Automoderated users, confirmed, templateeditor
১,৭২১টি
সম্পাদনা
১৪২ নং লাইন: | ১৪২ নং লাইন: | ||
মদিনায় প্রবেশের কিছুদিনের মধ্যে মহানবি (সা.) [[ইহুদি]]রাসহ শহরের অন্যান্য বাসিন্দাদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হলেন, যাতে সবাই পরস্পরের সামাজিক অধিকার রক্ষা করে চলে।<ref>ইবনে হিশাম, সিরাতুন নাবাভিয়্যাহ, দারু ইহইয়ায়িত তুরাসিল আরাবি, খণ্ড ২, পৃ. ১৪৭ এর পর থেকে।</ref> | মদিনায় প্রবেশের কিছুদিনের মধ্যে মহানবি (সা.) [[ইহুদি]]রাসহ শহরের অন্যান্য বাসিন্দাদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হলেন, যাতে সবাই পরস্পরের সামাজিক অধিকার রক্ষা করে চলে।<ref>ইবনে হিশাম, সিরাতুন নাবাভিয়্যাহ, দারু ইহইয়ায়িত তুরাসিল আরাবি, খণ্ড ২, পৃ. ১৪৭ এর পর থেকে।</ref> | ||
==মদিনায় মুনাফিক ও ইহুদীদের | ==মদিনায় মুনাফিক ও ইহুদীদের বাঁধা== | ||
ইয়াসরিবের অধিকাংশ জনগণ মুসলমানদেরকে সমর্থন করলেও [[আবদুল্লাহ ইবনে উবাই|আবদুল্লাহ ইবনে উবাইয়ের]] মতো লোকেরা নিজেদেরকে মুসলমান বলে পরিচয় দিয়ে গোপনে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করত।<ref>শাহিদি, তারিখে তাহলিলিয়ে ইসলাম, ১৩৯০ সৌরবর্ষ, পৃ. ৬৭-৬৮।</ref> এই দলটিকে [[মুনাফিক]] (কপট) বলা হত। এদেরকে নিয়ন্ত্রণ করা [[মুশরিক]] ও ইহুদীদের চেয়েও কষ্টকর ছিল; কারণ মনে মনে ইসলামের বিরোধিতা করলেও বাহ্যিকভাবে নিজেদেরকে মুসলমান বলে পরিচয় দেওয়ার কারণে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়াও দুস্কর ছিল।<ref>শাহিদি, তারিখে তাহলিলিয়ে ইসলাম, ১৩৯০ সৌরবর্ষ, পৃ. ৬৮।</ref> ৯ হিজরীতে মৃত্যু পর্যন্ত আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই ইসলাম ও মহানবির (সা.) বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রাখে। | ইয়াসরিবের অধিকাংশ জনগণ মুসলমানদেরকে সমর্থন করলেও [[আবদুল্লাহ ইবনে উবাই|আবদুল্লাহ ইবনে উবাইয়ের]] মতো লোকেরা নিজেদেরকে মুসলমান বলে পরিচয় দিয়ে গোপনে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করত।<ref>শাহিদি, তারিখে তাহলিলিয়ে ইসলাম, ১৩৯০ সৌরবর্ষ, পৃ. ৬৭-৬৮।</ref> এই দলটিকে [[মুনাফিক]] (কপট) বলা হত। এদেরকে নিয়ন্ত্রণ করা [[মুশরিক]] ও ইহুদীদের চেয়েও কষ্টকর ছিল; কারণ মনে মনে ইসলামের বিরোধিতা করলেও বাহ্যিকভাবে নিজেদেরকে মুসলমান বলে পরিচয় দেওয়ার কারণে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়াও দুস্কর ছিল।<ref>শাহিদি, তারিখে তাহলিলিয়ে ইসলাম, ১৩৯০ সৌরবর্ষ, পৃ. ৬৮।</ref> ৯ হিজরীতে মৃত্যু পর্যন্ত আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই ইসলাম ও মহানবির (সা.) বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রাখে। | ||
