কবর জিয়ারত
কবর জিয়ারত বলতে বুঝায় মৃত ব্যক্তিদের সমাধির নিকট উপস্থিত হয়ে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন। মুসলিম পণ্ডিতগণ কুরআনের আয়াত ও হাদীস অনুসরণ করে, বিশেষত নবী-রাসূল ও সৎকর্মশীল ব্যক্তিদের কবর জিয়ারতকে একটি বৈধ কর্ম হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন এবং এর জন্য অনেক ফজিলত ও কল্যাণের কথা বর্ণনা করেছেন। অবশ্য, ওহাবীরা কবর জিয়ারতকে হারাম জ্ঞান করেন। ওহাবীরা ব্যতীত অন্যান্য মুসলিম ফকীহগণ একমত পোষণ করেন যে, পুরুষদের জন্য কবর জিয়ারত মুস্তাহাব; তবে নারীদের জন্য এর বিধান নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। অধিকাংশ ইমামীয় পণ্ডিতগণ নারীদের জন্য কবর জিয়ারত পুরুষদের ন্যায় মুস্তাহাব বলে ফতোয়া দিয়েছেন। অন্যদিকে আহলে সুন্নতের ওলামাদের মাঝে প্রসিদ্ধ মত হলো, নারীদের জন্য কবর জিয়ারত মাকরূহ।
পরিভাষা পরিচিতি ও অবস্থান
কবর জিয়ারত বলতে মৃত ব্যক্তির সমাধির নিকট উপস্থিত হয়ে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন বুঝায়। ধর্মীয় পরিভাষায়ও নবী-রাসূল, ইমাম (আ.), ইমামজাদাগণ এবং সৎকর্মশীল ব্যক্তিদের সমাধিস্থলে বিশেষ কিছু রীতির সাথে—যেমন শ্রদ্ধা নিবেদন, তাওয়াস্সুল (উসিলা করা) ও বরকত লাভের উদ্দেশ্যে—উপস্থিত হওয়াকে কবর জিয়ারত বলা হয়।[১] বলা হয়ে থাকে, মৃত ব্যক্তিবর্গ—বিশেষত মহান ব্যক্তিদের—কবরের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের প্রথা অত্যন্ত প্রাচীন। বিশ্ববাসী সুদূর অতীত থেকেই তাদের মৃতদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতেন এবং তাদের কবরসমূহ জিয়ারত করতে যেতেন।[২] জাফর সোবহানীর বর্ণনা অনুযায়ী, ইসলামী সংস্কৃতিতেও নবী করীম (সা.), তাঁর আহলে বাইত (আ.) ও মুমিনদের কবর জিয়ারত ইসলামী সংস্কৃতির মৌলিক নীতিসমূহের অন্তর্ভুক্ত।[৩]
আরাক শহরের একটি কবরস্থানে সৌরবর্ষের শেষ বৃহস্পতিবার নামাজের পর মুসল্লিদের কবর জিয়ারতের দৃশ্য (১৪৪২ হি./১৩৯৯ সৌরবর্ষের ২৮ই এসফান্দ)
হাম্বালি মাযহাবের বিশিষ্ট ফকীহ ও ইতিহাসবেত্তা যিয়াউদ্দীন মাকদিসী (ইন্তেকাল: ৬৬৩ হি.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, কিছু কিছু রেওয়ায়েতের সনদসহ উল্লেখ করেছেন যে, মুসলমানগণ সর্বযুগে ও সর্বত্র কবর জিয়ারত করতে যেতেন এবং তাদের মৃতদের জন্য কুরআন তিলাওয়াত করতেন। তিনি এই রীতিকে একটি ইজমা জ্ঞান করেছেন এবং বলেছেন যে, কেউ কখনো এটাকে অস্বীকার করেনি।[৫] ইরানের মতো কিছু মুসলিম দেশে প্রতি বৃহস্পতি ও শুক্রবারে মৃতদের কবর জিয়ারত একটি প্রচলিত ও স্বীকৃত প্রথা। ফাতিহা পাঠ, কুরআন তিলাওয়াত, কবরপ্রস্তর ধৌতকরণ, মোমবাতি প্রজ্জ্বলন, কবরে পুষ্পার্পণ, দান-খয়রাত ও নযর বিতরণ এবং এর সওয়াব মৃতদের প্রতি উৎসর্গ করা... ইত্যাদি এমন কিছু রীতি যা মানুষ তাদের মৃতদের কবর জিয়ারতকালে সম্পাদন করে থাকে।[৬]
