বিষয়বস্তুতে চলুন

জানাজার নামাজ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১০ নং লাইন: ১০ নং লাইন:


== সংজ্ঞা ==
== সংজ্ঞা ==
জানাজার নামাজ; মহান আল্লাহর সন্তুষ্টিকল্পে এমন কিছু দোয়া ও তাকবির পাঠকে বলা হয়, যা কোন মুসলিম মৃত ব্যক্তিকে গোসল ও [[কাফন|কাফনের]] পর এবং দাফনের পূর্বে পড়া ওয়াজিব। ফিকাহ সংশ্লিষ্ট সূত্রসমূহের ভিত্তিতে, জানাজার নামাজে অপর নামাজের কিছু কিছু শর্ত মেনে চলা ওয়াজিব নয়; যেমন পবিত্রতা।[১] একইভাবে জানাজার নামাযে [[সালাম]] নেই।[]
জানাজার নামাজ; মহান আল্লাহর সন্তুষ্টিকল্পে এমন কিছু দোয়া ও তাকবির পাঠকে বলা হয়, যা কোন মুসলিম মৃত ব্যক্তিকে গোসল ও [[কাফন|কাফনের]] পর এবং দাফনের পূর্বে পড়া ওয়াজিব। ফিকাহ সংশ্লিষ্ট সূত্রসমূহের ভিত্তিতে, জানাজার নামাজে অপর নামাজের কিছু কিছু শর্ত মেনে চলা ওয়াজিব নয়; যেমন পবিত্রতা।<ref>নাজাফী, জাওয়াহিরুল কালাম, ১৪০৪ হি., খণ্ড ১২, পৃ. ৬০।</ref> একইভাবে জানাজার নামাযে [[সালাম]] নেই।<ref>আল্লামা হিল্লি, তাযকিরাতুল ফুকাহা, ১৪১৪ হি., খণ্ড , পৃ. ৭৫; শহীদ সানি,আর-রাওদাতুল বাহিয়্যাহ, ১৪১০ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৪২৯।</ref>


== জানাজার নামাজ, নামাজ নয় ==
== জানাজার নামাজ, নামাজ নয় ==
[[শহীদ সানি|শাহীদে সানি’র]] ভাষ্যানুযায়ী, ফকীহগণের প্রসিদ্ধ দৃষ্টিভঙ্গী হলো, জানাজার নামাজ মূলতঃ [[নামাজ]] নয় এবং বাস্তবিক অর্থে মৃত ব্যক্তির জন্য এক প্রকার দোয়া; কেননা [[রুকু]] ও সিজদা ব্যতীত কোন ইবাদত নামাজ হিসেবে গন্য হয় না এবং প্রতিটি নামাজের পূর্বশর্ত হলো [[পবিত্রতা]] অর্জন করা, কিন্তু জানাজার নামাজে এর কোনটাই শর্ত নয়।[৩]
[[শহীদ সানি|শাহীদে সানি’র]] ভাষ্যানুযায়ী, ফকীহগণের প্রসিদ্ধ দৃষ্টিভঙ্গী হলো, জানাজার নামাজ মূলতঃ [[নামাজ]] নয় এবং বাস্তবিক অর্থে মৃত ব্যক্তির জন্য এক প্রকার দোয়া; কেননা [[রুকু]] ও সিজদা ব্যতীত কোন ইবাদত নামাজ হিসেবে গন্য হয় না এবং প্রতিটি নামাজের পূর্বশর্ত হলো [[পবিত্রতা]] অর্জন করা, কিন্তু জানাজার নামাজে এর কোনটাই শর্ত নয়।<ref>শহীদ সানি, রাওদাতুল জিনান, মুয়াস্সেসেয়ে আলুল বাইত, পৃ. ১৭২ ও ১৭৩।</ref>


[[ফিকহুর রিযা]] গ্রন্থে [[ইমাম রেযা (আ.)]] থেকে একটি রেওয়ায়েত বর্ণিত হয়েছে যে, জানাজার নামাজ, নামাজ নয় বরং কিছু তাকবির; কেননা ঐ আমলকে নামাজ বলা হয় যাতে রুকু ও সিজদা রয়েছে।[৪]
[[ফিকহুর রিযা]] গ্রন্থে [[ইমাম রেযা (আ.)]] থেকে একটি রেওয়ায়েত বর্ণিত হয়েছে যে, জানাজার নামাজ, নামাজ নয় বরং কিছু তাকবির; কেননা ঐ আমলকে নামাজ বলা হয় যাতে রুকু ও সিজদা রয়েছে।<ref>ফিকহুর রিযা, ১৪০৬ হি., পৃ. ১৭৯।</ref>


