গীবতের আয়াত: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
সম্পাদনা সারাংশ নেই
W.Alhassan (আলোচনা | অবদান) |
W.Alhassan (আলোচনা | অবদান) সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
৬ নং লাইন: | ৬ নং লাইন: | ||
==আয়াত এবং অনুবাদ== | ==আয়াত এবং অনুবাদ== | ||
[[সূরা হুজুরাত|সূরা হুজুরাতের]] ১২ নং [[আয়াত|আয়াতকে]] গীবতের আয়াত বলা হয়: | [[সূরা হুজুরাত|সূরা হুজুরাতের]] ১২ নং [[আয়াত|আয়াতকে]] গীবতের আয়াত বলা হয়:<ref>মুআসসেসেয়ে দায়েরাতুল মাআরেফ-এ ফিকহে ইসলামী, ফারহাঙ্গে ফিকহে ফার্সি, ১৩৮৫ ফার্সি সন, খণ্ড ১, পৃ. ১৯৯।</ref> | ||
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اجْتَنِبُوا كَثِيرًا مِنَ الظَّنِّ إِنَّ بَعْضَ الظَّنِّ إِثْمٌ وَلَا تَجَسَّسُوا وَلَا يَغْتَبْ بَعْضُكُمْ بَعْضًا أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَنْ يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوهُ وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ تَوَّابٌ رَحِيمٌ ١٢﴾ [حجرات:12] | ﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اجْتَنِبُوا كَثِيرًا مِنَ الظَّنِّ إِنَّ بَعْضَ الظَّنِّ إِثْمٌ وَلَا تَجَسَّسُوا وَلَا يَغْتَبْ بَعْضُكُمْ بَعْضًا أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَنْ يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوهُ وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ تَوَّابٌ رَحِيمٌ ١٢﴾ [حجرات:12] | ||
(হে মু’মিনগণ, তোমরা অধিক অনুমান করা থেকে দূরে থাকো। নিশ্চয় কোন কোন অনুমান তো পাপ। আর তোমরা গোপন বিষয় অনুসন্ধান করো না এবং একে অপরের গীবত করো না। তোমাদের মধ্যে কি কেউ তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে পছন্দ করবে? তোমরা তো তা ঘৃণাই করে থাকো। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। নিশ্চ আল্লাহ অধিক তওবা কবুলকারী, অসীম দয়ালু।) {সূরা হুজরাত: আয়াত ১২} | (হে মু’মিনগণ, তোমরা অধিক অনুমান করা থেকে দূরে থাকো। নিশ্চয় কোন কোন অনুমান তো পাপ। আর তোমরা গোপন বিষয় অনুসন্ধান করো না এবং একে অপরের গীবত করো না। তোমাদের মধ্যে কি কেউ তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে পছন্দ করবে? তোমরা তো তা ঘৃণাই করে থাকো। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। নিশ্চ আল্লাহ অধিক তওবা কবুলকারী, অসীম দয়ালু।) {সূরা হুজরাত: আয়াত ১২} | ||
==শানে নুযুল== | ==শানে নুযুল== | ||
