খসড়া:আহলে যিকরের আয়াত
| আয়াতের নাম | আহলে যিকরের আয়াত |
|---|---|
| সূরার নাম | নাহল ও আম্বিয়া |
| আয়াত নম্বর | ৪৩ ও ৭ |
| পারা নম্বর | ১৪ ও ১৭ |
| শানে নুযুল | মুশরিক কর্তৃক ফেরেশতাদের মধ্য থেকে নবি (আ.) প্রেরণের দাবির খণ্ডনে, |
| অবতীর্ণের স্থান | মক্কা |
| বিষয় | আকাইদ্ |
| প্রসঙ্গ | আহলে যিকরের কাছে জিজ্ঞাসা করা, |
| সংশ্লিষ্ট আয়াত | আহলে বাইতের (আ.) ফযিলত |
আয়াতে আহলুয্ যিকর (আরবি: آية أهل الذكر) (নাহল: ৪৩ এবং আম্বিয়া: ৭); সমস্ত মানুষকে, বিশেষ করে মুশরিকদের, মহানবীর (সা.) নবুয়্যাতের সত্যতা সম্পর্কে জানতে আলেমদের কাছে প্রশ্ন করতে আহ্বান জানায়। এই আয়াত তখন নাজিল হয়, যখন মক্কার কাফেররা মহানবী (সা.) এর দাওয়াত অস্বীকার করেছিল এবং বলেছিল, আল্লাহকে অবশ্যই ফেরেশতাদের মধ্যে থেকে একজন নবী নির্বাচন করতে হবে।
মুফাসসিরদের মতে, এই আয়াতগুলোতে 'আহলে যিকর' বলতে ইহুদী ও খ্রিস্টান পণ্ডিত বা পূর্বপুরুষ এবং পূর্ববর্তী জাতিগুলোর অবস্থা সম্পর্কে অবগত জ্ঞানীদের বুঝানো হয়েছে এবং 'প্রশ্ন' বলতে তাদের কাছে থাকা গ্রন্থগুলোতে বিদ্যমান নবীদের (আ.) নবুয়্যাতের প্রমাণাদি সম্পর্কে প্রশ্ন করাকে বুঝানো হযয়েছে।
মুফাসসিরগণ উল্লেখিত দুইটি আয়াতের তাফসিরে শিয়া ও সুন্নি উভয় সূত্রে বহু হাদীসের উল্লেখের ভিত্তিতে বলেন যে, ‘আহলুয্ যিকর’-এর সবচেয়ে স্পষ্ট উদাহরণ হল আহলে বাইত (আ.)। সুতরাং, দ্বীন ইসলামের হুকুম-আহকাম এবং সঠিক তাফসিরে ও ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ তাঁদের কাছ থেকে শেখা উচিত।
কিছু উসূলশাস্ত্রীয় গ্রন্থে খবরে ওয়াহেদের প্রামাণ্যতার জন্য এই আয়াতের উপর নির্ভর করা হয়েছে।
মানবজাতির মধ্যে থেকে নবী প্রেরণের দর্শন
তাবারসী তার তাফসীরে মাজমাউল বায়ান-এর সূচনায় আয়াতের ‘আহলুয্ যিকর’-কে এ নির্দেশের সূচক হিসেবে দেখান যে, আল্লাহ তাঁর রসূলকে (সা.) মানুষের জাতির মধ্য থেকে পাঠিয়েছেন যাতে মানুষ তাঁকে দেখতে পারে, তার সঙ্গে কথা বলতে পারে এবং তাঁর ভাষা বোঝতে পারে; অতএব কোনও ফেরেশতাকে মানুষের পরিবর্তে ঐশী বার্তা প্রচারের জন্য প্রেরণ করা সঠিক বা যৌক্তিক নয়।[১]