== কিভাবে পড়তে হয় ==
== কিভাবে পড়তে হয় ==
জানাজার নামাজ পড়ার জন্য মাইয়্যাত তথা মৃত ব্যক্তিকে [[কেবলা|কেবলামুখি]] রাখতে হয়, এমনভাবে যেন মাইয়্যাতের মাথা মুসল্লিদের ডান দিকে এবং পাগুলো বাম দিকে থাকে।[৫] মুসল্লিরা কেবলা মুখি হয়ে দাঁড়াবে[৬], দূরত্ব যেন মাইয়্যাত থেকে খুব বেশি না হয়[৭] এবং এ নামাজ দাঁড়িয়ে পড়বে।[৮]
জানাজার নামাজ পড়ার জন্য মাইয়্যাত তথা মৃত ব্যক্তিকে [[কেবলা|কেবলামুখি]] রাখতে হয়, এমনভাবে যেন মাইয়্যাতের মাথা মুসল্লিদের ডান দিকে এবং পাগুলো বাম দিকে থাকে।<ref>শহীদ সানি,আর-রাওদাতুল বাহিয়্যাহ, ১৪১০ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৪২৬।</ref> মুসল্লিরা কেবলা মুখি হয়ে দাঁড়াবে<ref>নাজাফী, জাওয়াহিরুল কালাম, ১৪০৪ হি., খণ্ড ১২, পৃ. ৫৩।</ref>, দূরত্ব যেন মাইয়্যাত থেকে খুব বেশি না হয়<ref>নাজাফী, জাওয়াহিরুল কালাম, ১৪০৪ হি., খণ্ড ১২, পৃ. ৬৭।</ref> এবং এ নামাজ দাঁড়িয়ে পড়বে।<ref>শহীদ সানি,আর-রাওদাতুল বাহিয়্যাহ, ১৪১০ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৪২৬।</ref>


মুসল্লিরা নিয়্যতের পর ৫টি তাকবির বলবে, ৪টি তাকবিরের প্রতিটির আগে বিশেষ দোয়া পাঠ করবে এবং ৫ তাকবির বলার মাধ্যমে নামাজ সমাপ্ত করবে।[৯]
মুসল্লিরা নিয়্যতের পর ৫টি তাকবির বলবে, ৪টি তাকবিরের প্রতিটির আগে বিশেষ দোয়া পাঠ করবে এবং ৫ তাকবির বলার মাধ্যমে নামাজ সমাপ্ত করবে।<ref>শহীদে আওয়াল, আদ্-দুরূসুশ্ শারইয়্যাহ, ১৪১৭ হি., খণ্ড ১, পৃ. ১১২-১১৩।</ref>


প্রথম তাকবিরের পর শাহাদাতাইন, দ্বিতীয় তাকবিরের পর সালাওয়াত, তৃতীয় তাকবিরের পর মু’মিন ও মুসলিমগণের জন্য মাগফিরাত কামনা, চতুর্থ তাকবিরের পর যে মৃত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে নামাজ পড়া হচ্ছে তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে এবং পঞ্চম তাকবিরের মাধ্যমে নামাজ সমাপ্ত হবে।[১০]
প্রথম তাকবিরের পর শাহাদাতাইন, দ্বিতীয় তাকবিরের পর সালাওয়াত, তৃতীয় তাকবিরের পর মু’মিন ও মুসলিমগণের জন্য মাগফিরাত কামনা, চতুর্থ তাকবিরের পর যে মৃত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে নামাজ পড়া হচ্ছে তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে এবং পঞ্চম তাকবিরের মাধ্যমে নামাজ সমাপ্ত হবে।<ref>শহীদে আওয়াল, আদ্-দুরূসুশ্ শারইয়্যাহ, ১৪১৭ হি., খণ্ড ১, পৃ. ১১৩; শহীদ সানি,আর-রাওদাতুল বাহিয়্যাহ, ১৪১০ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৪২৮।</ref>


