গারানিকের উপাখ্যান; ঐ কল্পকাহিনীকে বোঝায় যাতে দাবী করা হয়েছে, সূরা নাজম তিলাওয়াতের সময় মহানবি (স.) শয়তানের প্ররোচনায় প্রভাবিত হয়ে কুরআনে নেই এমন দু’টি এবারত এ সূরার আয়াতের মাঝে এই ভেবে পড়েছেন যে, এবারতদ্বয় আয়াতের অংশ ও ওহি। কিন্তু জীবরাইল (আ.) এ ঘটনা সম্পর্কে তাঁকে (স.) অবগত করেন। এ কাহিনীতে দাবী করা হয়েছে, ঘটনাটি মুসলমানদের হাবাশায় হিজরতের প্রায় দু’ মাস পরের।

আহলে সুন্নতের বেশ কিছু ইতিহাস ও তাফসির গ্রন্থে -যেমন: সিরায়ে ইবনে ইসহাক, আত-তাবাকাতুল কুবরাতাফসিরে তাবারী’- গারানিকের কাহিনী সংশ্লিষ্ট রেওয়ায়েতগুলো উল্লেখ পূর্বক ঘটনাটির উপর আলোকপাত করা হয়েছে। এর বিপরীতে আহলে সুন্নত ও শিয়াদের বিপুল সংখ্যক আলেম বিভিন্ন দলীল উত্থাপনের মাধ্যমে গারানিকের কাহিনীকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। বিশিষ্ট শিয়া মুফাসসির মুহাম্মাদ হাদী মারেফাত, গারানিক সংশ্লিষ্ট রেওয়ায়েতগুলোর সনদ ত্রুটিযুক্ত বলেছেন; কেননা তার মতে, মূল রাভিদের কেউই মহানবি (স.)-কে দেখনি অতএব, তাদের কেউই সাহাবা ছিলেন না।

মহানবি (স.) নফসের কুমন্ত্রণার শিকার হতে পারেন বা শয়তানের প্ররোচনায় প্রভাবিত হতে পারেন -এমন বিষয় ইবনে হাইয়ান আন্দালুসি প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন: উল্লেখিত ঘটনা আহলে সুন্নতের নির্ভরযোগ্য কোন হাদীস গ্রন্থে উল্লেখিত হয় নি। এছাড়াও বিশিষ্ট সুন্নি মুফাসসির ও মুতাকাল্লিম ফাখরে রাজীর মতে, গারানিকের কাহিনী কুরআনের বিষয়ে যাহেরপন্থী মুফাসসিরদের সাথে সম্পর্কিত একটি বর্ণনা। তার মতে এ দলটির বিপরীতে গবেষকরা পবিত্র কুরআন, সুন্নতআকল (বুদ্ধিবৃত্তি) ভিত্তিক বিভিন্ন দলীলের মাধ্যমে ঐ ঘটনাকে জাল, বানোয়াট ও বাতিল সাব্যস্ত করেছেন।

প্রাচ্যবিদদের কেউ কেউ কয়েকটি ইসলামি সূত্রে উল্লেখিত গারানিকের গল্পকে পুঁজি করে ওহি’তে শয়তানের হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার কথা ব্যক্ত করছেন। একইভাবে সালমান রুশদি রচিত স্যাটানিক ভার্সেস-এর একটি অংশও এই গল্পকে কেন্দ্র করেই।

