বিষয়বস্তুতে চলুন

কারবালার বন্দীরা

wikishia থেকে

কারবালার বন্দীরা হচ্ছেন কারবালার ঘটনায় ইমাম হুসাইনের (আ.) পক্ষের জীবিত থাকা ব্যক্তিরা যেমন শীয়াদের চতুর্থ ইমাম হযরত যয়নুল আবেদীন (আ.) এবং হযরত যায়নাবসহ (সা. আ.) যারা উমর ইবনে সা’দের লস্করের হাতে বন্দী হন। বন্দীদেরকে উমর ইবনে সা’দের নির্দেশে মুহাররমের এগার তারিখের রাত্রে কারবালাতে রাখা হয় এবং এগার তারিখের দুপুরের পর কুফাতে উবায়দুল্লাহ ইবনে যিয়াদের নিকট নিয়ে যাওয়া হয়। ইবনে যিয়াদ বন্দীদেরকে পর্দা ছাড়া সওয়ারীর উপর এবং শিমার ও তরিক ইবনে মুহাফ্ফাযের ন্যায় ব্যক্তিদের দলের সাথে শামে ইয়াযিদ ইবনে মুয়াবিয়ার দরবারে প্রেরণ করে। বন্দীকালীন সময়ে ইমাম সাজ্জাদ তথা ইমাম যয়নুল আবেদীন (আ.) এবং হযরত যায়নাব (সা. আ.) কর্তৃক প্রদত্ত বক্তব্যের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে কিছু কিছু মানুষের আত্মিক পরিবর্তন ঘটে এবং তারা অনুতপ্ত হন। কোন বর্ণনানুসারে ইয়াযিদ (যদিওবা বাহ্যিকভাবে) তার অপরাধ ও কর্মকাণ্ডের জন্য অনুতপ্ত হয়। শেইখ মুফিদ, শেইখ তুসি এবং মুহাদ্দেস নূরীর ন্যায় আলেমগণ এই আকীদা পোষণ করেন যে, কারবালার বন্দীরা মুক্তি পাওয়ার পর কারবালায় নয়, মদীনায় ফিরে গিয়েছিলেন; কিন্তু লাহুফ গ্রন্থে সাইয়্যেদ ইবনে তাঊসের ভাষ্যানুসারে, বন্দীরা কারবালাতে ফিরে গিয়েছিলেন।

বন্দীত্বের শুরু

আশুরার ঘটনার পর, উমর সা’দের লস্করের জীবিতরা তাদের নিহতদেরকে ১১ই মুহাররমের দিনের বেলা দাফন করেন এবং ইমাম হুসাইন (আ.)-এর পরিবার-পরিজন এবং কারবালার শহীদদের জীবিতদেরকে কুফার দিকে নিয়ে যায়।[১] উমর ইবনে সা’দের নিযুক্ত বাহিনীর লোকেরা আহলে বাইতের (আ.) নারীদেরকে শহীদদের লাশগুলোর পাশ দিয়ে নিয়ে যায়। ইমাম হুসাইন (আ.)-এর পরিবারের নারীরা তখন আর্তনাদ করতে থাকেন এবং নিজেদের মুখে আঘাত করতে থাকেন। যেরূপভাবে কুররাহ ইবনে কায়েস হতে বর্ণিত হয়েছে, হযরত যায়নাব (সা. আ.) যখন তাঁর ভ্রাতা ইমাম হুসাইন (আ.)-এর শরীরের পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন তখন অত্যন্ত দুঃখের সাথে এমন শব্দগুলি চয়ন করেন যা বন্ধু ও শত্রুদেরকে কাঁদিয়েছিল।[৪]