৪ তাকবিরের পর যে সকল দোয়া পাঠ করতে হয়, সেগুলো হল:
৪ তাকবিরের পর যে সকল দোয়া পাঠ করতে হয়, সেগুলো হল:
৮৮ নং লাইন: ৮৮ নং লাইন:




সুন্নি ফকীহগণের দৃষ্টিতে জানাজার নামাজ ৪ তাকবির বিশিষ্ট; প্রথম তাকবিরের মাধ্যমে নামাজ শুরু হয়, অতঃপর মহান আল্লাহর প্রশংসা করা হয়। দ্বিতীয় তাকবিরের পর সালাওয়াত পাঠ করা হয়। তৃতীয় তাকবিরের পর মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করা হয় এবং ৪ তাকবির ও সালাম পাঠের মাধ্যমে নামাজ শেষ হয়।[১২] অবশ্য, এ নামাজ পড়ার পদ্ধতির বিষয়ে স্বয়ং আহলে সুন্নতের মাঝেও মতভিন্নতা রয়েছে।[১৩]
সুন্নি ফকীহগণের দৃষ্টিতে জানাজার নামাজ ৪ তাকবির বিশিষ্ট; প্রথম তাকবিরের মাধ্যমে নামাজ শুরু হয়, অতঃপর মহান আল্লাহর প্রশংসা করা হয়। দ্বিতীয় তাকবিরের পর সালাওয়াত পাঠ করা হয়। তৃতীয় তাকবিরের পর মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করা হয় এবং ৪ তাকবির ও সালাম পাঠের মাধ্যমে নামাজ শেষ হয়।<ref>মোল্লা খুসরূ, দূরারূল হেকাম শারহে গুরারূল আহকাম, দারূ ইহয়ায়িল কুতুবিল আরাবিয়্যাহ, খণ্ড ১, পৃ. ১৬৩।</ref> অবশ্য, এ নামাজ পড়ার পদ্ধতির বিষয়ে স্বয়ং আহলে সুন্নতের মাঝেও মতভিন্নতা রয়েছে।<ref>দ্র: ইবনে মাজাহ, আল-মুহিতুল বুরহানি, ২০০৪ খ্রি., খণ্ড ২, পৃ. ১৭৮; মোল্লা খুসরূ, দূরারূল হেকাম শারহে গুরারূল আহকাম, দারূ ইহয়ায়িল কুতুবিল আরাবিয়্যাহ, খণ্ড ১, পৃ. ১৬৩।</ref>


== আহকাম ==
== আহকাম ==
জানাজার নামাজ সংশ্লিষ্ট কতিপয় আহকাম:
জানাজার নামাজ সংশ্লিষ্ট কতিপয় আহকাম:


*জানাজার নামাজ [[ওয়াজিবে কেফায়ী]]; এ কারণে যদি কেউ এটি আঞ্জাম দিয়ে দেয় তাহলে অন্যদের উপর থেকে এর উজুব (আঞ্জামের আবশ্যকতা) অপসারিত হয়ে যায়।[১৪]
*জানাজার নামাজ [[ওয়াজিবে কেফায়ী]]; এ কারণে যদি কেউ এটি আঞ্জাম দিয়ে দেয় তাহলে অন্যদের উপর থেকে এর উজুব (আঞ্জামের আবশ্যকতা) অপসারিত হয়ে যায়।<ref>মুআজ্জাম, ফিকহুল জাওয়াহির, ১৪১৭ হি., খণ্ড ৪, পৃ. ১৭২</ref>
*জাওয়াহের গ্রন্থের প্রণেতার ভাষ্য হলো, শিয়া ফকীহগণের মাঝে প্রাসিদ্ধ দৃষ্টিভঙ্গী মতের ভিত্তিতে, একজন মৃত ব্যক্তির উপর কয়েকবার নামাজ আদায় করা মাকরুহ।[১৫[ [[আয়াতুল্লাহ সিস্তানি]]র মত হল, এই মাকরুহ হওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত নয়, তবে যদি মৃত ব্যক্তি বিশিষ্ট জ্ঞানী ও তাকওয়াবান ব্যক্তি হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে [[মাকরুহ নয়]]।[১৬]
*জাওয়াহের গ্রন্থের প্রণেতার ভাষ্য হলো, শিয়া ফকীহগণের মাঝে প্রাসিদ্ধ দৃষ্টিভঙ্গী মতের ভিত্তিতে, একজন মৃত ব্যক্তির উপর কয়েকবার নামাজ আদায় করা মাকরুহ।<ref>নাজাফী, জাওয়াহিরুল কালাম, ১৪০৪ হি., খণ্ড ১২, পৃ. ৬৭।</ref> [[আয়াতুল্লাহ সিস্তানি]]র মত হল, এই মাকরুহ হওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত নয়, তবে যদি মৃত ব্যক্তি বিশিষ্ট জ্ঞানী ও তাকওয়াবান ব্যক্তি হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে [[মাকরুহ নয়]]।<ref>বানি হাশেমী খোমিনী, তাওযিহুল মাসায়েল মারাজেঅ' ১৪২৪ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৩৩৬, মাসআলা ৬০৬।</ref>
*জানাজার নামাজ জামায়াত বদ্ধভাবে পড়া যায়, তবে সেক্ষেত্রে মা’মুমের জন্য তাকবির এবং দোয়াগুলো পড়া [[ওয়াজিব]]।[১৭]
*জানাজার নামাজ জামায়াত বদ্ধভাবে পড়া যায়, তবে সেক্ষেত্রে মা’মুমের জন্য তাকবির এবং দোয়াগুলো পড়া [[ওয়াজিব]]।<ref>শহীদ সানি,আর-রাওদাতুল বাহিয়্যাহ, ১৪১০ হি., খণ্ড ১, পৃ. ২০৫।</ref>
*৬ বছরের উর্ধ্বে যে কোন মুসলিম মৃত ব্যক্তির উপর জানাজার নামাজ পড়া ওয়াজিব।[১৮]
*৬ বছরের উর্ধ্বে যে কোন মুসলিম মৃত ব্যক্তির উপর জানাজার নামাজ পড়া ওয়াজিব।<ref>শহীদে আওয়াল, আদ্-দুরূসুশ্ শারইয়্যাহ, ১৪১৭ হি., খণ্ড ১, পৃ. ১১১।</ref>
*[[কাফের]] এবং [[নাসেবি’র]] উপর এ নামাজ পড়া হয় না।[১৯]
*[[কাফের]] এবং [[নাসেবি’র]] উপর এ নামাজ পড়া হয় না।<ref>শহীদে আওয়াল, আদ্-দুরূসুশ্ শারইয়্যাহ, ১৪১৭ হি., খণ্ড ১, পৃ. ১১১।</ref>
*জানাজার নামাযে হাদাসে আকবার বা হাদাসে আসগার থেকে পবিত্রতা অর্জন ওয়াজিব নয়।[২০] তবে ওয়াজিব নামাজের অন্যান্য শর্তাবলি মেনে চলা উত্তম।[২১]
*জানাজার নামাযে হাদাসে আকবার বা হাদাসে আসগার থেকে পবিত্রতা অর্জন ওয়াজিব নয়।<ref>নাজাফী, জাওয়াহিরুল কালাম, ১৪০৪ হি., খণ্ড ১২, পৃ. ৬০।</ref> তবে ওয়াজিব নামাজের অন্যান্য শর্তাবলি মেনে চলা উত্তম।<ref>আমুলী, মিসবাহুল হুদা, ১৩৮০ হি., খণ্ড ৬, পৃ. ৩৬৯।<ref>
*জানাজার নামাজ, দাফনের পূর্বে[২২] এবং গোসল ও কাফনের পরে পড়া হয়।[২৩]
*জানাজার নামাজ, দাফনের পূর্বে<ref>আমুলী, মিসবাহুল হুদা, ১৩৮০ হি., খণ্ড ৬, পৃ. ৩৯২।<ref> এবং গোসল ও কাফনের পরে পড়া হয়।<ref>নাজাফী, জাওয়াহিরুল কালাম, ১৪০৪ হি., খণ্ড ১২, পৃ. ৬৮।</ref>
*যদি কোন মুসলমানকে জানাজার নামাজ ব্যতীত দাফন করা হয়, তবে তার কবরের উপর নামাজ পড়তে হবে।[২৪]
*যদি কোন মুসলমানকে জানাজার নামাজ ব্যতীত দাফন করা হয়, তবে তার কবরের উপর নামাজ পড়তে হবে।<ref>আমুলী, মিসবাহুল হুদা, ১৩৮০ হি., খণ্ড ৬, পৃ. ৩৭৭।<ref>
*কয়েকজন মাইয়্যাতের উপর একটি নামাজ পড়া যায়।[২৫]
*কয়েকজন মাইয়্যাতের উপর একটি নামাজ পড়া যায়।<ref>আল্লামা হিল্লি, তাজকেরাতুল ফুকাহা, ১৪১৪ হি., খণ্ড ২, পৃ. ৬৭।</ref>
*জানাজার নামাজ মসজিদে পড়া মাকরুহ।[২৬] অবশ্য মারজাগণের কেউ কেউ [[মসজিদুল হারাম|মসজিদুল হারামকে]] এ হুকুম থেকে পৃথক করেছেন।[২৭] তবে কেউ কেউ এটাকে গ্রহণ করেননি।[২৮]
*জানাজার নামাজ মসজিদে পড়া মাকরুহ।<ref>নাজাফী, জাওয়াহিরুল কালাম, ১৪০৪ হি., খণ্ড ১২, পৃ. ৯৮-৯৯।</ref> অবশ্য মারজাগণের কেউ কেউ [[মসজিদুল হারাম|মসজিদুল হারামকে]] এ হুকুম থেকে পৃথক করেছেন।<ref>বানি হাশেমী খোমিনী, তাওযিহুল মাসায়েল মারাজেঅ' ১৪২৪ হি., খণ্ড ১, পৃ. ৩৩৯, মাসআলা ৬১২।</ref> তবে কেউ কেউ এটাকে গ্রহণ করেননি।<ref>নাজাফী, জাওয়াহিরুল কালাম, ১৪০৪ হি., খণ্ড ১২, পৃ. ৯৮-৯৯।</ref>
*জুতা পরিহিত অবস্থায়ও জানাজার নামাজ পড়া যায়, অবশ্য [[মুস্তাহাব]] হলো জুতা খুলে পড়া।[২৯]
*জুতা পরিহিত অবস্থায়ও জানাজার নামাজ পড়া যায়, অবশ্য [[মুস্তাহাব]] হলো জুতা খুলে পড়া।<ref>নাজাফী, জাওয়াহিরুল কালাম, ১৪০৪ হি., খণ্ড ১২, পৃ. ৮৪।</ref>


