ওজু

wikishia থেকে

(নিবন্ধটি ফিকাহ সংশ্লিষ্ট একটি বিষয়ের সংজ্ঞা ও সংক্ষিপ্ত পরিচিতি নিয়ে রচিত, অতএব, ধর্মীয় আমলের মানদণ্ড নয়। আমলের লক্ষ্যে অন্য সূত্রের শরণাপন্ন হোন।)

ওজু; একটি ইসলামি বিধান, মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় বিশেষ নিয়ম অনুযায়ী মুখমণ্ডল ও দুই হাত ধোয়া এবং মাথা ও দুই পা মাসাহ করাকে বোঝায়। মূলতঃ ওযু একটি মুস্তাহাব আমল; তবে নামায ও তাওয়াফসহ অপর কিছু আমল সঠিক হওয়ার পূর্বশর্ত। ওজু ছাড়া পবিত্র কুরআনের লেখা এবং আল্লাহর নাম স্পর্শ করা জায়েয নয়। মসজিদে যাওয়া এবং কুরআন তেলাওয়াতের মতো অপর কিছু কাজের জন্য ওজু করা মুস্তাহাব। ঐতিহাসিক কিছু সূত্রের ভিত্তিতে, নবুয়ত ঘোষণার শুরুর দিকে মক্কায় ওজুর বিধান বর্ণিত হয়েছে। সূরা মায়িদাহ’র ৬নং আয়াত এবং মাসুমগণ (আ.) থেকে ৪ শতাধিক রেওয়ায়েত ওজুর বিষয়ে বর্ণিত হয়েছে। ওজু করা এবং ওজু থাকা সত্ত্বেও পূনরায় ওজু করা পাপ মোচন, ক্রোধ প্রশমিত হওয়া, দীর্ঘায়ু, কিয়ামত দিবসে চেহারা উজ্জল হওয়া এবং রুযি বৃদ্ধির কারণ হিসেবে হাদীসে উল্লেখিত হয়েছে।

দুই পদ্ধতি ওজু করা যায়, তারতিবী ও ইরতেমাসী; তারতিবী ওজুতে প্রথমে মুখমণ্ডল, অতঃপর দু’হাত ধৌত করার পর মাথা ও দুই পা মাসাহ করতে হয়। ইরতেমাসী ওজু করার পদ্ধতিও তারতিবী ওজুর ন্যায়। শুধু মুখমণ্ডল ও হাত ধৌত করার পরিবর্তে সেগুলোকে পানির মধ্যে ডুবিয়ে নিয়্ত করতে হয়, অতঃপর মাথা ও দুই পা মাসাহ করতে হয়। যদি কোন ক্ষতস্থানের ব্যান্ডেজ খোলা কষ্টসাধ্য বা ক্ষতিকর হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে জাবিরা ওজু করতে হয়।

ওজুতে হাত ধোয়া এবং মাথা ও পা মাসাহ করার বিষয়ে শিয়া ও সুন্নিরা ভিন্ন মত পোষণ করেন; যেমন- শিয়ারা হাতদ্বয়কে উপর থেকে নীচের দিকে ধৌত করা ওয়াজিব জ্ঞান করেন, অথচ আহলে সুন্নতের বিশ্বাস হাত নীচের থেকে উপরের দিকে ধৌত করতে হবে। বিভিন্ন রেওয়ায়েত থেকে হস্তগত তথ্যের ভিত্তিতে, উমর ইবনে খাত্তাবের খেলাফতকালের শেষ নাগাদ মুসলমানদের মাঝে ওজুতে খুব বড় পার্থক্য ছিল না এবং ওজুতে মুসলমানরা একই পদ্ধতি (ইমামিয়া শিয়ারা যে পদ্ধতিতে ওজু করে থাকে) অনুসরণ করতো। ইসলামি বিভিন্ন সূত্রে শিয়া ও সুন্নিদের মাঝে ওজু সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মতভেদ তৃতীয় খলিফার যুগ থেকে শুরু হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

পরিভাষা পরিচিতি

ওজু হলো, মহান আল্লাহর নৈকট্য অর্জন ও তাঁর নির্দেশ পালনার্থে মুখমণ্ডল ও দুই হাত ধৌত করা এবং মাথা মাসাহ করা (মাথার উপর হাত টানা) এবং বিশেষ পদ্ধতিতে পা মাসাহ করা। [১] নামাযতাওয়াফ সঠিক হওয়ার পূর্বশর্ত হলো ওজু, একইভাবে পবিত্র কুরআনের লেখা স্পর্শ করার জন্য ওজুর শর্ত রয়েছে।[২]

ঐতিহাসিক বিভিন্ন সূত্রের বর্ণনার ভিত্তিতে, ওজুর বিধান মক্কায় নবুয়ত ঘোষণার শুরুতে জীবরাইল (আ.) হযরত মুহাম্মাদকে (স.) শিক্ষা দেন এবং মহানবি (স.) তা মুসলমানদেরকে শেখান। [৩]

ওজুর আহকাম

ওজুর পদ্ধতি এবং এর গুরুত্ব পবিত্র কুরআন ও হাদীসে উল্লেখিত হয়েছে।[৪] ওজুর বিধান সূরা মায়িদাহ’র ৬নং আয়াতে বর্ণিত হয়েছে, এ কারণে আয়াতটিকে ওজুর আয়াত বলা হয়। [৫] ((یا أَیُّها الَّذینَ آمَنوا إِذا قُمتُم إِلَی الصَّلاةِ فَاغسِلوا وُجوهَكُم وَ أَیدیَكُم إِلَی الْمَرافِقِ وَ امسَحوا بِرُءُوسِكُم وَ أَرجُلَكُم إِلَی الكَعبَینِ)) [৬] ‘হে যারা ঈমান এনেছো! যখন তোমরা নামাযে দাঁড়াও তখন তোমাদের মুখমন্ডল ও কনুই পর্যন্ত তোমাদের হাত ধোও, আর তোমাদের মাথা ও গোড়ালি পর্যন্ত তোমাদের পা মাসাহ্ করো’।[৭]

ওজু করা একটি মুস্তাহাব আমল [৮] এবং নামায পড়া (জানাযার নামায ব্যতীত), তাওয়াফ করা, পবিত্র কুরআনের লেখা স্পর্শ করা এবং আল্লাহর নাম স্পর্শ করার জন্য ওজু করা ওয়াজিব। [৯] এহতেয়াতে ওয়াজিবের ভিত্তিতে, মহানবি (স.), ইমামগণ (আ.) ও হযরত ফাতেমা যাহরার (সা. আ.) নাম স্পর্শ করার ক্ষেত্রে ওজু করা আবশ্যক। [১০] কিছু কিছু ক্ষেত্রে ওজু করা মুস্তাহাব, যেমন- মসজিদইমামগণের মাযারে যাওয়া, পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত ও বহন করা, শরীরের কোন অংশ দ্বারা পবিত্র কুরআনের লেখা নেই এমন স্থানসমূহ স্পর্শ করা এবং কবর যেয়ারত করা ইত্যাদি। [১১]

