ইসমাত
ইসমাত (পাপশুণ্যতা); বলতে সব ধরনের ভুল-ত্রুটি ও গুনাহ থেকে মুক্ত থাকাকে বুঝায় এবং এমন বৈশিষ্ট্যের অধিকারী ব্যক্তিকে বলা হয় মাসুম। শিয়া মাযহাব ও মু’তাজিলা সম্প্রদায়ের কালামশাস্ত্রবিদগণের দৃষ্টিতে ইসমাত হচ্ছে আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ এবং অন্যান্য মুসলিম মনীষীগণ এটাকে এক অভ্যন্তরীণ সহজাত (স্বভাবজাত) ও অপরিবর্তনীয় বৈশিষ্ট্য হিসেবে অভিহিত করেছেন; যে বৈশিষ্ট্যের কারণে গুনাহ ও ভুল-ত্রুটি মুক্ত থাকা সম্ভব।
ইসমাতের উৎসমূল এবং মাসুম ব্যক্তির গুনাহ ও ভুল-ত্রুটি মুক্ত থাকার মুখ্য কারণ সম্পর্কে কয়েকটি দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি ইশারা করা হয়েছে; তম্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ, বিশেষ ইলম বা জ্ঞান, ইচ্ছাশক্তি ও নির্বাচন ক্ষমতা এবং মানবীয় ও খোদাপ্রদত্ত নিয়ামকসমূহ। কালামশাস্ত্রবিদগণ ও মনীষীবর্গ ইসমাতকে ইখতেয়ার বা ইচ্ছাশক্তির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে অভিহিত করেছেন। তাদের দৃষ্টিতে মাসুম ব্যক্তি যেহেতু গুনাহ ও ভুল-ত্রুটির ক্ষমতা রাখা সত্ত্বেও নিজেকে গুনাহমুক্ত রাখেন; সেহেতু তারা উপযুক্ত প্রতিদানে ভূষিত হবেন।
নবিগণের (আ.) ইসমাতের ক্ষেত্রে সকল মুসলিম মনীষী ঐকমত্যপোষণ করেন। কিন্তু এর পরিধি ও ব্যপ্তি সম্পর্কে মতভেদ রয়েছে। শিরক ও কুফরের ক্ষেত্রে নবিগণের ইসমাত, আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রত্যাদেশ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ইসমাত এবং নবুয়ত লাভের পর ইচ্ছাকৃত গুনাহ থেকে মুক্তির ক্ষেত্রে ইসমাতের বিষয়ে সমস্ত মুসলিম মনীষী ঐকমত্যপোষণ করেন।
শিয়া আলেমগণের দৃষ্টিতে এ মাযহাবের ইমামগণ সব ধরনের কবিরা ও সগিরা গুনাহ থেকে মুক্ত এবং তারা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে যে কোন ধরনের ভুল-ত্রুটির ঊর্ধ্বে। অর্থাৎ, এককথায় তারা হচ্ছেন মাসুম। বিশিষ্ট শিয়া আলেম আল্লামা বাকের মাজলিসি উল্লেখ করেছেন: শিয়া মাযহাবের ইজমা মতে সমস্ত ফেরেশতারাও মাসুম, তথা সব ধরনের ভুল-ত্রুটির ঊর্ধ্বে।
ইসমাত সম্পর্কে কিছু আপত্তিও উত্থাপিত হয়েছে; তম্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- কেউ কেউ এ অবস্থাকে মানবীয় বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য যথা: ইন্দ্রীয় ও জৈবিক চাহিদাসমূহের সাথে বৈপরিত্য হিসেবে বিবেচনা করেছেন। এমন আপত্তির জবাবে বলব- মানুষের মধ্যে বিদ্যমান ইন্দ্রীয় ও জৈবিক চাহিদাসমূহ শুধুমাত্র গুনাহ কিংবা ভুল-ভ্রান্তি সম্পন্নের মন-বাসনা বা আকাংখা সৃষ্টি করে। কিন্তু এ অবস্থার সাথে গুনাহ সম্পন্নের কোন বাধ্যবাধকতা নেই। কেননা ইলম বা জ্ঞান ও ইচ্ছাশক্তি তা সম্পন্নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে।
গুরুত্ব ও তাৎপর্য
বিশিষ্ট কালামশাস্ত্রবিদ ও গবেষক সাইয়েদ আলী হুসাইনি মিলানী উল্লেখ করেছেন: ইসমাতের বিষয়টি ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আকিদাগত ও কালামশাস্ত্রের বিষয়। এ প্রসঙ্গে মুসলিম মাযহাব ও ফেরকাসমূহ নিজ নিজ দৃষ্টিভঙ্গিতে ব্যাখ্যা করেছেন। ইসমাতের সাথে মাসুম ব্যক্তির উক্তি ও কর্মের দালিলিক গ্রহণযোগ্যতার অবিচ্ছেদ্য সম্পৃক্ততার কারণে বিষয়টির গুরুত্ব বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। সুন্নী মাযহাবের দৃষ্টিতে যেহেতু মুসলিম খলিফা, শাসক, নেতৃবৃন্দের ক্ষেত্রে ইসমাতের কোন শর্ত নেই; যেহেতু তাদের মাযহাবে ইসমাতের বিষয়টি শুধুমাত্র নবিগণের ক্ষেত্রে আলোচিত হয়েছে। কিন্তু শিয়া মাযহাব যেহেতু সমস্ত নবি-রাসূল এবং ইমামগণকে মাসুম হিসেবে বিশ্বাস করে, সেহেতু নবুয়ত ও ইমামত উভয় ক্ষেত্রে এ বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব ও তাৎপর্যের সাথে বিবেচিত হয়েছে। ইসমাতের বিষয়টি সমস্ত মুসলমানদের সম্মিলিত ও যৌথ আকিদার অংশ; যদিও এ বিষয়ের শাখাগত ও বিস্তারিত প্রসঙ্গে মতভেদ বিদ্যমান।[১]
