বিষয়বস্তুতে চলুন

আসাদুল্লাহ (উপাধি)

wikishia থেকে

আসাদুল্লাহ (আরবি: اَسَدُالله); ইমাম আলী ইবনে আবি তালিব (আ.)[] এবং হামযা ইবনে আব্দুল মুত্তালিবের[] উপাধি। আসাদুল্লাহ’র অর্থ হচ্ছে আল্লাহর সিংহ; বীরত্ব বোঝাতে তথা রূপক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।

মহানবি (স.), ইমাম আলী (আ.)-কে আসাদুল্লাহ এবং আসাদুর রাসূল (স.) উপাধিতে ভূষিত করেছেন।[] কোন কোন গ্রন্থে ইমাম আলীকে (আ.) আসাদুল্লাহিল গালিব (আল্লাহর বিজয়ী সিংহ) হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।[]

শিয়ারা, আসাদুল্লাহিল গালিবকে ইমাম আলীর (আ.) লকব বা উপাধি হিসেবে মনে করেন। আসাদুল্লাহ এবং এর অর্থ শেরে খোদা- ফার্সি সাহিত্যে ব্যাপক আকারে প্রতিফলিত হয়েছে এবং ফার্সি ভাষার কবি যেমন কাসায়ি মারুযি,[] সাদী,[আত্তার নিশাপুরি] আত্তার নিশাপুরী,[] উবায়েদ যাকানি’র[] কবিতাসমূহে ব্যবহৃত হয়েছে।

হামযা বিন আব্দুল মুত্তালিবকে যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার কারণে আসাদুল্লাহ[] এবং লেইসুল্লাহ বলে সম্বোধন করা হতো।[] মহানবি (স.) তাকে আসাদুল্লাহ এবং আসাদুর রাসূল (স.) হিসেবে পরিচয় করিয়েছেন।[১০] শিয়াদের কুতুবে আরবাআ’র অন্যতম আল-কাফি গ্রন্থে উল্লেখিত রেওয়ায়েতের ভিত্তিতে, আরশের স্তম্ভে লেখা হয়েছে যে, হামযা হচ্ছে "আসাদুল্লাহ এবং আসাদুর রাসূলুল্লাহ"।[১১]

হযরত হামযা বদরের যুদ্ধে শত্রুর ওপর হামলা চালানোর সময় পাঠ করা উদ্দীপনাময় কবিতায় নিজেকে আল্লাহর সিংহ এবং রাসূলুল্লাহর সিংহ বলে পরিচয় করিয়েছেন।[১২] ইমামগণ (আ.) কর্তৃক বর্ণিত যিয়ারতনামায়ও তাঁকে এই উপাধি সহকারে সালাম দেওয়া হয়েছে।[১৩]

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের জন্ম নিবন্ধন কার্যালয় কর্তৃক প্রকাশিত তথ্যানুসারে, আসাদুল্লাহ নামটি ১২৯৭ থেকে ১৩৮০ ফার্সি সন পর্যন্ত সময়ে ইরানে নিবন্ধিত শীর্ষ ১০০ পুরুষ নামের তালিকায় ছিল।[১৪]

তথ্যসূত্র

  1. ইবনে শাহরে আশুব, মানাকেবে আলে আবি তালিব, ১৩৭৯ হি., খণ্ড ৩, পৃ. ২৫৯।
  2. ইবনে আব্দুল বির, আল-ইস্তিআব, ১৪১২ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৩৬৯।
  3. ইবনে শাহরে আশুব, মানাকেবে আলে আবি তালিব, ১৩৭৯ হি., খণ্ড ৩, পৃ. ২৫৯।
  4. মাজলিসী, বিহারুল আনওয়ার, ১৪০৩ হি., খণ্ড ৩৪, পৃ. ২৬৮।
  5. কিসায়ি মারভাযি, দিওয়ানে আশআর, মাদহে হযরত আলী (আ.)।
  6. মানতেকুত তাইয়্যের, ফি ফাযিলাতি আমিরুল মু’মিনিন আলী ইবনে আবি তালিব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু।
  7. উবায়েদ যাকানি, দিওয়ানে আশআর, তারকিবাত, দার তাওহিদ ওয়া মানকাবাত।
  8. ইবনে হায়ুন, মাগরেবি, শারহুল আখবার, ১৪০৯ হি., খণ্ড ৩, পৃ. ২২৮।
  9. ইবনে হাজার, আল-আসাবাহ, ১৪১৫ হি., খণ্ড ৫, পৃ. ৫১২।
  10. মাজলিসী, বিহারুল আনওয়ার, ১৪০৩ হি., খণ্ড ৮, পৃ. ৫।
  11. কুলাইনি, আল-কাফি, ১৪০৭ হি., খণ্ড ১, পৃ. ২২৪।
  12. ওয়াকিদি, আল-মাগাযি, ১৪০৯ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৬৮; মুফিদ, আল-ইরশাদ, ১৪১৩ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৭৪।
  13. ইবনে কুলাভিয়া কুম্মি, কামিলুয যিয়ারাত, ১৩৫৬ ফার্সি সন, পৃ. ২২।
  14. গুযারেশিয়ে জালেব আয ইয়েক সাদ নামে বারতারে ইরানিয়ান দার কারনে হাযের।