ওজুর শর্তাবলী

  • ওজুর পানি পবিত্র হওয়া (নাজিস না হওয়া)।
  • ওজুর পানি মুযাফ (মিশ্রিত) না হওয়া।
  • ওজুর পানি এবং যে স্থানে ওজু করছে তা জবর দখলকৃত না হওয়।
  • ওজুর পানির পাত্র স্বর্ণ বা রৌপ্য দিয়ে তৈরি না হওয়া।
  • ওজুর অঙ্গ পবিত্র হওয়া।
  • ওজুর অঙ্গে পানি পৌঁছাতে বাধা সৃষ্টি করে এমন কিছু না থাকা।
  • আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের লক্ষ্যে ওজু করা এবং লোক দেখানোর জন্য নয়।
  • তারতীব (পর্যায়ক্রম) ঠিক রাখা।
  • মুওয়ালাত (দ্রুত পর্যায়ক্রম) ঠিক রাখা।
  • ওজু করার জন্য অন্য কারও কাছ থেকে সাহায্য না নেয়া।
  • ওজুর জন্য পর্যাপ্ত সময় হাতে থাকা। [১২]

ওজুর প্রকার

তারতিবী ও ইরতেমাসী -এ দুই পদ্ধতিতে ওজু করা হয় [১৩] এবং বিশেষ পরিস্থিতিতে জাবিরা ওজু আঞ্জাম দিতে হয়। [১৪]

তারতিবী ওজু

তারতিবী ওজু: প্রথমে মুখমণ্ডল ধৌত করা; দৈর্ঘে চুল গজানোর স্থান থেকে চিবুকের নীচের ভাগ পর্যন্ত এবং প্রস্থে বৃদ্ধাঙ্গুল থেকে মধ্যাঙ্গুলের হিসেবে এক বিঘত। অতঃপর প্রথমে ডান হাত, তারপর বাম হাত ধোয়া; কনুইয়ের একটু উপর থেকে আঙ্গুলের মাথা অব্দি। হাত ধোয়ার কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর হাতে থাকা অবশিষ্ট পানি দিয়ে মাথার সামনের ভাগে (সর্বোচ্চ কপালের যেস্থান থেকে চুল গজানো শুরু হয়েছে সে অংশ পর্যন্ত) মাসাহ করা। অতঃপর ঐ একই আর্দ্রতা দিয়ে প্রথমে ডান পা অতঃপর বাম পা মাসাহ করা। [১৫]

ইরতেমাসী ওজু

ইরতেমাসী ওজুতে নিয়্যতের [১৬] পর ওজুর উদ্দেশ্যে প্রথমে মুখমণ্ডল অতঃপর দু’হাত পানিতে ডুবিয়ে দিতে হবে। [আয়াতুল্লাহ বাহজাত সংশ্লিষ্ট ওয়েব সাইটের ‘ওজু’ বিষয়ক বিভাগ।] ইরতেমাসী ওজুর দ্বিতীয় পদ্ধতি হল, প্রথমে মুখমণ্ডল ও দু’হাত পানিতে ডুবিয়ে রেখে ওজুর নিয়্যত করা, অতঃপর পানি থেকে হাত বের করে নেয়া। [[১৭] ইরতেমাসী ওজুতেও মুখমণ্ডল ও দু’হাত ধোয়ার পর মাসাহ’র কাজ আঞ্জাম দিতে হয়। [১৮]

জাবিরা ওজু

জাবিরা ওজু: ওজুতে যে সকল অঙ্গ ধোয়া বা মাসাহ করা হয় সেগুলোর কোনটিতে যদি ক্ষত থাকে বা ভেঙ্গে যায় এবং সেটাকে ধোয়া বা মাসাহ করা সম্ভব না হয়, তবে এক্ষেত্রে সাধারণ পদ্ধতিতেই ওজু আঞ্জাম দিতে হবে, তবে ক্ষতের সৃষ্টি হওয়া বা ভেঙ্গে যাওয়া ঐ অঙ্গ ধোয়া বা মাসাহ করার পরিবর্তে জাবিরার উপর ভেজা হাত টানতে হবে।[১৯] জাবিরা; ক্ষত ঢাকতে ব্যবহৃত কাপড় বা ব্যান্ডেজকে বলা হয়।[২০] জাবিরা ওজু শুধু ঐ অবস্থায় জায়েয যখন ব্যান্ডেজ খোলা কষ্টকর হয় অথবা তা খুললে ক্ষতির কারণ হয় বা সরাসরি ক্ষতের উপর বা ভেঙ্গে যাওয়া অঙ্গের উপর পানি ফেলা সম্ভব না হয়। [২১]

কিছু কিছু অবস্থায় ওজুর পরিবর্তে তাইয়াম্মুম ওয়াজিব হয়; যেমন- নামাযের সময় এতটাই সংকীর্ণ থাকে যে, ওজু করতে গেলে নামাজের কিছু অংশ বা পুরোটাই কাযা হয়ে যাবে। [২২] একইভাবে যেখানে পানি পাওয়া না যায় বা পানি শরীরের জন্য ক্ষতিকর সাব্যস্ত হয়, এ সকল ক্ষেত্রে ওজুর পরিবর্তে তাইয়াম্মুম করতে হয়।[২৩] যে ব্যক্তি জানাবাতের গোসল আঞ্জাম দিয়েছে নামাজ আদায়ের জন্য সে অজু করবে না এবং ঐ গোসল তার ওজুর জন্যও যথেষ্ঠ।[২৪]

কি কি কারণে ওজু ভঙ্গ হয়?

কয়েকটি কারণে ওজু ভেঙ্গে যায়; ফিকাহে’র গ্রন্থসমূহে মুবতিলাতে ওজু (ওজু ভঙ্গকারী কর্মসমূহ)-কে হাদাসে আসগার বলা হয়;[২৫] সেগুলোর কয়েকটি নিম্নরূপ:

  • মল বা মূত্র ত্যাগ অথবা বায়ু সরানো।
  • এমন ঘুম (যাতে না কানে শোনে আর না চোখে দেখে), পাগলামি, বেহুশ ও মাতলামি।[২৬]
  • যে সকল কারণে গোসল ওয়াজিব হয়; যেমন- জানাবাত এবং মাইয়াত স্পর্শ করা (মাসে মাইয়্যাত)।[২৭]

ফাজেল মেকদাদের ভাষ্যানুযায়ী কিছু কিছু সুন্নি ফকীহ’র বিশ্বাস না-মাহরাম নারী ও পুরুষের চামড়ার স্পর্শ ওজু বাতিলের কারণ হয়। দলীল হিসেবে তারা ((أَوْ لامَسْتُمُ النِّسا))[২৮] আয়াতে কাসায়ী’র কারাআতকে উপস্থাপন করেছেন, কাসায়ী এখানে ((لامَسْتُمُ)) এর পরবর্তে ((لمَسْتُمُ)) কারাআত করেছেন, কিন্তু শিয়া ফকীহদের দৃষ্টিতে ((لامَسْتُمُ)) বলতে এখানে সহবাস বোঝানো হয়েছে।[২৯]

