বিষয়বস্তুতে চলুন

সাকীফার ঘটনা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

২৪ নং লাইন: ২৪ নং লাইন:
সাকীফায়  উপস্থিত আনসার এবং বিলম্বে আসা মুহাজিরদের মাঝে বিভিন্ন কথা রদবদল হয়েছিল সেদিন। তবে আবুবকর ও তার সাথীদের কথা সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছিল; উপস্থিতদের কয়েকজনের কথোপকথন নিম্নরূপ:
সাকীফায়  উপস্থিত আনসার এবং বিলম্বে আসা মুহাজিরদের মাঝে বিভিন্ন কথা রদবদল হয়েছিল সেদিন। তবে আবুবকর ও তার সাথীদের কথা সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছিল; উপস্থিতদের কয়েকজনের কথোপকথন নিম্নরূপ:


* '''সা’দ ইবনে উবাদাহ:''' মূলতঃ তিনি সভার শুরুতে এবং আবুবকর ও তার সঙ্গীদের আগমনের পূর্বে কথা বলেছিলেন। অবশ্য অসুস্থতা জনিত দুর্বলতার কারণে তার পুত্র তার কথা জনতার উদ্দেশে পৌঁছে দেন। তার কথার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়বস্তুগুলো ছিল: আনসারের ফজিলত ও ইতিহাস, অপর মুসলমানদের উপর তাদের শ্রেষ্ঠত্ব, ইসলাম ও মহানবির (স.) প্রতি তাদের খেদমত এবং ওফাতের পূর্বে আনসারদের উপর মহানবির (স.) সন্তুষ্টি ইত্যাদি। এসব যুক্তি উপস্থাপন করে তিনি মহানবির (স.) স্থলাভিষিক্ত হওয়ার বিষয়ে আনসারকে অধিক যোগ্য বলে ঘোষণা করেন এবং তাদেরকে দায়িত্ব হাতে নেয়ার আহবান জানান। এছাড়া, তিনি আনসারদের থেকে একজন এবং মুহাজিরদের থেকে একজন আমির নির্বাচনের প্রস্তাবকে পরাজয় ও পশ্চাদপসরণ বলে অভিহিত করেন।[১১]
* '''[[সা’দ ইবনে উবাদাহ]]:''' মূলতঃ তিনি সভার শুরুতে এবং আবুবকর ও তার সঙ্গীদের আগমনের পূর্বে কথা বলেছিলেন। অবশ্য অসুস্থতা জনিত দুর্বলতার কারণে তার পুত্র তার কথা জনতার উদ্দেশ্যে পৌঁছে দেন। তার কথার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়বস্তুগুলো ছিল: আনসারের ফজিলত ও ইতিহাস, অপর মুসলমানদের উপর তাদের শ্রেষ্ঠত্ব, ইসলাম ও [[মহানবি (স.)|মহানবির (স.)]] প্রতি তাদের খেদমত এবং ওফাতের পূর্বে আনসারদের উপর মহানবির (স.) সন্তুষ্টি ইত্যাদি। এসব যুক্তি উপস্থাপন করে তিনি মহানবির (স.) স্থলাভিষিক্ত হওয়ার বিষয়ে আনসারকে অধিক যোগ্য বলে ঘোষণা করেন এবং তাদেরকে দায়িত্ব হাতে নেয়ার আহবান জানান। এছাড়া, তিনি আনসারদের থেকে একজন এবং মুহাজিরদের থেকে একজন আমির নির্বাচনের প্রস্তাবকে পরাজয় ও পশ্চাদপসরণ বলে অভিহিত করেন।[১১]
