ওয়াক্ফ
“নিবন্ধটি ফিকাহ সংশ্লিষ্ট একটি বিষয়ের সংজ্ঞা ও সংক্ষিপ্ত পরিচিতি নিয়ে, সুতরাং আমলের মানদণ্ড নয়; আমলের লক্ষ্যে অন্য সূত্রের শরণাপন্ন হোন।”
ওয়াক্ফ (وقف); এমন একটি আক্দ (চুক্তি), যার মাধ্যমে জনসাধারণ বা একটি বিশেষ দলের উদ্দেশ্যে কোন সম্পদ দান করা হয় যা থেকে তারা উপকৃত হতে পারে। ওয়াক্ফ করার পর ওয়াকিফ (ওয়াক্ফকারী) বা যাদের জন্য ওয়াক্ফ করা হয়েছে তাদের কেউই ওয়াক্ফকৃত সম্পত্তি বিক্রয় অথবা দান করার অধিকার রাখে না। পবিত্র কুরআনে ওয়াক্ফ সম্পর্কে সরাসরি কিছু বলা না হলেও বিভিন্ন রেওয়ায়েতে ‘সদকায়ে জারিয়া’ শিরোনামে ওয়াকফের বিষয়ে তাগিদ প্রদান করা হয়েছে। ওয়াকফে’র ইতিহাস ইসলাম ধর্ম আগমনেরও আগের। অবশ্য মহানবি (স.)-এর যুগে ওয়াকফের বিষয়টি তাঁর সাহাবাগণের মাঝে প্রচলন ঘটে এবং মহানবি (স.) ও হযরত আলী (আ.) কর্তৃক ওয়াক্ফ করার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নমুনা বিভিন্ন বর্ণনায় উল্লেখিত হয়েছে।
ইসলাম ধর্মে যে সকল চুক্তি ও আকদের কথা এসেছে ‘ওয়াক্ফ’ সেগুলোর অন্যতম; ফিকহী গ্রন্থসমূহে ওয়াক্ফ সঠিক হওয়ার শর্তাবলী এবং এ সম্পর্কিত বিভিন্ন বিধান বর্ণিত হয়েছে। ওয়াক্ফ মূলতঃ দু’ ভাগে বিভক্ত; ওয়াকফে আম ও ওয়াকফে খাস।
মসজিদ ও মাদ্রাসা বা স্কুল নির্মাণ, গ্রন্থাগার, হাসপাতাল ও যিয়ারতগাহ নির্মাণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে ওয়াকফের কার্যকারিতা রয়েছে। মুসলিম দেশসমূহে ওয়াক্ফ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি ব্যবস্থাপনার জন্য বিশেষ সংস্থা ও এদারাও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
সংজ্ঞা ও প্রকারভেদ
ফকীহগণের পরিভাষায়, ওয়াক্ফ; এমন এক আক্দ ও চুক্তিকে বোঝায় যাতে কোন সম্পদ দান করা হয়, যাতে এর থেকে উপকৃত হওয়া যায়।[১] যেমন: গরীব ও অসহায়দের জন্য কোন স্থানকে দান করা; যাতে গরীব ও অসহায়রা তা থেকে উপকৃত হতে পারে, আর ঐ স্থান ক্রয় বা বিক্রয় যোগ্য নয়।[২] ওয়াকফে, মূল সম্পদ ওয়াকিফের (ওয়াক্ফকারী) মালাকানা থেকে বের হয়ে যায়।[৩] ওয়াকিফ নিজে বা যাদের জন্য ওয়াক্ফ করা হয়েছে তাদের কেউই ওয়াক্ফকৃত সম্পদ বিক্রি বা দান করার অধিকার রাখে না।[৪]
ওয়াক্ফকে ‘সদকায়ে জারিয়া’ বলা হয়েছে,[৫] আর সদকায়ে জারিয়া শব্দটি হাদীসে এসেছে;[৬] কেননা এর থেকে আগত লাভ ও সুবিধা (মুনাফা, منافع) সবসময় অবশিষ্ট থাকে।[৭]
ওয়াকফে আম ও ওয়াকফে খাস