কবর জিয়ারতের বৈধতা ও প্রভাব
মুসলিম পণ্ডিতগণ কুরআনের আয়াত ও হাদীস অনুসরণ করে, বিশেষত নবী-রাসূল ও সৎকর্মশীল ব্যক্তিদের কবর জিয়ারতকে একটি বৈধ কর্ম হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন এবং এর জন্য অনেক ফজিলত ও কল্যাণের কথা বর্ণনা করেছেন। [৭] মৃত্যু ও পরকালের স্মরণ,[৮] আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নৈকট্য হাসিল,[৯] এবং হৃদয়ের কোমলতা ও নমনীয়তা[১০] এসব কবর জিয়ারতের উল্লেখযোগ্য প্রভাব হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। এছাড়াও বলা হয়েছে যে, কবর জিয়ারতের মাধ্যমে জিয়ারতকারী তার জীবন ক্ষণস্থায়ী হওয়ার বিষয়টি স্মরণ করতে সক্ষম হন এবং হতে পারে, এই স্মরণই তাকে নৈতিক বিধি-নিষেধ মেনে চলতে প্রেরণা যোগাবে। তদুপরি, কবরবাসীগণও তাদের জন্য জিয়ারতকারীদের পক্ষ থেকে করা দু‘আ ও ক্ষমাপ্রার্থনা থেকে উপকৃত হন।[১১]
ইমাম সাদিক (আ.) থেকে বর্ণিত এক হাদীসে উল্লিখিত হয়েছে যে, “তোমরা মু’মিনিন ও মু’মিনাতদের কবর যিয়ারত করো; কারণ তারা তোমাদের সান্নিধ্য পায় এবং তোমরা দূরে সরে গেলে তারা শঙ্কিত হয়ে পড়ে।”[১২] এছাড়াও তাঁর থেকে বর্ণিত অপর একটি রেওয়েতে এসেছে যে, “তোমরা তোমাদের মৃতদেরকে জিয়ারত করো; কারণ তোমাদের জিয়ারতে তারা আনন্দিত হয় এবং তোমাদের প্রত্যেকে নিজের পিতা-মাতার কবরের পাশে তাদের জন্য দু‘আ করার পর নিজের হাজত তথা চাহিদা পেশ করবে।”[১৩]
বৈধতার দলিল
কবর জিয়ারতের বিশেষ করে, নবী করীম (সা.) ও মুমিনদের কবর জিয়ারতের বৈধতা প্রমাণে মুসলিম পণ্ডিতগণ নিম্নোক্ত দলীলসমূহ পেশ করেছেন:
- কুরআন: সূরা তাওবার ৮৪ নং আয়াতে মুনাফিকদের জানাযার নামায পড়া, তাদের জন্য দু‘আ করা এবং তাদের কবরের পাশে দাঁড়াতে নবী করীম (সা.)-কে নিষেধ করার ঘটনা উল্লেখিত হয়েছে।[১৪] মুফাসসিরগণের মতানুসারে, মুনাফিকদের জানাযার নামাজ ও তাদের কবরের পাশে দাঁড়াতে নিষেধ করার মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে, কবরের পাশে দাঁড়ানো ও দু‘আ পাঠ করা একটি বৈধ ইবাদত; অন্যথায় আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কেবল মুনাফিকদের কবরের ক্ষেত্রেই এ কাজ করতে নিষেধ করতেন না।[১৫]
- মহানবী (সা.)-এর সুন্নত: ইসলামের প্রাথমিক যুগ থেকেই কবর জিয়ারত একটি বৈধ ও প্রচলিত আমল হিসেবে স্বীকৃত। ইবনে শাব্বাহ তার ‘তারীখুল মাদীনাতুল মুনাওওয়ারাহ’ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন যে, নবী করীম (সা.) মক্কা বিজয়ের পর মদীনায় প্রত্যাবর্তনকালে তাঁর মাতা আমেনার কবর জিয়ারত করেন এবং বলেন: “এটি আমার মাতার কবর; আমি আল্লাহর নিকট তাঁর কবর জিয়ারতের অনুমতি প্রার্থনা করেছিলাম এবং তিনি আমাকে এ কাজের অনুমতি দিয়েছেন।”[১৬] এছাড়াও বর্ণিত আছে যে, তিনি উহুদ যুদ্ধে শহীদগণের[১৭] কবর জিয়ারত এবং মুমিনদের কবর জিয়ারতের জন্য বাকী‘ কবরস্থানে গমন করতেন।[১৮]