ইসমাত সম্পর্কে কালামশাস্ত্রের গ্রন্থাবলিতে নবিগণের ইসমাত, ইমামগণের ইসমাত, ফেরেশতাদের ইসমাত শিরোনামে আলোচিত হয়।[২] কুরআনের তাফসীর গ্রন্থাবলিতেও যেমন আয়াতে তাতহীর এর ব্যাখ্যায় ইসমাত সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়েছে।[৩] উসুলে ফিকাহতেও আহলে সুন্নতের উসুলশাস্ত্রের পণ্ডিতরা ইজমার দালিলিক গ্রহণযোগ্যতাকে উম্মতের ইসমাত হিসেবে অভিহিত করেছেন। কেননা তাদের দৃষ্টিতে মুসলিম উম্মাহ হচ্ছে রাসূলুল্লাহর (সা.) উত্তরসূরি এবং তারা দ্বীনের ক্ষেত্রে ভুল-ভ্রান্তির ঊর্ধ্বে। পক্ষান্তরে শিয়া মাযহাবের আলেমগণ ইজমার দালিলিক গ্রহণযোগ্যতাকে কেবল ইমামগণের ইসমাতকে গণ্য করেছেন। কেননা তাদের দৃষ্টিতে ইমাম (আ.) হলেন রাসূলুল্লাহর (সা.) স্থলাভিষিক্ত। আর ইজমা এ কারণে হুজ্জাত হিসেবে বিবেচিত, যেহেতু তা মাসুম ইমামের (আ.) উক্তি বা হাদীসের উদ্ঘাটক।
খৃষ্ট ও ইহুদি ধর্মেও ইসমাতের বিষয় বিদ্যমান। খিষ্টানরা হযরত ঈসা (আ.) ছাড়াও ইঞ্জিল শরীফের লেখক ও পোপকে (ক্যাথলিক খিষ্টান ধর্মালম্বিদের নেতা) মাসুম মনে করে। অবশ্য পোপের ক্ষেত্রে ইসমাতের বিষয়টি শুধুমাত্র ক্যাথলিকদের মধ্যে প্রচলিত। [৪]
ভাবার্থ পরিচিত
মুসলিম কালামশাস্ত্রবিদ ও মনীষীবর্গ নিজ নিজ দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী ইসমাত সম্পর্কে ভিন্ন ভিন্ন সংজ্ঞা ও ব্যাখ্যা তুলে ধরেছেন; সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-
- কালামশাস্ত্রবিদগণের সংজ্ঞা: ইমামিয়া[৫] ও মু’তাজিলা[৬] আকিদার কালামশাস্ত্রবিদরা ইসমাতকে আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ হিসেবে অভিহিত করেছেন।[৭] এ সংজ্ঞা অনুযায়ী ইসমাত বলতে বুঝায় কোন বান্দার প্রতি আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ; যার মাধ্যমে সে সব ধরনের মন্দকর্ম ও গুনাহ থেকে নিজেকে বিরত রাখতে সক্ষম হয়।[৮] আল্লামা হিল্লী ইসমাতের সংজ্ঞাতে উল্লেখ করেছেন: ইসমাত হচ্ছে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার প্রতি অদৃশ্য অনুগ্রহ; যার মাধ্যমে তার মধ্যে কোন ধরনের নাফরমানি ও গুনাহ সম্পাদনের বিন্দুমাত্র ইচ্ছা ও আগ্রহ অবশিষ্ট থাকে না। যদিও সে সেগুলো সম্পাদনের ক্ষমতা রাখে।[৯]
আশআরী সম্প্রদায় ইসমাতকে মাসুম ব্যক্তির মধ্যে আল্লাহর পক্ষ থেকে কোন গুনাহ সৃষ্টি না করাকে সংজ্ঞায়িত করেছে।[১০] তাদের এহেন সংজ্ঞার ভিত্তি হচ্ছে সব কিছুই সরাসরি আল্লাহর সাথে সম্পৃক্ত।[১১]
- দার্শনিকদের সংজ্ঞা: মুসলিম দার্শনিকরা ইসমাতকে অভ্যন্তরীণ সহজাত (স্বভাবজাত) ও অপরিবর্তনীয় বৈশিষ্ট্য হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেছেন; যার কারণে ইসমাতের অধিকারী ব্যক্তি সব ধরনের গুনাহ ও ভুল-ভ্রান্তি থেকে দূরে থাকেন।[১২]
সমকালীন মুফাসসির ও কালামশাস্ত্রবিদ আয়াতুল্লাহ জাফর সুবহানি ইসমাতের সংজ্ঞায় গুনাহ থেকে মুক্ত এবং ভুল-ত্রুটি থেকে মুক্ত থাকার মধ্যে কিছু পার্থক্যের প্রতি ইশারা করেছেন এবং এক্ষেত্রে কালামশাস্ত্রবিদ ও দার্শনিকদের প্রদত্ত সংজ্ঞার মধ্যে এক ধরনের সমন্নয় সাধন করেছেন। তিনি গুনাহ থেকে মুক্ত থাকার ক্ষেত্রে ইসমাতকে তাকওয়ার সর্বোত্তম পর্যায় এবং অভ্যন্তরীণ সহজাত ও অপরিবর্তনীয় বৈশিষ্ট্য হিসেবে অভিহিত করেছেন। এর ফলে ইসমাতের অধিকারী ব্যক্তি তথা মাসুম সব ধরনের গুনাহ থেকে মুক্ত, এমনকি এ সম্পর্কে কোন চিন্তা করা থেকেও দূরে থাকেন।[১৩] পাশাপাশি ভুল-ত্রুটি থেকে মুক্ত থাকার ক্ষেত্রে ইসমাত হচ্ছে খোদাপ্রদত্ত অকাট্য জ্ঞান, যার মাধ্যমে মাসুম ব্যক্তির সম্মুখে সব বিষয়ের প্রকৃত স্বরূপ উন্মোচিত হয়; ফলে তিনি যে কোন বিষয়ে ভুল-ভ্রান্তি থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে সক্ষম হন।[১৪]
আভিধানিক অর্থে ইসমাত শব্দের শব্দমূল হচ্ছে ‘আসামা’, এর অর্থ হচ্ছে মুক্ত থাকা বা বিরত রাখা। ইবনে মানযুর, লিসানুল আরব, দারু সাদের, খঃ১২, পৃঃ৪০৩-৪০৪।
ইসমাতের উৎসমূল
ইসমাতের উৎসমূল এবং মাসুম ব্যক্তি গুনাহ ও ভুল-ভ্রান্তি থেকে মুক্ত থাকার নিয়ামক সম্পর্কে কিছু দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে; তম্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- মাসুম ব্যক্তির প্রতি আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ, গুনাহের পরিণাম ও স্বরূপ সম্পর্কে মাসুম ব্যক্তির বিশেষ ইলম বা জ্ঞান এবং মাসুমের স্বাধীনতা ও ইচ্ছাশক্তি। অবশ্য কিছু সমকালীন মুসলিম গবেষক উল্লেখ করেছেন যে, ইসমাতের নিয়ামক একক নয়। বরং, সম্মিলিত কিছু নিয়ামকের সমন্নয়ে এমন অবস্থা গড়ে উঠে; যেমন: প্রাকৃতিক নিয়ামকসমূহ (উত্তরাধিকার, পারিপার্শ্বিক পরিবেশ এবং পরিবার), মানবীয় নিয়ামকসমূহ (জ্ঞান ও সচেতনতা, নির্বাচন ক্ষমতা ও ইচ্ছাশক্তি, অভ্যন্তরীণ সহজাত ও অপরিবর্তনীয় বৈশিষ্ট্য) এবং খোদায়ী (আল্লাহ প্রদত্ত বিশেষ অনুগ্রহ)।