শিয়া ও আহলে সুন্নতের ওজুর মধ্যে পার্থক্য

ওজুতে কিভাবে হাত ধুতে হবে, একইভাবে কিভাবে মাথা ও পা মাসাহ করতে হবে এ বিষয়ে শিয়া ও আহলে সুন্নতের মাঝে মত ভিন্নতা রয়েছে।[৩০]

ওজুর বিষয়ে শিয়া ও সুন্নিদের মধ্যকার পার্থক্যগুলো মূলতঃ সূরা মায়িদাহ’র ৬ নং আয়াতকে কি অর্থে গ্রহণ করা হচ্ছে তার উপর ভিত্তি করে, অথবা কারাআত গত পার্থক্যের কারণে।[৩১] মাসুমগণের[৩২] (আ.) রেওয়ায়েতের উপর ভিত্তি করে শিয়াদের বিশ্বাস, আলোচ্য আয়াতে ((وَ أَیدیَكُم إِلَی الْمَرافِقِ)) বাক্যটি উপর থেকে নীচের দিকে ধৌত করা ওয়াজিব হওয়ার প্রতি নির্দেশ করছে। এর বিপরীতে আহলে সুন্নতের ৪ মাযহাব নীচের থেকে উপরের দিকে ধুয়ে থাকে।[৩৩]

শিয়া ফিকাহবিদদের ফতওয়ার ভিত্তিতে হাত ধোয়ার ক্ষেত্রে বাম হাত ধোয়ার আগে ডান হাত ধোয়া জরুরী।[৩৪] অথচ বিষয়টি আহলে সুন্নতের দৃষ্টিতে মুস্তাহাব হিসেবে গন্য।[৩৫]

আহলে সুন্নতের ৪ মাযহাবের দৃষ্টিতে ওজুতে গোড়ালিসহ পা ধৌত করা ওয়াজিব। [৩৬] কিন্তু শিয়াদের দৃষ্টিতে আঙ্গুলের মাথা থেকে পায়ের গোড়ালী বরাবর উঁচু স্থান (পায়ের পাতার সংযোগ স্থল) পর্যন্ত মাসাহ করতে হবে।[৩৭] শিয়া ফিকাহ’র ভিত্তিতে মাথা মাসাহ করার ন্যায় হাতে রয়ে যাওয়া ওজুর অবশিষ্ট পানি দিয়েই পা মাসাহ করতে হবে। [৩৮] মালেকি ও হানাফি মাযহাবের অনুসারীরা ওজুতে তারতীব এবং হানাফি ও শাফেয়ীরা মুওয়ালাতকে ওজুর ওয়াজিব অংশ বলে মনে করে না। কিন্তু শিয়ারা এবং অপর সুন্নি ফির্কাহ’র অনুসারীরা ঐ দু’টিকে মেনে চলা ওয়াজিব জ্ঞান করেন।[৩৯]

মাথা মাসাহ করার ক্ষেত্রেও শিয়া ও সুন্নিদের মত ভিন্ন; যেমন শিয়াদের দৃষ্টিতে মাথার সামনের ভাগে এতটুকু পরিমাণ হাত টানা যথেষ্ট যে, মাসাহ বলা যেতে পারে; আর মুস্তাহাব হলো সর্বোচ্চ তিন আঙ্গুল একত্র করলে যে প্রস্থ দাঁড়ায় সে পরিমাণে, এর অধিক নয়।[৪০] একইভাবে শিয়া ফিকাহ অনুযায়ী, নতুনভাবে পানি না নিয়ে হাত ধৌত করার পর হাতে রয়ে যাওয়া অবশিষ্ট পানি দিয়েই মাথা মাসাহ করা। [৪১] অবশ্য মাসাহ কিভাবে করতে হবে সে বিষয়ে আহলে সুন্নতের মাযহাবসমূহ পরস্পরের সাথে ভিন্ন মত পোষণ করে।[৪২] হাম্বালি মাযহাবের ফিকাহ অনুযায়ী দুই কানসহ সমস্ত মাথা মাসাহ করা ওয়াজিব।[৪৩] এবং এর জন্য নতুনভাবে পানি নেয়া আবশ্যক।[৪৪] মালেকি মাযহাবের ফিকাহ অনুযায়ী সমস্ত মাথায় মাসাহ করতে হবে[৪৫] এবং হানাফি মাযহাবের ফিকাহ অনুযায়ী মাথার এক চতুর্থাংশ মাসাহ করা ওয়াজিব।[৪৬] শাফেয়ী মাযহাব অনুযায়ী যৎসামান্য মাসাহই যথেষ্ঠ এবং নতুন পানি নিয়ে মাসাহ করা আবশ্যক।[৪৭]

জুতার উপর মাসাহ করা আরেকটি বিতর্কিত বিষয়, শিয়াদের দৃষ্টিতে যা সহিহ নয়; [৪৮] এক্ষেত্রে শিয়ারা সূরা মায়িদাহ’র ৬নং আয়াতকে দলীল হিসেবে উপস্থাপন করে থাকে।[৪৯] আর এ মতভেদের কারণেই কিছু কিছু পরিস্থিতিতে শিয়াদেরকে ওজুর সময় তাকিয়্যাহ অবলম্বনও করে আহলে সুন্নতের নিয়ম অনুসারে ওজু করতে হয়।

আব্বাসী খেলাফতে বিশেষ পদের অধিকারী আলী ইবনে ইয়াকতীনের এক চিঠির জবাবে ইমাম কাযিম (আ.) তার উপর এ কর্তব্য ধার্য করেছিলেন যেন তিনি আহলে সুন্নতের নিয়ম অনুসারে ওজু করেন, যাতে হারুনুর রাশিদ তার শিয়া হওয়ার বিষয়টি সম্পর্কে অবগত না হয়।[৫০] এর আগে ইমাম মুসা কাযিম (আ.) শিয়াদের কাজে সাহায্য করার জন্য আলী ইবনে ইয়াকতীনকে আব্বাসী খেলাফতে দায়িত্ব পালন করতে‌ বললেও[৫১] আব্বাসীয়দেরকে সহযোগিতার বিষয়ে অপর শিয়াদেরকে নিষেধ করেছিলেন।[৫২]

উসমানের যুগ থেকে ওজুর বিষয়ে এখতেলাফ

গবেষকদের একটি দল মনে করেন, মহানবির (স.) যুগে ওজুর বিষয়ে মুসলমানদের মাঝে কোন মতভেদ ছিল না[৫৩] এবং মহানবি (স.) পা ধৌত না করে মাসাহ করার মাধ্যমে ওজু সম্পন্ন করতেন।[৫৪] মহানবির (স.) ওফাতের পরও আবু বকরের খেলাফতকালে ওজুতে পার্থক্যের বিষয়ে কোন বর্ণনা পাওয়া যায় নি।[৫৫] উমর ইবনে খাত্তাবের খেলাফতকালে একটি বিষয়ে (জুতার উপর মাসাহ করা) ছাড়া এমন কোন বর্ণনার সন্ধান পাওয়া যায় না যাতে ওজুর বিষয়ে কোন এখতেলাফ উল্লেখ হয়েছে।[৫৬]