ফিকহী গ্রন্থসমূহে ওয়াক্ফকে ‘আম’ ও খাস’ ২ ভাগে ভাগ করা হয়েছে; আম (গণ ও সাধারণ) উদ্দেশ্যে অথবা কোন গোষ্ঠীর উদ্দেশ্যে কোন কিছু ওয়াক্ফ করা হলে তাকে ওয়াকফে আম বলা হয়, যেমন- মসজিদ, স্কুল ও মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করা, হাসপাতাল নির্মাণ করা এবং গরীব ও অসহায়দের সাহাযার্থে অথবা জ্ঞানচর্চায়রতদের সহযোগিতার লক্ষ্যে কোন কিছু ওয়াফক করা (যা নির্দিষ্ট কোন ব্যক্তিত্ব বা দলের জন্য না হয়)। এর বিপরীতে জনসাধারণের উপকারের লক্ষ্যে ‘আম’ উদ্দেশ্যে বা কোন নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর জন্য ওয়াক্ফ করা হয়, একে ওয়াকফে খাস বলা হয়, যেমন- কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তিত্ব বা ব্যক্তিত্বদের জন্য কোন স্থানকে দান করা।[৮]
গুরুত্ব ও তাৎপর্য
ফিকহী গ্রন্থসমূহে ওয়াকফের জন্য স্বতন্ত্র অধ্যায় রয়েছে; এতে ওয়াকফের সহিহ হওয়ার শর্তাবলি ও নির্দিষ্ট আহকাম ও বিধান সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়।[৯] হাদীসের গ্রন্থসমূহে সদকা, হেবাহ ইত্যাদির সাথে ওয়াক্ফ প্রসঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে।[১০]
পবিত্র কুরআনে ওয়াক্ফ প্রসঙ্গটি সরাসরি আলোচিত না হলেও আয়াতুল আহকাম শীর্ষক গ্রন্থসমূহে ওয়াকফের আলোচনা ‘সুকনা’ (سُکنی) (নিজের মালিকানাধীন কোন সম্পদ থেকে বিনামূল্যে উপকৃত হওয়ার জন্যে অপরকে সেই সম্পদে কর্তৃত্ব প্রদান করার নাম; এমনভাবে যে, মূল মালিকানা মালিকের জন্যই নির্দিষ্ট থাকে [[১১])। সদকাহ ও হেবাহ হিসেবেও উত্থাপিত হয়েছে এবং এর কেন্দ্রীক আলোচনা ‘আতায়া-এ মুনাজজাযাহ (عطایای منجَّزه) (যে সম্পদ কোন এওয়াজ বা বিনিময় ছাড়াই অন্যকে দান করা হয়) শিরোনামে স্থান দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, পবিত্র কুরআনে আগত ইনফাক ও সম্পদ দানের অন্যতম দৃষ্টান্ত হিসেবে গন্য করা হয়েছে।[১২] বিভিন্ন রেওয়ায়েতের ভিত্তিতে, সদকায়ে জারিয়া (ওয়াক্ফ) ঐ সকল বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত যেগুলো মু’মিন ব্যক্তির মৃত্যুর পরও অব্যাহত থাকে (এবং এর সুফল সে পেতে থাকে।) [১৩] অবশ্য এ সকল রেওয়ায়েতে ‘ওয়াক্ফ’ শব্দটি কম এবং ‘সদকা’ শব্দটি অধিক প্রচলিত।[১৪] তবে ওয়াকফের আহকাম সংশ্লিষ্ট রেওয়ায়েতগুলোতে ওয়াক্ফ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে।[১৫]
যে সকল বিষয় মুসলমানদের মাঝে অধিক চর্চা হয়েছে, ওয়াফক সেগুলোর অন্যতম। ফিকহী বিভিন্ন গ্রন্থে এ সংশ্লিষ্ট অধ্যায়ের পাশাপাশি এ সম্পর্কে বহুসংখ্যক গ্রন্থ ও প্রবন্ধ রচিত হয়েছে। ওয়াকফের ব্যুৎপত্তি প্রসঙ্গে সাইয়্যেদ আহমাদ সাজ্জাদি রচিত গ্রন্থে ৬২৩৯টি গ্রন্থ, প্রবন্ধ, থিসিস, হস্ত লিখিত রেসালাহ, বিভিন্ন রিপোর্ট ও পত্রিকা রচিত ও প্রকাশের কথা উল্লিখিত হয়েছে।[১৬]
ইতিকথা