== ঐতিহাসিক জানাজার নামাজসমূহ ==
== ঐতিহাসিক জানাজার নামাজসমূহ ==
[[হযরত ফাতেমা যাহরা (সালামুল্লাহ আলাইহা)|হজরত ফাতেমা যাহরার (সা. আ.)]] উপর পড়া জানাজার নামাজ এবং [[ইমাম খোমিনী (র.)|ইমাম খোমেনি’র]] উপর পড়া জানাজার নামাজ প্রত্যেকটি বিশেষ বৈশিষ্ট্যের অধিকারী; ঐতিহাসিকদের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে [[হজরত আলী (আ.)]] ফাতেমা যাহরাকে (সা. আ.) রাতের আঁধারে [[গোসল]] দিয়েছিলেন[৩০] এবং তাঁর উপর নামাজ আদায় করেছিলেন।[৩১] [[তাবারসী]]’র বর্ণনার ভিত্তিতে, [[ইমাম হাসান]], ইমাম হুসাইন (আ.), মেকদাদ, [[সালমান ফার্সি]], আবু যার গিফারী, [[আম্মার ইবনে ইয়াসির]], আকিল ইবনে আবি তালিব, যুবাইর ইবনে আওয়াম, বুরাইদাহ ইবনে হাসিব আসলামি ও [[বনি হাশিম|বনি হাশিমের]] কয়েকজন হযরত ফাতেমা যাহরার (সা. আ.) জানাজায় অংশগ্রহণ করেছিলেন।[৩২]
[[হযরত ফাতেমা যাহরা (সালামুল্লাহ আলাইহা)|হজরত ফাতেমা যাহরার (সা. আ.)]] উপর পড়া জানাজার নামাজ এবং [[ইমাম খোমিনী (র.)|ইমাম খোমেনি’র]] উপর পড়া জানাজার নামাজ প্রত্যেকটি বিশেষ বৈশিষ্ট্যের অধিকারী; ঐতিহাসিকদের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে [[হজরত আলী (আ.)]] ফাতেমা যাহরাকে (সা. আ.) রাতের আঁধারে [[গোসল]] দিয়েছিলেন<ref>তাবারি, তারিখুল উমাম ওয়াল মুলুক, ১৪০৩ হি., খণ্ড ২, পৃ. ৪৭৩-৪৭৪।</ref> এবং তাঁর উপর নামাজ আদায় করেছিলেন।<ref>ইরবিলী, কাশফুল গুম্মাহ, ১৪২১ হি., খণ্ড ২, পৃ. ১২৫।</ref> [[তাবারসী]]’র বর্ণনার ভিত্তিতে, [[ইমাম হাসান]], ইমাম হুসাইন (আ.), মেকদাদ, [[সালমান ফার্সি]], আবু যার গিফারী, [[আম্মার ইবনে ইয়াসির]], আকিল ইবনে আবি তালিব, যুবাইর ইবনে আওয়াম, বুরাইদাহ ইবনে হাসিব আসলামি ও [[বনি হাশিম|বনি হাশিমের]] কয়েকজন হযরত ফাতেমা যাহরার (সা. আ.) জানাজায় অংশগ্রহণ করেছিলেন।<ref>তাবারসি, ই'লামুল ওয়ারা, ১৪১৭ হি., খণ্ড ১, পৃ. ১৮৫।</ref>