- মা‘সূম ইমামগণের (আ.) সীরাত: ঐতিহাসিক সূত্রসমূহে, কবর জিয়ারত সংক্রান্ত ইমামগণের (আ.) বহু ব্যবহারিক রীতি বর্ণিত হয়েছে।[১৯] উদাহরণস্বরূপ, বর্ণিত আছে যে, হযরত ফাতিমা যাহরা (সা.) প্রতি শুক্রবার হামযাহ ইবনে আবদুল মুত্তালিবের কবর জিয়ারত করতেন, সেখানে সালাত আদায় করতেন এবং ক্রন্দন করতেন।[২০] ইমাম বাকির (আ.) থেকে বর্ণিত, ইমাম হুসাইন (আ.) প্রতি শুক্রবার রাতে ইমাম হাসান (আ.)-এর কবর জিয়ারত করতেন।[২১] ইমাম রেযা (আ.) থেকে বর্ণিত একটি রেওয়ায়েতে উল্লেখিত হয়েছে যে, ইমাম সাজ্জাদ (আ.) ইমাম আলী (আ.)-এর কবর জিয়ারত করতেন, কবরের পাশে দাঁড়াতেন, ক্রন্দন করতেন এবং সালাম পেশ করতেন।[২২] এছাড়া শিয়া হাদীসের সূত্রসমূহে নবী করীম (সা.), শিয়া ইমামগণ (আ.) ও মুমিনদের কবর জিয়ারতের ফজিলত ও মুস্তাহাব হওয়া সংক্রান্ত বহু হাদীস বর্ণিত হয়েছে।[২৩]
- সাহাবা ও তাবেয়ীদের আমল: ঐতিহাসিক ও রেওয়ায়েতভিত্তিক সূত্রসমূহে বিভিন্ন সাহাবা ও তাবেয়ী কর্তৃক কবর জিয়ারতের বহু ঘটনা বর্ণিত হয়েছে, যা প্রমাণ করে যে তাদের নিকট কবর জিয়ারত বৈধ কর্ম ছিল।[২৪]
- আলেমগণের ইজমা: নবী করীম (সা.)-এর কবর, মুমিন ও সৎকর্মশীল ব্যক্তিদের কবর জিয়ারতের বৈধতা সম্পর্কে মুসলিম পণ্ডিতদের মধ্যে ইজমা বা পূর্ণ ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।[২৫] মালিকী মাযহাবের প্রখ্যাত আলিম ও ফকীহ কাজী ইয়ায (মৃত্যু: ৫৪৪ হি.) اَلشِّفاء بتعریفِ حقوقِ المصطفی ‘আশ-শিফা বিতাআরীফে হুকূকিল মুস্তাফা’ নামক গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন যে, নবী করীম (সা.)-এর কবর জিয়ারত ইসলামের একটি ফজিলতপূর্ণ ও সুপ্রতিষ্ঠিত সুন্নাত, যার বৈধতা সম্পর্কে সমগ্র মুসলিম উম্মাহ ইজমা তথা ঐকমত্য পোষণ করেছেন।[২৬]
- মুসলমানদের রীতি: নবী করীম (সা.)-এর যুগ থেকেই মুসলমানদের মধ্যে মুমিনদের কবর জিয়ারত ও তাদের জন্য দু‘আ করার রীতি চলে আসছে।[২৭] হিজরী ষষ্ঠ শতকের বিশিষ্ট সুন্নি ফকীহ আবু বকর কাশানী, মহানবী (সা.)-এর এই হাদীসটি, «نَهَيْتُكُمْ عَنْ زِيَارَةِ الْقُبورِ فَزُوروهَا » “পূর্বে আমি তোমাদেরকে কবর জিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম; কিন্তু এখন থেকে তোমরা কবর জিয়ারত কর,”[২৮] উদ্ধৃত করে বলেন যে, নবী করীম (সা.) কর্তৃক কবর জিয়ারতের অনুমতি প্রদানের পর মুসলমানগণ এটিকে বৈধ আমল হিসেবে বিবেচনা করেন এবং তৎকাল থেকে আজ পর্যন্ত তারা এ রীতিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে পালন করে আসছে।[২৯]
কবর জিয়ারতের আদব-শিষ্টাচার
ইরানের একটি কবরস্থানে "কবরবাসীকে সালাম" সংবলিত সাইনবোর্ড স্থাপন (২০১৯ খ্রি.) [৩০]