আল্লামা তাবাতাবাঈ আয়াতটি রাসূলদের প্রেরণের ধরণ ব্যাখ্যা করার পরিপ্রেক্ষিতে বলে মনে করেন, যাতে মুশরিকরা বুঝতে পারে যে, ধর্মীয় আহ্বান একটি সাধারণ ও স্বাভাবিক আহ্বান; পার্থক্য শুধু এটুকুই যে, আল্লাহ এই আহ্বানের ধারকদের ওহী দ্বারা পৃথিবী ও পরকালের জন্য যা যা কল্যাণময় হতে পারে তা পাঠান, এবং কোনো গায়েবি বা গোপন শক্তি নেই যা মানুষের ইচ্ছা ও স্বাধীনতাকে বাতিল করতে পারে বা তাদের ধর্মীয় আহ্বান মেনে নিতে বাধ্য করতে পারে, এবং কোনো নবীও দাবি করেনি যে তাঁর তাকভিনি ইরাদা ও গায়েবি শক্তির মাধ্যমে বিশ্বের প্রাকৃতিক চলমান ব্যবস্থা পরিবর্তন করা হবে।[২]
তার মতে, যদিও আয়াতের (فَسْئَلُوا أَهْلَ الذِّكْرِ إِنْ كُنْتُمْ لا تَعْلَمُونَ) রাসুল (সা.) এবং তাঁর উম্মতকে সম্বোধন করা হয়েছে, তবে এটি সাধারণ জনগণ বিশেষ করে কাফেরদের উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে, যারা মহানবীর (সা.) আহ্বানের সত্যতা বুঝতে পারেনি, তাদের উচিত জ্ঞানীদের কাছে প্রশ্ন করা।[৩] মহানবী (সা.) এবং মুমিনগণ, যারা আম্বিয়াদের দায়িত্ব এবং তাঁদের প্রেরণ সম্পর্কিত মহান আল্লাহর সুন্নত সম্পর্কে অবগত, তাদের জন্য জ্ঞানীদের কাছে প্রশ্ন করার প্রয়োজন নেই।
আর, যারা মুশরিক, তারা যে নবীর (সা.) প্রতি শুধু বিশ্বাস রাখে না; বরং তাঁকে উপহাস করে এবং পাগল মনে করে; ফলস্বরূপ কেবল তাওরাতের অনুসারী, (ইহুদিরা) যারা নবীর সাথে শত্রুতা রাখে, তারা আয়াতের সম্বোধিত হিসেবে রয়ে যায়।[৪]
মাকারেম শিরাজি তাঁর তাফসীর নেমুনেহ -তেও মনে করেন যে, আয়াতের (فَسْئَلُوا أَهْلَ الذِّكْرِ إِنْ كُنْتُمْ لا تَعْلَمُونَ) অংশ দ্বারা এই সত্যকেই তাকিদ এবং স্বীকৃতি দেয় যে, স্বাভাবিক পন্থায় মানুষের কাছে ওহীর বার্তা পৌঁছে দেওয়া নবীদের (আ.) দায়িত্ব, কেবলমাত্র অলৌকিক শক্তি ব্যবহার করে বা প্রকৃতির নিয়ম ভেঙে মানুষকে দাওয়াত মেনে নিতে বাধ্য করা নবীদের (আ.) কাজ নয়; যদি তা হতো তবে ইমান আনন করা গৌরব এবং পরিপূর্ণতার কাজ হতো না।[৫]
وَمَا أَرْسَلْنَا قَبْلَكَ إِلَّا رِجَالًا نُوحِي إِلَيْهِمْ فَاسْأَلُوا أَهْلَ الذِّكْرِ إِنْ كُنْتُمْ لَا تَعْلَمُونَ
