সাকীফার ঘটনা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
→পরিণতি
W.Alhassan (আলোচনা | অবদান) (→পরিণতি) |
W.Alhassan (আলোচনা | অবদান) (→পরিণতি) |
||
১৩০ নং লাইন: | ১৩০ নং লাইন: | ||
সাকীফার সিদ্ধান্তে মুনাফিকদের সমর্থন: আয়াতুল্লাহ জাওয়াদি আমুলি’র ভাষ্যানুযায়ী, আল্লাহর রাসূলের (স.) ওফাতের পর মদিনার মুনাফিকদের পক্ষ থেকে সকল প্রকার প্রতিবন্ধকতারও সমাপ্তি ঘটে। বিষয়টির বিশ্লেষণ করতে গিয়ে তিনি বলেছেন, একদিনেই তো মুনাফিকরা হারিয়ে যায় নি, আবার তারা তো সালমান ও আবুযারের মত মু’মিনও হয়ে যায় নি; বরং তারা আহলে সাকীফার সাথে সমঝোতা করে নেয়, আর এ কারণে সাকীফার শুরা অনুষ্ঠিত হওয়ার (ও সরকার গঠনের) পর মদিনায় আর কোন মুনাফিক ছিল না।<ref>https://javadi.esra.ir/fa/w/87-1-1397/01/29-1-تفسیر-سوره-منافقون-جلسه, ইসরা ওয়েবসাইট।</ref> | সাকীফার সিদ্ধান্তে মুনাফিকদের সমর্থন: আয়াতুল্লাহ জাওয়াদি আমুলি’র ভাষ্যানুযায়ী, আল্লাহর রাসূলের (স.) ওফাতের পর মদিনার মুনাফিকদের পক্ষ থেকে সকল প্রকার প্রতিবন্ধকতারও সমাপ্তি ঘটে। বিষয়টির বিশ্লেষণ করতে গিয়ে তিনি বলেছেন, একদিনেই তো মুনাফিকরা হারিয়ে যায় নি, আবার তারা তো সালমান ও আবুযারের মত মু’মিনও হয়ে যায় নি; বরং তারা আহলে সাকীফার সাথে সমঝোতা করে নেয়, আর এ কারণে সাকীফার শুরা অনুষ্ঠিত হওয়ার (ও সরকার গঠনের) পর মদিনায় আর কোন মুনাফিক ছিল না।<ref>https://javadi.esra.ir/fa/w/87-1-1397/01/29-1-تفسیر-سوره-منافقون-جلسه, ইসরা ওয়েবসাইট।</ref> | ||
কারবালা ট্রাজেডি: কারো কারো মতে, সাকিফায় মহানবির (স.) জা-নশীন নির্বাচন প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন হওয়ায় খলিফা নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোন বিশেষ নিয়ম ও মানদণ্ড আর অবশিষ্ট থাকে নি। এ কারণে মুসলমানদের খলিফা একদিন আনসার ও কয়েকজন কুরাইশের মধকার দ্বন্দ্বের মাধ্যমে, আরেকদিন প্রথম খলিফার ওসিয়তের মাধ্যমে, তৃতীয় দফায় ৬ জনের শুরা’র ভোটে, আরেক দফায় মুয়াবিয়া কর্তৃক তার পুত্রের জন্য বাইয়াত গ্রহণের মাধ্যমে নির্বাচিত হলো। আর এই ইয়াযিদই কারবালা ট্রাজেডির মূল হোতা। | কারবালা ট্রাজেডি: কারো কারো মতে, সাকিফায় মহানবির (স.) জা-নশীন নির্বাচন প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন হওয়ায় খলিফা নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোন বিশেষ নিয়ম ও মানদণ্ড আর অবশিষ্ট থাকে নি। এ কারণে মুসলমানদের খলিফা একদিন আনসার ও কয়েকজন কুরাইশের মধকার দ্বন্দ্বের মাধ্যমে, আরেকদিন প্রথম খলিফার ওসিয়তের মাধ্যমে, তৃতীয় দফায় ৬ জনের শুরা’র ভোটে, আরেক দফায় মুয়াবিয়া কর্তৃক তার পুত্রের জন্য বাইয়াত গ্রহণের মাধ্যমে নির্বাচিত হলো। আর এই ইয়াযিদই কারবালা ট্রাজেডির মূল হোতা।<ref>দাউদী ওয়া রুস্তম নেযাদ, আশুরা, রিশেহা, আঙ্গিযেহা, রুয়িদাদহা, পায়ামাদহা, ১৩৮৮ ফার্সি সন, পৃ. ১১৫-১২৬।</ref> বিশিষ্ট শিয়া আলেম সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ হুসাইন তেহরানি (মৃত্যু ১৪১৬ হি.), আলীর (আ.) সম্পর্কে কাযী আবি বাকর ইবনে আবি কারিয়াহ রচিত কবিতা উল্লেখ পূর্বক কবিতার و اَریتکم ان الحسین اصیب فی یوم السقیفة -এ পংতির ব্যাখ্যায় লিখেছেন, যদি আলীর খেলাফতকে জবরদখল করা না হত, তাহলে হারমালাহ’র তীর আলী আসগারের গলায় বিঁধতো না’।<ref>তেহরানি, ইমাম শেনাছি, ১৪১৬ হি., খণ্ড ৮, পৃ. ৬৭।</ref> এছাড়া মুহাম্মাদ হুসাইন গারাভি ইসফাহানি (১২৯৬-১৩৬১ হি.) এক কবিতায় উল্লিখিত বিষয়টি উল্লেখ করেছেন: | ||
