কিবলামুখী নামায আদায়কারিদের প্রতি কাফির ফতোয়া
আহলে কিবলাদের প্রতি তাকফির (আরবি: تكفير أهل القبلة) বলতে বুঝায় কিবলামুখী নামায আদায়কারি একদল মুসলমানের প্রতি অন্য একদল মুসলমান কর্তৃক কাফির ফতোয়া আরোপ। ফলে যাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের ফতোয়া আরোপ করা হয় তাদের জান ও মালের ধ্বংস সাধন একশ্রেণীর লোকদের নিকট বৈধ হিসেবে স্বীকৃত হয়। ওহাবি সম্প্রদায় তওহীদ, জিয়ারত ও তাওয়াসসুল সম্পর্কে নিজেদের মধ্যে বিদ্যমান কথিত আকিদার কারণে তাদের মতাদর্শের বিরোধি মুসলমানদের বিশেষত শিয়া মাযহাবের অনুসারীদের প্রতি কাফির ফতোয়া আরোপ করে থাকে।
অধিকাংশ খ্যাতনামা মুসলিম আলেম ও মনীষীবর্গ ঈমান ও কুফরের মানদণ্ড নির্ধারণের ক্ষেত্রে কলেমা পাঠকারীকে মুসলিম হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন এবং মুসলিম মাযহাবসমূহের অনুসারীদেরকে কাফির ফতোয়া দানকে জায়েয মনে করেন না। তদুপরি অতীতকাল থেকেই মুসলমানদের মধ্যে একশ্রেণীর লোকেরা নিজেদের মধ্যে প্রচলিত আকিদা-বিশ্বাসের পরিপন্থী অন্য মুসলমানদের প্রতি কাফির ফতোয়া আরোপ করে আসছে। আমিরুল মু’মিনিন আলীর (আ.) খেলাফতকালে খারেজী সম্প্রদায় কর্তৃক তাঁকে কাফির ফতোয়া দান এবং প্রথম খলিফা হযরত আবু বকরের সময় আহলে রিদ্দাদের (যারা হযরত আবু বকরের খেলাফতের অস্বীকার এবং তাকে যাকাত প্রদানে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করেছিল) প্রতি কাফির আখ্যায়িত করার ঘটনা ইসলামের ইতিহাসে কিবলামুখী নামায আদায়কারী মুসলমানদের প্রতি অন্য মুসলমান কর্তৃক কাফির ফতোয়া আরোপের সর্বপ্রথম নমুনা। তারপর থেকে সময়ের আবর্তে একশ্রেণীর মুসলমানদের মধ্যে অন্য মুসলমানদের সম্পর্কে এহেন মনোভাব দেখা দেয়; আর এ বিরোধের জের ধরে অনেক ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছেন। অবশ্য এমন পরস্পর বিরোধী ফতোয়া দানের প্রবণতা শুধুমাত্র আন্তঃমাযহাবের অনুসারীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। বরং অনেক সময় একই মাযহাবের ফিকাহবিদ, দার্শনিক, আরেফ ও সাধক নিজেদের মধ্যে মতপার্থক্যের জের ধরে পরস্পরের বিরুদ্ধে কাফির ফতোয়া দিত। যেমনঃ পবিত্র কুরআনের অনাদি হওয়া ও সৃষ্ট হওয়া এ দুটি ধারণাকে কেন্দ্র করে সুন্নী মাযহাবের অনুসারীদের মধ্যে দুটি পক্ষ বছরের পর বছর নিজেদের মধ্যে বিরোধে জড়িয়ে পড়ে এবং এক পক্ষ অপর পক্ষের বিরুদ্ধে কাফির ফতোয়া দানেও দ্বিধাবোধ করত না। ওহাবী মতবাদের সৃষ্টির পর থেকে কিবলামুখী নামায আদায়কারীদের বিরুদ্ধে অপর মুসলমান কর্তৃক কাফির ফতোয় আরোপের প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। সম্প্রতি ওহাবী মতবাদে প্রভাবিত হয়ে অনেক চরমপন্থি গোষ্ঠি যেমন আইএসআইএস গঠিত হয়ে শিয়া মুসলমানদের বিরুদ্ধে কাফির ফতোয়া আরোপ করেছে। কলেমা পাঠকারী মুসলমানদের বিরুদ্ধে কাফির ফতোয়া আরোপকারীদের স্বরূপ ও তাদের চিন্তাগত অসারতা এবং নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে বিশ্লেষণধর্মী আলোচনা তুলে ধরার নিমিত্তে আমাদের এ বক্ষ্যমাণ প্রবন্ধের মুখ্য উদ্দশ্য।