অর্থ: “আর, তোমার পূর্বে আমি কেবল পুরুষদেরকেই প্রেরণ করেছি যাদের প্রতি ওহী প্রেরণ করেছি। অতএব, যদি তোমরা না জানো, তাহলে জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞাসা করো।”
সূরা আম্বিয়া: ৭।
শানে নুযূল
ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণিত হয়েছে, যখন হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে নবুয়াতের জন্য নির্বাচিত করা হলো, তখন এই বিষয়টি মক্কার মানুষদের মেনে নিতে পারছিল না এবং তারা তাঁর নবুয়াতকে অস্বীকার করে। তারা বলেছিল, আল্লাহ এর থেকে মহান যে, তিনি মানুষের মধ্যে থেকে নবী (আ.) নির্বাচন করবেন। মুশরিকদের অভিযোগের উত্তরে, সূরা ইউনুসের এই আয়াত এবং দ্বিতীয় আয়াত নাজিল (أَ كانَ لِلنَّاسِ عَجَباً أَنْ أَوْحَيْنا إِلى رَجُلٍ مِنْهُمْ) (মানুষের জন্য কি আশ্চর্যজনক যে আমরা তাদের মধ্য থেকে একজন মানুষকে ওহী প্রেরণ করি?) হয়েছিল।[৬] এছাড়াও বলা হয়েছে, আহলে যিকরের আয়াত মুশরিকদের উত্তরে নাজিল হয়েছিল, যারা বলেছিল, আল্লাহর প্রেরিত নবীকে অবশ্যই ফেরেশতাদের মধ্য থেকে হওয়া উচিত।[৭]
আহলে যিকর ও এর উদাহরণসমূহ
মুফাসসিরগণ এই আয়াতের মধ্যে 'আহলুয যিকর'-এর দ্বারা উদ্দেশ্য ও তার উদাহরণসমূহ পর্যালোচনা ও যাচাই-বাছাই করেছেন। মুফাসসিরগণের মতে, এই আয়াতের প্রেক্ষাপট অনুযায়ী 'আহলুয যিকর'-এর অর্থ হলো জ্ঞানী ও পণ্ডিত শ্রেণীর মানুষ; যারা যিকর (কুরআন, ঐশীগ্রন্থ ইত্যাদি)-এর সঙ্গে সবচেয়ে বেশি সম্পৃক্ত এবং সাদৃশ্য রাখে, এবং আলোচিত আয়াতে 'আহলুয যিকর' হলো ইহুদি ও নাসারা[৮] বা যারা অতীতের খবরাখবর ও পূর্ববর্তী জাতির ঘটনা ও ইতিহাস সম্পর্কে জ্ঞান রাখে।[৯] প্রশ্ন করতে বলার উদ্দেশ্য হলো, নবুয়তের চিহ্ন বা প্রমাণাদি নিয়ে অনুসন্ধান করা, যা তাদের গ্রন্থে বিদ্যমান।[১০] এতদসত্ত্বেও, মুফাসসিরগণ 'আহলুয যিকর'-এর ধারণাকে বিস্তৃতভাবে গ্রহণ করেছেন এবং এর অন্যান্য উদাহরণ উল্লেখ করেছেন। শিয়া ও সুন্নি উভয় মুফাসসিরগণের মধ্যে 'আহলুয যিকর'-এর উদাহরণ সম্পর্কে দুটি দৃষ্টি রয়েছে:
আহলে বাইত (আ.)