আল্লাহ প্রদত্ত বিশেষ অনুগ্রহ
শেখ মুফিদ ও সাইয়েদ মুর্ত্তাজা (রহ.) ইসমাতকে মাসুমগণের প্রতি আল্লাহ প্রদত্ত বিশেষ অনুগ্রহ হিসেবে অভিহিত করেছেন।[১৫] আল্লামা হিল্লী আল্লাহ প্রদত্ত এ বিশেষ অনুগ্রহের চারটি কারণ উল্লেখ করেছেন; যথা:
১- মাসুম ব্যক্তির সত্তায় বিদ্যমান অভ্যন্তরীণ সহজাত (স্বভাবজাত) ও অপরিবর্তনীয় বৈশিষ্ট্যাবলি যার মাধ্যমে সহজাতভাবে সে গুনাহ থেকে মুক্ত থাকে,
২- গুনাহের ভয়ানক পরিণতি এবং গুনাহ ত্যাগের উত্তম প্রতিদান সম্পর্কে সম্যক ইলম বা জ্ঞান,
৩- মাসুমের প্রতি আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রাপ্ত প্রত্যাদেশের মাধ্যমে গুনাহের স্বরূপ তাদের নিকট উন্মোচিত হয় এবং
৪- আল্লাহর নিকট জাবাবদিহিতার অনুভূতি।[১৬]
ইলম বা বিশেষ জ্ঞান
কিছু কিছু আলেমগণ গুনাহের ভয়ানক পরিণতি এবং গুনাহ ত্যাগের উত্তম প্রতিদান সম্পর্কে সম্যক ইলম বা জ্ঞানকে ইসমাতের অন্যতম উৎসমূল হিসেবে অভিহিত করেছেন।[১৭] আল্লামা তাবাতাবায়ি উল্লেখ করেছেন: মাসুমগণ খোদাপ্রদত্ত বিশেষ জ্ঞানের অধিকারী এবং তাদের ইচ্ছাশক্তি অনেক সুদৃঢ় ও মজবুত। এ কারণে তারা কখনও গুনাহের নিকটবর্তী হন না।[১৮] তাদের এ জ্ঞান প্রচলিত জ্ঞানের সাথে তুলনাযোগ্য নয়, যা অন্য কোন ব্যক্তির নিকট থেকে অর্জিত হয় (বরং তা সরাসরি খোদাপ্রদত্ত) এবং তা ইন্দ্রীয় চাহিদা ও অন্য কোন বৈষয়িক বস্তুর মাধ্যমে পরাস্ত করা সম্ভব নয়।[১৯]
ইলম ও ইচ্ছাশক্তি
বিশিষ্ট মনীষী মুহাম্মাদ তাকী মেসবাহ ইয়াজদি বলেছেন: মাসুমগণের ইসমাতের রহস্যের দু’টি নিয়ামক রয়েছে; তম্মধ্যে একটি হচ্ছে হাকিকাত বা বাস্তবতা ও পূর্ণতা সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞান এবং অপরটি হচ্ছে এগুলোতে পৌছাতে অদম্য ইচ্ছাশক্তি। কেননা সাধারণ মানুষ অজ্ঞতার কারণে চুড়ান্ত হকিকাতে (বাস্তবতায়) পৌঁছাতে পারে না এবং কল্পিত হকিকাতকে চুড়ান্ত হকিকাত হিসেবে ধারণা করে। অপরদিকে, পরিপূর্ণ ইচ্ছাশক্তির অভাবে চুড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে না।[২০] তিনি আরও উল্লেখ করেছেন যে, মাসুম যে বিশেষ জ্ঞান ও ইচ্ছাশক্তির অধিকারী; তিনি কখনও গুনাহে লিপ্ত হবে না এবং সর্বাবস্থায় আল্লাহর অনুগত থাকবে।[২১]
ইসমাত ও এখতেয়ার (ইচ্ছাশক্তি)
বিশিষ্ট মারজায়ে তাকলীদ আয়াতুল্লাহ সাইয়েদ মুহাম্মাদ হুসাইন ফাযলুল্লাহ উল্লেখ করেছেন যে, ইসমাত একটি বাধ্যগত বিষয়।[২২] কিন্তু সমকালীন সময়ের বিশিষ্ট কালামশাস্ত্রবিদ আলী রাব্বানী গুলপাইগানি বলেছেন যে, ইসমাতের সাথে এখতেয়ারের সামঞ্জস্যতা রয়েছে এবং মাসুম ব্যক্তি গুনাহ সম্পন্নের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ স্বাধীন।[২৩] আকলের দৃষ্টিতে ইসমাতের কারণে মাসুম ব্যক্তি যদি আল্লাহর আনুগত্য কিংবা গুনাহ সম্পাদনে বাধ্য হয়, তাহলে এক্ষেত্রে সে কোন ধরনের প্রতিদানের হকদার হবে না। এমতাবস্থায় আদেশ ও নিষেধ এবং শাস্তি ও পুরুস্কারের কোন যৌক্তিকতা নেই। [২৪]
বিশিষ্ট দার্শনিক ও মুফাসসির আয়াতুল্লাহ জাওয়াদি আমুলী এ সম্পর্কে বলেছেন: বাধ্যগত ইসমাতের সাথে মানব জাতির উপর মাসুমের হুজ্জাত হওয়া এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে তাকে অনুসরণের আদেশের সাথে বৈপরিত্য রয়েছে। যদি মাসুমের জন্য গুনাহ সম্পাদন অসম্ভব হয় তাহলে তার জন্য আনুগত্যও অবশ্যম্ভবী হবে। এমতাবস্থায় আনুগত্যের পুরুস্কার ও শাস্তি কিংবা ভীতিপ্রদর্শন ও বাশারাতের কোন যৌক্তিকতা থাকবে না।[২৫]
আল্লামা তাবাতাবায়ি (রহ.) ইসমাতের সাথে এখতেয়ারের সম্পৃক্ততা প্রসঙ্গে বলেছেন: ইসমাতের উৎসমূল হচ্ছে বিশেষ ইলম বা জ্ঞান যা মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে মাসুমগণের প্রতি দান করা হয়েছে। ইলম নিজেই এখতেয়ারের অংশবিশেষ। কাজেই মাসুমগণ যে কোন আমলের ভাল ও মন্দ দিক সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান থাকার কারণে তারা কখনও গুনাহের নিকটবর্তী হন না। যেমনভাবে কোন ব্যক্তি বিষের ধ্বংসাত্মক প্রভাব সম্পর্কে অবহিত থাকার কারণে কখনও বিষ ভক্ষণ করে না।[২৬]