ওয়াকফের ইতিহাস বহু বছরের। বলা হয়েছে যে, ইসলাম ধর্ম আগমনের পূর্বেও ‘ওয়াকফে’র প্রচলন ছিল।[১৭] তবে ইসলাম আগমনের শুরুতে আল্লাহর রাসূল (স.)-এর সমসময়েই ওয়াক্ফ মুসলমানদের মাঝে প্রচলিত হয়ে যায়।[১৮] স্বয়ং মহানবি (স.) নিজেই বিভিন্ন সম্পদ ওয়াক্ফ করেছেন।[১৯] তিনি প্রথমবার এক খণ্ড জমি ইবনে সাবিলদের (পথশিশু ও বিপদগ্রস্থ মুসাফির) জন্য ওয়াক্ফ করেন।[২০] এছাড়া, জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ আনসারি থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, ‘সাহাবাদের মাঝে, আর্থিক সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও কিছু ওয়াক্ফ করেন নি এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না’।[২১]
ইমামগণ (আলাইহিমুস সালাম)-এর মাঝে হযরত আলী (আ.) সবচেয়ে বেশী ওয়াক্ফ করেছেন।[১২] ইবনে শাহরে আশুবে’র ভাষ্যমতে, ইমাম আলী (আ.) ‘ইয়ানবু’ (یَنبُع) এলাকায় ১০০টি কূপ খনন এবং সেগুলো হাজীদের জন্য ওয়াক্ফ করেছেন। এছাড়া তিনি (জনসাধারণের ব্যবহারের উদ্দেশ্যে) কুফা ও মক্কার পথে বিভিন্ন স্থানে কূপ খনন করেছেন এবং মদিনা, মীকাত, কুফা ও বসরায় মসজিদ নির্মাণ এবং সেগুলোকে ওয়াক্ফ করেছেন।[২৩]
পর্যায়ক্রমে মুসলমানদের ওয়াকফের পরিমাণ এতটাই বেড়ে যায় যে, বনি উমাইয়া শাসনামলে ওয়াকফের সম্পত্তি ব্যবস্থাপনার জন্য বিশেষ এদারাও খোলা হয় এবং এরপর থেকে ওয়াক্ফ সংশ্লিষ্ট এদারা সরকারের তত্ত্বাবধানে চলে আসে।[১৩]
ওয়াকফের ক্ষেত্রসমূহ
ওয়াক্ফ সংশ্লিষ্ট লেখনীগুলোতে ওয়াকফের অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাব সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়েছে।[২৫] ইতিহাস থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে যেসকল ক্ষেত্রে ওয়াক্ফ করা যায় সেগুলোর মধ্যে মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল, লাইব্রেরি ও হাসপাতাল নির্মাণ, পানি সংরক্ষণ বা ভূগর্ভ থেকে পানি উত্তোলনের ব্যবস্থা, গরীব, এতিম, প্রতিবন্ধী ও কয়েদীদের সমস্যা সমাধান এবং আলেমদের জীবনযাত্রার ব্যয় বহন[১৪] ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এরই ভিত্তিতে বলা হয়েছে যে, সমাজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা খাত এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নেও ওয়াকফের ভূমিকা রয়েছে।[২৭]
কেউ কেউ ইতিহাসের বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে ওয়াকফের ক্ষেত্রসমূহকে ৪ ভাগে বিভক্ত করেছেন:
ধর্মীয় খাত; মসজিদ, মাদ্রাসা ও যিয়ারতগাহ[১৫] নির্মাণ ইত্যাদি।
স্বাস্থ্য খাত; হাসপাতাল, ক্লিনিক ও গোসলখানা নির্মাণ (পুকুর বা দীঘি খনন) ইত্যাদি।
সামাজিক খাত: ক্যারাভানসরাই (কাফেলা বিশ্রামের স্থান), সাঁকো ও ব্রিজ নির্মাণ, পানি সংরক্ষণ ও পানি উত্তোলনের ব্যবস্থা এবং কারখানা নির্মাণ ইত্যাদি।