গীবতের আয়াত সম্পর্কে, যা [[মদীনা|মদীনায়]] অবতীর্ণ হয়েছে, | গীবতের আয়াত সম্পর্কে, যা [[মদীনা|মদীনায়]] অবতীর্ণ হয়েছে,<ref>তাবাতাবায়ী, আল-মিযান, ১৩৯০ হি., খণ্ড ১৮, পৃ. ৩০৫।</ref>দু’টো [[শানে নুযুল]] বর্ণিত হয়েছে: | ||
*[[মাজমাউল বায়ান|মাজমাউল বায়ানে]] [[তাবারসি|তাবারসি’র]] (মৃত্যু: ৫৪৮ হি.) বক্তব্য অনুসারে, এই আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে রাসূল (স.)-এর দু’জন সাহাবী সম্পর্কে, যারা [[সালমান ফারসী|সালমান ফারসী’র]] গীবত করেছিলেন। ঐ দুই ব্যক্তি তাদের জন্য খাবার আনতে সালমানকে [[মহানবী (স.)]]-এর নিকট পাঠিয়েছিলেন। মহানবী (স.), সালমান ফারসীকে গুদাম রক্ষকের দায়িত্ব পালনকারী [[উসামা ইবনে যায়েদ]] এর নিকট প্রেরণ করেন। উসামা সালমানকে বলেন খাদ্য শেষ হয়ে গেছে। সালমান খালি হাতে ফিরে আসে। ঐ দুই ব্যক্তি, উসামাকে [[কৃপণ]] বলে আখ্যায়িত করে এবং সালমান সম্পর্কে বলে, যদি তাকে সামিহা কুয়াতেও (পানি ভর্তি একটি কুয়ার নাম) পাঠাই, তবে তা শুকিয়ে যাবে। অতঃপর তারা উসামার নিকট আসার জন্য এবং বিষয়টি সম্পর্কে অনুসন্ধান করার লক্ষ্যে নিজেরাই যাত্রা শুরু করে। মহানবী (স.) তাদেরকে বললেন: কি হয়েছে যে গোশতের প্রভাব তোমাদের মুখে দেখতে পাচ্ছি। তারা দু’জন বললেন: হে আল্লাহর রাসূল (স.) আমরা আজ গোশত খাই নি। মহানবী (স.) বললেন: তোমরা সালমান ও উসামা’র গোশত খাচ্ছ! তারপর গীবতের আয়াত অবতীর্ণ হয়।[৩] | *[[মাজমাউল বায়ান|মাজমাউল বায়ানে]] [[তাবারসি|তাবারসি’র]] (মৃত্যু: ৫৪৮ হি.) বক্তব্য অনুসারে, এই আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে রাসূল (স.)-এর দু’জন সাহাবী সম্পর্কে, যারা [[সালমান ফারসী|সালমান ফারসী’র]] গীবত করেছিলেন। ঐ দুই ব্যক্তি তাদের জন্য খাবার আনতে সালমানকে [[মহানবী (স.)]]-এর নিকট পাঠিয়েছিলেন। মহানবী (স.), সালমান ফারসীকে গুদাম রক্ষকের দায়িত্ব পালনকারী [[উসামা ইবনে যায়েদ]] এর নিকট প্রেরণ করেন। উসামা সালমানকে বলেন খাদ্য শেষ হয়ে গেছে। সালমান খালি হাতে ফিরে আসে। ঐ দুই ব্যক্তি, উসামাকে [[কৃপণ]] বলে আখ্যায়িত করে এবং সালমান সম্পর্কে বলে, যদি তাকে সামিহা কুয়াতেও (পানি ভর্তি একটি কুয়ার নাম) পাঠাই, তবে তা শুকিয়ে যাবে। অতঃপর তারা উসামার নিকট আসার জন্য এবং বিষয়টি সম্পর্কে অনুসন্ধান করার লক্ষ্যে নিজেরাই যাত্রা শুরু করে। মহানবী (স.) তাদেরকে বললেন: কি হয়েছে যে গোশতের প্রভাব তোমাদের মুখে দেখতে পাচ্ছি। তারা দু’জন বললেন: হে আল্লাহর রাসূল (স.) আমরা আজ গোশত খাই নি। মহানবী (স.) বললেন: তোমরা সালমান ও উসামা’র গোশত খাচ্ছ! তারপর গীবতের আয়াত অবতীর্ণ হয়।[৩] | ||
