বিষয়বস্তুতে চলুন

সাকীফার ঘটনা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

১১ নং লাইন: ১১ নং লাইন:


== ঘটনার বিবরণ ==
== ঘটনার বিবরণ ==
সাকীফা বনু সায়েদায় মুসলমানদের একটি দলের সমবেত হওয়ার ঘটনার রেওয়ায়েতটি আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস, ওমর ইবনে খাত্তাব থেকে বর্ণনা করেছেন; এ ঘটনা সংশ্লিষ্ট সকল রেওয়ায়েতের উৎস এই রেওয়ায়েতটিই। অপর রেওয়ায়েতগুলো ইবনে হিশাম, মুহাম্মাদ জারির তাবারি, আব্দুর রাজ্জাক ইবনে হাম্মাম, মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাঈল বুখারি এবং ইবনে হাম্বাল সংক্ষেপে সামান্য পার্থক্যে ভিন্ন ভিন্ন রাভি মারফত বর্ণনা করেছেন।[৩]
[[সাকীফা বনু সায়েদা|সাকীফা বনু সায়েদায়]] মুসলমানদের একটি দলের সমবেত হওয়ার ঘটনার রেওয়ায়েতটি [[আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস]], [[ওমর ইবনে খাত্তাব]] থেকে বর্ণনা করেছেন; এ ঘটনা সংশ্লিষ্ট সকল রেওয়ায়েতের উৎস এই রেওয়ায়েতটিই। অপর রেওয়ায়েতগুলো [[ইবনে হিশাম]], [[মুহাম্মাদ জারির তাবারি]], [[আব্দুর রাজ্জাক ইবনে হাম্মাম]], [[মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাঈল বুখারি]] এবং [[ইবনে হাম্বাল]] সংক্ষেপে সামান্য পার্থক্যে ভিন্ন ভিন্ন রাভি মারফত বর্ণনা করেছেন।[৩]


মহানবির (স.) ইন্তিকালের সংবাদ প্রচার হওয়ার পর আনসারদের একটি দল নিজেদের ভবিষ্যত এবং মহানবির (স.) জা-নশীন (স্থলাভিষিক্ত) নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সাকীফায় সমবেত হন। ঐতিহাসিক সূত্রসমূহের বর্ণনা অনুযায়ী, সভার শুরুতে খাযরাজ গোত্রপতি সা’দ ইবনে উবাদাহ গুরুতর অসুস্থ হওয়ার কারণে স্বীয় পুত্র মারফত উপস্থিত আনসারদের উদ্দেশে কথা বলেন। তিনি বিভিন্ন যুক্তি-দলীল উপস্থাপন পূর্বক মহানবি (স.) পরবর্তী সময়ে মুসলমানদের নেতৃত্ব আনসারের অধিকার বলে আখ্যায়িত করে তাদেরকে দায়িত্ব হাতে তুলে নেয়ার আহবান জানান। উপস্থিত সকলে তার কথায় সমর্থন করে সা’দকে নিজেদের শাসক হিসেবে নির্বাচনের কথা ঘোষণা দেয়। পাশাপাশি তারা এ বিষয়টির প্রতিও জোর তাগিদ দিলেন যে, সা’দের মত ও সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তারা কোন পদক্ষেপ নিবেন না।[৪] কিন্তু উপস্থিতির কেউ কেউ মুহাজিরদের পক্ষ থেকে এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতার বিষয়টি উত্থাপন করে মুহাজিরগণ তাদের এ সিদ্ধান্ত মানতে অস্বীকৃতি জানাবেন বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় আনসারদের মাঝ থেকে একজন আমির এবং মুহাজিরদের মাঝ থেকে আরেকজন আমির -এ প্রস্তাবও উত্থাপিত হয়।[৫]
[[মহানবি (স.)|মহানবির (স.)]] ইন্তিকালের সংবাদ প্রচার হওয়ার পর [[আনসার|আনসারদের]] একটি দল নিজেদের ভবিষ্যত এবং মহানবির (স.) জা-নশীন (স্থলাভিষিক্ত) নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সাকীফায় সমবেত হন। ঐতিহাসিক সূত্রসমূহের বর্ণনা অনুযায়ী, সভার শুরুতে [[খাযরাজ গোত্র|খাযরাজ গোত্রপতি]] [[সা’দ ইবনে উবাদাহ]] গুরুতর অসুস্থ হওয়ার কারণে স্বীয় পুত্র (কায়েস বিন সা’দ বিন উবাদাহ) মারফত উপস্থিত আনসারদের উদ্দেশ্যে কথা বলেন। তিনি বিভিন্ন যুক্তি-দলীল উপস্থাপন পূর্বক মহানবি (স.) পরবর্তী সময়ে মুসলমানদের নেতৃত্ব আনসারের অধিকার বলে আখ্যায়িত করে তাদেরকে দায়িত্ব হাতে তুলে নেয়ার আহবান জানান। উপস্থিত সকলে তার কথায় সমর্থন করে সা’দকে নিজেদের শাসক হিসেবে নির্বাচনের কথা ঘোষণা দেয়। পাশাপাশি তারা এ বিষয়টির প্রতিও জোর তাগিদ দিলেন যে, সা’দের মত ও সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তারা কোন পদক্ষেপ নিবেন না।[৪] কিন্তু উপস্থিতির কেউ কেউ মুহাজিরদের পক্ষ থেকে এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতার বিষয়টি উত্থাপন করে মুহাজিরগণ তাদের এ সিদ্ধান্ত মানতে অস্বীকৃতি জানাবেন বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় আনসারদের মাঝ থেকে একজন আমির এবং মুহাজিরদের মাঝ থেকে আরেকজন আমির -এ প্রস্তাবও উত্থাপিত হয়।[৫]