মূল কাহিনী

সাইয়্যেদ জাফার মুর্তাযা আমেলি তার ‘আস-সাহিহ মিন সিরাতিন নাবিয়্যিল আ’যাম’ গ্রন্থে গারানিকের কল্পকাহিনী সম্পর্কে যা কিছু লিখেছেন তার ভিত্তিতে, আহলে সুন্নতের আদ-দুররুল মানসুর,[১] আস-সীরাতুল হালাবিয়্যাহ,[২] তাফসীরে তাবারি[৩] এবং ফাতহুল বারী[৪] গ্রন্থে এ সম্পর্কে বেশ কয়েকটি রেওয়ায়েত উল্লেখিত হয়েছে। ঐ রেওয়ায়েতগুলোর ভিত্তিতে, হাবাশায় মুসলমানদের হিজরতের প্রায় দু’ মাস পরের ঘটনা; মহানবি (স.) মুশরিকদের মাঝে ছিলেন এমন সময় তাঁর উপর সূরা নাজম অবতীর্ণ হয়। তিনি (স.) সূরাটি তেলাওয়াত করেন এবং ১৯ ও ২০নং আয়াত (أَفَرَأَيْتُمُ اللَّاتَ وَالْعُزَّىٰ وَمَنَاةَ الثَّالِثَةَ الْأُخْرَىٰ) [অনুবাদ: তোমরা কি লাত ও উযযা সম্পর্কে ভেবে দেখেছ? আর তৃতীয় আরেকটি মানাৎ সম্পর্কে (এসব অক্ষম, বাকশক্তিহীন, নড়াচড়ার শক্তিহীন মূর্তিগুলোর পূজা করা কতটা যুক্তিযুক্ত!)] পর্যন্ত তেলাওয়াতের পর তিনি শয়তানের প্ররোচনায় প্রভাবিত হন এবং ধারণা করেন যে, মুশরিকদের মাঝে প্রসিদ্ধ ও গ্রহণযোগ্য ((تِلْکَ الْغَرانیقُ الْعُلی وَإنّ شَفاعَتَهُنَّ لَتُرْتَجی)) (এরা হচ্ছে উচ্চমানের গারানিক (সারস, কাক, দাঁড়কাক ও ঈগল অর্থে ব্যবহৃত হয়) যাদের সুপারিশ প্রত্যাশিত।) -এ এবারতটিও সূরা নাজমের অংশ।[৫]

সুতরাং, মহানবি (স.) উল্লিখিত এবারতটিকে ওহি মনে করে উচ্চারণ করেন। কিন্তু রাতে মহানবি (স.)-এর নিকট যখন জীবরাইল (আ.)-এর আগমন ঘটে এবং তিনি সূরা নাজম তিলাওয়াত করে শোনান, তখন জীবরাইল (আ.) উল্লিখিত দু’টি বাক্যকে (تِلْکَ الْغَرانیقُ الْعُلی وَإنّ شَفاعَتَهُنَّ لَتُرْتَجی) প্রত্যাখ্যান করেন। এ সময় মহানবি (স.) বললেন: ‘তবে কি আমি মহান আল্লাহর উপর এমন কিছু আরোপ করলাম যা তিনি বলেন নি?’ অতঃপর মহান আল্লাহ্ সূরা বনি ইসরাইলের ৭৩-৭৫ নং আয়াত অবতীর্ণ করলেন:

وَاِنْ كَادُوْا لَيَفْتِنُوْنَكَ عَنِ الَّذِيْٓ اَوْحَيْنَآ اِلَيْكَ لِتَفْتَرِيَ عَلَيْنَا غَيْرَهٗۖ وَاِذًا لَّاتَّخَذُوْكَ خَلِيْلًا

وَلَوْلَآ اَنْ ثَبَّتْنٰكَ لَقَدْ كِدْتَّ تَرْكَنُ اِلَيْهِمْ شَيْـًٔا قَلِيْلًا ۙ

اِذًا لَّاَذَقْنٰكَ ضِعْفَ الْحَيٰوةِ وَضِعْفَ الْمَمَاتِ ثُمَّ لَا تَجِدُ لَكَ عَلَيْنَا نَصِيْرًا

(৭৩) আমরা তোমার প্রতি যে প্রত্যাদেশ (ওয়াহি) দিয়েছি তাত্থেকে তোমাকে পদস্খলিত করার জন্য তারা চেষ্টার কোন ত্রুটি করেনি যাতে তুমি আমার সম্বন্ধে তার (অর্থাৎ নাযিলকৃত ওয়াহীর) বিপরীতে মিথ্যা রচনা কর, তাহলে তারা তোমাকে অবশ্যই বন্ধু বানিয়ে নিত।

(৭৪) আর আমরা তোমাকে দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত না রাখলে তুমি তাদের দিকে কিছুটা ঝুঁকেই পড়তে।

(৭৫) তুমি তা করলে আমি তোমাকে এ দুনিয়ায় ও পরকালে দ্বিগুণ ‘আযাবের স্বাদ আস্বাদন করাতাম। সে অবস্থায় তুমি তোমার জন্য আমার বিরুদ্ধে কোন সাহায্যকারী পেতে না।[৬]