বন্দীদের সংখ্যা ও নাম

কারবালার বন্দীদের সংখ্যা ও নাম এবং ইমাম হুসাইন (আ.)-এর জীবিত আসহাব সম্পর্কে ঐতিহাসিকদের দেওয়া তথ্যের মধ্যে ভিন্নতা রয়েছে। পুরুষ বন্দীর সংখ্যা, চার, পাঁচ, দশ ও বারো জন উল্লেখ করা হয়েছে। নারী বন্দীর সংখ্যাও চার, ছয় এবং বিশ জন বলে উল্লেখিত হয়েছে।[৬] কেউ কেউ বন্দীদের সংখ্যা ২৫ জন পর্যন্ত উল্লেখ করেছেন।[৭] এরই পরিপ্রেক্ষিতে বলা হয়, কারবালার বন্দীদের সংখ্যা সম্পর্কে সুনিশ্চিতভাবে মত প্রকাশ করা সম্ভব নয়।[৮] যেসব পুরুষ বন্দীদের নাম গ্রন্থসমূহে উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে: ইমাম যয়নুল আবেদীন (আ.), ইমাম বাকের (আ.), ইমাম হুসাইনের (আ.) দুই সন্তান মুহাম্মাদ ও উমর, ইমাম হুসাইন (আ.)-এর সন্তান যায়েদ এবং নাতী মুহাম্মাদ,[৯] হাসানে মুসান্না যিনি যুদ্ধে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে অজ্ঞান হয়েছিলেন,[১০] কাসেম ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে জা’ফার, কাসেম ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে জা’ফার, মুহাম্মাদ ইবনে আকিল[১১] তারিখে ক্বিয়াম ওয়া মাক্বতালে জামে’ সাইয়্যেদুশ শুহাদা গ্রন্থে ১৭ জন পুরুষের নাম কারবালার বন্দী ও জীবিত হিসেবে উল্লেখিত হয়েছে।[১২] কারবালায় নারী বন্দীদের নামগুলো হচ্ছে: হযরত যায়নাব (সা.আ.), ফাতেমা ও উম্মে কুলসুম[১৩] এবং রুকাইয়া[১৪] হচ্ছেন ইমাম আলী (আ.)-এর কন্যা, রুবাব ইমাম হুসাইন (আ.)-এর স্ত্রী[১৫] এবং ফাতেমা ইমাম হাসান (আ.)-এর কন্যা,[১৬] সকিনা, ফাতেমা, রুকাইয়া এবং যায়নাব নামের ইমাম হুসাইন (আ.)-এর চার কন্যা।[১৭] কারবালায় বনু হাশিমের বাইরে যারা জীবিত ছিলেন তারা হচ্ছেন: মুরাক্কে’ ইবনে সুমামাহ আসাদি, সাওওয়ার ইবনে উমাইর জাবেরি, উমর ইবনে আব্দুল্লাহ জুনদায়ি, রুবাবের (ইমাম হুসাইনের (আ.) স্ত্রী) গোলাম উক্ববাহ ইবনে সামআন, যাহহাক ইবনে আব্দুল্লাহ মাশরেকি, মুসলিম ইবনে রিবাহ এবং আব্দুর রহমান ইবেন আব্দ রাব্বিহ আনসারি।[১৮] বনু হাশিমের বাইরের জীবিত ব্যক্তি হিসেবে, সাওওয়ার ইবনে উমাইর, উক্ববাহ, মুসলিম ইবনে রিবাহ এবং আব্দুর রহমান ইবনে আব্দে রাব্বিহ’র গোলাম কারবালার বন্দীদের মধ্যকার হিসেবে গণ্য হন।[১৯]

বন্দীদেরকে যেখানে নিয়ে যাওয়া হয়

কুফায় প্রবেশ

শারহে নাহজুল বালাগায় ইবনে আবিল হাদিদের উল্লেখানুসারে, কারবালার বন্দীদেরকে খালি উটের পিঠে বসিয়ে কুফায় নিয়ে যাওয়া হয়। লোকজনের দৃষ্টি তাদের উপর নিবদ্ধ হচ্ছিল এবং এমতাবস্থায় কুফার নারীরা বন্দীদেরকে দেখে ক্রন্দন করছিলেন।[২০] বলা হয় যে, বন্দীদের কুফায় প্রবেশের সময় সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য পুরাতন উৎসগুলোতে উল্লেখিত হয়নি।[২১] তবে শেইখ মুফিদের উল্লেখানুসারে,[২২] কারবালার বন্দীদের কুফায় প্রবেশের সময়কে ১২ই মুহাররম বিবেচনা করা যেতে পারে।[২৩] উমর ইবনে সা’দের বাহিনীর সদস্যরা, বন্দীদেরকে কুফার অলিতে-গলিতে ঘুরানোর পর তাঁদেরকে উবায়দুল্লাহ ইবনে যিয়াদের প্রাসাদে নিয়ে যায়। সেখানে হযরত যায়নাব (সা.আ) এবং ইবনে যিয়াদের মধ্যকার উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের কথা উল্লেখিত হয়েছে।[২৪] হযরত যয়নাব (সা.আ.)-এর সুপ্রসিদ্ধ উক্তিটি «ما رَأیْتُ اِلّا جَمیلاً » ; “সুন্দর ছাড়া কিছুই দেখিনি ”- এই সমাবেশের সাথে সম্পর্কিত। অনুরূপভাবে ইবনে যিয়াদ ইমাম যয়নুল আবেদীন (আ.)-কে হত্যার নির্দেশ দেয়, কিন্তু হযরত যয়নাব (সা.আ.)-এর কঠোর হুঁশিয়ারি এবং ইমাম যয়নুল আবেদীন (আ.)-এর তেজদীপ্ত ভাষণের পর ইবনে যিয়াদ তাঁকে হত্যা করা হতে বিরত থাকে।[২৫]

