Automoderated users, confirmed, templateeditor
১,৭৫৭টি
সম্পাদনা
৮০ নং লাইন: | ৮০ নং লাইন: | ||
[[জাহিলিয়্যাতের যুগ|জাহিলিয়্যাতের যুগে]] একবার কা’বার অভ্যন্তরে পানি প্রবেশের কারণে এর দেওয়ালেও ফাঁটলের সৃষ্টি হয়। কুরাইশরা [[কা’বা|কা’বার]] দেয়াল সংস্কার করার পর ‘[[হাজারুল আসওয়াদ]]’ স্থাপনের বিষয়ে গোত্রপতিদের মাঝে বিপত্তি বাধে; কে এই পবিত্র ও সম্মানিত পাথর স্বস্থানে স্থাপন করবে তা নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হল। সকল গোত্রের প্রধানই চাচ্ছিল এ সৌভাগ্য যেন তার নসীবে জোটে। গোত্রপতিরা রক্তপূর্ণ পাত্র এনে তাতে হাত ডুবিয়ে নিল; এ ছিল এক প্রকার কসম ও অঙ্গীকার, এর ফলে বিজয় অর্জন না করা পর্যন্ত যুদ্ধ করতে হত। অবশেষে তারা এ সমাধানে পৌঁছাল এবং সবাই মেনে নিল যে, প্রথম যে ব্যক্তি ‘বনি শাইবা’ দরজা দিয়ে [[মসজিদ|মসজিদে]] প্রবেশ করবে এবং সে যে সমাধান দেবে তা সবাইকে মানতে হবে। মহানবি (সা.) মসজিদে প্রবেশ করলেন। তারা মহানবির (সা.) সিদ্ধান্ত মেনে নিল। মহানবি (সা.)-এর নির্দেশে একটি কাপড়ের মাঝখানে হাজারুল আসওয়াদ রাখা হল এবং সকল গোত্র প্রধানরা ঐ কাপড়ের একেকটি পাশ ধরে কাপড়টি উঁচু করল, আর মহানবি (সা.) নিজের হাত মোবারক দিয়ে হাজারুল আসওয়াদকে স্বস্থানে স্থাপন করলেন।<ref>শাহিদী, তারিখে তাহলিলিয়ে ইসলাম, ১৩৯০ সৌরবর্ষ, পৃ. ৪০।</ref> | [[জাহিলিয়্যাতের যুগ|জাহিলিয়্যাতের যুগে]] একবার কা’বার অভ্যন্তরে পানি প্রবেশের কারণে এর দেওয়ালেও ফাঁটলের সৃষ্টি হয়। কুরাইশরা [[কা’বা|কা’বার]] দেয়াল সংস্কার করার পর ‘[[হাজারুল আসওয়াদ]]’ স্থাপনের বিষয়ে গোত্রপতিদের মাঝে বিপত্তি বাধে; কে এই পবিত্র ও সম্মানিত পাথর স্বস্থানে স্থাপন করবে তা নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হল। সকল গোত্রের প্রধানই চাচ্ছিল এ সৌভাগ্য যেন তার নসীবে জোটে। গোত্রপতিরা রক্তপূর্ণ পাত্র এনে তাতে হাত ডুবিয়ে নিল; এ ছিল এক প্রকার কসম ও অঙ্গীকার, এর ফলে বিজয় অর্জন না করা পর্যন্ত যুদ্ধ করতে হত। অবশেষে তারা এ সমাধানে পৌঁছাল এবং সবাই মেনে নিল যে, প্রথম যে ব্যক্তি ‘বনি শাইবা’ দরজা দিয়ে [[মসজিদ|মসজিদে]] প্রবেশ করবে এবং সে যে সমাধান দেবে তা সবাইকে মানতে হবে। মহানবি (সা.) মসজিদে প্রবেশ করলেন। তারা মহানবির (সা.) সিদ্ধান্ত মেনে নিল। মহানবি (সা.)-এর নির্দেশে একটি কাপড়ের মাঝখানে হাজারুল আসওয়াদ রাখা হল এবং সকল গোত্র প্রধানরা ঐ কাপড়ের একেকটি পাশ ধরে কাপড়টি উঁচু করল, আর মহানবি (সা.) নিজের হাত মোবারক দিয়ে হাজারুল আসওয়াদকে স্বস্থানে স্থাপন করলেন।<ref>শাহিদী, তারিখে তাহলিলিয়ে ইসলাম, ১৩৯০ সৌরবর্ষ, পৃ. ৪০।</ref> | ||
=নবুয়্যত ঘোষণা (বে’সাত)= | ==নবুয়্যত ঘোষণা (বে’সাত)== | ||
ইমামিয়াগণের মাঝে প্রসিদ্ধ হল মহানবির (সা.) নবুয়্যত ঘোষণার দিনটি ছিল [[২৭শে রজব]]।<ref>আয়াতি, তারিখে পায়াম্বারে ইসলাম, ১৩৭৮ সৌরবর্ষ, পৃ. ৬৭।</ref> [[হেরা গুহা]]’তে তিনি (সা.) ইবাদতরত অবস্থায় থাকাকালে [[হযরত জীবরাইল]] আগমন করেন এবং | : ''মূল নিবন্ধ: [[বে’সাত বা নবুয়তের ঘোষণা]]'' | ||
