বিষয়বস্তুতে চলুন

ধ্বংসযজ্ঞ দিবস

wikishia থেকে
এ নিবন্ধ জান্নাতুল বাকী ধ্বংসযজ্ঞ দিবস সর্ম্পকে, এ বিষয়ে অধিক অবগতির জন্য পড়ুন জান্নাতুল বাকী ধ্বংসযজ্ঞ নিবন্ধটি।
ওহাবীদের দ্বারা ধ্বংস হওয়ার আগে বাকীর কবরস্থানের দৃশ্য
ওহাবীদের দ্বারা ধ্বংস হওয়ার পরে বাকী কবরস্থানে ইমামদের কবরের দৃশ্য
ধ্বংসযজ্ঞ দিবস উপলক্ষে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর মাজারে টানানো শোকের ব্যানার[]
বাকী কবরস্থানে আইম্মাগণের কবরের বর্তমান অবস্থা

ধ্বংসযজ্ঞ দিবস (আরবি: یَومُ‌الهَدْم); হল জান্নাতুল বাকী ধ্বংসযজ্ঞ দিবস। ৮ই শাওয়াল ১৩৪৪ হিজরীতে ওয়াহাবিরা মদিনায় হামলা চালিয়ে বাকীতে অবস্থিত বিভিন্ন পবিত্র মাজারসহ বেশ কিছু ইসলামি স্থাপনা ধ্বংস করে দেয়।[]

ওয়াহাবিরা ১৩৪৪ হিজরীর সফর মাসে মদিনায় হামলা চালায়[] এ হামলায় মহানবি (স.)-এর পবিত্র মাজার ও ধর্মীয় স্থাপনাগুলোর ক্ষয়ক্ষতি হয়।[] ৭ মাস পর ১৩৪৪ হিজরীর রমজান মাসে, ১৩৪৩ থেকে ১৩৪৫ হি. পর্যন্ত মক্কার প্রধান বিচারকের দায়িত্বে থাকা শেইখ আব্দুল্লাহ বিন বুলাইহিদ (১২৮৪-১৩৫৯ হি.)[] মদিনায় প্রবেশ করে এবং মদিনার কয়েকজন মুফতির কাছে প্রশ্ন করে কবরের উপর থাকা স্মৃতিস্তম্ভগুলো গুড়িয়ে দেওয়ার পক্ষে ফতওয়া নেয়।[] এর ধারাবাহিকতায় ১৩৪৪ হিজরীর ৮ শাওয়াল জান্নাতুল বাকীতে থাকা সকল মাজার ধ্বংস করে দেওয়া হয়।[]

ঐতিহাসিক সনদের ভিত্তিতে জান্নাতুল বাকীতে ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর পর তৎকালীন সৌদি বাদশাহ আব্দুল আযিয ১৩৪৪ হিজরীর ১২ শাওয়াল আব্দুল্লাহ বিন বুলাইহিদকে লেখা এক পত্রে তার এ পদক্ষেপের ভূয়সী প্রশংসা করে।

আহলে বাইত (আ.)-এর মাযহাবের অনুসারীদের নিকট ৮ই শাওয়াল ইয়াওমুল হাদম (ধ্বংসযজ্ঞ দিবস) হিসেবে পরিচিত। প্রতিবছর এ দিনে তারা শোক মজলিশের আয়োজন করে এবং জান্নাতুল বাকী ধ্বংসযজ্ঞকে স্মরণ করে শোক পালন করে।

বিশিষ্ট মারজায়ে তাক্বলিদ আয়াতুল্লাহ সাফী গুলপায়গানী দিনটিকে ‘বিশ্ব জান্নাতুল বাকী দিবস’ হিসেবে নামকরণ করেছেন। ওয়াহাবীদের হামলায় জান্নাতুল বাকী ও অন্যান্য ইসলামি স্থাপনা ধ্বংসের নিন্দা এবং মাজারগুলো পুনঃনির্মাণের দাবী জানানোর জন্য তিনি মুসলিম উম্মাহর প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

১২২০ সালে সউদ বিন আব্দুল আযিযের নির্দেশে ৪ ইমামের (ইমাম হাসান, ইমাম আলী ইবনুল হুসাইন, ইমাম মুহাম্মাদ বাকেরইমাম জাফার সাদিক আলাইহিমুস সালাম মাজার ও হজরত ফাতেমা (সা. আ.)-এর বাইতুল আহযান (দুঃখের ঘর) নামে হজরত ফাতেমার স্মরণে নির্মিত গম্বুজ ধ্বংস করে দেয় অথবা হামলায় সেগুলোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।[] আব্দুর রাহমান জাবারুতির ভাষ্যানুযায়ী ওয়াহাবী সৈন্যরা মহানবি (স.)-এর মাজার ব্যতীত সকল মাজার ভেঙ্গ দেয়।[]

অবশ্য কিছু কিছু মাজার ১২৩৪ সালে দ্বিতীয় সুলতান মাহমুদের (১২২৩-১২৫৫ হি.) নির্দেশে সংস্কার করা হয়।[১০]

