বিষয়বস্তুতে চলুন

গাদীরে খুমের ঘটনা

wikishia থেকে
নিবন্ধটি গাদীরে খুমের ঘটনা কেন্দ্রীক, ঈদে গাদীর সম্পর্কে অধ্যয়ন করতে দেখুন; হাদীসে গাদীর সম্পর্ক জানতে দেখুন ‘গাদীরের খোতবা’।

গাদীরে খুমের ঘটনা; ইসলামি ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। মহানবি (স.) বিদায় হজ্জ শেষে ১০ হিজরীর ১৮ই জিলহজ্জ গাদীরে খুম নামক স্থানে ইমাম আলীকে (আ.) নিজের স্থলাভিষিক্ত হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন। ঐ ঘটনায় উপস্থিত ইমাম আলীর (আ.) হাতে বাইয়াত করেন; যাদের মাঝে গন্যমান্য সাহাবিরাও ছিলেন।

তাবলীগের আয়াতে মহান আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী মহানবি (স.) ইমাম আলীকে (আ.) পরিচয় করিয়েছিলেন। উক্ত আয়াতে বলা হয়েছে, যা কিছু মহান প্রতিপালকের পক্ষ থেকে মহানবির (স.) উপর অবতীর্ণ করা হয়েছে তা যেন তিনি প্রচার করেন। আর যদি তিনি এ কাজ না করেন, তবে তিনি তাঁর উপর অর্পিত রেসালাতকে সম্পন্ন করলেন না।  গাদীরের ঘটনার পর ‘ইকমালের আয়াত’ অবতীর্ণ হয়, এতে বলা হয়: ‘আজ তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিলাম এবং তোমাদের উপর আমার নি’মাতকে সম্পূর্ণ করলাম এবং দ্বীন ইসলামকে তোমাদের জন্য পছন্দ করলাম।’

মাসুম ইমামগণ (আ.) গাদীরের হাদীসকে দলীল হিসেবে উপস্থাপন করেছেন এবং ইমাম আলীর (আ.) যুগ থেকে বহুসংখ্যক কবি এ ঘটনা সম্পর্কে কবিতা রচনা করেছেন। এ ঘটনা সম্পর্কে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থটি হলো আল্লামা আমিনী প্রণীত ‘কিতাবুল গাদীর’।

মহানবি (স.) ও মাসুমগণ (আ.) এ দিনটিকে ঈদ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন এবং মুসলমানরা বিশেষ করে শিয়ারা এ দিনটি আনন্দ-উৎসবের মধ্য দিয়ে উদযাপন করে থাকে।

সেদিন যা ঘটেছিল

১০ম হিজরীতে মহানবি (স.) হজ্জ পালনের উদ্দেশ্যে হাজার হাজার মুসলমানকে সঙ্গে নিয়ে মক্কার উদ্দেশ্যে মদিনা থেকে রওনা হলেন।[] মহানবির (স.) এ সফর হাজ্জাতুল বিদা, হাজ্জাতুল ইসলাম ও হাজ্জাতুল বালাগ নামে নামকরণ করা হয়। ঐ সময় ইমাম আলী (আ.) ইসলাম প্রচারের কাজে ইয়েমেনে অবস্থান করছিলেন।[] তিনি মহানবির (স.) সফর সম্পর্কে অবগত হয়ে কিছু লোকের সাথে মক্কার উদ্দেশ্যে রওনা হলেন এবং হজ্জের কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগে মহানবির (স.) সাথে এসে যুক্ত হন।[]

আয়াতে তাবলিগের অবতীর্ণ হলো

হজ্জের কার্যক্রম সম্পাদন শেষে মুসলমানরা ১৮ই জিলহজ্জ বৃহস্পতিবার  গাদীরে খুম নামক স্থানে পৌঁছুলেন এবং সিরিয়া, মিসরইরাকের অধিবাসীরা মূল কাফেলা থেকে পৃথক হওয়ার পূর্বে জীবরাইল (আ.) মহানবির (স.) উপর তাবলিগের আয়াত নিয়ে অবতীর্ণ হলেন, মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে হযরত মুহাম্মাদকে (স.) নির্দেশ দিলেন যেন তিনি আলীকে (আ.) নিজের পর নিজের স্থলাভিষিক্ত ও মুসলমানদের অভিভাবক হিসেবে জনগণের সামনে পরিচয় করিয়ে দেন।[]