মুসলিম লেখকদের গ্রন্থসমূহে গারানিকের কাহিনী

আহলে সুন্নতের বেশ কিছু তাফসির, হাদিস ও ইতিহাস গ্রন্থে গারানিকের ঘটনাটি উল্লিখিত হয়েছে; যেমন- সীরায়ে ইবনে ইসহাক;[৭] মহানবি (স.)-এর জীবনী নিয়ে রচিত প্রথম গ্রন্থ,[৮] আত-তাবাকাতুল কুবরা;[৯] হিজরী তৃতীয় শতাব্দির মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত প্রায় ৪ হাজার রাভি (হাদীস বর্ণনাকারী) সম্পর্কিত তথ্য সম্বলিত,[১০]তারিখুল ইসলাম;[১১] হিজরী ৭ম শতাব্দির একটি গ্রন্থ[১২] এবং তাফসিরে তাবারি;[১৩] তাফসির ভিত্তিক হাদীসসমূহের উপর ভিত্তি করে রচিত এ গ্রন্থ সবচেয়ে পুরাতন ও সমৃদ্ধ তাফসীরগুলোর একটি।[১৪] এই গ্রন্থগুলিতে মুসলমানদের একটি দলের হাবাশায় হিজরত করার ঘটনা বর্ণনার সাথে গারানিকের কল্পকাহিনীও উল্লেখিত হয়েছে।[১৫]

এরপর আলী ইবনে আহমাদ ওয়াহেদি[১৬] (মৃ. ৪৬৮), মুহাম্মাদ ইবনে উমার যেমাখশারি (মৃত ৫৩৮),[১৭] আব্দুল্লাহ ইবনে উমার বাইদ্বাভি (মৃ. ৭৯১)[১৮] এবং জালালুদ্দীন সুয়ূতি (মৃ. ৯১১)[১৯] এ কাহিনী বর্ণনা করেছেন।

কাহিনীর বিরোধীরা

গারানিকের ঘটনা আহলে সুন্নতের কিছু গ্রন্থে উল্লেখিত হলেও আহলে সুন্নত ও শিয়া আলেমদের বড় একটি অংশ উল্লিখিত ঘটনা প্রত্যাখ্যান করে বিভিন্ন দলীল পেশ করেছেন। যেমন: সাইয়্যেদ মুর্তাযা আমেলি তার তানযীহুল আম্বিয়া গ্রন্থে গারানিক সংশ্লিষ্ট রেওয়ায়েতগুলোকে মূল্যায়ন করতে গিয়ে বলেছেন: এ প্রসঙ্গে আসহাবে হাদীসের ভাষ্য হল ওগুলো দূর্বল এবং প্রত্যাখ্যাত।[২০]

গারানিকের ঘটনা প্রত্যাখ্যানে উত্থাপিত দলীলের কয়েকটি নিম্নে দেওয়া হল:

ত্রুটিযুক্ত সনদ: মুহাম্মাদ হাদি মারেফাতের ভাষ্যমতে, যে সকল রেওয়ায়েতে গারানিকের ঘটনা বর্ণিত হয়েছে সেগুলোর কোনটাই মহানবি (স.)-এর সাহাবাগণের সাথে সংযুক্ত নয় এবং মহানবি (স.)-এর যুগের সাথে সবচেয়ে নিকটবর্তী রাভিরা হলেন তাবেঈরা (ইবনে আব্বাস ব্যতীত); যারা মহানবি (স.)-কে দেখে নি এবং ঘটনার সময় উপস্থিতও ছিলেন না।[২১] হাদি মারেফাত এ ঘটনার এক রাভি ইবনে আব্বাস সম্পর্কে লিখেছেন: তিনি হিজরতের ৩ বছর আগে জন্মগ্রহণ করেন, এ কারণে তার ঐ ঘটনার সাক্ষী হওয়ার সম্ভাবনা নেই। অতএব, কোন রাভিই সরাসরি ঐ ঘটনার সাক্ষী ছিলেন না।[২২]

যে সকল মুসলিম মুফাসসির গারানিকের ঘটনা’র সমালোচনা ও প্রত্যাখ্যান করেছেন তারা হলেন:

১। ইবনে হাইয়ান আন্দালুসি, পবিত্র কুরআনের বিভিন্ন আয়াত বিশেষভাবে সূরা নাজমের ১-৪নং ও সূরা ইউনুসের ১৫নং আয়াতের ভিত্তিতে, মহানবি (স.) নফসের কুমন্ত্রণার শিকার হতে পারেন বা শয়তানের প্ররোচনায় প্রভাবিত হতে পারেন এমন সম্ভাবনাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।[২৩] তিনি, আহমাদ ইবনে হুসাইন বাইহাকী হিজরী ৫ম শতাব্দির বিশিষ্ট শাফেয়ী মাযহাবের মুহাদ্দিসের মন্তব্যের প্রতি ইঙ্গিত করে গারানিকের ঘটনার রাভিদেরকে প্রত্যাখ্যাত অভিহিত করে বলেছেন: উল্লিখিত ঘটনা আহলে সুন্নতের নির্ভরযোগ্য হাদীস গ্রন্থগুলোতে -যেগুলো সিহাহ নামে প্রসিদ্ধ- এবং প্রথমসারির হাদীসগ্রন্থগুলোতেও উল্লেখিত হয় নি।[২৪]

২। হিজরী ষষ্ঠ শতাব্দির বিশিষ্ট মুফাসসির ও মুহাদ্দিস আবুল ফুতুহ রাজী তার তাফসিরে রাওদ্বুল জিনান গ্রন্থে, গারানিকের ঘটনাকে বাতিল ও প্রত্যাখ্যাত বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি (فینسخ الله ما یلقی الشیطان) (শয়তানের সকল প্ররোচনাকে মহান আল্লাহ বিলুপ্ত ও ধ্বংস করে দেন।) -এ এবারত সম্পর্কে, -যা মুফাসসিরদের একটি দলের পক্ষ থেকে মহানবি (স.)-এর শয়তানের প্ররোচনায় প্রভাবিত হওয়া হিসেবে ধরে নেওয়া হয়েছে- তাদের ধারণা ভুল প্রমাণে বেশ কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করেছেন;[২৫] যেমন: মুশরিকদের অভ্যাস ছিল, মহানবি (স.)-এর যখন ওহি তেলাওয়াত করতেন তখন তারা কবিতা আবৃতি করত, যাতে মহানবি (স.)-কে ভ্রান্তিতে ফেলতে পারে। আয়াতের এ অংশটির অর্থ হলো, মহান আল্লাহ্ তাদের শয়তানি প্ররোচনাকে প্রতিহত করেন। অথবা এমনও হতে পারে যে, যখন মহানবি (স.) কুরআন তেলাওয়াত করছিলেন একই সময় মুশরিকদের কেউ ঐ এবারতটিকে পড়ার কারণে একটি দল মনে করেছে যে, ওটাও মহানবি (স.)-এর মুখ থেকে উচ্চারিত হয়েছে।[২৬] অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে আবুল ফুতুহ রাজী ‘হাসান বসরি’ থেকে বর্ণনা করেছেন যে, (تِلْکَ الْغَرانیقُ الْعُلی وَإنّ شَفاعَتَهُنَّ لَتُرْتَجی) এবারতটিকে মহানবি (স.)-এর মুখে মুশরিকদের কথা সত্যায়ন কল্পে উচ্চারিত হয় নি, বরং তাদেরকে কটাক্ষ ও তিরস্কারের উদ্দেশ্যে ছিল।[২৭]