১৮ নং লাইন: | ১৮ নং লাইন: | ||
==তাফসীর ভিত্তিক নোট== | ==তাফসীর ভিত্তিক নোট== | ||
[[ইবনে আব্বাস]] আয়াতটির [[তাফসীর|তাফসীরে]] বলেছেন, [[আল্লাহ রাব্বুল আলামীন]] যেভাবে [[মৃত|মৃতের]] গোশতকে [[হারাম]] করেছেন, [[গীবত|গীবতকেও]] হারাম হিসেবে গণ্য করেছেন।[৫] উক্ত আয়াত অনুসারে, মৃতের গোশত খাওয়া যেমন মানুষের নিকট অপছন্দনীয়, তেমনি জীবিত ব্যক্তির গীবতের ক্ষেত্রেও ঘৃণা থাকা আবশ্যক।[৬] প্রথমটি মানব প্রকৃতির পরিপন্থী এবং দ্বিতীয়টি [[আকল]] তথা বুদ্ধিবৃত্তি ও শরীয়ত পরিপন্থী।[৭] [[আল্লামা তাবাতাবায়ী|আল্লামা তাবাতাবায়ী’র]] ভাষ্য মতে, «فَكَرِهْتُمُوه» | [[ইবনে আব্বাস]] আয়াতটির [[তাফসীর|তাফসীরে]] বলেছেন, [[আল্লাহ রাব্বুল আলামীন]] যেভাবে [[মৃত|মৃতের]] গোশতকে [[হারাম]] করেছেন, [[গীবত|গীবতকেও]] হারাম হিসেবে গণ্য করেছেন।[৫] উক্ত আয়াত অনুসারে, মৃতের গোশত খাওয়া যেমন মানুষের নিকট অপছন্দনীয়, তেমনি জীবিত ব্যক্তির গীবতের ক্ষেত্রেও ঘৃণা থাকা আবশ্যক।[৬] প্রথমটি মানব প্রকৃতির পরিপন্থী এবং দ্বিতীয়টি [[আকল]] তথা বুদ্ধিবৃত্তি ও শরীয়ত পরিপন্থী।[৭] [[আল্লামা তাবাতাবায়ী|আল্লামা তাবাতাবায়ী’র]] ভাষ্য মতে, «فَكَرِهْتُمُوه» | ||
ইঙ্গিত করে যে, মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়াকে ঘৃণা করা একটি সুনির্দিষ্ট ও প্রতিষ্ঠিত বিষয় এবং নিঃসন্দেহে কেউ এমন কাজ করে না। সুতরাং মু’মিন ভাইয়ের গীবত করাটাও ঘৃণার বিষয় হওয়া আবশ্যক; কেননা এটাও মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার ন্যায়। | ইঙ্গিত করে যে, মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়াকে ঘৃণা করা একটি সুনির্দিষ্ট ও প্রতিষ্ঠিত বিষয় এবং নিঃসন্দেহে কেউ এমন কাজ করে না। সুতরাং মু’মিন ভাইয়ের গীবত করাটাও ঘৃণার বিষয় হওয়া আবশ্যক; কেননা এটাও মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার ন্যায়।<ref>তাবাতাবায়ী, আল-মিযান, ১৩৯০ হি., খণ্ড ১৮, পৃ. ৩২৪।</ref> [[ইমাম খোমেনী (রহ.)]] [[শারহে চেহেল হাদীস]] গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন: মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়া হচ্ছে গীবতের বাতেনী (অভ্যন্তরীণ) রূপ এবং পরকালে গীবত এভাবেই প্রকাশিত হবে।[৯] | ||
মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার সাথে গীবতের তুলনা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, যেমনভাবে কেউ মৃতের গোশত খেলেও মৃত ব্যক্তি কোন কিছুই অনুভব করে না, গীবতের ক্ষেত্রেও যদি কারও অনুপস্থিতিতে তার দোষ-ত্রুটি বলা হয়, তবে সেই ব্যক্তি (যার গীবত করা হয়) তা অনুভব করে না।[১০] | মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার সাথে গীবতের তুলনা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, যেমনভাবে কেউ মৃতের গোশত খেলেও মৃত ব্যক্তি কোন কিছুই অনুভব করে না, গীবতের ক্ষেত্রেও যদি কারও অনুপস্থিতিতে তার দোষ-ত্রুটি বলা হয়, তবে সেই ব্যক্তি (যার গীবত করা হয়) তা অনুভব করে না।[১০] | ||
[[আল্লামা তাবাতাবায়ী|আল্লামা তাবাতাবায়ীর]] দৃষ্টিতে, আয়াতে ভাইয়ের উল্লেখ এই দৃষ্টিকোন থেকে যে, পূর্বের দুই আয়াতে (সূরা হুজরাতের ১০ নং আয়াত), মু’মিনদেরকে পরস্পরের ভাই বলা হয়েছে। মৃতের ব্যাখ্যাও এই দৃষ্টিকোন থেকে যে গীবতের শিকার হওয়া ব্যক্তি জানে না যে তার অনুপস্থিতিতে গীবত করা হচ্ছে। | [[আল্লামা তাবাতাবায়ী|আল্লামা তাবাতাবায়ীর]] দৃষ্টিতে, আয়াতে ভাইয়ের উল্লেখ এই দৃষ্টিকোন থেকে যে, পূর্বের দুই আয়াতে (সূরা হুজরাতের ১০ নং আয়াত), মু’মিনদেরকে পরস্পরের ভাই বলা হয়েছে। মৃতের ব্যাখ্যাও এই দৃষ্টিকোন থেকে যে গীবতের শিকার হওয়া ব্যক্তি জানে না যে তার অনুপস্থিতিতে গীবত করা হচ্ছে।<ref>তাবাতাবায়ী, আল-মিযান, ১৩৯০ হি., খণ্ড ১৮, পৃ. ৩২৪।</ref> | ||
[[তাফসীরে নেমুনেহ]]-তে [[আয়াতুল্লাহ মাকারেম শিরাজী]] এই আয়াতের উপর ভিত্তি করে, খারাম অনুমানকে গোপন অনুসন্ধান তথা গুপ্তচরবৃত্তির উৎস, গুপ্তচরবৃত্তিকে গোপন দোষ-ত্রুটিসমূহের প্রকাশ এবং দোষ-ত্রুটি জানাকে গীবতের কারণ হিসেবে গণ্য করেছেন। আর [[ইসলাম]] উক্ত তিনটি কাজকেই নিষিদ্ধ করেছে। | [[তাফসীরে নেমুনেহ]]-তে [[আয়াতুল্লাহ মাকারেম শিরাজী]] এই আয়াতের উপর ভিত্তি করে, খারাম অনুমানকে গোপন অনুসন্ধান তথা গুপ্তচরবৃত্তির উৎস, গুপ্তচরবৃত্তিকে গোপন দোষ-ত্রুটিসমূহের প্রকাশ এবং দোষ-ত্রুটি জানাকে গীবতের কারণ হিসেবে গণ্য করেছেন। আর [[ইসলাম]] উক্ত তিনটি কাজকেই নিষিদ্ধ করেছে।<ref>মাকারেম শিরাজী, তাফসীরে নেমুনেহ, ১৩৭১ ফার্সি সন, খণ্ড ২২, পৃ. ১৮৪।</ref> | ||
==ফিকাহগত প্রয়োগ== | ==ফিকাহগত প্রয়োগ== | ||
ফকিহগণ [[গীবত|গীবতের]] আয়াতের উপর ভিত্তি করে, গীবতের হুকুম-আহকামের উল্লেখ করেছেন, যা নিম্নরূপ: | ফকিহগণ [[গীবত|গীবতের]] আয়াতের উপর ভিত্তি করে, গীবতের হুকুম-আহকামের উল্লেখ করেছেন, যা নিম্নরূপ: | ||