উক্ত আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর মহানবি (স.) কাফেলা থামার নির্দেশ দিলেন এবং বললেন যারা সামনে এগিয়ে গেছে তারা যেন গাদীরে ফিরে আসে, আর যারা এখনো পেছনে রয়ে গেছে তারা গাদীরে খুমে মূল কাফেলার সাথে যেন যুক্ত হয়।[]

ঐতিহাসিক ভাষণ

যোহরের নামাজ আদায়ের পর মহানবি (স.) ভাষণ দিলেন যা গাদীরের খোতবা নামে প্রসিদ্ধ এবং ঐ ভাষণে তিনি বললেন:

সকল প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য নির্ধারিত, তাঁর নিকট সাহায্য চাই এবং তাঁর প্রতিই ঈমান রাখি আর নিজেদের নফস, নিজেদের অশ্লীল আচরণ থেকে তাঁর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করি... দয়াময় ও সর্বজ্ঞানী আল্লাহ্ আমাকে সংবাদ দিয়েছেন যে, আমি অতি শীঘ্রই (তাঁর দিকে) আহূত হবো এবং আমিও (তাঁর আহবানে) সাড়া দেব...। আমি তোমাদের পূর্বে হাউজে (হাউজে কাউসার) উপস্থিত হবো এবং তোমরাও আমার নিকটে আসবে। অতএব, সতর্ক থেকো সাকালাইনের সাথে তোমাদের আচরণের ব্যাপারে; সাকলে আকবার হলো আল্লাহর কিতাব এবং সাকলে আসগার আমার ইতরাত (বংশধরগণ)।

অতঃপর আল্লাহর রাসূল (স.) আলীর (আ.) হাত উঁচু করে ধরলেন যাতে জনগণ তাকে দেখতে পায় এবং বললেন: ‘হে লোকসকল! তোমাদের বেলায়াত (অভিভাবকত্ব)-এর ক্ষেত্রে তোমাদের চেয়ে কি অগ্রাধিকার রাখি না? লোকেরা বললো: জি, আল্লাহর রাসূল। তিনি (স.) বললেন: মহান আল্লাহ্ হলেন আমার ওয়ালি (অভিভাবক) এবং আমি হলাম মু’মিনদের ওয়ালি, আর আমি তোমাদের অভিভাবকত্বের ক্ষেত্রে তোমাদের উপর অগ্রাধিকার রাখি। অতএব, আমি যারা মাওলা (অভিভাবক) আলীও তার মাওলা (অভিভাবক)। আল্লাহর রাসূল (স.) বাক্যটি ৩ বার পূনরাবৃত্তি করলেন, অতঃপর বললেন: ‘হে আল্লাহ! যে আলীকে ভালোবাসে এবং তাকে নিজের মাওলা বলে জানে, তুমিও তাকে ভালোবাসো এবং তাঁর মাওলা (অভিভাবক) হও। আর যে তার সাথে শত্রুতা করে তুমিও তার শত্রু হও। যে তাকে সাহায্য করে তুমিও তাকে সাহায্য কর। আর যে তাকে ত্যাগ করে তুমিও তাকে নিজের অবস্থার উপর ছেড়ে দাও। অতঃপর তিনি জনগণের উদ্দেশ্যে বললেন: উপস্থিতগণ এ বার্তাকে অনুপস্থিতদের পর্যন্ত পৌঁছে দেবে।[]

ইকমালের আয়াত অবতীর্ণ হলো

উপস্থিত লোকেরা বিচ্ছিন্ন হতে না হতেই পূনরায় জীবরাইল অবতীর্ণ হলেন। এবার মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে সূরা মায়িদাহ’র ৩নং আয়াত নিয়ে অবতীর্ণ হলেন; যা ইকমালের আয়াত নামে খ্যাত। আয়াতের শেষের দিকে উল্লেখিত হয়েছে, ((الْیوْمَ أَکمَلْتُ لَکمْ دینَکمْ وَ أَتْمَمْتُ عَلَیکمْ نِعْمَتی وَ رَضیتُ لَکمُ الْإِسْلامَ دیناً)) ‘আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণ করলাম এবং তোমাদের উপর আমার নি’মাতকে সম্পূর্ণ করলাম এবং দ্বীন ইসলামকে তোমাদের জন্য পছন্দ করলাম।’