শামের গন্তব্যে

ওবায়দুল্লাহ ইবনে যিয়াদ, শিমার ও তারিক ইবনে মুহাফ্ফেযসহ একটি দলকে কারবালার বন্দীদের সাথে শামে পাঠায়।[২৬] কিছু কিছু সূত্রানুসারে, যাহর বিন কাইসও তাদের সাথে ছিল।[২৭]। বন্দীদেরকে কুফা থেকে শামে নিয়ে যাওয়ার সঠিক রাস্তা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায় নি; কেউ কেউ মনে করেন যে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর সাথে সম্পর্কিত স্থানগুলোর প্রতি লক্ষ্য রেখে কারবালার বন্দীদেরকে নিয়ে যাওয়ার পথ নিরূপণ করা সম্ভব; যেমন, দামেস্কে ‘মাকামে রা’সুল হুসাইন’ {ইমাম হুসাইনের (আ.) মস্তক মোবারক দাফনের বা রাখার স্থান} ও মাকামে ইমাম যয়নুল আবেদীন আবেদীন (আ.),[২৮] হেমস,[২৯] হামাঅ,[৩০] বাআলবাক,[৩১] হাজার,[৩২] এবং তুরাহ।[৩৩] দানেশনামে-এ ইমাম হুসাইন (আ.) গ্রন্থে এসেছে যে, ঐ সময়ে কুফা এবং শামের মধ্যে চলাচলের জন্য তিনটি মূল রাস্তা (বাদিয়ার রাস্তা, ফুরাতের পাশের রাস্তা এবং দাজলার পাশের রাস্তা) বিদ্যমান ছিল যার প্রত্যেকটিরই আবার বিভিন্ন শাখা প্রশাখা ছিল।[৩৪] এই গ্রন্থের লেখকগণ মনে করেন যে সুস্পষ্ট ও সুনিশ্চিত প্রমাণ না থাকার কারণে এই ব্যাপারে সঠিক মতামত ব্যক্ত করা সম্ভব নয়; তবে বিভিন্ন আলামত ও চিহ্ন পর্যালোচনার মাধ্যমে প্রতীয়মান হয় বন্দীদেরকে খুব সম্ভবত বাদিয়ার রাস্তা দিয়ে কুফা থেকে শামে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।[৩৫] কিছু কিছু সূত্রানুযায়ী যেমন তারিখে তাবারি, শেইখ মুফিদ এবং তারিখে দামেস্কের তথ্যানুসারে, প্রথমে ইমাম হুসাইনের (আ.) মস্তক মোবারক এবং অন্যান্য শহীদদের মস্তকগুলোকে শামে প্রেরণ করা হয় এবং পরে বন্দীদেরকে পাঠানো হয়; কিন্তু অন্যান্য সূত্রের ভিত্তিতে, শহীদদের মস্তকগুলোকে বন্দীদের সাথেই শামে পাঠানো হয়।[৩৬]

ওবায়দুল্লাহর সৈন্যদের ব্যবহার

ইবনে আ’সাম এবং খাওয়ারেযমি’র বর্ণনানুসারে, ওবায়দুল্লাহ ইবনে যিয়াদের সৈন্যরা কারবালার বন্দীদেরকে কুফা থেকে শাম পর্যন্ত খোলা ও অনাচ্ছাদিত বাহনে এক শহর থেকে আরেক শহরে এবং বাড়িতে বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিল, যেভাবে তুর্ক (কাফের) ও দায়লাম বন্দীদেরকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।[৩৭] শেইখ মুফিদ কর্তৃক বর্ণিত রেওয়ায়েত অনুসারে, ইমাম যয়নুল আবেদীনকে (আ.) বন্দীদের মধ্যে জিঞ্জির তথা শিকল পরা অবস্থায় দেখা গেছে।[৩৮] ইমাম যয়নুল আবেদীন (আ.) হতে বর্ণিত একটি রেওয়ায়েতে ইবনে যিয়াদের বাহিনীর আচরণ সম্পর্কে এভাবে উল্লেখ করা হয়েছে: আলী ইবনে হুসাইন (আ.)-কে একটি ক্ষীণকায় ও খোড়া উটের পিঠে গদিবিহীন কাঠের উপর আরোহন করানো হয়; যখন ইমাম হুসাইনের (আ.) মস্তক বর্ষার উপর, নারীরা মাথার পিছনে এবং বর্ষাগুলো তাদেরকে ঘিরে তাক করা ছিল। তাদের কারও চোখ হতে অশ্রু প্রবাহিত হলে, তার মাথায় বর্ষা দিয়ে আঘাত করা করতো, শামে প্রবেশ করা পর্যন্ত এভাবেই চলেছিল।[৩৯]

