বিষয়বস্তুতে চলুন

সাকীফার ঘটনা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
৮ নং লাইন: ৮ নং লাইন:


== ঘটনার স্থান ==
== ঘটনার স্থান ==
সাকীফা ছিল; সর্বসাধারণের উপস্থিতিতে কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে আরব গোত্রগুলোর পরামর্শসভার স্থান; যার উপর ছায়ারও ব্যবস্থা ছিল। [১] আল্লাহর [[রাসূলের (স.) ইন্তিকাল|রাসূলের (স.) ইন্তিকালের]] পর [[আনসার]] ও [[মুহাজির|মুহাজিরদের]] একাংশ যে সাকীফায় জড়ো হয়েছিল তা ছিল মূলতঃ [[মদিনা|মদিনার]] বাসিন্দা [[খাযরাজ|খাযরাজের]] উপগোত্র বনু সায়েদা’র। মহানবির (স.) হিজরতের আগ পর্যন্ত তাদের পরামর্শসভাগুলো ঐ স্থানেই অনুষ্ঠিত হলেও মহানবির (স.) মদিনায় প্রবেশের পর থেকে প্রায় ১০ বছর (মহানবির -স.- ইন্তিকাল পর্যন্ত) কার্যত স্থানটি পরিত্যক্ত হয়েছিল এবং আল্লাহর রাসূলের (স.) ইন্তিকালের পর তাঁর স্থলাভিষিক্ত নির্বাচনের বিষয়ে মুহাজির ও আনসারদের সমাবেশের মাধ্যমে ১০ বছর পর সাকীফায় প্রথম সমাবেশ ও শুরা অনুষ্ঠিত হয়।[২]
সাকীফা ছিল; সর্বসাধারণের উপস্থিতিতে কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে আরব গোত্রগুলোর পরামর্শসভার স্থান; যার উপর ছায়ারও ব্যবস্থা ছিল।<ref>ইয়াকুত হামাভি, মু’জামুল বুলদান, দারু সাদর, খণ্ড ৩, পৃ. ২২৮-২২৯।</ref> আল্লাহর [[রাসূলের (স.) ইন্তিকাল|রাসূলের (স.) ইন্তিকালের]] পর [[আনসার]] ও [[মুহাজির|মুহাজিরদের]] একাংশ যে সাকীফায় জড়ো হয়েছিল তা ছিল মূলতঃ [[মদিনা|মদিনার]] বাসিন্দা [[খাযরাজ|খাযরাজের]] উপগোত্র বনু সায়েদা’র। মহানবির (স.) হিজরতের আগ পর্যন্ত তাদের পরামর্শসভাগুলো ঐ স্থানেই অনুষ্ঠিত হলেও মহানবির (স.) মদিনায় প্রবেশের পর থেকে প্রায় ১০ বছর (মহানবির -স.- ইন্তিকাল পর্যন্ত) কার্যত স্থানটি পরিত্যক্ত হয়েছিল এবং আল্লাহর রাসূলের (স.) ইন্তিকালের পর তাঁর স্থলাভিষিক্ত নির্বাচনের বিষয়ে মুহাজির ও আনসারদের সমাবেশের মাধ্যমে ১০ বছর পর সাকীফায় প্রথম সমাবেশ ও শুরা অনুষ্ঠিত হয়।<ref>রাজাবি দাভানি, তাহলিল ওয়াকে সাকীফা বনু সায়েদা বা রুইকার্দ বে নাহজুল বালাগাহ, ১৩৯৩ ফার্সি সন, পৃ. ৮০।</ref>