শিয়া মুফাসসিরগণ বিভিন্ন হাদিসের[১১] উপর ভিত্তি করে 'আহলুয যিকর'-এর সুস্পষ্ট এবং পরিপূর্ণ উদাহরণ হিসেবে আহলে বাইত (আ)-কে অভিহিত করেছেন।[১২] আহলে সুন্নাতের তাফসিরেও, হাদিসের উপর নির্ভর করে, যেমন- ইমাম আলী (আ) থেকে বর্ণিত সাদ্দির হাদিসে, 'আহলুয যিকর' বলতে মুহাম্মদ (সা.), আলী, ফাতিমা, হাসান এবং হুসাইনকে (আলাইহিমুস সালাম) উল্লেখ করা হয়েছে; যারা জ্ঞান এবং তাফসীর ও তা’বিলের :ভাণ্ডার।[১৩] কুর্তুবী এবং তাবারী, আহলু সুন্নাতের মুফাসসির, সূরা আন্বিয়ার ৭ নং আয়াতের তাফসিরে একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন, যেখানে এসেছে যে, ইমাম আলী (আ.) আয়াতটি অবতীর্ণ হওয়ার সময় বলেন, (نحن اهلالذکر) 'আহলুয যিকর'।'[১৪]
বাসাইরুদ্ দরাজাত গ্রন্থে (فی ائمة آل محمد انهم اهل الذکر الذین امر الله بسؤالهم) শিরোনামে একটি অধ্যায়ে ২৮টি হাদিস বর্ণিত হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে যে, 'আহলুয যিকর' হলেন আহলে বাইত (আ.)।[১৫] এই অধ্যায়ের একাদশ হাদিসে ইমাম সাদিক (আ.) থেকে বর্ণনা রয়েছে যে, ‘যিকর’ দ্বারা উদ্দেশ্য হল মুহাম্মদ (সা.) এবং আমরা ইমামরা তাঁর আহল বা পরিবার, সুতরাং, অবশ্যই আমাদের কাছ থেকেই প্রশ্ন করতে হবে।[১৬] শেইখ কুলাইনীও তাঁর উসুলে কাফিতে (ان اهل الذکر الذین امر الله الخلق بسؤالهم هم الائمه) শিরোনামে একটি অধ্যায় উল্লেখ করেছেন।[১৭] মাজলিসি তাঁর বিহারুল আনওয়ার গ্রন্থে (انهم (الائمه) علیهم السلام الذکر و اهل الذکر) অধ্যায়ে কতিপয় হাদিস বর্ণনা করেছেন, যা ইঙ্গিত করে যে ‘আহলুয যিকর' হলেন শিয়া ইমামগণ (আ.)।[১৮]
উল্লিখিত হাদিসগুলোর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে যে, -আহলুয যিকর দ্বারা ইমমাগণ উদ্দেশ্য- এটা আয়াতের বাহ্যিক অর্থে নয়; কারণ মক্কার কাফিরদের জন্য ইমামদের থেকে কিছু জিজ্ঞাসা করা সম্ভব ছিল না (সেসময় ইমামগণ (আ.) উপস্থিত ছিলেন না) এবং করা হলেও তারা ইমামগণের (আ.) কথাকে কোনো প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করতো না, যেমন তারা রাসূলুল্লাহর (সা.) কথাকেও গ্রহণ ও সত্যায়ন করতো না; সুতরাং, এই হাদিসগুলোর অর্থ হলো রূপক এবং উপমা স্বরূপ। এ তাফসির অনুযায়ী, প্রতিটি বিষয় তার যোগ্য ব্যক্তির কাছ থেকে জিজ্ঞাসা করতে হবে। যেমন- নবীদের (আ.) মানুষ হওয়ার বিষয়ে যেমন পূর্ববর্তী উম্মতের আলেমদের কাছ থেকে জিজ্ঞাসা করতে হয়, তেমনি ইসলামের তাফসির ও হুকুম-আহকাম মাসুম ইমামদের (আ.) কাছ থেকে জিজ্ঞাসা করতে হবে।[১৯]