ইমাম আলীকে (আ.) অভিনন্দন

এ সময় জনগণ ইমাম আলীকে (আ.) অভিনন্দন জানালো। সাহাবাদের প্রথমসারিতে যারা ইমাম আলীকে (আ.) অভিনন্দন জানিয়েছিলেন তাদের মাঝে উমরও ছিলেন। তিনি বারবার আমিরুল মু’মিনীনের (আ.) উদ্দেশ্যে বলছিলেন: অভিনন্দন তোমাকে! হে আবু তালিব তনয়! তুমি আমার এবং সকল মু’মিন নর ও নারীর মাওলা হয়ে গেলে।[]

আল্লাহর নবির (স.) নির্দেশে আলীর (আ.) জন্য একটি তাবু তৈরি করা হল এবং মুসলমানদেরকে দলে দলে তার সাথে সাক্ষাত ও আমিরুল মু’মিনীন হিসেবে তাকে সালাম করার নির্দেশ দিলেন। অতঃপর সকলে এমনকি নবিপত্নগণ ও মুসলমানদের স্ত্রীগণও মহানবির (স.) নির্দেশ পালন করলো।[]

উপস্থিতি

গাদীরে খুমে সেদিন কি সংখ্যক লোক উপস্থিত ছিলেন –এ প্রসঙ্গে মতভেদ রয়েছে, সেদিন ঐ লোকসমাগমে উপস্থিতির সংখ্যা ১০ হাজার,[] ১২ হাজার,[১০]] সতেরো হাজার,[[১১] সত্তর হাজার [১২] এবং ১ লক্ষ ২০ হাজার[১৩] বলে উল্লেখ করেছেন। তবে গাদীরে খুমের ধারণ ক্ষমতা, ১০ম হিজরীতে মদিনার জনসংখ্যা এবং বিদায় হজ্জে মক্কায় উপস্থিত হাজীদের সংখ্যা ইত্যাদি বিষয় মাথায় রেখে গাদীরে খুমে ১০ হাজার লোক উপস্থিত থাকার বিষয়টি অধিক যুক্তিসঙ্গত।[১৪]

সাহাবিগণের মধ্যে সেদিন উমর ইবনে খাত্তাব,[১৫] উসমান ইবনে আফফান,[১৬] আয়েশা বিনতে আবু বকর,[১৭] সালমান ফার্সি,[১৮] আবুযার গিফারি,[১৯] যুবাইর ইবনে আওয়াম,[২০] জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ আনসারি,[২১] আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিব,[২২] আবু হুরাইরাহ,[২৩] প্রমুখ গাদীরে খুমে উপস্থিত ছিলেন এবং ঘটনাটিকে কোন মাধ্যম ছাড়াই সরাসরি বর্ণনা করেছেন। শিয়াসুন্নি বিভিন্ন সূত্রের বর্ণনার ভিত্তিতে গাদীরের খোতবার কিছু অংশ মুতাওয়াতির পর্যায়ে, যেমন: ((من کنت مولاه فهذا علی مولاه))[২৪]

গাদীর সম্পর্কে অবতীর্ণ আয়াতসমূহ

শিয়া মুফাসসিরগণ[২৫] এবং সুন্নি মুফাসসিরদের[২৬] দৃষ্টিতে, বিদায় হজ্জে গাদীরের ঘটনায় পবিত্র কুরআনের কয়েকটি আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে।

ইকমালের আয়াত: ((الیوم أکملت لکم دینکم و أتممت علیکم نعمتی و رضیت لکم الاسلام دیناً))

‘আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণ করলাম এবং তোমাদের উপর আমার নি’মাতকে সম্পূর্ণ করলাম এবং দ্বীন ইসলামকে তোমাদের জন্য পছন্দ করলাম’।[২৭]

তাবলিগের আয়াত:

یا أیها الرسول بلغ ما أنزل الیک من ربّک فان لم تفعل فما بلّغت رسالته و الله یعصمک من النّاس

‘হে রাসূল! প্রচার করে দাও যা কিছু তোমার উপর তোমার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে, আর যদি তুমি এরূপ না করো তাহলে তুমি তোমার প্রতিপালকের বার্তাকে পৌঁছাও নি, আর আল্লাহ্ তোমাকে মানুষের অনিষ্ট থেকে রক্ষা করবেন।’[২৮]

মাআরিজের ১-২ নং আয়াত: ((سأل سائل بعذاب واقع للکافرین لیس له دافع)) ‘এক ব্যক্তি চাইলো সেই আযাব সংঘটিত হোক যা অবধারিত- * কাফেরদের জন্যে, যার প্রতিরোধকারী নেই।’[২৯]