ইমামিয়াগণের মাঝে প্রসিদ্ধ হল মহানবির (সা.) নবুয়্যত ঘোষণার দিনটি ছিল [[২৭শে রজব]]।<ref>আয়াতি, তারিখে পায়াম্বারে ইসলাম, ১৩৭৮ সৌরবর্ষ, পৃ. ৬৭।</ref> [[হেরা গুহা]]’তে তিনি (সা.) ইবাদতরত অবস্থায় থাকাকালে [[হযরত জীবরাইল]] আগমন করেন এবং তাঁর নবুয়্যতের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার কথা জানান। বে’সাতের (নবুয়্যত ঘোষণা) কাছাকাছির বছরগুলোতে প্রতিবছর তিনি লোকালয় থেকে দূরে এক মাসের জন্য হেরা গুহাতে মহান আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন হতেন।<ref>শাহিদী, তারিখে তাহলিলিয়ে ইসলাম, ১৩৯০ সৌরবর্ষ, পৃ. ৪১।</ref> এ সম্পর্কে তিনি বলেন: জীবরাইল আমার কাছে এসে বলল: পড়! আমি বললাম: আমি পড়তে পারি না। তিনি আবার বললেন: পড়! আমি বললাম: কি পড়ব? তিনি বললেন: ((اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّک الَّذِی خَلَقَ)) (পড়! তোমার প্রতিপালকের নামে, যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন’।<ref>আলাক্ব : ০১</ref> প্রসিদ্ধ হল ৪০ বছর বয়সে তাঁর নবুয়্যতের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা প্রদান করা হয়।<ref>শাহিদী, তারিখে তাহলিলিয়ে ইসলাম, ১৩৯০ সৌরবর্ষ, পৃ. ৪১।</ref> | |||
[[তাওহিদ|তাওহিদের]] প্রতি আমন্ত্রণকে মহানবি (সা.) সর্বপ্রথম নিজের পরিবার থেকেই শুরু করেন। নারীদের মধ্যে তাঁর প্রতি সর্বপ্রথম ঈমান এনেছিলেন হযরত খাদিজা (সা. আ.) এবং পুরুষদের মধ্যে [[হযরত আলীর (আ.) ফজিলত|হযরত আলী ইবনে আবি তালিব (আ.)]]।<ref>ইবনে ইসহাক, সিরাতু ইবনে ইসহাক, ১৩৯৮ হি., পৃ, ১৩২, ১৩৮ ও ১৩৯; ইবনে হিশাম, সিরাতুন নাবাভিয়্যাহ, দারু ইহইয়াইত তুরাসিল আরাবি, খণ্ড ১, পৃ. ২৬২</ref> অবশ্য কিছু কিছু সূত্রে, প্রথম ঈমান আনয়নকারী হিসেবে [[আবু বকর বিন আবু কুহাফা]] ও [[যাইদ বিন হারেসা]]’র নাম উল্লিখিত হয়েছে।<ref>ইবনে হিশাম, সিরাতুন নাবাভিয়্যাহ, দারু ইহইয়াইত তুরাসিল আরাবি, খণ্ড ১, পৃ. ২৬৪ ও ২৬৬।</ref> | [[তাওহিদ|তাওহিদের]] প্রতি আমন্ত্রণকে মহানবি (সা.) সর্বপ্রথম নিজের পরিবার থেকেই শুরু করেন। নারীদের মধ্যে তাঁর প্রতি সর্বপ্রথম ঈমান এনেছিলেন হযরত খাদিজা (সা. আ.) এবং পুরুষদের মধ্যে [[হযরত আলীর (আ.) ফজিলত|হযরত আলী ইবনে আবি তালিব (আ.)]]।<ref>ইবনে ইসহাক, সিরাতু ইবনে ইসহাক, ১৩৯৮ হি., পৃ, ১৩২, ১৩৮ ও ১৩৯; ইবনে হিশাম, সিরাতুন নাবাভিয়্যাহ, দারু ইহইয়াইত তুরাসিল আরাবি, খণ্ড ১, পৃ. ২৬২</ref> অবশ্য কিছু কিছু সূত্রে, প্রথম ঈমান আনয়নকারী হিসেবে [[আবু বকর বিন আবু কুহাফা]] ও [[যাইদ বিন হারেসা]]’র নাম উল্লিখিত হয়েছে।<ref>ইবনে হিশাম, সিরাতুন নাবাভিয়্যাহ, দারু ইহইয়াইত তুরাসিল আরাবি, খণ্ড ১, পৃ. ২৬৪ ও ২৬৬।</ref> | ||
প্রথমদিকে মহানবির (সা.) দাওয়াতের পরিধি সীমিত থাকলেও নব দীক্ষিত মুসলমানদের সংখ্যা বাড়তে থাকে এবং কিছুদিনের মধ্যেই ঈমান আনয়নকারী মুসলমানরা [[মক্কা]]র আশেপাশে | প্রথমদিকে মহানবির (সা.) দাওয়াতের পরিধি সীমিত থাকলেও নব দীক্ষিত মুসলমানদের সংখ্যা বাড়তে থাকে এবং কিছুদিনের মধ্যেই ঈমান আনয়নকারী মুসলমানরা [[মক্কা]]র আশেপাশে গিয়ে মহানবির (সা.) সাথে [[নামাজ]] আদায় করা শুরু করল। <ref>ইবনে হিশাম, সিরাতুন নাবাভিয়্যাহ, দারু ইহইয়ায়িত তুরাসিল আরাবি, খণ্ড ১, পৃ. ২৮১ ও ২৮২।</ref> | ||
=প্রকাশ্যে দাওয়াত= | =প্রকাশ্যে দাওয়াত= |