নবী করীম (সা.) ও মা‘সূম ইমামগণের (আ.) সুন্নতের আলোকে মুসলিম পণ্ডিতগণ কবর জিয়ারতের জন্য কিছু আদব ও মুস্তাহাব কর্মসমূহের বর্ণনা করেছেন, যা নিম্নরূপ:
- বৃহস্পতিবার, বিশেষ করে ঐ দিন সন্ধ্যার সময় কবর জিয়ারতে যাওয়া; [৩১] · কবরের উপর হাত রাখা এবং কিবলামুখী হয়ে দাঁড়ানো; [৩২]
- সূরা কদর সাতবার তিলাওয়াত করা; [৩৩]
- আয়াতুল কুরসী ও তিনবার সূরা ইখলাস পাঠ করা; [৩৪]
- সূরা ফাতিহা ও মু‘আওউয়িযাতাইন (সূরা ফালাক ও সূরা নাস) তিলাওয়াত করা; [৩৫]
- কবরের উপর পানি ছিটানো বা প্রবাহিত করা; [৩৬]
- কবরবাসীর জন্য দু‘আ ও রহমত কামনা করা। [৩৭]
- মৃতদেরকে সালাম প্রদান: মুমিনদের কবর জিয়ারতের আদব বর্ণনা প্রসঙ্গে ‘আল্লামা মাজলিসী তার বিহারুল আনোয়ার গ্রন্থে একটি হাদীস উল্লেখ করেন, যেখানে বর্ণিত হয়েছে যে, ইমাম আলী (আ.) কবরবাসীদের জিয়ারতকালে এরূপ বলতেন: «بِسْمِ اَللّٰهِ اَلرَّحْمٰنِ اَلرَّحِیمِ اَلسَّلاَمُ عَلَی أَهْلِ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اَللَّهُ مِنْ أَهْلِ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اَللَّهُ یا أَهْلَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اَللَّهُ بِحَقِّ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اَللَّهُ کَیفَ وَجَدْتُمْ قَوْلَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اَللَّهُ مِنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اَللَّهُ یا لاَ إِلَهَ إِلاَّ اَللَّهُ بِحَقِّ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اَللَّهُ اِغْفِرْ لِمَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اَللَّهُ وَ اُحْشُرْنَا فِی زُمْرَةِ مَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اَللَّهُ مُحَمَّدٌ رَسُولُ اَللَّهِ عَلِی وَلِی اَللَّهِ».[۳۸]
নারীদের জন্য কবর জিয়ারত
পুরুষদের জন্য কবর জিয়ারতের বৈধতা ও মুস্তাহাব হওয়া সম্পর্কে মুসলিম পণ্ডিতগণের মধ্যে কোনো মতবিরোধ নেই; কিন্তু নারীদের জন্য এর শরীয়তগত বৈধতা ও অনুমতি বিষয়ে বিভিন্ন মত পরিলক্ষিত হয়:
- ইমামিয়া মাযহাবের দৃষ্টিভঙ্গি: ইমামিয়া ফকীহগণের নিকট নারীদের জন্য কবর যিয়ারত মুস্তাহাব এবং ‘সাহিবে হাদায়িক’ এ বিষয়ে ইজমার দাবি করেছেন।[৩৯] অবশ্য ‘মুহাক্কিক হিল্লী’ তার ‘আল-মু‘তাবার’ গ্রন্থে এবং ‘আল্লামা হিল্লী’ ‘মুনতাহাল মাতলাব’ গ্রন্থে একে মাকরূহ বলেছেন।[৪০]শহীদ আউয়াল তার ‘যিকরুশ শিয়া’ গ্রন্থে মুহাক্কিক হিল্লীর বক্তব্য উল্লেখ করে বলেছেন, নারীদের জন্য কবর জিয়ারত মাকরূহ হওয়ার মতটির কারণ হলো, এতে তাদের পর্দা ও অপরিচিত পুরুষের দৃষ্টি থেকে সুরক্ষিত থাকার বিধানের সাথে সংঘাত ঘটার সম্ভাবনা থাকে; কিন্তু যদি এর সাথে কোনো সংঘাত না থাকে, তবে নারীদের জন্যও পুরুষদের ন্যায় তা জায়েয ও মুস্তাহাব হবে। [৪১]