সভা ও এর উদ্দেশ্যের সংবাদ আবুবকর ইবনে আবু কুহাফা ও ওমর ইবনে খাত্তাবের কাছে গেলে তারা দু’জন আবু উবায়দা জাররাহ’র সাথে সাকীফায় যান। বৈঠকে উপস্থিত হয়ে ওমর ইবনে খাত্তাবকে থামিয়ে আবুবকর নিজেই কথা বলা শুরু করলেন, তিনি মহানবির (স.) স্থলাভিষিক্ততার ঘটনায় মুহাজিরদের অগ্রাধিকারের কথা উত্থাপন করলেন।[৬] উপস্থিতদের কেউ কেউ তার কথার সমর্থন করলো আবার কেউ বিরোধিতা; আবার কেউ কেউ এ ক্ষেত্রে হযরত আলীর যোগ্যতা এবং তিনি ব্যতীত অন্য কারো হাতে বাইয়াত না করার প্রতি ইঙ্গিত করলেন।[৭] কিন্তু অবশেষে আবুবকর ওমর ও আবু উবাইদা’কে এ মাকামের জন্য যোগ্য হিসেবে ঘোষণা করলে তারা দু’জনই আবুবকরের প্রস্তাবনার বিরোধিতা করে।[৮]
সভা ও এর উদ্দেশ্যের সংবাদ [[আবুবকর ইবনে আবু কুহাফা]] [[ওমর ইবনে খাত্তাব|ওমর ইবনে খাত্তাবের]] কাছে গেলে তারা দু’জন [[আবু উবায়দা জাররাহ|আবু উবায়দা জাররাহ’র]] সাথে সাকীফায় যান। বৈঠকে উপস্থিত হয়ে ওমর ইবনে খাত্তাবকে থামিয়ে আবুবকর নিজেই কথা বলা শুরু করলেন, তিনি মহানবির (স.) স্থলাভিষিক্ততার ঘটনায় মুহাজিরদের শ্রেষ্ঠত্ব ও কুরাইশদের অগ্রাধিকারের কথা উত্থাপন করলেন।[৬] উপস্থিতদের কেউ কেউ তার কথার সমর্থন করলো আবার কেউ বিরোধিতা; আবার কেউ কেউ এ ক্ষেত্রে হযরত আলীর যোগ্যতা এবং তিনি ব্যতীত অন্য কারো হাতে বাইয়াত না করার প্রতি ইঙ্গিত করলেন।[৭] কিন্তু অবশেষে আবুবকর, ওমর ও আবু উবাইদা’কে এ মাকামের জন্য যোগ্য হিসেবে ঘোষণা করলে তারা দু’জনই আবুবকরের প্রস্তাবনার বিরোধিতা করে।[৮]