বন্দীদের শামে উপস্থিতি

বন্দীদের শামে প্রবেশ, তাদের সাথে আচরণের ধরন, তাদের রাখার স্থান এবং কোন কোন বন্দীর ভাষণ প্রদানের ঘটনাসমূহ সম্পর্কে ঐতিহাসিক সূত্রগুলোতে তথ্যসমূহের উল্লেখ রয়েছে। এসব তথ্যানুসারে, শামে শহীদদের মস্তক প্রবেশের তারিখ ছিল পহেলা সফর।[৪০] এই দিনে বন্দীদেরকে ‘তুমা’ বা ‘সাআত’ প্রবেশদ্বার দিয়ে শহরে প্রবেশ করানো হয় এবং সাহল ইবনে সা’দের ভাষ্যানুসারে, ইয়াযিদের নির্দেশে শহর নজিরবিহীনভাবে সাজানো হয়।[৪১] কোন কোন সূত্রের তথ্যানুসারে, শহর সাজানোর জন্য বন্দীদেরকে তিন দিন শহরের বাইরে প্রবেশদ্বারের পিছনে আটক রাখা হয়।[৪২] বন্দীরা শহরে প্রবেশের পর, তাদেরকে উমাভি জামে মসজিদের প্রবেশদ্বারে একটি মঞ্চের উপর স্থান দেওয়া হয়।[৪৩] বর্তমানে এই মসজিদে মেহরাব ও মসজিদের মূল মিম্বরের সামনে পাথর ও কাঠের বেড়া দিয়ে তৈরি একটি স্থান রয়েছে যা কারবালার বন্দীদের অবস্থান করার স্থান হিসেবে পরিচিত।[৪৪] শামে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর পরিবারবর্গের উপস্থিতিকে কোন কোন সূত্র দুই দিন,[৪৫] এবং খারাবে-এ শাম নামে প্রসিদ্ধ ছাদবিহীন পরিত্যক্ত ভবনে বলে বিবেচনা করেন।[৪৬] শেইখ মুফিদ বন্দীদের অবস্থানের জায়গাটিকে ইয়াযিদের প্রাসাদের নিকটবর্তী একটি বাড়ি বলে চিহ্নিত করেছেন।[৪৭] শামে বন্দীদের অবস্থানের সময়কাল সম্পর্কে প্রসিদ্ধ মত[৪৮] হচ্ছে তিন দিন, তবে সাত দিন[৪৯] এবং এক মাসও বর্ণিত হয়েছে।[৫০]শামে কারবালার বন্দীদের সম্পর্কে কোন কোন ঐতিহাসিক প্রতিবেদন হচ্ছে:

  • ইয়াযিদের প্রাসাদে বন্দীদের প্রবেশ: কারবালার বন্দীরা শামে প্রবেশ করার পর, যাহর ইবনে কাইস অথবা শিমার ইবনে যিল জাওশান[৫১] কারবালার ঘটনার বিস্তারিত তথ্য সম্পর্কে ইয়াযিদকে অবহিত করে।[৫২] ইয়াযিদ ঘটনার বিস্তারিত শোনার পর, প্রাসাদ সাজানোর, শামের সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিদের আমন্ত্রণের এবং বন্দীদেরকে প্রাসাদে হাজির করার নির্দেশ প্রদান করে।[৫৩]সূত্রানুসারে, বন্দীদেরকে যখন ইয়াযিদের সভায় হাজির করা হয়, তখন তাদের সকলেই একই দড়িতে বাঁধা অবস্থায় ছিলেন।[৫৪] এমতাবস্থায় ইমাম হুসাইন (আ.)-এর কন্যা বলেন: হে ইয়াযিদ! রাসূলুল্লাহর কন্যাদের জন্য বন্দী হওয়াই উপযুক্ত? এ সময় উপস্থিত লোকজন এবং ইয়াযিদের ঘরের লোকেরা ক্রন্দন করেন।[৫৫]
  • বন্দীদের সামনে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর মস্তক মোবারকের সাথে ইয়াযিদের আচরণ: ইয়াযিদ বন্দীদের উপস্থিতিতে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর মস্তককে স্বণের পাত্রে রেখে[৫৬] ছড়ি দিয়ে তাতে আঘাত করতে থাকে।[৫৭] ইবনে আসিরের দেওয়া তথ্যানুসারে, ইমাম হুসাইন (আ.)-এর কন্যা সকিনা ও ফাতেমা যখন এই দৃশ্য দেখেন তখন এমনভাবে চিৎকার করে ওঠেন যে ইয়াযিদের স্ত্রীরা এবং মুয়াবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ানের কন্যারা ক্রন্দন করতে থাকে।[৫৮] শেইখ সাদুক কর্তৃক ইমাম রেযা (আ.) হতে বর্ণিত একটি রেওয়ায়েত অনুসারে, ইয়াযিদ ইমাম হুসাইন (আ.)-এর মস্তককে একটি থালায় রাখে এবং তার উপর খাওয়ার টেবিল রাখে। অতঃপর তার সহযোগিদের সাথে আহারে ব্যস্ত হয় এবং তারপর দাবা খেলার টেবিলকে ঐ থালার উপর রাখে এবং তার সহযোগিদের সঙ্গে দাবা খেলায় মশগুল হয়। বলা হয়, সে যখন খেলায় জয়লাভ করতো তখন মদের (যব থেকে উৎপন্ন মদ) পিয়ালা হতে মদ পান করার পর অবশিষ্ট অংশকে ইমামের (আ.) মস্তক রাখা থালার পাশে মাটিতে ফেলতো।[৫৯]সকিনা (সা.আ) ইয়াযিদ সম্পর্কে বলেছেন: আল্লাহর কসম! ইয়াযিদের চেয়ে কঠিন হৃদয়ের, কাফের ও নির্দয় কাউকে আমি দেখিনি, যে কিনা আয়োজিত মজলিসে আমার পিতার মাথার দিকে তাকাচ্ছিল এবং কবিতা আবৃতি করছিল।[৬০]
  • উপস্থিতিদের প্রতিবাদ: উপস্থিতিদের একাংশ মজলিসে ইয়াযিদের আচরণের প্রতিবাদ করেন; যেমন, মারওয়ান ইবনে হাকামের ভাই ইয়াহইয়া ইবনে হাকাম, যাকে ইয়াযিদ মুষ্টিবদ্ধ করে বুকে আঘাত করে।[৬১] আবু বারযা আসলামিও প্রতিবাদ করেন এবং ইয়াযিদের নির্দেশে মজলিস থেকে বহিষ্কৃত হন।[৬২]