মহানবি (স.) জগণের উদ্দেশ্যে ইমাম আলীর (আ.) বেলায়েতের ঘোষণা প্রদানের পর নো’মান ইবনে হারিস ফেহরি অভিযোগের সূরে বললো: আমাদেরকে তাওহীদ ও তোমার রেসালাতকে গ্রহণ করার জিহাদ, হজ্জ, রোজা, নামাজজাকাত প্রদানের নির্দেশ দিয়েছো, আমরা তা কবুল করেছি। কিন্তু তুমি এতে ক্ষান্ত না হয়ে এ যুবককে মনোনীত করলে এবং তাকে আমাদের ওয়ালি ও অভিভাবক বানালে।

এই যে বেলায়েতের ঘোষণা তুমি দিলে তা কি তোমার নিজের পক্ষ থেকে নাকি আল্লাহর পক্ষ থেকে? মহানবি (স.) যখন উত্তরে বললেন ‘আল্লাহর পক্ষ থেকে’, তখন সে অস্বীকারের সূরে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করলো যদি এ নির্দেশ তার (আল্লাহর) পক্ষ থেকে হয়ে থাকে তবে যেন আকাশ থেকে একটা পাথর তার মাথায় এসে পড়ে। এমন সময় আকাশ থেকে একটি পাথর নিক্ষিপ্ত হল এবং সে ঘটনাস্থলেই নিহত হলো, অতঃপর আলোচ্য আয়াতটি অবতীর্ণ হলো।[৩০]

গাদীরের ঘটনাকে দলীল হিসেবে উপস্থাপন

ইমাম আলী (আ.), হজরত ফাতেমা যাহরা (সা. আ.), ইমাম হাসান (আ.)ইমাম হুসাইন (আ.) গাদীরের ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করেছেন।

ইমাম আলী (আ.) তাঁর খেলাফতকালের শুরুর দিকে ‘রাহবা’র দিন নিজের অধিকার রক্ষা এবং খেলাফতের বিষয়ে যারা তাঁর সাথে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়েছিল তাদের দাবী প্রত্যাখ্যানে গাদীরে খুমের ঘটনাটি উল্লেখ করেছেন।[৩১] একইভাবে হজরত ফাতেমা যাহরা (সা.) বলেন: ‘যেন তোমরা জানো না (তোমাদের মনে নেই) যে, আল্লাহর রাসূল (স.) গাদীরে খুমে কি বলেছিলেন! আল্লাহর কসম ঐদিন আল্লাহর রাসূল আলীর জন্য বেলায়াতইমামতের বিষয়টিকে ধার্য্য করে গেছেন, যাতে এ বিষয়ে তোমাদের লোভের দৃষ্টিতে ছেদ ঘটাতে পারেন।[৩২]

ইসলাম ধর্মে ঈদে গাদীর

মুসলমানরা বিশেষতঃ শিয়ারা গাদীর দিবসকে বড় ঈদগুলোর অন্যতম হিসেবে মানে এবং দিনটি তাদের মাঝে ঈদে গাদীর হিসেবে প্রসিদ্ধ। ৪৮৭ হিজরীতে মিসরীয় শাসক ‘মুস্তা’লি ইবনে মুস্তানসিরে’র (مستعلی بن مستنصر) হাতে বাইয়াত ঈদে গাদীরের দিনেই ঘটেছিল।[৩৩] একইভাবে আহলে সুন্নতের বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, যারা ১৮ জিলহজ্জের দিন রোজা রাখবে, মহান আল্লাহ্ ৬০ মাস রোজা রাখার সওয়াব তার আমাল নামায় লিখবেন।[৩৪]

মহানবি (স.) বলেছেন: ‘গাদীরে খুমের দিন, আমার উম্মতের মাঝে সবচেয়ে বড় ঈদের দিন, আর সেদিনটি হলো যেদিন মহান আল্লাহ্ আমায় নির্দেশ দিয়েছিলেন যাতে আমি আমার ভাইকে আমার উম্মতের পতাকাবাহক হিসেবে মনোনীত করি। যাতে আমার পর মানুষ তার মাধ্যমে হেদায়েত প্রাপ্ত হয় এবং দিনটি হলো সেদিন, যেদিন মহান আল্লাহ্ দ্বীনকে পরিপূর্ণ করেছেন এবং আমার উম্মতের উপর নিজের নি’মাতকে সম্পূর্ণ করেছেন, আর ইসলামকে তাদের জন্য পছন্দ করেছেন।’[৩৫]