- আহলে সুন্নতের দৃষ্টিভঙ্গি: তাকীউদ্দীন সুবকী ‘শিফাউস সিকাম’ গ্রন্থে এবং ‘আল-মাওসু‘আতুল ফিকহিয়্যাতুল কুয়েতিয়া’ (কুয়েত থেকে প্রকাশিত আহলে সুন্নতের ফিকহি বিশ্বকোষ) গ্রন্থের বরাত দিয়ে উল্লেখ করেছেন যে, আহলে সুন্নতের ফকীহগণের নিকট প্রসিদ্ধ মত এই যে, নারীদের জন্য কবর যিয়ারত মাকরূহ।[৪২] অন্যদিকে কিছু আলিম নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই এটিকে মুস্তাহাব বলেছেন।[৪৩]
- ওহাবীদের দৃষ্টিভঙ্গি: মুহাম্মাদ ইবনে আবদুল ওয়াহহাব ও তার অনুসারী ওহাবীগণ "لَعَنَ اللَّهُ زَوَّارَاتِ الْقُبُورِ" (আল্লাহ কবর জিয়ারতকারী নারীদের লা'নত করেছেন)[৪৪] এই হাদীসের ভিত্তিতে নারীদের জন্য কবর জিয়ারত হারাম বলে মত পোষণ করেন।[৪৫] তাদের মধ্যে কেউ কেউ হাদীসে ব্যবহৃত «لعن» ‘লা'নত’ শব্দটিকে হারাম এবং এমনকি কর্মটি (নারীদের জন্য জিয়ারত) কবিরা গুনাহ হওয়ার দলীল হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।[৪৬] তবে, মুসলিম আলিমগণ কর্তৃক এই দৃষ্টিভঙ্গি সমালোচিত হয়েছে। তিরমিযী ও হাকিম নিশাপুরীর মতো আহলে সুন্নতের মুহাদ্দিসগণ বলেছেন যে, এই হাদীসটি সে সময়ের সাথে সংশ্লিষ্ট যখন নবী করীম (সা.) কবর জিয়ারত নিষিদ্ধ করেছিলেন; পরবর্তীতে এই বিধান রহিত করা হয় এবং নারীদেরও কবর জিয়ারতের অনুমতি প্রদান করা হয়।[৪৭] অন্যদের অভিমত হলো, এই হাদীসটি সে সমস্ত ক্ষেত্রের প্রতি নির্দেশ করে যেখানে কবর যিয়ারত গুনাহ ও হারাম কাজের দিকে নিয়ে যায়।[৪৮] মালিকী মাযহাবের ফকীহ ও মুফাসসির কারতুবী (মৃত্যু: ৬৭১ হি.) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, হাদীসে ‘زَوَّارَات’ শব্দটি মোবালাগা বা অতিরঞ্জিত অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে এবং এর উদ্দেশ্য হলো ঐ সমস্ত নারী যারা অধিকহারে কবর যিয়ারত করে; সুতরাং হাদীসের লা'নত সমস্ত নারীকে অন্তর্ভুক্ত করে না।[৪৯] ‘দারুল ইফতা, মিশর’ থেকে জারিকৃত ফতোয়া অনুযায়ী, নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্যই কবর জিয়ারত মুস্তাহাব এবং আলোচ্য হাদীসটি ঐ সমস্ত ক্ষেত্রের প্রতি নির্দেশিত যখন নারীদের জিয়ারত তাদের দুঃখ, ক্রন্দন ও বিলাপকে তীব্র করে তোলে।[৫০]
ইবনে তাইমিয়া ও ওহাবীদের কবর যিয়ারতের বিরোধিতা
ইবনে তাইমিয়া ও ওহাবীরা হাদীসে শাদ্দু রিহাল-এর সূত্র ধরে কবর জিয়ারতের উদ্দেশ্যে সফর করা, এমনকি নবী (সা.)-এর রওযা জিয়ারত করাকেও হারাম মনে করে থাকে এবং কিছু ক্ষেত্রে এটাকে বিদ‘আত ও শিরকমূলক কর্ম বলে বিশ্বাস করে। [৫১] তাদের মতে, এই হাদীস অনুযায়ী কেবল তিনটি মসজিদ—মসজিদুল হারাম, মসজিদুল আকসা ও মসজিদুন নববীর উদ্দেশ্যেই সফর করা জায়েয। [৫২] অবশ্য যদি সফরটি জিয়ারতের উদ্দেশ্যে সম্পাদিত না হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে কিছু কিছু ওহাবী শুধুমাত্র পুরুষদের জন্য কবর জিয়ারত জায়েয জ্ঞান করেন; যেমন—কেউ মসজিদে নববীতে নামায পড়ার উদ্দেশ্যে মদীনায় গেল এবং সেখানে নবী (সা.)-এর রওযা জিয়ারত করলো। [৫৩]