*[[ফকিহগণ]] এই আয়াতটিকে গীবত হারাম হওয়ার জন্য ব্যবহার করেছেন। | *[[ফকিহগণ]] এই আয়াতটিকে গীবত হারাম হওয়ার জন্য ব্যবহার করেছেন।<ref>নারাকি, মুস্তানাদুশ শিয়া, ১৪১৫ হি., খণ্ড ১৪, পৃ ১৬১; মুআসসেসেয়ে দায়েরাতুল মাআরেফ-এ ফিকহে ইসলামী, ফারহাঙ্গে ফিকহে ফার্সি, ১৩৮৫ ফার্সি সন, খণ্ড ১, পৃ. ১৯৯ ও ২০০।</ref>গীবতের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে।<ref>দ্র: ইমাম খোমেনী, মাকাসেবুল মুহাররামাহ, ১৪১৫ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৩৮১-৩৮৫।</ref> আল্লামা তাবাতাবায়ীর বক্তব্য অনুসারে, সবগুলো সংজ্ঞার সারমর্মই হচ্ছে এই যে, কারও অনুপস্থিতিতে এমন কোন কিছু বলা, যা সে শুনলে অসন্তুষ্ট হবে।<ref>তাবাতাবায়ী, আল-মিযান, ১৩৯০ হি., খণ্ড ১৮, পৃ. ৩২৩।</ref> | ||
*উল্লেখিত আয়াতে গীবতকে অপছন্দনীয় গণ্য করা এবং মৃতের গোশত খাওয়ার সাথে তুলনা করার কারণে এটিকে [[কবিরা গুনাহ]] হিসেবে বিবেচনা করেছেন। | *উল্লেখিত আয়াতে গীবতকে অপছন্দনীয় গণ্য করা এবং মৃতের গোশত খাওয়ার সাথে তুলনা করার কারণে এটিকে [[কবিরা গুনাহ]] হিসেবে বিবেচনা করেছেন।<ref>শাহীদ সানী, রাসায়েলুশ শাহীদ আস-সানী, কিতাব ফুরুশিয়ে বাসিরাত, পৃ. ২৮৫; আরদেবিলী, মাজমাউল ফায়েদাহ ওয়াল বুরহান, ১৪০৩ হি. খণ্ড ১২, পৃ. ৩৩৯; মাকারেম শিরাজী, তাফসীরে নেমুনেহ, ১৩৭১ ফার্সি সন, খণ্ড ২২, পৃ. ১৮৫।</ref> | ||
*আয়াতে গীবত হারাম বলার মধ্যে শুধুমাত্র [[মুসলমান|মুসলমানদের]] গীবত করা অন্তর্ভূক্ত হবে; কেননা, «لَحْمَ أَخِیهِ مَیْتاً» অংশটি কাফেরের অন্তর্ভূক্ত হবে না। | *আয়াতে গীবত হারাম বলার মধ্যে শুধুমাত্র [[মুসলমান|মুসলমানদের]] গীবত করা অন্তর্ভূক্ত হবে; কেননা, «لَحْمَ أَخِیهِ مَیْتاً» অংশটি কাফেরের অন্তর্ভূক্ত হবে না।<ref>আরদেবিলী, মাজমাউল ফায়েদাহ ওয়াল বুরহান, ১৪০৩ হি. খণ্ড ৮, পৃ. ৭৬ ও ৭৭; তাবাতাবায়ী, আল-মিযান, ১৩৯০ হি., খণ্ড ১৮, পৃ. ৩২৫।</ref> তদ্রুপভাবে, | ||
আয়াতের «بعضکم» শব্দটিকে [[কাফের|কাফেরদের]] গীবত করা বৈধ হওয়ার দলিল বিবেচনা করেছেন। | আয়াতের «بعضکم» শব্দটিকে [[কাফের|কাফেরদের]] গীবত করা বৈধ হওয়ার দলিল বিবেচনা করেছেন।<ref>ফাযেল কাযিমি, মাসালেকুল আফহাম, ১৩৬৫ ফার্সি সন, খণ্ড ২, পৃ. ৪১৬, ৪১৭।</ref> | ||
*কোন কোন ফকিহগণ আয়াতে সার্বিক নিষেধের উপর নির্ভর করে, যারা মু’মিন নয় তাদের গীবত করাও হারাম বলে মনে করেন; | *কোন কোন ফকিহগণ আয়াতে সার্বিক নিষেধের উপর নির্ভর করে, যারা মু’মিন নয় তাদের গীবত করাও হারাম বলে মনে করেন;<ref>আরদেবিলী, মাজমাউল ফায়েদাহ ওয়াল বুরহান, ১৪০৩ হি. খণ্ড ৮, পৃ. ৭৬ ও ৭৭।</ref>তবে কারও কারও দৃষ্টিতে, আয়াতটি শুধুমাত্র মু’মিনদের গীবত হারাম হওয়ার বিষয়টিকে শামিল করেছে।<ref>নারাকি, মুস্তানাদুশ শিয়া, ১৪১৫ হি., পৃ. ১৬১; ফাযেল কাযিমি, মাসালেকুল আফহাম, ১৩৬৫ ফার্সি সন, খণ্ড ২, পৃ. ৪১৬।</ref> | ||