বন্দীদের খুৎবা পাঠ

কারবালার বন্দীরা কুফায় প্রবেশ করার পর, ইমাম যয়নুল আবেদীন (আ.)[৬৩], ও হযরত যয়নাব (সা.আ.) লোকজনের সাথে কথোপকথন করেন এবং ঐতিহাসিক সূত্র অনুসারে, কুফাবাসীদেরকে আশুরার ঘটনায় ইমাম হুসাইন (আ.)-কে সহযোগিতা করার ক্ষেত্রে অবজ্ঞা প্রদর্শনের কারণে তিরস্কার করেন।[৬৪] বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ সাইয়্যেদ জাফর শাহিদি, ইয়াযিদ বাহিনীর কঠোরতা এবং তাদের প্রতি কুফাবাসীদের ভীত সন্ত্রস্ততার উপর ভিত্তি করে কুফায় এরূপ কথোপকথন ও খুৎবাসমূহকে দুঃসাধ্য জ্ঞান করেন।[৬৫]ইমাম হুসাইন (আ.)-এর কন্যা ফাতেমা সোগরা[৬৬] ইমাম আলী (আ.)-এর কন্যা উম্মে কুলসুমকেও কিছু খুৎবা পাঠের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টতা দেয়া হয়েছে।[৬৭] ইমাম যয়নুল আবেদীন (আ.) ও হযরত যয়নাব (সা.আ.) শামেও খুৎবা প্রদান করেছেন। এই সমস্ত খুৎবার বিষয়বস্তু হচ্ছে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর পরিবারের উপর নির্মম অত্যাচার এবং তাঁদেরকে শহরগুলোতে ঘোরানোর জন্য ইয়াযিদের তিরস্কার,[৬৮] এবং মহানবির (স.) আহলে বাইত এবং আলীর (আ.) ফযিলত বর্ণনা করা।[৬৯] এই বক্তব্যসমূহ ইমাম যয়নুল আবেদীন (আ.)-এর খুৎবা এবং শামে হযরত যয়নাব (সা.আ.)-এর খুৎবা হিসেবে প্রসিদ্ধ।[৭০]গবেষকরা এই খুৎবাকে কারবালায় ইমাম হুসাইন (আ.)-এর বিপ্লবকে পরিপূর্ণতা দানকারী হিসেবে বিবেচনা করেছেন; কেননা, এই খুৎবাগুলোর দ্বারা কারবালার ঘটনা বিকৃত হওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছে[৭১] এবং এই খুৎবাগুলো যদি না থাকতো তবে আশুরার ঘটনার মাহাত্ম্য অনেক মানুষের জন্য পরিষ্কার হতো না।[৭২]

শাম থেকে প্রত্যাবর্তন

কারবালার বন্দীরা শাম হতে মদীনা অথবা কারবালায় প্রত্যাবর্তন করেছিলেন। আর যদি আনুমানিকভাবে ধরেও নেই কারবালায় ফিরে এসেছিলেন তবুও এর সঠিক সময় (প্রথম আরবাঈন, না দ্বিতীয় আরবাঈন, না অন্য সময় ছিল) সম্পর্কে মতপার্থক্য বিদ্যমান।[৭৪]শেইখ মুফিদ,[৭৫]শেইখ তুসি[৭৬] এবং কাফআমি[৭৭] উল্লেখ করেছেন, আহলে বাইতের (আ.) কাফেলা শাম থেকে কারবালায় নয়, মদীনায় ফিরে গিয়েছিলেন। মুহাদ্দেস নূরী,[৭৮] শেইখ আব্বাস কুম্মি[৭৯] এবং মুর্তাযা মোতাহ্হারিও[৮০] বন্দীদের প্রথম আরবাঈনে কারবালায় ফিরে আসার বিষয়টির সাথে বিরোধিতা করেছেন। ইকবাল গ্রন্থে সাইয়্যেদ ইবনে তাঊস চল্লিশতম দিনে বন্দীদের ফিরে আসার বিষয়টিকে কারবালায় হোক বা মদীনায় দু’টিকেই অস্বাভাবিক হিসেবে গণ্য করেছেন; কেননা, তাদের কারবালায় বা মদীনায় ফিরতে চল্লিশ দিনের বেশি সময় লেগেছে। তার মতে, যদিওবা হতে পারে বন্দীরা কারবালায় গিয়েছিলেন, তবে তা আরবাঈন তথা চল্লিশার দিন ছিল না।[৮১]তবে লাহুফ গ্রন্থে সাইয়্যেদ ইবনে তাঊস বর্ণনা করেছেন, কারবালার বন্দীরা যখন শাম থেকে ফেরার পথে ইরাকে পৌঁছান, তাদের পথপ্রদর্শককে বললেন, “আমাদেরকে কারবালায় নিয়ে চলো।” অতঃপর তারা যখন ‘কতলগাহ’-তে (ইমাম হুসাইনকে [আ.] জবাইয়ের স্থান) পৌঁছালেন, তখন জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ আনসারি এবং বনি হাশিমের কিছু সদস্যদেরকে দেখতে পেলেন এবং ক্রন্দন ও দুঃখের সাথে শোক মজলিসের আয়োজন করলেন এবং কয়েকদিন পর মদীনায় ফিরে গেলেন।[৮২]সাইয়্যেদ ইবনে তাঊস তাঁদের কারবালায় প্রবেশের তারিখ উল্লেখ করেন নি। মুহাম্মাদ আলী কাজী তাবাতাবায়ীও (১২৯৩-১৩৫৮ ফার্সি সন) তাহকীক দারবারে আউয়ালিন আরবাঈনে হযরত সাইয়্যেদুশ শোহাদা (আ.) গ্রন্থে বন্দীদের কারবালায় ফিরে আসার বিষয়টি প্রমাণ করেছেন।[৮৩] হামাসে হুসাইনি গ্রন্থে মোতাহহারির ভাষ্য মতে, বন্দীদের কারবালায় ফিরে আসার বিষয়টি শুধুমাত্র ইবনে তাঊসের লাহুফে উল্লেখিত হয়েছে এবং অন্য কোন গ্রন্থে নেই।[৮৪]