সাংস্কৃতিক খাত: স্কুল ও কলেজ নির্মাণ এবং গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি।
বর্তমানে বিভিন্ন মসজিদ, ইমামগণ (আ.)-এর মাজারসমূহ, মাদ্রাসা ও ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ব্যয়ের একটা বড় অংশ ওয়াকফের সম্পত্তি থেকে প্রাপ্ত আয় থেকে হয়ে থাকে।
ওয়াক্ফ বিষয়ক এদারা
ইসলামি ভূখণ্ডসমূহে ‘ওয়াকফে’র সংস্কৃতি প্রসারের ফলে বিভিন্ন ইসলামি দেশে এ সংশ্লিষ্ট বিশেষ এদারা (কার্যালয়) প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ইতিহাস থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ওয়াক্ফ বিষয়ক এদারা প্রথমবারের মত উমাইয়া শাসনামলে প্রতিষ্ঠিত হয়। ঐ যুগে বসরা শহরের বিচারক ‘তাওবাহ ইবনে নামির’ ওয়াক্ফকৃত সম্পদসমূহ লিপিবদ্ধ করার নির্দেশ দেন। এছাড়া তিনি বসরা শহরে ‘দিওয়ানে আওকাফ’ নামক একটি এদারাও প্রতিষ্ঠা করেন।[২৯]
ইলখানদের শাসনামলে ‘হকুমত মওকুফাত’ নামক একটি সংস্থাও ছিল; যা ক্বাযীউল কুযাতে’র (প্রধান বিচারক) তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হত;[১৬] সাফাভি শাসনামলে ইরানে প্রথমবারের মত ওয়াক্ফ বিষয়ক স্বতন্ত্র এদারা প্রতিষ্টিত হয়। বড় বড় শহরগুলোতে তৎপর এই এদারার প্রতিনিধিদেরকে ‘ওয়াজিরে আওকাফ’ বা ওয়াক্ফ বিষয়ক মন্ত্রী বলা হত।[১৭]
ইসলামি দেশগুলোতে ওয়াকফের সম্পত্তি ব্যবস্থাপনার জন্য বিশেষ সংস্থা রয়েছে, যেগুলো ইরানে, ‘ওয়াক্ফ ও দাতব্য সংস্থা’;[৩২] ইরাকে, দিওয়ানে ওয়াকফে শিয়া ও দিওয়ানে ওয়াকফে সুন্নি; [৩৩] মিসরে, আওকাফ বিষয়ক মন্ত্রণালয়,[৩৪] কুয়েতে, আওকাফ ও ইসলাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় [৩৫] এবং সৌদি আরবে, উচ্চতর ওয়াক্ফ পরিষদ নামে পরিচত।[৩৬] বাংলাদেশেও ওয়াক্ফ বিষয়ক বিশেষ কার্যালয় রয়েছে।
ওয়াক্ফ সহিহ হওয়ার শর্তাবলী
ফকীহগণ ওয়াক্ফ সহিহ হওয়ার ক্ষেত্রে কতিপয় শর্ত ৪টি ক্ষেত্রে উত্থাপন করেছেন: মওকুফাহ (যে সম্পদ ওয়াক্ফ করা হয়েছে), ওয়াকিফ (ওয়াক্ফকারী), মওকুফুন আলাইহিম (যাদের উদ্দেশ্যে ওয়াক্ফ করা হয়েছে) এবং ওয়াক্ফ।
মওকুফাহ
-‘মওকুফাহ’ তথা যা কিছু ওয়াক্ফ করা হচ্ছে তার ৪ শর্তের অধিকারী হতে হবে:
-‘মওকুফাহ’ নির্দিষ্ট হওয়া ও মজুদ থাকা; এ শর্তের ভিত্তিতে যা কিছু অন্যের কব্জা বা কর্তৃত্বে রয়েছে তা এবং নির্দিষ্ট করা ব্যতীত কোন বাড়ি ওয়াক্ফ করা যাবে না।
-ওয়াকিফের নিকট থেকে মওকুফাহ গ্রহণ করা যেন জায়েয হয়। সুতরাং, ওয়াকিফ অন্য কারো সম্পত্তি ওয়াক্ফ করতে পারবে না; কেননা তা গ্রহণ করা জায়েয নয়। এছাড়া ‘মওকুফাহ’ মালিকানায় অন্তর্ভুক্ত হওয়াতে যেন কোন বাধা না থাকে; এ শর্তের ভিত্তিতে শূকর ওয়াক্ফ করা যায় না, কেননা শূকর মুসলমানদের মালিকানায় অন্তর্ভূক্ত হয় না।