মুহাম্মাদ তাকী মেসবাহ ইয়াজদি ইসমাতকে শুধুমাত্র জ্ঞানগত সহজাত বৈশিষ্ট্য মনে করেন না; বরং তিনি এটাকে জ্ঞানগত ও ব্যবহারিক বৈশিষ্ট্য হিসেবে অভিহিত করেছেন। যা মাসুমের এখতিয়ার অনুযায়ী আমাল এবং খোদাপ্রদত্ত বিশেষ জ্ঞানের মাধ্যমে হাসিল হয়েছে।[২৭] তিনি তার এ দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাখ্যায় উল্লেখ করেছেন: যে কেউ তার বৈশিষ্ট্যাবলি এবং আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ নিয়ে এ পৃথিবীতে আগমণ করেছেন, সেগুলোর বাস্তবায়নের দায়িত্বও তার উপর বর্তাবে। যে ইলম মাসুমগণের ইসমাতের ভূমিকা হিসেবে বিবেচিত, সেটাও আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ; কিন্তু তা বাধ্যগতভাবে কারও উপর চাপিয়ে দেয়া হয়নি। ফলশ্রুতিতে উক্ত বৈশিষ্ট্যাবলির বাস্তবায়ন এবং তদানুযায়ী আলম সম্পাদন পুরোপুরি মাসুমের ইচ্ছা ও চেষ্টার উপর নির্ভরশীল।[২৮]
নবিগণের ইসমাত
- মূল নিবন্ধ: নবিদের নিষ্পাপতা
ওহীর ক্ষেত্রে নবিগণের ইসমাতের বিষয়টি সমস্ত আসমানি ধর্মের সম্মিলিত আকিদার অংশবিশেষ।[২৯] যদিও এক্ষেত্রে সংজ্ঞা ও ক্রমধারা সম্পর্কে ধর্মসমূহের অনুসারী ও মনীষীদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। মুসলিম কালামশাস্ত্রবিদগণ ইসমাতের ক্ষেত্রে তিনটি বিষয়ে ঐকমত্যপোষণ করেন। প্রথম: নবুয়াত প্রাপ্তির পূর্বে ও পরে শিরক ও কুফরের ক্ষেত্রে নবিগণের ইসমাত; দ্বিতীয়: ওহী গ্রহণ ও প্রচারের ক্ষেত্রে নবিগণের ইসমাত এবং তৃতীয়: নবুয়ত লাভের পর ইচ্ছাকৃত গুনাহের ক্ষেত্রে নবিগণের ইসমাত। কিন্তু তিনটি বিষয়ে তাদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে; প্রথম: নবুয়ত লাভের পর ভুলবশত গুনাহের ক্ষেত্রে নবিগণের ইসমাত, দ্বিতীয়: নবুয়ত লাভের পূর্বে ইচ্ছাকৃত ও ভুলবশত গুনাহের ক্ষেত্রে নবিগণের ইসমাত এবং তৃতীয়: ব্যক্তি ও সামাজিক জীবনে নবিগণের ইসমাত।
শিয়া ইমামিয়া আকিদায় বিশ্বাসীরা সুদৃঢ় আকিদাপোষণ করেন যে, নবিগণ উপরোক্ত বিষয়াদি ও পর্যায়সমূহে ইসমাতের অধিকারী। এমনকি নবিগণ যে সব কাজের কারণে মানুষ তাদের থেকে দূরে সরে যেতে পারে সে সব থেকেও মুক্ত।[৩০] নবুয়াতের প্রতি মানুষের আস্থা অর্জনের বিষয়টি নবিগণের ইসমাতের ক্ষেত্রে বুদ্ধিবৃত্তিক দলিল হিসেবে গণ্য।[৩১] অনুরূপভাবে পবিত্র কুরআনের কিছু আয়াত[৩২] ও রেওয়ায়েতও[৩৩] এক্ষেত্রে সাক্ষ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।
নবিগণের ইসমাত অস্বিকারকারীরা দু’ধরনের আয়াত যথা: যে আয়াতগুলো সমস্ত নবিগণের ইসমাতের সাথে অসঙ্গতি রয়েছে এবং যে আয়াতগুলো কিছু সংখ্যক নবিদের ইসমাতের সাথে অসঙ্গতি রয়েছে; সেগুলোকে দলিল হিসেবে উপস্থাপন করে।[৩৪] কিন্তু তাদের এমন আপত্তির জবাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, এ আয়াতগুলো হচ্ছে মুতাশাবিহাত আয়াত; অর্থাৎ যে আয়াতগুলো তাভিল ও তাফসীরের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা জরুরী।[৩৫] আর, সেগুলোর কোনটিই অকাট্যভাবে নবিগণের ইসমাতের সাথে অসঙ্গতি প্রমাণ করে না।
ইমামগণের ইসমাত
- মূল নিবন্ধ: ইমামদের নিষ্পাপতা ও হযরত ফাতিমার নিষ্পাপতা
শিয়া ইশনা আশারি মাযহাবের দৃষ্টিতে ইমামগণের ইসমাত হচ্ছে তাঁদের ইমামতের অন্যতম শর্ত এবং এ মাযহাবের মৌলিক আকিদার অংশবিশেষ।[৩৬] আল্লামা মাজলিসি উল্লেখ করেছেন: ইমামিয়া শিয়ারা ঐকমত্যপোষণ করেন যে, ইমামগণ সব ধরনের কবিরা ও সগিরা গুনাহ (চাই তা ইচ্ছাকৃত কিংবা ভুলবশত হোক না কেন) থেকে মুক্ত এবং তারা যে কোন ভুল-ত্রুটির ঊর্ধ্বে।[৩৭] পক্ষান্তরে আহলে সুন্নত ইসমাতকে ইমামগণের শর্ত মনে করেন না।[৩৮]
কেননা তাদের ইজমা হচ্ছে প্রথম তিন খলিফা ইমাম ছিলেন; কিন্তু তারা মাসুম নন। ওহাবিরাও ইমামগণের ইসমাত এবং শিয়া মাযহাবের ইমামগণকে স্বীকার করেন না এবং তারা ইসমাতকে কেবল নবিগণের মধ্যে সীমাবদ্ধ মনে করেন।[৩৯]