*[[ফাসেক|ফাসেকদের]] গীবত করা আয়াতের সার্বিকতা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে এবং তাদের গীবত করা মুবাহ তথা জায়েয বলে গণ্য করা হয়েছে। | *[[ফাসেক|ফাসেকদের]] গীবত করা আয়াতের সার্বিকতা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে এবং তাদের গীবত করা মুবাহ তথা জায়েয বলে গণ্য করা হয়েছে।<ref>ফাযেল কাযিমি, মাসালেকুল আফহাম, ১৩৬৫ ফার্সি সন, খণ্ড ২, পৃ. ৪১৬।</ref> | ||
==তথ্যসূত্র== | ==তথ্যসূত্র== | ||
৪২ নং লাইন: | ৪২ নং লাইন: | ||
*ইমাম খোমেনী, সাইয়্যেদ রুহুল্লাহ মুসাভি, শারহে চেহেল হাদীস (আরবাঈন হাদীস), কোম, মুআসসেসেয়ে তানযীম ওয়া নাশরে আসারে ইমাম খোমেনী, ২৪তম সংস্করণ, ১৩৮০ ফার্সি সন। | *ইমাম খোমেনী, সাইয়্যেদ রুহুল্লাহ মুসাভি, শারহে চেহেল হাদীস (আরবাঈন হাদীস), কোম, মুআসসেসেয়ে তানযীম ওয়া নাশরে আসারে ইমাম খোমেনী, ২৪তম সংস্করণ, ১৩৮০ ফার্সি সন। | ||
*ইমাম খোমেনী, সাইয়্যেদ রুহুল্লাহ মুসাভি, মাকাসিবুল মুহাররামাহ, কোম, মুআসসেসেয়ে তানযীম ওয়া নাশরে আসারে ইমাম খোমেনী, প্রথম সংস্করণ, পৃ. ১৪১৫। | *ইমাম খোমেনী, সাইয়্যেদ রুহুল্লাহ মুসাভি, মাকাসিবুল মুহাররামাহ, কোম, মুআসসেসেয়ে তানযীম ওয়া নাশরে আসারে ইমাম খোমেনী, প্রথম সংস্করণ, পৃ. ১৪১৫। | ||
* | *শাহীদ সানি, যাইনুদ্দিন ইবনে আলী, রাসায়েলুশ শাহীদ আস-সানী, কোম, কিতাব ফুরুশিয়ে বাসিরাত, প্রথম সংস্করণ, তারিখ অজ্ঞাত। | ||
*তাবাতাবায়ী, সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ হুসাইন, আল-মিযান ফি তাফসীরিল কুরআন, বৈরুত, মুআসসাসাতুল আ’লামি, দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৩৯০ হি.। | *তাবাতাবায়ী, সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ হুসাইন, আল-মিযান ফি তাফসীরিল কুরআন, বৈরুত, মুআসসাসাতুল আ’লামি, দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৩৯০ হি.। | ||
*তাবরানি, সুলাইমান ইবনে আহমাদ, আত-তাফসীরুল কাবির (তাফসীরুল কুরআনিল আযীম), জর্ডান-ইরবিদ, দারুল কিতাব আস-সাকাফি, প্রথম সংস্করণ, ২০০৮ খ্রি.। | *তাবরানি, সুলাইমান ইবনে আহমাদ, আত-তাফসীরুল কাবির (তাফসীরুল কুরআনিল আযীম), জর্ডান-ইরবিদ, দারুল কিতাব আস-সাকাফি, প্রথম সংস্করণ, ২০০৮ খ্রি.। |