গ্রন্থপঞ্জি

  • ইবনে হাজার আসকালানি, আহমাদ বিন আলী, আল-আসাবাতু ফি তামিযিস সাহাবা, তাহকিক: আদিল আহমাদ আব্দুল মাওজুদ ও আলী মুহাম্মাদ মাউদ্ব, বৈরুত, দারুল কুতুব আল-ইলমিয়্যাহ, ১৪১৫ হি./১৯৯৫ খ্রি.।
  • ইবনে হায়ুন মাগরেবি, নো’মান বিন মুহাম্মাদ, শারহুল আখবার ফি ফাদ্বায়েলিল আয়িম্মাতিল আতহার আলাইহিমুস সালাম, তাসহিহ: মুহাম্মাদ হুসাইন হুসাইনি জালালি, কোম, জামেয়ে মুদাররেসিন, ১৪০৯ হি.।
  • ইবনে শাহরে আশুব মাযান্দারানি, মুহাম্মাদ বিন আলী, মানাকেবে আলে আবি তালিব আলাইহিমুস সালাম, কোম, আল্লামা, ১৩৭৯ হি.।
  • ইবনে আব্দুল বারর, ইউসুফ বিন আব্দুল্লাহ, আল-ইস্তিয়াব ফি মা’রিফাতিল আসহাব, তাহকিক: আলী মুহাম্মাদ আল-বাজাভী, বৈরুত, দারুল জিল, ১৪১২ হি./১৯৯২ খ্রি.।
  • ইবনে কুলাভিয়া, জাফর বিন মুহাম্মাদ, কামিলুয যিয়ারাত, তাসহিহ: আব্দুল হুসাইন আমিনি, নাজাফ, দারুল মুর্তাযাভিয়্যাহ, ১৩৫৬ ফার্সি সন।
  • সাদী, মোসলেহ বিন আব্দুল্লাহ, মাওয়ায়েয, নোসখেয়ে গঞ্জুর।
  • শাহরিয়ার, সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ হুসাইন, দিওয়ানে শাহরিয়ার, তেহরান, মুআসসেসেয়ে ইন্তেশারাতে নেগাহ, ১৩৮৫ ফার্সি সন।
  • উবায়েদ যাকানি, উবায়দুল্লাহ, দিওয়ানে আশআর, নোসখেয়ে গঞ্জুর।
  • কিসায়ি মারভাযি, আবুল হাসান, দিওয়ানে আশআর, তাসহিহ মুহাম্মাদ আমিন রিয়াহি, নোসখেয়ে গঞ্জুর।
  • কুলাইনি, মুহাম্মাদ বিন ইয়াকুব, আল-কাফি, তাসহিহ: আলী আকবার গাফফারি ও মুহাম্মাদ আখুন্দি, তেহরান, দারুল কুতুব আল-ইসলামিয়্যাহ, ১৪০৭ হি.।
  • মাজলিসী, মুহাম্মাদ বাকের, বিহারুল আনওয়ার, তাসহিহ: গবেষকদের একটি দল, বৈরুত, দারু ইহিয়ায়িত তুরাসিল আরাবি, ১৪০৩ হি.।
  • মুফিদ, মুহাম্মাদ বিন মুহাম্মাদ, আল-ইরশাদ ফি মা’রিফাতি হুজাজিল্লাহ আলাল ইবাদ, তাসহিহ: মুআসসাসাতু আলুল বাইত আলাইহিমুস সালাম, কোম, কনগ্রেয়ে শেইখ মুফিদ, ১৪১৩ হি.।
  • ওয়াকিদি, মুহাম্মাদ বিন উমর, আল-মাগাযি, তাহকিক: মার্সডেন জোন্স, বৈরুত, মুআসসাসাতুল আ’লামি, ১৪০৯ হি./১৯৮৯ খ্রি.।