সাইয়্যেদ ইবনে তাঊসের উল্লেখ অনুসারে, আহলে বাইতের (আ.) কাফেলা যখন মদীনার সন্নিকটে পৌঁছায় এবং শহরের বাইরে তাঁবু স্থাপন করেন, বশির ইবনে হাযলাম ইমাম যয়নুল আবেদীন (আ.)-এর নির্দেশে মদীনায় গমন করেন এবং মসজিদে নব্বী’র পাশে অশ্রু সজল চোখে ইমাম হুসাইনের (আ.) শাহাদাত সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করেন এবং ইমাম যয়নুল আবেদীন (আ.) ও ইমাম হুসাইন (আ.)-এর পরিবারের সদস্যদের মদীনায় প্রবেশের ঘোষণা দেন।[৮৫] সাইয়্যেদ ইবনে তাঊস মহানবির (স.) তিরোধানের পর ঐ দিনটিকে মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে তিক্ত দিন হিসেবে বিবেচনা করে উল্লেখ করেন যে, মদীনার সকল নারীরা সেদিন ঘর থেকে বের হয়ে এসেছিলেন, চিৎকার করেছিলেন এবং ঐ দিনের ন্যায় কোন দিন নারী-পুরুষদেরকে ক্রন্দন করতে দেখা যায় নি।[৮৬] দানেশ নামেয়ে ইমাম হুসাইন (আ.) গ্রন্থের লেখকদের বক্তব্য ভাষ্যানুসারে, ইমাম হুসাইনের (আ.) পরিবারের আন্দোলন মদীনা থেকে শুরু হয় এবং মদীনা গিয়েই শেষ হয়। এই সময়ের মধ্যে তাঁরা অন্ততপক্ষে প্রায় ৪১০০ কিলোমিটার (সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত রাস্তা এবং কারবালায় ফিরে যান নি ধরে নিয়ে) পথ পাড়ি দিয়েছিলেন; ৪৩১ কিলোমিটার পথ মদীনা থেকে মক্কা, ১৪৪৭ কিলোমিটার মক্কা থেকে কারবালা, ৭০ কিলোমিটার কারবালা থেকে কুফা, ৯৩২ কিলোমিটার কুফা থেকে দামেস্ক এবং ১২২৯ কিলোমিটার দামেস্ক থেকে মদীনা।[৮৭]