== ঘটনার বিবরণ ==
== ঘটনার বিবরণ ==
[[সাকীফা বনু সায়েদা|সাকীফা বনু সায়েদায়]] মুসলমানদের একটি দলের সমবেত হওয়ার ঘটনার রেওয়ায়েতটি [[আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস]], [[ওমর ইবনে খাত্তাব]] থেকে বর্ণনা করেছেন; এ ঘটনা সংশ্লিষ্ট সকল রেওয়ায়েতের উৎস এই রেওয়ায়েতটিই। অপর রেওয়ায়েতগুলো [[ইবনে হিশাম]], [[মুহাম্মাদ জারির তাবারি]], [[আব্দুর রাজ্জাক ইবনে হাম্মাম]], [[মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাঈল বুখারি]] এবং [[ইবনে হাম্বাল]] সংক্ষেপে সামান্য পার্থক্যে ভিন্ন ভিন্ন রাভি মারফত বর্ণনা করেছেন।[৩]
[[সাকীফা বনু সায়েদা|সাকীফা বনু সায়েদায়]] মুসলমানদের একটি দলের সমবেত হওয়ার ঘটনার রেওয়ায়েতটি [[আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস]], [[ওমর ইবনে খাত্তাব]] থেকে বর্ণনা করেছেন; এ ঘটনা সংশ্লিষ্ট সকল রেওয়ায়েতের উৎস এই রেওয়ায়েতটিই। অপর রেওয়ায়েতগুলো [[ইবনে হিশাম]], [[মুহাম্মাদ জারির তাবারি]], [[আব্দুর রাজ্জাক ইবনে হাম্মাম]], [[মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাঈল বুখারি]] এবং [[ইবনে হাম্বাল]] সংক্ষেপে সামান্য পার্থক্যে ভিন্ন ভিন্ন রাভি মারফত বর্ণনা করেছেন।<ref>মাদেলুঙ্গ, জা-নশীনী মুহাম্মাদ, ১৩৭৭ ফার্সি সন, পৃ. ৪৭।</ref>


[[মহানবি (স.)|মহানবির (স.)]] ইন্তিকালের সংবাদ প্রচার হওয়ার পর [[আনসার|আনসারদের]] একটি দল নিজেদের ভবিষ্যত এবং মহানবির (স.) জা-নশীন (স্থলাভিষিক্ত) নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সাকীফায় সমবেত হন। ঐতিহাসিক সূত্রসমূহের বর্ণনা অনুযায়ী, সভার শুরুতে [[খাযরাজ গোত্র|খাযরাজ গোত্রপতি]] [[সা’দ ইবনে উবাদাহ]] গুরুতর অসুস্থ হওয়ার কারণে স্বীয় পুত্র (কায়েস বিন সা’দ বিন উবাদাহ) মারফত উপস্থিত আনসারদের উদ্দেশ্যে কথা বলেন। তিনি বিভিন্ন যুক্তি-দলীল উপস্থাপন পূর্বক মহানবি (স.) পরবর্তী সময়ে মুসলমানদের নেতৃত্ব আনসারের অধিকার বলে আখ্যায়িত করে তাদেরকে দায়িত্ব হাতে তুলে নেয়ার আহবান জানান। উপস্থিত সকলে তার কথায় সমর্থন করে সা’দকে নিজেদের শাসক হিসেবে নির্বাচনের কথা ঘোষণা দেয়। পাশাপাশি তারা এ বিষয়টির প্রতিও জোর তাগিদ দিলেন যে, সা’দের মত ও সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তারা কোন পদক্ষেপ নিবেন না।[৪] কিন্তু উপস্থিতির কেউ কেউ মুহাজিরদের পক্ষ থেকে এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতার বিষয়টি উত্থাপন করে মুহাজিরগণ তাদের এ সিদ্ধান্ত মানতে অস্বীকৃতি জানাবেন বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় আনসারদের মাঝ থেকে একজন আমির এবং মুহাজিরদের মাঝ থেকে আরেকজন আমির -এ প্রস্তাবও উত্থাপিত হয়।[৫]
[[মহানবি (স.)|মহানবির (স.)]] ইন্তিকালের সংবাদ প্রচার হওয়ার পর [[আনসার|আনসারদের]] একটি দল নিজেদের ভবিষ্যত এবং মহানবির (স.) জা-নশীন (স্থলাভিষিক্ত) নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সাকীফায় সমবেত হন। ঐতিহাসিক সূত্রসমূহের বর্ণনা অনুযায়ী, সভার শুরুতে [[খাযরাজ গোত্র|খাযরাজ গোত্রপতি]] [[সা’দ ইবনে উবাদাহ]] গুরুতর অসুস্থ হওয়ার কারণে স্বীয় পুত্র (কায়েস বিন সা’দ বিন উবাদাহ) মারফত উপস্থিত আনসারদের উদ্দেশ্যে কথা বলেন। তিনি বিভিন্ন যুক্তি-দলীল উপস্থাপন পূর্বক মহানবি (স.) পরবর্তী সময়ে মুসলমানদের নেতৃত্ব আনসারের অধিকার বলে আখ্যায়িত করে তাদেরকে দায়িত্ব হাতে তুলে নেয়ার আহবান জানান। উপস্থিত সকলে তার কথায় সমর্থন করে সা’দকে নিজেদের শাসক হিসেবে নির্বাচনের কথা ঘোষণা দেয়। পাশাপাশি তারা এ বিষয়টির প্রতিও জোর তাগিদ দিলেন যে, সা’দের মত ও সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তারা কোন পদক্ষেপ নিবেন না।<ref>ইবনে কুতাইবাহ, আল-ইমামাতু ওয়াস সিয়াসাহ, ১৪১০ হি., খণ্ড ১, পৃ. ২২।</ref> কিন্তু উপস্থিতির কেউ কেউ মুহাজিরদের পক্ষ থেকে এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতার বিষয়টি উত্থাপন করে মুহাজিরগণ তাদের এ সিদ্ধান্ত মানতে অস্বীকৃতি জানাবেন বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় আনসারদের মাঝ থেকে একজন আমির এবং মুহাজিরদের মাঝ থেকে আরেকজন আমির -এ প্রস্তাবও উত্থাপিত হয়।<ref>ইবনে কুতাইবাহ, আল-ইমামাতু ওয়াস সিয়াসাহ, ১৪১০ হি., খণ্ড ১, পৃ. ২২।</ref>