فما رَماه اِذْ رَماهُ حَرمَلة و انَما رَماهُ مَن مَهَّدَ له | فما رَماه اِذْ رَماهُ حَرمَلة و انَما رَماهُ مَن مَهَّدَ له | ||
১৩৬ নং লাইন: | ১৩৬ নং লাইন: | ||
سَهمٌ اَتی مِن جانب السقیفة و قَوسُه عَلی یدِ الخلیفة | سَهمٌ اَتی مِن جانب السقیفة و قَوسُه عَلی یدِ الخلیفة | ||
و ما أصاب سَهْمُهُ نَحرَ الصّبی بَل کَبدَ الدینِ و مُهجة النَبی | و ما أصاب سَهْمُهُ نَحرَ الصّبی بَل کَبدَ الدینِ و مُهجة النَبی<ref>দাউদী ওয়া রুস্তম নেযাদ, আশুরা, রিশেহা, আঙ্গিযেহা, রুয়িদাদহা, পায়ামাদহা, ১৩৮৮ ফার্সি সন, পৃ. ১১৫-১২৬।</ref> | ||
অনুবাদ: হারমালাহ তীর নিক্ষেপ করে নি! বরং তীর নিক্ষেপকারী হচ্ছে সে, যে এ তীর নিক্ষেপের ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছে; যে তীরটি এসেছিল সাকিফা থেকে, যার কামান ছিল খলিফার হাতে, সেদিন তীর ছোট্ট শিশুর গলায় বিঁধে নি বরং তা দ্বীনের অন্তর ও মহানবির (স.) কলবে বিঁধেছিল। | অনুবাদ: হারমালাহ তীর নিক্ষেপ করে নি! বরং তীর নিক্ষেপকারী হচ্ছে সে, যে এ তীর নিক্ষেপের ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছে; যে তীরটি এসেছিল সাকিফা থেকে, যার কামান ছিল খলিফার হাতে, সেদিন তীর ছোট্ট শিশুর গলায় বিঁধে নি বরং তা দ্বীনের অন্তর ও মহানবির (স.) কলবে বিঁধেছিল।<ref>দাউদী ওয়া রুস্তম নেযাদ, আশুরা, রিশেহা, আঙ্গিযেহা, রুয়িদাদহা, পায়ামাদহা, ১৩৮৮ ফার্সি সন, পৃ. ১১৫-১২৬।</ref> | ||
সাকীফা ও ইজমা | ==সাকীফা ও ইজমা== | ||
আহলে সুন্নতের দৃষ্টিতে শরয়ী আহকাম ইস্তিম্বাতের অন্যতম সূত্র হলো ‘ইজমা’। সাকীফার ঘটনায় আবুবকরকে নির্বাচনের বৈধতার পক্ষে দলীল হিসেবে ইজমার কথা উল্লেখ করা হয়।<ref>হুসাইনি খোরাসানি, বাযকাভি দালিল ইজমা’, ১৩৮৫, পৃ. ১৯-৫৭।</ref> | |||
শিয়া গবেষকদের মতে, আহলে সুন্নত আবুবকরের খেলাফত ও সরকারের বৈধতার পক্ষে উম্মতের ইজমাকে দলীল হিসেবে উত্থাপন করেছেন।<ref>হুসাইনি খোরাসানি, বাযকাভি দালিল ইজমা’, ১৩৮৫, পৃ. ১৯-৫৭।</ref> তারা ‘ইমামাতে আম’ (সাধারণ ইমামত) এবং ইমামাতে খাছ্ (বিশেষ ইমামাত) উভয় ক্ষেত্রে ইজমার বিষয়টি -যা সর্বসাধারণের সম্মতিকে প্রমাণ করে- শিয়াদের নিষ্পাপ ইমামের প্রয়োজনীয়তা শীর্ষক আকিদার বিপরীতে উদ্ভাবন ও উত্থাপন করেছেন।<ref>হুসাইনি খোরাসানি, বাযকাভি দালিল ইজমা’, ১৩৮৫, পৃ. ১৯-৫৭।</ref> ঐ গবেষকদের বিশ্বাস, ইজমা’র বিষয়টির উত্থাপনের মূল কারণ ছিল সাকীফার ঘটনা ও আবুবকরের খেলাফতের বৈধতা প্রমাণ করা। এছাড়া ইমামাতে আম, মাসআলা-মাসায়েল, ফিকাহের শাখা-প্রশাখা ইত্যাদি ক্ষেত্রে ইজমা’র সম্প্রসারণও মূলতঃ তাদের ঐ আকিদাকে (আবুবকরের খেলাফতের বৈধতা) সঠিক প্রমাণের প্রয়াস মাত্র।<ref>হুসাইনি খোরাসানি, বাযকাভি দালিল ইজমা’, ১৩৮৫, পৃ. ১৯-৫৭।</ref> | |||
শিয়া গবেষকদের মতে, আহলে সুন্নত আবুবকরের খেলাফত ও সরকারের বৈধতার পক্ষে উম্মতের ইজমাকে দলীল হিসেবে উত্থাপন করেছেন। | |||
== স্বতন্ত্র গ্রন্থ রচনা == | == স্বতন্ত্র গ্রন্থ রচনা == |