গুরুত্ব ও প্রায়েজনীয়তা
তাকফির তথা অন্য মুসলমানদের বিরুদ্ধে কাফির ফতোয়া আরোপ একটি ফিকাহগত ও আকিতাগত বিষয়; ইসলামের ইতিহাসে বিভিন্ন সময়ে এমন ফতোয়া আরোপের কারণে একটি মুসলমান গোষ্ঠির জান—মালের উপর আগ্রাসন, রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ দেখা দিয়েছে এবং এ সংঘর্ষে অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন, আবার কেউ কেউ গৃহহীন হয়েছেন। [১] আবার কখন কখনও কোন মুসলিম মাযহাবের অনুসারীদের বিরুদ্ধে কাফির ফতোয়া আরোপের কারণে তাদের পবিত্র স্থানসমূহের উপর আগ্রাসন চালিয়ে তা ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। [২] বিগত শতাব্দিগুলোতে তাকফিরী চিন্তাধারার যেমন বিস্তার ঘটেছে তেমনি এমন মনোভাবাপন্ন গোষ্ঠি কর্তৃক মুসলমানদের বিরুদ্ধে কাফির ফতোয়া আরোপের প্রবণতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে সম্প্রতিক সময়ে তাকফিরী চিন্তাধারা নিয়ে অনেক বিশ্লেষণ, বই—পুস্তক রচনা [৩] এবং সেমিনার ও সেম্পোজিয়ামও অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সংজ্ঞা ও প্রকারভেদ
তাকফির বলতে বুঝায় কোন মুসলিম গোষ্ঠির বিরুদ্ধে কাফির ফতোয়া আরোপ [৪] কিংবা কিবলামুখী নামায আদায়কারী মুসলমানদের কাফির আখ্যায়িত করা। [৫] কুফর দু’ধরনের একটি হচ্ছে ফিকাহগত কুফর এবং অপরটি আকিদাগত কুফর। কোন মুসলিম জনগোষ্ঠির উপর এ দু’ধরনের যে কোন একটি কুফরের আখ্যা আরোপ তাদের জন্য ভিন্ন ভিন্ন অবস্থার সৃষ্টি করে। যথাঃ
১. ফিকাহগত কুফর বা বাহ্যিক ধর্মহীনতা হচ্ছে ইসলামচ্যুত হওয়া। এমতাবস্থায় যে মুসলমান ব্যক্তি ফিকাহগত কাফির হবে তার সাথে সাধারণ কাফির ব্যক্তির ন্যায় ব্যবহার করতে হবে।
২. আকিদাগত কুফর বা অভ্যন্তরীণ ধর্মহীনতা হচ্ছে ঈমানচ্যুত হওয়া, না ইসলামচ্যুতি। কাজেই যদি কোন মুসলমান আকিদাগত কাফির হবে তার সাথে সাধারণ কাফির ব্যক্তির মত নয়, বরং মুনাফিক ব্যক্তির ন্যায় ব্যবহার করতে হবে। যে বাহ্যিকভাবে মুসলমান মনে হলেও ঈমানহীন। [৬]
কিবলামুখী নামায আদায়কারিদের প্রতি কাফির ফতোয়া জায়েয নয়
মুসলিম ফিকাহবিদগণের প্রকাশ্য ঘোষণা অনুযায়ী কিবলামুখী নামায আদায়কারি তথা কোন মুসলমানের প্রতি কাফির ফতোয়া আরোপ জায়েয নয়। বরং বিনা কারণে কোন মুসলমানের বিরুদ্ধে কাফিরের ফতোয়া আরোপ শাস্তিযোগ্য অপরাধ। [৭] ফিকাহবিদগণের দৃষ্টিতে মুসলিম ও কাফির ব্যক্তির পার্থক্যের মানদণ্ড হচ্ছে কলেমা শাহাদাতাঈন পাঠ করা এবং পরকালের প্রতি বিশ্বাসপোষণ। [৮] এ কারণে ফিকাহবিদগণ কতিপয় মুসলিম ফেরকার অনুসারীদের মধ্যে কিছু কিছু আকিদাগত বিভ্রান্তি থাকা সত্বেও তাদের প্রতি কাফির হওয়ার ফতোয়া আরোপ করা থেকে বিরত থেকেছেন। [৯]
তাকফিরের অতীত ইতিহাস