* '''আবুবকর ইবনে আবু কুহাফা:''' তার কথাই ছিল বৈঠকের ফলাফল নির্ধারক। তিনি কয়েকবার কথা বলেছিলেন, তার কথার বিষয়বস্তুগুলো ছিল এমন; আনসারদের উপর মুহাজিরদের শ্রেষ্ঠত্ব, মহানবির (সা.) রিসালাতের সমর্থনে অগ্রগামিতা,  ঈমান ও আল্লাহর ইবাদতে অগ্রগামিতা, মহানবির (স.) সাথে মুহাজিরদের ঘনিষ্ট সম্পর্ক ও আত্মীয়তা ইত্যাদি। উপস্থাপিত যুক্তির ভিত্তিতে মুহাজিরগণ নবীর (স.) স্থলাভিষিক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারী এবং খেদমত ও যোগ্যতার ভিত্তিতে আনসারগণ উজির হওয়ার জন্য যোগ্য; শাসক হওয়ার জন্য নয়, এছাড়া মুহাজিরদের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার বিরোধিতা কারীদের যুক্তি খণ্ডন ইত্যাদি। [১২]
* '''[[আবুবকর ইবনে আবু কুহাফা]]:''' তার কথাই ছিল বৈঠকের ফলাফল নির্ধারক। তিনি কয়েকবার কথা বলেছিলেন, তার কথার বিষয়বস্তুগুলো ছিল এমন; [[আনসার|আনসারদের]] উপর [[মুহাজির|মুহাজিরদের]] শ্রেষ্ঠত্ব, মহানবির (সা.) রিসালাতের সমর্থনে অগ্রগামিতা,  ঈমান ও আল্লাহর ইবাদতে অগ্রগামিতা, মহানবির (স.) সাথে মুহাজিরদের ঘনিষ্ট সম্পর্ক ও আত্মীয়তা ইত্যাদি। উপস্থাপিত যুক্তির ভিত্তিতে মুহাজিরগণ নবীর (স.) স্থলাভিষিক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারী এবং খেদমত ও যোগ্যতার ভিত্তিতে আনসারগণ উজির হওয়ার জন্য যোগ্য; শাসক হওয়ার জন্য নয়, এছাড়া মুহাজিরদের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার বিরোধিতাকারীদের যুক্তি খণ্ডন ইত্যাদি। [১২]
* '''হাবাব ইবনে মুনযির:''' সাকীফাতে ২ বা ৩ দফায় কথা বলেছেন; প্রতিবারই তার কথাবার্তায় মুহাজিরদের বিরুদ্ধে হুমকির সূর ছিল অথবা আবুবকর ও ওমরের বিরুদ্ধে উস্কানী প্রদান।[১৩] তিনি তার কথার একাংশে প্রত্যেক গোত্র থেকে একজন করে আমির নির্বাচনের প্রস্তাবও দিয়েছিলেন।[১৪]
* '''[[হাবাব ইবনে মুনযির]]:''' সাকীফাতে ২ বা ৩ দফায় কথা বলেছেন; প্রতিবারই তার কথাবার্তায় মুহাজিরদের বিরুদ্ধে হুমকির সূর ছিল অথবা আবুবকর ও ওমরের বিরুদ্ধে উস্কানী প্রদান।[১৩] তিনি তার কথার একাংশে প্রত্যেক গোত্র থেকে একজন করে আমির নির্বাচনের প্রস্তাবও দিয়েছিলেন।[১৪]
* '''ওমর ইবনে খাত্তাব:''' তিনি অধিকাংশ ক্ষেত্রে আবুবকরের কথা সত্যায়ন এবং আবুবকর কর্তৃক উত্থাপিত যুক্তির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। ঐ যুক্তিগুলোর কয়েকটি হলো: যদি মহানবির (স.) স্থলাভিষিক্ত তাঁর আত্মীয়দের মধ্য থেকে কেউ হয় তবে সেক্ষেত্রে এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা আরবরা করবে না, দুই দল থেকে একজন করে আমির নির্বাচন সম্ভব নয়; কেননা এক খাপে দু’টি তলোয়ারের স্থান হয় না ইত্যাদি।[১৫]