আয়াতুল্লাহ জাফর সুবহানি উল্লেখ করেছেন: যে সব দলিল-প্রমাণ নবিগণের ইসমাতের ক্ষেত্রে বর্ণিত হয়েছে যেমন: বে’সাতের উদ্দেশ্য, মানুষের আস্থা অর্জন প্রভৃতি, সেগুলোর প্রত্যেকটি ইমামগণের ইসমাতের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।[৪০] শিয়া মাযহাবের কালামশাস্ত্রবিদরা ইমামগণের ইসমাত সুপ্রমাণের ক্ষেত্রে অনেক আয়াত ও সহীহ রেওয়ায়েতসমূহ তুলে ধরেছেন, যেমন: হযরত ইবরাহীমের পরিক্ষা বিষয়ক আয়াত,[৪১] আয়াতে তাতহীর{৫১}, আয়াতে সাদেকীন,[৪২]হাদীসে সাকালাঈন,[৪৩] হাদীসে সাফিনাহ[৪৪] প্রভৃতি।
শিয়া মাযহাবের আকিদা অনুযায়ী নবী নন্দিনী হযরত ফাতেমা যাহরা (আ.) ইসমাতের অধিকারী;[৪৫] তাঁর ইসমাতের ক্ষেত্রে দলিল হচ্ছে আয়াতে তাতহীর এবং হাদীসে বাদ্বআহ্’।[৪৬]
ফেরেশতাদের ইসমাত
পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে,
যার উপর কঠোর প্রকৃতি ও রুক্ষ স্বভাববিশিষ্ট ফেরেশতারা (নিয়োজিত) আছে; আল্লাহ তাদের প্রতি যা আদেশ করেন তা তারা অমান্য করে না এবং যা করতে আদিষ্ট হয় তাই করে। {সূরা তাহরীম, আয়াত নং ৬}
আল্লামা মাজলিসি উল্লেখ করেছেন: শিয়া মাযহাবের অনুসারীরা ঐকমত্যের ভিত্তিতে বিশ্বাস করেন যে, সমস্ত ফেরেশতারা সব ধরনের কবিরা ও সগিরা গুনাহ হতে মুক্ত। অধিকাংশ সুন্নীরাও অনুরূপ আকিদায় বিশ্বাসী।[৪৭] ফেরেশতাদের ইসমাত সম্পর্কে আরও একটি মত রয়েছে; কেউ কেউ ফেরেশতাদের ক্ষেত্রে ইসমাতের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। আবার কেউ কেউ এক্ষেত্রে সমর্থক ও বিরোধীদের দলিল-প্রমাণকে অপর্যাপ্ত মনে করেছেন; তাই এ বিষয়ে নিরব রয়েছেন। কেউ কেউ শুধুমাত্র ওহী বা বার্তাবাহী ফেরেশতাবর্গ এবং বিশেষ নৈকট্যপ্রাপ্ত ফেরেশতাদেরকে মাসুম হিসেবে অভিহিত করেছেন।[৪৮]
ফেরেশতাদের ইসমাতের পক্ষের ব্যক্তিরা উল্লেখ করেছেন: সূরা আম্বিয়ার ২৭নং আয়াত, সূরা তাহরীমের ৬নং আয়াত এবং এ সম্পর্কে অনেক হাদীস ফেরেশতাদের ইসমাতের পক্ষে প্রমাণ বহন করে। উল্লেখ্য মুসলমানদের মধ্যে শুধুমাত্র হাশাভিয়্যাহ সম্প্রদায়ের অনুসারীরা ফেরেশতাদের ইসমাতের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
ফেরেশতাদের ক্ষেত্রে ইসমাতের কোন অর্থ রাখে না এমন আপত্তির জবাবে আয়াতুল্লাহ মাকারেম শিরাজী বলেছেন: যদিও গুনাহের কোন অভিসন্ধি যেমন: ইন্দ্রীয় বাসনা ও ক্রোধ ফেরেশতাদের মধ্যে নেই। কিন্তু তদুপরি তারা স্বীয় কর্মে আংশিক স্বাধীন ও বিরোধীতার ক্ষমতা রাখেন। সুতরাং তারা সক্ষমতা সত্ত্বেও গুনাহ থেকে মুক্ত থাকার অর্থ হচ্ছে তারা মাসুম।[৪৯]
আপত্তি ও জবাব
ইসমাত অস্বীকারকারীদের পক্ষ থেকে কিছু আপত্তি উত্থাপিত হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-
- মানবীয় প্রকৃতির সাথে ইসমাতের অসঙ্গতি
মিশরীয় খ্যাতনামা লেখক আহমাদ আমীন উল্লেখ করেছেন যে, মানবীয় প্রকৃতির সাথে ইসমাতের অসঙ্গতি রয়েছে। কেননা মানুষের মধ্যে নানাবিধ ইন্দ্রীয় চাহিদা ও জৈবিক কামনা-বাসনা রয়েছে। মানুষের মধ্যে যেমন ভাল বা উত্তমের প্রতি আগ্রহ রয়েছে তেমন মন্দ বা অধমের প্রতিও চাহিদা বিদ্যমান। যদি এ সব চাহিদা ও কামনা-বাসনা তার থেকে কেড়ে নেয়া হয়, তাহলে তার মধ্য থেকে মানবীয় সত্তাও হারিয়ে যাবে। এ কারণে কোন মানুষই গুনাহ ও ভুল-ভ্রান্তি থেকে মুক্ত নয়; এমনকি নবিগণও।[৫০]
আয়াতুল্লাহ জাওয়াদ আমুলি এহেন আপত্তির জবাবে বলেছেন: মানুষের অস্তিত্বের সবচেয়ে মূল্যবান সত্তা হচ্ছে তার আত্মা। বলা হয় যে, মানুষের আত্মাকে এমনভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে; যাতে তা ইসমাতের চুড়ান্তে উন্নীত হতে পারে। কেননা মানুষের আত্মা যখন উত্তরণের পথে অগ্রসর হয়; তখন ভুল-ভ্রান্তি, ত্রুটি-বিচ্যুতি, অজ্ঞতা ও উদাসীনতা হতে নিজেকে মুক্ত রাখতে সক্ষম হয়। যদি কারও আত্মা প্রকৃত আকল, আধ্যাত্মিকতা এবং সত্য ও ন্যায়ের পথে অটল থাকে; তবে প্রকৃত সত্য ও বাস্তবতা তার নিকট প্রকাশিত হবে এবং তার মধ্যে কোন ধরনের সন্দেহ ও গাফিলতির অস্তিত্ব থাকবে না। সুতরাং এমন উত্তম বৈশিষ্ট্যের ব্যক্তি যখন পার্থিব বিষয়াদি থেকে মুক্ত থেকে বাস্তবতা ও আধ্যাত্মিকতার চুড়ান্ত শিখরে উন্নীত হবে; তখন সে নিজেকে ভুল-ভ্রান্তি ও গুনাহ থেকে নিরাপদ রাখতে সক্ষম হবে।[৫১]
- ইসমাতের আকিদার উৎসমূল