তাকফির চিন্তাধারা মুসলমানদের মধ্যে রাসূলুল্লাহর (সা.) ওফাতের পর হিজরী প্রথম শতাব্দিতে সর্বপ্রথম পরিদৃষ্ট হয়। প্রথম খলিফা হযরত আবু বকরের যুগে একদল মুসলমান তার খেলাফতকে অস্বীকার করার কারণে তাদেরকে মুরতাদ আখ্যায়িত করে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হয়। ইতিহাসে যে যুদ্ধকে রিদ্দার যুদ্ধ নামে নামকরণ করা হয়। [১০] প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ ও গবেষক রাসূল জা’ফারিয়ান (জন্ম- ১৩৪৪ ফার্সী সন) রিদ্দা সম্প্রদায় সম্পর্কে বলেন: রিদ্দা সম্প্রদায়ের মধ্যে মালিক বিন নোবাইরাহ’র ন্যায় সাহাবি ছিলেন। যারা নামায পড়তেন ও রোযা পালন করতেন। কিন্তু তারা হযরত আবু বকরের খেলাফতের প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে এবং খেলাফতকে রাসূলের (সা.) আহলে বাইতের অধিকার হিসেবে মনে করতেন। [১১] এ কারণে তারা প্রথম খলিফার নিকট যাকাত প্রদানে অস্বীকৃতি জানান; ফলে তাদের বিরুদ্ধে মুরতাদ ফতোয়া আরোপ এবং তাদেরকে হত্যা করা হয়। [১২]
আমিরুল মু’মিনিন আলীর (আ.) শাসনকালে সিফফিনের যুদ্ধে মুয়াবিয়ার সাথে ক্ষমতা হস্তান্তরের এক ফায়সালা চুক্তিতে সম্মতি জানানোর কারণে খারেজী সম্প্রদায় তাঁকে কাফির (!) আখ্যায়িত করে। [১৩] আর এ কারণে তারা আলীর (আ.) সঙ্গ ত্যাগ করে তারা চলে যায়। [১৪] পরবর্তীতে তারাই আবার ইমাম আলীর (আ.) বিরুদ্ধে নাহরাওয়ানের যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়। [১৫]
অনুরূপভাবে বিশিষ্ট ধর্মগুরু হযরত আয়াতুল্লাহ আল উযমা জাফর সুবহানি প্রণীত আল কিতাব বাহাস ফিল মেলাল ওয়াল নেহাল গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে, পবিত্র কুরআন অনাদি হওয়া ও সৃষ্ট হওয়া বিষয়কে কেন্দ্র করে সুন্নী মাযহাবের মধ্যে দু’টি গোষ্ঠির মধ্যে তুমুল বিরোধ তৈরি হয়। এ বিরোধকে কেন্দ্র করে এক পক্ষ অপর পক্ষকে কাফির হিসেবে আখ্যায়িত করে।[১৬] এভাবে বিভিন্ন সময়ে মুসলিম সমাজে সৃষ্ট বিরোধের জের ধরে এক পক্ষ অপর পক্ষের বিরুদ্ধে কাফির ফতোয়া আরোপের ঘটনা ঘটেছে। সম্প্রতিক শতাব্দিগুলোতে ওহাবি ও সালাফি সম্প্রদায় কর্তৃক মুসলিম মাযহাবসমূহ বিশেষত শিয়া মাযহাবের অনুসারীদের বিরুদ্ধে কাফির ফতোয়া জারি করা হয়েছে।
কারণসমূহ
তাকফিরি মতবাদ সৃষ্টির নানাবিধ কারণ রয়েছে। আমরা এখানে সেগুলোর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কারণ তুলে ধরছি—
১. চিন্তাগত বিচ্যুতি ও ধর্মের মৌলিক বিষয়াবলি সম্পর্কে সঠিক জ্ঞানের অভাব— পবিত্র কুরআনের আয়াত হচ্ছে إِنِ الْحُکْمُ اِلاّ لِلّهِ “নিশ্চয় আল্লাহ একমাত্র আদেশ দাতা” (সূরা আনআম, আয়াত নং ৫৭); খারেজী সম্প্রদায় এ আয়াতের নিগূঢ় অর্থ না বুঝে সিফফিনের যুদ্ধে মুয়াবিয়ার সাথে ক্ষমতা হস্তান্তরের এক ফায়সালা চুক্তিকে কেন্দ্র করে আমিরুল মু’মিনিন আলীর (আ.) বিরুদ্ধে কাফির ফতোয়া আরোপ করে। [১৭] অনুরূপভাবে ওহাবি সম্প্রদায় তওহীদ, শিরক, জিয়ারত, তাওয়াসুল ও শাফায়াত সম্পর্কে নিজেদের মনগড়া আকিদার বশবর্তী হয়ে, সে আকিদার পরিপন্থী অন্য মুসলমান বিশেষত শিয়া মাযহাবের অনুসারীদের বিরুদ্ধে কাফির ফতোয়া আরোপ করে থাকে। [১৮] ওহাবি মতবাদের প্রবক্তা মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওহাব (ওফাতকাল ১২০৬ হি.) তাওয়াসসুলের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য কামনা এবং রাসূলকে (সা.) শাফায়াতকারী হিসেবে বিশ্বাসপোষণকারীদেরর রক্তপাতকে হালাল ও তাদের হত্যাকে বৈধ মনে করত। [১৯]