* '''[[ওমর ইবনে খাত্তাব]]:''' তিনি অধিকাংশ ক্ষেত্রে আবুবকরের কথা সত্যায়ন এবং আবুবকর কর্তৃক উত্থাপিত যুক্তির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। ঐ যুক্তিগুলোর কয়েকটি হলো: যদি মহানবির (স.) স্থলাভিষিক্ত তাঁর আত্মীয়দের মধ্য থেকে কেউ হয় তবে সেক্ষেত্রে এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা আরবরা করবে না, দুই দল থেকে একজন করে আমির নির্বাচন সম্ভব নয়; কেননা এক খাপে দু’টি তলোয়ারের স্থান হয় না ইত্যাদি।[১৫]
* '''আবু উবাইদা জাররাহ:''' আনসারের উদ্দেশে তিনি দ্বীন ও মুসলিম উম্মাহ’র ঐক্যের ভিতে পরিবর্তন না আনা প্রসঙ্গে নিষেধ করে।[১৬]
* '''[[আবু উবাইদা জাররাহ]]:''' আনসারের উদ্দেশ্যে তিনি দ্বীন ও মুসলিম উম্মাহ’র ঐক্যের ভীতে পরিবর্তন না আনা প্রসঙ্গে নিষেধ করে।[১৬]
* '''বাশির ইবনে সা’দ:''' তিনি ছিলেন খাযরাজ গোত্রের ও আনসারদের একজন। তিনি কয়েক দফায় আবুবকর ও তার সঙ্গীদের কথার সমর্থন করেন এবং ‘আল্লাহকে ভয় করো’, একজন মুসলমানের অধিকারের বিরোধিতা করো না ইত্যাদি বাক্যের মাধ্যমে মুহাজিরগণের বিরোধিতা না করার জন্য আনসারগণকে নিষেধ করেন।[১৭]
* '''[[বাশির ইবনে সা’দ]]:''' তিনি ছিলেন খাযরাজ গোত্রের ও আনসারদের একজন। তিনি কয়েক দফায় আবুবকর ও তার সঙ্গীদের কথার সমর্থন করেন এবং ‘আল্লাহকে ভয় করো’, একজন মুসলমানের অধিকারের বিরোধিতা করো না ইত্যাদি বাক্যের মাধ্যমে মুহাজিরগণের বিরোধিতা না করার জন্য আনসারগণকে নিষেধ করেন।[১৭]
* '''আব্দুর রাহমান ইবনে আওফ:''' তিনি হযরত আলী (আ.), আবুবকর এবং ওমরের মত ব্যক্তিত্বগণের অবস্থানের বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিয়ে আনসারগণ এমন মাকামের অধিকারী নন বলে মন্তব্য করেন।[১৮]
* '''[[আব্দুর রাহমান ইবনে আওফ]]:''' তিনি হযরত আলী (আ.), আবুবকর এবং ওমরের মত ব্যক্তিত্বগণের অবস্থানের বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিয়ে আনসারগণ এমন মাকামের অধিকারী নন বলে মন্তব্য করেন।[১৮]
* '''যাইদ ইবনে আরকাম:''' তিনিও একজন আনসার; তিনি সাকীফায় আবুবকর ও আব্দুর রহমান ইবনে আওফ কর্তৃক উত্থাপিত যুক্তির বিপরীতে আলীকে (আ.) এমন ব্যক্তিত্ব হিসেবে তুলে ধরেন যিনি এ সকল বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। এছাড়া তিনি বলেন, যদি তিনি (আলী) বাইয়াতের জন্য অগ্রসর হন তবে কেউই তাঁর বিরোধিতা করবে না।[১৯]
* '''[[যাইদ ইবনে আরকাম]]:''' তিনিও একজন আনসার; তিনি সাকীফায় আবুবকর ও আব্দুর রহমান ইবনে আওফ কর্তৃক উত্থাপিত যুক্তির বিপরীতে [[ইমাম আলী (আ.)|আলীকে (আ.)]] এমন ব্যক্তিত্ব হিসেবে তুলে ধরেন যিনি এ সকল বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। এছাড়া তিনি বলেন, যদি তিনি (আলী) বাইয়াতের জন্য অগ্রসর হন তবে কেউই তাঁর বিরোধিতা করবে না।[১৯]


== যারা উপস্থিত ছিলেন ==
== যারা উপস্থিত ছিলেন ==
confirmed, templateeditor
১,৯৬২টি

সম্পাদনা