বিষয়বস্তুতে চলুন

হাল মিন নাসিরিন ইয়ানসুরুনী

wikishia থেকে
আশুরার বিকালের চিত্র; মাহমুদ ফারশচিয়ানের অন্যতম চিত্রকর্ম

হাল মিন নাসিরিন ইয়ানসুরুনী (আরবি: هَلْ مِنْ ناصِرٍ یَنْصُرُنی) অর্থ হচ্ছে “কোন সাহায্যকারী কী আছে যে আমাকে সাহায্য করবে?” আশুরার দিনে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর জীবনের শেষ মুহূর্তের একটি প্রসিদ্ধ বাক্য। ফারহাঙ্গে আশুরা গ্রন্থে জাভেদ মুহাদ্দেসীর মতে, এই বাক্যটি উল্লেখিত রূপে ঐতিহাসিক গ্রন্থসমূহে আসে নি;[] তবে কারবালার ঘটনা সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোতে, অনুরূপ বাক্য এবং একই বিষয়বস্তু সম্বলিত বাক্যের উল্লেখ করা হয়েছে।[]

আশুরার ঘটনা বর্ণনাকারীদের মতে, ইমাম হুসাইনের (আ.) সঙ্গী-সাথীরা যখন শহীদ হয়েছিলেন এবং তিনি যখন একাকী ছিলেন তখন এই বাক্য উচ্চারণ করেছিলেন,

هَلْ مِنْ ذَابٍّ يَذُبُّ عَنْ حَرَمِ رَسُولِ اللَّهِ هَلْ مِنْ مُوَحِّدٍ يَخَافُ اللَّهَ فِينَا هَلْ مِنْ مُغِيثٍ يَرْجُو اللَّهَ بِإِغَاثَتِنَا هَلْ مِنْ مُعِينٍ يَرْجُو مَا عِنْدَاللَّهِ فِي إِعَانَتِنَا

অর্থাৎ আল্লাহর রাসুলের পরিবারকে রক্ষা করবে এমন কেউ কি আছে? এক আল্লাহর ইবাদতকারী কেউ কি আছে, যে আমাদের সম্পর্কে আল্লাহকে ভয় করে? আর্তনাদে সাড়াদানকারী কেউ কি আছে, যে আমাদের ফরিয়াদে সাড়া দিয়ে আল্লাহর নিকট আশা করে? এমন কোন সাহায্যকারী আছে যে আমাদেরকে সাহায্য করে আল্লাহর নিকট প্রতিদানের আশা রাখে?”[]

ইমাম হুসাইন (আ.) এর আগে যখন কাসরে বনি মুকাতেলে উবাদুল্লাহ বিন হুর জু’ফি নিকট সাহায্য চাইলেন এবং সে যখন সহযোগিতার বিপরীতে অজুহাত খাড়া করলো তখন উবায়দুল্লাহকে ইমাম হুসাইন (আ.) সেখান থেকে অন্য কোথাও চলে যেতে বললেন, কারণ যদি ইমামের সাহায্যের আবেদন শোনে এবং সাড়া না দেয়, আল্লাহপাক তাকে ধ্বংস করবেন”।[] কেউ কেউ লাব্বাইক ইয়া হোসাইন শ্লোগানকে আশুরার দিনে ইমাম হুসাইনের (আ.) পক্ষ থেকে চাওয়া সাহায্যের জবাব হিসেবে মনে করেন।[]

কারবালার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শাহরাম আসাদি কর্তৃক নির্মিত ’রুযে ওয়াকেয়ে’ নামক চলচিত্রটিতে, প্রধান চরিত্রের নবমুসলিম যুবক; যে নিজের কানে একাধিকবার, "কে আছে আমাকে সাহায্য করবে?" এই মর্মে একটি গায়বী আওয়াজ শুনতে পায়, সাথে সাথে ঐ ব্যক্তি এই আওয়াজের খোঁজে ছুটে চলে এবং আশুরার দিন বিকালে কারবালাতে পৌঁছায়।[]

তথ্যসূত্র

  1. মুহাদ্দেসী, ফারহাঙ্গে আশুরা, ১৩৭৬ ফার্সি সন, পৃ. ৪৭২।
  2. সাইয়্যেদ ইবনে তাঊস, আল-লোহুফ, ১৩৪৮ হি., পৃ. ১১৬; ইবনে নোমা হিল্লি, মুসীরুল আহযান, ১৪০৬ হি., পৃ. ৭০।
  3. সাইয়্যেদ ইবনে তাঊস, আল-লোহুফ, ১৩৪৮ ফার্সি সন, পৃ. ১১৬।
  4. তাবারী, তারিখুল উমাম ওয়াল মুলুক, ১৩৮৭ হি., খণ্ড ৫, পৃ. ৪০৭।
  5. শাআর “লাব্বাইক ইয়া হোসাইন” বে মা’নায়ে এজাবাতে দা’ওয়াতে সাইয়্যেদুশ শোহাদা (আ.) আস্ত, মেহের নিউজ।
  6. নেগাহি বে ফিল্মে রুযে ওয়াকেয়ে” পায়েগাহে এত্তেলা রেসানিয়ে হাওযে।

গ্রন্থপঞ্জি

  • ইবনে নোমা হিল্লি, জাফর বিন মুহাম্মদ, মুসীরুল আহযান, কোম, মাদ্রাসাতুল ইমাম আল-মাহদী, ১৪০৬ হি.।
  • সাইয়্যেদ ইবনে তাঊস, আল-লোহুফ আলা কাতলিত তোফুফ, তেহরান, নাশরে জাহান, ১৩৪৮ ফার্সি সন।
  • তাবারী, মুহাম্মাদ বিন জারির, তারিখুল উমাম ওয়াল মুলুক, তাহকীক: মুহাম্মাদ আবুল ফাযল ইব্রাহিম, বৈরুত, দারুত তুরাস, ১৯৬৭ খ্রি./১৩৮৭ হি.।
  • মুহাদ্দেসী জাওয়াদ, ফারহাঙ্গে আশুরা, কোম, নাশরে মারুফ, ১৩৮৬ ফার্সি সন।