২. ভ্রান্ত আকিদা— খারেজি সম্প্রদায়ের লোকেরা যদি কোন মুসলমান কবিরা গুনাহে লিপ্ত হত তবে তাকে কাফির হিসেবে আখ্যা দিত। [২০] এক্ষেত্রে তারা কুরআনের নিম্নোক্ত আয়াতকে দলিল হিসেবে ব্যবহার করত; وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ “আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন যারা সে অনুযায়ী বিচার—ফয়সালা করে না, বস্তুত তারাই হল কাফির।”(সূরা মায়েদাহ, আয়াত নং ৪৪) [২১] কিন্তু শরিয়াতের বিধান অনুযায়ী যদি কেউ কবিরাহ গুনাহে লিপ্ত হয়; তবে সে ঈমানচ্যুত হবে, না ইসলামচ্যুত। অর্থাৎ সে ফাসেক হিসেবে গণ্য হবে, না কাফির। [২২] অনুরূপভাবে আল কুরআন অনাদি নাকি সৃষ্ট এ বিষয়কে ঘিরে মুসলমানদের মধ্যে বিদ্যমান বিরোধে আবুল হাসান আশআরি [২৩] এবং আহমাদ বিন হাম্বাল [২৪] প্রমুখ কুরআন সৃষ্ট পক্ষান্তরে মু’তাজিলা সম্প্রদায়ের অনুসারীরা কুরআন অনাদি হওয়ার পক্ষে আকিদাপোষণ করত। উভয় পক্ষই পরস্পরকে কাফির হিসেবে আখ্যায়িত করত। [২৫] অন্যদিকে শিয়া হাদীসসমূহে ক্ষেত্র বিশেষে গোলাত গোষ্ঠিকে (তথা যারা মাসূম ইমামগণ (আ.) সম্পর্কে অতিরঞ্চিত আকিদাপোষণ করে) কাফির মনে করা হয়েছে। [২৬]
৩. মাযহাবগত গোঁড়ামি- ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় কখনও কখনও এক মাযহাবের অনুসারী অন্য মাযহাবের অনুসারীদের প্রতি কাফির ফতোয়া আরোপ করেছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়- হিজরী ৮ম সনে সুন্নী মাযহাবের অনুসারীরা ইবনে তাইমিয়্যাহ’র চরমপন্থি আকিদার কারণে হাম্বলি মাযহাবের প্রতি কাফির ফতোয়া আরোপ করে। এ ফতোয়ার প্রতিক্রিয়াতে ইবনে হাতাম হাম্বালি স্বীয় মাযহাবের অনুসারী তথা হাম্বালি মাযহাবের অনুসারী ব্যতিত সব মুসলমানদেরকে কাফির আখ্যায়িত করে। [২৭] অনুরূপভাবে কাফির ফতোয়া আরোপের এ ধারা কখনও কখনও সুন্নী মাযহাবের পক্ষ থেকে শিয়া মাযহাবের বিরুদ্ধে আবার ক্ষেত্র বিশেষে বিপরীতমুখী পদক্ষেপও অব্যাহত ছিল। মুফতি ওহাবি ইবনে যিবরীন শিয়া মাযহাবের বিরুদ্ধে অনেক ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে শিয়াদেরকে কাফির আখ্যায়িত করে। [২৮] অবশ্য এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, শিয়া ও সুন্নী মাযহাবের প্রথমসারির অধিকাংশ ফিকাহবিদের দৃষ্টিতে উভয় মাযহাবের অনুসারী কোন অবস্থাতে ফিকাহগত কাফির নয় [২৯]। বরং যে সব ক্ষেত্রে এমন ঘটনা সংঘটিত হয়েছে, সেখানে কাফির বলতে আকিদাগত কাফির বুঝান হয়েছে; না ফিকাহগত। [৩০]
৪. দর্শন ও আধ্যাত্মিক বিষয়াদি- কিছু উলামা একশ্রেণীর দার্শনিক ও আধ্যাত্মিক সাধকদের কাফির আখ্যায়িত করতেন। উদাহরণস্বরূপ ইমাম মুহাম্মাদ গাজ্জালি প্রণীত ‘তোহাফাতুল ফালাসাফেহ’ গ্রন্থে দার্শনিকদেরকে কাফির আখ্যায়িত করা হয়েছে। [৩১] অনুরূপভাবে সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ বাকের খোনসারি উল্লেখ করেছেন যে, শিয়া মাযহাবের কিছু ফিকাহবিদ মোল্লা সদরা’র কিছু দার্শনিক চিন্তাধারার (যা বাহ্যিক অর্থে শরিয়তসম্মত ছিল না) কারণে তাকে কাফির মনে করতেন। [৩২]
