ইমাম সাদিক (আ.)-এর মাতা উম্মু ফারওয়া
পুরোনাম | ফাতেমা বিনতে কাসিম ইবনে আবু বকর |
---|---|
উপাধি/উপনাম | উম্মু ফারওয়া • উম্মু কাসিম |
খ্যাতিমান আত্মীয় | ইমাম বাকের (স্বামী) • ইমাম সাদিক (সন্তান) |
অবদান | মাসূম ইমাম হতে হাদিস বর্ণনাকারী |
উম্মু ফারওয়া (আরবি: أم فروة) হচ্ছেন ইমাম বাকের (আ.)-এর সহধর্মিনী এবং ইমাম সাদিক (আ.)-এর মাতা। তিনি হিজাযের অন্যতম প্রসিদ্ধ ফকিহ কাসিম ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে আবু বকর এবং আসমা বিনতে আব্দুর রহমান ইবনে আবু বকরের কন্যা,[১] যিনি দুই দিক থেকেই আবু বকরের বংশানুক্রমের। এই সম্পর্কের কারণেই «وَلَدَنی ابوبکر مَرَّتین» (অর্থাৎ আবু বকর আমাকে দুইবার দুনিয়াতে এনেছেন) বাক্যটি ইমাম সাদিক (আ.)-এর প্রতি আরোপিত হয়েছে।[২]
উম্মু ফারওয়া ছিলেন হাদিস বর্ণনাকারী। তিনি ইমাম যাইনুল আবেদিন (আ.)[৩] এবং ইমাম সাদিক (আ.)[৪] হতে রেওয়ায়েত বর্ণনা করেছেন। বিশিষ্ট শিয়া রিজালশাস্ত্রবিদ মামাকানি তাকে সিকা জ্ঞান করেছেন।[৫] এছাড়াও ইমাম সাদিক (আ.) তার থেকে একটি রেওয়ায়েত বর্ণনা করেছেন, যে রেওয়ায়েত অনুসারে, ইমাম বাকের (আ.) প্রতিটি দিবা-রাত্রে শিয়াদের গুনাহ মাফের জন্য হাজার বার দোয়া করতেন, কেননা তিনি মনে করতেন আহলে বাইত সওয়াব সম্পর্কিত জ্ঞানের মাধ্যমে ধৈর্য ধারণ করেন কিন্তু শিয়ারা এই জ্ঞান ব্যতিরেকেই ধৈর্য ধারণ করেন।[৬] হিজরি চতুর্থ শতাব্দীর বিশিষ্ট ঐতিহাসিক মাসউদি তাকে তার সময়ের সবচেয়ে তাকওয়াবান নারী হিসেবে বিবেচনা করেছেন।[৭]
উম্মু ফারওয়া বাকী কবরস্থানে শায়িত রয়েছেন[৮] এবং শিয়াদের নিকট একটি সু-উচ্চ মর্যাদার অধিকারী, যেমনভাবে ইমাম সাদিক (আ.)-কে «ابنالمکرمه» (মহান নারীর সন্তান) নামে ডাকা হতো।[৯]
ইমাম সাদিক (আ.)-এর মাতার নাম ফাতেমা অথবা কুরাইবা এবং উপনাম উম্মু ফারওয়া ও উম্মু কাসিম।[১০] উম্মু ফারওয়ার সাঈদা নামে এক কানিয তথা দাসী ছিল, যিনি তার ফযিলত ও ইবাদতের দিক থেকে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন।[১১]
তথ্যসূত্র
- ↑ কুলাইনি, আল-কাফি, ১৩৮৮ ফার্সি সন, খণ্ড ১, পৃ. ৩৯৩।
- ↑ ইরবিলি, কাশফুল গুম্মাহ, ১৩৮১ হি., খণ্ড ২, পৃ. ১৬০।
- ↑ মাসউদি, ইসবাতুল ওয়াসিয়্যাহ, মাক্তাবাতু রাযাভিয়্যাহ, পৃ. ১৫২।
- ↑ বারকি, রিজাল, ১৩৪২ ফার্সি সন, পৃ. ৬২।
- ↑ মামাকানি, তানকীহুল মাকাল, ১৩৫২ হি., খণ্ড ৩, পৃ. ৭৩।
- ↑ কুলাইনি, কাফি, ১৩৮৮ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৭২; মাসউদি, ইসবাতুল ওয়াসিয়্যাহ, মাক্তাবাতু রাযাভিয়্যাহ, পৃ. ১৫৩।
- ↑ মাসউদি, ইসবাতুল ওয়াসিয়্যাহ, মাক্তাবাতু রাযাভিয়্যাহ, পৃ. ১৫২।
- ↑ কুলাইনি, আল-কাফি, ১৩৮৮ ফার্সি সন, খণ্ড ১, পৃ. ৪৭২।
- ↑ রিজালুল কাশশি, ১৩৪৮ ফার্সি সন, পৃ. ২১২; কুম্মি, আনওয়ারুল বাহাইয়্যাহ, ১৩৮০ ফার্সি সন, পৃ. ২২৯।
- ↑ কুলাইনি, আল-কাফি, ১৩৮৮ ফার্সি সন, খণ্ড ১, পৃ. ৪৭২।
- ↑ কুম্মি, আনওয়ারুল বাহাইয়্যাহ, ১৩৮০ ফার্সি সন, পৃ. ২৩০ ফুটনোট।
গ্রন্থপঞ্জি
- ইরবিলি, আলী ইবনে ঈসা, কাশফুল গুম্মাহ, তাবরীয, মাকতাবাতু বানি হাশেমী, ১৩৮১ হি.।
- বারকি, আহমাদ ইবনে মুহাম্মাদ, রিজালে বারকি, নোসখেয়ে খাত্তি, ৬৯৫৫/১৮ নম্বর, কিতাব খানেয়ে মারকাযিয়ে চেহেলো নোহ দানেশগাহে তেহরান, ইন্তেশারাতের দানেশগাহে তেহরান, ৮৩৫ নম্বর, হামরাহে রিজাল ইবনে দাউদ, ১৩৪২ ফার্সি সন।
- কুম্মি, শেইখ আব্বাস, আনোয়ারুল বাহাইয়্যাহ ফি তাওয়ারিখিল হুজাজিল ইলাহিয়্যাহ, তরজমা: মুহাম্মাদ মুহাম্মাদি এশতাহারদী, কোম, নাসের, তৃতীয় সংস্করণ, ১৩৮০ হি.।
- কাশশি, মুহাম্মাদ ইবনে ওমর, রিজালুল কাশশি (ইখতিয়ারু মা’রিফাতির রিজাল), মাশহাদ, দানেশগাহে মাশহাদ, ১৩৪৮ হি.।
- কুলাইনি, মুহাম্মাদ ইবনে ইয়াকুব, উসুল আল-কাফি, তাসহিহ: আলী আকবার আল-গাফফারি, শেখ নাজমুদ্দীন আল-আমেলি’র সহীহ, তেহরান, মাকতাবাতুল ইসলামিয়া, ১৩৮৮ হি.।
- মামাকানি, আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ, তানকীহুল মাকাল ফি ইলমির রিজাল, নাজাফ, মাতবাআতু মুর্তাযাউয়িয়্যাহ, ১৩৫২ হি.।
- মাসউদি, আলী ইবনে হুসাইন, ইসবাতুল ওয়াসিয়্যাহ লিল ইমাম আলী ইবনে আবি তালিব, নাজাফ, মাক্তাবেয়ে মোর্তাযাউয়িয়্যাহ, তারিখ অজ্ঞাত।