আরও দেখুন: জান্নাতুল বাকীর ধ্বংস

তথ্যসূত্র

  1. «تصاویر مراسم عزاداری سالروز تخریب قبور ائمه بقیع در حرم امام حسین(ع)», হাওযা নিউজ।
  2. নাজমি, তারিখে হারামে আইম্মায়ে বাকী ওয়া আসারে দিগার দার মাদীনা মুনাওওয়ারা, ১৩৮৬ ফার্সি সন, পৃ. ৫১।
  3. হাজারি, আল-বাকী কিস্সাতুল তাদমীর, ১৪১১ হি., পৃ. ১১৩-১৩৯; আমিনী, বাকীউল গারকাদ, ১৩৮৬ ফার্সি সন, পৃ. ৪৯।
  4. হাজারি, আল-বাকী কিস্সাতুল তাদমীর, ১৪১১ হি., পৃ. ১১৩-১৩৯; আমিনী, বাকীউল গারকাদ, ১৩৮৬ ফার্সি সন, পৃ. ৪৯।
  5. যেরেকলি, আল-এ’লাম, ২০০২ খ্রি., খণ্ড ৪, পৃ. ৯১।
  6. আল-বালাগি, আল-রাদ্দু আলাল ওয়াহাবিয়্যাহ, ১৪১৯ হি., পৃ. ৩৯-৪১; হাজারি, আল-বাকী কিস্সাতুল তাদমীর, ১৪১১ হি., পৃ. ১১৩-১৩৯; আমিনী, বাকীউল গারকাদ, ১৩৮৬ ফার্সি সন, পৃ. ৪৯।
  7. নাজমি, তারিখে হারামে আইম্মায়ে বাকী ওয়া আসারে দিগার দার মাদীনা মুনাওওয়ারা, ১৩৮৬ ফার্সি সন, পৃ. ৫১।
  8. জাবারতি, আজায়েবুল আসার, দারুল জিল, খণ্ড ৩, পৃ. ৯১।
  9. জাবারতি, আজায়েবুল আসার, দারুল জিল, খণ্ড ৩, পৃ. ৯১।
  10. জা’ফারিয়ান, পানজাহ সাফারনামে, ১৩৮৯ ফার্সি সন, খণ্ড ৩, পৃ. ১৯৬।

গ্রন্থপঞ্জি

  • «آیت‌الله صافی گلپایگانی: تخریب قبور ائمه بقیع(ع) خیانت بزرگ به اسلام است.», হাউযা নিউজ।
  • «آیین بزرگداشت یوم‌الهدم در مسجد زیارت قدمگاه برگزار می‌شود», শাবেস্তান নিউজ।
  • «به مناسبت ۸ شوال "یوم‌الهدم"/ حادثه دردناک تخریب بقیع زخمی بر قلب شیعیان» শাফাকনা সাইট।
  • আল-বালাগী, মুহাম্মাদ জাওয়াদ, আর রাদ্দু আলাল ওহাবিয়্যাহ, তাহকিক: সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ আলীউল হাকিম, বৈরুত, মুআসসিসাতু আহলিল বাইত লি ইহিয়ায়িত তুরাস, ১৪১৯ হি./১৯৯৮ খ্রি.।
  • আল-আস্সাফ, মানসুর, «عبدالله بن سلیمان البلیهد.. القاضی والمستشار فی زمن التأسیس», শাফাকনা সাইট।
  • আমিনী, মুহাম্মাদ আমিন, বাকীউল গারকাদ ফি দিরাসাতি শামিলাহ, তেহরান, মাশআর, ১৩৮৬ ফার্সি সন।
  • জাবরাতি, আব্দুর রাহমান, আজায়েবুল আসার, বৈরুত, দারুল জিল।
  • জা’ফারিয়ান, রাসুল, পানজাহ সাফারনামেয়ে হাজ্জে কাজারি, তেহরান, নাশরে ইলম, ১৩৮৯ ফার্সি সন।
  • জেরেকলি, খাইরুদ্দীন, আল-এ’লাম, বৈরুত, দারুল ইলম, ২০০২ খ্রি.।
  • সিবায়ি, আহমাদ, তারিখে মক্কা, মাক্কাতুন আল-মুকাররামা, মুতাবেউস সাফফা, দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৪২০ হি.।
  • আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রাহমান বিন সালেহ, খাজ্জানাতুল তাওয়ারিখ আল-নাজদিয়্যাহ, আলে সাবাম, ১৪১৯ হি.।
  • নাজমি, মুহাম্মাদ সাদিক, তারিখে হারামে আইম্মায়ে বাকী ওয়া আসারে দিগার দার মাদিনা মুনাওওয়ারা, নাশরে মা’শার, তেহরান, ১৩৮৬ ফার্সি সন।
  • হাজারি, ইউসুফ, আল-বাকী কিস্সাতুল তাদমীর, বৈরুত, মুআসসাসাতু বাকী লি ইহিয়ায়িত তুরাস, ১৪১১ হি.।
  • «تصاویر/ مراسم عزاداری سالروز تخریب قبور ائمه بقیع در حرم امام حسین(ع)», হাওযা নিউজ।