৩। বিশিষ্ট সুন্নি মুফাসসির ও মুতাকাল্লিম ফাখরে রাজী, গারানিকের ঘটনাকে পবিত্র কুরআনের বিষয়ে যাহেরপন্থি মুফাসসিরদের বর্ণনা বলে উল্লেখ করে বলেছেন যে, এ দলটির বিপরীতে গবেষকগণ পবিত্র কুরআন, সুন্নতআকল (বুদ্ধিবৃত্তি) ভিত্তিক বিভিন্ন দলীলের সহায়তায় ঘটনাটি প্রত্যাখ্যান করছেন এবং একে জাল ও বাতিল বলে আখ্যায়িত করেছেন।[২৮] তিনি মহানবি (স)-এর পবিত্রতা প্রসঙ্গে কুরআন মাজিদের ৭টি আয়াত উল্লেখ করা ছাড়াও সহিহ বুখারির প্রতি ইঙ্গিত করে বলেছেন যে, গ্রন্থটিতে মহানবি (স.) কর্তৃক সূরা নাজম তেলাওয়াত, একইভাবে মুসলমান, মুশরিক এবং মানুষ ও জ্বীন জাতির সিজদা প্রসঙ্গ এলেও গারানিকের রেওয়ায়েত সম্পর্কে কিছুই বলা হয় নি।[২৯] মহানবি (স.)-এর সর্বাত্মক প্রচেষ্টা ছিল মূর্তিগুলোকে অস্বীকার করা -এ বিষয়ের প্রতি ইঙ্গিত করে ফাখরে রাজী, যারা মহানবি (স.)-কে মূর্তিগুলোর প্রশংসাকারী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন তাদেরকে কাফের বলেছেন।[৩০]

প্রাচ্যবিদদের ভূমিকা

প্রাচ্যবিদদের একটি দল, কিছু কিছু ইসলামি সূত্রে উল্লিখিত গারানিকের কল্পকাহিনীকে পুঁজি করে ওহি’তে শয়তানের হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা ব্যক্ত করেছেন।[৩১] লেবানিজ লেখক ও খ্রিষ্টান বিশপ ইউসুফ দাররাতুল হাদ্দাদও (১৯১৩-১৯৭০) সূরা নাহলের ৯৮নং আয়াতকে পুঁজি করে -যে আয়াতটিতে কুরআন তেলাওয়াতের সময় মহানবি (স.)-কে শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে মহান আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করার কথা বলা হয়েছে- মন্তব্য করেছেন যে, ওহি’তে শয়তানের হস্তক্ষেপ ছিল।[৩২]

সাম্প্রতিক সময়ের বিশিষ্ট কুরআন গবেষক মুর্তাযা কারিমি নিয়া’র বক্তব্য হলো; আর্থার জেফরি, মন্টগোমেরি ওয়াট ও জোসেফ হুয়ারুইটস গারানিক সংশ্লিষ্ট রেওয়াতগুলোকে গ্রহণ করেছেন।[৩৩] সালমান রুশদি তার বিভ্রান্তিকর ও বাতিল উপন্যাস স্যাটানিক ভার্সেসে’র একটি অংশ গারানিকের কল্পকাহিনীকে পুঁজি করে লিখেছে;[৩৪] ইমাম খোমেনি, এ উপন্যাসের লেখক এবং এর বিষয়বস্তু সম্পর্কে অবগত প্রকাশকের জন্য মৃত্যুদণ্ড ধার্য করছেন।[৩৫]