কানযুল উম্মাল[৫৭] এবং অপর কিছু গ্রন্থে[৫৮] যা কিছু বর্ণিত হয়েছে তার ভিত্তিতে, কিছু কিছু গবেষকের বিশ্বাস ওজুতে পার্থক্য তৃতীয় খলিফার (উসমান) সময় থেকে মুসলমানদের মাঝে দেখা দেয়।[৫৯][নোট ১ : [নোট: তৃতীয় খলিফা উসমান, মহানবির (স.) ওজু নিজে দেখেছেন এই যুক্তিতে অন্যদের ওজু প্রত্যাখ্যান করেন এবং ঐদিন পর্যন্ত মুসলমানরা মহানবির (স.) শিক্ষার ভিত্তিতে যেভাবে ওজু করতেন তা গ্রহণ না করে এ দাবি তুললেন, যে পদ্ধতিতে তিনি ওজু করছেন তা মানুষের পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ ক্ষমার কারণ হয়।] সাইয়্যেদ আলী শাহরেস্তানি জুতার উপর মাসাহ সঠিক হওয়ার বিষয়ে ইমাম আলী (আ.) ও উমর ইবনে খাত্তাবের মধ্যকার এখতেলাফের ঘটনাকে দলীল হিসেবে উল্লেখ করেছেন, তার মতে উসমান ইবনে আফফানর বিপরীতে দ্বিতীয় খলিফা ওজু করার সময় পা ধৌত করতেন না বরং মাসাহ করতেন।[৬০]

ওজুর আয়াত এবং ওজু সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন রেওয়ায়েতের উপর নির্ভর করে শিয়াদের বিশ্বাস, মহানবি হযরত মুহাম্মাদ (স.) এবং তাঁর সাথীরা বর্তমানে ওজুতে পা মাসাহ করে ইমামিয়া শিয়ারা যেভাবে ওজু করে তাঁদের ওজু ছিল এমনই, এবং আহলে সুন্নতের মত তার পা ধৌত করতেন না।[৬১]

হাত ধৌত করার ক্ষেত্রেও মহানবি (স.) থেকে বিভিন্ন রেওয়ায়েত বর্ণিত হয়েছে, যেগুলো মহানবির (স.) সাথে শিয়াদের ওজুর হুবহু মিল থাকার বিষয়টিকেই প্রমাণ করে; যেমন তিনি হাতদ্বয়কে উপর থেকে নীচের দিকে ধৌত করতেন।[৬২] যে সকল রেওয়ায়েত ওজুতে পা ধৌত করার প্রসঙ্গে দলীল হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে সেগুলো দূর্বল ও ভিত্তিহীন, এছাড়া ওজুর আয়াতের সাথেও সাংঘর্ষিক।[৬৩]

ওজুর আদব, মুস্তাহাব কর্মসমূহ ও ফজিলত

ওজুতে কয়েকটি বিষয় মুস্তাহাব বলে উল্লেখ করা হয়েছে-

  • ওজুর পূর্বে মিসওয়াক করা: ইমাম আলীকে (আ.) করা ওসিয়তে মহানবি (স.) প্রত্যেক ওজুর পূর্বে মিসওয়াক করার প্রতি তাগিদ দিয়েছেন।[৬৪]
  • ওজুর শুরুতে আল্লাহর নাম নেওয়া।[৬৫]
  • কুলি করা ও নাকে পানি দেওয়া[৬৬]
  • ওজুর সময় ওজুর প্রতি মনোযোগী থাকা।
  • ওজুর সময় সূরা কদর তেলাওয়াত করা।
  • ওজুর পানির পাত্র ডান পাশে রাখা।[৬৭]

বর্ণিত বিভিন্ন রেওয়ায়েতের ভিত্তিতে ইমাম আলী ওজু করার সময় বিভিন্ন দোয়া পাঠ করতেন। ঐ সকল রেওয়ায়তে বলা হয়েছে যে, যদি কেউ ওজু করার সময় ঐ দোয়াগুলোকে পাঠ করে মহান আল্লাহর তার ওজুর পানির প্রতিটি ফোঁটা থেকে একজন ফেরেশতা সৃষ্টি করেন -যে মহান আল্লাহর তাসবীহ, তাকদীস এবং তাকবীরে রত থাকে- আর এর সওয়াব কেয়ামত পর্যন্ত ওজুকারী ব্যক্তির নামে লেখা হয়।[৬৮] নিম্নোক্ত দোয়াগুলি ওজুর একেকটি কর্মের সময় পাঠ করা হয়:

  1. ডান হাত দিয়ে বাম হাতে পানি ঢালার সময় বলা : ((الْحَمْدُ للَّهِ الذی جَعَلَ الْماءَ طَهُوراً وَ لَمْ یَجْعلْه نَجِساً)) প্রশংসা সেই আল্লাহর যিনি পানিকে পবিত্র (ও পবিত্রকারী হিসেবে) সৃষ্টি করেছেন এবং নাজিস ও অপবিত্র করেন নি।’[৬৯]
  2. তাহারাত: ((اللَّهُمّ حَصِّنْ فَرْجی و أعِفّهُ وَ َ اسْتُر عَوْرتی و حَرّمها عَلى النّار)) ‘হে আল্লাহ! আমার লজ্জাস্থানকে হারাম থেকে সুরক্ষিত ও পবিত্র রাখো এবং একে ঢেকে রাখো, আর একে আগুনের জন্য হারাম করে দাও।’[৭০]
  3. নাকে পানি দেওয়ার সময়: ((اللّهم لا تُحَرّم عليَّ ريحَ الجنّة و اجعلني ممّن يَشمّ ريحها و طيبها و ريحانها؛)) হে আল্লাহ! বেহেশতের ঘ্রাণকে আমার জন্য হারাম করো না (বেহেশতের ঘ্রাণ থেকে আমাকে বঞ্চিত করো না) এবং আমাকে ঐ লোকদের অন্তর্ভুক্ত করে দাও যারা বেহেশতের ঘ্রাণ এবং এর সুগন্ধি পায়।[৭১]
  4. কুলি করার সময়: ((اللّهمّ أنطق لساني بذكرك و اجعلني ممّن ترضى عنه؛)) হে আল্লাহ! আমার জিহ্বাকে তোমরা স্মরণে মশগুল রাখো এবং আমাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করে দাও যাদের উপর তুমি সন্তুষ্ট।[৭২]
  5. মুখমণ্ডল ধৌত করার সময়: ((اللّهم بيّض وجهي يوم تَسوّد فيه الوجوه و لا تُسَوّد وجهي يوم تبيضّ فيه الوجوه)) হে আল্লাহ! যেদিন মুখমণ্ডলগুলো কালোবর্ণ ধারণ করবে সেদিন আমার মুখমণ্ডলকে উজ্জল করে দাও, আর যেদিন মুখমণ্ডলগুলো উজ্জল হবে সেদিন তুমি আমার মুখমণ্ডলকে কালো করে দিও না।[৭৩]
  6. ডান হাত ধোয়ার সময়: ((اللّهمّ أعطني كتابي بيميني و الخلد بيساري؛)) হে আল্লাহ! আমার আমলনামা আমার ডান হাতে প্রদান করো এবং চিরস্থায়ীত্বকে আমার বাম হাতে।’[৭৪]
  7. বাম হাত ধোয়ার সময়: ((اللّهمّ لا تعطني كتابي بشمالي و لا تجعلها مغلولة إلى عنقي و أعوذ بك من مقطّعات النّيران؛)) ‘হে আল্লাহ! আমার আমলনামাটি আমার বাম হাতে দিও না এবং সেটাকে আমার গলায়ও ঝুলিয়ে দিও না, তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি আগুনের পোশাক থেকে।[৭৫]
  8. মাথা মাসাহ করার সময়: ((اللّهمّ غشّني برحمتك و بركاتك و عفوك؛)) ‘হে আল্লাহ! আমাকে তোমার রহমত, বরকত ও ক্ষমা দিয়ে আচ্ছাদিত করে দাও।’[৭৬]
  9. পা মাসাহ করার সময়: ((اللّهمّ ثبّت قدميّ على الصّراط يوم تزلّ فيه الأقدام و اجعل سعيي فيما يرضيك عنّي؛)) ‘হে আল্লাহ্! যেদিন পাগুলো (পুল) সিরাতে নড়বড়ে ও দোদূল্যমান অবস্থায় থাকবে সেদিন আমার পা-দ্বয়কে দৃঢ় ও অটল রেখো, আর আমার চেষ্টা-প্রচেষ্টাকে ঐ বিষয়গুলোর মাঝে স্থান দাও যেগুলোর মাধ্যমে আমার উপর তুমি সন্তুষ্ট হবে।’