মুসলিম পণ্ডিতগণ এই দৃষ্টিভঙ্গির সমালোচনা করেছেন। আহলে সুন্নতের অধিকাংশ পণ্ডিত যেমন নববী, [৫৪] ইবনে হাজার আসকালানী, [৫৫] গাজ্জালী, [৫৬] মোল্লা আলী কারী হানাফী, [৫৭] শামসুদ্দীন যাহাবী, [৫৮] জাসসাস, [৫৯] ইবনে আবেদীন ফকীহ হানাফী, [৬০] যারকানী ফকীহে মালেকী, [৬১] ইবনে কুদামা হাম্বালী [৬২] এবং অন্যান্যদের মতে, হাদীসে শাদ্দু রিহাল-এর অর্থ কবর জিয়ারত, বিশেষত মহানবী (সা.)-এর রওযা জিয়ারত নিষিদ্ধ হওয়া নয়; বরং এটি তিনটি মসজিদের ফজিলতকে নির্দেশ করে।
সম্পর্কিত নিবন্ধ
তথ্যসূত্র
গ্রন্থপঞ্জি
- پنجشنبه سال ۹۹ - آرامستان اراک», ইসনা নিউজ, বিষয়বস্তু সন্নিবেশের তারিখ: ২৮ ইসফান্দ ১৩৯৯ ফার্সি সন, দেখার তারিখ: ১৮ তীর ১৪০৩ ফার্সি সন।
- আব্রাহামফ, বেনিয়ামিন; উরুজ-নিয়া, পরওয়ানা, ‘তাউজিহে ফালসাফিয়ে ফখরুদ্দিন রাযি আয যিয়ারতে কুবুর’, দার ফাসলনামেহ মাআরেফ, ইসফান্দ ১৩৮০ ফার্সি সন, সংখ্যা ৫৪।
- ইবনে আবি ইয়ালা, মুহাম্মাদ ইবনে মুহাম্মাদ, তাবাকাতুল হানাবিলা, বৈরুত, দারুল মা’রিফা, তারিখ অজ্ঞাত।
- ইবনে হাজার আসকালানী, আহমাদ ইবনে আলী, ফাতহুল বারি শারহে সাহিহ আল-বুখারি, বৈরুত, দারুল মা’রিফা, ১৩৭৯ হি.।
- ইবনে বায, আবদুল আজিজ, ফাতাওয়া নুর আলাদ দারব, স্থান অজ্ঞাত, মুআসসাসাতুশ শাইখ ইবনে বাযিল খাইরিয়্যা, তারিখ অজ্ঞাত।
ইবনে তয়মিয়্যা, আহমাদ ইবনে আবদুল হালিম, মিনহাজুস সুন্নাতিন নাবাবিয়্যা, আরাবিস্তান, জামিয়াতুল ইমাম মুহাম্মাদ ইবনে সাউদিল ইসলামিয়্যা, ১৪০৬ হি.।
- ইবনে শাবা, আবু যায়েদ উমর, তারিখুল মাদীনাতিল মুনাওয়ারা, কুম, ইন্তেশারাতে দারুল ফিকর, ১৪১০ হি.।
- ইবনে আবেদিন, মুহাম্মাদ আমিন ইবনে উমর, রাদ্দুল মুখতার, বৈরুত, দারুল ফিকর, ১৪১২ হি.।
- ইবনে উসাইমিন, মুহাম্মাদ ইবনে সালেহ, আল-কাউলুল মুফীদ, রিয়াদ, দারুল আসিমা, ১৪২৪ হি.।
- ইবনে কুদামা, আবদুল্লাহ ইবনে আহমাদ, আল-মুগনি, কায়রো, মাকতাবাতুল কায়রো, ১৩৮৮ হি.।
- ইবনে কুলওয়াইহ, জাফর ইবনে মুহাম্মাদ, কামিলুজ যিয়ারাত, তাসহিহ: বেহরাদ জাফরি, কুম, মাতবাআতুস সাদুক, তারিখ অজ্ঞাত।
- আদ-দারাকুতনি, আবুল হাসান আলী ইবনে উমর, সুনানুদ দারাকুতনি, বৈরুত, মুআসসাসাতুর রিসালা, ১৪২৪ হি.।
- বাহরানি, ইউসুফ, হাদায়েকুন নাযিরা, কুম, মুআসসাসাতুন নাশরিল ইসলামি, তারিখ অজ্ঞাত।
- তিরমিযী, মুহাম্মাদ ইবনে ঈসা, সুনানুত তিরমিযী, মিসর, শারিকাতে মাকতাবাত ওয়া মাতবাআতে মুস্তাফা আল-বাবি আল-হালবি, ১৩৯৫ হি.।
- জাসসাস, আহমাদ ইবনে আলী, আহকামুল কুরআন, বৈরুত, দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যা, ১৪১৫ হি.।
- জামঈ আয নেভিসান্দেগান, আল-মাউসুআতুল ফিকহিয়্যাতুল কুয়েতিয়্যা, কুয়েত, ওযারাতুল আওকাফ ওয়াশ শুউনিল ইসলামিয়্যা, তারিখ অজ্ঞাত।
