পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ; হলো ফজর, যোহর, আসর, মাগরিব এবং এশার নামাজ, যা আদায় করা প্রাপ্তবয়স্ক প্রত্যেক নারী-পুরুষের উপর ফরজ। নামাজ মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতের মধ্যে একটি, যা নির্দিষ্ট আহকাম ও শর্তাবলীসহ দিনের নির্ধারিত সময়ে পাঁচবার আদায় করা হয়।
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের রাকাত সংখ্যা এবং সময়
- ফজর নামাজ: দুই রাকাত বিশিষ্ট্য নামাজ যা সুবহে সাদেক থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত সময়ের মধ্যে পড়া হয়।
- যোহর নামাজ: চার রাকাত বিশিষ্ট্য নামাজ যা যোহরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পর থেকে সূর্যাস্তের পূর্বে আসরের চার রাকাত নামাজ আদায় করার জন্য যেটুকু সময় প্রয়োজন তার আগ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে পড়া হয়। শুক্রবার বা জুম্মার দিনে, যোহর নামাজের পরিবর্তে জুম্মার নামাজ পড়া হয়।
- আসর নামাজ: এটি চার রাকাত বিশিষ্ট্য নামাজ যা যোহরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পর যোহর নামাজ আদায় করার মতো যেটুকু সময় প্রয়োজন তার পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে পড়া হয়।
- মাগরিব নামাজ: এটি তিন রাকাত বিশিষ্ট্য নামাজ যা মাগরিবের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পর থেকে শারয়ি মধ্যরাতের পূর্বে চার রাকাত এশার নামাজ পড়ার মতো যেটুকু সময় প্রয়োজন আগ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে পড়া হয়।
- এশার নামাজ: এটি চার রাকাত বিশিষ্ট্য নামাজ যা মাগরিবের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পর মাগরিব নামাজ আদায় করার মতো যেটুকু সময় প্রয়োজন তার পর থেকে শারয়ি মধ্যরাত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে পড়া হয়।[১]
অন্যান্য কতিপয় আহকাম
- মুসাফিরের নামাজ কসর হবে; অর্থাৎ, চার রাকাত বিশিষ্ট্য ফরয নামাজ দুই রাকাত করে পড়তে হবে।
- যোহর ও আসর নামাজে ক্বিরাত ধীরে ধীরে পড়তে হবে।
- পুরুষদের জন্য ফজর, মাগরিব এবং এশার নামাজে ক্বিরাত উচ্চস্বরে পাঠ করতে হবে এবং মহিলারা এগুলি ধীরে ধীরে বা উচ্চস্বরে পাঠ করতে পারবে।
- পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ প্রাপ্তবয়স্ক প্রত্যেক মুসলমান নারী-পুরুষ সকলের উপর যেকোনো পরিস্থিতিতে ফরজ; তবে হায়েয (ঋতুস্রাব) এবং নিফাসের (প্রসবের পর থেকে দশ দিন পর্যন্ত যে রক্তক্ষরণ হয়) অবস্থায় থাকা মহিলাদের জন্য ব্যতীত। [২]
দুই নামাজ একত্রে আদায়ের বিধান
- মূল নিবন্ধ: দুই নামাজ একত্রে পড়া
আহলে সুন্নাতের ফিকাহ অনুযায়ী, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পৃথক ভাবে পাঁচ ওয়াক্তে পড়তে হবে।[৩] শিয়াদের ফিকাহ অনুযায়ী, যদিও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ তার নির্ধারিত পাঁচ ওয়াক্তে পড়া উত্তম; তথাপি তারা যোহর নামাজ আদায়ের পরপরই আসরের নামাজ এবং মাগরিবের নামাজ আদায়ের পরপরই এশার নামাজ পড়া জায়েজ বলে মনে করেন। শিয়া সম্প্রদায় এক্ষেত্রে কুরআন ও সুন্নাহ থেকে দলিল এবং প্রমাণাদি উল্লেখ করেছে।[৪]
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের গুরুত্ব
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ হল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতের মধ্যে একটি, যাকে হাদিসসমূহে ‘ইসলামের ভিত্তি’, ‘মুমিনের মিরাজ’, ‘দৈনন্দিন গুনাহ মোচনকারী’, ‘সর্বোত্তম আমল’ ইত্যাদি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।[৫]
তথ্যসূত্র
গ্রন্থপঞ্জি
- ইমাম খোমিনী, সাইয়্যেদ রুহুল্লাহ, তাহরিরুল ওয়াসিলাহ, তেহরান, মুয়াসসেসেয়ে তানযিম ওয়া নাশরে আসারে ইমাম খোমিনী (র:), ১৩৭৯ (ফার্সি সন),
- নাজাফি, মুহাম্মাদ হাসান, জাওয়াহিরুল কালাম, বৈরুত, দারু ইহয়াইত তুরাসিল আরাবি, ১৩৬২ হি.,
- নিশাপুরী, মুসলিম বিন হাজ্জাজ, সহিহ মুসলিম, বৈরুত, দারুল কুতুবিল আরাবি, ১৪০৭ হি.।