সাকলে আকবার

wikishia থেকে

সাকল বা সিকলে আকবার (আরবি:الثقل الأكبر); হাদীসে সাকালাইনে মহানবি (স.) পবিত্র কুরআনের ক্ষেত্রে যে বৈশিষ্ট্যটি ব্যবহার করেছেন।

(ثِقْل) অর্থ হল ভারী বোঝা [১] এবং (ثَقَل) বলতে যে কোন মূল্যবান বস্তু ও জিনিসকে বোঝায়।[২] হিজরী ৯ম শতাব্দির বিশিষ্ট আভিধানিক ফিরোজ আবাদী’র (মৃত্যুকাল ৮১৭ হি.) ভাষ্যমতে, হাদীসে সাকালাইনে ব্যবহৃত (ثقلین) শব্দটি (ثَقَل) থেকে নেয়া হয়েছে।[৩]

মহানবি (স.) হাদীসে সাকালাইনে কুরআনকে ‘সাকলে আকবার’ এবং তাঁর ইতরাত (আহলে বাইত)-কে ‘সাকলে আসগার’ বলে পরিচয় করিয়ে বলেছেন: যদি মুসলমানরা এ দু’টিকে আঁকড়ে ধরে তবে তারা কখনই পথভ্রষ্ট হবে না।[৪] মহানবি (স.) একইভাবে গাদীরে খুমে প্রদত্ত ঐতিহাসিক খোতবায় কুরআনকে সাকলে আকবার এবং আলী (আ.) ও তাঁর পবিত্র সন্তানদেরকে সাকলে আসগার হিসেবে পরিচয় করিয়েছেন।[৫]

ইমাম আলীও (আ.) তাঁর এক খোতবায়[৬] কুমাইল বিন যিয়াদকে প্রদত্ত উপদেশে নিজেকে সাকলে আসগার এবং কুরআনকে সাকলে আকবার হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।[৭]

কেন পবিত্র কুরআনকে সাকলে আকবার বলা হয়, এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, যেহেতু ইতরাত পবিত্র কুরআনের অনুসরণ করে তাই কুরআনকে ইতরাতের চেয়ে বড় বলে পরিচয় করানো হয়েছে।[৮] আবার কারো কারো মতে, যেহেতু কুরআন মহানবি (স.)-এর মুজিযা এবং দ্বীনের ভিত হিসেবে বিবেচিত এ জন্য ইতরাত অপেক্ষা বৃহৎ।[৯]


তথ্যসূত্র

  1. ইবনে মানযুর, লিসানুল আরাব, ১৪১৪ হি., খ:১১, পৃ:৮৫।
  2. ফিরোজ আবাদী, আল-ক্বামুসুল মুহিত,১৪২৬ হি., পৃ:৯৭২।
  3. ফিরোজ আবাদী, আল-ক্বামুসুল মুহিত,১৪২৬ হি., পৃ:৯৭২।
  4. আইয়াশী, তাফসিরে আইয়াশী, ১৩৮০ হি., খ:১, পৃ:৫।
  5. ইবনে তাউস, ইক্বালুল আমাল, ১৪০৯ হি., খ:১, পৃ:৪৫৬ ও ইয়াকুবী, তারিখে ইয়াকুবী, খ:২, পৃ:১১২।
  6. নাহজুল বালাগাহ, খুতবাহ-৮৭।
  7. মাজলেসী, বিহারুল আনওয়ার, ১৩৯০ হি., খ:৭৪, পৃ:৩৭৫।
  8. বাহরানী, শারহে নাহজুল বালাগাহ, ১৪০৪ হি., খ:২, পৃ:৩০৩।
  9. খুয়ী, মিনহাজুল বারায়াহ ফি শারহে নাহজুল বালাগাহ, ১৪০০ হি., খ:৬, পৃ:২১৫।

গ্রন্থপঞ্জি

  • ইবনে তাউস, আলী বিন মুসা, ইক্বালুল আমাল, তেহরান, দারুল কুতুবিল ইসলামিয়্যাহ, ১৪০৯ হি.।
  • ইবনে মানযুর, মুহাম্মাদ বিন মুকাররাম, লিসানুল আরাব, তাছহিহ-আহমাদ ফার্স, বৈরুত, দারুল ফিকর ও দারু সাদের, ১৪১৪ হি.।
  • বাহরানী, ইবনে মিসাম, শারহে নাহজুল বালাগাহ, তেহরান, দাফতারে নাশরে আল-কিতাব, ১৪০৪ হি.।
  • খুয়ী, মির্জা হাবিবুল্লাহ, মিনহাজুল বারায়াহ ফি শারহে নাহজুল বালাগাহ; তাছহিহ- সাইয়্যেদ ইবরাহিম মিয়ানেজী, তেহরান, মাকতাবাতুল ইসলামিয়্যাহ, ১৪০০ হি.।
  • আইয়াশী, মুহাম্মাদ বিন মাসুদ, তাফসিরে আইয়াশী; তাহকিক-সাইয়্যেদ হাশেম রাসুলী মাহাল্লাতী, তেহরান, মাতবায়াতুল ইলমিয়্যাহ, প্রথম সংস্করণ, ১৩৮০ হি.।
  • ফিরোজ আবাদী, মুহাম্মাদ বিন ইয়াকুব, আল-ক্বামুসুল মুহিত, বৈরুত, মুয়াসসাসাতুর রিসালাহ, ১৪২৬ হি.।
  • মাজলেসী, মুহাম্মাদ বাক্বের, বিহারুল আনওয়ার, তেহরান, দারুল কুতুবিল ইসলামিয়্যাহ, ১৩৯০ হি.।
  • ইয়াকুবী, আহমাদ, তারিখে ইয়াকুবী, বৈরুত, দারু সাদের...