Automoderated users, confirmed, templateeditor
১,৭৬৭টি
সম্পাদনা
২১৫ নং লাইন: | ২১৫ নং লাইন: | ||
মক্কায় তাঁর অবস্থানের মেয়াদ ১৫ দিনও হয়নি, এর মধ্যে ইসলাম গ্রহণ না করা [[আরব উপদ্বীপ|আরব উপদ্বীপের]] বেশ কয়েকটি বড় গোত্র মহানবির (সা.) বিরুদ্ধে জোট বাধল। মহানবি (সা.) বিশাল মুসলিম বাহিনী নিয়ে মক্কা থেকে বের হলেন। মুসলিম বাহিনী [[হুনাইন]] নামক উপত্যকায় পৌঁছালে পূর্ব থেকে ওঁৎপেতে থাকা শত্রু পক্ষ শিলাবৃষ্টির মতো তীর ছোঁড়া শুরু করে। এতে মুসলিম বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয় এবং তাদের কিছু সংখ্যক সৈন্য ছাড়া অবশিষ্টরা রনাঙ্গন ত্যাগ করে পালিয়ে যায়। কিন্তু পলায়নরত মুসলিম সৈন্যরা হযরত আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিবের উচ্চকণ্ঠে মহানবির (সা.) আহবান শুনে ফিরে আসে এবং নব উদ্যমে শত্রু বাহিনীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাদেরকে পরাজিত করে।<ref>ওয়াক্বেদি, আল-মাগ্বাযি, ১৪০৫ হি., খণ্ড ২, পৃ. ৮৮৫ এর পর।</ref> | মক্কায় তাঁর অবস্থানের মেয়াদ ১৫ দিনও হয়নি, এর মধ্যে ইসলাম গ্রহণ না করা [[আরব উপদ্বীপ|আরব উপদ্বীপের]] বেশ কয়েকটি বড় গোত্র মহানবির (সা.) বিরুদ্ধে জোট বাধল। মহানবি (সা.) বিশাল মুসলিম বাহিনী নিয়ে মক্কা থেকে বের হলেন। মুসলিম বাহিনী [[হুনাইন]] নামক উপত্যকায় পৌঁছালে পূর্ব থেকে ওঁৎপেতে থাকা শত্রু পক্ষ শিলাবৃষ্টির মতো তীর ছোঁড়া শুরু করে। এতে মুসলিম বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয় এবং তাদের কিছু সংখ্যক সৈন্য ছাড়া অবশিষ্টরা রনাঙ্গন ত্যাগ করে পালিয়ে যায়। কিন্তু পলায়নরত মুসলিম সৈন্যরা হযরত আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিবের উচ্চকণ্ঠে মহানবির (সা.) আহবান শুনে ফিরে আসে এবং নব উদ্যমে শত্রু বাহিনীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাদেরকে পরাজিত করে।<ref>ওয়াক্বেদি, আল-মাগ্বাযি, ১৪০৫ হি., খণ্ড ২, পৃ. ৮৮৫ এর পর।</ref> | ||
==তাবুকের যুদ্ধ== | ====তাবুকের যুদ্ধ==== | ||
৯ম | [[৯ম হিজরী]]তে মহানবি (সা.) অবগত হলেন, রোমীয়রা বিশাল এক বাহিনী নিয়ে ‘[[বালকা]]’ নামক স্থানে তাবু ফেলেছে। উদ্দেশ্য মুসলমানদের উপর আক্রমন করা। প্রচন্ড গরমের মৌসুম এবং ফল পাড়ার সময়ও কাছাকাছি। জনগণ বাড়িতে থেকে বিশ্রাম করাকেই প্রাধান্য দিচ্ছিল, অপরদিকে কোষাগারও ছিল প্রায় শূন্য। মহানবি (সা.) বাহিনীকে রওনা করার সময় সাধারণত লক্ষ্য নির্ধারণ করতেন না, কিন্তু তাবুকের যুদ্ধ প্রচন্ড কষ্টসাধ্য হওয়ায় তিনি ঘোষণা দিলেন যে, রোমীয়দের সাথে যুদ্ধে যেতে চান। একটি দল বলল: গ্রীস্মের মৌসুম, এ সময় যাবেন না! এ মনোভাব পোষণকারী দলটি নিম্নোক্ত আয়াতের মাধ্যমে তিরস্কৃর হল: | ||
وَقَالُوا لَا تَنفِرُوا فِی الْحَرِّ ۗ قُلْ نَارُ جَهَنَّمَ أَشَدُّ حَرًّا ۚ لَّوْ کانُوا یفْقَهُونَ | <center>وَقَالُوا لَا تَنفِرُوا فِی الْحَرِّ ۗ قُلْ نَارُ جَهَنَّمَ أَشَدُّ حَرًّا ۚ لَّوْ کانُوا یفْقَهُونَ[ ۹–۸۱] | ||
</center> | |||