এছাড়া সাম্রাজ্যবাদি অপশক্তি ও কিছু সুবিধাবাদি মহল নিজেদের হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার নিমিত্তে মুসলিম জাহানে তাকফিরি প্রবণতা বৃদ্ধির পায়তারা এ ধারা অব্যাহত থাকার ক্ষেত্রে অন্যতম কারণ হিসেবে পরিগণিত।
পরিণামসমূহ
কিবলামুখী নামায আদায়কারি তথা মুসলমানদের মধ্যে তাকফিরি প্রবণতার নানাবিধ নেতিবাচক প্রভাব ও পরিণতি রয়েছে; সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নিম্নে তুলে ধরছি—
১. মুসলিম হত্যা- ইসলামের ইতিহাসে তাকফিরি প্রবণতার কারণে অনেক নিরিহ মুসলমান প্রাণ হারিয়েছেন।
২. ধর্মীয় ও ঐতিহ্যবাহি নিদর্শন ধ্বংস- শিরকের অজুহাত তুলে ওহাবি সম্প্রদায়ের একশ্রেণীর উগ্রপন্থীদের হাতে শিয়া মাযহাবের অনেক ধর্মীয় নিদর্শন যেমনঃ মাসুম ইমামগণ (আ.) এবং ওলীগণের মাযার ধ্বংসের শিকার হয়েছে।
৩. বিশ্ববাসীর নিকট ইসলামের বিকৃত চেহারার বহিঃপ্রকাশ- শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম ইসলামের নাম ব্যবহার করে তাকফিরি গোষ্ঠিগুলোর উগ্রনীতি ও পরস্পরের প্রতি আগ্রাসী মনোভাবের কারণে ইসলাম বিরোধী চক্রগুলো এ ধর্মকে জঙ্গিবাদের ধর্ম হিসেবে মানুষের নিকট তুলে ধরার অপচেষ্টা চালায়।
অনুরূপভাবে মুসলিম সরকার ও সাধারণ জনগণের উপর সশস্ত্র হামলা, মুসলিম জাতিসমূহের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি, মুসলমানদের জান ও মালের ক্ষতিসাধন এমনকি মুসলিম নারীদের উপর বর্বর আচরণ প্রভৃতি তাকফিরি গোষ্ঠিগুলোর অপতৎপরতার ক্ষতিকর পরিণতির কুফল হিসেবে বিবেচিত। [৩৩]
তাকফিরি গোষ্ঠিগুলোর উদ্ভব
বিগত কয়েক শতাব্দিতে ওহাবি সম্প্রদায়ের উদ্ভব এবং তাদের উগ্র চিন্তাধারায় প্রণোদিত হয়ে সম্প্রতিকালে বিভিন্ন উগ্র তাকফিরি গোষ্ঠিগুলোর সৃষ্টি হয়েছে; তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে আল কায়েদা এবং অতিসম্প্রতি সময়ে আইএস নামক ভয়ানক তাকফিরি গোষ্ঠি আত্মপ্রকাশ করেছে। এরা তাদের চিন্তাধারার বিরোধী শান্তিকামী মুসলমানদেরকে কাফির আখ্যায়িত করে এবং তাদের উপর হত্যা ও নিধনকে জায়েয মনে করে; মুসলমানদের জান ও মাল তাদের কাছে নিরাপদ নয়। [৩৪] তারা পবিত্র কুরআনে কাফির ও মুশরিকদের সম্পর্কে যে সব আয়াত নাযিল হয়েছে; সেগুলোকে মুসলমানদের উপর চাপিয়ে দেয়। [৩৫] অথচ ইসলাম বিশেষজ্ঞ ও মুসলিম মনীষীবর্গ কোন মুসলমানকে কাফির আখ্যায়িত করাকে জায়েয মনে করেন না এবং তাদের দৃষ্টিতে যদি কোন মুসলমান ইসলামের মৌলিক বিষয়াবলি যথা তওহীদ, নবুয়্যাত ও কিয়ামতকে সরাসরি অস্বীকার করে, তখনই কেবল সে অমুসলিম হিসেবে পরিচিত হবে। [৩৬]
আন্তর্জাতিক সেমিনার