ইমাম সাদিক (আ.) বলেন: গাদীরে খুমের দিন হলো মহান আল্লাহর (পক্ষ থেকে ঘোষিত ঈদসমূহের মাঝে) বড় ঈদ, মহান আল্লাহ্ এমন কোন নবিকে প্রেরণ করেননি যে, তিনি এই দিনটিকে ঈদ হিসেবে পালন করেননি এবং এর মহত্বকে চেনে নি; এদিনের নাম আসমানে ‘পৃথিবীতে অঙ্গীকারের দিন’ এবং ‘শক্ত প্রতিশ্রুতি গ্রহণ ও সকলের সম্মিলিতভাবে উপস্থিত হওয়ার দিন’।[৩৬] ইমাম রেযা (আ.) বলেছেন: ‘গাদীর দিবস পৃথিবী বাসীর চেয়ে আসমান বাসীর নিকট অধিক পরিচিত...। যদি মানুষ এদিনের গুরুত্বকে বুঝতো, তবে ফেরেশতারা প্রতিদিন ১০ বার তাদের সাথে মুসাফাহাহ (করমর্দন) করতো।[৩৭]

তথ্যসূত্র

  1. তাবারসি, আল-ইহতিজাজ, ১৪০৩ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৫৬; তুসী, তাহযিবুল আহকাম, ১৪০৭ হি., খণ্ড ৫, পৃ. ৪৭৪; তাবারি, তারিখুল তাবারি, ১৩৮৭হি., খণ্ড ৩, পৃ. ১৪৮।
  2. হালাবি, আস-সীরাতুল হালাবিয়া, ১৪২৭ হি., খণ্ড ৩, পৃ. ৩৬৮-৩৬৯।
  3. মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৩ হি., খণ্ড ১, পৃ. ১৭১।
  4. কুম্মি, তাফসীরুল কুম্মি, ১৪১২ হি., খণ্ড ১, পৃ. ১৭৯; আইয়াশি, তাফসীরুল আইয়াশি, ১৩৮০ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৩৩২।
  5. নাসায়ী, সুনানুল কোবরা, ১৪১১ হি., খণ্ড ৫, পৃ. ১৩৫।
  6. আইয়াশি, কিতাবুত-তাফসীর, ১৩৮০ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৪।
  7. খাতিব বাগদাদী, তারিখে বাগদাদ, ১৪১৭ হি., খণ্ড ৮, পৃ. ২৮৪; মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৩ হি., খণ্ড ১, পৃ. ১৭৭।
  8. মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৩ হি., খণ্ড ১, পৃ. ১৭৬।
  9. আইয়াশি, কিতাবুত-তাফসীর, ১৩৮০ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৩৩২।
  10. আইয়াশি, কিতাবুত-তাফসীর, ১৩৮০ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৩২৯।
  11. শুয়াইরি, জামেউল আখবার, আল-মাতবাআতুল হায়দারিয়া, পৃ. ১০।
  12. তাবারসি, আল-ইহতিজাজ, ১৪০৩ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৫৬।
  13. ইবনে জাওযি, তাযকিরাতুল খাওয়ায়েছ, ১৩৭৬ হি., পৃ. ৩৭।
  14. ইমাম, "বাররাসিয়ে তেঅদাদে জামেইয়্যাত হাযের দার গাদীর", পৃ. ৩৮।
  15. ইবনে কাসীর, আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ, ১৩৯৮ হি., খণ্ড ৭, পৃ. ৩৪৯।