একশ্রেণীর লোকদের মতে ইসমাতের আকিদা ইসলামের শুরুতে বিদ্যমান ছিল না; বরং এ আকিদা আহলে কিতাব, প্রাচীন পারস্য, সুফিবাদ কিংবা যারতুশত ধর্মে তথা অগ্নিউপাসকদের মতাদর্শ থেকে ইসলামে প্রবেশ করেছে।[৫২] এমন ধারণার অপনোদনের নিমিত্তে বর্ণিত হয়েছে, ইসলামের সুচনালগ্ন থেকেই নবিগণের ইসমাতের আকিদা মুসলমানদের মধ্যে প্রচলন ছিল এবং এ আকিদার উৎস হচ্ছে আল কুরআন ও স্বয়ং রাসূলুল্লাহ (সা.)।[৫৩] আহলে কিতাব কখনও ইসমাতের আকিদার প্রবর্তক হতে পারে না; কেননা তওরাতে নবিদের প্রতি অনেক জঘন্য গুনাহের অপবাদ আরোপ করা হয়েছে।[৫৪] সুফিবাদের জন্মের পূর্বে ইসমাতের আকিদা শিয়া মুসলমানদের মধ্যে প্রচলিত ছিল। এ কারণে সুফিবাদও এ আকিদার প্রবর্তক নয়।[৫৫] অপরদিকে যদি ধরেই নিই যে, ইসমাতের বিষয়টি ইসলাম ও যারতুশত উভয় ধর্মেই প্রচলিত ছিল, তবুও এটিকে পরস্পর ধর্মের উপর প্রভাব বিস্তারকারী বিষয় হিসেবে মনে করা যাবে না। কেননা যদি এমনটি হয়েও থাকে তবে তার কারণ হচ্ছে সমস্ত আসমানি ধর্মের মূখ্য বিষয়াবলির মধ্যে মিল রয়েছে এবং পরস্পরের মধ্যে সম্পৃক্ততা বিদ্যমান।[৫৬]
- মাসুমগণের কিছু কর্মের সাথে ইসমাতের অসঙ্গতি
- মূল নিবন্ধ মাসুমগণের ইস্তেগফার
কারও কারও ধারণা হচ্ছে ইসমাতের আকিদা হচ্ছে এমনই এক বিষয় যার সাথে নবি ও ইমামগণের কিছু কর্মের মধ্যে সামঞ্জস্যতা রাখে না। তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজেদেরকে দোষী মনে করতেন এবং এ কারণে তারা আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। কাজেই তাদের এমন কাজের সাথে ইসমাতের বৈপরিত্য সৃষ্টি করে।[৫৭]
শিয়া মাযহাবের মনীষীবর্গ উক্ত অমূলক ধারণার অপনোদনে নিম্নের ব্যাখ্যা ও জবাব তুলে ধরেছেন:
১- মাসুমগণ আল্লাহর সর্বোচ্চ মহিমা ও মর্যাদা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিলেন, এ কারণে তারা বিনয় প্রকাশে আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।[৫৮]
২- মাসুমগণ যে সব কারণে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন, সেগুলো গুনাহ হিসেবে গণ্য নয়। কিন্তু তারা যেহেতু পবিত্র জীবনের অধিকারী ছিলেন, সেহেতু এমন ক্ষুদ্র ভ্রান্তিকেও নিজেদের জন্য অপরাধ হিসেবে মনে করতেন।[৫৯]
৩- মাসুমগণ তাদের আধ্যাত্মিক উৎকর্ষতার কারণে যখনই উচু মাকামে উন্নীত হতেন, তখন বিনয় প্রকাশের নিমিত্তে ক্ষমা প্রার্থনা করতেন।[৬০]
৪- মাসুমগণ মূলত তাদের ভুল-ভ্রান্তির জন্য আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করেননি। বরং, উম্মতের গুনাহ ক্ষমার নিমিত্তে তারা ইস্তেগফার করতেন; যেহেতু তারা শাফায়াতের অধিকারী ছিলেন।[৬১]
৫- মাসুমগণ মানুষকে আল্লাহর দরবারে তওবা ও ইস্তেগফারের পদ্ধতি শিক্ষা দেয়ার উদ্দেশ্যে এমন আমল সম্পাদন করতেন।[৬২]
গ্রন্থ পরিচিতি
ইসমাত সম্পর্কে অনেক মূল্যবান ও জ্ঞানগর্ভ গ্রন্থ রচিত হয়েছে। উপরোক্ত বিষয়াবলির অধিকাংশ আল্লামা সাইয়েদ আলী হুসাইনি মিলানী প্রণীত গ্রন্থ ইসমাত আয মানজারে ফারিকাঈন থেকে গৃহীত। এছাড়া এ সম্পর্কে রচিত আরও উল্লেখযোগ্য কিতাব হচ্ছে:
১- আত্ তানবিহহুল মা’লুম; প্রণেতা: শেইখ হুররে আমুলী
২- ইসমাত আয মানজারে ফারিকাঈন; প্রণেতা: আল্লামা সাইয়েদ আলী হুসাইনি মিলানী
৩- ইসমাত আয দীদগাহে শিয়া ওয়া আহলে সুন্নাত; প্রণেতা: ফাতিমা মুহাক্কেক
৪- ইসমাত- জুরুরাত ওয়া আসার; প্রণেতা: সাইয়েদ মুসা হাশিমী তুনেকাবানী
৫- মানশা-এ-ইসমাত; প্রণেতা: আব্দুল হুসাইন কাফী।
তথ্যসূত্র
- ↑ হোসাইনী মিলানী, জাওয়াহিরুল কালাম ফি মারিফাতিল ইমামাতি ওয়াল ইমাম, ১৩৮৯ (সৌরবর্ষ), খঃ২, পৃঃ৩৭-৩৮।
- ↑ আল্লামা হিল্লি, কাশফুল মুরাদ, ১৩৮২ (সৌরবর্ষ), পৃঃ১৫৫ ও ১৮৪।
- ↑ তাবাতাবায়ী, আল-মিযান, ১৪১৭ হিঃ, খঃ২, পৃঃ১৩-১৩৪ ও খঃ৫, পৃঃ৭৮-৮০ ও খঃ১১, পৃঃ১৬২-১৬৪ ও মাকারেম শিরাজী, তাফসিরে নমুনা, ১৩৭১ (সৌরবর্ষ), খঃ১৭, পৃঃ২৯৮-৩০৫।
- ↑ হোসাইনী, ইসমাত আয দিদগাহে আহলে কিতাব (ইহুদী ও মাসিহী), অয়ান্দেয়ে রওশান ওয়েবব্লগ।
- ↑ আল্লামা হিল্লি, বাবুল হাদি আশার, ১৩৬৫ (সৌরবর্ষ), পৃঃ৯।
- ↑ তাফতাযানী, শারহুল মাকাসেদ, ১৪০৯, খঃ৪, পৃঃ৩১২-৩১৩।
- ↑ রাব্বানী গুলপায়গানী, ইমামাত দার বিনেশে ইসলামী, ১৩৮৭ (সৌরবর্ষ), পৃঃ২১৫।
- ↑ আল্লামা হিল্লি, বাবুল হাদি আশার, ১৩৬৫ (সৌরবর্ষ), পৃঃ৯ ও সাইয়্যেদ মুর্তুজা, রাসায়িলুশ শারিফ আল-মুর্তুজা, ১৪০৫, খঃ৩, পৃঃ৩২৬।
- ↑ আল্লামা হিল্লি, বাবুল হাদি আশার, ১৩৬৫ (সৌরবর্ষ), পৃঃ৯।
- ↑ জুরজানী, শারহুল মাওয়াকেফ, ১৩২৫ হিঃ,খঃ৮, পৃঃ২৮০ ও তাফতাযানী, শারহুল মাকাসেদ, ১৪০৯, খঃ৪, পৃঃ৩১২-৩১৩।।