তাকফিরি গোষ্ঠিগুলোর নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে সচেতন করার উদ্দেশ্যে বিগত ২০১৫ সনে মুসলিম জাহানের খ্যাতনামা মনীষী হযরত আয়াতুল্লাহ আল উযমা মাকারেম শিরাজীর উদ্যোগে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের ধর্মীয় নগরী কোমে ‘উলামাগণের দৃষ্টিতে তাকফিরি ও চরমপন্থি গোষ্ঠিগুলোর স্বরূপ’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এ সেমিনারে ৮০টি দেশ থেকে শিয়া ও সুন্নী ইসলামি স্কলারস্ ও মনীষীবর্গ উপস্থিত ছিলেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ৮৩০টি জ্ঞানগর্ভ ও তথ্যসমৃদ্ধ প্রবন্ধ এ সেমিনারে প্রেরিত হয় এবং সেগুলো দিয়ে ১০ খণ্ড বিশিষ্ট বই প্রকাশিত হয়। এছাড়া এ আন্তর্জাতিক সেমিনারের জন্য ইরানের কোম শহরে একটি স্থায়ী সচিবালয় প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এ সচিবালয়ের উদ্যোগে এ যাবত বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় প্রায় ৪০টি বই প্রকাশিত হয়েছে এবং ‘উম্মতে ওয়াহিদাহ’ নামক একটি ম্যাগাজিন আরবী ও ফার্সী ভাষাতে প্রকাশিত হচ্ছে।
গ্রন্থ পরিচিতি
তাকফিরি চিন্তাধারার স্বরূপ এবং তা খণ্ডনে অনেক জ্ঞানগর্ভ গ্রন্থ রচিত হয়েছে। এ গ্রন্থগুলোর সামগ্রিক পরিচিতি নিয়ে ‘তাকফিরি বিষয়ক গ্রন্থ পরিচিতি’ নামক একটি বিশেষ বই প্রকাশিত হয়েছে। এ বইতে ৫২৮টি লেখনি’র পরিচিতি তুলে ধরা হয়ছে। আরবী ও ফার্সী ভাষায় লিখিত এ সব লেখনির মধ্যে ২৩৫টি বই, ২৪০টি প্রবন্ধ, ৪৯টি থিসিস এবং ৪টি বিশেষ ম্যাগাজিন রয়েছে।[৩৭]
১- ইরাকের দারুল তাকরীব ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফুয়াদ কাজেম মেকদাদি প্রণীত ‘আ’রা উলামাউল মুসলিমিন ওয়া ফাতাআহুম ফী তাহরীমে তাকফীর আতবাউর মাযাহেবুল ইসলামীয়্যাহ’। এ গ্রন্থে মুসলিম মাযহাবসমূহের অনুসারীদের বিরুদ্ধে কাফির ফতোয়া আরোপ জায়েয না হওয়া সম্পর্কে শিয়া ও সুন্নী শীর্ষ আলেমগণের দৃষ্টিভঙ্গী এবং সেগুলোর বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়েছে। ১৪২৮ হিজরীতে তেহরানের মাযমাউস সাকালাঈন সংস্থা বইটি ফার্সী ভাষায় অনুবাদ ও প্রকাশ করে।[৩৮]
২- হুসাইন আহমাদ আল খাশেন ইসলামে তাকফিরি চিন্তাধারা ও উগ্রবাদের উৎপত্তির কারণ এবং সেগুলোর নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে গবেষণা করে ‘আল ইসলাম ওয়াল উনুফ কারাআতু ফী জাহেরিত্ তাকফীর’ নামক একটি গ্রন্থ রচনা করেন। এ ৩৪৪ পৃষ্ঠার এ বইটি ২০১১ সালে তেহরানে ফার্সী ভাষাতে অনুবাদ ও প্রকাশিত হয়।[৩৯]
সম্পর্কিত নিবন্ধ
তথ্যসূত্র
- ↑ আগা সালেহী, তাকফীর ওয়া বাররাসি পায়ামাদহায়ীয়ে অন দার জাওয়ামে ইসলামী, পৃ. ৯৫
- ↑ প্রাগুক্ত, পৃ. ১০৫
- ↑ নাসর ইসফাহানী, কিতাব শানাসি তাকফীর, পৃ. ২৫৮
- ↑ কাইইয়্যুমী, তাকফীর
- ↑ আব্দুল মুনয়েম, মু’জামুল মুসতালাহাত ওয়াল আলফাজুল ফিকহিয়্যাহ, খণ্ড ১ম, পৃ. ৪৮৭
- ↑ দ্র: ইমাম খোমেনী (রহ.), কিতাবুল তাহারাত, প্রকাশকাল ১৪২৭ হিজরী, খণ্ড ৩, পৃ. ৪৩২
- ↑ দ্র: শহীদ সানী, রওজাতুল বাহিয়্যাহ, প্রকাশকাল ১৪০৩ হিজরী, খণ্ড ৯, পৃ. ১৭৫; যাজিরী, কিতাবুল ফিকহ আলা মাযাহেবুল আরবাআ, প্রকাশকাল ১৪১০ হিজরী, খণ্ড ৫, পৃ. ১৯৫
- ↑ দ্র: ইমাম খোমেনী (রহ.), কিতাবুল তাহারাত, প্রকাশকাল ১৪২৭ হিজরী, খণ্ড ৩, পৃ. ৪৩৭-৪৩৮