৩০৩ হিজরীতে রচিত তারিখে তাবারি’র বর্ণনার ভিত্তিতে, ওমর ইবনে খাত্তাব ঐ মুহূর্তগুলো সম্পর্কে বলেছেন: ঐ সময় উপস্থিতদের মাঝে হৈ চৈ শুরু হলো এবং ভীড়ের মাঝে বিভিন্ন অস্পষ্ট ও অবোধ্য কথা শোনা যাচ্ছিল। এ সময় আমরা শঙ্কিত হলাম যে, এ বিরোধ আমাদের কাজে বিচ্ছেদ ঘটাবে। তাই আমি আবুবকরকে বললাম তোমার হাত প্রসারিত করো, তোমার হাতে বাইয়াত করি। কিন্তু ওমরের হাত আবুবকরের হাতে পৌঁছানোর আগেই সা’দ ইবনে উবাদা’র প্রতিদ্বন্দ্বী বাশির ইবনে সা’দ খাযরাজী এগিয়ে এসে আবুবকরের হাতে হাত রেখে বাইয়াত করলো[৯]
৩০৩ হিজরীতে রচিত [[তারিখে তাবারি|তারিখে তাবারি’র]] বর্ণনার ভিত্তিতে, ওমর ইবনে খাত্তাব ঐ মুহূর্তগুলো সম্পর্কে বলেছেন: ঐ সময় উপস্থিতদের মাঝে হৈ চৈ শুরু হলো এবং ভীড়ের মাঝে বিভিন্ন অস্পষ্ট ও অবোধ্য কথা শোনা যাচ্ছিল। এ সময় আমরা শঙ্কিত হলাম যে, এ বিরোধ আমাদের কাজে বিচ্ছেদ ঘটাবে। তাই আমি আবুবকরকে বললাম তোমার হাত প্রসারিত করো, তোমার হাতে বাইয়াত করি। কিন্তু ওমরের হাত আবুবকরের হাতে পৌঁছানোর আগেই সা’দ ইবনে উবাদা’র প্রতিদ্বন্দ্বী বাশির ইবনে সা’দ খাযরাজী এগিয়ে এসে আবুবকরের হাতে হাত রেখে বাইয়াত করলো[৯]


এ ঘটনার পর, সাকীফায় উপস্থিতরা আবুবকরের হাতে বাইয়াত করার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়লো; পরিস্থিত এমন হলো যে, অসুস্থ সা’দ ইবনে উবাদাহ তাদের পদতলে পিষ্ট হওয়ার উপক্রম হলেন। এ ঘটনা ওমর ইবনে খাত্তাব ও সা’দ এবং কাইস ইবনে সা’দের মাঝে তীব্র ঝগড়ার কারণ হল; অবশেষে আবুবকরের মধ্যস্থতায় ঐ ঝগড়া শেষ হলো[১০]
এ ঘটনার পর, সাকীফায় উপস্থিতরা আবুবকরের হাতে বাইয়াত করার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়লো; পরিস্থিত এমন হলো যে, অসুস্থ সা’দ ইবনে উবাদাহ তাদের পদতলে পিষ্ট হওয়ার উপক্রম হলেন। এ ঘটনা ওমর ইবনে খাত্তাব ও সা’দ এবং কাইস ইবনে সা’দের মাঝে তীব্র ঝগড়ার কারণ হল; অবশেষে আবুবকরের মধ্যস্থতায় ঐ ঝগড়া শেষ হলো[১০]
confirmed, templateeditor
১,৯৬২টি

সম্পাদনা