- ↑ জুরজানী, শারহুল মাওয়াকেফ, ১৩২৫ হিঃ,খঃ৮, পৃঃ২৮০।
- ↑ জুরজানী, শারহুল মাওয়াকেফ, ১৩২৫ হিঃ,খঃ৮, পৃঃ২৮১ ও তাবাতাবায়ী, আল-মিযান, ১৪১৭ হিঃ, খঃ১১, পৃঃ১৬২ ও জাওয়াদী আমুলী, ওহী ওয়া নবুয়াত দার কুরআন, ১৩৯২ (সৌরবর্ষ), পৃঃ১৯৭।
- ↑ সুবহানী, মানসুরে জাভীদ, ১৩৮৩ (সৌরবর্ষ), খঃ৪, পৃঃ১১২-১৪ ও সুবহানী, আল-ইলাহিয়্যাত, ১৪১২ হিঃ, খঃ৩, পৃঃ১৫৮-১৫৯।
- ↑ সুবহানী, মানসুরে জাভীদ, ১৩৮৩ (সৌরবর্ষ), খঃ৪, পৃঃ২০।
- ↑ শেইখ মুফিদ, তাছহিহুল ইতিকাদাতিল ইমামিয়্যাহ, ১৪১৪ হিঃ, পৃঃ১২৮।
- ↑ আল্লামা হিল্লি, কাশফুল মুরাদ, ১৩৮২ (সৌরবর্ষ), ১৮৬।
- ↑ তাবাতাবায়ী, আল-মিযান, ১৪১৭ হিঃ, খঃ৫, পৃঃ৭৯ ও খঃ১৭, পৃঃ২৯১ ও খঃ১১, পৃঃ১৬২-১৬৩ ও সুবহানী, আল-ইলাহিয়্যাত, ১৪১২ হিঃ, খঃ৪, পৃঃ১৫৯-১৬১।
- ↑ তাবাতাবায়ী, আল-মিযান, ১৪১৭ হিঃ, খঃ১১, পৃঃ১৬৩।
- ↑ তাবাতাবায়ী, আল-মিযান, ১৪১৭ হিঃ, খঃ৫, পৃঃ৭৯।
- ↑ মেসবাহ ইয়াজদি, রাহ ওয়া রাহনামা শেনাসী, ১৩৯৫ (সৌরবর্ষ), পৃঃ৩০২।
- ↑ মেসবাহ ইয়াজদি, রাহ ওয়া রাহনামা শেনাসী, ১৩৯৫ (সৌরবর্ষ), পৃঃ৩০৩-৩০৪।
- ↑ হুসাইন ফাযলুল্লাহ, তাফসির মিন ওয়াহয়িল কুরআন, বৈরুত, ১৪১৯ হিঃ, খঃ৪, পৃঃ১৫৫-১৫৬।
- ↑ রাব্বানী গুলপাইগানি, ইমামাত দার বিনেশে ইসলামী, ১৩৮৭ (সৌরবর্ষ), পৃঃ২১৭।
- ↑ আল্লামা হিল্লি, কাশফুল মুরাদ, ১৩৮২ (সৌরবর্ষ), পৃঃ১৮৬ ও জুরজানী, শারহুল মাওয়াকেফ, ১৩২৫ হিঃ,খঃ৮, পৃঃ২৮১।
- ↑ জাওয়াদী আমুলী, সিরেয়ে পায়াম্বারে আকরাম দার কুরআন, ১৩৮৫ (সৌরবর্ষ), পৃঃ২৪।
- ↑ তাবাতাবায়ী, আল-মিযান, ১৪১৭ হিঃ, খঃ১১, পৃঃ১৬২-১৬৩।
- ↑ মিসবাহ ইয়াজদী, দার ফারতুয়ে ভেলায়াত, ১৩৮৩ (সৌরবর্ষ), পৃঃ৫৩-৬৩।
- ↑ মিসবাহ ইয়াজদী, দার ফারতুয়ে ভেলায়াত, ১৩৮৩ (সৌরবর্ষ), পৃঃ৫৭-৫৮।
- ↑ আনওয়ারি, নূরে ইসমাত বার সিমায়ে নবুওয়াত, ১৩৯৭ (ফার্সি সন), পৃঃ৫২।
- ↑ রাব্বানী গুলপায়গানী, কালামে তাতবিক্বী, ১৩৮৫ (সৌরবর্ষ), পৃঃ৯৪-৯৮।
- ↑ আল্লামা হিল্লি, কাশফুল মুরাদ, ১৩৮২ (সৌরবর্ষ), পৃঃ১৫৫।
- ↑ সূরা আল-হাশর:৭
- ↑ শেইখ কুলাইনী, আল-কাফি, ১৪০৭ হিঃ, খঃ১, পৃঃ ২০২ ও ২০৩ ও সাদুক, উয়ুনে আখবারুর রেযা, ১৩৭৮হিঃ, খঃ১, পৃঃ১৯২-২০৪।
- ↑ সুবহানী, মানসুরে জাভীদ, ১৩৮৩ (সৌরবর্ষ), খঃ৫, পৃঃ৫১-৫২ ও জাওয়াদী আমুলী, ওহী ওয়া নবুয়াত দার কুরআন, ১৩৯২ (সৌরবর্ষ), পৃঃ২৬৪-২৮৬।
- ↑ হোসাইনী মিলানী, ইসমাত আয মানযারে ফারিকাইন, ১৩৯৪ (সৌরবর্ষ), পৃঃ১০২-১০৩।
- ↑ আল্লামা হিল্লি, কাশফুল মুরাদ, ১৩৮২ (সৌরবর্ষ), পৃঃ১৮৪ ও সুবহানী, আল-ইলাহিয়্যাত, ১৪১২ হিঃ, খঃ৪, পৃঃ১১৬।
- ↑ আল্লামা মাজলিসি, বিহারুল আনওয়ার, ১৪০৩হিঃ, খঃ২৫, পৃঃ২০৯ ও ৩৫০-৩৫১।
- ↑ জুরজানী, শারহুল মাওয়াকেফ, ১৩২৫ হিঃ,খঃ৮, পৃঃ৩৫১ ও তাফতাযানী, শারহুল মাকাসেদ, ১৪০৯, খঃ৫, পৃঃ২৪৯।
- ↑ ইবনে তাইমিয়া, মিনহাজুস সানাতিন নাবাবিয়্যাহ ফি নাকযি কালামিশ শিয়াতিল কাদারিয়্যাহ, ১৪০৬ হি./১৯৮৬ খ্রি. খঃ২, পৃঃ৪২৯ ও খঃ৩, পৃঃ৩৮১।
- ↑ সুবহানী, মানসুরে জাভীদ, ১৩৮৩ (সৌরবর্ষ), খঃ৪, পৃঃ২৫১।
- ↑ উলিল আমর বিষয়ক আয়াত বাহরানী, মুনারুল হুদা ফি আন-নাসরি আলা ইমামতিল আইম্মাতি আল-ইসনা অশার, ১৪০৫ হিঃ, পৃঃ১১৩-১১৪।
- ↑ আল্লামা হিল্লি, কাশফুল মুরাদ, ১৩৮২ (সৌরবর্ষ), পৃঃ১৯৬ ও রাব্বানী গুলপাইগানি, ইমামাত দার বিনেশে ইসলামী, ১৩৮৭ (সৌরবর্ষ), পৃঃ২৭৪-২৮০।
- ↑ মুফিদ, আল-মাসয়িলুল জারুদিয়্যাহ, ১৪১৩ হিঃ, পৃঃ৪২ ও বাহরানী, মানারুল হুদা, ১৪০৫ হিঃ, পৃঃ৬৭১।
- ↑ মীর হামিদ হোসাইন, আবাকাতুল আনওয়ার, খঃ২২৩, পৃঃ৬৫৫-৬৫৬।
- ↑ সাইয়্যেদ মুর্তুজা, আশ-শাফি ফিল ইমামাতি, ১৪১০ হিঃ, খঃ৪, পৃঃ৯৫।
- ↑ সাইয়্যেদ মুর্তুজা, আশ-শাফি ফিল ইমামাতি, ১৪১০ হিঃ, খঃ৪, পৃঃ৯৫।
- ↑ আল্লামা মাজলিসি, বিহারুল আনওয়ার, ১৪০৩হিঃ, খঃ১১, পৃঃ১২৪।
- ↑ মুহাক্কেক্ব, ইসমাত আয দিদগাহে শিয়া ও আহলে তাসান্নুন, ১৩৯১ (সৌরবর্ষ), পৃঃ১৩০-১৩২।
- ↑ আয়াতুল্লাহ মাকারেম শিরাজী, পায়ামে ইমাম আমিরুল মুমিনিন, ১৩৮৬ (সৌরবর্ষ), খঃ১, পৃঃ১৬৭-১৬৮।
- ↑ আমিন, দোহা আল-ইসলাম, ২০০৩ ঈসায়ী, খঃ৩, পৃঃ২২৯-২৩০।
- ↑ জাওয়াদী আমুলী, ওহী ওয়া নবুয়াত দার কুরআন, ১৩৯২ (সৌরবর্ষ), পৃঃ২০১-২০৩।
- ↑ শারিফী ও ইউসুফিয়ান, পাজুহেশী দার ইসমাতে মাসুমান, ১৩৮৮ (সৌরবর্ষ), পৃঃ৭৯-৮৫।
- ↑ শারিফী ও ইউসুফিয়ান, পাজুহেশী দার ইসমাতে মাসুমান, ১৩৮৮ (সৌরবর্ষ), পৃঃ৮০-৮২।