-প্রদান ও হস্তান্তরযোগ্য হওয়া; এ কারণে পলাতক দাসকে ওয়াক্ফ করা সঠিক নয়।[১৮]
-মওকুফাহ থেকে উপকৃত হওয়া সম্ভব হয় এবং এর মাধ্যমে মূল সম্পদ যেন নষ্ট, বিলুপ্ত ও শেষ না হয়ে যায়। এ শর্তের ভিত্তিতে টাকা ওয়াক্ফ করা যায় না, কেননা তা থেকে উপকৃত হলে ও তা ব্যবহার করলে শেষ হয়ে যায়।[১৯]
ওয়াকিফ
ওয়াকিফকে বালেগ ও প্রাপ্ত বয়স্ক হতে হবে; একইভাবে সম্পত্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার যেন অধিকার তার থাকে।[২০]
মওকুফুন আলাইহিম
যাদের উদ্দেশ্যে ওয়াক্ফ করা হয় (মওকুফুন আলাইহিম) তাদের অস্তিত্বমান থাকা আবশ্যক; এর জন্য ব্যক্তিত্ব বা ব্যক্তিত্বগণ যেন নির্দিষ্ট করা হয় এবং তাদের জন্য ওয়াক্ফ করাও যেন হারাম না হয়। এ শর্তের ভিত্তিতে যে এখনও জন্ম নেয়নি তার উদ্দেশ্যে কোন কিছু ওয়াক্ফ করা যাবে না। একইভাবে ডাকাত ও কাফেরে হারবি’র জন্যও ওয়াক্ফ করা সঠিক নয়, কেননা তাদের জন্য ওয়াক্ফ করা হারাম।[২১]
ওয়াক্ফ
ওয়াক্ফ নিম্নের শর্ত সাপেক্ষে সঠিক:
-চিরস্থায়ীভাবে ওয়াক্ফ করা, অর্থাৎ ওয়াক্ফ নির্দিষ্ট সময়ের জন্য হলে চলবে না। সুতরাং, নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ওয়াক্ফ করা সঠিক নয়। একইভাবে একক কোন ব্যক্তির জন্যও ওয়াক্ফ করা যায় না; কেননা এক্ষেত্রে তার মৃত্যুর সাথে সাথে ওয়াক্ফও শেষ হয়ে যাবে।
-মওকুফাহ’র বিদ্যমান হওয়া; অর্থাৎ ওয়াক্ফ করার সময় ‘মওকুফাহ’ মজুদ ও বিদ্যমান থাকা।, সুতরাং ভবিষ্যতে হস্তগত হবে এমন কোন সম্পদের জন্য ওয়াকফের আকদ করা যাবে না।
-মওকুফাহ ওয়াকিফের কাছ থেকে না নেয়া অবধি ওয়াক্ফ সংঘটিত হবে না এবং ঐ সম্পদ ওয়াকিফের সম্পদ বলে গন্য হবে।
-মওকুফাহ’কে ওয়াকিফের মালিকানা থেকে বের করে দিতে হবে, এ শর্তের ভিত্তিতে কেউ নিজের সম্পত্তিকে নিজের জন্য ওয়াক্ফ করতে পারবে না।[২২]
ওয়াক্ফ সংশ্লিষ্ট আহকাম
মাসআলা-মাসায়েল সংশ্লিষ্ট গ্রন্থ তৌযিহুল মাসায়েল থেকে সংকলিত ওয়াক্ফ বিষয়ক কতিপয় আহকাম:
-ওয়াক্ফকৃত সম্পদ ওয়াকিফের মালিকানা থেকে বের করে দিতে হবে এবং ওয়াকফের পর ওয়াকিফ, মওকুফাহ সম্পদ বিক্রি বা দান করা অথবা কারো জন্য উত্তরাধিকার হিসেবে রেখে যাওয়ার অধিকার রাখবে না।
-ওয়াক্ফকৃত সম্পদ ক্রয় ও বিক্রয় যোগ্য নয়।
-কিছু কিছু মারজায়ে তাক্বলীদের ফতওয়ার ভিত্তিতে, ওয়াকফের করার জন্য ওয়াকফের জন্য নির্দিষ্ট সিগাহ পড়া আবশ্যক; তবে আরবি ভাষায় পড়া জরুরি নয়; আবার কিছু কিছু মারজার দৃষ্টিতে সিগাহ পাঠ করার আবশ্যকতা নেই। তাদের মতে, ওয়াকফের উদ্দেশ্যে কোন কিছু লেখা বা কোন কিছু করাটাই ‘ওয়াক্ফ করা’ হিসেবে বিবেচিত এবং ওয়াক্ফও সহিহ বলে গন্য হবে।