সভা ও এর উদ্দেশ্যের সংবাদ [[আবুবকর ইবনে আবু কুহাফা]] ও [[ওমর ইবনে খাত্তাব|ওমর ইবনে খাত্তাবের]] কাছে গেলে তারা দু’জন [[আবু উবায়দা জাররাহ|আবু উবায়দা জাররাহ’র]] সাথে সাকীফায় যান। বৈঠকে উপস্থিত হয়ে ওমর ইবনে খাত্তাবকে থামিয়ে আবুবকর নিজেই কথা বলা শুরু করলেন, তিনি মহানবির (স.) স্থলাভিষিক্ততার ঘটনায় মুহাজিরদের শ্রেষ্ঠত্ব ও কুরাইশদের অগ্রাধিকারের কথা উত্থাপন করলেন।[৬] উপস্থিতদের কেউ কেউ তার কথার সমর্থন করলো আবার কেউ বিরোধিতা; আবার কেউ কেউ এ ক্ষেত্রে হযরত আলীর যোগ্যতা এবং তিনি ব্যতীত অন্য কারো হাতে বাইয়াত না করার প্রতি ইঙ্গিত করলেন।[৭] কিন্তু অবশেষে আবুবকর, ওমর ও আবু উবাইদা’কে এ মাকামের জন্য যোগ্য হিসেবে ঘোষণা করলে তারা দু’জনই আবুবকরের প্রস্তাবনার বিরোধিতা করে।[৮]
সভা ও এর উদ্দেশ্যের সংবাদ [[আবুবকর ইবনে আবু কুহাফা]] ও [[ওমর ইবনে খাত্তাব|ওমর ইবনে খাত্তাবের]] কাছে গেলে তারা দু’জন [[আবু উবায়দা জাররাহ|আবু উবায়দা জাররাহ’র]] সাথে সাকীফায় যান। বৈঠকে উপস্থিত হয়ে ওমর ইবনে খাত্তাবকে থামিয়ে আবুবকর নিজেই কথা বলা শুরু করলেন, তিনি মহানবির (স.) স্থলাভিষিক্ততার ঘটনায় মুহাজিরদের শ্রেষ্ঠত্ব ও কুরাইশদের অগ্রাধিকারের কথা উত্থাপন করলেন।[৬] উপস্থিতদের কেউ কেউ তার কথার সমর্থন করলো আবার কেউ বিরোধিতা; আবার কেউ কেউ এ ক্ষেত্রে হযরত আলীর যোগ্যতা এবং তিনি ব্যতীত অন্য কারো হাতে বাইয়াত না করার প্রতি ইঙ্গিত করলেন।[৭] কিন্তু অবশেষে আবুবকর, ওমর ও আবু উবাইদা’কে এ মাকামের জন্য যোগ্য হিসেবে ঘোষণা করলে তারা দু’জনই আবুবকরের প্রস্তাবনার বিরোধিতা করে।[৮]
confirmed, templateeditor
১,৯৬২টি

সম্পাদনা