তথ্যসূত্র

গ্রন্থপঞ্জি

  • ইবনে ইসহাক, মুহাম্মাদ, সীরে ইবনে ইসহাক: আসসীরাতুন নাবাভিয়্যাহ লি-ইবনে ইসহাক, তাহকীক: আহমাদ ফরিদ আল মাজিদি, বৈরুত, দারুল কুতুব আল-ইলমিয়্যাহ, ১৪২৪ হি./২০০৪ খ্রি.।
  • ইবনে হাজার আসকালানী, আহমাদ বিন আলী, ফাতহুর বারি বি শারহি সাহীহ আল-বুখারি, তাসহীহ: মুহাম্মাদ ফুয়াদ আব্দুল বাকী ওয়া মাহাবুদ্দীন আল-খতিব ওয়া তা’লীকাহু আব্দুল আজিজ বিন আব্দুল্লাহ বিন বায, বৈরুত, দারুল মা’রেফাহ, ১৩৭৯ হি.।
  • ইবনে সা’দ, মুহাম্মাদ, আত তাবাকাতুল কুবরা, তাহকীক: মুহাম্মাদ আব্দুল কাদির আতা, বৈরুত, দারুল কুতুব আল-ইলমিয়্যাহ, ১৪১০ হি./১৯৯০খ্রি.।
  • আবুল ফুতুহ রাযি, হুসাইন বিন আলী, রাওদ্বাল জিনান ওয়া রূহুল জিনান ফি তাফসিরুল কুরআন, তাসহীহ: মুহাম্মাদ জাফর ইয়া হাক্কি ও মুহাম্মাদ মাহদি নাসেহ, মাশহাদ, অস্তানে কুদসে রাযাভি, ১৩৭১ ফার্সি সন।
  • আবু হাইয়ান, মুহাম্মাদ বিন ইউসুফ, আল-বাহরুল মুহিত ফিত তাফসির, বৈরুত, দারুল ফিকর, ১৪২০ হি.।
  • ইমাম খোমেনী, সাইয়্যেদ রুহুল্লাহ, সহিফায়ে ইমাম: মাজমুয়ে আসারে ইমাম খোমেনী, তেহরান, মুআসসেসেয়ে তানযীম ওয়া নাশরে আসারে ইমাম খোমেনী, পঞ্চম সংস্করণ, ১৩৮৯ ফার্সি সন।
  • বেইযাভী, আব্দুল্লাহ বিন উমর, আনওয়ারুত তানযীল ওয়া ইসরারুত তা’ভীল, বৈরুত, নাশর দারুল ফিকর, ১৪১৬ হি.।
  • হালবি, আলী বিন ইব্রাহিম, আস সিরাতুল হালাবিয়্যাহ: ইনসানুল উয়ূন ফি সিরাতিল আমিন আল-মা’মুন, বৈরুত, আল-মাক্তাবাতুল ইসলামিয়্যাহ, তারিখ অজ্ঞাত।
  • খুররাম শাহী, বাহাউদ্দীন, সাহমে ইরানিয়ান দার তাফসিরে কুরআন, মাজমুয়ে মাকালাতে কঙ্গরেয়ে শেখ মুফিদ, সংখ্যা ৩৭।
  • যাহাবী, মুহাম্মাদ বিন আহমাদ, তারিখুল ইসলাম ওয়া ওয়াফিয়াতুল মাশাহিরুল আ’লাম, বৈরুত, দারুল কুতুব আল-আরাবি, ১৪২২ হি.।
  • যেমাখশারি, মাহমুদ বিন উমর, আল-কাশ্শাফ আন হাকায়িকি গাওয়ামিয আত তানযীল, নাশর দারুল কুতুব আল-আরাবি, ১৪০৭ হি.।
  • সুবহানি, জাফর, নেভিসান্দেগান এরতেবাতে খুদ রা বা ওলামায়ে হাওয়ে হেফয কুনান্দ: নামেয়ে হযরত আয়াতুল্লাহ সুবহানি বে ডক্টর সরুশ, দার মুতালেয়াতে কুরআনি নামেয়ে জমেয়ে, সংখ্যা ১৫, অযার ১৩৮৪ ফার্সি সন।
  • সুয়ূতি, আব্দুর রহমান বিন আবি বাকর, আদ দুররুল মনসুর ফি তাফসির বিল মা’সুর, কোম, মাক্তাবাতু আয়াতুল্লাহ আল-উযমা আল-মারআশি আল-নাযাফি, ১৪০৪ হি.।
  • আমেলি, সাইয়্যেদ জাফার মুর্তাযা, আস সাহীহ মিন সিরাতিন নাবিয়্যিল আ’যাম, বৈরুত, দারুল হাদি, ১৪১৫ হি./১৯৯৫ খ্রি.।
  • ইলমুল হুদা, আলী বিন হুসাইন, তানযিহুল আম্বিয়া, কোম, আশ-শরীফুর রাযি, তারিখ অজ্ঞাত।
  • ফাখরে রাযি, মুহাম্মাদ বিন উমর, তাফসিরে কাবির (মাফাতিহুল গাইব), বৈরুত, নাশরে দারুল কুতুব আল-ইলমিয়্যাহ, ১৪১১ হি.।
  • মা’রেফাত, মুহাম্মাদ হাদি, আত তামহীদু ফি উলুমিল কুরআন, কোম, মুআসসেসেয়ে ফারহাঙ্গিয়ে ইন্তেশারাতি আল-তামহীদ, ১৩৮৬ ফার্সি সন।
  • ওয়াহেদি, আলী বিন আহমাদ, আসবাবুন নুযুল আল-কুরআন, বৈরুত, নাশর দারুল কুতুব আল-ইলমিয়্যাহ, ১৪১১ হি.।