শিয়া ও সুন্নি বিভিন্ন হাদীসের সূত্রে ওজুর আহকাম, বৈশিষ্ট্য ও ফজিলত সম্পর্কে মহানবি (স.) ও শিয়াদের ইমামগণ (আ.) থেকে ৪ শতাধিক রেওয়ায়েত বর্ণিত হয়েছে। ঐ সকল বর্ণনার ভিত্তিতে ওজুর মাধ্যমে পাপ মোচন হয়,[৭৭] রাগ দমে যায়,[৭৮] দীর্ঘায়ু লাভের কারণ হয়,[৭৯] হাশরের দিন চেহারা উজ্জল হয়,[৮০] রুজি বৃদ্ধি পায়।[৮১] এছাড়া, ওজু থাকা সত্ত্বেও পূনরায় ওজু করার বিশেষ ফজিলত[৮২] এবং ওজুকে তওবা’র সাথে তুলনা[৮৩] করে বিভিন্ন রেওয়ায়েত বর্ণিত হয়েছে।

  1. ফাল্লাহ যাদেহ, আহকামে দ্বীন, ১৩৮৬ ফার্সি সন, পৃ. ৪৪-৪৫; হুসাইনি দাশতি, ‘ওজু’ দার মায়ারেফ ও মায়ারীফ, খ. ১০, পৃ. ৩৭০।
  2. ফাল্লাহ যাদেহ, আহকামে দ্বীন, ১৩৮৬ ফার্সি সন, পৃ. ৪৪-৪৫; হুসাইনি দাশতি, ‘ওজু’ দার মায়ারেফ ও মায়ারীফ, খ. ১০, পৃ. ৩৭০।
  3. দ্র: ইবনে হিশাম, আস-সিরাতুন নাবাভিয়্যাহ, দারুল মা’রেফাহ, খ. ১, পৃ. ২৪৪; তাবারী, তারিখুল উমাম ওয়াল মুলুক, ১৩৭৮ হি., খ. ২, পৃ. ৩০৭।
  4. সুবহানী, ওয়াযু দার কিতাব ওয়া সুন্নাত, পৃ. ৪।
  5. মারকাযে ফারহাঙ্গ ওয়া মায়ারেফে কুরআন, দায়েরাতুল মায়ারেফে কুরআন, ১৩৮২ ফার্সি সন, পৃ. ৪০৭-৪০৮।
  6. সূরা মায়িদাহ : ৬।
  7. সূরা মায়িদাহ : ৬।
  8. শেইখ আনসারি, কিতাবুত তাহারাহ, ১৪১৫ হি., খ. ২, পৃ. ৮২।
  9. ফেইয কাশানী, মু’তাসিমুশ শিয়া, ১৪২৯ হি., খ. ১, পৃ. ২৪১।
  10. ১০- ফাল্লাহ যাদেহ, আহকামে দ্বীন, ১৩৮৬ ফার্সি সন, পৃ. ৫০।
  11. ফাল্লাহ যাদেহ, আহকামে দ্বীন, ১৩৮৬ ফার্সি সন, পৃ. ৫০।
  12. তাবাতাবাঈ ইয়াযদি, আল-উরওয়াতুল উসকা, আন-নাশের-মাকতাবাতুল আয়াতিল্লাহিল উজমা আস-সাইয়্যিদ সিস্তানি, খ. ১, পৃ. ১৬৯-১৭০; মাকারেম শিরাজী, রেসালেয়ে আহকামে জাওয়ানান (পেসারান), ১৩৯০ ফার্সি সন, পৃ. ৩৮।
  13. মুআসসেসেয়ে দায়েরাতুল মায়ারেফে ফিকহে ইসলামি, ফারহাঙ্গে ফিকহ, ১৪২৬ হি., খ. ১, পৃ. ৩৪৭।
  14. দ্র: তাবাতাবাঈ ইয়াযদি, আল-উরওয়াতুল উসকা, ১৪১৯ হি., খ. ১, পৃ. ৪৩৬।
  15. দ্র: তাবাতাবাঈ ইয়াযদি, আল-উরওয়াতুল উসকা, ১৪১৯ হি., খ. ১, পৃ. ৩৫৩-৩৬৬।
  16. মীর্যা কুম্মি, জামেউশ শাত্তাত ফী আজবেবাতুস সুওয়ালাত, ১৪১৩ হি., পৃ. ৩২।
  17. ইমাম খোমেনি, তৌযীহুল মাসায়েল, ১৪২৬ হি,. পৃ. ৬১।
  18. খামেনেয়ী, আজবেবাতুল ইস্তিফতাআত, ১৪২৬, পৃ. ২১।
  19. ২০- ফাল্লাহ যাদেহ, দারস নমেয়ে আহকামে মুবতালা বেহে হুজ্জাজ, ১৩৮৯ হি., পৃ. ৩৭ ও ৩৮।
  20. ফাল্লাহ যাদেহ, দারস নমেয়ে আহকামে মুবতালা বেহে হুজ্জাজ, ১৩৮৯ হি., পৃ. ৩৭।
  21. ফাল্লাহ যাদেহ, আহকামে দ্বীন, ১৩৮৬ ফার্সি সন, পৃ. ৪৭-৪৮।
  22. ফাল্লাহ যাদেহ, আহকামে দ্বীন, ১৩৮৬ ফার্সি সন, পৃ. ৪৬।
  23. ইবনে ইদ্রিস হিল্লী, আস-সারায়ের, ১৪১০ হি., খ. ১, পৃ. ১৩৫।
  24. ফাল্লাহ যাদেহ, আহকামে দ্বীন, ১৩৮৬ ফার্সি সন, পৃ. ৫৭।
  25. ফেইয কাশানী, রাসায়েল, ১৪২৯ হি., খ. ২, পৃ. ২২।
  26. তাবাতাবাঈ ইয়াযদি, আল-উরওয়াতুল উসকা, ১৪১৯ হি., খ. ১, পৃ. ৩৩০-৩৩১; ফেইয কাশানী, মু’তাসিমুশ শিয়া, ১৪২৯ হি., খ. ১, পৃ. ২৪১।
  27. ফাল্লাহ যাদেহ, আহকামে দ্বীন, ১৩৮৬ ফার্সি সন, পৃ. ৫১।
  28. সূরা মায়িদাহ : ৬।
  29. ৩০-ফাযেল মেকদাদ, কানযুল ইরফান, ১৪১৯ হি., খ. ১, পৃ. ২৫।
  30. কুম্মি, চেগুনেগিয়ে আঞ্জামে ওয়াযু নাযদে ফারিকাইন (১), পৃ. ২৯-৩০।
  31. হুসাইনি, ওয়াযু আর দিদগাহে মাযাহেবে ইসলামি, পৃ. ৬।
  32. হুসাইনি, ওয়াযু আর দিদগাহে মাযাহেবে ইসলামি, পৃ. ৯।
  33. সাইয়্যেদ সাবেক, ফিকহুস সুন্নাহ, ১৩৯৭
  34. ৩৫-হুসাইনি, ওয়াযু আয দিদগাহে মাযাহেবে ইসলামি, পৃ. ১২
  35. সাইয়্যেদ সাবেক, ১৩৯৭ হি., ফিকহুস সুন্নাহ, ১৩৯৭ হি., খ. ১, পৃ. ৪৮।
  36. সাইয়্যেদ সাবেক, ১৩৯৭ হি., ফিকহুস সুন্নাহ, ১৩৯৭ হি., খ. ১, পৃ. ৪৪।
  37. হুসাইনি, ওয়াযু আয দিদগাহে মাযাহেবে ইসলামি, পৃ. ১১ ও ১২।
  38. হুসাইনি, ওয়াযু আয দিদগাহে মাযাহেবে ইসলামি, পৃ. ১১ ও ১২।