  16. ইবনে উকদাহ আল-কুফী, কিতাবুল বিলায়াহ, ১৪২৪ হি., পৃ. ১৫০।
  17. ইবনে উকদাহ আল-কুফী, কিতাবুল বিলায়াহ, ১৪২৪ হি., পৃ. ১৫২।
  18. জাযারি শাফেয়ী, আসনাল মাতালিব, মাকতাবাতুল ইমাম আমিরিল মু’মিনীন, পৃ. ৪৮।
  19. জুওয়াইনি, ফারায়েদুস সিমতাইন, ১৩৯৮ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৩১৫।
  20. ইবনে উকদাহ আল-কুফী, কিতাবুল বিলায়াহ, ১৪২৪ হি., পৃ. ১৫০।
  21. আমিনি, আল-গাদির, মারকাযুল গাদির লিদ দিরাসাতিল ইসলামিয়াহ, খণ্ড ১, পৃ. ৫৭।
  22. জাযারি শাফেয়ী, আসনাল মাতালিব, মাকতাবাতুল ইমাম আমিরিল মু’মিনীন, পৃ. ৪৮।
  23. জাযারি শাফেয়ী, আসনাল মাতালিব, মাকতাবাতুল ইমাম আমিরিল মু’মিনীন, পৃ. ৪৮।
  24. মুতাহারি, ইমামত ওয়া রাহবারি, ১৩৬৪ সৌরবর্ষ, পৃ. ১১৩-১১৪; খোসরাভি, নাকলহায়ে হাদিসে গাদির দার মানাবেয়ে রেওয়ায়িয়ে কারনে সেভভোম ও চাহারোম, পৃ. ১৫৪-১৬১।
  25. তুসি, আত-তিবইয়ান ফি তাফসিরিল কুরআন, দারু ইহিয়াইত তুরসিল আরাবি, খণ্ড ৩, পৃ. ৪৩৫,৫৮৮; তাবতাবায়ী, আল-মিযান, ১৩৯৪ হি., খণ্ড ৫, পৃ. ১৯৩-১৯৪।
  26. ওয়াহেদি, আসবাবুন নুযুল, ১৯৯১ খ্রি., পৃ. ১৩৯; হাকিম আল-হাসকানি, শাওয়াহেদুত তানযীল, ৪১১ হি., খণ্ড ১, পৃ. ২০০,২৪৯।
  27. সূরা মায়িদাহ, আয়াত ৩।
  28. সূরা মায়িদাহ, আয়াত ৬৭।
  29. সূরা মাআরিজ, আয়াত ১-২।
  30. তাবারসি, মাজমাউল বায়ান, মুআসসিসাতুল আলামি লিলমাতবুআত, খণ্ড ১০, পৃ. ৫৩০; কুরতুবি, আল-জামেউ লি-আহকামিল কুরআন, ১৩৬৪ সৌরবর্ষ, খণ্ড ১৯, পৃ. ২৭৮; সা’লাবি, আল-কাশফ ওয়াল বায়ান আন তাফসিরীল কুরআন, ১৪২২ হি., খণ্ড ১০, পৃ. ৩৫।
  31. আমিনি, আল-গাদির, মারকাযুল গাদির লিদ দিরাসাতিল ইসলামিয়াহ, খণ্ড ১, পৃ. ৩৩৯।
  32. তাবারসি, আল-ইহতিজাজ, ১৪০৩ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৮০।
  33. ইবনে খাল্লেকান, ওয়াফিয়াতুল আ’ইয়ান, ১৩৪৬ সৌরবর্ষ, খণ্ড ১, পৃ. ১৮০।
  34. খাতিব বাগদাদী, তারিখে বাগদাদ, ১৪১৭ হি., খণ্ড ৮, পৃ. ২৮৪।
  35. সাদুক, আমালি, মোআসসেসেয়ে বে’সাত, পৃ. ১২৫।
  36. হুরর আমেলি, ওয়াসিয়েলুশ শিয়া, মুআসসিসাতু আলিল বাইত, খণ্ড ৫, পৃ. ২২৪।
  37. তুসি, মিসবাহুল মুজতাহিদ, তেহরান, মাকতাবাতুল ইসলামিয়াহ, খণ্ড ২, পৃ. ৭৩৭।