- ↑ দ্র: আল্লামা মাযলিসী, বিহারুল আনওয়ার, প্রকাশকাল ১৪০৩ হিজরী, খণ্ড ৫৪, পৃ. ২৪৬—২৪৭
- ↑ মাকাদ্দাসী, আল বাদা ওয়াত তারীখ, খণ্ড ৫, পৃ. ১৫২
- ↑ জাফারিয়ান, তারীখে খোলাফা, খণ্ড ২, পৃ. ৩২
- ↑ ওয়াকেদী, আর রাদ্দাহ, পৃ. ১০৬—১০৭
- ↑ সুবহানী, বাহাস ফীল মেলাল ওয়াল নেহাল, খণ্ড ৫, পৃ. ৯৭
- ↑ দেইনাওয়ারী, আল আখবারুত তাউল, পৃ. ২০৬
- ↑ ইয়াকুবী, তারিখে ইয়াকুবী, খণ্ড ২, পৃ. ১৯২-১৯৩
- ↑ সুবহানী, বাহাস ফীল মেলাল ওয়াল নেহাল, খণ্ড ২, পৃ. ৩৩৬
- ↑ দেইনাওয়ারী, আল আখবারুত তাউল, পৃ. ২০৬
- ↑ দ্র: মুগনিয়ে, হাজিহি হিয়াল ওয়াহাবিয়্যাহ, প্রকাশকাল ১৪০৮ হিজরী, পৃ. ৭৬—৭৭
- ↑ মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহাব, কাশফুল শোবাহাত, প্রকাশকাল ১৪১৮ হিজরী, পৃ. ৭
- ↑ শাহরিস্তানি, আল মেলাল ওয়াল নেহাল, প্রকাশকাল, ১৩৮৭, খণ্ড ১, পৃ. ১২২, ১২৮, ১৩৫
- ↑ দ্র: যুরযানি, শারহুল মাওয়াকেফ, প্রকাশকাল ১৩২৫ হিজরী, খণ্ড ৮, পৃ. ৩৩৪-৩৩৮
- ↑ সুবহানি, মুহাজিরাত ফীল ইলাহিয়্যাত, প্রকাশকাল ১৪২৮ হিজরী, পৃ. ৪৬২
- ↑ আবুল হাসান আশআরি, আল আবানাহ, প্রকাশকাল ১৩৯৭, পৃ. ৮৯
- ↑ আহমাদ বিন হাম্বাল, আস সুন্নাহ, প্রকাশকাল ১৩৪৯, পৃ. ১৫
- ↑ সুবহানী, বাহাস ফীল মেলাল ওয়াল নেহাল, খণ্ড ২, পৃ. ৩৩৬
- ↑ হুররে আমেলী, ওসায়েলুশ শিয়া, প্রকাশকাল ১৪০৯, খণ্ড ২৮, পৃ. ৩৪৮
- ↑ হায়দার, আল ইমাম আস সাদিক ওয়াল মাযাহেবুল আরবাআ, খণ্ড ১, পৃ. ২০০-২০২
- ↑ ইবনে জাবরীন, ফাতাওয়ায়ে আশ শেইখ ইবনে জাবরীন, পৃ. ২৫
- ↑ জাযিরি, কিতাবুল ফিকহ আলা মাযাহেবুল আরবাআ, প্রকাশকাল ১৪১০ হিজরী, খণ্ড ৫, পৃ. ১৯৪-১৯৫
- ↑ দ্র: ইমাম খোমেনী (রহ.), কিতাবুল তাহারাত, প্রকাশকাল ১৪২৭ হিজরী, খণ্ড ৩, পৃ. ৪৩২
- ↑ দ্র: গাজ্জালি, তোহাফাতুল ফালসাফাহ, পৃ. ২৯৫
- ↑ খোনসারি, রোওজাতুল যানাত, খণ্ড ৪, পৃ. ১২১
- ↑ আগা সালেহী, তাকফীর ওয়া বাররাসি পায়ামাদহায়ীয়ে অন দার জাওয়ামে ইসলামী, পৃ. ১০৫
- ↑ দ্র: শেখ আহমাদ, বাররাসি ইডোলোজি তাকফিরি, পৃ. ১৪১-১৪৪
- ↑ আগা সালেহী, তাকফীর ওয়া বাররাসি পায়ামাদহায়ীয়ে অন দার জাওয়ামে ইসলামী, পৃ. ৯৭
- ↑ দ্র: রাশীদ রেযা, মাজাল্লে আল মানার, খণ্ড ৩৫, পৃ. ৫৭৩
- ↑ নাসর আনসারি, কিতাব শানাসী তাকফির, পৃ. ২১
- ↑ প্রাগুক্ত, পৃ. ২৫
- ↑ প্রাগুক্ত, পৃ. ২৯
গ্রন্থপঞ্জি
- আবুল হাসান আশআরী, আলী বিন ইসমাইল, আল-ইবানাহ আন উসুলুদ দায়ানা, গবেষণা: ফৌকিয়া হুসাইন মাহমুদ, কায়রো, দারুল আনসার, ১৩৯৭ হি.।
- ইবনে জাবারীন, আল-লু’লু’ আল মাকিন মিন ফাতাভী আল-শেখ ইবনে জাবারীন, আদাদ, আবদুল্লাহ বিন ইউসুফ আল ইজলান, তানসিক: সালমান বিন আব্দুল কাদির আবু যায়েদ, স্থান অজ্ঞাত, তারিখ অজ্ঞাত।
- ইবনে হাম্বাল, আহমাদ, আস সুন্না, তাসহিহ: আব্দুল্লাহ বিন হাসান আলে আল শাইখ, মক্কা, আল-মাতবা আল সালাফিয়া ওয়া মাকতাবাতুহা, ১৩৪৯ হি.।
- ইমাম খোমেনী, সাইয়্যিদ রুহুল্লাহ, কিতাবুত তাহারাত, তেহরান, মআসসেসেয়ে তানজিম ওয়া নাশরে আসারে ইমাম খোমেনী (র.), ১৪২৭ হি.।