  39. ৪০- হুসাইনি, ওয়াযু আয দিদগাহে মাযাহেবে ইসলামি, পৃ. ১২।
  40. কুম্মি, ফিকহে হাজ্জ; চেগুনেগিয়ে আঞ্জামে ওয়াযু নাযদে ফারিকাইন (৩) মাসাহ, পৃ. ৪৩-৪৪।
  41. কুম্মি, ফিকহে হাজ্জ; চেগুনেগিয়ে আঞ্জামে ওয়াযু নাযদে ফারিকাইন (৩) মাসাহ, পৃ. ৪৫।
  42. কুম্মি, ফিকহে হাজ্জ; চেগুনেগিয়ে আঞ্জামে ওয়াযু নাযদে ফারিকাইন (৩) মাসাহ, পৃ. ৪৫।
  43. কুম্মি, ফিকহে হাজ্জ; চেগুনেগিয়ে আঞ্জামে ওয়াযু নাযদে ফারিকাইন (৩) মাসাহ, পৃ. ৪৬-৪৭।
  44. কুম্মি, ফিকহে হাজ্জ; চেগুনেগিয়ে আঞ্জামে ওয়াযু নাযদে ফারিকাইন (৩) মাসাহ, পৃ. ৪৭।
  45. কুম্মি, ফিকহে হাজ্জ; চেগুনেগিয়ে আঞ্জামে ওয়াযু নাযদে ফারিকাইন (৩) মাসাহ, পৃ. ৪৭-৪৮।
  46. কুম্মি, ফিকহে হাজ্জ; চেগুনেগিয়ে আঞ্জামে ওয়াযু নাযদে ফারিকাইন (৩) মাসাহ, পৃ. ৪৮।
  47. কুম্মি, ফিকহে হাজ্জ; চেগুনেগিয়ে আঞ্জামে ওয়াযু নাযদে ফারিকাইন (৩) মাসাহ, পৃ. ৪৮।
  48. আ’মাদি, আল-মাসহ ফী ওয়াযুইর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলীহ, পৃ. ১৩২।
  49. সুবহানি, সিলসিলাতুল মাসায়েলিল ফিকহিয়্যাহ, কোম, খ. ২, পৃ. ৯-১২।
  50. দ্র: শেইখ মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৩ হি., খ. ২, পৃ. ২২৭-২২৮।
  51. কেশশি, রেজালে কেশশি, ১৪০৯ হি., পৃ. ৪৪১।
  52. কেশশি, রেজালে কেশশি, ১৪০৯ হি., পৃ. ৪৪১।
  53. শাহরেস্তানি, লেমাযাল ইখতিলাফ ফীল ওয়াযু, ১৪২৬ হি,. পৃ. ৩১।
  54. আ’মাদি, আল-মাসহ ফী ওয়াযুইর রাসূল, পৃ. ৮০-৮২।
  55. শাহরেস্তানি, লেমাযাল ইখতিলাফ ফীল ওয়াযু, ১৪২৬ হি,. পৃ. ৩১।
  56. শাহরেস্তানি, লেমাযাল ইখতিলাফ ফীল ওয়াযু, ১৪২৬ হি,. পৃ. ৩২।
  57. মুত্তাকি হিন্দী, কানযুল উম্মাল, ১৪০৬ হি., খ. ৯, পৃ. ৪৪৩, হা. নং ২৬৮৯০।
  58. শাহরেস্তানি, লেমাযাল ইখতিলাফ ফীল ওয়াযু, ১৪২৬ হি,. পৃ. ৩২।
  59. ৬০- শাহরেস্তানি, লেমাযাল ইখতিলাফ ফীল ওয়াযু, ১৪২৬ হি,. পৃ. ৩৩।
  60. বেহবাহানি, মাসহে পা হা দার ওয়াযু, ১৩৯৫ ফার্সি সন, পৃ. ২৬-৪২।
  61. দ্র: হুররে আমেলি, ওসায়েলুশ শিয়া, ১৩৭৪ ফার্সি সন, খ. ১, পৃ. ৩৮৭-৩৯০।
  62. বেহবাহানি, মাসহে পাহা দার ওয়াযু, ১৩৯৫ ফার্সি সন, পৃ. ৩১-৩৩।
  63. শেইখ সাদুক, মান লা ইয়াহযুরুহুল ফাকিহ, ইনতেশারাতে জামে মুদাররেসিন, খ. ১, পৃ. ৫৩।
  64. শেইখ সাদুক, মান লা ইয়াহযুরুহুল ফাকিহ, খ. ১, পৃ. ৩৩, হা. নং ৮৭।
  65. হুররে আমেলি, ওসায়েলুশ শিয়া, ১৩৭৪ ফার্সি সন, খ. ১, পৃ. ৩৯৬, হা. নং ১০৩৬ এবং পৃ. ৩৯৭, হা. নং ১০৩৮।
  66. তাবাতাবায়িয়ে ইয়াযদি, আল উরওয়াতুল উসকা, ১৪১৭ হি., খ. ১, পৃ. ৩৬৮-৩৭০।
  67. কুলাইনি, ফুরুয়ে কাফি, ১৩৮৮ ফার্সি সন, খ. ১, পৃ. ১৮৪।
  68. কুলাইনি, ফুরুয়ে কাফি, ১৩৮৮ ফার্সি সন, খ. ১, পৃ. ১৮২।
  69. ৭০-কুলাইনি, ফুরুয়ে কাফি, ১৩৮৮ ফার্সি সন, খ. ১, পৃ. ১৮২।
  70. কুলাইনি, ফুরুয়ে কাফি, ১৩৮৮ ফার্সি সন, খ. ১, পৃ. ১৮৩।
  71. কুলাইনি, ফুরুয়ে কাফি, ১৩৮৮ ফার্সি সন, খ. ১, পৃ. ১৮৩।
  72. কুলাইনি, ফুরুয়ে কাফি, ১৩৮৮ ফার্সি সন, খ. ১, পৃ. ১৮৩।
  73. কুলাইনি, ফুরুয়ে কাফি, ১৩৮৮ ফার্সি সন, খ. ১, পৃ. ১৮৩।
  74. কুলাইনি, ফুরুয়ে কাফি, ১৩৮৮ ফার্সি সন, খ. ১, পৃ. ১৮৩।
  75. কুলাইনি, ফুরুয়ে কাফি, ১৩৮৮ ফার্সি সন, খ. ১, পৃ. ১৮৩।
  76. কুলাইনি, ফুরুয়ে কাফি, ১৩৮৮ ফার্সি সন, খ. ১, পৃ. ১৮৪।
  77. ৮০- গাজ্জালি, এহইয়াউ উলুমিদ্দিন, দারুল কিতাবিল আরাবি, খ. ২, পৃ. ৪৮।
  78. মুহাদ্দেস নুরি, মুসতাদরাকুল ওয়াসায়েল, ১৪০৭ হি., খ. ১, পৃ. ৩৫৩।
  79. শেইখ মুফিদ, আল-আমালি, ১৪০৩ হি., খ. ১, পৃ. ৬০, হা. নং ৫।
  80. মাগরেবি, দায়ায়েমুল ইসলাম, ১৩৮৫ হি., খ. ১, পৃ. ১০০।
  81. মুত্তাকি হিন্দি, কানজুল উম্মাল, ১৪০৫ হি., খ. ১৬, পৃ. ১২৯, হা. নং ৪৪১৫৪।
  82. শেইখ সাদুক, মান লা ইয়াহযুরুহুল ফাকিহ, জামে মুদাররিসিনে হাউজা ইলমিয়াহ কোম, খ. ১, পৃ. ৪১।
  83. হুররে আমেলি, ওসায়েলুশ শিয়া, আলুল বাইত, খ. ১, পৃ. ৩৭৭।