তথ্যসূত্র

গ্রন্থপঞ্জি

  • ইবনে আবি আল-হাদিদ, উজ্জুদ্দীন আব্দুল হামিদ, শারহে নাহজুল বালাগা, মুহাম্মদ আবুল ফজল ইব্রাহিমের গবেষণা, দ্বিতীয় সংস্করণ, কোম, মানশুরাতে আয়াতুল্লাহ মারাশি নাজাফি, ১৪০৪ হিজরি।
  • ইবনে আসীর, আলী ইবনে মুহাম্মদ, আল-কামিল ফী আল-তারিখ, বৈরুত, দার আল-তোরাস আল-আরাবী, ১৪০৫ হিজরি।
  • ইবনে আ’সাম কুফী, আহমদ ইবনে আ’সাম, আল-ফুতুহ, তাহকীক আলী শিরি, বৈরুত, দারুল-আযওয়া, ১৪১১ হিজরি।
  • ইবনে সাদ, "তারজমাতুল হুসাইন ওয়া মাকতালোহু", সাইয়্যিদ আব্দুল আজিজ তাবাতাবাইয়ের গবেষণা, ফাসল নামায়ে তারসোনা, তৃতীয় বর্ষ, সংখ্যা ১০, ১৪০৮ হিজরি।
  • ইবনে শাদ্দাদ, মুহাম্মদ ইবনে আলী, আল-আলাক আল-খাতিরা ফী জিকর আমরাঅ আল-জাজিরা, দামেস্ক, প্রকাশনা অজ্ঞাত, ২০০৬ খ্রি.।
  • ইবনে শাহরে আশুব, মুহাম্মদ বিন আলী মাযানদারানী, মানাকিবি আল-আবি তালিব আলাইহিস সালাম, আল্লামা, কোম, ১৩৭৯ হিজরি।
  • ইবনে তাইফুর, আবুল ফজল ইবনে আবি তাহির, বালাগাত আল-নিসা', কোম, মাক্তবাতুল হায়দারিয়া, ১৩৭৮ ফারসি সন।
  • ইবনে আসাকির, আলী ইবনে হাসান ইবনে হাইবাতুল্লাহ, তারিখু মাদীনাতি দিমাশক, আলী আশুরের গবেষণা, বৈরুত, দারুল ইহিয়ায়িত তুরাসিল আরাবী, ১৪২১ হিজরি।
  • ইবনে আসাকির, আলী ইবনে হাসান ইবনে হাইবাতুল্লাহ, তারিখু মাদীনাতি দিমাশক, বৈরুত, আলী শিরি কর্তৃক গবেষণাকৃত, দারুল-ফিকর, ১৪১৫ হিজরি।
  • ইবনে কাছীর, ইসমাইল ইবনে উমর, আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ, গবেষক: খলিল শাহাদাহ, বৈরুত, দারুল-ফিকর, ১৩৯৮ হিজরি।
  • ইবনে নামা, জা'ফর বিন মুহাম্মদ, মুসির আল-আহজান, কোম, মাদ্রাসায়ে ইমাম আল-মাহদী, ১৪০৬ হিজরি।
  • আবু রায়হান বিরুনি, মুহাম্মদ বিন আহমদ, আসার আল-বাকিয়া, অনুবাদক: দানা সারশাত, আকবর, তেহরান, আমির কবির, ১৩৮৬ ফারসি সন।
  • আবুল ফারাজ ইসফাহানি, মাকাতিল আত-তালেবীন, কোম, মুআসসেসেয়ে দারুল কিতাব, ১৩৮৫ হিজরি।
  • আবু মাখনাফ, লুত বিন ইয়াহিয়া, ওয়াকিআ' আল-তাফ, কোম, নাশরে জামেয়ে মুদার্রেসিন, তৃতীয় সংস্করণ, ১৪১৭ হিজরি।
  • বালাযুরি, আনসাব আল-আশরাফ, সুহাইল জাক্কার এবং রিয়াজ জারলাকির গবেষণা, বৈরুত, দার আল-ফিকর, ১৪১৭ হিজরি।
  • বাইযুন, লাবিব, মাউসুআতু কারবালা, বৈরুত, আল-আলামি পাবলিশিং হাউস, তারিখ অজ্ঞাত।

তামিমি মাগরিবি, আবু হানিফা নোমান বিন মুহাম্মদ, শারহ আল-আখবার ফী ফাযায়েল আল-আইম্মা আল-আতহার, গবেষণা: সাইয়্যেদ মোহাম্মদ *হুসাইনি জালালি, কোম, মুআসসিসাতুন নাশর আল-ইসলামী, তারিখ অজ্ঞাত।