- হাকিম নিশাপুরি, মুহাম্মাদ ইবনে আবদুল্লাহ, আল-মুস্তাদরাক আলাস সাহিহাইন, বৈরুত, দারুল মা’রিফা, ১৪১১ হি.।
- হুররে আমেলি, মুহাম্মাদ ইবনে হাসান, ওয়াসাইলুশ শিয়া, তাহকিক: সৈয়দ মুহাম্মাদ রেযা জালালি, কুম, মুআসসাসাতু আলিল বাইত (আ.), ১৪১৬ হি.।
- زیارة النساء للقبور», সাইট-এ দারুল ইফতা-ইল মিসরিয়্যা, দেখার তারিখ: ১৫ খোরদাদ ১৪০৩ ফার্সি সন।
- যাহাবি, মুহাম্মাদ ইবনে আহমাদ, সিরু আ’লামিন নুবালা, বৈরুত, মুআসসাসাতুর রিসালা, ১৪১৪ হি.।
- জারেঈ সাবযওয়ারি, আব্বাস আলী, যিয়ারাত দার নিগাহে শরীয়াত, তেহরান, নাশরে মাশ’আর, ১৩৮৭ ফার্সি সন।
- যারকানি, মুহাম্মাদ ইবনে আবদুল বাকি, শারহুজ যারকানি আলা মুয়াত্তা আল-ইমাম মালিক, কায়রো, মাকতাবাতুস সাকাফাতিদ দিনিয়্যা, ১৪২৪ হি.।
- সুবহানি, জাফর, আইনে ওহাবিয়্যাত, কুম, জামেঅ-এ মোদাররেসিনে হাওযা ইলমিয়া কুম, ১৩৮৬ ফার্সি সন।
- সুবহানি, জাফর, মানশুরে আকায়েদে ইমামিয়া, কুম, মুআসসাসাতুল ইমাম আল-সাদিক (আ.), ১৩৭৬ ফার্সি সন।
- সুবকি, তাকি উদ্দিন আলী ইবনে আবদুল কাফি, শিফাউস সিকাম ফি যিয়ারাতে খাইরিল আনাম, তাহকিক: সৈয়দ মুহাম্মাদ রেযা জালালি, কুম, নাশরে মাশ’আর, চতুর্থ সংস্করণ, ১৪১৯ হি.।
- সামহুদি, আলী ইবনে আবদুল্লাহ, ওয়াফাউল ওফা বি আখবারি দার আল-মুস্তাফা, বৈরুত, দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যা, ১৪১৯ হি.।
- সৈয়দ ইবনে তাউস, সৈয়দ আবদুল করিম, ফারহাতুল গাররি ফি তা’ইনে কাবরে আমিরীল মুমিনীন আলী (আ.), কুম, মারকাযুল গাদির লিল দিরাসাতিল ইসলামিয়্যা, প্রথম সংস্করণ, ১৪১৯ হি.।
- শারনবালালি, হাসান ইবনে আম্মার, মারাকিল ফালাহ, স্থান অজ্ঞাত, আল-মাকতাবাতুল আসরিয়্যা, ১৪২৫ হি.।
- শাওকানি, মুহাম্মাদ ইবনে আলি, নাইলুল আওতার, মিসর, দারুল হাদিস, ১৪১৩ হি.।
- শহীদ আওয়াল, মুহাম্মাদ ইবনে মাক্কি, আল-মাজার, কুম, তাসহিহ: মুহাম্মাদ বাকির মাওহিদ আবতাহি, মাদ্রাসায়ে ইমাম মাহদি (আ.), প্রথম সংস্করণ, ১৪১০ হি.।
- শহীদ আওয়াল, মুহাম্মাদ ইবনে মাক্কি, যিকরিশ শিয়া ফি আহকামিশ শরীয়া, কুম, মুআসসিসাতু আলিল বাইত (আ.), ১৪১৯ হি.।
- শেখ তুসি, মুহাম্মাদ ইবনে হাসান, তাহযিবুল আহকাম, তেহরান, দারুল কুতুবিল ইসলামিয়্যা, চতুর্থ সংস্করণ, ১৩৬৪ ফার্সি সন।
- সানআনি, আবু বকর আবদুর রাজ্জাক ইবনে হাম্মাম, আল-মুসান্নাফ, হিন্দ, আল-মাজলিসুল ইলমি, ১৪০৩ হি.।
- তাবাতাবাঈ, সৈয়দ মুহাম্মাদ হুসাইন, আল-মিযান ফি তাফসিরিল কুরআন, কুম, ইন্তেশারাতে ইসমাঈলিয়ান, ১৩৬৩ ফার্সি সন।
- তাবারসি, ফাযল ইবনে হাসান, মাজমাউল বায়ান, বৈরুত, মুআসসাসাতুল আ’লামি লিল মাতবুআত, ১৪১৫ হি.।
- «عکس تابلوی مزار شهدا و گلزار شهدای استان خوزستان», কাবে ইশক, দেখার তারিখ: ১৮ তীর ১৪০৩ ফার্সি সন।