-কিছু কিছু মারজার ফতওয়ার ভিত্তিতে, ওয়াক্ফ সহিহ হওয়ার জন্য যাদের উদ্দেশ্যে ওয়াক্ফ করা হচ্ছে তাদের পক্ষ থেকে গ্রহণ করার শর্ত নেই; চাই তা ওয়াকফে আম হোক বা ওয়াকফে খাস। তবে অপর কিছু মারজার মত হল, ওয়াকফে খাসে’র ক্ষেত্রে যে ব্যক্তিত্ব বা যাদের উদ্দেশ্যে ওয়াক্ফ করা হচ্ছে তাদের পক্ষ থেকে কবুল করা ওয়াক্ফ সহিহ হওয়ার শর্ত সাপেক্ষ।
-নিজের জন্য কোন সম্পদ ওয়াক্ফ করা যায় না। তবে যদি কেউ কোন সম্পদকে গরীব ও অসহায়দের জন্য ওয়াক্ফ করে থাকে এবং পরবর্তীতে নিজেই অভাবগ্রস্ত হয়ে যায় সেক্ষেত্রে সে ঐ ওয়াক্ফকৃত সম্পদ থেকে উপকৃত হতে পারবে।
-মওকুফাহ সম্পদ নষ্ট হয়ে গেলেও তা ওয়াক্ফ থেকে খারিজ হয়ে যায় না। বরং তা সংস্কারযোগ্য হলে সংস্কার করা আবশ্যক। আর সংস্কার অযোগ্য হলে তা বিক্রি করে ওয়াকিফের উদ্দেশ্যের নিকটতম কোন কাজে খরচ করতে হবে। যদি তাও সম্ভব নয়, তবে ঐ অর্থকে কল্যাণমূলক কোন কাজে ব্যয় করতে হবে।[২৩]
গ্রন্থ পরিচিতি
ওয়াক্ফ বিষয়ে রচিত গ্রন্থাবলী:
-মুহাম্মাদ হাসান হায়েরি ইয়াযদি রচিত ‘ওয়াক্ফ দার ফিকহে ইসলামি ওয়া নাকশে অন দার শোকুফায়ীয়ে এক্তেসাদ’। এ গ্রন্থে ইসলাম ধর্মে ওয়াকফের গুরুত্ব, ইসলাম পূর্বে ওয়াকফের ইতিহাস, অমুসলিম বিভিন্ন জাতি’র মাঝে ওয়াকফের স্থান, মহানবি (স.) ও ইমামগণ (আ.)-এর মওকুফাত, বিভিন্ন মাযহাবের দৃষ্টিতে ওয়াকফের ফিকাহগত বিধান, ওয়াকফের পরিভাষা পরিচিতি, ওয়াকফের সম্পদ থেকে উপার্জিত অর্থ ব্যয় করার পন্থা, ইসলামি অর্থনীতির লক্ষ্য বাস্তবায়নে ওয়াকফের ভূমিকা ইত্যাদি বিষয় প্রসঙ্গে আলোকপাত করা হয়েছে।
-মুহাম্মাদ উবাইদুল কুবাইসী রচিত ‘আহকামুল ওয়াক্ফ ফিশ শারিয়াতিল ইসলামিয়্যাহ’। গ্রন্থটি প্রথমবার ১৯৭৭ ইং সালে ইরাকে প্রকাশিত হয়।[২৪] এ গ্রন্থে বিভিন্ন মুসলিম মাযহাবের (জাফারি, হাম্বালি, হানাফি, শাফেয়ি, যাইদি, যাহেরি ও মালেকি) ফকীহগণের মতামত পর্যালোচনা করা হয়েছে।[২৫]
-‘ফারহাঙ্গে ইস্তিলাহাতে ওয়াক্ফ’ গ্রন্থটি উবাইদুল্লাহ আতিকী, ইজ্জুদ্দীন তুনি ও খালেদ শুয়াইব রচিত ‘আল-মুস্তালাহাতুল ওয়াকফিয়্যাহ’-এর অনুবাদ; যা আব্বাস ইসমাঈল যাদেহ অনুবাদ করেছেন। এতে ১০৬টি নিবন্ধে ওয়াক্ফ প্রসঙ্গে আহলে সুন্নতের ৪ মাযহাবের দৃষ্টিভঙ্গী সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।[২৬]
-জাফার সুবহানি রচিত ‘আহকামুল ওয়াক্ফ ফিশ শারিয়াতিল ইসলামিয়্যাতিল গাররা’; লেখকের ভাষ্যানুযায়ী, এ গ্রন্থে ওয়াক্ফ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে মুতাওয়াল্লিগণ যে সকল সমস্যায় পড়ে থাকেন সেগুলো সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছে।[২৭]
তথ্যসূত্র
- ↑ দ্র: মুহাক্কেক হিল্লি, শারায়েউল ইসলাম, মুস্তালাহাতুল ফিকহ, ১৪০৮ হি., খণ্ড ২, পৃ. ১৬৫; আল্লামা হিল্লি, তাহরিরুল আহকাম আল-শারীয়্যাহ, ১৪২০ হি., খণ্ড ৩, পৃ. ২৮৯।