মাকারেম শিরাজির মতে, এই ব্যাপারটি মেনে নেওয়া যে -আহলে বাইত (আ.) হল আহলুয যিকর-এর সুস্পষ্ট উদাহরণ- আয়াতটির আহলে কিতাবের আলেমদের সম্পর্কে নাযিল হওয়ার সাথে কোনো বিরোধ সৃষ্টি করে না; কারণ এসংক্রান্ত কোরআনের ব্যাখ্যামূলক হাদিসে এই বিষয়টি বহুবার উল্লেখ হয়েছে এবং সুনির্দিষ্ট উদাহরণ রয়েছে যা আয়াতের বিস্তৃত অর্থকে সীমাবদ্ধ করে না।[২০]
আলেমগণ
কিছু মুফাসসিরের মতে, প্রায়শই, আয়াতের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে, আহলে যিকর্-কে আহলে কিতাব বা আহলে ইলম (জ্ঞানী ব্যক্তি) হিসাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।[২১] আহলে যিকর্-এর অর্থের ভিত্তিতে, যারা কোন বিষয়ে অধিকতর জ্ঞান রাখেন এবং সচেতন তারা এর অন্তর্ভুক্ত। এই আয়াতটিকে যুক্তিসঙ্গত নীতিগুলোর একটি নির্দেশিকা হিসাবে বিবেচনা করা হয় যা অজ্ঞদের প্রতিটি ক্ষেত্রে জ্ঞানীদের দারস্থ হওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা বলে। অতএব, এটা স্পষ্ট যে, এই আদেশটি কোন ধর্মীয় ও শারয়ি আদেশ ছিল না।[২২]
সুন্নি মুফাসসিরগণ ‘আহলে যিকর’ শব্দটির পনেরটি অর্থ উল্লেখ করেছেন,[২৩] যা দ্বারা তিনটি দলকে বুঝায়: আহলে কিতাব, আহলে কুরআন,[২৪] এবং আহলে বাইতের আলেমগণ।[২৫]
আয়াতের ফিকাহগত প্রয়োগ
একজন মুজতাহিদের ফতোয়ার বৈধতা প্রতিষ্ঠা করা
এই আয়াতটি একজন মুজতাহিদকে অনুসরণের প্রয়োজনীয়তা বা তার ফতোয়ার বৈধতা প্রমাণের জন্য একটি যুক্তি হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে; অর্থাৎ, যারা ফিকাহশাস্ত্রীয় হুকুম-আহকাম জানেন না তাদের উচিত এমন মুজতাহিদদের অনুসরণ করা যারা ফিকাহশাস্ত্রীয় হুকুম সম্পর্কে বিস্তর জ্ঞান রাখেন।[২৬] কেউ কেউ আপত্তি করেছেন যে, এই আয়াতে আহলে যিকর্ দ্বারা শিয়া ইমামগণ (আ.) উদ্দেশ্য, তাই এতে মুজতাহিদগণ এর অন্তর্ভুক্ত নয়।[২৭]
এই আপত্তির জবাবে সাইয়্যিদ আবুল কাসিম খুয়ী বলেন যে, "আহলে যিকর্" হলো একটি সাধারণ পরিভাষা যা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন উদাহরণ গ্রহণ করে; ইমামদের (আ.) উপস্থিতিতে তাঁরা আহলে যিকর্-এর উদাহরণ এবং ইমামদের (আ.) অনুপস্থিতিতে মুজতাহিদগণ হলেন "আহলে যিকর্-এর উদাহরণ এবং মুসলমানদের উচিত তাঁদেরকে অনুসরণ করা ও তাঁদের কাছে ফেকহি বিধান জিজ্ঞেস করা।[২৮]