এর কারণ ছিল, ফাতেমা (সা. আ.) আলীকে (আ.) [[ওসিয়ত]] করেছিলেন যেন তার গোসল, কাফন, জানাজা ও দাফনের কার্যাদি রাতের আঁধারে সম্পন্ন করা হয়, যাতে তাঁর উপর যারা জুলুম করেছে তারা যেন তাঁর জানাজাতে অংশগ্রহণ না করতে পারে।[৩৩]
এর কারণ ছিল, ফাতেমা (সা. আ.) আলীকে (আ.) [[ওসিয়ত]] করেছিলেন যেন তার গোসল, কাফন, জানাজা ও দাফনের কার্যাদি রাতের আঁধারে সম্পন্ন করা হয়, যাতে তাঁর উপর যারা জুলুম করেছে তারা যেন তাঁর জানাজাতে অংশগ্রহণ না করতে পারে।<ref>সাদুক, ইলালুশ শারায়ে, ১৩৮৫ হি., খণ্ড ১, পৃ. ১৮৫।</ref>
 
ইমাম খোমেনি’র (র.) উপর যে জানাজার নামাজ পড়া হয়েছিল তা ইতিহাসের সবচেয়ে জনবহুল জানাজাগুলোর অন্যতম। ১৯৮৯ সালের জুন মাসে [[আয়াতুল্লাহ গুলপায়গানী]]’র ইমামতিতে এ নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। ইমাম খোমেনি’র (র.) জানাজাকে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জানাজা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।<ref>[http://www.guinnessworldrecords.com/world-records/largest-percentage-of-population-to-attend-a-funeral/ গীনেস সাইট]</ref>


ইমাম খোমেনি’র (র.) উপর যে জানাজার নামাজ পড়া হয়েছিল তা ইতিহাসের সবচেয়ে জনবহুল জানাজাগুলোর অন্যতম। ১৯৮৯ সালের জুন মাসে [[আয়াতুল্লাহ গুলপায়গানী]]’র ইমামতিতে এ নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। ইমাম খোমেনি’র (র.) জানাজাকে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জানাজা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।[৩৪]