  • খাওয়ারিযমি, মুওয়াফাক বিন আহমদ মাক্কী, মাকতাল আল-হুসাইন, মুহাম্মদ সামাউই কর্তৃক গবেষণাকৃত, নাজাফ, মাতবাআ আল-জাহরা, ১৩৬৭ হিজরি।
  • দীনওয়ারী, আবু হানিফা আহমাদ বিন দাউদ, আল-আখবার আল-তেওয়াল, গবেষণা: এসাম মুহাম্মদ আলহাজ্ব আলী, বৈরুত, দার আল-কিতাব আল-ইলমিয়া, ১৪২১ হিজরি।
  • রব্বানী গুলপায়গানি, আলী, "আফশাগারিয়ে ইমাম সাজ্জাদ দার কিয়ামে কারবালা", মাজাল্লেয়ে নূর আলম, সংখ্যা ৪৬, মোরদাদ ও শাহরিভার ১৩৭১ ফারসি সন।
  • সাইয়্যিদ ইবনে তাউস, আলী ইবনে মুসা, আল-মালহুফ আলা কাতলি আল-তাফুফ, ফারস তাবরিযিয়্যানের গবেষণা, কোম, দারুল-উসওয়া, ১৪১৭ হিজরি।
  • সাইয়্যিদ বিন তাউস, আলী বিন মুসা, আল-আকবাল বিল আমাল আল-হাসানা, জাওয়াদ কাইয়ুমি ইসফাহানির গবেষণা, কোম, দাফতারে তাবলীগাতে ইসলামি, প্রথম সংস্করণ, ১৩৭৬ ফারসি সন।
  • শাহিদী, সাইয়্যেদ জাফর, জিন্দেগানি আলী ইবনে আল-হুসাইন (আ.), তেহরান, দাফতারে ফারহাঙ্গে নাশরে ইসলামি, ১৩তম সংস্করণ, ১৩৮৫ ফারসি সন।
  • সাদুক, উয়ুনু আখবার আল-রিযা, তাসহিহ: হুসাইন আ’লামী, বৈরুত, আল-আলামী প্রেস ইনস্টিটিউট, ১৪০৪ হিজরি।
  • সাদুক, মুহাম্মদ বিন আলী, আল-আমালি, কোম, মুআসসিসাতুল বি’সাহ, ১৪১৭ হিজরি।
  • সাফফার কুম্মি, মুহাম্মদ বিন হাসান, বাসায়ের আল-দারাজাত, তাসহিহ: মোহসিন কুচে বাগী, কোম, আয়াতুল্লাহ মারশি নাজাফি লাইব্রেরি, ১৪০৪ হিজরি।
  • তাবারসি, আহমদ বিন আলী, আল-ইহতেজাজ, ইব্রাহিম বাহাদুরি এবং মুহাম্মদ হাদিবেহ’র গবেষণা, অধ্যায় ২, কোম, উসওয়া, ১৪১৬ হিজরি।
  • তাবারি, এমাদুদ্দীন হাসান বিন আলী, কামিল বাহাই, কোম, পাবলিশিং হাউস, ১৩৩৪ ফারসি সন।
  • তাবারী, মুহাম্মদ বিন জারির, তারিখ আল-উমাম ওয়াল মুলুক, মুহাম্মদ আবুল-ফজল ইব্রাহিম কর্তৃক গবেষণাকৃত, বৈরুত, রাওয়াই' আল-তুরাসিল আরাবী, ১৩৮৭ হিজরি।
  • তুসী, মুহাম্মদ বিন হাসান, মিসবাহ আল-মুতাহাজ্জাদ ওয়া সেলাহ আল-মুতাআব্বাদ, বৈরুত, ফিকহ আল-শিয়াহ ফাউন্ডেশন, প্রথম সংস্করণ, ১৪১১ হিজরি।
  • কাজী তাবাতাবাই, সাইয়্যেদ মুহাম্মদ আলী, তাহকিক দরবার-এ-আউয়াল আরবাঈনে হযরত সাইয়্যেদ আল-শুহাদা, তেহরান, ভেযারাতে ফারহাঙ্গ ওয়া ইরশাদে ইসলামী, সাযেমানে চাপ ওয়া ইন্তেশারাত, ১৩৮৮ ফারসি সন।
  • কুম্মি, শেইখ আব্বাস, মুনতাহা আল-আমাল, তেহরান, হুসাইনি প্রেস, ১৩৭২ ফারসি সন।
  • কুম্মি, শেইখ আব্বাস, নাফস আল-মাহমুম ফী মুসিবাতি সাইয়্যিদনা আল-হুসাইন আল-মাজলুম, কোম, আল-মাকতাব আল-হায়দারিয়া, তারিখ অজ্ঞাত।
  • কাফা'মী, ইব্রাহিম বিন 'আলী আমেলি, আল-মিসবাহ লিল কাফা'মী (জান্না আল-আমান আল-ওয়াকিয়া ওয়া জান্না আল-ঈমান আল-বাকিয়া), কোম, দারুর রাযী, দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৪০৫ হিজরি।
  • মুহাদ্দিস নূরী, লুলু ও মারজান, গবেষণা: দেরায়াতী, মুস্তাফা, কোম, কনগ্রেয়ে দ্বীনে পেঝুহানে কেশভার, ১৪২০ হিজরি।
  • মুহাদ্দেসী, জাওয়াদ, ফারহাঙ্গে আশুরা, কোম, নাশরে মা’রুফ, দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৪১৭ হিজরি।
  • মোহাম্মদী রেই শাহরি, মুহাম্মদ, দানেশ নামেয়ে ইমাম হুসাই (আ.) দার পায়েয়ে কুরআন, অনুবাদক: মাসউদী, আব্দুল হাদী, কোম, প্রকাশক: মুআসসেয়ে দারুল হাদীস, ১৩৮৮ ফারসি সন।
  • শেইখ মুফিদ, মুহাম্মদ বিন মুহাম্মদ, আল-ইরশাদ ফী মারেফা হুজাজিল্লাহ আলাল এবাদ, গবেষণা: মুআসসেসেয়ে আলুল বাইত, আল-মু’তামার আল-আলামী আল-আলফিয়া আল-শেখ আল-মুফিদ, ১৪১৩ হিজরি।
  • শেইখ মুফিদ, মুহাম্মদ বিন মুহাম্মদ, আমালি, হুসাইন ওস্তাদ ওয়ালি এবং আলী আকবর গাফফারী’র গবেষণা, কোম, জামেয়ে মুদাররেসীন, ১৪০৩ হিজরি।
  • ইয়াকুবী, আহমাদ বিন ইয়াকুব, তারিখে ইয়াকুবী, বৈরুত, দারু সাদির, তারিখ অজ্ঞাত।
  • মুফিদ, মুহাম্মদ বিন মুহাম্মদ, মাসার আল-শিয়াই, কোম, শেখ মুফিদের কংগ্রেস, প্রথম সংস্করণ, ১৪১৩ হিজরি।
  • মুহাজির, জাফর, কারাভানে গাম, সাইয়্যেদ হোসেন মেরশি, তেহরান, মুসাফির পাবলিকেশন্স, ১৩৯০ শামসি।
  • নাদিয়ালিয়ান, আহমাদ এবং মেহরান হোশিয়ার, "নাকশেহায়ে আশুরাই", দার মাজাল্লেয়ে রাহপুয়ে হোনার, সংখ্যা ৫, বাহার