- ↑ মিশকিনী, মুস্তালাহাতুল ফিকহ, ১৪২৮ হি., পৃ. ৫৬৮।
- ↑ মুহাক্কেক হিল্লি, শারায়েউল ইসলাম, ১৪০৯ হি., খণ্ড ২, পৃ. ১৭১।
- ↑ মিশকিনী, মুস্তালাহাতুল ফিকহ, ১৪২৮ হি., পৃ. ৫৬৮।
- ↑ মিশকিনী, মুস্তালাহাতুল ফিকহ, ১৪২৮ হি., পৃ. ৫৬৭; দ্র: তাবাতাবায়ী ইয়াযদি, তাকমিলাতুল উরওয়াতুল উসকা, কিতাব ফুরুশিয়ে দাওয়ারি, খণ্ড ১, পৃ. ১৮৪।
- ↑ কুলাইনি, আল-কাফি, ১৪০৭ হি., খণ্ড ৭, পৃ. ৫৭।
- ↑ তাবাতাবায়ী ইয়াযদি, তাকমিলাতুল উরওয়াতুল উসকা, কিতাব ফুরুশিয়ে দাওয়ারি, খণ্ড ১, পৃ. ১৮৪।
- ↑ জান্নাতি, আদভারে ফিকহ ওয়া তাহাভভোলাতে অন, পৃ. ৪৩৩
- ↑ দ্র: মুহাক্কেক হিল্লি, শারায়েউল ইসলাম, ১৪০৯ হি., খণ্ড ২, পৃ. ১৬৫-১৭৬; তাবাতাবায়ী ইয়াযদি, আল-উরওয়াতুল উসকা, কিতাব ফুরুশিয়ে দাওয়ারি, খণ্ড ১, পৃ. ১৮৪-২৭৪।
- ↑ দ্র: সাদুক, মান লা ইয়াহদ্বুরুহুল ফাকীহ, ১৪১৩ হি., খণ্ড ৪, পৃ. ২৩৭; কুলাইনি, আল-কাফি, ১৪০৭ হি., খণ্ড ৭, পৃ. ৩০।
- ↑ মুআসসেসেয়ে দায়েরাতুল মাআরেফ ফিকহে ইসলামি বার মাযহাবে আহলে বাইত (আ.), ফারহাঙ্গে ফিকহ মোতাবেকে মাযহাবে আহলে বাইত আলাইহিমুস সালাম, ১৩৯২-১৩৯৫ ফার্সি সন, খণ্ড ৪, পৃ. ৪৯৫
- ↑ সালিমি ফার, নেগাহি বে ওয়াক্বফ ওয়া আসারে একতেসাদি-এজতেমায়িয়ে অন, ১৩৭০ ফার্সি সন, পৃ. ৫৯।
- ↑ সালিমি ফার, নেগাহি বে ওয়াক্বফ ওয়া আসারে একতেসাদি-এজতেমায়িয়ে অন, ১৩৭০ ফার্সি সন, পৃ. ৬৯-৭০।
- ↑ সালিমি ফার, নেগাহি বে ওয়াক্বফ ওয়া আসারে একতেসাদি-এজতেমায়িয়ে অন, ১৩৭০ ফার্সি সন, পৃ. ১৪৫-১৪৬।
- ↑ আসিলী, কিতাব শেনাছিয়ে ওয়াক্বফ, পৃ. ১০৮।
- ↑ আসিলী, কিতাব শেনাছিয়ে ওয়াক্বফ, পৃ. ১০৭।
- ↑ আসিলী, কিতাব শেনাছিয়ে ওয়াক্বফ, পৃ. ১০৮।
- ↑ মুহাক্কেক হিল্লি, শারায়েউল ইসলাম, ১৪০৯ হি., খণ্ড ২, পৃ. ৪৪৪।
- ↑ মুহাক্কেক হিল্লি, শারায়েউল ইসলাম, ১৪০৯ হি., খণ্ড ২, পৃ. ১৬৬-১৬৭।
- ↑ মুহাক্কেক হিল্লি, শারায়েউল ইসলাম, ১৪০৯ হি., খণ্ড ২, পৃ. ১৬৭।
- ↑ মুহাক্কেক হিল্লি, শারায়েউল ইসলাম, ১৪০৯ হি., খণ্ড ২, পৃ. ১৬৮।
- ↑ মুহাক্কেক হিল্লি, শারায়েউল ইসলাম, ১৪০৯ হি., খণ্ড ২, পৃ. ১৭০-১৭১।
- ↑ বানি হাশেমি খোমেনী, তৌযিহুল মাসায়েলে মারাজেঅ, ১৮০৯ হি., খণ্ড ২, পৃ. ৬৩০-৬৩৮।
- ↑ আল-কুবাইসি, আহকামে ওয়াক্বফ দার শারীয়াতে ইসলাম, মোকাদ্দামেয়ে মোতারজেম, ১৩৬৪ ফার্সি সন, পৃ. ৮।
- ↑ আল-কুবাইসি, আহকামে ওয়াক্বফ দার শারীয়াতে ইসলাম, মোকাদ্দামেয়ে মোতারজেম, ১৩৬৪ ফার্সি সন, পৃ. ৯।
- ↑ তুনি ওয়া দিগারান, ফারহাঙ্গে এস্তেলাহাতে ওয়াক্বফ, মোকাদ্দামেয়ে মোতারজেম, ১৩৮৮ ফার্সি সন, পৃ. ৫।
- ↑ দ্র:সোবহানি, আহকামুল ওয়াক্বফি ফিশ শারীয়্যাতিল ইসলামিয়্যাতিল গাররা, ১৪৩৮ হি., পৃ. ৬।
গ্রন্থপঞ্জি