গ্রন্থপঞ্জি

  • কুরআন কারিম
  • ইবনে আসির উসদুল গাবাহ, তাহকীক: মুহাম্মাদ ইব্রাহিম বান্না, দারুশ শুআব, কায়রো।
  • ইবনে খাল্লেকান, আহমাদ ইবনে মুহাম্মাদ, ওয়াফিয়াতুল আ’ইয়ান, তাহকীক: ইহসান আব্বাস, কুম, আশ-শারিফ আর-রাযি, ১৩৪৬ সৌরবর্ষ।
  • ইবনে জাওযি, কোম, আশ-শারিফ আর-রাযি, ১৩৪৬ সৌরবর্ষ।
  • ইবনে আব্দু রাব্বিহি, ইকদুল ফারিদ, দার ওয়া মাকতাবাতুল হিলাল, বৈরুত।
  • ইবনে উকদাহ আল-কুফী, আহমাদ ইবনে মুহাম্মাদ, কিতাবুল বিলায়াহ, তাহকীক: আব্দুর রাযযাক হিরযুদ্দীন, কোম, দালীলে মা প্রকাশনী, ১৪২৪ হি.।
  • ইবনে কাসীর, ইসমাঈল ইবনে উমার, আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ, বৈরুত, দারুল ফিকর, ১৩৯৮ হি.।
  • ইবনে মাগাযেলী, মানাকেবে আলে আবি তালিব, মাকতাবাতুল ইসলামিয়াহ, তেহরান।
  • আবু রাইহান বিরূনি, আসারুল বাকিয়াহ, ইবনে সিনা পাবলিকেশন্স, তেহরান।
  • আবু নাঈম, হিলইয়াতুল আওলিয়া, দারুল কুতুবিল আরাবি, বৈরুত।
  • আহমাদ ইবনে আব্দুল্লাহ তাবারি, যাখায়েরুল উকবা, মাকতাবাতুল কুদসি, কায়রো।
  • আহমাদ হাম্বাল শাইবানি, মুসনাদে আহমাদ ইবনে হাম্বাল, দারু ইহিয়াইত তুরাসিল আরাবি, বৈরুত।
  • ইমাম, সাইয়্যেদ জালাল, ‘বাররাসিয়ে তে’দাদে জামিয়াতে হাযের দার গাদির’, ‘তারিখ দার আয়েনেয়ে পেঝুহেশ’, পত্রিকা, কোম, মুআসসেসেয়ে ইমাম খোমেনি, ১৩৮৬ সৌরবর্ষ, চতুর্থ সংখ্যা।
  • আমিনি, আব্দুল হুসাইন, আল-গাদির ফিল কিতাবি ওয়াস সুন্নাহ, কোম, মারকাযুল গাদির লি-দিরাসাতিল ইসলামিয়াহ।
  • বাইহাকি, মানাকিবুশ শাফেয়ী, তাহকীক: সাইয়্যেদ আহমাদ সাকার, মাকতাবাতু দারিত তুরাস, কায়রো।
  • তিরমিযী, সুনানে তিরমিযী, দারুল মা’রিফাহ, বৈরুত।
  • সায়ালেবি, সামারুল কুলুব, তাহকীক: ইব্রাহিম সালেহ, দারুল বাশায়ের, দামেস্ক।
  • সা’লাবি, আহমাদ ইবনে মুহাম্মাদ, আল-কাশফ ওয়াল বায়ান আন তাফসিরীল কুরআন, বৈরুত, দারু ইহিয়াইত তুরাসিল আরাবি, ১৪২২ হি.।
  • জাযারি শাফেয়ী, মুহাম্মাদ ইবনে মুহাম্মাদ, আসনাল মাতালিব ফি মানাকিবি সাইয়্যিদিনা আলী ইবনে আবি তালিব, তাহকীক: মুহাম্মাদ হাদি আমিনী, ইসফাহান, মাকতাবাতুল ইমাম আমিরিল মু’মিনীন।
  • আল-হাকিম আল-হাসকানি, উবাইদুল্লাহ ইবনে আব্দুল্লাহ, শাওয়াহেদুত তানযীল লিকাওয়াইদিত তাফদ্বীল, তাহকীক: মুহাম্মাদ বাকির মাহমুদি, তেহরান, ইসলামি নির্দেশনা ও সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়, ১৪১১ হি.।
  • হুরর আমেলি, ওয়াসিয়েলুশ শিয়া, মুআসসিসাতু আলিল বাইত, কোম।
  • হালাবি, আলী ইবনে ইব্রাহিম, আস-সীরাতুল হালাবিয়া, বৈরুত, দারুল কুতুবিল আলামিয়াহ, দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৪২৭ হি.।
  • জুওয়াইনি, ইব্রাহিম ইবনে মুহাম্মাদ, ফারায়েদুস সিমতাইন, তাহকীক: মুহাম্মাদ বাকির মাহমুদি, বৈরুত, মুআসসিসাতুল মাহমুদি, ১৩৯৮ হি.।
  • খসরু সারাশকি, মাহদি, ‘নাকলহায়ে হাদিসে গাদির দার মানাবেয়ে রেওয়ায়িয়ে কারনে সেভভোম ও চাহারোম’, উলুমে হাদিস সাময়িকী, কোম, মুআসসিসাতু দারিল হাদিস, ১৩৭৭ ফার্সি সন, সংখ্যা ৭।