- ↑ শারিফী ও ইউসুফিয়ান, পাজুহেশী দার ইসমাতে মাসুমান, ১৩৮৮ (সৌরবর্ষ), পৃঃ৮০-৮১।
- ↑ শারিফী ও ইউসুফিয়ান, পাজুহেশী দার ইসমাতে মাসুমান, ১৩৮৮ (সৌরবর্ষ), পৃঃ৮৩।
- ↑ শারিফী ও ইউসুফিয়ান, পাজুহেশী দার ইসমাতে মাসুমান, ১৩৮৮ (সৌরবর্ষ), পৃঃ৮৬।
- ↑ ফখরুদ্দিন রাযি, ইসমাতুল আম্বিয়া, ১৪০৯ হিঃ, পৃঃ১৩৬ ও আলুসী, রুহুল মায়ানি ফি তাফসিরিল কুরআনিল আযিম, ১৪১৪হিঃ, খঃ১২, পৃঃ২৬ ও গাফ্ফারী, উসুলু মাযহাবি আশ-শিয়াতি আল-ইমামাতি, ১৪৩১ হিঃ, খঃ২, পৃঃ৭৯৪-৭৯৬ ও দেহলাভী, তুহফায়ে ইসনা আশারিয়্যাহ, মাকতাবাতুল হাকিকাতি, পৃঃ৪৬৩।
- ↑ আল্লামা মাজলিসি, বিহারুল আনওয়ার, ১৪০৩হিঃ, খঃ২৫, পৃঃ২০৯ ও ২১০ ও জাওয়াদী আমুলী, তাফসিরে মাউযুয়িয়ে কুরআন, ১৩৭৮ (সৌরবর্ষ), খঃ৩, পৃঃ২৬৭ ও খোমিনী, জিহাদে আকবার, ১৩৭৮ (সৌরবর্ষ), পৃঃ৫৭।
- ↑ ইরবিলী, কাশফুল গুম্মাহ, ১৩৮১ হিঃ, খকঃ২, পৃৃঃ২৫৩-২৫৫ ও খাজা নাসিরুদ্দিন তুসী, আউসাফুল আশরাফ, ১৩৭৩ (সৌরবর্ষ), পৃঃ২৬ ও আল্লামা মাজলিসি, বিহারুল আনওয়ার, ১৪০৩হিঃ, খঃ২৫, পৃঃ২১০ ও তাবাতাবায়ী, আল-মিযান, ১৪১৭ হিঃ, খঃ২, পৃঃ৩৬৭।
- ↑ আল্লামা মাজলিসি, বিহারুল আনওয়ার, ১৪০৩হিঃ, খঃ২৫, পৃঃ২১০ ও খোমিনী, শারহে চেহেল হাদিস, ১৩৮০ (সৌরবর্ষ), পৃঃ৩৪৩।
- ↑ শেইখ তূসী, আত-তিবয়ান, দারু ইহয়ায়িত্ তুরাসিল আরাবি, খঃ৯, পৃঃ৮৭।
- ↑ আল্লামা মাজলিসি, মিরাআতুল উকুল, ১৪০৪ হিঃ, খঃ১১, পৃঃ৩০৮।
গ্রন্থপঞ্জি
- ইবনে তাইমিয়া, আহমাদ বিন আব্দুল হালিম, মিনহাজুস সুন্নাতিন নাবাবিয়্যাহ ফি নাকযি কালামিশ শিয়াতিল কাদারিয়্যাহ, তাহকিক মুহাম্মাদ রিশাদ সালিম, জামেয়াতুল ইমাম মুহাম্মাদ বিন সাউদুল ইসলামিয়্যাহ, প্রথম সংস্করণ, ১৪০৬ হি./১৯৮৬ খ্রি.।
- মুহাম্মাদ আব্দুল ওয়াহাব, মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহাব বিন সুলাইমান, রিসালাতুন ফির রাদ্দি আলার রাফিদ্বাহ, তাহকিক নাসির বিন সাআদুর রশিদ, রিয়াদ্ব, জামেয়াতুল ইমাম মুহাম্মাদ বিন সাউদুল ইসলামিয়্যাহ, তারিখ অজ্ঞাত।
- আমিন, আহমাদ, দ্বুহাল ইসলাম, কায়রো, মাক্তাবাতুল আসরা, ২০০৩ খ্রি.।
- আনওয়ারি, জা’ফার, নূরে ইসমাত বার সিমায়ে নবুওয়াত; পাসোখ বে শোবহাতে কুরআনি, কোম, মুআসসেসেয়ে আমুযেশি ওয়া পেঝুহেশিয়ে ইমাম খোমেনী, প্রথম সংস্করণ, ১৩৯৭ ফার্সি সন।
- বাহরানী, শেইখ আলী, মুনারুল হুদা ফি আন-নাসরি আলা ইমামতিল আইম্মাতি আল-ইসনা অশার, তাহকিক আব্দুয যাহরা খাতিব, বৈরুত, দারুল মন্তাযার, ১৪০৫ হিঃ।
- তাফতাযানী, সাঅদুুদ্দিন, শারহুল মাকাসিদ, তাহকিক ও তালিক আব্দুর রহমান উমাইরাহ, কোম, শারিফ রাযি, প্রথম প্রকাশ, ১৪০৯ হিঃ।
- জুরজানী, মির সাইয়্যেদ শারিফ, শারহুল মাওয়াকেফ, তাহকিক বাদরুদ্দিন নুসানী, কোম, শারিফ রাযি, প্রথম প্রকাশ, ১৩২৫ হিঃ।
- জাওয়াদী আমুলী, আব্দুল্লাহ, তাফসিরে মাউযুয়ী, কোম, নাশরে ইসরা, ১৩৭৬ (সৌরবর্ষ)।
- জাওয়াদী আমুলী, আব্দুল্লাহ, ওহী ওয়া নবুয়াত দার কুরআন, তাহকিক ও তানযিম আলী যামানী, কোম, নাশরে ইসরা, ষষ্ঠ প্রকাশ, ১৩৯২ (সৌরবর্ষ)।
- জাওয়াদী আমুলী, আব্দুল্লাহ, সিরেয়ে পায়াম্বারে আকরাম দার কুরআন, মারকাযে নাশরে ইসরা, ১৩৮৫ (সৌরবর্ষ)।
- হোসাইনী মিলানী, সাইয়্যেদ আলী, ইসমাত আয মানযারে ফারিকাইন, কোম, মারকায আল-হাকায়েক আল-ইসলামিয়্যাহ, ১৩৯৪ (সৌরবর্ষ)।
- খোমিনী, রুহুল্লাহ, জিহাদে আকবার, তেহরান, মুয়াসসেসেয়ে তানযিম ও নাশরে আসারে ইমাম খোমিনী, ১৩৭৮ (সৌরবর্ষ)।
- খোমিনী, রুহুল্লাহ, শারহে চেহেল হাদিস, তেহরান, মুয়াসসেসেয়ে তানযিম ও নাশরে আসারে ইমাম খোমিনী, ১৩৮০ (সৌরবর্ষ)।
- খোমিনী, রুহুল্লাহ, সহিফায়ে ইমাম, তেহরান, মুয়াসসেসেয়ে তানযিম ও নাশরে আসারে ইমাম খোমিনী, ১৩৮৫ (সৌরবর্ষ)।
- খাজা নাসিরুদ্দিন তুসী, মুহাম্মাদ বিন মুহাম্মাদ, আউসাফুল আশরাফ, তেহরান, ভেযারাতে ফারহাঙ্গ ওয়া ইরশাদে ইসলামীয়ে সাজমানে চপ ও ইন্তেশার, ১৩৭৩ (সৌরবর্ষ)।
- দেহলাভী, আব্দুল আযীয, তুহফায়ে ইসনা আশারা, ইস্তাম্বুল, মাক্তাবাতুল হাকিকাতি, (বিঃতাঃ)।
- রাব্বানী গুলপায়গানী, আলী, ইমামাত দার বিনেশে ইসলামী, কোম, বুস্তানে কিতাব, দ্বিতীয় প্রকাশ, ১৩৮৭ (সৌরবর্ষ)।
- রাব্বানী গুলপায়গানী, আলী, কালামে তাতবিক্বী, কোম, ইন্তেশারাতে মারকাযে জাহানীয়ে উলুমে ইসলামী, ১৩৮৫ (সৌরবর্ষ)।