইমাম মাহদী (আ.), প্রথম সংস্করণ, ১৪১০ হিজরী।
  • সান'আনী, আবু বকর আবদুর রাজ্জাক বিন হাম্মাম, "আল-মুসান্নাফ", ভারত, আল-মাজলিসুল ইলমী, ১৪০৩ হিজরী।
  • আসকালানী, ইবনে হাজার, "তাহযীবুত তাহযীব", বৈরুত, দার সাদের, তারিখ অজ্ঞাত।
  • 'আল্লামাহ মাজলিসী, মুহাম্মাদ বাকির, "তুহফাতুজ যাইর", কোম, মুআসসাসাতে পয়ামে ইমাম হাদী (আ.), ১৩৮৬ ফার্সি সন।
  • গাজ্জালী, আবু হামিদ, "ইহয়াউ 'উলূমিদ্দীন", বৈরুত, দারুল মা'রিফাহ, তারিখ অজ্ঞাত।
  • কারী, আলী বিন মুহাম্মাদ, "মিরকাতুল মাফাতিহ শারহে মিশকাতুল মাসাবীহ", বৈরুত, দারুল ফিকর, ১৪২২ হিজরী।
  • কুম্মী, শেখ আব্বাস, "কুল্লিয়াতে মাফাতিহুল জিনান", কোম, ইন্তিশারাতে উসওয়াহ, তারিখ অজ্ঞাত।
  • কা'বী, আলী মূসা, "আল-ইমাম মূসা বিনল কাযিম 'আলাইহিস সালাম সীরাতু ওয়া তারিখু", স্থান: অজ্ঞাত, মুআসসাসাতুর রিসালাহ, ১৪৩০ হিজরী।
  • কুলাইনী, মুহাম্মাদ বিন ইয়া'কুব, "আল-কাফী", তাহকিকে আলী আকবর গাফারী, তেহরান, ইন্তিশারাতে দারুল ইসলামিয়া, ১৪০৭ হিজরী।
  • কিয়ানী ফরীদ, মারিয়াম, "যিয়ারত", দানিশনামেয়ে জাহানে ইসলাম, তেহরান, বুনয়াদে দায়িরাতুল মা'আরিফিল ইসলামিয়া, ১৩৯৫ ফার্সি সন।
  • লাকনভী, মুহাম্মাদ আবদুল হাই বিন মুহাম্মাদ আবদুল হালীম, "ইবারাজুল গায়ি ওয়াকি' ফী শিফাউল 'আয়ি", স্থান অজ্ঞাত, ইন্তিশারাতে চাশমায়ে ফাইয, তারিখ অজ্ঞাত।
  • মালিক বিন আনাস, "আল-মুওয়াত্তা", বৈরুত, দারু ইহয়াইত তুরাসিল 'আরাবী, ১৪০৬ হিজরী।
  • মুত্তাকী হিন্দী, আলাউদ্দীন আলী বিন হুসামুদ্দীন, "কানযুল 'উম্মাল", বৈরুত, মুআসসাসাতুর রিসালাহ, ১৪০১ হিজরী।
  • মুহাদ্দিসী, জাওয়াদ, "ফারহাঙ্গে 'আশুরা'", কোম, নাশরে মা'রূফ, ১৩৭৬ ফার্সি সন।
  • মাক্কী হানাফী, মুহাম্মাদ বিন আহমাদ বিন মুহাম্মাদ বিন যিয়া, "তারীখুল মাক্কাতিল মুশাররাফাহ ওয়াল মাসজিদিল হারাম", বৈরুত, দারুল কুতুবিল ইলমিয়া, প্রথম সংস্করণ, ১৪১৮ হিজরী।
  • নববী, ইয়াহিয়া বিন শারফ, "সহীহ মুসলিম মা' শারহিল ইমামিন নববী", বৈরুত, দারু ইহয়াইত তুরাসিল 'আরাবী, ১৩৯২ হিজরী।