খাবারে ওয়াহেদের বৈধতা প্রতিষ্ঠা করা
ফিকাহশাস্ত্রের নীতিমালায়, কেউ কেউ একটি খবরে ওয়াহেদের সত্যতা প্রমাণের জন্য আহলে যিকরের আয়াতের উপর নির্ভর করেছেন, যুক্তি দিয়ে বলেছেন, যখন আয়াতে বলা হয়েছে যে, আহলে যিকরের কাছে জিজ্ঞাসা করা বাধ্যতামূলক, তখন তাদের কথা গ্রহণ করাও বাধ্যতামূলক; অন্যথায়, জিজ্ঞাসার বাধ্যবাধকতা অর্থহীন হয়ে যাবে।[২৯] অবশ্য, এই যুক্তির উপর কিছু আপত্তি উত্থাপিত হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, শেখ মুর্তজা আনসারী বলেছেন যে, হাদিস অনুসারে, আহলে যিকর্ দ্বারা উদ্দেশ্য ইমামগণ (আ.), তাদের হাদীসের বর্ণনাকারীরা নয়।[৩০]
তথ্যসূত্র
- ↑ তাবারসী, মাজমাউল বয়ান, ১৩৭১ (ফার্সি সন), খ: ৬, পৃ: ৫৫৭।
- ↑ তাবাতাবাঈ, আল মীযান, ১৩৯০ হি., খ: ১২, পৃ: ২৫৬।
- ↑ তাবাতাবাঈ,আল মীযান, ১৩৯০ হি., খ: ১২, পৃ: ২৫৭।
- ↑ তাবাতাবাঈ,আল মীযান, ১৩৯০ হি., খ: ১২, পৃ: ২৫৭-২৫৮।
- ↑ মাকারেম শিরাজী, তাফসীরে নেমুনেহ, ১৩৭১ (ফার্সি সন), খ: ১১, পৃ: ২৪১।
- ↑ মুহাক্কিক, নেমুনেয়ে বাইয়িনাত দার শানে নুযুলে আয়াত, ১৩৬১ (ফার্সি সন), পৃ: ৪৮১।
- ↑ ওয়াহিদী, আসবাবে নুযুলিল কুরআন, ১৪১১ হি., পৃ:২৮৬।
- ↑ আবু হাইয়ান, আল বাহরুল মুহীত, ১৪২০ হি., খ: ৬, পৃ: ৫৩৩; তাবাতাবাঈ, আল মীযান, ১৩৯০ হি., খ: ১২, পৃ: ২৫৮; মাকারেম শিরাজী, তাফসীরে নেমুনেহ, ১৩৭১ (ফার্সি সন), খ: ১১, পৃ: ২৪৪।
- ↑ তাবারসী, মাজমাউল বয়ান, ১৩৭২ (ফার্সি সন), খ: ৬, পৃ: ৫৫৭; তাবাতাবাঈ, আল মীযান, ১৩৯০ হি., খ: ১২, পৃ: ২৫৮; মাকারেম শিরাজী, তাফসীরে নেমুনেহ, ১৩৭১ (ফার্সি সন), খ: ১১, পৃ: ২৪৪।
- ↑ আসগারপুর কারামালকী, আহলে যিকর, পৃ:১৩২।
- ↑ কুলাইনী, আল কাফী, ১৪০৭ হি., খ: ১, পৃ: ২১০-২১১।
- ↑ হুয়াইযী, নুরুস সাকালাইন, ১৪১৫ হি., খ: ৩, পৃ: ৫৫; মাকারেম শিরাজি, তাফসীরে নেমুনেহ, ১৩৭১ (ফার্সি সন), খ:১১, পৃ:২৪৪।
- ↑ হাসকানী, শাওয়াহিদুত তানযীল, ১৪১১ হি., খ: ১, পৃ: ৪৩২।
- ↑ কুরতুবী, আল জামি' লি আহকামিল কুরআন, ১৩৬৪ (ফার্সি সন), খ: ১১, পৃ: ২৭২; তাবারী, জামিউল বয়ান, ১৪১২ হি., খ:১৭, পৃ:৫।
- ↑ সাফফার কুমী, বাসায়িরুদ দারাজাত, ১৪০৪ হি., বাব-১৯, পৃ: ৩৮-৪৩।
- ↑ সাফফার কুমী, বাসায়িরুদ দারাজাত, ১৪০৪ হি., বাব-১৯, পৃ: ৪০।
- ↑ কুলাইনী, আল কাফী, ১৪০৭ হি., খ: ১, পৃ: ৩০৩।