  • খাতিব বাগদাদী, আহমাদ ইবনে আলী, তারিখে বাগদাদ, তাহকীক: মুস্তাফা আব্দুল কাদির, বৈরুত, দারুল কুতুবুল আলামিয়া, ১৪১৭ হি.।
  • রেই শাহর, মুআসসিসাতুল ইমাম আলী ইবনে আবি তালিব, দারুল হাদিস, কোম।
  • শুয়াইরি, মুহাম্মাদ ইবনে মুহাম্মাদ, জামেউল আখবার, নাজাফ আশরাফ, আল-মাতবাআতুল হায়দারিয়া।
  • সাদুক, আমালি, তাহকীক: মোআসসেসেয়ে বে’সাত, কোম।
  • সাদুক, খিসাল, তাহকীক: আলী আকবার গাফফারি, জামেয়ে মুদাররেসীন, কোম।
  • তাবাতাবায়ী, সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ হুসাইন, আল-মিযান ফি তাফসিরিল কুরআন, বৈরুত, মুআসসিসাতুল আলামি লি-লমাতবুআত, ১৩৯৪ হি.।
  • তাবারসি, আহমাদ ইবনে আলী, আল-ইহতিজাজ, মাশহাদ, মুর্তাযা প্রকাশনী, ১৪০৩ হি.।
  • তাবারসি, মাজমাউল বায়ান, মুআসসিসাতুল আলামি লি-লমাতবুআত, বৈরুত।
  • তাবারি, মুহাম্মাদ ইবনে জারির, তারিখুল উমাম ওয়াল মুলুক, তাহকীক: মুহাম্মাদ আবুল ফাযল ইব্রাহিম, বৈরুত, দারুত তুরাস, ১৩৭৮ হি.।
  • তুসি, মুহাম্মাদ ইবনে হুসাইন, আত-তিবইয়ান ফি তাফসিরিল কুরআন, তাহকীক: আহমাদ হাবিব আল-আমিলি, বৈরুত, দারু ইহিয়াইত তুরসিল আরাবি।
  • তুসি, তালখিসুশ শাফি, তাহকীক সাইয়্যেদ হুসাইন বাহরুল উলুম, দারুল কুতুবিল ইসলামি, তেহরান।
  • তুসি, মুহাম্মাদ ইবনে হুসাইন, মিসবাহুল মুজতাহিদ, তেহরান, মাকতাবাতুল ইসলামিয়াহ।
  • তুসি, মুহাম্মাদ ইবনে হুসাইন, তাহযিবুল আহকাম, তেহরান, দারুল কুতুবিল ইসলামিয়াহ, ১৪০৭ হি.।
  • আইয়াশি, মুহাম্মাদ ইবনে মাসউদ, কিতাবুত তাফসির, সংশোধন: হাশেম রাসুলি, তেহরান, মাকতাবাতুল আলামিয়াতিল ইসলামিয়াহ, ১৩৮০ হি.।
  • কুরতুবি, মুহাম্মাদ ইবনে আহমাদ, আল-জামেউ লি-আহকামিল কুরআন, তেহরান, নাসের খসরু, ১৩৬৪ সৌরবর্ষ।
  • কোম্মি, আলী ইবনে ইব্রাহিম, তাফসিরে কোম্মি, দারুল কিতাব, ১৪০৪ হি.।
  • কুম্মি, মুনতাহাল আমাল, নাকশে নেগিন প্রকাশনী, ইসফাহান।
  • মুত্তাকি হিন্দি, কানযুল উম্মাল, মুআসসিসাতুর রিসালাহ, বৈরুত।
  • মাজলিসি, বিহারুল আনওয়ার, মুআসসিসাতুল ওয়াফা, বৈরুত।
  • মুহিব্ব তাবারি, আর-রিয়াদুন নাদ্বরাহ, দারুন নাদভাহ, বৈরুত।
  • মুফিদ, মুহাম্মাদ ইবনে মুহাম্মাদ, আল-ইরশাদ ফি মা’রিফাতি হুজাজিল্লাহি আলাল ইবাদ, কোম, মুআসসিসাতু আলিল বাইত লি-ইহিয়াইত তুরাস, ১৪১৩ হি.।
  • মুতাহহারি, মুর্ত্তাযা, ইমামাত ওয়া রাহবারি, তেহরান, সাদরা প্রকাশনী, দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৩৬৪।
  • নাসায়ী, আহমাদ ইবনে আলী, সুনানুল কোবরা, তাহকীক: আব্দুল গাফফার সুলাইমান বান্দারি, বৈরুত, দারুল কুতুবিল আলামিয়াহ, ১৪১১ হি.।
  • আল-ওয়াহেদি নিসাবুরি, আলী ইবনে আহমাদ, আসবাবুন নুযুলিল আয়াত, দার ওয়া মাকতাবাতুল হিলাল, ১৯৯১ খ্রি.।
  • শারিফ রাযি, মুহাম্মাদ, গাঞ্জিনেয়ে দানেশমান্দান (৪র্থ খণ্ড), তেহরান, ইসলামিয়া গ্রন্থ বিতান, ১৩৫৩ সৌরবর্ষ।