- বাখশি শেইখ আহমাদ, মাহদী ও বাহনাম বাহারি ওয়া পেইমানে ওয়াহাবপুর, «بررسی ایدئولوژی گروه تکفیری - وهابی دولت اسلامی عراق و شام (داعش), ফাসল নামে ইলমি ওয়া পেযুহেশিয়ে উলুমে সিয়াসিয়ে দানেশগাহে বাকেরুল উলুম, পর্ব ১৬, সংখ্যা ৪৬, যেমেস্তান ১৩৯২ ফার্সি সন।
- জারজানি, আলী বিন মুহাম্মাদ, শারহুল মাওয়াফিক, তাহকিক: মুহাম্মাদ বদরুদ্দিন নাসানী হালবি, মিশর, ১৩২৫ হি./১৯০৭ খ্রি.।
- জাজিরি, আবদুর রহমান, কিতাব আল-ফিকহ আলাল মাজাহিব আল-আরবা, বৈরুত, ১৪১০ হি.।
- জাফারিয়ান, রাসুল, তারিখে খোলাফা, কোম, দালিল, ১৩৮০ ফার্সি সন।
- খানসারি, সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ বাকের, রওজাত আল জান্নাত ফী আহওয়াল আল উলামা ওয়ান সাদাত, কোম, ইসমাইলিয়ান, প্রথম সংস্করণ, ১৩৯০ ফার্সি সন।
- হুররে আমেলি, মুহাম্মাদ বিন হাসান, ওয়াসায়েলূশ শিয়া ইলা তাহসিলি মাসায়েল আল শারিয়া, মুআসসেসেয়ে আলুল বাইত, কোম, ১৪০৯ হি.।
- দীনাভারি, আবু হানিফা আহমাদ বিন দাউদ, আল-আখবারুত তিওয়াল, তাহকিক: আব্দুল মোনয়েম আমির, কোম, মানশুরাত আল-রাজী, ১৩৬৮ ফার্সি সন।
- জাইনি দাহলান, সাইয়্যেদ আহমাদ, ফিতনাতুল ওয়াহাবিয়া, তারিখ অজ্ঞাত।
- সুবহানী তাবরিজি, জাফর, বুহুস ফিল মিলাল ওয়ান নিহাল, কোম, মুআসসিসাতুন নাশরিল ইসলামী, ১৪২৭-১৪২৮ হি.
- সুবহানী, জাফর, মুহাজেরাতুন ফিল ইলাহিয়াত, ইন্তেশারাত মুআসসেসেয়ে ইমাম সাদিক (আ.), ১৪২৮ হি.।
- শাহরেস্তানি, মুহাম্মাদ বিন আব্দুল করিম, আল-মিলাল ওয়ান নিহাল, চপে মুহাম্মাদ সাইয়্যেদ কেইলানি, কায়রো, ১৯৬৭ খ্রি.।
- শহীদ সানী, জয়নুদ্দিন বিন আলী, আল-রওজাতুল বাহিয়া ফি শারহিল লুমআতিদ দিমাশকিয়া, চপে মুহাম্মদ কালান্তার, বৈরুত, ১৪০৩ হি.।
- আব্দুল বাকী, মুহাম্মদ ফুয়াদ, আল মোজাম আল মুফাহারিস লি আলফাজিল কুরআন আল-কারীম, কায়রো ১৩৬৪, চপে আফসাতে তেহরান, ১৩৯৭ ফার্সি সন।
- আবদুল মোনয়েম, মাহমুদ আবদুর রহমান, মোজাম আল-মুসতালেহাত ওয়াল আল-ফাজ আল-ফিকহিয়া, খণ্ড ১, কায়রো, দার উল-ফাজিলা, ১৯৯৯ খ্রি.।
- ফায়ুমি, আহমাদ বিন মুহাম্মাদ, আল-মিসবাহ আল-মুনির ফি গারিব আল শারহ আল কবির লিল রাফিয়ি, বৈরুত, দারুল ফিকর, তারিখ অজ্ঞাত।
- মাজলিসী, মুহাম্মাদ বাকের বিন মুহাম্মাদ তাকী, বিহারুল আনওয়ার, বৈরুত, ১৯৮৩ খ্রি.।
- মুগনিয়া, মুহাম্মাদ জাওয়াদ, হাজেহি হিয়াল ওয়াহহাবিয়া, তেহরান, মানজামাতিল ই’লামিল ইসলামী, ১৪০৮ হি.।
- মুকাদ্দাসী, মুতাহার বিন তাহির, আল-বাদউ ওয়াত তারিখ, বুর সাইদ, মাকতাবা আল-সাকাফা আল-দিনিয়া
- নাসর ইসফাহানি, আবাজার, কিতাব শেনাসিয়ে তাকফির, কোম, দারুল আলাম লি মাদ্রাসাতি আহলুল বাইত (আ.), ১৩৯৩ ফার্সি সন।
- ওয়াকিদি, মুহাম্মাদ বিন উমর, আর রাদ্দা, তাহকিক: ইয়াহিয়া আলজাবুরি, বৈরুত, দার আল-গারব আল-ইসলামী, প্রথম সংস্করণ, ১৯৯০ খ্রি.।
- ইয়াকুবি, আহমাদ বিন আবি ইয়াকুব, তারিখে ইয়াকুবি, বৈরুত, দারু সাদের, তারিখ অজ্ঞাত।
- গাযযালি, মুহাম্মদ বিন মুহাম্মদ, তোহাফাতুল ফালাসেফা, শামস তাবরিজি, তেহরান, ১৩৮২ ফার্সি সন।