== গ্রন্থসূত্র ==
== গ্রন্থসূত্র ==
১২৩ নং লাইন: ১২৪ নং লাইন:
*শহীদ সানি, যাইনুদ্দিন ইবনে আলী, রাওদাতুল জিনান ফি শারহি ইরশাদুল ইযহান, কোম, মুয়াস্সেসেয়ে আলুল বাইত, প্রথম প্রকাশ, (প্রকাশের তারিখ অজ্ঞাত)।
*শহীদ সানি, যাইনুদ্দিন ইবনে আলী, রাওদাতুল জিনান ফি শারহি ইরশাদুল ইযহান, কোম, মুয়াস্সেসেয়ে আলুল বাইত, প্রথম প্রকাশ, (প্রকাশের তারিখ অজ্ঞাত)।
*শেইখ সাদুক, মুহাম্মাদ ইবনে আলী, ইলালুশ শারায়ে, সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ সাদেক বাহরুল উলুম, আন্-নাজাফুল আশরাফ, আল-মাকতাবাতুল হাইদারিয়্যাহ, ১৩৮৫ হিঃ।
*শেইখ সাদুক, মুহাম্মাদ ইবনে আলী, ইলালুশ শারায়ে, সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ সাদেক বাহরুল উলুম, আন্-নাজাফুল আশরাফ, আল-মাকতাবাতুল হাইদারিয়্যাহ, ১৩৮৫ হিঃ।
*তাবারসি, ফাযল ইবনে হাসান, ইলামুল ওয়ারা, কোম, মুয়াস্সেসেয়ে আলুল বাইত-লি-ইহয়ায়িত্ তুরাস, ১৪১৭ হিঃ।
*তাবারসি, ফাযল ইবনে হাসান, ই'লামুল ওয়ারা, কোম, মুয়াস্সেসেয়ে আলুল বাইত-লি-ইহয়ায়িত্ তুরাস, ১৪১৭ হিঃ।
*তাবারি, মুহাম্মাদ ইবনে জারির, তারিখুল উমামী ওয়াল মুলুক, বৈরুত, মুয়াস্সাসাতুল আলামী, ১৪০৩ হিঃ।
*তাবারি, মুহাম্মাদ ইবনে জারির, তারিখুল উমাম ওয়াল মুলুক, বৈরুত, মুয়াস্সাসাতুল আলামী, ১৪০৩ হিঃ।
*আল্লামা হিল্লি, হাসান ইবনে ইউসুফ, তাজকেরাতুল ফুকাহা, কোম, মুয়াস্সেসেয়ে আলুল বাইত, ১৪১৪ হিঃ।
*আল্লামা হিল্লি, হাসান ইবনে ইউসুফ, তাজকেরাতুল ফুকাহা, কোম, মুয়াস্সেসেয়ে আলুল বাইত, ১৪১৪ হিঃ।
*ফিকহুর রেজা, মাশহাদ, মুয়াস্সাসাতু আলিল বাইত (আ.), ১৪০৬ হিঃ।
*ফিকহুর রিযা, মাশহাদ, মুয়াস্সাসাতু আলিল বাইত (আ.), ১৪০৬ হিঃ।
*মোল্লা খুসরূ, মুহাম্মাদ ইবনে ফারামার্জ, দূরারূল হেকাম শারহে গুরারূল আহকাম, (প্রকাশের স্থান অজ্ঞাত), দারূ ইহয়ায়ি কুতুবিল আরাবিয়্যাহ, (প্রকাশের তারিখ অজ্ঞাত)।
*মোল্লা খুসরূ, মুহাম্মাদ ইবনে ফারামার্জ, দূরারূল হেকাম শারহে গুরারূল আহকাম, (প্রকাশের স্থান অজ্ঞাত), দারূ ইহয়ায়ি কুতুবিল আরাবিয়্যাহ, (প্রকাশের তারিখ অজ্ঞাত)।
*নাজাফী, মুহাম্মাদ হাসান, জাওয়াহিরুল কালাম ফি শারহি শারাইয়ুল ইসলাম, তাছহীহ; আব্বাস কুচানী ও আলী আখুন্দী, বৈরুত, দারূ ইহয়ায়িত্ তুরাসিল আরাবি, ১৪০৪ হিঃ।
*নাজাফী, মুহাম্মাদ হাসান, জাওয়াহিরুল কালাম ফি শারহি শারাইয়ুল ইসলাম, তাছহীহ; আব্বাস কুচানী ও আলী আখুন্দী, বৈরুত, দারূ ইহয়ায়িত্ তুরাসিল আরাবি, ১৪০৪ হিঃ।
confirmed, templateeditor
২,২৭৭টি

সম্পাদনা