- ↑ মাজলিসী, বিহারুল আনওয়ার, ১৪০৩ হি., খ: ২৩, পৃ: ১৭২।
- ↑ শো'রানী, নাসরে তুবা, ১৩৯৮ হি., খ: ১, পৃ:২৭৬।
- ↑ মাকারেম শিরাজি, তাফসীরে নেমুনেহ, ১৩৭১ (ফার্সি সন), খ: ১১, পৃ: ২৪৪।
- ↑ নাজ্জার যাদেগান ও হাদীলু, ‘বাররাসী ও আরযিয়াবে ওজুহে জাম বাইন রেওয়ায়াতে আহলে যিকর’, পৃ:৩৫।
- ↑ তাবাতাবাঈ, আল মীযান, ১৩৯০ হি., খ: ১২, পৃ: ২৫৯।
- ↑ বাশাভী,‘নাক্দ ও বাররাসীয়ে দিদগাহে ফারিকাইন দারবারে আহলে যিকর,, পৃ: ৫৭।
- ↑ কুর্তুবী, আল জামি' লি আহকামিল কুরআন, ১৩৬৪ (ফার্সি সন), খ: ১০, পৃ: ১০৮।
- ↑ ইবনে কাসীর, তাফসীরুল কুরআনিল আযীম, ১৪১৯ হি., খ: ৪, পৃ: ৪৯২।
- ↑ শেখ আনসারী, ফারাইদুল উসূল, ১৪১৬ হি., খ: ১, পৃ: ২৯০-২৯১; আখুন্দে খুরাসানী, কিফায়াতুল উসূল, ১৪৩১ হি., খ: ২, পৃ: ৭৬; গুরাভী, আত তানকীহ (তাকরীরাতে দারসে ফিকহে আয়াতুল্লাহ খুই), ১৪০৭ হি., খ: ১, পৃ: ৬৭।
- ↑ খুমিনী, আল ইজতিহাদ ওয়াত তাকলীদ, ১৪০৯ হি., পৃ:৮৯-৯০।
- ↑ ওয়ায়েয হুসাইনী বেহসুদী, মিসবাহুল উসূল (তাকরীরাতে দারসে উসূলে ফিকহে আয়াতুল্লাহ খুই), ১৪২২ হি., খ: ১, পৃ: ২২০।
- ↑ শেখ আনসারী, ফারাইদুল উসূল, ১৪১৬ হি., খ: ১, পৃ: ১৩২; আখুন্দে খুরাসানী, কিফায়াতুল উসূল, ১৪০৯ হি., খ: ১, পৃ: ৩০০।
- ↑ শেখ আনসারী, ফারাইদুল উসূল, ১৪১৬ হি., খ: ১, পৃ: ১৩৩।
গ্রন্থপঞ্জি
- ইবনে কাসীর, ইসমাঈল ইবনে উমর, তাফসীরুল কুরআনিল আযীম; তাহকীক- মুহাম্মাদ হুসাইন শামসুদ্দীন, বৈরুত, দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ, প্রথম সংস্করণ, ১৪১৯ হি.,
- আবু হাইয়ান, মুহাম্মাদ ইবনে ইউসুফ, আল বাহরুল মুহীত ফিত তাফসীর, বৈরুত, দারুল ফিকর, ১৪২০ হি.,
- আখুন্দে খুরাসানী, মুহাম্মাদ কাজিম, কিফায়াতুল উসূল, কুম, মুআসসাসাতু আলে বাইত, ১৪০৯ হি.,
- আসগারপুর কারামালকী, মুহসিন, আহলে যিকর, দায়েরাতুল মা'আরিফুল কুরআনিল কারীম, কুম, বুস্তানুল কিতাব, ১৩৮৩ (ফার্সি সন),
- শেখ আনসারী, মুর্তাযা, ফারাইদুল উসূল, কুম, মুআসসাসাতু নাশরিল ইসলামী, ১৪১৬ হি.,
- বাশাভী, মুহাম্মাদ ইয়াকুব, ‘নাক্দ ও বাররাসীয়ে দিদগাহে ফারিকাইন দারবারে আহলে যিকর’, মাজল্লাহায়ে পাজুহেশনামে হিকমত ও ফালসাফায়ে ইসলামী, কুম, জামিআতুল মুস্তাফা আল আলামিয়্যাহ, সংখ্যা-৭, পায়িজ, ১৩৮২ (ফার্সি সন),
- হুর আমিলী, মুহাম্মাদ ইবনে হাসান, ওয়াসাইলুশ শিয়া, কুম, মুআসসাসাতু আলে বাইত লি ইহইয়ায়িত তুরাস, ১৪১৪ হি.,