‘(তাবুক অভিযানে) যারা পিছনে থেকে গিয়েছিল তারা রসূলের বিরোধিতায় বসে থাকাতেই আনন্দ প্রকাশ করেছিল আর তাদের ধন-সম্পদ ও জান দিয়ে আল্লাহর পথে জিহাদ করতে তারা অপছন্দ করেছিল। তারা বলেছিল, ‘গরমের মধ্যে অভিযানে বেরিও না’। বল, ‘জাহান্নামের আগুনই তাপে প্রচন্ডতম’। তারা যদি বুঝত!’<ref>তাওবাহ : ৮১</ref> | ‘(তাবুক অভিযানে) যারা পিছনে থেকে গিয়েছিল তারা রসূলের বিরোধিতায় বসে থাকাতেই আনন্দ প্রকাশ করেছিল আর তাদের ধন-সম্পদ ও জান দিয়ে আল্লাহর পথে জিহাদ করতে তারা অপছন্দ করেছিল। তারা বলেছিল, ‘গরমের মধ্যে অভিযানে বেরিও না’। বল, ‘জাহান্নামের আগুনই তাপে প্রচন্ডতম’। তারা যদি বুঝত!’<ref>তাওবাহ : ৮১</ref> | ||
এ যুদ্ধে মুসলিম বাহিনীর সংখ্যা ছিল ৩০ হাজার।<ref>ওয়াক্বেদি, আল-মাগ্বাযি, ১৪০৫ হি., খণ্ড ২, পৃ. ৯৯৬ থেকে উদ্ধৃত শাহিদি, তারিখে তাহলিলিয়ে ইসলাম, ১৩৯০ সৌরবর্ষ, পৃ. ৯৭।</ref> ঐ সময় পর্যন্ত এ ছিল মুসলমানদের সবচেয়ে বৃহৎ বাহিনী এবং তৎকালীন আরব এলাকায় এতবড় সেনা সমাবেশও ছিল বিরল। এ যুদ্ধে মহানবি (সা.) আলী ইবনে আবি তালিবকে (আ.) সঙ্গে নিলেন না। মুনাফিকরা বলতে লাগল, আলী (আ.) এ সফরে তাঁর সফরসঙ্গী হোক এটা তাঁর (সা.) অপছন্দ। এ বিষয় হযরত আলী (আ.) যখন মহানবিকে (সা.) অভিযোগ করলেন তিনি (সা.) উত্তরে বললেন: আমি তোমাকে আমার খলিফা ও স্থলাভিষিক্ত নিযুক্ত করেছি, তোমার অবস্থান আমার নিকট ঠিক তেমন যেমন ছিল হারুনের অবস্থান মুসার কাছে, শুধু পার্থক্য এতটুকু যে, আমার পরে আর কোন নবি আসবে না’। | এ যুদ্ধে মুসলিম বাহিনীর সংখ্যা ছিল ৩০ হাজার।<ref>ওয়াক্বেদি, আল-মাগ্বাযি, ১৪০৫ হি., খণ্ড ২, পৃ. ৯৯৬ থেকে উদ্ধৃত শাহিদি, তারিখে তাহলিলিয়ে ইসলাম, ১৩৯০ সৌরবর্ষ, পৃ. ৯৭।</ref> ঐ সময় পর্যন্ত এ ছিল মুসলমানদের সবচেয়ে বৃহৎ বাহিনী এবং তৎকালীন আরব এলাকায় এতবড় সেনা সমাবেশও ছিল বিরল। এ যুদ্ধে মহানবি (সা.) [[আলী ইবনে আবি তালিব (আ.)|আলী ইবনে আবি তালিবকে (আ.)]] সঙ্গে নিলেন না। মুনাফিকরা বলতে লাগল, আলী (আ.) এ সফরে তাঁর সফরসঙ্গী হোক এটা তাঁর (সা.) অপছন্দ। এ বিষয় হযরত আলী (আ.) যখন মহানবিকে (সা.) অভিযোগ করলেন তিনি (সা.) উত্তরে বললেন: আমি তোমাকে আমার [[খলিফা]] ও স্থলাভিষিক্ত নিযুক্ত করেছি, তোমার অবস্থান আমার নিকট ঠিক তেমন যেমন ছিল [[হযরত হারুন (আ.)|হারুনের]] অবস্থান [[হযরত মুসা (আ.)|মুসার]] কাছে, শুধু পার্থক্য এতটুকু যে, আমার পরে আর কোন নবি আসবে না’। | ||
তৃষ্ণায় প্রাণ ওষ্টাগত মুসলিম বাহিনী তাবুকে পৌঁছে বুঝতে পারল রোমীয়দের সেনা সমাবেশের তথ্য সঠিক ছিল না। মহানবির (সা.) জীবদ্দশায় তাবুকের যুদ্ধ ছিল অমুসলিমদের সাথে মুসলমানদের শেষ যুদ্ধ। এরপর আরাবিস্তানের সকল এলাকা আত্মসমার্পন করে। এ যুদ্ধের পর মহানবির (সা.) প্রতি আনুগত্য ও ইসলাম গ্রহণের ঘোষণা দিতে প্রতিটি গোত্র প্রতিনিধি প্রেরণ করল এবং বলা যায় সকল গোত্রই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করল। আর এ কারণেই বছরটিকে | তৃষ্ণায় প্রাণ ওষ্টাগত মুসলিম বাহিনী [[তাবুক|তাবুকে]] পৌঁছে বুঝতে পারল রোমীয়দের সেনা সমাবেশের তথ্য সঠিক ছিল না। মহানবির (সা.) জীবদ্দশায় তাবুকের যুদ্ধ ছিল অমুসলিমদের সাথে মুসলমানদের শেষ যুদ্ধ। এরপর আরাবিস্তানের সকল এলাকা আত্মসমার্পন করে। এ যুদ্ধের পর মহানবির (সা.) প্রতি আনুগত্য ও ইসলাম গ্রহণের ঘোষণা দিতে প্রতিটি গোত্র প্রতিনিধি প্রেরণ করল এবং বলা যায় সকল গোত্রই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করল। আর এ কারণেই বছরটিকে ‘[[সানাতুল উফুদ]]’ (উফুদ হল ওয়াফ্দ শব্দের বহুবচন, এর অর্থ হল প্রতিনিধি দল বা মেহমানবৃন্দ)<ref>শাহিদি, তারিখে তাহলিলিয়ে ইসলাম, ১৩৯০ সৌরবর্ষ, পৃ. ৯৭-৯৮।</ref> | ||
==সানাতুল উফুদ== | ==সানাতুল উফুদ== |