- আল্লামা হিল্লি, ইউসুফ ইবনে হাসান, মুনতাহাল মাতলাব, মাশহাদ, মাজমাউল বুহুসিল ইসলামিয়্যা, ১৪১২ হি.।
- আল্লামা মাজলিসী, মুহাম্মাদ বাকির, বিহারুল আনোয়ার, বৈরুত, মুআসসাসাতুল ওফা, ১৪০৩ হি.।
- আইয়ায, আইয়ায ইবনে মুসা, আশ-শিফা বি তা’রিফে হুকুকিল মুস্তাফা, আমমান, দারুল ফাইহা, ১৪০৭ হি.।
- গাজ্জালি, আবু হামিদ, ইহইয়াউ উলুমিদ দীন, বৈরুত, দারুল মা’রিফা, তারিখ অজ্ঞাত।
- কাশানি, আলা উদ্দিন আবি বকর ইবনে মাসউদ, বাদায়িউস সানায়ে’, বৈরুত, দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যা, ১৪২৪ হি.।
- কুলাইনি, মুহাম্মাদ ইবনে ইয়াকুব, আল-কাফি, তাসহিহ: আলি আকবর গাফফারি, তেহরান, দারুল কুতুবিল ইসলামিয়্যা, চতুর্থ সংস্করণ, ১৪০৭ হি.।
- কিয়ানি ফরিদ, মারিয়াম, ‘যিয়ারত’, দার দানেশনামে-এ জাহানে ইসলাম, তেহরান, বুনিয়াদে দায়েরাতুল মাআরিফিল ইসলামি, ১৩৯৫ ফার্সি সন।
- ফারমানিয়ান, মাহদি, সেদাকাত, মুজতাবা, ‘যিয়ারতে কুবুর ও দালায়েলে আলেমানে শিয়া বার মাশরুয়িয়্যাতে অন’, দার মাজাল্লেয়ে শিয়া শেনাসি, বাহার ১৩৯২ ফার্সি সন, সংখ্যা ৪১।
- মালিক ইবনে আনাস, আল-মুয়াত্তা, বৈরুত, দার ইহইয়ায়িত তুরাসিল আরাবি, ১৪০৬ হি.।
- মুবারক ফৌরি, মুহাম্মাদ আবদুর রহমান ইবনে আবদুর রহিম, তুহফাতুল আহওয়াজি, বৈরুত, দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যা, প্রথম সংস্করণ, ১৪১০ হি.।
- মুত্তাকি হিন্দি, আলা উদ্দিন আলী ইবনে হেসাম উদ্দিন, কানজুল উম্মাল, বৈরুত, মুআসসিসাতুর রিসালা, ১৪০১ হি.।
- মুহাক্কিক হিল্লি, শেখ নাজমুদ্দিন জাফর ইবনুল হাসান, আল-মু’তাবার, কুম, মুআসসেসেয়ে সৈয়দুশ শুহাদা, প্রথম সংস্করণ, ১৪০৭ হি.।
- মুহাম্মাদ ইবনে আবদুল ওয়াহহাব, আত-তাওহীদ, রিয়াদ, জামিয়াতুল ইমাম মুহাম্মাদ ইবনে সাউদ, তারিখ অজ্ঞাত।
- মুর্তাযা আমেলি, সৈয়দ জাফর, আস-সাহিহ মিন সিরাতিন নাবিয়্যিল আ’জাম, কুম, মুআসসেসেয়ে ইলমিয়ে ফারহাঙ্গিয়ে দারুল হাদিস, ১৪২৬ হি.।
- মুসলিম, মুসলিম ইবনে হাজ্জাজ নিশাপুরি, সহিহ মুসলিম, বৈরুত, দারু ইহইয়ায়িত তুরাসিল আরাবি, তারিখ অজ্ঞাত।
- মাকারেম শিরাজি, শিয়া পাসোখ মি গুয়্যাদ, কুম, মাদ্রাসায়ে আল-ইমাম আলী ইবনে আবি তালিব (আ.), ১৩৮৯ ফার্সি সন।
- নাজাফি, মুহাম্মাদ হাসান, জাওয়াহিরুল কালাম, বৈরুত, দারু ইহইয়ায়িত তুরাসিল আরাবি, সপ্তম সংস্করণ, ১৩৬২ ফার্সি সন।
- নাওয়াউয়ি, ইয়াহিয়া ইবনে শারাফ, সহিহ মুসলিম মাআ শারহিল ইমামিন নাওয়িউয়ি, বৈরুত, দারু ইহইয়ায়িত তুরাসিল আরাবি, ১৩৯২ হি.।
- হিরাবি কারি, আলি ইবনে মুহাম্মাদ, মিরকাতুল মাফাতিহ, বৈরুত, দারুল ফিকর, ১৪২২ হি.।
- «یاد از دست رفتگان؛ رسم ارزشمند ایرانیان/ برخی اعتقادات پنجشنبه آخر سال», মেহের নিউজ সাইট, বিষয়বস্তু সন্নিবেশের তারিখ: ২৫ ইসফান্দ ১৩৯০ ফার্সি সন, দেখার তারিখ: ১৫ খোরদাদ ১৪০৩ ফার্সি সন।