গ্রন্থপঞ্জি

  • আমাদি, মুহাম্মাদ হাসান, আল-মাসহ ফী ওয়াদুইর রাসূল: দিরাসাতু মুকারানাহ বাইনাল মাযাহিবিল ইসলামিয়াহ, বৈরুত, দারুল মুস্তাফা লি-ইহিয়াইত তুরাস, ১৪২০ হি.।
  • ইবনে ইদ্রিস হিল্লী, মুহাম্মাদ ইবনে মানসুর, আস-সারাইরুল হাভি লিতাহরীরীল ফাতাভি, কোম, হাওযা ইলমিয়ার জামেয়ে মুদাররেসীন সংশ্লিষ্ট দাফতারে ইন্তেশারাতে ইসলামি, ১৪১০ হি.।
  • ইবনে হিশাম, আব্দুল মালেক, আস-সিরাতুন নাবাভিয়াহ, তাহকীক: মুস্তাফা সাক্কা ও ইব্রাহিম আল-আবিয়ারি ও আব্দুল হাফিয শিবলি, বৈরুত দারুল মা’রেফাহ।
  • বেহবাহানী, আব্দুল কারিম, মাসহে পা-হা দার ওয়াযু, কোম, আহলে বাইত (আ.) বিশ্বসংস্থা, ১৩৯৫ হি.।
  • পয়ান্দেহ আবুল কাসেম, নাহজুল ফাসাহাহ, তাহকীক: সাইয়্যেদ হাশেম রাসূলি মাহাল্লাতি, দুনিয়ায়ে দানেশ প্রকাশনী।
  • হুররে আমেলী, মুহাম্মাদ ইবনে হাসান, তাফসীলূ ওয়াসায়েলিশ শিয়াহ ইলা তাহসীলু মাসাইলিশ শারিয়াহ, কোম, মুআসসাসাতু আলিল বাইত লি-ইহিয়াইত তুরাস, ১৪১৬ হি./১৩৭৪ ফার্সি সন।
  • হুসাইনি দাশতি, সাইয়্যেদ মুস্তাফা, ‘ওয়াযু’, দার মাআরেফ ওয়া মায়ারিফ, খ. ১০, তেহরান, আরায়েহ কালচারাল ইন্সটিটিউট, ১৩৭৯ ফার্সি সন।
  • হুসাইনি, হামিদ, ‘ওয়াযু আয দিদগাহে মাযাহেবে ইসলামি’, মুতালেআতে তাকরীবিয়ে মাযাহেবে ইসলামি পত্রিকা, সংখ্যা ১৭।
  • সুবহানী, জাফার, ওয়াযু দার কিতাব ওয়াস সুন্নাত, ফিকহে আহলে বাইত পত্রিকা, ১৩৮৩ (গ্রীস্মকাল)।
  • সুবহানী, জাফার, সিলসিলাতু মাসায়েলিল ফিকহিয়াহ, কোম।
  • সাইয়্যেদ সাবেক, ফিকহুস সুন্নাহ, বৈরুত, দারুল কিতাবিল আরাবি, ১৩৯৭ হি.।
  • শাহরিস্তানি, সাইয়্যেদ আলী, লিমাযাল ইখতিলাফ ফিল ওয়াদ্বু, তেহরান, মাশআর প্রকাশনী, ১৪২৬ হি.।
  • শেইখ আনসারী, মুর্তাযা ইবনে মুহাম্মাদ আমিন, কিতাবুত তাহারাহ, কোম, শেইখ আনসারি ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস ১৪১৫ হি.।
  • শেইখ সাদুক, মুহাম্মাদ ইবনে আলী, মান লা ইয়াদ্বুরুহল ফাকীহ, তাসহীহ: শাইখ হুসাইন আ’লামি, বৈরুত, মুআসসাসাতুল আ’লামি লিল-মাতবুআত, ১৪০৬ হি.।
  • শেইখ মুফিদ, মুহাম্মাদ ইবনে মুহাম্মাদ, আল-আমালী, তাহকীক: আলী আকবার গাফফারী, কোম, জামেয়ে মুদাররেসীন প্রকাশনী, ১৪০৩ হি./১৩৬২ ফার্সি সন।
  • শেইখ মুফিদ, মুহাম্মাদ ইবনে মুহাম্মাদ, আল-ইরশাদ ফি মা’রিফাতি হুজাজিল্লাহি আলাল ইবাদ, তাসহীহ: মুআসসাসাতু আলিল বাইত, কোম, শেইখ মুফিদ কংগ্রেস, ১৪১৩ হি.।
  • তাবাতাবাঈ ইয়াযদি, সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ কাযেম, আল-উরওয়াতুল উসকা, ফি মা তাউম্মু বিহিল বালওয়া (আল-মামুহাশ্শা), তাহকীক: আহমাদ মুহসেনি সাবযেওয়ারি, কোম, হাওযা ইলমিয়ার জামেয়ে মুদাররেসীন সংশ্লিষ্ট দাফতারে ইন্তেশারাতে ইসলামি, ১৪১৯ হি.।
  • তাবাতাবাঈ ইয়াযদী, সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ কাযেম, আল-উরওয়াতুল উসকা, আয়াতুল্লাহ আল-উজমা সাইয়্যেদ আলী সিস্তানির কার্যালয়।