- ইবনে আবি জামহুর, মুহাম্মাদ বিন যাইনুদ্দীন, আওয়ালি আল্লাআলি আল আযিযিয়্যাহ ফিল আহাদিসিদ দ্বীনিয়্যাহ, তাসহিহ: মুজতবা আরাকি, কোম, দারু সাইয়্যিদুশ শুহাদা, ১৪০৫ হি.।
- ইবনে হায়ুন, নো’মান বিন মুহাম্মাদ, দাআয়েমুল ইসলাম, তাসহিহ: আসিফ ফেইযি, কোম, মুআসসেসাতু আলুল বাইত আলাইহিমুস সালাম, ১৩৮৫ হি.।
- আসিলি, সুসান, কিতাব শেনাছিয়ে ওয়াক্বফ, দার মিরাসে জাওদান, সংখ্যা ৪, ১৩৭৩ ফার্সি সন।
- আল-কুবাইসি, মুহাম্মাদ উবাইদ, আহকামে ওয়াক্বফ দার শরীয়তে ইসলাম: ফিকহী, হুকুকী, কাযায়ী, তরজমা: আহমাদ সাদেকী গুলযার, এদারে কুল্লে হাজ্জ ওয়া উকাফ ওয়া উমুরে খেইরিয়ে উস্তানে মযান্দারান, প্রথম সংস্করণ, ১৩৬৪ ফার্সি সন।
- বনি হাশেমি খোমেনি, সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ হুসাইন, তৌযিহুল মাসায়েলে মারাজে’, মোতাবেক বা ফতওয়ায়ে শোনযদাহ নাফার আয মারাজেয়ে আযামে তাক্বলীদ, কোম, দাফতারে ইন্তেশারাতে ইসলামি, ওয়াবাস্তে বে জামেয়ে মোদারেরসীনে হাওযা ইলমিয়্যাহ-এ কোম, অষ্টম সংস্করণ, ১৪২৪ হি.।
- তুনি, এজুদ্দীন, খালিদ শুয়াইব এবং ওবায়দুল্লাহ আতিকী, ফারহাঙ্গে এস্তেলাহাতে ওয়াক্বফ, তরজমা আব্বাস ইসমাঈলি যাদেহ, মাশহাদ, বুনিয়াদে পেঝুহেশহায়ে অস্তানে কুদসে রাজাভি, ১৩৮৮ ফার্সি সন।
- সোবহানি, জা’ফার, আহকামুল ওয়াক্বফ ফিশ শারীয়্যাতিল ইসলামিয়্যাহ আল-গাররা, কোম, মুআসসেসেয়ে ইমাম সাদেক, প্রথম সংস্করণ, ১৪৩৮ হি.।
- সালিমি ফার, মুস্তাফা, নেগাহি বে ওয়াক্বফ ওয়া আসারে একতেসাদি-এজতেমায়িয়ে অন, মাশহাদ, বুনিয়াদে পেঝুহেশহায়ে অস্তানে কুদসে রাজাভি, প্রথম সংস্করণ, ১৩৭০ ফার্সি সন।
- সাদুক, মুহাম্মাদ বিন আলী, মান লা ইয়াহদ্বুরুহুল ফাকীহ, তাহকিক ওয়া তাসহিহ: আলী আকবার গাফ্ফারী, কোম, দাফতারে ইন্তেশারাতে ইসলামি ওয়াবাস্তে বে জামেয়ে মুদারেরসীনে হাওযা ইলমিয়ায়ে কোম, দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৪১৩ হি.।
- আল্লামা হিল্লি, হাসান বিন ইউসুফ তাহরিরুল আহকাম আল-শারীয়্যাহ আলা মাযহাবিল ইমামিয়্যাহ, তাহকিক/তাসহিহ: ইব্রাহিম বাহাদুরি, কোম, মুআসসেসেয়ে ইমাম সাদেক (আ.), প্রথম সংস্করণ, ১৪২০ হি.।
- ফাযিল মিকদাদ, মিকদাদ বিন আব্দুল্লাহ, কানযুল ইরফান ফি ফিকহীল কুরআন, তেহরান, মাক্তাবাতুল মুর্তাযাভিয়্যাহ।
- কুলাইনি, মুহাম্মাদ বিন ইয়াকুব, আল-কাফি, তাহকিক ওয়া তাসহিহ: আলী আকবার গাফ্ফারি, তেহরান, দারুল কুতুব আল-ইসলামিয়্যাহ, চতুর্থ সংস্করণ, ১৪০৭ হি.।
- মুহাক্কেক হিল্লি, জা’ফার বিন হাসান, শারায়েউল ইসলাম ফি মাসায়েলিল হালাল ওয়া হারাম, তাহকিক ওয়া তাসহিহ: আব্দুল হুসাইন মুহাম্মাদ আলী বাকাল, কোম, ইসমাঈলিয়ান, দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৪০৮ হি.।
- মিশকিনী, মির্যা আলী, মুস্তালাহাতুল ফিকহ, কোম, আল-হাদি, ১৪২৭ হি.।