মদিনায়কৃত [[মদিনা সনদ|চুক্তির]] ভিত্তিতে ইহুদিরা কিছু অধিকার প্রাপ্ত হয়, এমনকি [[যুদ্ধলব্ধ সম্পদ|যুদ্ধেলব্ধ]] গনিমতেও তারা অংশীদ্বার ছিল। কিন্তু তারা শুরুতে মুসলমানদের পক্ষে থাকার আচরণ করে এবং তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যক ইসলাম গ্রহণ করলেও অবশেষে ইসলামের প্রতি অসন্তুষ্টি দেখাতে থাকে। এই অসন্তোষের কারণ হল, মদিনার অর্থনীতির উপর তাদের আধিপত্ব ছিল, পাশাপাশি বেদুঈন আরব এবং মক্কার মুশরিকদের সাথেও তারা লেনদেন করত, তাদের আশা ছিল আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইয়ের নেতৃত্বে মদিনার অর্থনীতিতে তাদের প্রভাব বাড়বে। কিন্তু মহানবি (সা.) শহরে প্রবেশ এবং ইসলাম ধর্মের প্রসার তাদের এ পথে | মদিনায়কৃত [[মদিনা সনদ|চুক্তির]] ভিত্তিতে ইহুদিরা কিছু অধিকার প্রাপ্ত হয়, এমনকি [[যুদ্ধলব্ধ সম্পদ|যুদ্ধেলব্ধ]] গনিমতেও তারা অংশীদ্বার ছিল। কিন্তু তারা শুরুতে মুসলমানদের পক্ষে থাকার আচরণ করে এবং তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যক ইসলাম গ্রহণ করলেও অবশেষে ইসলামের প্রতি অসন্তুষ্টি দেখাতে থাকে। এই অসন্তোষের কারণ হল, মদিনার অর্থনীতির উপর তাদের আধিপত্ব ছিল, পাশাপাশি বেদুঈন আরব এবং মক্কার মুশরিকদের সাথেও তারা লেনদেন করত, তাদের আশা ছিল আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইয়ের নেতৃত্বে মদিনার অর্থনীতিতে তাদের প্রভাব বাড়বে। কিন্তু মহানবি (সা.) শহরে প্রবেশ এবং ইসলাম ধর্মের প্রসার তাদের এ পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এর উর্ধ্বে ইহুদি বংশোদ্ভূত নয় এমন কেউ নবুয়্যত লাভ করুক ইহুদিদের জন্য এটা মেনে নেয়া কষ্টকর ছিল। আর এ কারণে তারা কিছুদিনের মধ্যেই মহানবির (সা.) বিরোধিতা প্রকাশ করল এবং এ কাজে আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই তাদেরকে উস্কে দিল। | ||
তারা বলল: আমরা যে নবীর অপেক্ষায় ছিলাম সে মুহাম্মাদ নয় এবং কুরআনের আয়াতের বিপরীতে [[তাওরাত]] ও [[ইঞ্জিল]]কে মুসলমানদের সামনে দাঁড় করাল। তারা বলল: যা কিছু কুরআন বলে এবং যা কিছু আমাদের গ্রন্থে রয়েছে তা এক নয়। পবিত্র কুরআনের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আয়াত এ সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে। ঐ সকল আয়াতে যা কিছু উল্লিখিত হয়েছে তার ভিত্তিতে বিভিন্ন সময়ে তাওরাত ও ইঞ্জিলে বিচ্যুতি ঘটানো হয়েছে এবং ইহুদি ধর্মযাজক ও পণ্ডিতরা নিজেদের অবস্থান ও আধিপত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য সেগুলোতে পরিবর্তন ঘটিয়েছে। | তারা বলল: আমরা যে নবীর অপেক্ষায় ছিলাম সে মুহাম্মাদ নয় এবং কুরআনের আয়াতের বিপরীতে [[তাওরাত]] ও [[ইঞ্জিল]]কে মুসলমানদের সামনে দাঁড় করাল। তারা বলল: যা কিছু কুরআন বলে এবং যা কিছু আমাদের গ্রন্থে রয়েছে তা এক নয়। পবিত্র কুরআনের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আয়াত এ সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে। ঐ সকল আয়াতে যা কিছু উল্লিখিত হয়েছে তার ভিত্তিতে বিভিন্ন সময়ে তাওরাত ও ইঞ্জিলে বিচ্যুতি ঘটানো হয়েছে এবং ইহুদি ধর্মযাজক ও পণ্ডিতরা নিজেদের অবস্থান ও আধিপত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য সেগুলোতে পরিবর্তন ঘটিয়েছে। | ||