  • তাবারি, মুহাম্মাদ ইবনে জারির, তারিখুল উমাম ওয়াল মুলুক, তাহকীক: মুহাম্মাদ আবুল ফাযল ইব্রাহিমী, বৈরুত, দারুত তুরাস, ১৩৮৭/১৯৬৭ খ্রি.।
  • আইয়াশি, মুহাম্মাদ ইবনে মাসউদ, তাফসীরে আইয়াশি, তাহকীক: হাশেম রাসূলি মাহাল্লাতি, আল-মাকতাবাতুল আলামিয়াতুল ইসলামিয়াহ।
  • গাযযালী, মুহাম্মাদ ইবনে মুহাম্মাদ, ইহিয়াউ উলুমিদ্দীন, তাহকীক: আব্দুর রাহিম ইবনে হুসাইন হাফেয ইরাকী, ভূমিকা- মুহাম্মাদ খিযর হুসাইন, দারুল কিতাবিল আরাবি।
  • ফাযেল মিকদাদ, মিকদাদ ইবনে আব্দুল্লাহ, কানযুল ইরফান ফী ফিকহিল কুরআন, তাহকীক: সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ কাযী, ইসলামি মাযহাবসমূহ একত্রীকরণ বিষয়ক বিশ্বসংস্থা, ১৪১৯ হি.।
  • ফাল্লাহ যাদেহ, মুহাম্মাদ হুসাইন, আহকামে দ্বীন (বিশিষ্ট মারজাগণের ফতওয়ার ভিত্তিতে রচিত), তেহরান, মাশআর প্রকাশনী, ১৩৮৬ ফার্সি সন।
  • ফাল্লাহ যাদেহ, মুহাম্মাদ হুসাইন, দারসনামেয়ে আহকামে মুবতালা বেহে হুজ্জাজ, তেহরান, মাশআর প্রকাশনী, ১৩৮৯ ফার্সি সন।
  • ফাইয কাশানী, মুহাম্মাদ মুহসেন, রাসায়েলে ফাইযে কাশানী, তাহকীক: বেহযাদ জাফারি, তেহরান, শহীদ মুতাহহারি মাদ্রাসা, ১৪২৯ হি.।
  • ফাইয কাশানী, মুহাম্মাদ মুহসেন, মু’তাসিমুশ শিয়া ফি আহকামিশ শারিয়াহ, তাসহীহ: মাসীহ তাওহিদী, তেহরান, শহীদ মুতাহহারি মাদ্রাসা, ১৪২৯ হি.।
  • কুম্মি, আলী, ‘চেগুনেগিয়ে আঞ্জামে ওয়াযু নাযদে ফারিকাইন (১), মীকাতে হাজ্জ পত্রিকা, সংখ্যা ৮৭ ও ৮৮ ১৩৯৩ (বসন্ত ও গ্রীস্মকাল)।
  • কুম্মি, আলী, ‘চেগুনেগিয়ে আঞ্জামে ওয়াযু নাযদে ফারিকাইন (৩), মীকাতে হাজ্জ পত্রিকা, সংখ্যা ৯০, ১৩৯৩ (শীতকাল)।
  • কেশশি, মুহাম্মাদ ইবনে উমার, রিজালে কেশশি, মাশহাদ, মাশহাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশনা বিভাগ, ১৪০৯ হি.।
  • মুআসসাসাতু দায়েরাতুল মায়ারেফে ফিকহে ইসলামি, ফারহাঙ্গে ফিকহ (আহলে বাইতের মাযহাব ভিত্তিক), সাইয়্যেদ মাহমুদ হাশেমি শাহরুদির তত্ত্বাবধানাধীন, কোম, মুআসসাসাতু দায়েরাতুল মায়ারেফে ফিকহে ইসলামি, ১৪২৬ হি.।
  • মুত্তাকী হিন্দী, আলী ইবনে হিসামুদ্দীন, কানযুল উম্মাল ফী সুনানিল আকওয়ালি ওয়াল আফয়াল, তাফসীর ও তাসহীহ: বাকরি হাইয়ানি ও সাফওয়াতুস সাক্কা, বৈরুত, মুআসসাসাতুর রিসালাহ, ১৪০৫ হি.।
  • মুহাদ্দেস নূরি, হুসাইন, মুস্তাদরাকুল ওয়াসায়েল, কোম, মুআসসাসাতু আলিল বাইত লিইহিয়াইত তুরাস, ১৪০৭ হি.।
  • মারকাযে ফারহাঙ্গ ওয়া মায়ারেফে কুরআন, দায়েরাতুল মায়ারেফে কুরআনে কারিম, কোম, বুস্তানে কিতাব প্রকাশনী, ১৩৮২ ফার্সি সন।
  • মাগরেবী, কাযী নো’মান, দায়ায়েমুল ইসলাম, মুআসসাসাতু আলিল বাইত, ১৩৮৫ ফার্সি সন।
  • মাকারেম শিরাযী, নাসের, রেসালেয়ে আহকামে জাওয়ানান, ১৩৯০ ফার্সি সন।
  • মুসাভি খোমেনি, সাইয়্যেদ রুহুল্লাহ, তৌযিহুল মাসায়েল (মুহাশ্শ), তাহকীক: সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ হুসাইন বানি হাশেমি, কোম, হাওযা ইলমিয়ার জামেয়ে মুদাররেসীন সংশ্লিষ্ট দাফতারে ইন্তেশারাতে ইসলামি, ১৪২৪ হি.।