- হাসকানী, উবাইদুল্লাহ ইবনে আব্দুল্লাহ, শাওয়াহিদুত তানযীল লি কাওয়াইদিত তাফযীল, তেহরান, ওযারাতে ফারহাং ও এরশাদে ইসলামী, ১৪১১ হি.,
- হুয়াইযী, আব্দুল আলী ইবনে জুম'আহ, তাফসীরে নুরুস সাকালাইন, মুসাহহিহ হাশিম রাসূলী, কুম, ইসমাঈলিয়ান, ১৪১৫ হি.,
- শো'রানী, আবুল হাসান, নাসরে তুবা, তেহরান, দারুল কুতুবিল ইসলামিয়্যাহ, ১৩৯৮ হি.,
- সাফফার কুমী, মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান, বাসায়িরুদ দারাজাত ফি ফাযায়েলে আলে মুহাম্মাদ (স.); তাসহিহ ওয়া তা'লীক- মীরযা মুহসিন কুচেবাগী তাবরিযী, কুম, ইন্তিশারাতে কিতাবখানায়ে আয়াতুল্লাহিল উযমা মার'শী নাজাফী, ১৪০৪ হি.,
- তাবাতাবাঈ, সাইয়েদ মুহাম্মাদ হুসাইন, আল মীযান ফি তাফসীরিল কুরআন, বৈরুত, মুআসসাসাতুল আ'লামী লিল মাতবু'আত, ১৩৯০ হি.,
- তাবরাসী, ফাযল ইবনে হাসান, মাজমাউল বয়ান, তেহরান, নাসির খসরু, ১৩৭২ (ফার্সি সন),
- তাবারী, মুহাম্মাদ ইবনে জারীর, জামিউল বায়ান ফি তাফসীরিল কুরআন, বৈরুত, দারুল মা'রিফাহ, ১৪১২ হি.,
- গুরাভী, আলী, আত্ তানকীহ ফি শারহিল উরওয়াতিল উসকা (তাকরীরাতে দারসে ফিকহে আয়াতুল্লাহ খুই), কুম, ইন্তিশারাতে লুৎফী, ১৪০৭ হি.,
- কুর্তুবী, মুহাম্মাদ ইবনে আহমাদ, আল জামি' লি আহকামিল কুরআন, তেহরান, নাসির খসরু, ১৩৬৪ (ফার্সি সন),
- শেখ কুলাইনী, মুহাম্মাদ ইবনে ইয়াকুব, আল কাফী, তেহরান, দারুল কুতুবিল ইসলামিয়্যাহ, ১৪০৭ হি.,
- মাজলিসী, মুহাম্মাদ বাকির, বিহারুল আনওয়ার, বৈরুত, দারু ইহইয়ায়িত তুরাসিল আরাবী, ১৪০৩ হি.,
- মুহাক্কিক, মুহাম্মাদ বাকির, নেমুনেয়ে বাইয়িনাত দার শানে নুযুলে আয়াত, তেহরান, ইসলামী, ১৩৬১ (ফার্সি সন),
- মাকারেম শিরাজী, নাসের, তাফসীরে নেমুনেহ, তেহরান, দারুল কুতুবিল ইসলামিয়্যাহ, ১৩৭১ (ফার্সি সন),
- নাজ্জার যাদেগান, ফাতহুল্লাহ ও হাদীলু, সুমাইয়্যাহ, ‘বাররাসী ও আরযিয়াবে ওজুহে জাম বাইন রেওয়ায়াতে আহলে যিকর’, মাজাল্লাহায়ে উলুমে হাদীস, সংখ্যা-৬৫, পায়িজ,১৩৯১ (ফার্সি সন),
- ওয়াহিদী, আলী ইবনে আহমাদ, আসবাবে নুযুলিল কুরআন; তাহকীক- কামাল বাসিউনী যাগলুল, বৈরুত, দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ, ১৪১১ হি.,
- ওয়ায়েয হুসাইনী বেহসুদী, মুহাম্মাদ সারওয়ার, মিসবাহুল উসূল (তাকরীরাতে দারসে উসূলে ফিকহে আয়াতুল্লাহ খুই), কুম, মুআসসাসাতে ইহইয়ায়ে আসারিল ইমামিল খোই, ১৪২২ হি.।